আন্তর্জাতিক

ভারতীয় পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি দেশের কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবেন না, এমনকি যদি তাকে এর জন্য চড়া মূল্যও দিতে হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দিল্লিতে এক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন মোদি। খবর এনডিটিভির।

ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের স্বার্থ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভারত তার কৃষক, পশুপালক এবং জেলেদের স্বার্থের সঙ্গে কখনও আপস করবে না। আমি জানি যে এর জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বিশাল মূল্য দিতে হবে, তবে আমি প্রস্তুত। ভারত দেশের কৃষক, জেলে এবং পশুপালকদের স্বার্থে প্রস্তুত।’

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী মোদি এসব কথা বলেন।

ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য রপ্তানি করে এবং ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যেসব ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার মধ্যে কৃষি একটি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার নয়াদিল্লির রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য জরিমানা হিসেবে ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। এর আগে ২০ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল।

এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা যেকোনো মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের মধ্যে একটি।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, রাশিয়ান তেল আমদানির কারণে ভারতকে লক্ষ্য করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ‘অন্যায়’, ও ‘অযৌক্তিক’।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘আমরা ইতোমধ্যেই এই বিষয়গুলোতে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, আমাদের আমদানি বাজারের কারণগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভারতের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তাই এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার জন্য ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা বেছে নিয়েছে।’

এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।

খেলাধুলা

এশিয়ান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হলো এশিয়া কাপ। ১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্ট প্রতি দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল ভারত। অতীতের ১৬ আসরের মধ্যে রেকর্ড ৮ বার শিরোপা জিতেছে ভারত। শ্রীলংকা জিতেছে ৬ বার আর ২ বার জিতেছে পাকিস্তান।

এশিয়ান ক্রিকেটাঙ্গনে ভারত, শ্রীলংকা আর পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশ দলের অবস্থান। কিন্তু বাংলাদেশ আজও পর্যন্ত এশিয়া কাপের স্বাদ পায়নি। সর্বোচ্চ একবার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়ে তীরে গিয়ে তরী ডুবায়।

২০১২ সালের এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। সেই আসরে ভারত-শ্রীলংকাকে বিদায় করে ফাইনালে উঠেও শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে মাত্র ২ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

আগামী মাসে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া কাপের ১৭তম আসর। আসন্ন এই আসরে বাংলাদেশ যদি ফাইনালে উঠতে পারে তাহলে শিরোপা নিয়েই ঘরে ফিরবে। এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক আকরাম খান।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মিরপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে আকরাম খান বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কেউ কিছু বলতে পারেনা, যে ভালো খেলবে সে জিতবে। এক-দুইটা ওভারে কিন্তু গেম চেঞ্জ করা যায়। আমি মনে করছি যে খুব ভালো একটা সম্ভাবনা আছে যেহেতু আমরা শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজ জিতেছি, পাকিস্তানের মতো দলকে হারিয়েছি। যদি আমরা প্রোপার ক্রিকেট খেলি তাহলে ইনশা আল্লাহ আমরা ভালো করবো।’

এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব কিনা প্রশ্নে আকরাম বলেন, ‘জ্বি, হানড্রেড পারসেন্ট। ফাইনাল যদি খেলতে পারেন তাহলে চ্যাম্পিয়ন কেন হতে পারবেন না! হানড্রেড পারসেন্ট (বিশ্বাস) আছে (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার), টি-টোয়েন্টিতে আমি মনে করি ওভার কনফিডেন্ট। যদি আমরা প্রোপার ক্রিকেট খেলতে পারি।’

প্রসঙ্গত, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের পর্দা উঠবে। ফাইনাল ম্যাচ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। ৮টি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেবে। বাংলাদেশ পড়েছে ‘বি’ গ্রুপে। যেখানে তাদের সঙ্গী শ্রীলংকা, আফগানিস্তান আর হংকং। ‘বি’ গ্রুপের ৬টি ম্যাচই হবে আবুধাবিতে।

