রাজনীতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়ার ওপর ৪৩টি মতামত ও সুপারিশ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা পড়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)সহ আটটি রাজনৈতিক দল, দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৩৩ জন ব্যক্তি রয়েছেন। রয়েছেন বেশ কয়েকজন সাবেক আমলাও। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বেশির ভাগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে কোনো মতামত জানায়নি। গত ১০ জুলাই ওই খসড়ার ওপর মতামত জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। গত ২৯ জুন এ খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল ইসি। যদিও বিএনপি নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর মতামত দিয়েছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়ার বেশির ভাগ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে বিএনপি। তবে দলীয় প্রধানের পাশাপাশি মহাসচিবের হেলিকপ্টার বা আকাশযানে নির্বাচনি প্রচার চালানোর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। নির্বাচনের সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই’র অপব্যবহারের বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় যুক্তের কথা বলেছে দলটি।

অপরদিকে খসড়া আচরণ বিধিমালায় ব্যাপক পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি নির্বাচনে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় কার্যক্রমে ব্যবহার নিষিদ্ধ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বনসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে খসড়া বিধিমালায় কয়েকটি ধারা অস্পষ্ট বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। অন্যদের সুপারিশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সংগঠন থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করবেন তারা। এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য কিছু সুপারিশ কমিশন আচরণ বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে বলে ধারণা তাদের। তারা আরও জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী খসড়া নিয়েও কাজ করছে কমিশন। আরপিও সংশোধনের ধরন অনুযায়ী বিধিমালায় পরিবর্তন আসার কথা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, আরপিও সংশোধনের পর আচরণ বিধিমালা সংশোধন করা হয়। এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আরপিও সংশোধনের আগেই আচরণ বিধিমালার খসড়া প্রকাশ করেছে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আচরণ বিধিমালার ওপর যেসব মতামত এসেছে, সেগুলো অ্যাড্রেস করা লাগবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা ওইসব মতামত কম্পাইল করে কমিশনে জমা দেবেন। আগামী কমিশন সভায় সেই মতামতগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে কমিশন সভা হতে পারে। জানা গেছে, খসড়া আচরণ বিধিমালার ওপর যে ৪৩টি মতামত জমা পড়েছে তার মধ্যে আটটি রাজনৈতিক দলের। দলগুলো হচ্ছে-বিএনপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ রক্ষণশীল দল, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ ও সম্মিলিত গণতান্ত্রিক দল। টিআইবি ও ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) নামের দুটি প্রতিষ্ঠানও মতামত জমা দিয়েছে। ব্যক্তিপর্যায়ের ৩৩ জনের মধ্যে সাবেক আমলা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রয়েছেন।

রাজনৈতিক দলের মতামত : আরও জানা গেছে, বিএনপি প্রতিটি ধারা অনুযায়ী তাদের মতামত জানিয়েছে। প্রায় সব ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছে। তবে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংজ্ঞায় ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। নির্বাচনি প্রচারে সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটির স্থলে তিনটি ক্যাম্প করার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণাত্মক তথ্য, ভুল তথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই দিয়ে তৈরি কন্টেন্ট) এবং প্রার্থী ও দলীয় নেতাদের চেহারা বিকৃত করে তৈরি করা কন্টেন্ট প্রচার নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে। বিদেশ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার করা হলে বিটিআরসি’র মাধ্যমে তা প্রচার নিষিদ্ধের বিষয়টি যুক্ত করার জন্য বলেছে। গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত নির্বাচনি ডায়ালগে যে দল যত সংখ্যক প্রার্থী দেবে, সেই অনুপাতে সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ’র প্রস্তাবে সশস্ত্র বাহিনীকে নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নিয়োগ দেওয়ার বিধান তৈরি করা, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে গন্তব্যে নিরাপদে ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করা, নির্বাচনি কর্মকর্তা ও প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সবাইকে আচরণ বিধিমালা মানতে বাধ্য করার বিধান তৈরির প্রস্তাব করেছে।

বিকল্পধারা বাংলাদেশ তার প্রস্তাবে ব্যানার তৈরিতে রেক্সিন বা পিভিসি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। দলটি বিলবোর্ডে প্রচারের সুযোগ দেওয়ার ঘোর বিরোধিতা করেছে। এর যৌক্তিকতা হিসাবে দলটি বলেছে, একটি নির্বাচনি আসনে ১০ জন প্রার্থী থাকলে ২০টি করে মোট ২০০টি বিলবোর্ড হতে পারে। এতে ঝামেলা বাড়বে। বিত্তবান প্রার্থীরা এর সুযোগ বেশি নেবে। এতে নির্বাচনি ব্যয় বেড়ে যাবে। এছাড়া দলটি ভোটার ছাড়া কেউ যাতে ভোটকেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে না পারে, সেই বিধান আচরণ বিধিমালায় যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে।

