খেলাধুলা

বরিশালে বিপিএলের শিরোপা উদযাপন অনুষ্ঠানে ভাঙচুর-হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) নগরের বেলস পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই মঞ্চের সামনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন বিশৃঙ্খলাকারীরা। এ সময় তাদের কারণে দর্শকদের পাশাপাশি কয়েকজন সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নির্ধারিত সময়ের আগেই ট্রফি প্রদর্শনী দেখতে ভিড় করতে থাকেন বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিকেল ৪টার দিকে বিশৃঙ্খলাকারীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মঞ্চের কাছাকাছি চলে যান।

মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদসহ খেলোয়াড়েরা মঞ্চে উঠলে তারা আরও কাছে যেতে চান। এতে হুড়োহুড়ির দৃশ্য দেখা যায়।

এ সময় বিশৃঙ্খলাকারীদের কারণে সাংবাদিকদের ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি হয়। কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত মঞ্চ ছাড়েন সবাই।

মাই টিভির বরিশাল প্রতি‌নি‌ধি পারভেজ রাসেল জানান, তার বুম ছিনতাই হয়েছে এবং ট্রাইপড ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি মারধরের শিকার হই। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় ‍আছি। নিরাপত্তা ছাড়া ‍এমন অনুষ্ঠান ‍এর ‍আগে বরিশালে দেখিনি।

এখন টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক ‍আমিনুল ‍ইসলাম বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙে গেছে। আমি ও রিপোর্টার অমিত হাসান কোনোমতে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি। জানি না হয়তো ‍আরেকটু হলে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।

এখন টেলিভিশনের রিপোর্টার অমিত হাসান বলেন, ‍আমি হাতে-পায়ে গুরুতর ‍আঘাত পেয়েছি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ‍এখন বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে ‍এমন ‍আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুঃখজনক।

দেশ টিভির ফটো সাংবাদিক শাহীন সুমন বলেন, কোনোমতে জীবন নিয়ে ফিরেছি। ‍আর ‍একট‍ু হলেই হাত ভেঙে যেত। নিরাপত্তার বিষয়টি লক্ষ রাখা জরুরি ছিল।

যমুনা টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন বলেন, ট্রাইপড ও ক্যামেরা বাঁচাতে গিয়ে ‍আমি পড়ে যাই। ‍‍একটুর জন্য গুরুতর ‍আহত হইনি। নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

চ্যানেল ২৪ ‍এর ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা বলেন, ‍আমার ট্রাইপড ভেঙেছে। ক্যামের‍া সেভ করতে গিয়ে ‍আহত হয়েছি। ‍এত বড় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা ‍উচিত ছিল।

তবে বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বরিশালের বিপিএল ট্রফি ও খেলোয়াড়দের দেখতে পেরে খুশি ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাদের দাবি, আগামীতে যেন বিপিএলের ম্যাচ বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়।

সাব্বির নামে ‍এক দর্শক বলেন, বড় অনুষ্ঠানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। নারী দর্শকদের হেনস্তা করা হয়েছে। ‍আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‍আরও কঠোর হওয়া ‍উচিত ছিল।

নাবিলা নামে এক নারী দর্শক জানান, যা হয়েছে তা দুঃখজনক। তবে আগামীতে বিপিএল খেলা যেন বরিশালের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, সেই দাবি থাকবে।

ফরচুর বরিশালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান জানান, জাতীয় দল, বিদেশি খেলোয়াড়সহ ২২ জন এবং টিম ম্যানেজার, কোচসহ আরও ৪০ জনের একটি দল বরিশালে এসেছে।

তবে বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে কল কেটে দেন তিনি। পরে ‍আবারও কল দিলে আর ধরেননি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রত‌্যাশার চেয়ে দর্শক বে‌শি হয়েছে এবং দর্শকদের উৎসাহে আমাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। পু‌লিশের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভা‌বিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে, তারপরও কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।

রাজনীতি

শেখ হাসিনার পাতা ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে।

অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিম (শাসনামল) দায়ী। একটা অন্ধকারকে আরেকটা অন্ধকার দিয়ে দূর করা যায় না। আলো দিয়ে দূর করতে হয়। সেই আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে সামনের দিকে যেতে হবে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে রাজধানীর হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের উৎখাতের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু আমরা যেন হাসিনার পাতা ফাঁদে পা না দিই। আমাদের সাবধানতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের মহাসচিব ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিকেল ৪টা ৫৮ মিনিটে দেশে ফেরেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডনে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা রহমান।

