রাজনীতি

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করবে অন্তর্বর্তী সরকার— এমনটাই আশা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৭ জুলাই) সকালে সিলেটে হজরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের সঠিক পথে অগ্রযাত্রা সম্ভব।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন, বিশেষ করে জুলাইয়ের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান যে নতুন পথ দেখিয়েছে, তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সবাইকেই।

বিগত ১৫ বছরে দেশে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হাজারো প্রাণহানি ঘটেছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সহযোগিতায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া ও এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করতেই সকাল ৯টায় সিলেটে পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব।

রাজনীতি

নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন পেছাতে চায় না, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চায়।

সোমবার (৭ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সমাবেশের কেন্দ্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন৷

গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকারের ভূমিকায় জনগণ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আশ্বস্ত নয়। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন পেছাতে চায় না, বরং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চায়।

জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করার জনদাবিগুলো সরকারের সামনে উপস্থাপন করতে ১৯ জুলাই জাতীয় মহাসমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে জামায়াত।

এ সময় তিনি দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রাখার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন প্রবাসীরা।তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে শক্তিশালী ভিত গড়চ্ছে দেশের অর্থনীতি। গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে পটপরিবর্তনের পর প্রত্যেক মাসেই রেমিট্যান্সের প্রবাহ ঝলক দেখাচ্ছে।

সেই ধারাবাহিকতায় সদ্যসমাপ্ত জুনের মতো চলতি মাস জুলাইয়েও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম ৬ দিনে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে ১৫.৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত বছরের একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ৩৭১ মিলিয়ন ডলার।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ।

এটি পূর্ববর্তী অর্থবছরের (অর্থবছর ২০২৩-২৪) প্রাপ্ত ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৬.৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয়

মুর্শিদাবাদ শহরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হাজার দুয়ারী আর ইমামবাড়া থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলে রাস্তার পাশেই একটা ভগ্নপ্রায় সিংহদরজা। লাল ইট বেরিয়ে এসেছে, কোথাও ভেঙেও পড়েছে।

সিংহদরজাটা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই কেমন যেন গা ছম ছম করে ওঠে– বিশেষ করে একটা পুরনো নীল রঙের বোর্ডে চোখ পড়লে মনে হয় যেন টাইম মেশিনে চেপে পিছিয়ে গিয়েছি ২৬৮ বছর আগে।

যেন দেখতে পাচ্ছি ১৭৫৭ সালের জুলাইয়ের এক বা দুই তারিখে এই সিংহদরজা দিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক তরুণ বিধ্বস্ত বন্দিকে। তার নানা উপাধি। কখনো সম্বোধন করা হয়, বা কয়েকদিন আগেও করা হতো মনসুর-উল-মুলক, কখনো বা হিবুত জং বলে।

তার পুরো নাম অবশ্য মীর সৈয়দ জাফর আলি খান মির্জা মুহাম্মদ সিরাজউদ্দৌলা। ছোট করে বললে, নবাব সিরাজউদ্দৌলা। আর যে সিংহদুয়ার দিয়ে বন্দি সিরাজউদ্দৌলাকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, লোকমুখে আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে সেটির নাম ‘নিমকহারাম দেউরি’। কেন এরকম একটা নামকরণ হলো- সেটা আন্দাজ করা কঠিন হবে না, যদি জানতে পারেন যে ওই প্রাসাদটি কার।

‘নিমকহারাম দেউরি’

পলাশীর যুদ্ধের পর থেকে মীর জাফরের প্রাসাদকে স্থানীয় মানুষ নিমকহারাম দেউরি বলেই ডাকেন। কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়েছিল এই প্রাসাদেই, আবার ভিন্ন মতও আছে। সেই মতটা হলো গঙ্গার পশ্চিম তীরে সিরাজের প্রাসাদ– মনসুরগঞ্জ প্রাসাদেই বন্দি সিরাজকে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং সেখানেই মীর জাফরের পুত্র মীরণের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়।

এ বিষয়ে লালবাগ কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করার পরে তার শরীর টুকরো করে ফেলা হয় এবং হাতির পিঠে চাপিয়ে সেই দেহখন্ডগুলো মুর্শিদাবাদ শহরে ঘোরানো হয়েছিল। মীর জাফরের বংশধরদের কাছ থেকেই জানা গেছে, এখন যেখানে সরাইখানা এলাকা, সেখানে যখন ওই হাতিটি নিয়ে যায় সিপাহীরা, সেখানকার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।