ব্যাপক সংশোধনীর প্রস্তাব টিআইবির : রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় ব্যাপক সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেছে টিআইবি। একই সঙ্গে খসড়া আচরণ বিধিমালার বিভিন্ন বিষয় অস্পষ্ট থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য পৃথক আচরণ বিধিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে। এর যৌক্তিকতায় টিআইবি বলেছে, বিগত কয়েকটি নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে জড়িতরা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রচারণাসহ রাজনৈতিক কার্যক্রমে ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছে। এছাড়া প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদ, ঋণ ও আয়-ব্যয়ের তথ্য যাচাইয়ে অটোমেশন পদ্ধতি প্রস্তুত করতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সমন্বয়ে ওই অটোমেশন পদ্ধতিতে হলফনামা যাচাই করার প্রস্তাব করেছে।

আচরণ বিধিমালায় সংশোধনীর বিষয়ে টিআইবির প্রস্তাবে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংজ্ঞায় প্রধান উপদেষ্টাকে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়া বিধিমালায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নির্বাচনিী ও রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য একটি নতুন ধারা যুক্তের প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। ওই ধারায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আয়-ব্যয়ের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা, দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেওয়া এবং নির্বাচিতদের সম্পদ ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্তের কথা বলেছে। আচরণ বিধিমালার ধারা ১৩ তে একটি উপধারা যুক্ত করে সেখানে প্রচারণায় বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নির্বাচনি প্রচার বন্ধ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা কনসার্ট, ধর্মীয় মাহফিল বা জমায়েত ইত্যাদির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনি প্রচার না চালানোর নিয়ম অন্যতম।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নতুন ধারা বা উপধারা যুক্তের প্রস্তাব করেছে টিআইবি। এ বিষয়ে সংস্থাটির পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত নীতিমালায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে টিআইবি একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে। সেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অপব্যবহারে প্রার্থী ও দলকে দায়ী করার বিধান যুক্তের কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন-পূর্ব অনিয়মের ঘটনায় ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের আগে তদন্ত শেষ করা এবং তদন্ত প্রতিবেদন ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান যুক্তের প্রস্তাব করেছে। অনিয়মের ঘটনায় কোনো প্রার্থী বা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কারও পদ বাতিল করা হলে, ওই ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও সুনির্দিষ্ট যুক্তিসংবলিত প্রতিবেদন ইসির ওয়েবাসইটে প্রকাশের বিধান খসড়া আচরণ বিধিমালায় যুক্তের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ফ্রান্স তাদের ঔপনিবেশিক শাসনামলে কম্বোডিয়ার যে মানচিত্র এঁকেছিল, মূলত সেটাকে কেন্দ্র করেই দুই দেশের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে।

সীমান্ত নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার দীর্ঘ দিনের যে বিরোধ, তা বৃহস্পতিবার নাটকীয়ভাবে তীব্র আকার ধারণ করে।

এদিন কম্বোডিয়ার সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় থাইল্যান্ড। সঙ্গে অভিযোগ তোলে, কম্বোডিয়া তাদের লক্ষ্য করে রকেট ও গোলা ছুড়েছে।

কম্বোডিয়ার হামলায় আট বছরের শিশুসহ থাইল্যান্ডের ১১ বেসামরিক ব্যক্তি ও এক থাই সেনার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কম্বোডিয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া— দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রথমে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে।

কী নিয়ে বিরোধ

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার এ বিরোধের সূত্রপাত এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে, যখন ফ্রান্স প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত নির্ধারণ করে দেয়।

এরপর থেকেই নিজেদের মধ্যকার প্রায় ৮১৭ কিলোমিটারের বিস্তৃত সীমান্ত নিয়ে দুই দেশ বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে। আর প্রতিবারই এ সংঘাত উসকে দিয়েছে জাতীয়বাদী মনোভাব।

বিরোধের সাম্প্রতিক যে পর্ব চলছে, সেটার সূত্রপাত গেল মে মাসে, যখন বিরোধপূর্ণ সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয় এবং এক কম্বোডিয়ান সেনার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পর দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিতে থাকে। থাইল্যান্ড সরকার কম্বোডিয়া সীমান্তে বিধিনিষেধ আরোপ করে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ড থেকে ফল ও সবজি আমদানি বন্ধ করে দেয় কম্বোডিয়া। তারা থাই সিনেমার সম্প্রচার বন্ধের পাশাপাশি থাইল্যান্ড থেকে আসা ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথও বিচ্ছিন্ন করে।

এ উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় বুধবার। সেদিন সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় স্থলমাইন বিস্ফোরণে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর পাঁচ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনার পর থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। তারা কম্বোডিয়া থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে।

অন্যদিকে স্থলমাইন বসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা থাইল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটি থাইল্যান্ড দূতাবাস থেকে নিজেদের সব কর্মীকে প্রত্যাহারও করে নেয়।

বিরোধের প্রভাব অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও

কম্বোডিয়ার শাসনব্যবস্থা কার্যত একদলীয়। ২০২৩ সালে ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা ছাড়ার আগে প্রায় চার দশক ধরে দেশটি শাসন করেন কর্তৃত্ববাদী নেতা হুন সেন।

হুন সেন বর্তমানে সেনেটের প্রেসিডেন্ট এবং এখনও তিনি দেশটির অত্যন্ত ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