গত ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’- এ আমন্ত্রিত হয়ে যোগ দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিনিধি জায়মা রহমান।

সফর সম্পর্কে মির্জা ফখরুল জানান, যুক্তরাষ্ট্র সফর খুব সফল হয়েছে। যে উদ্দেশ্য ছিল, তা সফল হয়েছে।

বেগম জিয়া কেমন আছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার চিকিৎসা হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম ভালো আছেন। ট্রিটমেন্ট চলছে।

জায়মা রহমানের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, ভালো, ভালো অভিজ্ঞতা।

এরপর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আসল কথাই আসেন না কেন।

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটা অন্ধকারকে আরেকটা অন্ধকার দিয়ে দূর করা যায় না। তাকে আলো দিয়ে দূর করতে হয়। সেই আলোকবর্তিকা জাগিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে যেতে হবে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আহ্বান জানাতে চাই, সবাই একযোগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য, স্থিতিশীলতারক্ষার জন্য ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমরা তো বাইরে ছিলাম, ডেভিল হান্ট সম্পর্কে জানি না। তবে ‘ডেভিল হার্ট’ মানে ফ্যাসিস্টকে জানি। এতদিন পর বোধোদয় হয়েছে, সেজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

রাজনীতি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে পিরোজপুর জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর মধ্যে দুই আসনে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের হলরুমে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসাইন হেলাল।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা তালিমুল বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও ভান্ডারিয়া উপজেলা আমির আমির হোসেন।

তিনটি আসনের প্রার্থীরা হলেন- পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি ও নাজিরপুর) আসন থেকে সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী, পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ার) থেকে সাঈদীর বড় ছেলে শামীম সাঈদী এবং পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জামায়াতের মঠবাড়িয়া উপজেলা আমির অধ্যাপক শরীফ আব্দুল জলিল।

অর্থনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, ব্যাংক ডাকাতরা দেশের জনগণের সম্পদ লুট করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের অর্থনীতি নিয়ে রোববার সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, এস আলম গ্রুপের সব সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানি ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১২টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা, অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ৬ মাসে দেশের অর্থনৈতিক অর্জন এবং আগামী দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান।

বৈঠকে জানানো হয়, পতিত সরকারের ফেলে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতি ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কমেছে মূল্যস্ফীতি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট (বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য) এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তবে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ বিদায়ি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ।

ওই বছরের আংশিক হিসাবে যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সব বাহিনীর সমন্বয়ে রোববার ৬টা থেকেই ‘সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার’ কাজ শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং অপূর্ব জাহাঙ্গীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম বলেন, যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশ দিয়েছেন। ‘এ ব্যাপারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, তারা (ব্যাংক ডাকাতরা) যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে। যে করেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘যারা ব্যাংকের টাকা লুট করেছেন, আসলে তারা দেশের সাধারণ মানুষের টাকা নিয়েছেন। তাই যেভাবে হোক তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।’

সভায় অধ্যাপক ইউনূস অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, শুরুতে অর্থনীতি খুব বাজে অবস্থায় ছিল। সেই জায়গা থেকে এখন ভালো জায়গায় এসেছে। তবে আরও ভালো জায়গায় নিতে হবে। এটা সরকারের চ্যালেঞ্জ। শফিকুল আলম বলেন, বেক্সিমকোর সঙ্গে কিছু জটিলতা রয়েছে। এই জটিলতার সুষ্ঠু সমাধানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রবাসী আয়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অভিবাসন বাড়ছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এখনই এটা নিয়ে উৎসব করার কিছু নেই। এ খাতে এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস অভিবাসন বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে যেসব দেশ বর্তমানে বাংলাদেশি অভিবাসনগামীদের ভিসা বন্ধ রেখেছে, তা কীভাবে দ্রুত চালু করা যায়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, ব্যাংকের চুরি হওয়া টাকা উদ্ধারে ইতোমধ্যে এস আলম গ্রুপের সব সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নগদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট করেছেন, এমন ১২ জন অপরাধী চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কীভাবে টাকা নিয়েছেন সেগুলো বের করতে আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিচ্ছি। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সবগুলো সংস্থা এ নিয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ওই বৈঠকে আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা দিতে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ঘুরে গেছে।

সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিনিধিদলও শিগগিরই আসছে। এর বাইরে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে কথা বলছি। এক্ষেত্রে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে- গত ১৫ বছরে দেশ থেকে যে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৮ লাখ কোটি টাকা) অর্থ পাচার হয়েছে, তা দেশে ফিরিয়ে আনা। এই টাকা কারা নিয়েছেন, কোথায় গেছে- এগুলো চিহ্নিত করতে পারলে কাজ অনেক এগিয়ে যাবে। প্রথমে যে দেশে টাকা পাচার হয়েছে, সেখানে এই টাকা-সম্পদ জব্দ করতে হবে। পরে তা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা থাকবে।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে এসেছে। এখন আমরা একটা স্থিতিশীল জায়গায় আসছি। বর্তমান যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। রিজার্ভের অবস্থা সামনে আরও ভালো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম আরও বলেন, দ্রুত আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে। সব বাহিনীর সমন্বয়ে ‘সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার’ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কাজ শুরু করেছে। কমান্ড সেন্টার সমন্বয় করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেন্টারটির সঙ্গে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্ট গার্ড, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যুক্ত থাকবেন।

রাজধানীসহ দেশের কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে কমান্ড সেন্টার থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ৫ মাসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছরের জুলাইয়ে যা ছিল ১১ শতাংশ। আগামী জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি কমে ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসবে। মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চলতি বছরে নয় লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হবে।

বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া পরিশোধে ভর্তুকি ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর মাধ্যমে ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে চলতি বছরে প্রায় ১১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ১০ শতাংশ ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কূপ খনন করে দৈনিক ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

২০২৮ সালের মধ্যে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫শ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মিটিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অটোনমি (স্বায়ত্তশাসন) নিশ্চিত করতে বলেছেন।

প্রেস সচিব বলেন, বর্তমানে টাকা ছাপানো বন্ধ। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বন্ধ আছে। নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় অব্যাহত আছে। দেশের ১ কোটি পরিবার ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য পাচ্ছে। ১৩ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত আছে। যে পরিমাণ মজুত আছে আর আমদানি হচ্ছে তাতে পণ্যের দাম আরও কমে আসবে।

তিনি বলেন, দেশে কোরিয়ান ইপিজেড নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। জমি জটিলতার কারণে তারা বিনিয়োগ করছিল না। পতিত স্বৈরাচাররা এই সমস্যা তৈরি করেছিল। এখন এই ভূমি সমস্যার সমাধানে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কোরিয়ান ইপিজেডকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ভূমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বিনিয়োগে আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, এই ইপিজেডে কোরিয়ার অনেক বড় কোম্পানি আছে। আশা করছি, সমস্যা সমাধানের ফলে সেখানে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।

শফিকুল আলম জানান, গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ মার্কিন ডলার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা আসছে। কিন্তু বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। পুলিশের তথ্য বলছে, গত ৫ বছরের মধ্যে খুন সবচেয়ে কম।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের পালিয়ে যেতে যারা সহায়তা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? জবাবে প্রেস সচিব বলেন, যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের বেশির ভাগই ৫ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে। ওই সময়ে দেশে কোনো সরকার ছিল না। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। পুলিশকে কাজে ফেরাতে অনেক সময় লেগেছে। এরপরও এ অপরাধে কারা জড়িত ছিল, তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

আন্তর্জাতিক

রুশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ইউক্রেন একদিনে আরও ২৩৫ সৈন্য হারিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ব্যাটলগ্রুপ ইস্ট অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী একটি ট্যাঙ্ক, একটি সাঁজোয়া যুদ্ধযান এবং ১৪০ জনের বেশি সৈন্য হারিয়েছে।

রুশ মন্ত্রণালয়ের মতে, ব্যাটলগ্রুপ ইস্ট-এর ইউনিটগুলো ফ্রন্টলাইনের পরিস্থিতি উন্নত করেছে এবং দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের নোভোসিয়োলকা, বারলাটস্কোয়ে, নভোপোল, নভোওচেরেতোভাতোয়ে এবং জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের গুলিয়াইপোলের কাছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর তিনটি যান্ত্রিক, ট্যাঙ্ক ব্রিগেড এবং তিনটি প্রতিরক্ষা ব্রিগেডের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে।

একই সময়ে ব্যাটলগ্রুপ নর্থ ও ডিনেপ্রো অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ৯৫ জন সৈন্য, দুটি গোলাবারুদ ডিপো এবং তিনটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ কেন্দ্র হারিয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে জানিয়েছে, খারকিভ ফ্রন্টে, ব্যাটলগ্রুপ নর্থের ইউনিটগুলো সিনেলনিকোভো, মালিয়ে প্রোখোদি এবং ঝোভটনেভে এলাকায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনী, প্রতিরক্ষা ব্রিগেড ও ন্যাশনাল গার্ড ব্রিগেডের ওপর হামলা চালায়। এতে ইউক্রেনীয় বাহিনী ৩০ জন সৈন্য, দুটি ফিল্ড আর্টিলারি গান ও একটি যান হারায়।

এদিকে ব্যাটলগ্রুপ ডিনেপ্রোর ইউনিটগুলো জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের নোভোআন্দ্রেভকা, মালিয়ে শেরবাকি, কামেনস্কোয়ে, স্টেপনোগোরস্ক এবং খেরসন অঞ্চলের বেরিস্লাভ ও ওত্রাদোকামেনকায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর তিনটি যান্ত্রিক, দুটি উপকূল প্রতিরক্ষা এবং দুটি আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ব্রিগেডের ওপর হামলা চালিয়ে ৬৫ জন সৈন্য, একটি পদাতিক যুদ্ধযান ও সাতটি গাড়ি ধ্বংস করে। এছাড়া দুটি গোলাবারুদ ডিপো ও তিনটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ কেন্দ্রও ধ্বংস করা হয়েছে। সূত্র: তাস

জাতীয়

উত্তরাঞ্চলের প্রাণ তিস্তা শুকিয়ে কঙ্কালসার ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে শত শত পরিবার আজ নিঃস্ব ও ভূমিহীন। বন্যা, খরায় তারা বিপর্যস্ত। রোববার রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা সেতুপারে আয়োজিত ‘তিস্তা নিয়ে করণীয়’ শীর্ষক গণশুনানিতে দুঃখ-দুদর্শার কথা তুলে ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিস্তাপারের মানুষ। তারা বলেন, আমরা দল বুঝি না, নেতা বুঝি না, আমরা পরিকল্পিত তিস্তা প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। গণশুনানিতে পানিসম্পদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত প্রস্তুত করা হবে। চীনের সঙ্গে যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চুক্তি হয়েছিল তা টেকসই হতো না। তাই পরিকল্পনায় কী থাকবে, কী থাকবে না- এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং তিস্তা পারের মানুষের মতামত নিয়ে আবারও চীনের সঙ্গে এ প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। নদী ভাঙন রোধে মার্চের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, তিস্তা কোনো দেশের একক নদী নয়। তিস্তাকে কোনো দেশের একক নদী ভাবলে তা ভুল হবে। তিনি বলেন, আমাদের বন্ধু হলে বর্ষাকালে পানি ছাড়ার আগে কেন আমাদের জানান না? অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিস্তাপারের মানুষের অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু আমাদের কাছে তেমন অর্থ নেই, তবু তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, গত সরকার প্রধান বলে গেছেন আমরা যা ভারতকে দিয়েছি-ভারত তা চিরকাল মনে রাখবে। কিন্তু ভারত মনে রাখার মতো এ দেশকে কিছুই দেয়নি। আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায় করব। তিস্তা যেন এ এলাকার মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়। তিনি আরও বলেন, তিস্তার চরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হবে। ফসলের ন্যায্যমূল্য যাতে কৃষকরা পান সেজন্য কোল্ড স্টোরেজ এ এলাকায় নির্মাণ করা হবে। উত্তরাঞ্চলে কৃষি শিল্পের বিপ্লব ঘটানো হবে। তিস্তা নদীতে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আলম, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি, আলহাজ এমদাদুল ভরসা, একেএম মমিনুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. আতিক মোজাহিদ, আবু সাঈদ লিয়ন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন প্রমুখ।

গণশুনানিতে রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা জেলাসহ তিস্তা তীরবর্তী গ্রামের মানুষ অংশ নেন। তারা বলেন, আমরা ত্রাণ চাই না, মিথ্যা আশ্বাস শুনতে চাই না। আমরা দল বুঝি না, নেতা বুঝি না, আমরা পরিকল্পিত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন চাই। দল যার যার তিস্তা সবার। শুনানিতে অংশ নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের রংপুরের সমন্বয়ক ইমদাদুল হক ভরসা বলেন, আমি কৃষকের সন্তান, তাই কৃষকের কষ্ট বুঝি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