অধ্যাপক ফারুক বলেন, একটা জনরোষ তৈরি হয়েছিল, যার মোকাবিলা করতে সাহস দেখাননি সিপাহীরা। দেহখণ্ডে ভরা বস্তাটি তারা একটি কুয়োতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। সেই থেকেই ওই এলাকাটি সিরজউদ্দৌলা বাজার বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন আর তার কোনো অস্তিত্ব নেই।

আবার মীর জাফরের বংশধরদের অনেকে বিশ্বাস করেন পারিবারিকসূত্রে পাওয়া আরেক কাহিনী। সেটা হলো- মীরণের নির্দেশে নয়, সিরাজকে গুলি করে হত্যা করেছিল দুই ব্রিটিশ সৈনিক।

এই ইতিহাসবিদের কথায়, আমি এটাও ওই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছেই শুনেছি যে, সিরাজকে বন্দি করার পরে সম্ভবত মীর জাফর ইংরেজদের চালটা ধরতে পেরেছিলেন এবং তিনিই মীরণকে পাঠিয়েছিলেন, যাতে সিরাজ পালিয়ে যেতে পারেন। সেখানে পাহারায় ছিল দুই ব্রিটিশ সিপাহী। তারা এই পরিকল্পনাটা জেনে ফেলে এবং সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করে মেরে ফেলে সিরাজউদ্দৌলাকে।

মীর জাফরের বংশধরেরা কোথায়?

মীর জাফরের বংশধরেরা অনেকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন মুর্শিদাবাদসহ বিশ্বের নানা জায়গাতেই। মীর জাফরদের বংশধরদের এখনো নবাব, ছোটে নবাব বলে ডাকা হয়। লালবাগের কেল্লা নিজামতের ভেতরেও থাকেন ওই বংশের বেশ কয়েকজন।

ছোটে নবাব বলে পরিচিত সৈয়দ মুহাম্মদ রাজা আলি মির্জা বলছিলেন, আমাদের ফ্যামিলির তিন হাজারের মতো সদস্য আছেন। অনেকে এখানেই থাকেন, কেউ ইংল্যান্ড, আমেরিকা বা বাইরে চলে গেছেন। তবে তাদের সবার বাড়ি এখানে রয়েছে।

আলি মির্জা আরও দাবি করছিলেন, পাকিস্তানের চতুর্থ ও শেষ গভর্নর জেনারেল এবং প্রথম প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার আলি মির্জাও তাদেরই পরিবারের সদস্য এবং মীর জাফরের বংশধর। এই কেল্লা নিজামতেই তার জন্ম, পরে যুক্তরাজ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন ইস্কান্দার মির্জা।

ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনের বংশধর মীর জাফর

মীর জাফরের পূর্বপুরুষরা আরব থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়। মীর জাফরের বংশধরেরা দাবি করেন যে তারা ইমাম হাসান ও হোসাইনের উত্তরপুরুষ।

বেশ কয়েকটি প্রামাণ্য ইতিহাস গ্রন্থেও মীর জাফরের বংশ পরিচয়ের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে যেমন আছে ১৯০৫ সালে প্রকাশিত পূর্ণচন্দ্র মজুমদারের লেখা ‘মসনদ অফ মুর্শিদাবাদ’, তেমনই আছে বাংলায় সমকালীন মুসলমানদের নিয়ে লেখা খন্দকার ফজলে রাব্বির আকর গ্রন্থ ‘হাকিকত মুসলমান-ই-বেঙ্গালাহ’-ও। পূর্ণচন্দ্র মজুমদারের বইটিতে তাদের বংশতালিকাও পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদ রজতকান্ত রায় বলছিলেন, মীর জাফর বাংলার মুঘল অশ্বারোহী বাহিনীর বকশী ছিলেন, অর্থাৎ ইংরেজিতে যাকে বলে পে মাস্টার জেনারেল বা প্রধান সেনাপতি। তার পরেই ছিলেন রায় দুর্লভরাম সোম। তিনি ছিলেন বিদেশি, আরব বিদেশি– নাজাফ থেকে এসেছিলেন।