জাতীয়

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চূড়ান্ত হয়েছে দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘তফশিল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।’

‘পোস্টাল ব্যালোটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা’ উল্লেখ তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভোটারদের ভোট দিতে হলে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’

সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রবাসী ভোটারদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে আজ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সভার শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- ৫ আগস্ট আমার প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।’

এর আগে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলেছে।

এ চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরকারের অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে। ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে ডিপফেইক, মিথ্যা, পক্ষপাতমূলক, অপপ্রচারমূলক, কুৎসা ও মানহানিকর কনটেন্ট (যেমন, এডিট ভিডিও, অডিও, বানোয়াট খবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। এমনকি প্রার্থী ও দলীয় নেতাদের চেহারা বিকৃত করে কোনো প্রচার চালানো যাবে না। কেউ এসব কার্যক্রম করলে তার বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা বা ডিজিটাল আইনে মামলা হবে। এমন নতুন বিধান যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

আরও জানা গেছে, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির মতামত নিয়ে এ আচরণ বিধিমালার খসড়া তৈরি করেছে ইসি। গত ২৯ জুন নির্বাচন কমিশন যে খসড়া আচরণ বিধিমালা প্রকাশ করেছিল, সেখানে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ওই খসড়ায় শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের কথা উল্লেখ ছিল। বিএনপিসহ একাধিক মতামতের ভিত্তিতে আচরণ বিধিমালায় এআই’র অপব্যবহারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারের বিষয় বেশ কিছু নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খসড়া বিধিমালায় নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটগ্রহণের দিন ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অর্থনীতি

দেশে গড়ে ২৪ দশমিক ০৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। প্রায় ৩৯ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন বা প্রায় চার কোটি (তিন কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার) মানুষ এই দারিদ্র্যের শিকার।

এই দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে এবং সবচেয়ে কম ঝিনাইদহে। তবে অনেক পুরোনো উপাত্তের ভিত্তিতে এই দারিদ্র্য হিসাব করা হয়েছে। ফলে বর্তমান বাস্তবতায় এই গবেষণা প্রতিবেদনটির উপযোগিতা কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

দেশে প্রথমবারের মতো বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এ সূচকে ব্যক্তির আয়-রোজগারের ভিত্তিতে দারিদ্র্য নিরূপণ করা হয় না, বরং বিভিন্ন সেবার প্রাপ্যতার ভিত্তিতে দারিদ্র্য নির্ধারণ করা হয়।

মোট ১১টি সূচকের সমন্বয়ে এই দারিদ্র্য হিসাব করা হয়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এটি প্রকাশ করা হয়।

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। জিইডির সদস্য (সচিব) ড. মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশের ইউএনডিপির প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস। আলোচক ছিলেন পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. একে এনামুল হক।

সেমিনারে জানানো হয়, ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপ (হেইস) এবং ২০১৯ সালের বহু সূচকবিশিষ্ট গুচ্ছ জরিপের (মিকস) ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। যে ১১টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য নিরূপণ করা হয়েছে সেগুলো হলো, বিদ্যুতের প্রাপ্যতা, স্যানিটেশন, পানির প্রাপ্যতা, আবাসনের মান, রান্নার জ্বালানির প্রাপ্যতা, সম্পদের প্রাপ্যতা, ইন্টারনেট সংযোগ, বিদ্যালয়ে শিশুদের উপস্থিতির হার, শিশুদের শিক্ষাকালের ব্যাপ্তি, পুষ্টি এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে ২৪ শতাংশ মানুষ গড়ে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। এই দারিদ্র্য হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে এবং সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে। বয়সভিত্তিক হিসাবে দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হার বেশি।

