জাতীয়

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এনসিপি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলেও তাদের সমাবেশের আগে ও পরে হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর এবং পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রায় যে জাগরণ দেখা গেছে, তাতে রাজনৈতিক ময়দানে তাদের শক্তি-সামর্থ্যের প্রতি আশার সঞ্চার হয়েছিল। জনগণের ভেতরে দলটি ক্রমশ নিজেদের ভিত্তি তৈরি করছে, এমন একটি আস্থার জায়গা তৈরি হচ্ছিল জনমনে। তবে গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেই প্রত্যাশায় ভাটা পড়বে। গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের হামলায় কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। তাদের শক্তি-সামর্থ্যের নাজুক দশা দেশবাসীর কাছে প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। দলটির নেতাদের সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে গোপালগঞ্জ ছাড়তে হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ ধরনের বেকায়দায় পড়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান হয়। সে সময় তাদের যে জনপ্রিয়তা ছিল, তাতে ভাটা পড়ার প্রমাণ মেলে গোপালগঞ্জের সমাবেশে। জনপ্রিয়তা কমার কারণে তাদের কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো করতে পারেনি দলটি।

ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে না পারায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলার সাহস দেখায়।

এ ছাড়া দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে এনসিপির দূরত্বও আরেকটি বড় কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপির কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ায় দলটির শক্তি অনেকটা কমে এসেছে। বিএনপি ছাড়া দুর্বল হয়ে পড়ায় এনসিপির ওপর হামলা করতে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাহস পেয়েছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশস্থলে দুই দফা হামলা, তাদের অবরুদ্ধ করার ঘটনা সারা দেশের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে উৎসাহিত করতে পারে। ফলে এ ধরনের ঘটনা সারা দেশে আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এ ধরনের ঘটনা সারা দেশে ঘটতে থাকলে দেশের রাজনীতিতে মারাত্মক অস্থিরতা তৈরি করবে। তাতে পতিত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্র তৈরি করতে হতে পারে।

আর এক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির দূরত্ব নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগকে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটাতে উৎসাহিত করতে পারে বলে মনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে দূরে সরে গেলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা এটি উপলব্ধি করতে পারলে ভিন্ন দিকে মোড় নেবে দেশের রাজনীতি। ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূরত্ব কমে আসতে পারে দল দুটির মধ্যে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার শেখ হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির অগ্রভাগে থাকা একদল তরুণ-তরুণীর নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে রয়েছেন সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনিম জারা, নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ জুলাই অভ্যুত্থানের সংগঠক একঝাঁক তরুণ নেতা।

বেশ কয়েকটি কারণে মাত্র এক বছরেরও কম সময়ে গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের জনপ্রিয়তা কমে আসে। এর মধ্যে রয়েছে নিজেদের মধ্যে ঐক্যের অভাব, অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভক্তি, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনৈক্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের কারও কারও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের জনপ্রিয়তাও জাতীয় নাগরিক পার্টির জনপ্রিয়তার ভাটা পড়ার জন্য দায়ী বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

স্বাভাবিক সমাবেশ করতে না পারার ব্যর্থতার দায় সরকারের

গোপালগঞ্জের ঘটনা রাজনৈতিক বাঁকবদল ঘটাতে পারে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, একটা রাজনৈতিক দল স্বাভাবিকভাবে সমাবেশ করতে পারল না, এর ব্যর্থতার দায় সরকারকে নিতে হবে। সরকার যদি আগে থেকে ব্যবস্থা নিতো তাহলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারত না। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে একটা পরিবর্তনের পর যে নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়েছে, এ ধরনের ঘটনার মধ্য দিয়ে তা ব্যাহত করতে অপশক্তি সুযোগ নিতে পারে। এখন সবাইকে, সব দলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, এটা সময়ের দাবি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সব সময় নিন্দনীয়। একটা রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করবে, এতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। কর্মসূচি পালন করার আগেই উত্তেজনা তৈরি হলো, এটা ভালো না। এর ফলে কী প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বা কী প্রভাব পড়বে এ ব্যাপারে আগাম কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। এটা পরে বোঝা যাবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, আজকে গোপালগঞ্জের যে ঘটনা ঘটেছে সেটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা একটি রাজনৈতিক দলের প্রোগ্রামে এভাবে হামলা চালাবে, এটি নিঃসন্দেহে ভাবনার বিষয়।

গোপালগঞ্জের ঘটনা রাজনীতিতে কোনো বাঁক নিতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেভাবে জুলাই বিপ্লবের সময় ঐক্যবদ্ধ ছিলেন এখনো সেভাবেই আছে। সুতরাং এই ঘটনায় সারাদেশের রাজনীতিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমরা এখনই এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলীয় পর্যায়ে মিটিং চলছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানাতে পারবো।