রজতকান্ত রায় বলছেন, তিনি যখন সেনাবাহিনীতে যোগ দেন, তখন সাধারণ অশ্বারোহী ছিলেন। তারপরে ধীরে ধীরে তার পদোন্নতি হয় বিশেষ করে আলিবর্দি খাঁয়ের সময়ে। রায় দুর্লভ ছিলেন নিজামত দেওয়ান আর মীর জাফর ছিলেন বকশী। আলিবর্দি খাঁ এদের দিয়ে শপথ করিয়ে নিয়েছিলেন যে তারা সিরাজের পক্ষে থাকবে যে কোনও যুদ্ধে।

পলাশীর ‘বিশ্বাসঘাতক’

ভারতের, বিশেষ করে বাঙালীদের একটা বড় অংশ জেনে এসেছেন যে মীর জাফরের ষড়যন্ত্রের জন্যই পলাশীর যুদ্ধে ক্লাইভের বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। তবে মীর জাফরের বংশধরেরা সেকথা বিশ্বাস করেন না।

তারই বংশধর, সৈয়দ মুহাম্মদ বাকের আলি মির্জার কথায়, যুদ্ধটা হল কিসের জন্য– কে নির্দেশ দিয়েছিল! মীর জাফর ভাবলেন যে আমি প্রধান সেনাপতি, কিন্তু যুদ্ধের নির্দেশটা কে দিল!

তিনি বলছেন, ট্রেচারি বলা হয় – কী ট্রেচারি করেছিলেন তিনি? যুদ্ধ হচ্ছে কিন্তু তিনি ভাগ নিলেন না – সেইজন্যই উনাকে বিশ্বাসঘাতক বলা হয়। যুদ্ধে অংশ না নেওয়ার জন্য যদি বিশ্বাসঘাতক হয়ে যায়, সেটা তো মানা যায় না। আজ পর্যন্ত তো কেউ প্রমাণ করতে পারল না যে উনি গদ্দারি করেছেন।

এই দাবি যেমন অনেক ইতিহাসবিদ মানেন না, তেমনই সাধারণ মানুষের বড় অংশই মীর জাফরকে এখনও বিশ্বাসঘাতক বলেই মনে করেন আর তা নিয়ে গত ২৬৮ বছর ধরেই নানা বিদ্রূপ শুনতে হয় তার বংশধরদের।

সৈয়দা তারাৎ বেগম, মীর জাফরের অষ্টম প্রজন্মের বংশধর সৈয়দা তারাৎ বেগম বলছিলেন, মীর জাফরকে নিয়ে ইংরেজরা তো খেলা করল– একটা গোটা বংশকে নিয়ে খেলা করল। দেশের মানুষ সেটা বুঝতে না পেরে মীর জাফরকে একটা শিখণ্ডী খাড়া করে উনাকে বিশ্বাসঘাতক করে দিল।

তার প্রশ্ন, এখন কেন নতুন ভাবে আপনারা জানতে চাইছেন – যদি ট্রেইটার হয়ে থাকে, তাহলে ট্রেইটার। এখনও পর্যন্ত এই পরিবারের খারাপ কোনো কাজ হলে লোকে বলে মীর জাফরের বংশধর আর ভাল কিছু করলে বলে এটা মুর্শিদাবাদের লোক।

মীর জাফরকে বিশ্বাসঘাতক বলা হয়ে থাকে তিনি ব্রিটিশদের পক্ষ নিয়েছিলেন বলে, তবে সেই ব্রিটিশ বনিকরা কিন্তু তাকেও সরিয়ে দিয়েছিল মসনদে বসার বছর তিনেকের মধ্যেই।

তার জামাই মীর কাশিমকে নবাব বানায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, যদিও তিন বছর পরে আবারও মীর জাফরকে ফিরিয়ে আনা হয় বাংলার মসনদে।

জীবনের শেষ দিন – ১৭৬৫ সালের পাঁচই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মীর জাফরই ছিলেন বাংলার নবাব। প্রাসাদের সামনেই তাদের পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত আছেন মীর জাফর।

রাজনীতি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশটা কেউ কেউ পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলছে, যার কারণে বর্তমান সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা কল্পনাও করা যায় না। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে। সেই মৌলিক সংস্কারের কথা আমরা বলেছি। আমরা মৌলিক সংস্কার করে ছাড়ব এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।

শুক্রবার বিকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটির আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জনসভায় তিনি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় বুধবার রাতে দলের দুজন আসামিকে ছিনিয়ে নিতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের থানা পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর, পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে ‘পাটগ্রামের’ কথা স্মরণ করিয়ে দেন ডা. শফিকুর রহমান।