শূন্য থেকে ৯ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার ২৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের মধ্যে এ হার ২৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এমপিআই হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এদিকে জেলাভিত্তিক হিসাবে দেখা গেছে, বহুমাত্রিকতার বিচারে সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য হার বান্দরবানে। সেখানে এ হার ৬৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে থাকা কক্সবাজারে এ হার ৪৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে শীর্ষ ১০ জেলার মধ্যে আরও আছে যথাক্রমে সুনামগঞ্জে ৪৭ দশমিক ৩৬, রাঙামাটিতে ৪৫ দশমিক ৮৯, ভোলায় ৪৫ দশমিক ১২, নেত্রকোনায় ৩৮ দশমিক ২১, হবিগঞ্জে ৩৭ দশমিক ৪৮, খাগড়াছড়িতে ৩৬ দশমিক ৯১, কিশোরগঞ্জে ৩৬ দশমিক ১১ এবং কুড়িগ্রামে ৩৯ দশমিক ২৪ শতাংশ।

সবচেয়ে কম বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে হার ঝিনাইদহ জেলায়। জেলার ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। এর পরের কম দিক থেকে শীর্ষ ১০ জেলার মধ্যে যথাক্রমে ঢাকায় ৯ দশমিক ১৯, গাজীপুরে ৯ দশমিক ৬৩, যশোরে ১০ দশমিক ৫৮, মেহেরপুরে ১১ দশমিক ০৮, কুষ্টিয়ায় ১২ দশমিক ২২, চুয়াডাঙ্গায় ১৩ দশমিক ৫১, মানিকগঞ্জে ১৪ দশমিক ০৭, ফেনীতে ১৪ শতাংশ এবং দিনাজপুরে ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, এই পদ্ধতিতে দারিদ্র্য নিরূপণ পদ্ধতি একটি সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী কৌশল। এর মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে দারিদ্র্য দূরীকরণের কাজ করা সহজ হবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী কিছু জেলায় কেন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার বেশি সেটি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক কমানোর আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুক্রবার (১ আগস্ট) এক পোস্টে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় তিনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সমালোচকদের হতাশ করে।

শুল্ক হার কমানোর ঘোষণার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে তা জানান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এর দুই ঘণ্টা পর বাণিজ্য উপদেষ্টাকে নিয়ে ইংরেজিতে আরেকটি পোস্ট দেন এই উপদেষ্টা।

‘শেখ বশিরউদ্দীন—আমাদের অসাধারণ বাণিজ্য উপদেষ্টা’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শেখ বশিরউদ্দীনসহ কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করার দায়িত্ব পাই, সম্ভাব্য বাণিজ্য উপদেষ্টা পদে নিয়োগের জন্য। ফোনে তাকে ধরি ভোলায়, তখন তিনি একটি ব্যবসায়িক সফরে ছিলেন। পরে আমরা দেখা করি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে, আমার অফিসে।

তিনি বলেন, পূর্বপরিচয় না থাকলেও আমরা এক ঘণ্টা খোলামেলা কথা বলি।

আমার অফিস থেকে যে নাশতা দেওয়া হয়েছিল, তিনি বিনয়ের সঙ্গে সেটি নেননি! তবে আমি তার মধ্যে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি, তা হলো দেশপ্রেম, যুক্তিহীন কোনো কিছু সহ্য না করার দৃঢ় মনোভাব, আর অনেক তথ্য একসঙ্গে গুছিয়ে বিশ্লেষণ করার অসাধারণ দক্ষতা। আমি আমার এই অনুভূতিগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে জানাই।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রহমতে, দেশ ও জাতির জন্যই বলা যায়, প্রধান উপদেষ্টা তাকে (শেখ বশিরউদ্দীন) দায়িত্ব দেন। আর তিনিও তা গ্রহণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় তিনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সমালোচকদের হতাশ করে। আল্লাহ তাকে (বাণিজ্য উপদেষ্টা) হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন, যাতে তিনি দেশকে সেবা দিতে পারেন—হোক তা সরকারে বা বেসরকারি খাতে।

জাতীয়

‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পুলিশ সদস্যরা তাদের শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেন।

একইসঙ্গে তাদের মঞ্চটিও অপসারণ করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) থেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে একটি পক্ষ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে।

