জাতীয়

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী জানুয়ারিতে ঢাকার ১০টি রাস্তা হর্নমুক্ত ঘোষণা করা হবে। দেশকে হর্নমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করা হবে।

তিনি বলেন, দেশকে হর্নমুক্ত রাখতে সবাইকে নিজের গাড়ি নিয়ন্ত্রিতভাবে চালাতে হবে এবং হর্ন ব্যবহার কমাতে হবে। পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক তথ্য ও জ্ঞানের ভিত্তিতে জনমত গঠনে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরাস্থ বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে শহীদ সেলিম বিইউএফটি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৪ এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজকের তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। পরিবেশবান্ধব দেশ গঠনে তাদের অবদান রাখতে হবে। সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে তরুণ প্রজন্মকে সমস্যা সমাধানে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নিরাপদ ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বিতর্কের মাধ্যমে তাদের বক্তৃতা দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং সমস্যার সমাধানে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ফারুক হাসান, সদস্য নাসির উদ্দিন চৌধুরী এবং প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব নবী খান বক্তব্য রাখেন।

এ বছর শহীদ সেলিম বিইউএফটি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টি এবং কলেজ পর্যায়ের ৩২টি দল অংশ নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি; জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ১ম রানার আপ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ২য় রানার আপ হয়।

কলেজ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ১ম রানার আপ নৌবাহিনী কলেজ এবং ২য় রানার আপ মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টাকে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি লেখা ও চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা একটি শাড়ি উপহার দেওয়া হয়। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

জাতীয়

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের সাত নম্বর গ্যাস কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে আরও ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস। সোমবার বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ৭ নম্বর কূপ থেকে আজ নতুন করে আরও সাড়ে ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে। এর আগে ২২ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর তেলের পুরোনো কূপ (সিলেট-৭নং কূপ) সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে নতুন গ্যাসের স্তরের সন্ধান পাওয়া যায়। দুদফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এক হাজার ২০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরাতন গ্যাসকূপ সিলেট-৭ নম্বরে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে।

গত ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এই টেস্ট হিসাবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরবর্তীতে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতিদিন সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) প্রকল্প পরিচালক ও ডিজিএম আবদুল জলিল প্রামাণিক বলেন, হরিপুর ৭নং কূপ সংস্কার করতে গিয়ে গত ২২ অক্টোবর ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।

অর্থনীতি

টেলিকম খাতে কাউকে দানব হতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছেন, “যারা চেষ্টা করবে, প্রয়োজনে পাখা কেটে দেওয়া হবে।”

দেশব্যাপী ফাইবার অপটিক কেবল সেবাদাতা এনটিটিএন অপারেটরদের সেবা নিয়ে নিজেদের অসন্তুষ্টি তুলে ধরার পাশাপাশি নিজেরাই আবার ফাইবার কেবল স্থাপনে অনুমতি পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো।

সোমবার এক গোলটেবিলে বৈঠকে টেলিযোযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কাছে ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার সেই দাবি আবারও তুলে ধরেছে মোবাইল অপারেটররা।

বৈঠকে উপস্থিত ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) এনটিটিএন অপারেটররা এর বিরোধীতা করে বলেছে, কমন নেটওয়ার্ক ছাড়া খরচ কমানো সম্ভব নয়। বিটিআরসির নীতিমালায় কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে, যেগুলো সুনির্দিষ্ট হওয়া উচিৎ।

রাজধানীর একটি হোটেলে টেলিযোগাযোগ বিটের প্রতিবেদকদের সংগঠন টিআরএনবি আয়োজিত ‘আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের গুরুত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিষয়টি সামনে আসে।

এতে বক্তব্য রাখেন মোবাইল অপারেটর রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন এনটিটিএন কোম্পানি ‘ফাইবার অ্যাট হোম’ ও ‘সামিট কমিউনেকশন্সে’র প্রতিনিধিরা।