চলমান বিরোধের মধ্যে তিনি জাতীয়বাদী মনোভাবকে উসকে দিয়ে ছেলের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করা চেষ্টা চালাতে পারেন বলে মনে করেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ গবেষক ম্যাট হুইলার।

তিনি বলেন, “হুন মানেত তার বাবার ছায়ায় থেকে দেশ পরিচালনা করছেন এবং তার নিজের ক্ষমতার ভিত জোরালো নয়।”

কেউ কেউ বলছেন, এই বিরোধ নানা ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে মানুষের নজর ভিন্ন দিকে নিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

দুটি দেশই ১ অগাস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়তে যাচ্ছে।

এরমধ্যে থাইল্যান্ড দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়েও যাচ্ছে।

সীমান্ত বিরোধ সামলানোর ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নিতে পারার অভিযোগে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে।

থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েতংতার্ন তোপের মুখে পড়েন মূলত একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর।

ফোনালাপটি ছিল কম্বোডিয়ার হুন সেনের সঙ্গে। ওই কথোপকথনে হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ সম্বোধন করেন পায়েতংতার্ন। সঙ্গে বলেন, তার যদি কোনো চাওয়া থাকে, তাহলে তিনি ‘সেটা দেখবেন’।

পায়েতংতার্ন দেশটির সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন।

থাইল্যান্ডে সামরিক বাহিনী খুবই প্রভাবশালী এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তারা প্রতিনিয়ত হস্তক্ষেপ করে থাকে।

সব কিছু মিলিয়ে পায়েতংতার্নের রাজনৈতিক দল— ফ্যু থাই পার্টি একটা খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছে বলে মনে করেন সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আইএসইএএস-ইউসফ ইশাক ইনস্টিটিউটের’ সহযোগী গবেষক তিতা সাংলি।

তিনি বলেন, “সামরিক বাহিনীর কথার বাইরে যাওয়ার খুব বেশি বিকল্প দলটির হাতে নেই।”

থাই সরকার হয়ত ভাবছে, কম্বোডিয়া ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিলে তারা জনসমর্থন ফিরে পেতে পারে।

সমাধান কোন পথে

জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসকে (আইসিজে) সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করে দিতে বলেছিল কম্বোডিয়া। যদিও এতে কোনো সমাধান মেলার সুযোগ নেই। কারণ আইসিজের আদেশ থাইল্যান্ড মানতে বাধ্য নয়।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট— আসিয়ানের চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম দুই দেশকেই ‘সংযত’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সঙ্গে মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছেন।

কিন্তু কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলা আসিয়ানের পক্ষে এই বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন সাংলি।

তিনি বলেন, “একমাত্র চীনই এখানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ দুটি দেশের ওপরেই দেশটির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে।”

কিন্তু চীনের মধ্যস্থতা করা নিয়েও জটিলতা আছে। দুই দেশের সঙ্গে জোরালো অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও চীনকে অনেকেই ‘কম্বোডিয়া-ঘেঁষা’ হিসেবে দেখেন। ফলে তাদের মধ্যস্থতা নিয়ে থাইল্যান্ডের অনেকেই আপত্তি তুলতে পারেন।

সাংলি মনে করেন, চীনের হস্তক্ষেপ নিয়ে আপত্তি তুলতে পারে আশপাশের দেশগুলোও, যারা ওই অঞ্চলের বেইজিংয়ের আধিপত্য নিয়ে আগে থেকেই উদ্বিগ্ন।

থাইল্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেছেন, আলোচনার টেবিলে বসার আগে অবশ্যই লড়াই বন্ধ হতে হবে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিনা উসকানিতে হামলার অভিযোগে এনে সংকট নিরসনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন কম্বোডিয়ার নেতা হুন মানেত।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব নিয়ে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে তুরস্কের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ইয়েনি সাফাক।

কীভাবে বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লব বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে কৌশলগতভাবে সংগঠিত করে এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পথ প্রশস্ত করে। এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের অন্যতম অগ্রনায়ক সাদিক কায়েমের মুখোমুখি হয় তারা।

কীভাবে একটি ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে রূপ নেয় জাতীয় বিপ্লবে। এই বিস্তৃত আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরেন আন্দোলনের সূচনা, পর্দার আড়ালে চলা সমন্বয় প্রচেষ্টা, গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ও তার চোখে ভবিষ্যতের বাংলাদেশের রূপরেখা- এসব বিষয় নিয়ে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটানো এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক সাদিক কায়েমের সাক্ষাৎকারটি যুগান্তর পাঠকদের উদ্দেশে হুবহু তুলে ধরা হলো-

ইয়েনি সাফাক: জুলাই আন্দোলনের পেছনের মূল প্রেরণা কী ছিল? কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট আপনি ব্যাখ্যা করবেন?

