বিনোদন

অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ‘বাংলাদেশ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’। শনিবার (০২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলের বল রুমে বসেছিলো এই অ্যাওয়ার্ডের তৃতীয় আসর।

জনপ্রিয় তারকাদের গ্ল্যামারাস উপস্থিতি এবং জমজমাট পারফরমেন্সে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় অনুষ্ঠানস্থল।
২০২৩ এর মাঝামাঝি থেকে ২০২৪ এর মাঝামাঝি পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র, নাটক, ওটিটি কনটেন্ট, গান, বিজ্ঞাপন, ফ্যাশন অ্যাকটিভিটি ও বিভিন্ন অঙ্গনের সেরা অ্যাচিভারদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। আরও ছিলো জনপ্রিয় তারকাদের নাচ ও গানের পারফরমেন্স।

এবার ‘তুফান’ সিনেমার জন্য সেরা চলচ্চিত্র নির্মাতার পুরস্কার পেয়েছেন রায়হান রাফী। একই সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘দুষ্টু কোকিল’ গেয়ে সেরা প্লেব্যাক সিঙ্গার ক্যাটাগরিতে পুরস্কার নিজের ঘরে নিয়েছেন দিলশাদ নাহার কনা। এছাড়া চলচ্চিত্র শাখায় সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন নিরব হোসেন, ক্যাসিনো সিনেমার জন্য। ‘লিপস্টিক’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয়ের জন্য সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার গেছে ঢালিউডের গ্ল্যামার গার্ল পূজা চেরীর হাতে।

‘কাজলরেখা’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলাও। অডিও গানে সেরা শিল্পীর পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন বাঁধন সরকার পূজা। তিনি পুরস্কারটি পেয়েছেন ইমরান মাহমুদুলের সঙ্গে যৌথভাবে গাওয়া ‘চোখে চোখে’ গানের জন্য।

ওয়েব ফিল্মের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রুনা খান। বঙ্গ’র ওয়েব ফিল্ম ‘অসময়’-এ শক্তিশালী অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। একই ওয়েব ফিল্মের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন ইরেশ যাকের।

‘মহানগর ২’ ওয়েব সিরিজের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন তানজিকা আমিন। আর ‘গুটি’ ওয়েব সিরিজে ব্রেকথ্রু পারফরমেন্সের জন্য স্পেশ্যাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মৌসুমী হামিদ। খণ্ড নাটকে সেরা অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন দু’জন। তানিয়া বৃষ্টি পুরস্কার জিতেছেন নাটক ‘চোখটা আমাকে দাও’-এর জন্য, আর তানহা তাসনিয়া পেয়েছেন ‘বাড়ি গাড়ি নারী’ নাটকে মোশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করে।

ধারাবাহিক নাটকে সেরা অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন মুনিয়া ইসলাম (ছোটকাকু: সৈয়দপুরের সৈয়দ সাহেব ধারাবাহিকে অভিনয় করে)। নাটকের উঠতি তারকার পুরস্কার পেয়েছেন লামিয়া লাম। সেরা বিজ্ঞাপন মডেল হয়েছেন জেবা জান্নাত।

উপস্থাপনার অঙ্গনে ২৫ বছর পূর্ণ করায় স্পেশ্যাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দেবাশীষ বিশ্বাস। আনিকা কবির শখ পেয়েছেন যুগের সেরা তারকার পুরস্কার। এছাড়া স্পেশ্যাল জুরি পুরস্কার পেয়েছেন কুসুম শিকদার ও লারা লোটাস।

অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী আনিকা কবির শখ, মৌসুমী হামিদ ও লারা লোটাস। সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা। পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন সুপরিচিত ব্র্যান্ড প্রোমোটার বারিশা হক।

‘বাংলাদেশ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড’-এর এবারের আসরে জুরি বোর্ডের দায়িত্বে রয়েছেন দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী খুরশিদ আলম, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমা দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত প্রোডিউসার এহসানুল হক বাবু ও বিনোদন সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এর মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসিদ রণ।