মোবাইল ফোন অপারেটর ও এনটিটিএনগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানের প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী বলেন, “মোবাইল অপারেটর এবং এনটিটিএন দুইজনের ওপর আস্থা রেখেই দেখেছি, ফল আসেনি। কেননা মোবাইল অপারেটররা একটা সুইট পয়েন্ট মিস করেছে। ডেটা রেভ্যুলেশনে তারা এখন ডিজিটাল সেবাদাতা হিসেবে পরিচিত হতে চায়। ইন্টারনেটের দাম জলের দামে নেমে না আসলে এটা সম্ভব হবে না। এজন্য নেটওয়ার্ক সাসটেইন করতে হবে।”

মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথ পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ফাইবার অপটিক কেবল। ২০০৯ সালের আগে মোবাইল অপারেটরগুলো নিজেরাই এই ফাইবার স্থাপন করেছে, কেউ রেলের ফাইবার ব্যবহার করেছে।

এরপরে সরকারের সিদ্ধান্তে ফাইবার কেবল স্থাপনের জন্য এনটিটিএন লাইসেন্স দেওয়া হয়। তখন থেকেই ফাইবার কেবলগুলোর নিয়ন্ত্রণ পায় এনটিটিএন কোম্পানিগুলো। এখন দেশে সরকারি তিনটি ও বেসরকারি তিনটি এনটিটিএন রয়েছে। তবে বাজারে ‘ফাইবার অ্যাট হোম’ এবং ‘সামিট কমিউনিকেশন্সে’র আধিপত্য রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার এসব কোম্পানিকে ’অনৈতিকভাবে’ বাড়তি সুযোগ দিয়েছে কি না সে বিষয়টিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে। তবে এনটিটিএন কোম্পানিগুলো সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মোবাইল অপারেটরগুলো সেবার ক্ষেত্রে ত্রুটি ও উচ্চ মূল্যের জন্য এনটিটিএনগুলোকে অভিযুক্ত করে আসছে।

এর বিপরীতে এনটিটিএন অপারেটরদের যুক্তি ‘কমন নেটওয়ার্ক’ স্থাপনের ফলে ডেটার দাম কমানো সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি মোবাইল অপারেটর পৃথকভাবে ফাইবার বসালে তাতে খরচ বাড়বে, জটিলতাও বাড়বে।

সংশিষ্টরা বলছেন, মোবাইল অপারেটরগুলো এনটিটিএন এর কাছে ফাইবার ভাড়া নিতে (ডার্ক ফাইবার) চায়। আর এনটিটিএনগুলো চায় পরিবহন করা ব্যান্ডউইথের পরিমাণ অনুযায়ী দাম নিতে। এ নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য। কোম্পানিগুলো নিজেদের মধ্যে বসে এর সুরাহা করতে পারছে না।

সোমবারের গোলটেবিলে মোবাইল অপারেটর রবির চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার সাহেদুল আলম অভিযোগ তোলেন, “এখন পর্যন্ত দুটো এনটিটিএন অপারেটর আমাদেরকে কিন্তু ফাইবার দেয় না। এনটিটিএন’র যে মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাদের ফাইবার দেওয়া হবে সেটা কিন্তু তারা দিচ্ছে না। যার কারণে আমরা সাফার করছি প্রতিনিয়ত। এখন ফাইবার অ্যাট হোম রাজি হয়েছে ডার্ক ফাইবার দিতে। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।

“আমরা যাচ্ছি একদিকে, এনটিটিএন অপারেটররা যাচ্ছে একদিকে। আমাদের থিংকিং প্রসেসের কোথাও মিল হচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের দিকে তাকালে আমরা দেখি ভিডিওর চাহিদা বাড়ছে ৩০ গুণ বেশি। নন ভিডিও অ্যান্ড টু অ্যান্ড কমিউনিকেশন বাড়বে ৪৭ গুণ। আমরা এর জন্য প্রস্তুত, অবশ্যই না।”

তার ভাষ্য, এখন নানা কারগরি কারণে তিনটি এনটিটিএন অপারেটরের কাছ থেকে সেবা পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের ক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থে কোনো প্রতিযোগিতা নেই এবং সেখানে মানসম্পন্ন সেবার কোন প্রশ্নও কেউ তুলছে না। কেবল মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রেই মান সম্পন্ন সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