শুক্রবার বিকেলে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ আরেকটি পক্ষ অবরোধের বিরোধিতা করলে তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে সংঘাত এড়াতে পুলিশ উভয়পক্ষকে শাহবাগ মোড় থেকে সরিয়ে দেয়।

অবরোধের বিরোধিতাকারী ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সাংবাদিকদের বলেন, প্রকৃত জুলাই যোদ্ধারা সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারেন না। কিন্তু জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে কিছু মানুষ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সাধারণ মানুষদের হেনস্থা করছেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

খেলাধুলা

জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সিরিজে আজ স্বাগতিকদের ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশের বোলিং দাপটে আগে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ে স্রেফ ৮৯ রানেই গুটিয়ে যায়। ৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০৯ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করেন আজিজুল হাকিম তামিমরা।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে যখন ৮৯ রানে গুটিয়ে যায়, তখনই ম্যাচের ফল অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায়। ৯০ রানের লক্ষ্যে দলীয় ৫ রানেই ভেঙে যায় বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। প্রথম ওভারের শেষ বলে ওপেনার রিফাত বেগকে ফেরান জিম্বাবুয়ে পেসার শেল্টন মাজভিতোরেরা। বাংলাদেশের ওপেনার মেরেছেন গোল্ডেন ডাক।

দলীয় ৩৯ রানে বাংলাদেশ হারায় দ্বিতীয় উইকেট। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে কালাম সিদ্দির উইকেটও নিয়েছেন মাজভিতোরেরা। তিন নম্বরে নামা সিদ্দিকি ১৬ বলে ২০ রান করেছেন। বাকি পথ এরপর সহজেই পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক তামিম ও রিজান হোসেন তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছেদ্য ৫২ রানের জুটি গড়েন। ২০৯ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। ৩৭.৪ ওভারের ম্যাচে হয়েছে ১৮০ রান। পড়েছে ১২ উইকেট।

টস জিতে আজ ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২২.৩ ওভারে ৮৯ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের ইমন নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৬.১ ওভারে তিনি খরচ করেন ২৭ রান। স্বাধীন ইসলাম ও সানজিদ মজুমদার পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। মোহাম্মদ রাফি উজ্জামান রাফি ও রিজান নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে-দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে সবাই এরই মধ্যে চারটি করে ম্যাচ খেলেছে। বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলেরই সমান ৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে চার ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হেরে এখনো কোনো পয়েন্ট পায়নি। বাকি থাকা দুই ম্যাচ জিতলেও জিম্বাবুয়ে চার পয়েন্টের বেশি পাচ্ছে না। সেকারণে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা উঠে গেছে ফাইনালে। ১০ আগস্ট হারারেতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে তারা।

আন্তর্জাতিক

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। গত বছরের ৩১ মে’র মধ্যে যারা যেতে পারেননি, তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত কর্মীদের এবার কনস্ট্রাকশন এবং ট্যুরিজম সেক্টরে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

শুক্রবার (১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে হাইকমিশন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আনায়নের লক্ষ্যে ডিমান্ড লেটার বা চাহিদাপত্র সত্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এজন্য ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এফডব্লিউসিএমএস) অনলাইন পোর্টালে চেকলিস্ট অনুযায়ী নির্ধারিত সব তথ্যাদি দাখিল করতে হবে।

দাখিলকৃত ডকুমেন্টেসের মধ্যে রয়েছে, কোম্পানির পক্ষ থেকে অনুমোদনপত্র, যা ম্যানেজার পর্যায়ের বা তদূর্ধ্ব কোনো কর্মকর্তার হতে হবে; বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমাকৃত সত্যায়ন ফি-এর মূল ব্যাংক স্লিপ; ৪-৫ জন কর্মীর সর্বশেষ বেতন স্লিপ; এবং কোম্পানির প্রোফাইল, যার মধ্যে কোম্পানির প্রোফাইল, বর্তমান কর্মীর সংখ্যা (স্থানীয় ও বিদেশি), প্রয়োজনে ২/৩ জন বাংলাদেশি কর্মীর মোবাইল নম্বর এবং বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে। এবং ব্যাংক ব্যালান্সও যথাযথ হতে হবে—যেমন ১০০ জন কর্মীর জন্য ন্যূনতম দুই লাখ মালয়েশিয়ান রিংগিত ব্যালান্স থাকা প্রয়োজন।

এছাড়া, ফরেন ওয়ার্কার্স কম্পেনসেশন স্কিম (সকসো) এবং ফরেন ওয়ার্কার্স হাসপাতালাইজেশন ও সার্জিকাল স্কিমের নমুনা দলিল, কর্মীদের আবাসন সংক্রান্ত জেটিকে সার্টিফিকেট, নির্মাণ চুক্তিপত্র, অঙ্গীকারনামা বা গ্যারান্টি লেটার, ডিরেক্টরের স্বাক্ষরিত ডিমান্ড লেটার, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি, নিয়োগপত্র, বোয়েসেল ও নিয়োগকারীর মধ্যে চুক্তিপত্র এবং মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোটার অনুমোদনপত্রও দাখিল করতে হবে।

পাশাপাশি, অনলাইনে দাখিলকৃত তথ্যাদির মূল কপি এবং এক সেট ফটোকপি বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

এদিকে, দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক জটিলতার পর মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শর্তসাপেক্ষে পুনরায় উন্মুক্ত হওয়ার আভাস মিলেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুযায়ী নির্ধারিত কোটা, খরচ নিয়ন্ত্রণ ও নিয়োগ পদ্ধতি স্বচ্ছ রাখার শর্তে কর্মী পাঠানো আবারও শুরু হতে পারে।

সূত্র জানায়, মালয়েশিয়া সরকার ‘সিলেক্টভি রিক্রুটমেন্ট’ মডেল চালু করতে চায়, যেখানে কেবল নিবন্ধিত এবং সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মী পাঠানো যাবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়, যাতে বাংলাদেশ সরকার কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, ‘আমরা চাই একটি স্বচ্ছ ও বৈধ প্রক্রিয়ায় অভিবাসন হোক, যেখানে দালাল চক্রের কোনো সুযোগ থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কর্মী প্রতি সর্বোচ্চ খরচ নির্ধারণ, মেডিকেল ও ভিসা প্রসেসিং সময় নির্ধারণ এবং নিয়োগকারী কোম্পানির বাস্তব যাচাই বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছে। ‘

বাংলাদেশ সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় কাজ করতে ইচ্ছুক তার শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। দু’সপ্তাহ আগে বাংলাদেশি সরকার এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের মধ্যে কুয়ালালামপুরে একটি বৈঠকের সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ধরে রাখতে হলে শুধু চুক্তি নয়, বাস্তবায়ন পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নানা অনিয়ম ও কোটা বাণিজ্যের অভিযোগে তা মাঝপথেই স্থগিত হয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক ৩৫ শতাশং থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন। এরপরই আজ ১ আগস্ট ভারতীয় টেক্সটাইল কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। গার্মেন্টস খাতে ভারতের প্রধান প্রতিযোগী বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে চলে গেল।

বাংলাদেশ আগে থেকেই তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানির অন্যতম বড় দেশ। নতুন এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় পোশাক প্রস্তুতকারকদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘোষণার পরপরই ভারতীয় টেক্সটাইল খাতের একাধিক কোম্পানির শেয়ার দামে উল্লেখযোগ্য পতন ঘটে। আপস্টকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কেপিআর মিলসের শেয়ার ৫ শতাংশ, ওয়েলসপুন লিভিংয়ের শেয়ার ২ শতাংশ, অলোক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার ০ দশমিক ৮ শতাংশ, পিয়ার্ল গ্লোবালের শেয়ার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, গোকূলদাস এক্সপোর্টের শেয়ার ২ দশমিক ৬ শতাংশ, কিটেক্স গার্মেন্টসের শেয়ার ৩ দশমিক ২১ শতাংশ এবং বর্ধমান টেক্সটাইলের শেয়ার ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রকাশিত আমদানি শুল্ক তালিকা অনুসারে, ৫০টিরও বেশি দেশের ওপর শুল্ক কমিয়েছে ট্রাম্প। এতে রয়েছে বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তান (১৯ শতাংশ), ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ) এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো আসিয়ান দেশগুলোতে ১৯ শতাংশ। তবে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতিকে ঘিরে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে শ্রমনির্ভর খাত যেমন টেক্সটাইল ও উচ্চমূল্যের ইলেকট্রনিকস পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রই ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য, আর সেখানে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এখন আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ভারত শিগগিরই আরো সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি না করে, তাহলে রপ্তানিকারকরা মার্কেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাবে।

রাজনীতি

বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপ করা পালটা শুল্কের হার ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনাকে রপ্তানি খাতের জন্য একটি ‘সন্তোষজনক অবস্থা’ হিসেবে দেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

আমির খসরু বলেন, এটা জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় না। যে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিযোগিতায় আমরা তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি।

তিনি বলেন, আমরা ২০%, পাকিস্তান ১৯%, ভিয়েতনামে ২০%, ভারতে ২৫%। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সার্বিকভাবে ট্যারিফের ফিগারটা সন্তোষজনক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। ট্যারিফ বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগিতাদের সঙ্গে সেটা হয়েছে ঠিকই আছে। এটা সন্তোষজনক।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের নতুন এই হারের পেছনে কী আছে সেই প্রসঙ্গটি টেনে সাবেক এ বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, পুরো নেগোসিয়েশনের সার্বিক বিষয়টা তো আমাদের জানা নেই।

‘আমরা শুধু ট্যারিফের বিষয়টা জানি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সার্বিক বিষয়টা জানার পরে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এর (ট্যারিফ) বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত এর ইমপেক্টটা কী হবে সেটা আমরা বলতে পারছি না।’

আমির খসরু বলেন, নেগোসিয়েশনের পেছনের যে বিষয়গুলো… এটা তো একটা প্যাকেজ। এখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু মাত্র ‍ট্যারিফের কত পার্সেন্ট কমানো হলো সেটা সিদ্ধান্ত হয়নি।

‘এ সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক আলাপ-আলোচনা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী দাবি-দাওয়া ছিল এ বিষয়গুলো প্রকাশ হলে আমরা বুঝতে পারব।’

সম্প্রতি বাণিজ্য সচিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার একটা কথা বলেছেন এটার সঙ্গে ট্যারিফের কোনো সম্পর্কের কিনা প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, না, কিছু তো করতেই হবে। কারণ আমেরিকানদের পুরো ট্যারিফের বিষয়টা হচ্ছে, আমেরিকানদের পণ্য রপ্তানির স্বার্থে। সেজন্য তো এই অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু এবজরভ করতে পারবে, আমাদের অর্থনীতি কতটুকু এবজরভ করতে পারবে, ব্যবসায়ীরা কতটুকু এভজরভ করতে পারবে, ইকোনমি কতটুকু এবজরভ করতে পারবে সেই বিষয়গুলো আলোচনার বিষয়। আমরা বিস্তারিত জানলে সেটার ওপর মন্তব্য করতে পারব। আমি মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুরো বিষয়টা খোলাসা করা উচিত।

আমির খসরু বলেন, বাণিজ্য শুধু আমেরিকার সঙ্গে নয়…অন্যান্য দেশে সঙ্গেও আমাদের পণ্য রপ্তানি হয়। সেই জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে আমরা কোথায় দাঁড়াচ্ছি সেটা বুঝতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানিটা আমাদের আরও বেশি ডাইভারসিফাই করতে হবে। বিদেশে ডাইভারসিফাই করতে, দেশেও ডাইভারসিফাই… শুধু আমেরিকা নির্ভরশীল অর্থনীতি হতে পারে না। সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ।