অর্থনীতি

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ২০ বিলিয়ন (১০০ কোটিতে এক বিলিয়ন) ডলার অতিক্রম করেছে।

বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ২ হাজার ২০ কোটি ডলারে ওঠে। গত সপ্তাহে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার কোটি ডলারের নিচে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় রিজার্ভ বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল মাত্র ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ আয় কমেছিল। বৈদেশিক অনুদান আসার প্রবণতাও বেড়েছে। ডলারের প্রবাহ বাড়ায় আমদানিও বাড়তে শুরু করেছে।

ব্যাংকগুলোয় ডলারের প্রবাহ বাড়ায় এখন ব্যাংক নিজেরাই আমদানির দেনা ও বকেয়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারছে। পাশাপাশি চলমান ঋণের কিস্তির অর্থও পরিশোধ করছে। ব্যাংকে ডলার থাকার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকার মান স্থিতিশীল রাখতে রিজার্ভ থেকে এখন কোনো ডলার বিক্রি করছে না। উলটো ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনে নিচ্ছে বকেয়া দায় পরিশোধ করছে।

এর আগে জানুয়ারির শুরুর দিকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১৬৭ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল।

রাজনীতি

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ভারতের ইন্ধন আছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এই হামলার ঘটনা দেশের গণতন্ত্র বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ বলেন, গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে সেটি এখনো চলমান। সেটি এখনো শেষ হয়নি। এটি কারা করেছেন এই তথ্য আমাদের কাছে নেই, এতে সরকারের কী ভূমিকা ছিল সে তথ্যও আমাদের কাছে নেই। সুতরাং আর অল্প কিছু সময় আমরা অপেক্ষা করবো, আজকের মধ্যেই আশা করি সবকিছু পরিষ্কার হবে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এর জন্য দায়ী, তখন পূর্ণাঙ্গ সব তথ্য পেলে আমরা এই সম্পর্কে বিএনপির মনোভাব মিডিয়া ও জনগণের সামনে প্রকাশ করবো। অপূর্ণাঙ্গ তথ্য নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি ও ছাত্রদের আন্দোলন দমন করার জন্য পেশিশক্তির বারংবার ব্যবহার করেছে কুখ্যাত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। আমাদের স্মরণশক্তি অনেক কম, অনেকে ভুলে গেছেন, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়, টঙ্গীর পাশেই কীভাবে ১৫ জন সাধারণ মানুষ হত্যা করে ভ্যানে শুইয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কল্পনা করা যায়? তারা আপনার আমার ভাই, সন্তান। রাজপথে ন্যায্য দাবি করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্যে জ্বালিয়ে দেওয়া আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এর অবসান চাই। অবসান হতে পারে একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজ নানান ধরনের সংস্কারকে পূর্বশর্ত দেওয়া হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। সংবিধান সংস্কারের কথা বলেছেন, একটি গ্রুপ বলেছে ৭২ এর সংবিধান ছুড়ে ফেলা হবে। অনেক রক্তের বিনিময়ে জিয়াউর রহমান এবং ছাত্র-জনতার মিলিত সংগ্রামের ফলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। ৭২ এর সংবিধান একটি চমৎকার সংবিধান। এটি আওয়ামী লীগের সংবিধান নয়, এটি জনতার সংবিধান। আওয়ামী লীগ কাটাছেঁড়া করে এর অঙ্গহানি ঘটিয়েছে। প্রয়োজন হলে সংবিধানে আরও সংযোজন করা যায়। কিন্তু যাই হোক, নতুন করে সংবিধান লেখা হোক বা সংশোধন করা হোক এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের সাধারণ জনগণ।

কোনো বুদ্ধিজীবী, কারও কোনো গুরু, বিদেশ থেকে আগত কোনো কোনো বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে বাংলাদেশের সংবিধান নতুন করে লেখা বা সংশোধন করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংযোজন বা সংশোধন একমাত্র অধিকার রাখে স্বাধীন পার্লামেন্ট, নিরপেক্ষ একটি পার্লামেন্ট। যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, আমরা এখনো তা পুরোপুরি দেখিনি, আমরা এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মনোভাব জানাবে।

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

রাজনীতি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা দখলের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে জামায়াত নেতা বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা দখলের যে ঘোষণা দিয়েছেন, আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে তার আগ্রাসী মনোভাবই প্রকাশিত হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী বক্তব্যে গোটা আরব বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। আরব বিশ্ব তার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই বর্তমান সমস্যার একমাত্র সমাধান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগ্রাসী বক্তব্যে গোটা মুসলিম উম্মাহ মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ।’

এ ধরনের আগ্রাসী বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদান করার জন্য আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