দেশবাসীকে সতর্ক বার্তা জানিয়ে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কথা শুনতে পাচ্ছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করে দিতে চাই। কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের মতো স্বপ্ন দেখে থাকেন। তাহলে বলতে চাই, মহান আল্লাহর সাহায্যে আমরা সেই স্বপ্নকে দু:স্বপ্ন করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এমন কিছু বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। দেশে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলবে না, কালো টাকার খেলা চলবে না। প্রশাসনের ক্যু চলবে না।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কেউ যেন অপকর্ম করতে না পারে। এজন্য আমরা সজাগ রয়েছি। জনগণের ভোটে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে যারাই জয়ী হবে তাদের স্বাগত জানাতে এখন থেকেই আমরা প্রস্তুত। আমরা আরও বলতে চাই, হাসিনার হাতে সব বাহিনী ছিল। জনবিস্ফোরণের কারণে ক্ষমতা আটকাতে পারেনি তারা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদের নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমাদের জয় নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ, কারণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা কোনো মস্তানতন্ত্র বিশ্বাস করি না। আমরা জনগণের ইচ্ছা পূরণের জন্য রাজনীতি করি। মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের এই রাজনীতিতে আসা।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা মায়া কান্না করেছে, তারাই সংখ্যালঘুদের সম্পদ লুট করেছে। আমরা দেশের মধ্যে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানি না। এ দেশের মাটিতে যারাই জন্ম গ্রহণ করবে, তারাই এদেশের সম্মানিত নাগরিক। আমরা কথা দিচ্ছি, সংবিধান অনুযায়ী আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াবো। ওরা মালিক হয়েছিলো জনগণের। আমরা জনগণের সেবক হব ইনশাআল্লাহ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মদিনার ছায়ার আলো এই বাংলাদেশে আমরা দেখতে চাই। শরিয়ার কথা শুনলে অনেকে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। কেননা তারা ঘুস দুর্নীতি করতে পারব না, যা ইচ্ছে তা করতে পারবে না, পর নারীর ইজ্জত লুট করলে তাদের জীবন থাকবে না, চুরি করলে তার হাত থাকবে না। এমন মদিনার ছায়া আমরা এ দেশে দেখতে চাই।

‘মব কালচার’ প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, দেশে ‘মব কালচার’ নতুন না। ৭২ সাল থেকেই দেশে ‘মব কালচার’ চলছে। ৭২ সালে মায়ের স্তন কেটে উল্লাস করেছে, এমন কুলাঙ্গার বাংলাদেশে আছে। সে নারী যেই হোক, সে আমার মা, সেই নারী আমার বোন, আমার মেয়ে। তার স্তন কাটার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মানুষ মারা হয়েছে। সেগুলো কি ‘মব কালচার’ ছিল না। সেগুলো ‘মব কালচার’ ছিল। তবে মব কালচারকে সমর্থন করার সুযোগ নেই আমাদের। কোন নাগরিক নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার রাখে না। দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচার তা করবে। সেই আইন দেশের সংবিধানে রয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আবু সাঈদ বিশাল আন্দোলনের ‘আইকনিক পারসন’ ছিলেন। তিনি রংপুরের গর্ব। ২৪ জুলাইয়ে যারা নিহত হয়েছে, যারা আহত হয়েছে। আহতদের এখনো সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এসবের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, এ দেশের মানুষে তাদের বিচার দেখতে চায়। যদি বিচার না হয়, তাহলে ন্যায় বিচারের সংস্কৃতির অভাবে, বাংলাদেশ জঙ্গলে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলি, অতিতে যারা অপরাধ করেছেন, তাদের বিষয়টা রাষ্ট্র দেখবেন। এখন আপনারা যারা দায়িত্বে রয়েছেন, আপনারা দায়িত্ব পালন করুন। আপনারা ন্যায়ের পক্ষে থাকবেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে আপনাদের শক্তি জোগাবে ইনশাআল্লাহ। আমরাও আপনাদের পাশে থাকব; কিন্তু অন্যায় দেখলে আমরা সবার আগে প্রতিবাদ করব। অতএব অন্যায়কারীর পক্ষ নিবেন না। জনগণের বিপক্ষে যাবেন না। জনগণের বিপক্ষে গেলে কি পরিণতি হয় সেটা ২০২৪ সালে দেখেছেন।