”এর কারণে আমরা মানুষের কাছে তাদের প্রত্যাশিত দামে মান সম্পন্ন সেবা দিতে পারছি না।“

বৈঠকে উপস্থিত বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে সাহেদুল বলেন, “আমরা কিন্তু বলছি না আপনি এনটিটিএন অপারেটরদের বন্ধ করে দেন। আমরা মনে করি এনটিটিএন অপারেটররা আমাদের সহযোগী। আমরা যেটা বলব, মোবাইল অপারেটরদের যেমন রেস্ট্রিকশন দেওয়া আছে, এনটিটিএন অপারেটরদের যেমন রেস্ট্রিকশন দেওয়া আছে এই সমস্ত রেস্ট্রিকশনগুলো তুলে দেওয়া হোক। সব প্লেয়ারকে ওপেনলি বিজনেস ও ইনভেস্ট করার সুযোগ দেওয়া উচিৎ।

”এইসব রেস্ট্রিকশন তুলে দিয়ে প্রতিযোগিতা তৈরি করুন, যা একটা গ্লোবার ইকোনমির জন্য প্রয়োজন। ওপেন হয়ে গেলে আমরা ফাইট করব বেশি।”

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন আমাদের সামনে একটা লাইফটাইম অপরচুনিটি তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে যদি আমরা এটা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে না পারি আমরা এই সুযোগ হারাব। এখানে কোনো পলিটিক্যাল প্রভু (মাস্টার) নেই, আমাদের বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে এখন কোন রাজনৈতিক মাস্টারকেই খুশি করতে হবে না।”

পরে সামিট কমিউনেকশন্সের চিফ নেটওয়ার্ক আর্কিটেক্ট ফররুখ ইমতিয়াজ বলেন, “২০০৯ সালে এনটিটিএনগুলোকে সেবা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা কী ধরনের সেবা দিতে পারব তা এই ২০২৪ সালে এসেও সুনির্দিষ্ট হয়নি। আমরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোভাইডার হিসেবে আইএসপি বা অন্য যারা ইউজার আছেন তাদের কী ধরনের সার্ভিস দিতে পারবো সেখানে একটা গ্রে এরিয়া বা কনফিউশন আছে।

”আবার (মোবাইল অপারেটরগুলোকে) এনটিটিএন কী সেবা দিবে এটা আসলে ডার্ক ফাইবার মিন করে, না এটা ক্যাপাসিটি বেইজড সার্ভিস মিন করে বিটিআরসির গাইডলাইনে এগুলো ক্লিয়ার না। এই জায়গা থেকে বিটিআরসি যদি কোন ক্লিয়ার দিক নির্দেশনা দেয় তাহলে আমরা অবশ্যই সেটা ফলো করব।”

তার ভাষ্য, “আমরা যখন বিজনেস শুরু করি তখন বড় যে অপারেটরগুলো ছিল তাদের হাতেই এই ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কটা কুক্ষিগত ছিল। এবং তখন এক এমবিপিএস (ডেটার) দাম ছিল ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এখন সেই পরিমাণ ডেটার দাম আসলে এটা ৫০ টাকারও কম।”

অবকাঠমো ব্যবসায় চুক্তির ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়ার গুরুত্ব দিয়ে ফররুখ ইমতিয়াজ বলেন, “যখন টাওয়ার ব্যবসার সুযোগ সামনে এলো তখন বিটিআরসি একটা লকিং পিরিয়ড দিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে ২০০৭ সালে যখন এনটিটিএন গাইলাইনটা করে সেখানে এরকম কোন লকিং ছিল না। ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিজনেসে রিটার্ন আসে লং টার্মে।“

তার আশা বিটিআরসি এই সময়সীমাটা (লকিং) সুনির্দিষ্ট করে দিলে দাম অনেক কমিয়ে দেওয়া সম্ভব।