রাজনীতি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ। এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দুর্বলতা ও সিদ্ধান্তহীনতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহারের দাবি করেছে দলটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এ দাবি করে জামায়াত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শঙ্কিত নয়, উদ্বিগ্ন। অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় মনে হয় তাদের সঙ্গে গোপন কোনো শক্তি কাজ করছে।

তিনি গোপালগঞ্জের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, আমাদের মনে হয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেই দুর্বল ও অসহায়। যার বাস্তবতা রাষ্ট্রের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ফুটে উঠেছে।

মিটফোর্ডের ঘটনার ধারাবাহিকতায় গোপালগঞ্জে হামলার সাহস দেখানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি ‘মিস্টার অসহায়’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিও জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গোপালগঞ্জের ঘটনাকে ‘অশনি সংকেত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এনসিপি প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানোর পরও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কেন নিষ্ক্রিয় ছিল?

তিনি বলেন, জাতি কি এখনো ফ্যাসিবাদের জামানায় রয়েছে? কারণ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী দলমতের লোকদের কোনো সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হতো না। সেই একই কায়দায় এনসিপির সমাবেশ পণ্ড করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।

সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের বাইরের অংশ নয়। বাংলাদেশেরই অংশ। তাই সরকারকে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে বুঝতে হবে এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়; এটা ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার বাংলাদেশে সন্ত্রাস করার সুযোগ কেউ পাবে না। করলেও ছাড় পাবে না।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ মুক্ত বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত ৭ দফা দাবি আদায়ে আগামী শনিবারের (১৯ জুলাই) জাতীয় সমাবেশে দেশবাসীকে দলে দলে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং সাবেক এমপি ড. এইচএম হামিদুর রহমান আজাদ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে বুধবার দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দিনভর তাণ্ডব চালিয়েছেন জেলাটিতে।

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে উঠে এসেছে গোপালগঞ্জের সহিংসতার এ ঘটনা। সেখানে সাংবাদিকরা এই সহিংসতার বিষয়ে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমরা আমাদের অঞ্চলের সব ঘটনাপ্রবাহ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং যা ঘটছে তা বিবেচনায় নিই।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়েও ভারতের প্রতিক্রিয়া জানতে চান এক সাংবাদিক। ওই সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য, গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে ভারত বারবার বলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও একটি প্রধান রাজনৈতিক দল আগামী বছরের শুরু কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছে। আপনি কী এটাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক মনে করেন?

জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার। আমরা বারবার বলেছি, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এমন নির্বাচনকে স্বাগত জানাই; যা গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সকল পক্ষকে এতে অন্তর্ভুক্ত করে।

সংবাদ সম্মেলনে অপর এক সাংবাদিক গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমরা আমাদের অঞ্চলের সব ঘটনাপ্রবাহ ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করি এবং যা ঘটছে তা বিবেচনায় নিই। প্রয়োজনে আমাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নিই।

বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারতের সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ, মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভিসা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।

গত বছরের জুলাই-অগাস্ট থেকেই বাংলাদেশে ভারতের স্বাভাবিক ভিসা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভারতের ভিসা পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

এই বিষয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমরা বাংলাদেশে ভিসা দিচ্ছি। নানা কারণেই ভিসা দেওয়া হচ্ছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন কারণে ভিসা দিয়ে আসছি। যেমন, ভ্রমণ, চিকিৎসার জরুরি প্রয়োজনে, শিক্ষার্থীদের জন্য ইত্যাদি। আমরা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভিসা প্রদান করছি।

তবে ভারত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশিদের ঠিক কত সংখ্যক ভিসা দিয়েছে, সেই নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেননি তিনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, সঠিক সংখ্যাটি আপনাদের পরে জানাতে হবে। এটা আমাকে জেনে বলতে হবে।

জাতীয়

কুমিল্লায় সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অনিক নামের এক অটোরিকশা চালক। যাত্রীর ফেলে যাওয়া ব্যাগে থাকা প্রায় ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা অটোচালক অনিক। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানান, এক অভিভাবক তাড়াহুড়োয় সন্তানকে স্কুলে পৌঁছাতে গিয়ে একটি অটোরিকশায় তার টাকা ভর্তি ব্যাগ রেখে নেমে যান। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি ফিরে এসে অটোরিকশাটিকে আর খুঁজে পাননি।

প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর ওই যাত্রী অবাক হয়ে দেখেন, একই অটোরিকশাচালক নিজেই তার বাসার আশপাশে এসে খুঁজছেন তাকে। পরে সবার সামনে অক্ষত অবস্থায় ব্যাগটি ফেরত দেন চালক অনিক।