গঙ্গাচড়া থেকে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে শয়রত আলী আকন্দ (৬৫) বলেন, অতীতের সরকারগুলো তিস্তা নিয়ে কতনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু কোনোটাই বাস্তবায়ন হয়নি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আমাদের বংশধররা সুস্থ জীবন পাবে। এ স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে মরলে শান্তি পাব।

বিনোদন

পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হানিয়া আমির। সম্প্রতি বলিউডে কাজ করার বিষয়ে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, যদি ভালো মানের কোনো প্রস্তাব আসে, তাহলে অবশ্যই তিনি তা বিবেচনা করবেন।

সম্প্রতি এক প্রশ্নোত্তর পর্বে এক ভক্তের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ওই সময় ভক্তটি তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি ভারতের সিনেমায় কাজ করবেন? উত্তরে হানিয়া বলেন, ‘যদি প্রকল্পটি উচ্চমানের হয়, তবে আমি অবশ্যই এটি বিবেচনা করব’।

হানিয়া আমির স্বভাবতই তার মনোমুগ্ধকর উপস্থিতি ও শক্তিশালী অভিনয়ের জন্য পাকিস্তানের বিনোদন জগতে সুপরিচিত।

লাস্যময়ী পাকিস্তানি তারকার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিনেমা জগতে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা চলছে। যা বরাবরই আলোচিত এবং সংবেদনশীল বিষয়।

এদিকে বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী রাখি সাওয়ান্ত সম্প্রতি বলেছেন, তিনি বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের বিপরীতে হানিয়া আমিরকে দেখতে চান। তবে তার এই চাওয়াটা কোনোদিন বাস্তবে রূপ নেবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।

জানা গেছে, অভিনেত্রী হানিয়া আমির অনেক আগে থেকেই বলিউডের ভক্ত। বিশেষ করে তিনি বলিউড বাদশা শাহরুখ খানকে অত্যন্ত পছন্দ করেন। তার সঙ্গে অভিনয়েও খুব আগ্রহী তিনি।

এর আগে পাকিস্তানি অভনেত্রী হিসেবে মাহিরা খানই শাহরুখের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন।

এদিকে একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে হানিয়া তার শৈশবের কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, তিনি ‘একজন প্রাণবন্ত, বুদ্ধিমান এবং রসিক’ ঘরানার একটা মেয়ে। যার ছিল চুল রং করার অদ্ভুত শখ। এমনকি একবার তিনি নিজের চুল নিজেই রং করার চেষ্টা করেছিলেন।

অভিনয়ের দিক থেকে হানিয়া আমির সম্প্রতি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ড্রামা সিরিজ ‘কাভি ম্যায় কাভি তুম’-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছেন। এতে তার বিপরীতে ছিলেন সুপারস্টার ফাহাদ মুস্তাফা। সিরিজটি দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

যদিও বলিউডে অভিষেকের ব্যাপারে হানিয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নিশ্চিত নয়। তবে তার ভক্ত-সমর্থকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কবে তাকে বলিউডের রূপালী পর্দায় দেখা যাবে! সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

জাতীয়

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের গত ১৬ বছরে জনপ্রশাসন থেকে অবসরে যাওয়া সাবেক ৭৬৪ কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারা তাদের বকেয়া পাওনার পাশাপাশি পেনশনের আর্থিক সুবিধাও পাবেন।

রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক পাঁচটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর মধ্যে সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১১৯ জন। গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপ-সচিব পদে চারজনকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পেয়েছেন।

পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হাসিমুখে দেখা যায় অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন কর্মকর্তাকে। তারা জনপ্রশাসনের নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রেষণ (এপিডি) অনুবিভাগে আসেন। তারা বলছিলেন, দীর্ঘ সময় রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন কারণে তাদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়।

অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া এক সাবেক কর্মকর্তা বলেন, চাকরির বয়স থাকলে তিনি এতদিনে সচিব হয়ে যেতেন। কিন্তু বঞ্চনার কারণে তিনি তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