বাংলালিংকের করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান তাইমুর রহমান বলেন, “মোবাইল অপারেটর, এনটিটিএনসহ সবারই ফাইবার ডেপ্লয় করার সুযোগ থাকা উচিৎ। আমাদের যখন একটা বেইজ স্টেশন (টওয়ার) থেকে আরেকটা স্টেশনে জরুরি ভিত্তিতে ফাইবারের প্রয়োজন হয় তখন এটার জন্য কেন আমাদের আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে। এটা কিন্তু অনেক ডিলে হয়ে যায়। এটা একটা সমস্যা।”

মোবাইল কোম্পানি কেন টাওয়ার রাখতে পারবে না সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এই বিষয়গুলো রিভিউ করা উচিৎ। ফাইবারাইজেশন বাড়ানোর জন্য বা আমি যদি আরও তাড়াতাড়ি ডেপ্লয় করতে চাই তাহলে কেন পারবে না। এগুলো তো আমার ব্যবসার কাঁচামাল।”

এনটিটিএন কোম্পানি ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান ময়নুল হক সিদ্দিকী বলেন, “১৬ বছর ধরে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে কমন নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করছে এনটিটিএন। আইএসপিরা যেন তৃণমূলে ইন্টারনেট নিয়ে যেতে পারে সে জন্য আমরা কাজ শুরু করি। সবগুলো উপজেলায় নেটওয়ার্ক নিয়ে যাওয়াটা খুবই কঠিন কাজ। এখন মনে হচ্ছে সব সমস্যার গোড়া এনটিটিএন।

“আমরা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে থাকতে চাই। এজন্য আমরা বারবার অপারেটরদের সঙ্গে বসেছি। এরপরও আমি উত্থাপিত সব প্রশ্নেরই লিখিত উত্তর দিতে পারব। একসঙ্গে কাজ করলে সল্যুশন আসবে। কমন নেটওয়ার্কের কারণে ট্রান্সমিশন খরচ ১০০ ভাগ কমানো সম্ভব হয়েছে।”

সভায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেন, “আজকের দিনে ইন্টারনেট মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। কখনোই ইন্টারনেট বন্ধ হওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে ব্যবসা সুরক্ষায় নয় সেবার চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে রেফারির দায়িত্ব পালন করবে বিটিআরসি।”

টেলিকম খাতে কাউকে দানব হতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যারা চেষ্টা করবে, প্রয়োজনে পাখা কেটে দেওয়া হবে।”

নেটওয়ার্ক আলাদা করার ধারণা থেকে এনটিটিএনগুলোর জন্ম মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু এখন এনটিটিএনকে সমস্যা হিসেবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।… ইন্টারনেটের কেন্দ্রে রয়েছে এনটিটিএন। সেজন্য সরকার সর্বাত্মক সহায়তা করেছে। তারা কোথাও মাত্রা ছাড়িয়েছে কিনা তা দেখা যেতে পারে। ১০ বছরে তারা উপজেলা হেড কোয়ার্টারে পৌঁছেছে। কিন্তু এই পৌঁছানোর ধরনটা কী? অভিযোগ উঠেছে পর্যাপ্ত পপ নেই।”

ব্রডব্যান্ডকে সমাধান হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “এজন্য আমরা একটি ব্রডব্যান্ড পলিসি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। টেকনোক্রাট হিসেবে বলতে পারি আমাদের ডার্ককোরের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। এটার প্রাপ্যতা নিয়ে মোবাইল অপারেটররা সামনের দিনে সংকটে পড়বে। তাই আমাদের টেকসই পথ খুঁজতে হবে।

ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ’থার্ডপার্টির’ কাছে দেওয়া দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ”পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবা ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করতে হবে যাতে তরুণরা ঝাঁকে ঝাঁকে অংশ নিতে পারে। সেবাকে টেকসই, সাশ্রয়ী করতে যা করার আমরা তাই করব।”

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয় পাচ্ছেন, তা বিশ্বের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় মাত্র দুটি দলের আধিপত্য। রিপাবলিকান পার্টি আর ডেমোক্র্যাট পার্টি। বরাবর এই দুই দলের কোনো একটির প্রার্থীই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