অনিক জানান, ‘ব্যাগে এত টাকা দেখে আমি প্রথমেই আমার বাবাকে কল দেই। তিনি বললেন, যার জিনিস, তাকে খুঁজে দিয়ে আয়। হারাম টাকা নিয়ে বাঁচতে চাই না।’ আমি এরপর কয়েকবার ঘুরে ওই এলাকায় এসে শেষমেশ ব্যাগের মালিককে খুঁজে পাই।

জানা যায়, অনিকের বাবা নিজেও একজন অটোরিকশাচালক। তাদের পরিবারে সততা ও নৈতিকতার চর্চা বহুদিনের। আর তাই ১৫ লাখ টাকার মতো বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়ার পরও এক মুহূর্তের জন্যও লোভ স্পর্শ করেনি অনিককে।

ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রশংসায় ভাসছেন এই চালক। স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরা বলছেন, অনিকের মতো সৎ মানুষ এই সমাজের সম্পদ। এমন মানুষদের সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব।

জাতীয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় মামলার মধ্যে ১২টির চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা তিনটি এবং অন্যান্য ধারায় মামলা নয়টি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ বিষয়টি জানিয়েছেন।

চার্জশিট দেওয়া তিনটি হত্যা মামলার মধ্যে সবকটিই শেরপুর জেলার। অন্যান্য ধারার নয়টি মামলার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার তিনটি, সিরাজগঞ্জ জেলার দুটি এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের তদন্তাধীন দুটি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে দায়েরকৃত মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা মামলাগুলো তদারক করছেন। রুজুকৃত অন্য সব মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।

জাতীয়

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশ স্লোভেনিয়া ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী দুই মন্ত্রীকে দেশটিতে প্রবেশ করতে দেবে না। এই দুই ইহুদিবাদী হলেন ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ।

বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিবৃতিতে এমন ঘোষণা দেয় দেশটি। সরকারের ভাষ্যমতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরে এটি এই ধরনের প্রথম পদক্ষেপ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতামার বেন গভির ও বেজালেল স্মোত্রিচকে ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ (অবাঞ্ছিত ব্যক্তি) ঘোষণা করবে স্লোভেনিয়া। তারা চরম সহিংসতা উসকে দেওয়া ও ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনে জড়িত এবং তারা গণহত্যামূলক বক্তব্য দিয়েছেন।

এর আগে জুন মাসে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ড এবং নরওয়েও স্মোত্রিচ ও বেন গভিরের বিরুদ্ধে অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এই দুই মন্ত্রী ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

গাজা যুদ্ধ এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন সংক্রান্ত কট্টর মন্তব্যের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন স্মোত্রিচ ও বেন গভির।

পশ্চিম তীরের একটি বসতিতে বসবাসকারী স্মোত্রিচ দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ইসরাইলি বসতির সম্প্রসারণের পক্ষে এবং এই অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের সঙ্গে একীভূত করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী টানিয়া ফায়োন এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরে এটাই এই ধরনের প্রথম পদক্ষেপ।’

গত ২১ মে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাটাসা পির্ক মুসার গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার নিন্দা করে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে মে মাসেই স্লোভেনিয়া ইসরাইলের গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ঘোষণার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আরও পাঁচটি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে এক হয়ে বলেছিল, তারা গাজায় কোনো জনসংখ্যাগত বা ভৌগোলিক পরিবর্তনকে ‘দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান’ করে।

গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিন্দা জানিয়ে গত বছর আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনের পর স্লোভেনিয়াও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইতিহাস গড়ে ফিরেছে টাইগাররা। প্রথমবারের মতো তাদের মাটিতে কোনো সংস্করণে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ।

প্রেমাদাসায় সেই টি-টোয়েন্টি জয় এখনো তরতাজা। এবার সেই জয়ের স্কোয়াড নিয়েই ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়বে টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল। দলে বদল আনা হয়নি একটিও। লিটন দাসের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা জয়ী ১৬ সদস্যের সেই স্কোয়াডই খেলবে হাইভোল্টেজ এই সিরিজ।

আগামী ২০ জুলাই শুরু হবে সিরিজ। এরপর ২২ ও ২৪ জুলাই বাকি দুই ম্যাচ। সবগুলো ম্যাচই হবে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রতিটি ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।

একনজরে বাংলাদেশ স্কোয়াড: লিটন দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, নাঈম শেখ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

খেলাধুলা

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জয়রথ অব্যাহত। আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।