দীর্ঘ ১৭ পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।

জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরের আমির এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও বড়ভাই রমজান আলীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

এর আগে সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠেই দুটি জামায়াতের মাধ্যমে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন তারা।

জনসমাবেশস্থল ছাড়াও ডিসির মোড়, কাছারি বাজার, আরডিআরএস মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কখনো রোদ, কখনো ছায়া, এই রোদছায়ার লুকোচুরি আবহাওয়ার মাঝেই মাঠে বক্তব্য শোনেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।

বক্তব্যের শেষে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। সেই সঙ্গে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ছেয়ে যায় পুরো মাঠ।

রাজনীতি

শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড। পরের অংশের কৃতিত্ব বিপ্লবী ছাত্র- জনতার।

শুক্রবার (৪ জুলাই) উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

‘মেটিকুলাস ডিজাইনে সমস্যা কোথায়?’ শিরোনামে দেওয়া তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“মেটিকুলাস ডিজাইনে সমস্যা কোথায়?

পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে মেটিকুলাস ডিজাইন করে আগরতলা ষড়যন্ত্র, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান আর ’৭১ এর মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলন ও বাঙ্গালি-বিহারি দাঙ্গা সঠিক হইতে পারলে ’২৪ এর গণ-অভ্যুত্থান মেটিকুলাস ডিজাইন হইলে সমস্যা কোথায়?

দুনিয়ার কোনো অভ্যুত্থান বা বিপ্লব পরিকল্পনা না করে হয়েছে? জনগণের চৈতন্যকে ঐক্যবদ্ধ ও লক্ষ্যাভিমুখী রাখতে মেটিকুলাস ডিজাইনের বিকল্প নেই। যখন জনগণ নেতৃত্ব ও বক্তব্য পেয়ে যাবে এবং বিপ্লবের অবজেক্টিভ কন্ডিশন প্রস্তুত, তখন আর প্ল্যানের দরকার পড়ে না। কিন্তু তার আগে রাজনৈতিকভাবে জনগণকে প্রস্তুত এবং বিপ্লবী করে তোলা মেটিকুলাস ডিজাইন হলে সমস্যা কোথায়?

সিরাজুল আলম খান, তাজউদ্দিন, সিরাজ শিকদার আর ভাসানী, এমনকি খোদ শেখ মুজিব যদি পাকিস্তানকে পরাজিত করতে মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হয়ে পাপবোধ না করেন এবং আমরা তাদের নিয়ে (তাদের ভুলসহই, স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য) গর্বিত হতে পারি, তাহলে ’২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে মেটিকুলাস ডিজাইন করে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করলে কেন এ প্রজন্ম গর্বিত বোধ করবে না?

৩ তারিখের ১ দফা ঘোষণার আগে জাতিসংঘের বক্তব্য ছাড়া বিদেশি শক্তি বা সামরিক বাহিনী কারোরই বিন্দুমাত্র অংশগ্রহণ ছিল না এ গণ-অভ্যুত্থানে। ভারতের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে (যা ন্যায্য বলেই আমরা মনে করি) আগরতলা বৈঠক থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য শেখ মুজিব ও অন্যান্য জাতীয় নেতৃত্বের প্রতি যদি আমাদের শ্রদ্ধা থাকে, তাহলে কোনো বিদেশি শক্তি বা তৃতীয় শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র কিংবা সলা-পরামর্শ ছাড়াই জনগণের অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ফেলার জন্য অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ এবং অংশীজনকে কেন গালি শুনতে হবে?

পুনশ্চ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের দুটি অংশ। ৫ই জুন থেকে ১৮ ই জুলাই। এ অংশে অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট এবং নেতৃত্ব তৈরি করেছিল। আর ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত সকল স্তরের ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে এবং আত্মদানে অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল।

প্রথম অংশ অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড। পরের অংশের কৃতিত্ব বিপ্লবী ছাত্র- জনতার। কিন্তু, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা এবং সুনির্দিষ্ট বক্তব্য না থাকলে এ বিপ্লবী জনতা পরের অংশে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পার‍ত না। শুক্রবার দিবাগত রাত, ২রা আগস্টে এ অভ্যুত্থান বেহাত হয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের দিকে মোড় নেয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তা ঠেকাতে পেরেছিল অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব।