রাজনীতি

“কোনো সরকারই কিন্তু শেষ সরকার নয়, মনে রাখতে হবে; আমাদের ক্ষেত্রে আমরাও শেষ সরকার ছিলাম না,” লন্ডনভিত্তিক একটি টেলিভিশন স্টেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি।

দেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তার দলের প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

অর্থনীতি

বেসরকারি খাতে স্থগিত করা বৈদেশিক ঋণের স্থিতি কমতে শুরু করেছে। ঋণ ও সুদের বোঝা কমাতে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপকভাবে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করছে। এতে কমছে সব ধরনের ঋণের স্থিতি। গত সরকারের শেষ সময়ে জুলাইয়ে এ খাতে ঋণের স্থিতি ছিল ৮৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে এসেছে ৬৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে। স্থানীয় মুদ্রায় ৮ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে স্থগিত ঋণ কমেছে ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। টাকার অঙ্কে ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, স্বল্পমেয়াদি ঋণের বড় অংশই বেসরকারি খাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে করোনার সময় ও এরপর ডলার সংকটের কারণে এসব ঋণ সময়মতো পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। ফলে দফায় দফায় ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানো হয়েছে। এতে ঋণের স্থিতি বেড়েছে। এসব ঋণের শতভাগেরই সুদের হার ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক। অর্থাৎ যখন পরিশোধ করতে হবে সেই হারে সুদ দিতে হবে, যখন ডলারের যে দাম সেই দামেই ডলার কিনে পরিশোধ করতে হবে। গত আড়াই বছরে ডলারের দাম বেড়েছে গড়ে ৩৫ টাকা। আগে ছিল ৮৫ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। ফলে ঋণের বিপরীতে প্রতি ডলার কিনতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা বেশি দিয়ে। তবে ঋণ যে সময়ে নেওয়া হয়েছে সেই সময়ের ডলারের দাম থেকে পরিশোধের সময়ের দাম বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে। এতে ঋণের কিস্তি স্থগিত করায় ঋণের স্থিতি বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে সুদের হারও বেড়েছে। আগে সুদের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ৮ শতাংশ। দুভাবেই টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণের বড় অংশই নেওয়া হয়েছে আমদানির বিপরীতে। এর কিছু অংশ নেওয়া হয়েছে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে। এসব ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ফলে কিছু ঋণ খেলাপিও হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্দে কয়েকটি ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের (বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ বিতরণ) ঋণ দিয়ে এলসি খোলা হলেও পণ্য দেশে আসেনি। ওইসব অর্থ পাচার করা হয়েছে। ফলে গ্রাহকের নামে ফোর্স লোন তৈরি করে ব্যাংক বৈদেশিক ঋণ শোধ করেছে।

এসব ঋণ ডলারে নেওয়া হয়েছে, পরিশোধও করতে হবে ডলারে। তবে পরিশোধের সময় বাড়তি টাকা দিয়ে ডলার কিনতে হবে। তারপর ওইসব ডলার দিয়ে স্থগিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। এ কারণে ডলারের দাম বাড়ায় বাড়তি ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে এসব ঋণের চুক্তি অনুযায়ী যখন যে হারে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদ থাকে ওই হারে পরিশোধ করতে হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার বেশি। এ কারণে বাড়তি সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে বেশি দামে ডলার কেনা ও বাড়তি সুদ পরিশোধ করতে হওয়া দুই দিক থেকেই দেশকে দণ্ড দিতে হচ্ছে। এছাড়া কিছু ঋণের বিপরীতে বাড়তি ফি বা চার্জ পরিশোধ করতে হচ্ছে। আগে বাংলাদেশকে বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে বাড়তি চার্জ বা কমিশন পরিশোধ করতে হতো না। কারণ ঋণের কিস্তি নিয়মিত ছিল। এখন ঋণের কিস্তি নিয়মিত শোধ করতে না পারায় বাড়তি কমিশন পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২০ সালে কমিশন বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৬৯ লাখ ডলার। ২০২১ সালে তা বেড়ে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। ২০২২ সালে তা আরও বেড়ে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ডলার হয়। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ডলারে। ওই চার বছরে বাংলাদেশকে ৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের কমিশন পরিশোধ করতে হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯১৫ কোটি টাকা। ঋণের কিস্তি পরিশোধে দেরি হওয়ার কারণেই কমিশন পরিশোধ করতে হচ্ছে।