সাদিক কায়েম: জুলাই আন্দোলনের মূল প্রেরণা নিহিত ছিল বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের অভিজ্ঞতায়। এই সময়ে রাষ্ট্র মদতপুষ্ট বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, নির্বাচনী জালিয়াতি, সংগঠিত ইসলামবিদ্বেষ ও মানবাধিকারের প্রতি নির্লজ্জ অবহেলা চালিয়ে গেছে।

২০১৩ সালে এক ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়, যখন আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী প্রায় ২০০ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী। একই বছরের ৫ মে, শাপলা চত্বরে আমরা প্রত্যক্ষ করি কীভাবে নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্র ও আলেমদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়।

২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর চালানো হয় হিংস্র দমন অভিযান, যার ফলেও বহু তরুণ প্রাণ হারায়।

২০২৪ সালের ৫ জুন শেখ হাসিনা আকস্মিকভাবে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেন—যা সরকার সমর্থকদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সৃষ্টি করে এবং হাসিনার অবৈধ শাসনকে বৈধতা দেওয়ার এক কৌশল হিসেবে দেখেছিল সবাই। এটি ছিল সহ্যের সীমার শেষ বিন্দু। এই ব্যবস্থাটি মেধার প্রতি অবিচার এবং সেই ক্ষোভই বিস্ফোরণে রূপ নেয়, যা ক্রমে একটি সর্বব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। জীবনের সকল স্তরের মানুষ তখন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রাতিষ্ঠানিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।

ইয়েনি সাফাক: বাংলাদেশে যখন গণমাধ্যম কঠোর নিয়ন্ত্রণে, বিশেষ করে ইন্টারনেট বন্ধের মতো পরিস্থিতিতে প্রতিবাদকারীরা সংগঠিত থেকে কীভাবে যোগাযোগ চালিয়ে গেছেন?

সাদিক কায়েম: সরকার-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম যখন প্রোপাগান্ডার যন্ত্রে পরিণত হয়, তখন সামাজিক মাধ্যমই হয়ে ওঠে আমাদের প্রধান হাতিয়ার। ৫ জুন, কোটা পুনর্বহালের দিনই আমরা ‘কোটা পুনর্বহাল চলবে না’ নামক ফেসবুক গ্রুপ চালু করি। এটি দ্রুতই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে, যেখান থেকে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়।

আমরা প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন করে মডারেটর নিযুক্ত করি যিনি সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পাসের যাবতীয় তথ্য, কর্মসূচি ও সংবাদ সমন্বয় করতেন।

১৮ জুলাই রাতে যখন পুরোপুরি ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায় এবং ২০ জুলাই দেশজুড়ে কারফিউ জারি হয় আমরা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত ছিলাম। আমরা আগে থেকেই অতিরিক্ত সিমকার্ড ও বাটন ফোন সংগ্রহ করতে বলেছিলাম, যাতে অফলাইন যোগাযোগ বজায় রাখা যায়। ফলে প্রতিদিন বিকাল ৩টার মধ্যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়—প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদদাতাদের কাছে সরবরাহ করতাম।

আমাদের ৯ দফা দাবি ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার ভিডিও প্রমাণ আমরা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠাই, কারণ স্থানীয় মিডিয়াগুলো তখন গোয়েন্দা সংস্থার দমনচক্রে কার্যত নীরব হয়ে যায়।

১৫ জুলাই নারীদের উপর নির্মম হামলার পর আন্দোলন এক নতুন গতি পায়। নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আমাদের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এরপর ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে কিছুটা মনোবল ভেঙে পড়ে, কিন্তু ১৮ জুলাই থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও শহুরে মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব নেয়। পরে কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররাও সম্পূর্ণভাবে যুক্ত হয়। শুধু যাত্রাবাড়িতেই একশ’র বেশি মানুষ শহীদ হন।

১৫ জুলাইয়ের নারীদের রক্তাক্ত ছবি সাধারণ মানুষের বিবেক নাড়িয়ে দেয়—এটি ছিল এক মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত, যা বস্তিবাসী ও শহুরে মধ্যবিত্তদের মধ্যে সমানভাবে প্রভাব ফেলেছিল। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বিভাজন পেরিয়ে একটি ঐক্য গড়ে ওঠে, যা বাংলাদেশে নজিরবিহীন।

ইয়েনি সাফাক: এই বিপ্লবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁকগুলো কোনগুলো ছিল? কীভাবে চাপ মোকাবিলা করেছেন?

সাদিক কায়েম: ১৮ জুলাইয়ের পর দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারফিউ এবং একের পর এক হত্যার ঘটনায় ভয় ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে পুরো আন্দোলনের সমন্বয় দায়িত্ব এসে পড়ে আমার কাঁধে। আমি প্রতিদিনের কর্মসূচি, বিবৃতি ও নেতাদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করি।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও মাহফুজ আলম ওই সময়কার মূল কৌশলগত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এস এম ফারহাদ, মোহিউদ্দিন খান, মনজুরুল ইসলাম, সিবগাতুল্লাহ ও রিফাতসহ অনেকেই নিরন্তর কাজ করে যান মাঠে ও আড়ালে। ড. মির্জা গালিব ছিলেন পুরো বিপ্লব জুড়ে কৌশলগত নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ মেধাস্রোত।