খেলাধুলা

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভর করে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের ফাইনালে উঠার স্বপ্ন পূরণ হলো না।

শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো শেষ চার থেকেই।
হংকং সুপার সিক্সেস টুর্নামেন্টের সেমিতে আজ লঙ্কানদের কাছে ৩ উইকেটে হেরে গেছেন সাইফউদ্দিন-রাব্বিরা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৩ উইকেট হারালেও ১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।

কোয়ার্টার ফাইনালের মতো আজও জিশান ইসলামের ব্যাটে রান আসছিল ভালোই। ১১ বলে ৫ ছক্কায় ৩৬ রান করেছেন এই ওপেনার। আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ আল মামুন ৪ বলে করেছেন ১৬ রান। দারুণ ফর্মে থাকা সাইফউদ্দিন আজও ব্যাটে ঝড় তুলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১২ বলে ২৩ রান করে থেমেছেন তিনি। এছাড়া শেষদিকে ৬ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেছেন আবু হায়দার।

বল হাতে শ্রীলঙ্কার থারিন্ডু রত্নায়েকে ২ ওভারে ৩৩ রান খরচে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এছাড়া ১ উইকেট পেয়েছেন লাহিরু সামারাকুন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ৫৮ রানের জুটি গড়ে ফেলেন দুই লঙ্কান ওপেনার সান্দুন ভিরাক্কডি। ১৬ বলে ৫০ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। আরেক ওপেনার ধনঞ্জয়া লাকশান ৬ বলে ২৪ রান করেন।

মাঝে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্পিনার সোহাগ গাজী। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করেন তিনি। কিন্তু বাকিরা কেউ রান আটকাতে পারেননি। এর মধ্যে আগের দুই ম্যাচে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করা সাইফউদ্দিন ২ ওভারে ৪৪ রান খরচে থাকেন উইকেটশূন্য। আবু হায়দার ১টি উইকেট পেলেও ১ ওভারে ২০ রান খরচ করেছেন।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। জঞ্জাল সাফ করুন।

পদে পদে আমরা ক্ষমতায় যেতে উসখুস করছি, এসব কথা বলে জনমতকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপিকে বাদ দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করবেন না। এটা দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। একবার রাজনৈতিক বিরাজনীতিকরণ, মাইনাস টু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আবারও ওই রাস্তায় যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না।

রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে ‘অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ স্মরণসভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খোকা ভাই ছিলেন একজন লিজেন্ড। তিনি ১৯৭১, ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সরব ভূমিকায় ছিলেন। তিনি কিন্তু শেখ হাসিনাকে হারিয়েছিলেন নির্বাচনে। এ কথা অনেকে এখন বলেন না। তাদের জন্ম হয়েছিল রাজনীতি করে মানুষের কল্যাণ করার জন্য। তার মৃত্যু আমাদের কাছে পাহাড়ের মতো ভারী হয়ে উঠেছিল।

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, খোকা ও আব্বাস সাহেব যখন তরুণ ছিলেন তখন ঢাকা কাঁপতো। এখন আপনাদের দেখাতে হবে।

‘বিএনপি নয় শুধু, এখনো বাংলাদেশ কিন্তু সংকট অতিক্রম করতে পারেনি। হাসিনা গেছে, এতে যারা বাংলাদেশি বিদেশে থাকেন তাদের আনন্দ হয়েছে। আমরা একটা ভয়াবহ পাথরের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছি, বুকের ওপর চেপে থাকা পাথরটা গেছে। পাথর গেল এখনো কিন্তু স্বস্তি নেই, কোথাও যেন আটকে আছি। জনগণের সরকার এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

একটি সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, খবরের পাতায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় ধ্বংস করেছে বাংলাদেশের মানুষের নৈতিকতা। যেখানে যাবেন চোর, চোর মানে আওয়ামী লীগের চোর। সব জায়গায় ওরা বসে আছে।