২০১৪ সালে স্থগিত বকেয়া ঋণের স্থিতি ছিল ৪০ কোটি ১১ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। ২০১৬ সালে তা আবার কমে দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ওই বছর আগের বকেয়া মোটা অঙ্কের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল। যে কারণে স্থিতি কমে আসে।

২০১৭ সালে স্বল্পমেয়াদি স্থগিত বকেয়া ঋণের স্থিতি আবার বেড়ে ৪৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালে আবার কমে ৩৯ কোটি ১৪ লাখ ডলারে স্থিতি হয়। ২০১৮ সালে আবার কমে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। ২০২০ সালে করোনার সময় বৈশ্বিকভাবে লকডাউন থাকায় সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। কারণ ওই সময়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ ছিল। ওই সময়ে ডলারের প্রবাহ বেশি ছিল। ফলে ডলারের দাম ৫ পয়সা কমে যায়। ওই বছরে ঋণের স্থিতি প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারে। এর পর থেকে এ ঋণের স্থিতি আর কমেনি। বরং বেড়েই গেছে। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। করোনার পর ২০২২ সালে এসেছে বৈশ্বিক মন্দা। এর প্রভাবে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। যা নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন কিছুটা কমেছে। যে কারণে এখন ঋণ শোধ করা হচ্ছে বেশি।

ডলার সংকটের সময়ে স্বল্পমেয়াদি ঋণের কিস্তি পরিশোধ ব্যাপকভাবে স্থগিত করায় স্থিতি বেড়ে যায়। ওই সময়ে তা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। অন্যদিকে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ায় কিছু ঋণকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা হয়। ফলে স্বল্পমেয়াদি ঋণের স্থিতি কিছুটা কমেছে। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৬৮ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। ২০২৩ সালে ডলার সংকট আরও হলে ঋণের কিস্তি পরিশোধ আরও বেশি মাত্রায় স্থগিত হয়ে যায়। এতে ঋণের স্থিতি বেড়ে ৮৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এর স্থিতি আরও বেড়ে ৮৯ কোটি ১১ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। গত সরকার ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে। এর আগের মাসে জুলাইয়ে ঋণের স্থিতি ছিল ৮৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। ঋণের বাড়তি সুদ ও মূল ঋণের বোঝা কমাতে নতুন সরকার স্বল্পমেয়াদি স্থগিত ঋণ পরিশোধে জোর দেয়। আগস্ট থেকে অক্টোবর এই তিন মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে। ফলে ঋণের স্থিতি কমে সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। অক্টোবরে আরও ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে ঋণের স্থিতি আরও কমে যাবে।

জাতীয়

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

রোববার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়, ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নাম গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ নামকরণ করা হয়েছে।

শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ঢাকা, গোপালগঞ্জ শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের নাম গোপালগঞ্জ ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ সায়রা খাতুন ট্রমা সেন্টারের নাম গোপালগঞ্জ ট্রমা সেন্টার, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের নাম সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।

জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও এ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তরুণদের মনস্থির করার পাশাপাশি স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার (০৩ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে এনডিসি ও এফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান তিনি।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি বিশেষ করে তরুণদের তাদের মনস্থির করতে, চিন্তা করতে ও স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করি। স্বপ্ন হলো পরিবর্তনের সূচনা। স্বপ্ন দেখলে পরিবর্তন হবে। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে এটি কখনোই হবে না।