এ নির্দেশনা ও বক্তব্যের অবদানটুকু বাদে ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত বিদ্রোহ, প্রতিরোধ, আত্মত্যাগ আর বিপ্লবী তৎপরতার কৃতিত্ব সকল স্তরের ছাত্র-জনতার।

উপরের এ ব্যাখ্যা মওলানা ভাসানীর ’৬৮ সালের ঘেরাও আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ মিলিয়ে দেখেন, অথবা ’৭১ এর মার্চ। আপনারা মেটিকুলাস ডিজাইন ও বুঝতে পারবেন এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ, প্রতিরোধ আর বিপ্লবী তৎপরতারও হদিস পাবেন। ”

জাতীয়

বাংলাদেশে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব হয়েছে সেটি নানা কারণে পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য। সব শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে এই বিপ্লব হয়েছে। যেটির নেতৃত্বে ছিলেন তরুণ-যুবকরা। তারুণ্যের শক্তি যে রোখা যায় না, সেটি আবারও প্রমাণ হলো ঢাকায়। তরুণদের ডাকে শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ এতে যোগ দেয়। যেটি পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।দুই মাসব্যাপী রক্তাক্ত আন্দোলনের সফলতা ধরা দেয় ৫ আগস্ট, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পলায়নের মধ্য দিয়ে।

পৃথিবীর যেখানেই বিপ্লব হয়েছে সেখানেই কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিংবা সংগঠন অথবা ক্যারিশম্যাটিক লিডার সামনে ছিলেন। ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবে নেপোলিয়ন বেনাপোর্ট, ১৯১৭ সালের বলশেভিক বিপ্লবে ভ্লাদিমির ইলিয়চ লেনিন, ১৯৪৯ সালে চীনা বিপ্লবে মাও সে তুং, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি নেতৃত্ব দিয়ে চূড়ান্ত বিপ্লব বয়ে আনেন। বিপ্লব ছাড়াও বড় যেকোনো আন্দোলনের সফলতার জন্যও বড় কোনো নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়; বাংলাদেশে জুলাইর বিপ্লবের সেই অর্থে ছিল ব্যতিক্রম। চব্বিশের আন্দোলনে একক কোনো নেতৃত্ব ছিল না। বিপ্লবের নাটাই ছিল না কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের হাতের মুঠোয়। তরুণ ছাত্র-শক্তি ছিল বিপ্লবের অগ্রভাগে। তৎকালীন অরাজনৈতিক সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই বিপ্লবের নিউক্লিয়াস। এই আন্দোলনের নেতারা ১৮ কোটি মানুষের ভবিষ্যত নির্মাণে জীবন ঝুঁকি নিয়েছেন।পুলিশ-র্যাব মার দিয়েছে, ডিবি তুলে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য সব স্থানে তাদের খোঁজাখুঁজি করেছে, রাষ্ট্রের অন্যান্য বাহিনী নির্মূলের হুমকি দিয়েছে। এতোসব বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে গেছেন নাহিদ, হাসনাত, আসিফরা। টলে নি। তাদের দৃঢ়চেতা নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৭ বছরের অন্ধকার ভেদ করে আলোর দেখা মিলেছে।

৫ আগস্ট এদেশে গণআকাঙক্ষার বিজয় হয়েছে। দর্প চূর্ণ হয়েছে ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার। যেটি ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত অনেকের কল্পনায়ও স্থান পায়নি। একনায়ক ও জবরদস্তিমূলত রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। গুলি-গ্রেনেড-হামলা-মামলার মুখে বিরোধী দলের একের পর এক আন্দোলনের ব্যর্থতায় একটা সময় দেশের মানুষ মনে করতে শুরু করে যে এই জগদ্দল পাথরকে বাংলার জমিন থেকে সরানো যাবে না। আন্দোলন করে লাভ হবে না। সেই ধারণার মূলে কুঠারাঘাত করেছে তারুণ্য। রাজপথে তাদের দৃঢ়তা ফ্যাসিবাদী শক্তির মূল উৎপাটন করে দিয়েছে। যার ফলে মুক্ত পরিবেশে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে ১৮ কোটি মানুষ।

জুলাই বিপ্লবের বার্ষিকীতে আমাদের পিছু ফিরে তাকানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ৫ জুন সরকারি চাকুরির নিয়োগ ব্যবস্থায় কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে ২০১৮ সালে সরকার কর্তৃক জারি করা সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। ঘোষণার পরপরই, শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের জন্য ৫৬% চাকরি সংরক্ষণ করার সুবিধা দেওয়ার কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