‘রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় বসার জন্য উসখুস করছে’ এক উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক, আমরা আশা করিনি যে এই মাপের মানুষ এ ধরনের কথা বলবেন। আমরা রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করছি না, আমরা বাংলাদেশকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মুক্ত করার জন্য কাজ করছি, জীবন ও প্রাণ দিয়েছি। এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। কেন যুদ্ধ করছি? যত দেরি করবেন, তত হাসিনারা আবার ফিরে আসবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজুন সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক

ভারতীয় গোষ্ঠী আদানি পাওয়ারের বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার (০৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেস সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধের গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ অর্থ পায়, তা সত্য। তাদের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে গতি বাড়িয়েছি। যে ব্যাকলগ (পূর্বের বিল) আছে, তার জন্য মূলত দায়ী পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা বিশাল ফাইল অব ব্যাকলগ রেখে গিয়েছিল।

প্রেস সচিব বলেন, আদানি গ্রুপকে গত মাসে আমরা ৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি, যা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো রিজার্ভে হাত না দিয়েই করতে পারছি। ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে। তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারব।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বছরে ১৬-১৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছিল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারে অর্থ পাচারের এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেই অর্থ ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। কত অর্থ পাচার হয়েছে, তা বের করতে উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ৭ নভেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার।

অর্থনীতি

অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় এলো ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে)। এ অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি।

রোববার (০৩ নভেম্বর ) এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জুলাই মাসে দেশে আন্দোলনের সময় প্রবাসী আয়ের ধারা কমে যায়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে প্রবাসী আয় বাড়ে। এরপর থেকে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ ধারা সেপ্টেম্বর মাসেও অব্যাহত থাকে। একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে।

তথ্য অনুযায়ী, আগের মাস সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর আগের বছরের অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭২ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৫৪ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৭১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

একক ব্যাংক হিসাবে অক্টোবরে সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এর পরিমাণ ৪৩ লাখ ১৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

কোন প্রবাসী আয় সংগ্রহ করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবি) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকে আসেনি প্রবাসী আয়। বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও প্রবাসী আয় সংগ্রহ করতে পারেনি।

জাতীয়

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

রোববার মোবাইল অপারেটর রবি এবং গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে যুব সমাজের আগ্রহ ও প্রত্যাশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোবাইল ফোনের কলরেট কমানো এবং ইন্টারনেটের মেয়াদবিহীন প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানান তিনি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সময়টা সফলভাবে পার করতে পারলে দেশ ঘুরে দাঁড়াবে এবং সম্ভাবনার নতুন নতুন দরজা খুলে যাবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। তিনি বলেন, যেহেতু আন্দোলন শুরু হয়েছিল কর্মসংস্থানকে কেন্দ্র করে, তাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। যুব সমাজের আগ্রহ ও প্রত্যাশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোবাইল কলরেট কমানো এবং ইন্টারনেটের মেয়াদবিহীন প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে এখন কাজ করার উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার জনসমর্থিত তাই দেশ ও দেশের মানুষের উপকার হয় এমন যে কোনো কাজ করতে আমরা আগ্রহী। টেলিকমিউনিকেশন খাতে উন্নতির জন্য সরকার কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, আগে টেলিযোগাযোগ খাতের কোনো অফিসে গিয়ে কথা বলার মতো পরিবেশ ছিল না, কিন্তু বর্তমানে পরিবেশ পরিবর্তন হয়েছে। এখন কথা বলা যাচ্ছে এবং ফিডব্যাকও পাওয়া যাচ্ছে। এটা টেলিকমিউনিকেশন খাতের জন্য খুবই ইতিবাচক।

রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব শেঠী বলেন, ১৫ বছরে টেলিকমিউনিকেশন খাতে কমিশন বেইজড বিভিন্ন লেয়ার তৈরি হয়েছে, এর ফলে মোবাইল অপারেটররা মুনাফাবঞ্চিত হচ্ছে। বৈঠকে রবি আজিয়াটা পিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদুল আলম, গ্রামীণফোনের নতুন চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে কারচুপির কারণে পরাজিত হয়েছেন বলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন।