তরুণদের দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নিজেকে প্রশ্ন করুন আমি বিশ্বের জন্য কী করতে পারি? একবার আপনি কী করতে চান, তা বুঝতে পারলে আপনি তা করতে পারবেন, কারণ আপনার সেই ক্ষমতা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের তরুণ প্রজন্ম এখন সমগ্র মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম। তারা যথেষ্ট স্মার্ট হওয়ার কারণে নয় বরং তাদের হাতে প্রচুর প্রযুক্তি রয়েছে বলে। ’

প্রযুক্তিকে আলাদিনের চেরাগ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনি যদি ছাত্র বিপ্লবের দিকে তাকান, তবে এটি প্রযুক্তির বিষয়। তারা একে অন্যের সঙ্গে খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারত। তাদের কোনো কমান্ড কাঠামো ছিল না।

ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লব সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের তরুণ যুবকরা একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। তরুণরা রাজনীতিবিদ নয় এবং কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টাও তারা করছে না। তবে তারা নিজেদের জন্য একটি নতুন দেশ চায়।

বিশ্ব শান্তির কথা উল্লেখ করে, ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী বলেন, বেশিরভাগ সময়, মানুষ শান্তির নামে একে অপরকে হত্যা করে।

তিনি বলেন, …কিন্তু আমরা প্রতিদিন, আমাদের সমস্ত উচ্চারণ ও আমাদের সমস্ত দর্শনে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করি। আমরা শান্তি চাই। দেশের ভেতরে শান্তি, সব দেশের মধ্যে শান্তি এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার কাছে অত্যন্ত হাস্যকর মনে হয়, বিশ্বের প্রতিটি সরকারেরই একটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আছে, যা আক্ষরিক অর্থে এটি যুদ্ধ মন্ত্রণালয়, কিন্তু কোনো শান্তি মন্ত্রণালয় নেই। যদি আপনার লক্ষ্য শান্তি হয়, তাহলে কি শান্তি মন্ত্রণালয় থাকা উচিত নয়?

আক্রমণের বিরুদ্ধে জনগণকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে- এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের সরকারগুলোতে শান্তি মন্ত্রণালয় ও যুদ্ধ মন্ত্রণালয় উভয় মন্ত্রণালয়ই রাখার ওপর জোর দেন।

তিনি প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেসহ বৈদেশিক সম্পর্কে শান্তি অ্যাটাশে প্রবর্তনের পরামর্শ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি আত্মধ্বংসাত্মক গ্রহ। কেননা আমরা শুধুমাত্র নিজেদের হত্যা করার জন্য সবকিছু করেছি।

একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মানুষ গ্রহ ধ্বংস করতে পরিবেশ ধ্বংস করছে।

প্রতিদিন মানুষ গ্রহ ধ্বংস করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা একটি ভুল সভ্যতা তৈরি করেছি – আত্মবিধ্বংসী সভ্যতা।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে এনডিসি ও এএফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের সাফল্য কামনা করেন।

আন্তর্জাতিক

দখলদার ইসরাইলের সামরিক স্থাপনা ও উত্তরের দখলকৃত অঞ্চলের বসতিগুলোর ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবারের এই হামলা গাজা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ এবং লেবাননের নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবে চালানো হয়েছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় ইসরাইলের দখলকৃত জারইত বসতিতে শত্রুদের সামরিক সমাবেশকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।

পরবর্তী এক ঘোষণায় হিজবুল্লাহ জানায়, একই সময়ে শোমেরা ও এভেন মেনাচেম বসতিতেও শত্রুপক্ষের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।

পরে সকাল ৮টায় ইসরাইলের মেটজুবা বসতিতে হিজবুল্লাহ রকেট হামলা চালায় এবং বার’আমের সামরিক অবস্থানও তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

অন্যদিকে ইসরাইলের রোশ হানিকরা বসতিতেও রকেট নিক্ষেপ করা হয় এবং সকাল ১০টায় শ্লোমি বসতিতে ব্যাপক হারে রকেট আক্রমণ চালানো হয়।

হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, এসব হামলায় ইসরাইলি বাহিনী ও বসতিতে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

সেইসঙ্গে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই পাল্টা আক্রমণও বন্ধ হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে গোষ্ঠীটি। সূত্র: ইরনা

