অর্থনীতি

রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে বিকল্প উপায়ে জ্বালানি তেল আমদানির চিন্তা

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে লেনদেন করতে পারছে এমন ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করে জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা করছে সরকার।

নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বিকল্পভাবে রাশিয়া থেকে কীভাবে আমদানি করা যায়- তা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা জানান।

ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সেখানে দেশের খাদ্যশস্য মজুদ এবং ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে আমদানির প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া ডলার ব্যবহার করে কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে পণ্য আমদানি করা যায় সে বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। পাশাপাশি ডলার সাশ্রয় ও আয় বাড়ানো, ওষুধ খাতে রপ্তানি বাড়িয়ে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আনার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ২৪ ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার দিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্য আমদানি করতে পারবে বাংলাদেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে পণ্য আমদানিতে কোনো বাধা নেই। সেটি আলোচনা হলো, ক্লিয়ার হলো আজ।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধ খাতে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং অন্যান্য খাত থেকেও যাতে ডলার আয় বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়াকে শায়েস্তা করতে নানারকম অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে বিশ্বের প্রধান আর্থিক লেনদেন পরিষেবা সুইফট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। রাশিয়াকে সুইফট থেকে বাদ দেওয়ায় বিপদে পড়েছে বাংলাদেশের মতো অনেক দেশও। রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন সম্ভব না হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর বড় প্রভাব পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও যারা রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন অব্যাহত রেখেছে, তাদের বিকল্প উপায় ভাবতে হচ্ছে।

গত ১৬ আগস্ট একনেক সভায় রাশিয়া থেকে কীভাবে তেল আমদানি করা যায়, সেদিকটা পর্যালোচনা করে দেখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যদি পারে, বাংলাদেশ কেন পারবে না প্রধানমন্ত্রী এমনটিও বলেছেন বলে সভা পরবর্তী গণমাধ্যমকে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

জানা গেছে, রাশিয়ার ওপর আমেরিকাসহ ইউরোপের নানা রকম নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় যেকোনোভাবেই তেল কেনার গ্রাহক খুঁজছে দেশটি। এ মাসের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশের কাছে আবারো পরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব পাঠায় রাশিয়ার তেল উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানি রোসনেট। আগে তেল কেনায় আগ্রহী না হলেও এখন বাংলাদেশ ভেবে দেখছে বিষয়টি। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়ে আলোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে বিপিসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *