খেলাধুলা

পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) অভিষেকেই চমক দেখিয়েছেন রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশের এই লেগ স্পিনারের ঘূর্ণিজাদুতে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে লাহোর কালান্দার্স। রোববার (১৩ এপ্রিল) কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলিংয়ে এসে ৩১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর লাহোর অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রশংসায় কুড়িয়েছেন রিশাদ। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে রিশাদের প্রশংসা করে লাহোর অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা যখন রিশাদকে একাদশে নিই, তখন মিডল ওভারে উইকেট নিতে পারার বিষয়টি চিন্তা করেছিলাম। ডেভিড ভিসে এই ম্যাচে খেলতে পারেননি, রিশাদ ছিল ওই জায়গায় সেরা পছন্দ।’

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পাননি রিশাদ। তবে বাংলাদেশের এই লেগ স্পিনারকে বেঞ্চে রেখে খেলতে কূলকিনারা করতে পারেনি। ইসলামাবাদের কাছে সেদিন শাহিনরা হেরেছিলেন ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

তাই দ্বিতীয় ম্যাচে টিম কম্বিনেশনে পরিবর্তন আনতে হয় লাহোরকে। একাদশে সুযোগ পেয়ে যান রিশাদ। রোববার শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ফখর জামান ও স্যাম বিলিংসের ফিফটিতে ৬ উইকেটে ২১৯ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল লাহোর।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে থেকেই চাপে ছিল কোয়েটা। সপ্তম ওভারে রিশাদ যখন বল হাতে তুলে নেন, তখন ৬২ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে দলটি। আক্রমণে এসে নিজের করা প্রথম ওভারে ৭ রান দেন রিশাদ।

পরের ওভারে রাইলি রুশো ছক্কা মেরে ঝড় তোলার আভাস দেন। কিন্তু দারুণ এক গুগলিতে এই প্রোটিয়া ব্যাটারকে সাজঘরের পথ চেনাতে দেরি করেননি রিশাদ।

রিশাদ বাকি ২টি উইকেট পেয়েছেন নিজের শেষ ও দলের ১৩তম ওভারে। প্রথম বলে মোহাম্মদ আমিরকে দারুণ এক লেগ ব্রেকে বোল্ড করেন। এরপর ওভারের চতুর্থ বলে আবরার আহমেদকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ারে মোহাম্মদ নাঈমের ক্যাচ বানান রিশাদ। তার ঘূর্ণিতেই শেষ পর্যন্ত ৭৯ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাহোর।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীকে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজকে সবাইকে আপন করে নেয়ার দিন। এবারের নববর্ষ, নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন, আমরা বিগত বছরগুলির গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চলুন, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,‘বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং তাকে এগিয়ে নিতে আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের এসব ঐতিহ্য শুধু যেন নিজেদের মধ্যেই না থাকে, আমাদের সংস্কৃতি যেন আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি বিশ্ব দরবারে। বছরের এই দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই উৎসবমুখর পরিবেশে আমাদের সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্ম ও পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে।’

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষ বরণের দিন।

‘ফসলি সন’ এর ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলা সাল গণনা শুরু হয়েছিল কৃষিকাজের সুবিধার জন্য, ‘ফসলি সন’ হিসেবে। এখনো এদেশের কৃষকরা বাংলা তারিখের হিসেবেই বীজ বোনেন, ফসল তোলেন।
‘হালখাতা’কে বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এখনকার আধুনিক সময়েও অনেকেই এই হালখাতার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন বাংলাদেশের হাটে-বাজারে, শহরে-বন্দরে। নববর্ষের বৈশাখী মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হাত পাখা ইত্যাদি তৈরি করে নিজেদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরেন এই দিনকে উপলক্ষ্য করে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষে এবার বড় পরিসরে উৎসব উদযাপন করছে।

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সকলের জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক, এই কামনা করছি।

তিনি নববর্ষের সকল আয়োজন ও উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।

রাজনীতি

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫ এ বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সময়ই বলে দেবে ইনভেস্টমেন্ট সামিট সফল হয়েছে কিনা।’

আজ রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ এর অর্জন নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, বিডার হেড অফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি এবং প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচবি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

চৌধুরী আশিক বলেন, ‘এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে সরাসরি দুটি কোম্পানি হান্ডা ইন্ডাস্ট্রি  ও শপআপ মিলে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ চুক্তি এবং ৬টি কোম্পানির সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এর বাইরে আরও ২০-২৫টি কোম্পানি বিনিয়োগ করার জন্য আমাদের সাথে ক্লোজলি যোগাযোগ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের এ সামিটের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে বিনিয়োগকারিদের মাঝে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করা। যাতে তারা দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা অন্যদের কাছে তুলে ধরতে পারেন। এ লক্ষ্যেই আমাদের প্রোগ্রামগুলো আয়োজন করেছিলাম।’

বিডা প্রধান বলেন, এখন আমাদের কাজ হলো বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে সেল করা। এজন্য বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের ট্যাগ করে একটি পাইপলাইন তৈরি করা এবং তাদের কাছে বারবার ফেরত যাওয়া। আশা করছি ২০২৬ -২৭ সালের মধ্যে এ বিনিয়োগ সামিটের সফলতা  আসবে। তবে প্রতি বছরই আমাদের এ ধরনের সামিট আয়োজন করা উচিৎ। ৪ দিনের এ সম্মেলনে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসলেও আমরা বলবো এটি সফল। বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরাই ছিল সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য।

নাহিয়ান রহমান রচি বলেন, এবারের সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেশি ছিল। উদ্বোধনের দিন মোট ৭১০ জন অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে ৫০টি দেশ থেকে ৪১৫ জন বিদেশি এবং ২৯৫ জন বাংলাদেশি ডেলিগেট অংশ নিয়েছেন। সংখ্যার দিক থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ৫৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, ৪ দিনব্যাপী এ বিনিয়োগ সম্মেলনে ১৫০ টির মতো অফিসিয়াল দ্বিপাক্ষিক মিটিং হয়েছে। এছাড়াও বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআর চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ অনেকেই সারাদিন ভ্যানুতে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের যে সকল কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সিআইডির তদন্ত যখন ম্যাচিউর পর্যায়ে চলে গিয়েছিল (আওয়ামী লীগ আমলে) তখন আগেই সিআইডিকে সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, (রিজার্ভ চুরিতে) বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা ইনভলভ আছে, তাদের নাম যেন অভিযোগপত্রে না দেওয়া হয়।’

‘এভাবে ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছিল বলে আজকে সিআইডি থেকে আমরা জেনেছি। বাংলাদেশের যারা অপরাধের জন্য দায়ী ছিল তাদের বিচারের সম্মুখীন করার জন্য করণীয় ঠিক করা হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের রিপোর্টে যাদের নাম এসেছে তাদের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এটা আমরা জানতে চেয়েছি। কী ব্যবস্থা নিতে হবে সেটাও বলেছি।’

এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির বিষয়ে নিউইয়র্কে বিচার চলমান। বাংলাদেশে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা নিলে নিউইয়র্কের বিচারের কোনো সমস্যা হবে কিনা, এই বিষয়টা আমরা নিশ্চিত হতে চাচ্ছি।’

এ বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের ল’ ফার্মের মতামত নেওয়া হবে এবং তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা

ফরাসউদ্দিনের রিপোর্টে অনেকের নাম পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য না দিয়ে দু-চার সপ্তাহ দেরি করেছিলেন। এগুলো তখন পত্রিকার রিপোর্টে এসেছে। আরও বেশ কয়েকজনের নাম বিভিন্ন রিপোর্টে এসেছে।’

‘এটা তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন সরকারের আমলে সীমাহীন রাজনীতি করা হয়েছে,’ বলেন তিনি। দুই সপ্তাহ পর এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক

দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালিয়েছে শত শত অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী।সোমবারের এই হামলা ছিল ইহুদি ধর্মীয় উৎসব পাসওভারের দ্বিতীয় দিনের অংশ হিসেবে সংগঠিত হামলা।

জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, ৭৬৫ জন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলি পুলিশের নিরাপত্তা সহযোগিতায় আল-মুগাররাবা গেট দিয়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে। তারা দলবদ্ধভাবে প্রবেশ করে মসজিদের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় ও হামলা চালায়।

এর আগের দিন রোববারও (পাসওভারের প্রথম দিনে) প্রায় ৫০০ জন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী একইভাবে আল-আকসায় প্রবেশ করে ও হামলা চালায়।

পাসওভার কী?

পাসওভার হলো-ইহুদি ধর্মের অন্যতম পবিত্র উৎসব। এ উৎসব হজরত মূসা (আ.)-এর সময় মিসর থেকে ইসরাইলিদের নির্গমন স্মরণে পালিত হয়।

অবৈধ প্রবেশ ও আগ্রাসনের পরিসংখ্যান

ফিলিস্তিনি ওয়াকফ ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত রমজানে (২০২৫ সালের মার্চ-এপ্রিল) ২১ বার আল-আকসা মসজিদে অবৈধভাবে ঢুকে হামলা চালানো হয়।

জেরুজালেম গভর্নর অফিসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ১৩,০৬৪ জন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী আল-আকসায় প্রবেশ করে।

আল-আকসা মসজিদের গুরুত্ব ও ইহুদিদের ধারণা

আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্র স্থান।তবে ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে অভিহিত করে। তাদের দাবি, সেখানে তাদের প্রাচীন দুটি উপাসনালয় ছিল।

এ নিয়ে ফাখরি আবু দিয়াব নামে জেরুজালেম বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ কিছুদিন আগে আল-আকসা মসজিদের পাশের ‘ডোম অব দ্য রক’ মসজিদে ইহুদি উগ্রপন্থিদের গতিবিধি সম্পর্কে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, এই পবিত্র স্থানটিকে ইহুদিকরণের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে আল-আকসার ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

তাসনিম নিউজ জানায়, ফাখরি আবু দিয়াব পাসওভারের ছুটি এগিয়ে আসার সঙ্গে আল-আকসা মসজিদের ওপর ইহুদিবাদীদের অভূতপূর্ব অপতৎপরতা বৃদ্ধি সম্পর্কে সতর্ক করেন।

তিনি বলেন, চরমপন্থি ইহুদি গোষ্ঠীগুলো আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আক্রমণের পরিধি ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা প্রকাশ্যে তালমুদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এবং ডোম অব দ্য রক মসজিদের কাছে দুম্বা জবাইয়ের চেষ্টা করছে। ইহুদিবাদীদের এই পদক্ষেপ উস্কানিমূলক এবং আল-আকসা মসজিদকে ইহুদিকরণের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক পদক্ষেপগুলোর একটি।

আল-কুদস প্রসঙ্গে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ইহুদিবাদীদের এইসব কর্মকাণ্ডে দখলদার পুলিশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

এমনকি ইসরাইলি চরমপন্থি মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক সমর্থনে সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যেহেতু আরব এবং মুসলিম বিশ্ব নীরব এবং নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে, সে কারণে এই গোষ্ঠীগুলো এ ধরনের উস্কানিমূলক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত হচ্ছে।

আবু দিয়াব জোর দিয়ে বলেন, আল-আকসা মসজিদকে পরিকল্পিতভাবে ইহুদিকরণের লক্ষ্যে আক্রমণ করা হচ্ছে এবং সেখানে ইহুদিবাদীদের ক্রমাগত উপস্থিতি তাদের ওই আন্দোলনকে ব্যর্থতার দিকে পরিচালিত করবে।

আন্তর্জাতিক অবস্থান

ইসরাইল ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম দখল করে এবং ১৯৮০ সালে পুরো জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে সংযুক্ত করে। যদিও তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা কখনোই স্বীকৃত হয়নি।

রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা সব সময় বলে আসছি আলোচনার মধ্য দিয়ে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। আমাদের মধ্যে এই ঐক্য সম্ভব হবে এবং আমরা সফল হব।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামী ১৬ এপ্রিল বিএনপির বৈঠক ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সিঙ্গাপুরে সস্ত্রীক এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

এ সময় সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গোটা জাতি আশা করছে যে বাংলা ১৪৩২ সাল দেশের জন্য একটা নতুন দিগন্ত নিয়ে আসবে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয় উদ্ভাসিত হবে নতুন সম্ভাবনার আনন্দে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা মনে করি অতীতের সব ধুলাবালি-জঞ্জাল উড়িয়ে দিয়ে এই বৈশাখ সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করবে।’

ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ সমস্যারও সমাধান হবে।

জাতীয়

‘নতুন বছর, নতুন বাংলাদেশ’ থিমে এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সর্ববৃহৎ ড্রোন শো প্রদর্শিত হয়েছে।

ঢাকার আকাশে দেখা গেল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো ‘আবু সাঈদ’, ‘পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধ’, ‘২৪-এর বীর’, ‘পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনার’ ছবি।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এ ড্রোন শো আয়োজন করা হয়।

জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ও গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও শোতে স্থান পেয়েছে প্রতীকীভাবে।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, এ ড্রোন শো কেবল বিনোদনের নয়, বরং এটি বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে গণআন্দোলন, মানবিক বিপর্যয় এবং আশা-ভবিষ্যতের ইঙ্গিত।

ড্রোন শোর আগে বেলা ৩টা থেকে শুরু হয় বৈশাখী কনসার্ট। কনসার্টের শুরুতেই পরিবেশনায় অংশ নেয় বান্দরবানের বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল। এরপর গারো ও আরএনআর ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ সংগীত পরিবেশন করে।

শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি। একক সংগীত পরিবেশন করেন মিঠুন চক্র ও পালাকার ইসলামউদ্দিন। রাকিব ও সাগর দেওয়ান পরিবেশন করেন দ্বৈত ও একক সংগীত, আরজ আলী ওস্তাদের সঙ্গে রাকিব পরিবেশন করেন আরও দুটি দ্বৈত গান।

আতিয়া আনিশা পরিবেশন করেন ‘চলো নীরালায়’ সহ তিনটি একক সংগীত, আহমেদ হাসান সানি গেয়েছেন ‘মাঝে মাঝে তুমি এলে’, ‘মানুষ কেন এরকম’ ও ‘গল্প না’। শেষে ‘জুলাই আন্দোলন’সহ তিনটি গান পরিবেশন করেন পারশা। অনুষ্ঠানের একদম শেষ পর‌্যায়ে মঞ্চ মাতান ‘অ্যাশেজ’ ব্যান্ড।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনসহ সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান হামলায় ২২ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি চিত্রশিল্পী দীনা খালেদ জাউরুব নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণে এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দীনা খালেদ জাউরুব গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের প্রতিকৃতি আঁকার জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন। ২০১৫ সালে, সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের অধিকারের ওপর আঁকা চিত্রকর্মের জন্য আল মেজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি।

খান ইউনিসের পশ্চিমে স্যান্ড বিচ রিসোর্টের কাছে তার পরিবারের আশ্রয়কেন্দ্রের একটি তাঁবুতে ইসরাইলি বোমা আঘাত হানে। এ হামলায় জাউরুব প্রাণ হারান।

জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সোমবার এক ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

সেটি রেকর্ডের জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গাছের নিচে একটি সাধারণ টেবিলে দু-তিনটি গামছা দিয়ে মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। চটের ছালায় তুলির আঁচড় দেওয়া হয়, আর ঠিক সেই মুহূর্তে আশ্চর্যজনকভাবে কোকিলের কলরব বার্তাটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

ভাষণের মাঝে হঠাৎ করে কোকিলের গান কিভাবে আসল? সে বিষয়টি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে স্পষ্ট করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ফেসবুকে লেখেন,‘ইউনূস স্যারের বাংলা নববর্ষের ভাষণ রেকর্ড করছিলাম।কাল (আজ) সকালে প্রচারিত হবে। রেকর্ডিংটা করার জন্য বেছে নিয়েছিলাম যমুনারই ছায়াঘেরা এক সবুজ লন। রেকর্ডিং শুরু করব—কোথা থেকে উড়ে এলো একটা কোকিল। কুহু সুরে গান গাইতে শুরু করল আমাদের মাথার ওপরের গাছে বসে। স্যার হাসিমুখে বললেন, ‘যাক, আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের আর দরকার হবে না! সাড়ে তিন মিনিট ধরে চলল স্যারের ভাষণ। আর সেই কোকিল পুরোটা সময় গান গেয়ে সঙ্গ দিল আমাদের।’

এদিকে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।’

খেলাধুলা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) মেন্স ক্রিকেট কমিটির প্রধান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত নিয়োগ পেয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। রোববার (১৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।

২০২১ সালে তিনি প্রথম এই কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ৫২ বছর বয়সী গাঙ্গুলী সতীর্থ অনিল কুম্বলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। তিন বছরের দায়িত্ব শেষে কুম্বলে তার পদ থেকে সড়ে দাঁড়ান।

এছাড়া প্যানেল সদস্য হিসেবে জায়গা ধরে রেখেছেন ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ।

গাঙ্গুলী ও লক্ষ্মণ ছাড়াও এই কমিটিতে আরও আছেন আফগানিস্তানের সাবেক খেলোয়াড় হামিদ হাসান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং তারকা ডেসমন্ড হেইন্স, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটার জোনাথন ট্রট।

অন্যদিকে আইসিসি উইমেন্স ক্রিকেট কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক অফ স্পিনার ক্যাথেরিন ক্যাম্পবেল। কমিটিতে তার সঙ্গী হয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় আভ্রিল ফাহে ও ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার ফোলেটসি মোসেকি।