আন্তর্জাতিক যোগাযোগে জুলকারনাইন সায়ের (আল-জাজিরা), সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন এবং পিনাকি ভট্টাচার্য অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। দেশীয় মিডিয়া স্তব্ধ থাকলেও তারা তথ্য পৌঁছে দেন প্রবাসী ও বৈদেশিক মহলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সাংবাদিক, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) ও মোবাইল সাংবাদিকেরা মাটির কাছাকাছি থেকে রিপোর্ট করে তথ্যপ্রবাহ জাগিয়ে রাখেন।

চরমতম পরীক্ষাটি ছিল মনোবল ধরে রাখা। প্রতিদিন শতাধিক শহীদ হচ্ছেন, বহু সমন্বয়ক গ্রেফতার ও নির্যাতিত হচ্ছেন। ২৮ জুলাই রাষ্ট্রীয় চাপের মুখে কিছু নেতাকে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণাও করানো হয়। আমরা তৎক্ষণাৎ তা প্রত্যাখ্যান করি এবং বলি—শেখ হাসিনা অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক আসে ৪ আগস্ট, যখন ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণের ৯ দফা দাবি ও অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা একত্রিত করে চূড়ান্ত দাবি নির্ধারিত হয়—শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমি বুঝতে পারি, ৫ আগস্ট শাহবাগে দুপুর ২টায় বিক্ষোভ ডাকলে আওয়ামী লীগ আগে জায়গাটি দখল নিতে পারে। তাই আমি সকাল ১০টায় শুরু করার প্রস্তাব দিই এবং শেষ পর্যন্ত সেটিই বাস্তবায়িত হয়।

ঢাকাকে ১০টি অঞ্চলে ভাগ করে একযোগে বিক্ষোভের সিদ্ধান্তই আন্দোলনের গতি নির্ধারণ করে দেয়। পরদিন ৫ আগস্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের যৌথ আক্রমণ চালানো হয় আন্দোলনকারীদের উপর। কিন্তু এই দমনই জনগণের প্রতিরোধ মনোভাব আরও দৃঢ় করে এবং হাসিনার পতনের ভিত্তি তৈরি হয়।

এ সময়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে আবদুল কাদের, হান্নান মাসুদ, মাহিন সরকার, রিফাত রাশিদ এগিয়ে আসেন।

আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতৃত্বের কাঠামোকে সংহত ও নির্ভরযোগ্য রেখেছি—চিহ্নিত ছাত্রনেতাদের বাইরে রেখে অভ্যন্তরীণ কৌশলগত নেতৃত্ব গড়ে তুলেছি। তাতেই আমরা সংগঠনের ভারসাম্য রক্ষা করতে পেরেছি। ক্যাম্পাসের স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্রদের আমরা সাহস জুগিয়েছি, কিন্তু কৌশলগতভাবে নির্দেশনা দিয়েছি পেছন থেকে।

ইয়েনি সাফাক: সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং ভারত ও চীনের মতো বিদেশি শক্তির প্রভাব আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন? ভবিষ্যতের কূটনীতি নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

সাদিক কায়েম: আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে সেনাবাহিনীর কিছু জুনিয়র কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সহানুভূতির ইঙ্গিত আমরা পেয়েছি। তারা বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। যদিও সিনিয়রদের অনেকেই আগের শাসনের সুবিধাভোগী ছিলেন, কিন্তু নতুন প্রজন্ম রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের সেতুবন্ধন রচনায় আগ্রহী।

আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই—যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণহত্যায় জড়িত ছিলেন—তাদের রাজনীতিতে স্থান নেই যতক্ষণ না তারা বিচারের মুখোমুখি হন।

আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল—জার্মানির চরমপন্থি সংগঠনের মতোই তাদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।

ভারত গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশকে একপ্রকার উপনিবেশ হিসেবে ব্যবহার করেছে। তারা শুধু হাসিনার শাসন সমর্থনই করেনি, বরং ৫ আগস্টের গণহত্যাকেও নীরব সম্মতি দিয়েছে। তারা ভারতের মুসলমানদের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে—এই দিক থেকে তারা দক্ষিণ এশিয়ার ইসরাইলে পরিণত হয়েছে। আমরা তাদের আধিপত্য আর মানতে রাজি নই।

চীনের সঙ্গে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই—স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিতে।

এই বিপ্লব কারও দয়া বা বিদেশি হস্তক্ষেপে আসেনি—এটি এসেছে আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগে। তাই আমাদের কারো কাছে ঋণ নেই, আমরা স্বাধীনভাবে কূটনীতি চালিয়ে যাব—যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা ভারত—সবার সঙ্গে সমানভাবে।

ইয়েনি সাফাক: আপনি ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান? তরুণদের উদ্দেশ্যে আপনার বার্তা কী? আর আপনি নিজে কী করবেন?