যেসব সুবিধা পাচ্ছেন পদোন্নতিপ্রাপ্তরা

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি পাওয়া সচিব, অতিরিক্ত সচিব, গ্রেড-১, যুগ্ম সচিব এবং উপ-সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সাবেক কর্মকর্তারা বর্তমান অর্থবছরে তাদের বকেয়া পাওনাদির ৫০ শতাংশ পাবেন। বাকি ৫০ শতাংশ পরবর্তী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) পাবেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বয়স ৫৭/৫৯ বছর পূর্তি পর্যন্ত সর্বশেষ পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে বহাল ছিলেন বলে গণ্য হবেন।
তারা অবসরোত্তর ছুটি বা অবসর প্রস্তুতি ছুটি শেষে অবসরের জন্য নির্ধারিত তারিখে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন মর্মে গণ্য হবেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিধি অনুযায়ী এবং তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বকেয়া বেতন-ভাতাদি পেনশন ইত্যাদি সমন্বয় করে আর্থিক সুবিধাদি পাবেন।

এই সাবেক কর্মকর্তাদের জন্য জারি করা পিআরএল আদেশ বাতিল করা হয়েছে। বেতন নির্ধারণের সময় তাদের অবসরোত্তর ছুটি বা অবসর প্রস্তুতি ছুটি সমন্বয় করতে হবে।

আর অতিরিক্ত সচিব, গ্রেড-১, যুগ্ম সচিব এবং উপ-সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এই সাবেক কর্মকর্তারা এক বা একাধিক পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির তারিখ থেকে বিধি মোতাবেক প্রাপ্যতা অনুযায়ী সব আর্থিক সুবিধাদি পাবেন।

সরকার বদলে ভাগ্যেরও বদল

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা তাদের পাওনা মেটানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন জানান। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এ লক্ষ্যে কমিটি গঠন করে দেয়। পরে তাদের কাছে আবেদন আহ্বান করে।

২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে অবসরে যাওয়া বঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করে বঞ্চনা নিরসন কমিটি গত ১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন দেয়।

রয়েছে অসন্তোষও

বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে ভূতাপেক্ষভাবে সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১১৯ জন। তাদের মধ্যে ৪৫ জনই ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা।

অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন নিজে পদোন্নতি না পেলেও এক ব্যাচ থেকে এত বেশি সংখ্যক কর্মকর্তার সচিব পদে পদোন্নতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, জনপ্রশাসন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বর্তমান সরকারে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় সবাই ১৯৮২ ব্যাচের।

‘এই ১১৯ জন সচিব পদোন্নতির মধ্যে ৪৫ জন ১৯৮২ ব্যাচের (বিশেষ ব্যাচসহ)। আমিও অতিরিক্ত সচিব ছিলাম এবং বিগত সরকার দুর্নীতি দূর করতে চেয়ে অন্যায়ভাবে চারটি শাস্তি দিয়েছিল। প্রায় দেড় বছর ওএসডি অবস্থায় রেখে চাকরি থেকে বিদায় দিয়েছিল। ’

প্রশ্ন রেখে তিনি লেখেন, অতিরিক্ত সচিব যারা পদোন্নতি পেলেন, তারা কীভাবে কোন ক্রাইটেরিয়ায় বঞ্চিত ছিলেন? কীভাবে নিপীড়িত-নির্যাতিত ছিলেন?

তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, পদোন্নতিপ্রাপ্ত ১১৫ জনের মধ্যে ৪৫ জনই কীভাবে ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা হলেন? এই অতিরিক্ত সচিব, যারা সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন, তাদের বঞ্চিত হওয়ার কাহিনী জানতে চেয়েছেন তিনি।

তা না হলে মাহবুব কবীর মিলনের দাবি, সব অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবকে ভূতাপেক্ষ সচিব পদোন্নতি দিতে হবে। তিনি লেখেন, আমি মামলা করব হাইকোর্টে, সেখানে অবশ্যই জানতে চাইব এই অতিরিক্ত সচিবদের বঞ্চনার কাহিনী, কীভাবে ১৯৮২ ব্যাচের ৪৫ কর্মকর্তা বঞ্চনার শিকার হলেন।

জাতীয়

বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১৪ নাগরিককে একুশে পদক- ২০২৫ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই তথ্য জানানো হয়।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন- শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে উস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) ও ফেরদৌস আরা, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন এবং চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা, গবেষণায় মঈদুল হাসান, ভাষা ও সাহিত্যে শহীদুল জহির (মো. শহীদুল হক) (মরণোত্তর) ও হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর), সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ড. শহীদুল আলম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহেদী হাসান খান, সাংবাদিকতায় মাহফুজ উল্লা (মরণোত্তর) এবং সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমান।

এছাড়া শিক্ষায় পাচ্ছেন ড. নিয়াজ জামান ও সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর)।

এ বছর ক্রীড়ায় একুশে পদক পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।

রাজনীতি

উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।

এতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।