সরকার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও শিক্ষার্থীরা ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে অস্বীকার করে এবং কোটা বাতিলের নতুন নির্বাহী আদেশের দাবি জানায়। মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিণতি পেয়েই জুলাই বিপ্লবে রূপ নেয়। যেই গণআন্দোলনে ১৫০০ তাজা জীবন ঝরে যায়। আমরা কী একবার ভেবে দেখেছি, যদি এই আন্দোলন ব্যর্থ হতো কী হতো নাহিদ-হাসনাতসহ লাখো তরুণদের?

জুলাই বিপ্লব আরও কিছু কারণে স্মরণকালের ইতিহাসে অনন্য। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। সাঈদ অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বুলেটের সামনে নিজের বুক যেভাবে বিছিয়ে দিয়েছেন এটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শুধু গল্পেই মানায়। সেদিন গুলি লাগার মুহূর্তে রাজপথে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে মানুষ শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসেন। এই আন্দোলনই রূপ নেয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে।

আন্দোলনরত তরুণদের তৃষ্ণা নিবারণে মুগ্ধর ‘পানি লাগবে পানি’ এই ডাক এখনও কানে বাজে। আন্দোলনকারীদের তৃষ্ণা নিবারণ করায় হাসিনার পেটুয়া বাহিনী সড়কের ফেলে মুগ্ধকে যেভাবে খুন করল তাকে কি বুঝতে অসুবিধা হয় যে, তাদের রক্তের নেশা পেয়ে বসেছিল। সাঈদ-মুগ্ধর মতো দেড় হাজার তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে হাসিনার পোষা লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী।

জোহরের নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার সময় পুলিশের গুলিতে শহিদ হন ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন দমনে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় ১৭ জুলাই নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল পুলিশ। জোহরের নামাজ পড়ে বের হয়ে বাসায় ফিরছিলেন ইয়ামিন। ঠিক তখনই গুলিবিদ্ধ হন ইয়ামিন। তাকে পুলিশ তাদের সাঁজোয়া যান এপিসিতে উঠায়। একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ ইয়ামিনের নিথর দেহ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। আর এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই বর্বরোচিত ঘটনা দেখে দেশের মানুষ বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যায়। আন্দোলন আরও গতি পায়।

যাত্রবাড়ি অনেকটা লেলিনগ্রাদের মতো রূপ নেয়। সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পুলিশের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তা দেখলে গা শিউরে উঠে।

চব্বিশের বিপ্লবে বাবা-মা তাদের সন্তানদের ঘরে বেধে রাখতে পারেননি। তারা ছুটে এসেছেন রাজপথে। সন্তানদের পথ ধরে বাবা-মাও এসেছেন রাজপথে। ঢাকার সড়কে এক বাবা তো ঘুরে ঘুরে বলেই বেড়াচ্ছিলেন যে-আমার সন্তান এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে; আপনার সন্তানদেরকেও পাঠান। তুমুল আন্দোলনের মুখে এক সন্তানকে হাতকড়া বেঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল আইনশৃংখলা বাহিনী; তখন মা সন্তানকে সাহস দিয়ে বলছিলেন-যাও ভয় পেও না।

চব্বিশের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌসের রাজপথে থেকে শিক্ষার্থীদের প্রেরণা যোগানো, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীর নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি করে সাহস যোগানো, ড. সলিমুল্লাহ খানের ঘোষণা-অপরাধীর কাছে বিচার চেয়ে লাভ নেই, সরকারের পতন ঘটাতে হবে—এই স্মৃতিগুলো এখনও হৃদয়ে নাড়া দেয়।

জুলাই বিপ্লবের নেপথ্যে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের অবদানও কি জাতি ভুলতে পারবে? বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী, কওমী আলেমদের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, আন্দালিব রহমান পার্থের বিজেপি নেপথ্যে থেকে জোরালো ভূমিকা রাখে। এই দলগুলোর বহু নেতাকর্মী রাজপথে থেকে আন্দোলনকে পরিণতি এনে দেয়।লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার দলের নেতাকর্মীদের ছাত্রদের পাশে থাকার নির্দেশ দেন। বিএনপি-ছাত্রদলের কয়েকশ নেতাকর্মী এই গণআন্দোলনে নিহত হয়।