সাদিক কায়েম: আমি এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে নাগরিকের মর্যাদা, অধিকার ও স্বপ্ন রক্ষিত হবে—জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, কিংবা মতাদর্শ নির্বিশেষে।

যেখানে সরকার হবে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, থাকবে মতপ্রকাশ ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, এবং আইনের শাসন—যেখানে আইন হবে সকলের জন্য সমান।

আমরা চাই এমন অর্থনীতি, যেখানে ধনিক শ্রেণির একচেটিয়া ক্ষমতা নয়—গ্রামের কৃষক, শ্রমিক, নারী ও যুবকের জন্য হবে স্বনির্ভরতা ও সম্ভাবনার পথ।

আমরা চাই এমন শিক্ষা, যা কেবল পরীক্ষায় পাস করানো নয়—চিন্তা, মানবিকতা ও নৈতিকতাকে উৎসাহিত করবে।

তরুণদের বলব—এই বিপ্লব প্রমাণ করেছে, তরুণরাই জাতির চালিকাশক্তি। তোমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ, পোস্ট, প্রতিবাদ—সবই ইতিহাস গড়েছে। কখনও নিজের কণ্ঠকে তুচ্ছ ভেবো না।

আমি নেতৃত্বকে দেখি দায়িত্ব হিসেবে, ক্ষমতা নয়। আমি এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর যে ভালোবাসা ও আস্থা পেয়েছি—তা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।

তবে আমি রাজনীতিকে পেশা হিসেবে দেখি না। আমি চাই নেতৃত্ব গড়ে উঠুক প্রতিষ্ঠান ও মূল্যবোধ-ভিত্তিক হয়ে—ব্যক্তিনির্ভর নয়।

আমি নিজেকে দেখতে চাই এক সংগঠক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে—যিনি তরুণ নেতৃত্বের বিকাশে সহায়তা করবেন।

নতুন বাংলাদেশ শুধু সম্ভাবনা নয়—এটি সময়ের দাবি। হয় আমরা এগিয়ে যাব, নয়তো আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যাব। কিন্তু আমি নিশ্চিত, এবার আমরা এগিয়ে যাব—কারণ তরুণরা জেগে উঠেছে, জনগণ আর পেছনে ফিরবে না।

রাজনীতি

জামায়াত দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যারা দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

আজ শুক্রবার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিগত ৫৪ বছরে জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের একজন নাগরিকের প্রতিও অবিচার করেনি, জুলুম করেনি। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী করেনি, করবেও না।

জামায়াত আমীর বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেগম পাড়া কিংবা পিসি পাড়া নাই। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতা কখনোই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি এবং যাবেও না। যারা দেশ ও জনগণকে ভালোবাসে না তারাই বিদেশে নিজেদের দ্বিতীয় ঠিকানা গড়ে তুলেছেন এবং তারা নিজেদের স্বার্থে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অপরদিকে দেশের সংকটকালে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ বিদেশ থেকে দেশে এসে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপাত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। যার কারণে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করা হয়েছে।

পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম ইসলাম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি, লুটেরাদের ভয়ের কারণ আছে এজন্য তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে তাদের মা-বোন যদি প্রয়োজনে বাজারে যেতে পারে, হাসপাতালে যেতে পারে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সব কাজ করতে পারে তাহলে কেন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের চলাফেরায় বাঁধা সৃষ্টি হবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সকল ধর্মের নারী-পুরুষ সকলেই রাষ্ট্রের কাছে সমান। রাষ্ট্র ধর্মের কিংবা লিঙ্গের বৈষম্য করতে পারে না। ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সকলের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ও দেশপ্রেমিক সকলকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে চায় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের রাজনীতি হবে কেবলই মানুষ ও মানবতার কল্যাণে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সম্পাদক এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। সম্মেলন দারসুল কুরআন পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মা’ছুম।

সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্যই জামায়াতে ইসলামী ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা কোনো ষড়যন্ত্রে থেমে যায়নি, যাবে না। একটি বৈষম্যহীন সুখী-সমৃদ্ধ আধুনিক কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান এবং মো. শামছুর রহমান। এছাড়াও মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়
  • ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা আটক
  • হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী
  • মামলা উঠাতে দেয়া হচ্ছে হুমকি
  • চোখ বেঁধে হাতুড়ি ও প্লাস দিয়ে নির্যাতন

খুলনায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ফুলতলা শাখার স্টোর রুমে গ্রাহকের চোখ ও মুখ বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং প্লাস দিয়ে নখ উঠানোর সংবাদ যুগান্তরে প্রকাশ হওয়ার পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। সংবাদ প্রকাশের পরপরই ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার সংবাদ প্রকাশের পর পরই ব্যাংকে সকল কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এ সময় একটি রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে ভুক্তভোগী সাইফুল্লাহ হাজেরীর মামা জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় ব্যাংকের তিনজন কর্মকর্তা সহ ৭/৮ জনকে অজ্ঞতানামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জেল্লাল হোসেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর মামা বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ব্যাংকের কর্মকর্তা আশিকুর রহমান, মিজানুর রহমান এবং আব্দুল আল মামুনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাইফুল্লাহ হাজেরী গতকাল দুপুরে জানান, মামলা করার পর থেকে হুমকিতে আছে। মামলা উঠানোর জন্য বিভিন্ন দিক থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে যে টাকা পাবে সেটা দিতে রাজি হয়েছি। আমাদের কাছ থেকে একাধিক ব্লাঙ্ক চেক ও স্ট্যাম্প লিখে নিয়েছে তারা। তারপরেই অমানুষিক নির্যাতন। দুইজনের বিপক্ষে মামলা করায় উল্টো আমাদেরই হুমকিতে রেখেছে তারা। এমন অবস্থায় আমরা কি করব বুঝতেছি না। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থাও খুব ভালো হচ্ছে না। আগামীকাল এখান থেকে অন্য হাসপাতালে যাবো উন্নত চিকিৎসার জন্য।