খেলাধুলা

ইতিহাস গড়ল নিউজিল্যান্ড। প্রথম দল হিসেবে ভারতের মাটিতে ভারতকেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিল তারা।

বেঙ্গালুরু, পুনের পর মুম্বাইয়েও জয়ের কাব্য লিখল টম ল্যাথামের দল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ভারতকে ২৫ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা।

তিন ম্যাচ সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা অবশ্য আগে কখনো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। না ঘরে, না বাইরে। এমনকি প্রথমবারের মতো ঘরের বাইরে টানা তিন টেস্টে জয়ের দেখা পেল কিউইরা। অথচ ভারতে তারা পা রেখেছিল শ্রীলঙ্কার কাছে ধবলধোলাই হয়ে। তার ওপর নিজেদের মাটিতে এক যুগ ধরে কোনো সিরিজ হারের রেকর্ড নেই ভারতের। কিন্তু দিনশেষে দলের সবচেয়ে বড় তারকা কেইন উইলিয়ামসনকে ছাড়াই অবিশ্বাস্য কাব্য লিখে ফিলল নিউজিল্যান্ড।

মুম্বাইয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে এগিয়ে ছিল ভারতই। আগের দিন ৯ উইকেটে ১৭১ রানে কিউইদের বেঁধে রাখে। আজ শেষ ব্যাটার হিসেবে এজাজ প্যাটেলকে তুলে নিয়ে ফাইফার পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাতে স্বাগতিকরা পায় ১৪৭ রানের লক্ষ্য। কিন্তু এমন ঘূর্ণি পিচে যে সেই লক্ষ্য পাড়ি দেওয়া কঠিন তা বেশ ভালোমতোই জানত ভারত। কিন্তু সতর্ক থেকেও এড়াতে পারেনি ব্যাটিং ধস। এজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস ও ম্যাট হেনরির সামনে ২৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।

সেখান থেকে নিউজিল্যান্ডের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান ঋষভ পন্ত। পাল্টা আক্রমণ করে ভারতের আশাও বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যান তিনি। কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামের রিভিউ না নেওয়ার কারণে এলবিডব্লিউ হয়েও জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কিন্তু শেষমেষ তাকে বিদায় নিতে হলো ‘বিতর্কিত’ এক সিদ্ধান্তে। এজাজের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এলেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বেশ হতাশই হন পন্ত। হয়তো তার দাবি ছিল, ব্যাটে বল লাগার কারণে নয়, বরং ব্যাট-প্যাডের সংস্পর্শের কারণেই আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেছে।

৫৭ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রানে পন্ত সাজঘরে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয় পেতে অপেক্ষা ছিল কেবল সময়ের। এজাজ ও ফিলিপস মিলে কাজটা বেশ দ্রুততার সঙ্গেই করেন। পন্ত, ওয়াশিংটন সুন্দর ও রোহিত শর্মা বাদে ভারতের কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।  প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এজাজ এবার ৫৭ রানে শিকার করেন ৬ উইকেট।   প্রায় তিন বছর আগে এই মাঠেই এক ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার নিউজিল্যান্ডের হয়ে আরও ইতিহাসের জন্ম দিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাতে ফিলিপসেরও আছে অনন্য অবদান। ৪২ রান খরচে তার অর্জন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৩৫/১০ (মিচেল ৮২, ইয়াং ৭১; জাদেজা ৫/৬৫, সুন্দর ৪/৮১)।
ভারত ১ম ইনিংস: ২৬৩/১০ (গিল ৯০, পন্ত ৬০; এজাজ ৫/১০৩)।
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭৪/১০ (ইয়াং ৫১, ফিলিপস ২৬; জাদেজা ৫/৫৫, অশ্বিন ৩/৬৩)।
ভারত ২য় ইনিংস : ১২১/১০ (পন্ত ৬৪, সুন্দর ১২; এজাজ ৬/৫৭; ফিলিপস ৩/৪২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা:এজাজ প্যাটেল (১১উইকেট)।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: উইল ইয়াং (২৪৪ রান)।