খেলাধুলা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের পর্দা নামছে আগামীকাল। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ফাইনাল ম্যাচটি। এবারের ফাইনালে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

অতীতের তুলনায় এবার প্রাইজমানি ২ কোটি টাকারও বেশি বাড়ছে। গত বছর চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল পেয়েছে দুই ও এক কোটি টাকা করে। এবার পাবে আড়াই ও দেড় কোটি টাকা করে।

আগামীকালকের ফাইনালের সেরা ক্রিকেটার পাবেন ৫ লাখ টাকা। টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের জন্য থাকবে ১০ লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার। টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তারকা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

গতবারের মতো এবারও আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পাবেন ৫ লাখ টাকা। এক সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে ৫১১ রান করা নাঈম শেখ অনেক এগিয়ে আছেন ফাইনালে ওঠা দুই দলের ব্যাটসম্যানদের চেয়ে।

প্রথম পর্বে বাদ পড়া দুর্বার রাজশাহীর হয়ে ২৫ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়ে তিনিই সেরা বোলার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে।

টুর্নামেন্টের সেরা ফিল্ডার পাবেন ৩ লাখ টাকা। ১২ ম্যাচে ১৩ ক্যাচ নিয়ে এই পুরস্কারে এগিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক আরিফুল হক।

এবারই প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ইমার্জিং ক্রিকেটার অব দা টুর্নামেন্ট পুরস্কার। যার জন্য থাকছে ৩ লাখ টাকা।

জাতীয়

এ বছরের শেষদিকে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার জাপানের ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে (এনএইচকে) দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানান।

ড. ইউনূস বলেন, ‘যখন আমরা ক্ষমতায় এসেছিলাম, ওই সময়ের পরিস্থিতি বললে, আমি মনে করি আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। কারণ এটি (ছিল) একটি বিধ্বস্ত সমাজ, বিধ্বস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বিচারিক ব্যবস্থা।’

নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের সবচেয়ে দ্রুত সময় হতে পারে এ বছরের শেষ দিক। যখন নির্বাচন হবে, যারা নির্বাচিত হবে, তারা কাজ করার জন্য শক্তিশালী একটি ভিত্তি পাবে।’

তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণরা কী করতে চায়, তারা তাদের সৃজনশীলতার শক্তি প্রদর্শন ও পুরো বিশ্বের সঙ্গে এটি ভাগ করতে চায়। আমাদের মাথায় এই লক্ষ্য আছে, দেখা যাক আমরা কীভাবে আগাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘জাপানের প্রযুক্তি এবং অর্থায়ন তরুণ বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।’

আন্তর্জাতিক

মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস ২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ১০ম স্থানে রয়েছে ইসরাইল।

নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং সামরিক শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ফোর্বসের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

ফোর্বসের এ তালিকার পদ্ধতিটি পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্টন স্কুলের অধ্যাপক ডেভিড রেইবস্টেইনের নেতৃত্বে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্টের সঙ্গে যুক্ত বিএভি গ্রুপের গবেষকরা তৈরি করেছেন।

চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি শক্তিশালী দেশের তালিকার শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদন আরো বলা হয়েছে, দেশটির জিডিপি ৩০ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা সাড়ে ৩৪ কোটি।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীনের জিডিপি ১৯ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশটির জনসংখ্যা ১৪১ কোটি। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত দেশটির জিডিপি ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা সাড়ে ৮ কোটি।

এদিকে, ৩ দশমিক ৭৩ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি এবং প্রায় সাত কোটি জনসংখ্যার যুক্তরাজ্য রয়েছে তালিকার চতুর্থ স্থানে। পঞ্চম স্থানে থাকা জার্মানির জিডিপি ৪ দশমিক ৯২ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জনসংখ্যা সাড়ে ৮ কোটি।

অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সমন্বয়ের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এর জিডিপি ১ দশমিক ৯৫ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জনসংখ্যা ৫১ কোটি ৭০ লাখ।

তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। যার জিডিপি ৩ দশমিক ২৮ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জনসংখ্যা ৬৬ কোটি ৫০ লাখ।

জাপান রয়েছে অষ্টম স্থানে। দেশটির জিডিপি ৪ দশমিক ৩৯ ট্রিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা সাড়ে ১২ কোটি।

জিডিপি ১ দশমিক ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার এবং ৩৩ কোটি ৯০ লাখ জনসংখ্যার দেশ সৌদি আরব রয়েছে নবম স্থানে। এ ছাড়া তালিকায় ১০ম স্থানে রয়েছে দখলদার ইসরাইল। তাদের জিডিপি ৫৫১ বিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা প্রায় ৯৪ লাখ।