কি ঘটেছিল ব্যাংকে 

ভূক্তভোগী সাইফুল্লাহ হাজেরী বুধবার খুলনা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতিবেদককে জানায়, মঙ্গলবার ফুলতলার ইসলামী ব্যাংক শাখায় আমাকে যেতে বলা হয়। আনুমানিক বিকাল ৪টার দিকে আমি ব্যাংকে যাই। ঐসময় আমার বাবাও ব্যাংকে ছিলেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারা আমাকে এজেন্ট ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে বিভিন্নভাবে দোষারপ করার চেষ্টা করে।

আমি তাদের বলি আমরা যদি টাকা আত্মসাত করতাম তাহলে এভাবে চলাফেরা করতাম না। তাছাড়া আমার বাবা জমি বিক্রি করে খুব দ্রুতই এই ক্ষতিপূরণ দিবে। ইতিমধ্যে আপনারা ব্ল্যাংক চেক ও ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন।

তখন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলে, দ্রুত টাকা পরিশোধ করতে হবে না হলে সমস্যা। পাশাপাশি আমার ব্লাংক চেকে স্বাক্ষর করতে বলে। আমি তখন আমার বাবাকে চেকবই আনার জন্য বাড়িতে পাঠায়। এই সুযোগে ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আশিক আমার হাত ধরে ব্যাংকটির ষ্টোর রুমে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলে ৪/৫জন। এরপর তারা হাতুড়ি দিয়ে আমার পায়ের তালু এবং হাটুতে পেটাতে থাকে। পাশাপাশি প্লাস দিয়ে আমার নখ উঠানোর চেষ্টা করে। এরপর তারা ষ্ট্যাম্প, চেকসহ সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর করিয়ে রাখে।

নির্যাতনের নেপথ্য

নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন ইষ্টার্ন গেট এলাকায় ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকের মালিক মেসার্স হাজেরী এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ত্বাধিকারী এ এইচ এম শফিউল্লাহ হাজেরীর ছেলে ভুক্তভোগী সাইফুল্লাহ হাজেরী। চলতি মাসে এজেন্ট ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসা করে পালিয়ে যায় এজেন্ট ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ কাগজি মাহবুবুর রহমান এবং মার্কেটিং অফিসার মনিরুল গাজী।

এই ঘটনার পর ব্যাংকটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে একটি টিম সেখানে আসে। পাশাপাশি দুইজন প্রিন্সিপাল অফিসার দিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়। অন্যদিকে গ্রাহকদের তাগেদা এবং ব্যাংকটির ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে ফুলতলার ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা মরিয়া হয়ে পড়ে। তারা এজেন্ট ব্যাংকটির মালিক শফিউল্লাহ হাজেরীর নিকট থেকে একাধিক ব্ল্যাংক চেকসহ ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগীর বাবা এ এইচ এম শফিউল্লাহ হাজেরী বলেন, গ্রাহকের টাকা পরিশোধের জন্য আমরা জমি বিক্রির কাজ শুরু করেছি। ব্যাংকের কথা অনুযায়ী চেক ও ষ্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর করেছি। তারপরও আমার ছেলেকে এইভাবে ব্যাংকের ভিতর নির্যাতন করাটা ঠিক হয়নি।

ইসলামী ব্যাংকের ফুলতলা শাখা ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান জানান, ঘটনার সময় আমি ব্যাংকে ছিলাম না। কি হয়েছে এবং কেন হয়েছে এটা আমি পরিষ্কারভাবে জানি না। যে কর্মকর্তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অর্থনীতি

আমদানি-রপ্তানিতে ৩০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। আন্তঃমন্ত্রণালয় ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই শুল্ক বাড়ানো হয়েছে বলে জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. এম শাখাওয়াত হোসেন।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল-এনসিটিতে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। এ নিয়ে প্রচারণা (প্রোপাগান্ডা) চালানোর কিছু নেই।

তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সালের পর এবারই প্রথম ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে, তবে আমদানি-রপ্তানিতে খরচ বাড়বে ব্যবসায়ীদের।’

নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়াতে চায়। এ বন্দরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে হলে বিদেশি অপারেটরকে পরিচালনার ভার দিতে হবে। এ নিয়ে প্রোপাগান্ডা না ছড়াতে সবাইকে পরামর্শ দেন তিনি।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদেশিদের হাতে বন্দরের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে, বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ও নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে। গত ৭ জুলাই সাইপ পাওয়ার টেক থেকে নিয়ে বন্দরের এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়।’

এরপর নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ২০০ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ।

১৬ বছর পর চলতি বছরে ৭ জুলাই থেকে এনসিটিতে পরিচালনা করছে নতুন অপারেটর চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেড।