এই বিপ্লবে রাজনীতির রঙ না লাগানোর আরও একটা কারণ ছিল। যদি এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা সামনে আসতেন তাহলে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিতে পারত। তৎকালীন সরকার বিশ্ববাসীকে বোঝাতে সক্ষম হতো যে, এটি নিছক ছাত্রদের আন্দোলন নয়। রাজনৈতিক আন্দোলন। সেই অছিলায় সেভাবেই ক্র্যাকডাউন চালানো হতো।

জাতীয়

গণতন্ত্রের প্রশ্নে টানা ১৬ বছর ধরে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে গণতন্ত্র কবরস্থ করেছিলেন, তা পুনর্জাগরণের জন্যই বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে।

নানা নির্যাতনের পরেও বিএনপি কখনো থেমে যায়নি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, গণতন্ত্র যখনই ধ্বংস কিংবা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে, তখনই খালেদা জিয়া বারবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছেন। পরমত সহিষ্ণুতাও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের কেউ যেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে না পড়ে, সে জন্যই এই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে।

অপরাধ করলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনৈতিক ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান-‘জিরো টলারেন্স’ বলেও উল্লেখ করেন এই নেতা।

এ সময় রিজভী জানান, ইতোমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সারাদেশে কয়েকজন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব-উন নবী খান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

টাঙ্গাইলের কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজে এইচএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহ করার সময় কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মৃদুল হাসানকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজ কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদেক।

মৃদুল কালিহাতীর শাজাহান সিরাজ কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি। কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব মো. মজিবর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, মঙ্গলবার এইচএসসি পর্যায়ের ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে কলেজ কেন্দ্রের ভেতরে নকল সরবরাহ করতে যান মৃদুল। এ সময় দায়িত্ব পালনরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমির কাছে ধরা পড়েন তিনি। পরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব মো. মজিবর রহমান বলেন, আটক মৃদুল হাসানের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত নির্দেশনা পেয়েছি। কলেজের সিনিয়র স্যারদের পরামর্শক্রমে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

কালিহাতী থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান, আটক মৃদুল হাসান পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

রাজনীতি

ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া আসাদুল ইসলাম ছাত্রদল সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, আপনার মন চাইলো অমনি আমাকে ‘ছাত্রলীগ’ বলে দিলেন? এতটা নিম্নপর্যায়ে কীভাবে নামা যায়? তা আমার জানা নেই। আপনার এই ভিত্তিহীন, অবমাননাকর ও মানহানিকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

ওই পোস্টে জবি শিবির সভাপতি আরও লেখেন, একটা বৃহৎ, ত্যাগী ও আদর্শভিত্তিক ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব থেকে ছাত্রসমাজ দায়িত্বশীল বক্তব্য প্রত্যাশা করে। কিন্তু যখন অযোগ্য কাউকে ধরে এনে নেতৃত্বে বসানো হয়, তখন তার কাছ থেকে দায়িত্বশীলতা আশা করাটাই বোকামি- আজ আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তা প্রমাণ করেছেন।

আসাদুল ইসলাম লিখেছেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি, এই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য আপনি অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। নিজের দল ও আদর্শ নিয়ে কিছু বলার সামর্থ্য না থাকলে, করার সামর্থ্য না থাকলে, অন্তত চুপ থাকুন। জুলাই বিপ্লবোত্তর ছাত্রসমাজ আপনার এই ঘৃণ্য ও বেপরোয়া বক্তব্য কখনোই মেনে নেবে না। দয়া করে একটি ডানপন্থি, আদর্শবাদী সংগঠনকে এভাবে সমূলে বিনাশ করবেন না।

এর আগে এদিন বিকালে জবি ছাত্রশিবির সভাপতি ও সেক্রেটারির ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টটার অভিযোগ এনে বক্তব্য দেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আয়োজিত সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এই অভিযোগ তুলেন।

এসময় ছাত্রদল সভাপতি বলেন, বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারির ছাত্রলীগ করার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সরাসরি ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল। বর্তমানে ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করতে চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে এমন করা হলে আমরা মেনে নিবো না। ছাত্রশিবিরের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছে। সে সম্ভবত ২০০৮-০৯ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার কীভাবে ছাত্রত্ব থাকে?