জাতীয়

পতিত আওয়ামী সরকার আমলের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্টি এলাকার বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর শেষে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাতে এক দল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা খরমপট্টি এলাকায় আবদুল হামিদের বাসভবনে যায়।  সেখানে হামলা, ভাঙচুর চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেন তারা।

এর আগে স্কাভেটর দিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের লণ্ডভণ্ড অফিসটি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আর বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে টয়লেট ঘোষণা করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

বিনোদন

অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, রাষ্ট্র নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে মেহের আফরোজ শাওনের জামালপুরে অবস্থিত গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ সন্ধ্যায় জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।

সম্প্রতি শাওনের রাজনৈতিক অবস্থান ও কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়। আর শাওনের এসব পোস্টকে ঘিরে নরুন্দি এলাকার বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করে এবং তার বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ফেরত পাঠানোর অনুরোধ পেলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার অধিবেশনে জন বৃত্তাসের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি। খবর নিউজ এইটিন।

লিখিত প্রশ্নে রাজ্যসভার সদস্য জন বৃত্তাস জানতে চান, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে কিনা; চেয়ে থাকলে তারা কারণ হিসেবে কী বলেছে এবং ভারত সরকার তার প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে কিনা।

জবাবে কৃতি বর্ধন বলেন, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা বিভিন্ন অপরাধ করেছেন। তবে এ বিষয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো জানায়নি।

প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।

এর মধ্যেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে গণহত্যা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অর্ধশতাধিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে।

এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।

প্রায় তিনশ মামলায় শেখ হাসিনার বিচার চলার মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত সরকারকে ‘কূটনৈতিকপত্র’ পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।

জাতীয়

আওয়ামী লীগের প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক ভাষণকে কেন্দ্র করে বুধবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি। বিক্ষুব্ধ জনতাকে খুব একটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক ফন্দি আঁটতে পারে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারত; এমনটাই মনে করেন কবি, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার।

তার মতে, দিল্লি আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে জানমাল রক্ষা করতে উপদেষ্টা সরকার ব্যর্থ। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যে বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার নাই। এটাই দিল্লী হাসিনার পক্ষে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার করবে। এবং দিল্লি আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করতে পারে বলেও ফেসবুকে লিখেছেন তিনি।

শেখ হাসিনার ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙাকে ইস্যু করে ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখে পড়তে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। যা নিয়ে ফরহাদ মজহার লিখেছেন, ‘নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাষণ বুঝতে হবে। নতুন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণের উপর দাঁড়িয়ে তিনি রাজনীতির যে ছক কষছেন সেদিকে আমাদের পূর্ণ মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে হবে।’

বিক্ষুব্ধ জনতাকে বাড়ি ভাঙতে বাধা না দেওয়া ও সেনাবাহিনীর সরে আসার সিদ্ধান্তকে সঠিক জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভের পরিণতি হচ্ছে ৩২ নম্বর ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া। এটা শুরু, শেষ নয়। আমরা দেখলাম একে রক্ষা করার কোনো পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করে নাই। সেনাবাহিনী কিছুক্ষণের জন্যে এলেও ফিরে গেছে। জনগণের বিপরীতে সেনাবাহিনীকে দাঁড় না করাবার নীতি সঠিক।’

এরপর তিনি লিখেছেন, ‘কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে দিল্লি প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে জানমাল রক্ষা করতে উপদেষ্টা সরকার ব্যর্থ। আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যে বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার নাই। এটাই দিল্লী হাসিনার পক্ষে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার করবে।

দিল্লী দাবি করবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ফলে দিল্লী আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করতে পারে।’

শেখ হাসিনার বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে তৈরি হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক এই রাজনীতি কীভাবে মোকাবেলা করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার সেটাও জানিয়েছেন এই অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষক। বলেন, ‘এই বাস্তবতা এবং সম্ভাব্য ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে। যদি আমরা সামনের দিনে আরো গভীর সংকটে পতিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে চাই তাহলে অবিলম্বে শেখ হাসিনার সংবিধান বাতিল করে পূর্ণ ক্ষমতা সম্পন্ন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন, নতুন ভাবে বাংলাদেশ গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা পরিষ্কার ফ্যাসিস্ট সংবিধান বহাল রাখার শপথ করে আমরা আদতে ফ্যসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম রেখেছি। এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বাড়ি ভাঙলাম অথচ শেখ হাসিনার বানানো ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা পুরাপুরি কায়েম রাখলাম এটা কি হয়! অতএব পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় আমরা যেন কোন গভীর সংকটে না পড়ি সেজন্য এখনই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের ক্ষোভকে আমলে নিতে শিখুন। ছাই দিয়ে আগুন নিভানো যায় না।’