মূলত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বন্দরের অত্যাধুনিক নিউমুরিং টার্মিনালটি সুপার স্ট্রাকচার সমৃদ্ধ একটি আন্তর্জাতিকমানের এ টার্মিনালে এসেছে ব্যাপক অগ্রগতি।

তবে আগে যে প্রতিষ্ঠান এনসিটি পরিচালনা করেছে তারাও ভালোভাবে কাজ করেছে বলে জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা।

চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এনসিটিতে জাহাজে কন্টেইনার উঠা নামা কার্যক্রম পরিদর্শন এবং এর অগ্রগতি বিষয়ে অবগত হন।

জাতীয়
খেলাধুলা

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস ক্রিকেটে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি হাঁকালেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার এবি ডি ভিলিয়ার্স।

গত রাতে টুর্নামেন্টের অষ্টম ম্যাচে লেস্টারে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্সের বিপক্ষে ৪১ বলে সেঞ্চুরি করেন ৪১ বছর বয়সী ডি ভিলিয়ার্স।

এ ম্যাচ টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫২ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৪৬ বল বাকী থাকতে ১০ উইকেটের জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ওপেনার হিসেবে নেমে ২১ বলে প্রথম অর্ধশতক ও ২০ বলে পরের হাফ-সেঞ্চুরির তুলে নেন ২০২১ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্সের ডি ভিলিয়ার্স। শেষ পর্যন্ত ১৫ চার ও ৭ ছক্কায় ৫১ বলে ১১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি।

অন্যপ্রান্তে ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং তাণ্ডব উপভোগ করা হাশিম আমলা ৪ চারে ২৫ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ভারত চ্যাম্পিয়ন্সের বিপক্ষেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। ঐ ম্যাচে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩০ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেছিলেন তিনি।

এই জয়ে ৩ ম্যাচ শেষে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স।

রাজনীতি

দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ১৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আয়োজন ছিল সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে অতীতকে স্মরণ করা, সে জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা দৃশ্যমান হতো। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’

আজ বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি ১৩ রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার। তা না হলে তারা এটাকে সুযোগ মনে করছে’।

বৈঠকে অংশ নেওয়া সকল দল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও গণঐক্য অটুট রাখার বিষয়ে সমর্থন জানান। তারা আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টাকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে ও ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করতে আরও নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সর্বদলীয় সভা আয়োজনের অনুরোধ জানান।

বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির তানিয়া রব, ১২ুদলীয় জোটের শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) রুহিন হোসেন প্রিন্স ও গণফোরামের মিজানুর রহমান অংশ নেন।

উল্লেখ্য, এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গতকাল রাতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন।

জাতীয়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা শুধু সংবিধানে উল্লেখ থাকলেই যথেষ্ট নয়, তার কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে উপযুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮তম দিন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা অতীতে বলে এসেছি যে, প্রতিটি সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য সংবিধানে আলাদা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া না এনে, সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমে সেই সব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আচরণবিধি নিশ্চিত করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি সংবিধানে আলাদা করে উল্লেখ করা যায়—এই ক্ষেত্রে আমরা একমত।

তিনি জানান, সংলাপে সব পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সিলেকশন কমিটি গঠনের প্রস্তাব চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন—জাতীয় সংসদের স্পিকার (সভাপতি), বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি।

এই কমিটি নির্বাচন কমিশনের জন্য প্রার্থী খুঁজে বের করতে একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে, যেখানে সিভিল সোসাইটি, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণ নাম জমা দিতে পারবে। সংসদে একটি আইন প্রণয়ন করে এই অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটির কাঠামো নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সার্চ কমিটি জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করবে এবং সেটি সিলেকশন কমিটির কাছে পাঠাবে। কমিটি চাইলে এই তালিকা থেকে অথবা নিজেরা আরও প্রার্থী বিবেচনায় নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে কমিশনারদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।

তিনি উল্লেখ করেন, কমিশন গঠনে আগে যে প্রস্তাবে প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে নাম সুপারিশ করার কথা ছিল, বর্তমান প্রস্তাবে সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতিটি পদের জন্য একটি করে নাম রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। নিয়োগের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এছাড়া সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের উপধারায় একটি নতুন সংযোজনের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করবে এবং তাদের জন্য আচরণবিধি নির্ধারণ করবে।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন কমিশন চাই, যারা কার্যত স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে। তাই তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কার্যক্রম পর্যন্ত সবখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। অতীতে আমরা দেখেছি, একাধিকবার নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে, কিন্তু কার্যত তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। জাতি আজ ঐক্যবদ্ধভাবে সে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এখন শুধু আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া বাকি। আমরা ধরে নিচ্ছি, পরবর্তী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে। সেই বিবেচনায় একটি কার্যকর, স্বাধীন এবং জবাবদিহিতামূলক নির্বাচন কমিশন গঠনে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গঠিত ঐক্যকে তিনি স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই গঠন প্রক্রিয়া এবং কমিশনের ভবিষ্যৎ কাজের দিক নির্দেশনা নির্ধারণে যে সর্বসম্মত প্রস্তাব এসেছে, তা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ভিত্তি তৈরি করবে।