পরে তাকে মেয়র ঘোষণা করা হয়।

রোববার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

আইন অনুযায়ী নতুন মেয়রের মেয়াদ নির্ধারণ হবে বলে জানান উপদেষ্টা।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব মো. নজরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি উপদেষ্টা হাসান আরিফ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের একটি প্রধান নগরীর মেয়র হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন, এটাই তার কাছে প্রত্যাশা করি। আমরা গ্রীণ চট্টগ্রাম দেখতে চাই। জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম দেখতে চাই। ক্লিন সিটি হিসেবে নগরবাসীরও একই প্রত্যাশা।

তিনি আরও বলেন, পেছনের সব ধ্যান-ধারণা, চিন্তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের যে অর্জনের জন্য তাদের আত্মত্যাগ রয়েছে, সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য বৈষম্যহীন শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে দেখতে চাই। আমি মনে করি, এ প্রত্যাশা চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের। আমাদের প্রত্যাশা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের।

অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সচিব মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতা, মেয়রের আত্মীয়-স্বজনসহ ২৭ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

তিন বছর পর আইনি লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেন শপথ নিলেন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছিলেন পরাজিত প্রার্থী শাহাদাত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ১৯ আগস্ট ওই সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় গত ১ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক এই আহ্বায়ককে মেয়র ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

শপথ নিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। যদি চট্টগ্রাম শহরের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করা যায়- বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। গ্রীণ সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি- এসব আমার নির্বাচনী ইশতেহার। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর না থাকায় ১৭ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে, যারা নতুন মেয়রের সঙ্গে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করবেন।

রাজনীতি

সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ফলে মানুষের মনে তৈরি হওয়া সকল আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,‘এই সংস্কার কমিশন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার-এর সব পদক্ষেপ গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদকে বিলুপ্ত করতে দেশের হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের, মানুষের আত্মত্যাগের প্রতিফলন না থাকলে কি হিসেবে আমরা সংবিধানের সংস্কার বা পরিমার্জন করবো? যেহেতু এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে কোনও সংস্কারই সম্ভব নয়, সেহেতু আমরা এও মনে করি যে চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ডকুমেন্টেড (ইতিহাসে লিপিবদ্ধ) করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।’

১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর থেকে ক্ষমতা বাক্সবন্দী করে রাষ্ট্রপতির বা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়ার প্রথাই ক্ষমতা এককেন্দ্রীকরণের পদ্ধতি এবং এ কারণেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র-ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিলো উল্লেখ করে সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা যেন না গড়ে উঠে। তার একটা সুবন্দোবস্ত করা।’

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন এবং পালিয়ে যাবার পর অনেক কথাই উন্মুক্তভাবে আলোচনা করা যাচ্ছে ও হচ্ছে। একজন কতবার প্রধানমন্ত্রী পদে আসতে পারবেন, ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতার জায়গা -এসকল বিষয় আমাদের আলোচনায় উঠে আসছে। এ বিষয়ে আমরা সাধারণ মানুষ, সুশীলজন এবং আমাদের অংশীদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই আন্দোলনের অভিপ্রায় ও মানুষের আকাক্সক্ষা কমিশনের সুপারিশের মধ্য দিয়ে সরকারের কাছে তুলে ধরবো।’

তিনি জানান,‘সরকারের কাজ সুপারিশসমূহ বিবেচনায় এনে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন করা। সরকার পরবর্তীতে এসব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা করবেন। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকেও তাদের জায়গা থেকে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ এই আন্দোলন থেকে তাদেরও অনেক কিছু বুঝার বা শেখার রয়েছে।’

এসময় সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও মোহাম্মদ ইকরামুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মো. মুস্তাইন বিল্লাহ এবং কমিশনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।

খেলাধুলা

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা প্রদান করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি এ সংবর্ধনা প্রদান করেন।

এ সময় নারী ফুটবল দলের সদস্যরা তাঁদের স্বপ্ন ও খেলোয়াড় জীবনের প্রতিদিনের সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক ইউনূস বিজয়ী খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দাবি ও কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে সপ্তম সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শিরোপ জিতে নেয় বাংলাদেশ দল।

নারী ফুটবলারদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন ‘এই সাফল্যের জন্য আমি পুরো জাতির পক্ষ থেকে তোমাদেরকে অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়, আর তোমরা সেই সাফল্য এনে দিয়েছ।’

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।

তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীদের সামগ্রিকভাবে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’

২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করা সাবিনা তাঁর আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, আগের প্রজন্ম ফুটবলকে তাঁদের ভালবাসা হিসেবে বেছে নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন।

সাবিনা আরো বলেন, আমাদের অনেকে সাধারণ পরিবার থেকে এসেছে এবং তার পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন খুব বেশি নয়। এই বেতন দিয়ে পরিবারকে তেমন কোন সাহায্য করতে পারি না।’

এই তারকা স্ট্রাইকার তাঁর কয়েকজন সহযোদ্ধার সংগ্রামের গল্প, যেমন মারিয়া মান্দারের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রামের মারিয়া, যেখান থেকে সাফ বিজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় এসেছেন, ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে হারান এবং মা তাকে বড় করেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাঁদের আবাসন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন, আর মিডফিল্ডার মানিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার দূরবর্তী লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ফুটবলার হিসেবে উঠে আসার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।

মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী তাঁর নিজ জেলা দিনাজপুরের রানীশংকৈল উপজেলায় তার গ্রামের দূর্বল অবকাঠামোর কথা বলেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করেন যেন তাঁদের জন্য এশিয়ার বাইরে একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়, বিশেষ করে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার সঙ্গে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম ও তাদের বিভিন্ন দাবি আলাদাভাবে কাগজে লিখে তাঁর কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলেন।

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘তোমরা যা কিছু চাও তা লিখতে দ্বিধা করো না আমরা তোমাদের দাবিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব। যদি কিছু এখনই করা সম্ভব হয়, আমরা তা করব’।

কোচ পিটার বাটলার এবং ম্যানেজার মাহমুদা আক্তারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, সুপ্রদীপ চাকমা, অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং নূরজাহান বেগমও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার অনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’।

শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ৪০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা আয়োজিত গণসমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যে গণঅভ্যুত্থান, তাকে ধারণ করতে গেলে আর কোনো শোষণ-বঞ্চনা মেনে নেবো না। আমরা অনেক বৈষমের শিকার হয়েছি। আমরা আর কোনো বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। এসময় আট দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণাও দেন তারা।

এছাড়া সমাবেশে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সকল রাজনৈতিক শক্তি এবং দেশবাসির প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সকল অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান বক্তারা।

এছাড়া সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা। গণসমাবেশ থেকে ঐক্যমোর্চার সমন্বয়ক বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ সকল সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে করা সব মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এসময় ইসকন নিষিদ্ধের দাবির প্রতিবাদও জানান তারা।

সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও আট দফা দাবি এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ পুনর্গঠনে ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব চিন্তা করা যায় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই। গণতন্ত্র, সমতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, শ্রী শ্রী ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক দীপঙ্কর শীল, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ঋষি পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়, রবিদাস ফোরামের সভাপতি চাঁদ মোহন রবিদাস, জগন্নাথ হল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি তপন মজুমদার, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের সুস্মিতা কর, মাইনোরিটি রাইটস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস প্রমুখ।

ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আধিবাসিসহ এ দেশের সবাই মিলেই আন্দোলন করেছে। সবাই মিলিতভাবেই ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু আমরা বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। এ কারণেই এই আট দফা দেওয়া হয়েছে।

চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ইসকনের কর্মকাণ্ড নেই। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হলে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবাদ আসবে।

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের জন্য ট্রাম্পের দরকার নাই। ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) সাহেব আপনি আপনার দেশের সমস্যা সমাধান করুন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধানের জন্য আপনার প্রয়োজন নেই। এদেশের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করব।