টানা চার ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে। সমান ম্যাচে নেপাল ৯ পয়েন্টে দ্বিতীয় স্থানে। পরবর্তী ম্যাচ বাংলাদেশ ও নেপাল উভয়ে জিতলে এই দুই দলের মধ্যকার ২১ জুলাইয়ের ম্যাচটি পরিণত হবে টুর্নামেন্টের অলিখিত ফাইনালে।

৩৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভুটানের এক ডিফেন্ডার নিজেদের বক্সের মুখে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান তৃষ্ণা রানী। দ্রুত বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একজনকে কাটিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

ব্যবধান দ্বিগুণ হয় ৬৫তম মিনিটে। গোল কিক নিতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান ভুটান গোলরক্ষক। তবে তার বুটের হালকা স্পর্শে বল চলে যায় তার সতীর্থের কাছে। মুনকির চার্জে তিনিও বল হারালে পেয়ে যান তৃষ্ণা। ছুটে গিয়ে দারুণ শটে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড।

৭৪তম মিনিটে বাংলাদেশের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। স্বপ্না রানীর দূরপাল্লার শট লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবারের ভেতরের কানায় লেগে পার হয় গোললাইন।

গত পরশু দিন বাংলাদেশ ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল। ঐ ম্যাচটি দুই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিংস অ্যারনোয় প্রথমার্ধে বাংলাদেশ শান্তি মারডির গোলে ১-০ গোলের লিড নিয়েছিল। তিন ঘন্টা পর শুরু হওয়া দ্বিতীয়ার্ধে ভুটান সমতা আনে দ্রুত। এরপর শান্তি মারডি আরো দুই গোল করলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় তার। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের জয় পায় বাংলাদেশ।

অর্থনীতি

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩০.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, এখন দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে দাঁড়িয়েছে ২৪.৯৯ বিলিয়ন ডলার।

বুধবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, ১৬ জুলাই পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ৩০০২৬.৬২ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৪৯৯৫.৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গত মে-জুনের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২০১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে গত ৭ জুলাই দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ কমে দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ৪৪৫ কোটি ৮৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৯৫২ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার ডলার।

গত ২ জুলাই দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে ছাড়িয়েছিল দুই হাজার ৬৬৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ১৭১ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

এর আগে গত ৩০ জুন দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে ছাড়িয়েছিল দুই হাজার ৬৬৬ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ১৬৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

এর আগে, গত ২৯ জুন দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে ছাড়িয়েছিল দুই হাজার ৩১ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ১৩১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার। গত ২৫ জুন দেশে রিজার্ভ বিপিএম-৬ হিসেবে ছিল দুই হাজার ২৬৫ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৭৬৭ কোটি ২০ লাখ ২০ হাজার ডলার।

প্রসঙ্গত, নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।

রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পরই গোলমাল শুরু হয়েছে। অর্থাৎ এদেশে নির্বাচন হতে দেওয়া যায় না।

কিন্তু দেখবেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘জুলাই আগস্টের ঐতিহাসিক বীর শহীদদের স্মরণে’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে। এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। গণতন্ত্রে যেন উত্তরণ না ঘটে, তার জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্নভাবে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। এমনকি আমার নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষার কথা বলেছে।

তিনি বলেন, কেন?… কারণ ভয়। তারা ভয় পেয়েছে। তারেক রহমান ইতোমধ্যে জাতীয় নেতা হয়ে গেছেন। সুতরাং তিনি যদি ফিরে আসেন, তাহলে তারা যাবে কোথায়? আমি তাদের আশ্বাস দিতে পারি, আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকবেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি ইজ ডেমোক্রেসি, বিএনপি ইজ ফ্রিডম, বিনপি ইজ ডেভেলপমেন্ট। ভবিষ্যতে আমরাই বাংলাদেশকে উন্নয়নের চরম শিখায় নিয়ে যাব। ওরা ফাঁদ পেতেছে আমরা যেন বিরোধ করি। যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ ব্যাহত হয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া রেইনবো নেশন তৈরির জন্য ভিশন-২০৩০ দিয়েছিলেন। আজ আমেরিকাসহ বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে আসা পণ্ডিতেরা যেসব কথা বলছেন, সেসব বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ তে বলেছিলেন। সেখানে আজকের সংস্কারের কথাগুলো ছিল।

এদেশের যা কিছু মহান অর্জন, তা বিএনপির হাতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা যিনি দিয়েছিলেন, তিনি আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। বাকশাল থেকে প্রথম যে রাজনৈতিক সংস্কার করা হলো, একটি মুক্ত বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলো, এটি জিয়াউর রহমান করেন। তিনি সমস্ত সংবাদপত্র স্বাধীন করে দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান ৪টা সরকারি পত্রিকা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ফ্যাসিস্টরা দেশকে এভাবেই গোলাম বানিয়ে রেখেছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খান আলিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।