রাজনীতি

জাহাঙ্গীর আলম গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক।

‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলে’ ভাইরাল হওয়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সেই যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে শুক্রবার ভোরে নওগাঁর মান্দা উপজেলার বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম জানান।

তিনি বলেন, বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।

রোববার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি।

রিমান্ড মঞ্জুর হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করাসহ ফোনালাপের ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান ওসি।

মামলার বরাতে পুলিশ জানায়, ৩ অগাস্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর তিনি ও তার লোকজন আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া এর মধ্যে শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইলে জাহাঙ্গীরের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

অর্থনীতি

৩ মাসেই বেড়েছে ৭৩,৫৮৬ কোটি টাকা * প্রকৃত খেলাপি ৭ লাখ কোটি টাকার কম হবে না -ড. মইনুল ইসলাম

দেশের ব্যাংকগুলোতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। ৩ মাসেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। ফলে ব্যাংক থেকে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশই বর্তমানে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

তবে ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের অঙ্ক আরও বেশি। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হিসাবে অবলোপন করা ও আদালতের আদেশে স্থগিত থাকা ঋণ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এছাড়া বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফশিল করা আছে। সেগুলোও এই হিসাবে নেই। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আগামী দিনে আরও বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, খেলাপি ঋণের এই তথ্য ভুয়া। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর নিজেই বলেছেন খেলাপি ঋণ ৬ লাখ কোটি টাকা। এছাড়া একটা গণমাধ্যমেও বলা হয়েছে প্রকৃত খেলাপি প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা। মূলত কৌশলগত কারণে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৭ লাখ কোটি টাকার কম হবে না। কারণ এখানে ঋণ অবলোপন, অর্থঋণ আদালতে মামলা, আদালতে স্থগিতাদেশ ও ঋণ পুনঃতফসিল করা বিপুল অঙ্কের টাকার হিসাব নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এরপর থেকে খেলাপি ঋণের অঙ্ক বেড়েই চলছে। অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে, যার একটা বড় অংশই পাচার হয়েছে বিদেশি।

এ প্রসঙ্গে এনসিসি ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নুরুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে এটা এখন পর্যন্ত প্রকৃত তথ্য। আগের মতো তথ্য গোপন, লুকোচুরি, কারচুপির সুযোগ নেই। আশঙ্কা হচ্ছে, ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যাবে। যা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ যে কয়েকটি ব্যাংকে লুটপাট হয়েছে এবং যারা লুটপাট করেছে তারা এখন নানাভাবে পলাতক বা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদের ব্যবসা আর ভালোভাবে চলবে না। ফলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। এটা হলো দুশ্চিন্তার বিষয়। যা ব্যাংক খাতের জন্য অশনি সংকেত।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এই দ্বিতীয়বার খেলাপি ঋণের তথ্য পাওয়া গেছে, ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। সাবেক সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখাতে নেওয়া হয়েছিল একের পর এক নীতি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বাড়াতে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এই সময়ে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪৯ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।

বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত ব্যাংকগুলো ঋণের প্রকৃত চিত্র দেখাতে শুরু করেছে। এদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, থার্মেক্সসহ আরও কিছু বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এতেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ।

এদিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। সরকার পতনের পর এই ঋণের একটি অংশ এখন খেলাপিতে পরিণত হবে।

তারা বলেন, শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

জাতীয়

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল থেকে তিনদিনের মধ্যে উপদেষ্টা নিয়োগ না হলে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গকে বিচ্ছিন্নের হুঁশিয়ারি দিয়েছে রংপুরের ছাত্র-জনতা।

রোববার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন। উপদেষ্টা পরিষদে রংপুর বা উত্তরাঞ্চলের কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষুব্ধ এই অঞ্চলবাসী তাদের দাবি আদায়ে আরও কঠোর আন্দোলনের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এ সময় বক্তারা জানান, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের আত্মত্যাগের পর দেশে যে বিপ্লব ঘটে, তাতে সরকার পতনের পর ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নিলেও উত্তরবঙ্গ থেকে একজনও উপদেষ্টা নিয়োগ হয়নি। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েক দফায় উপদেষ্টা নিয়োগ হলেও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কেউ স্থান পাননি। এ নিয়ে উত্তরের ছাত্র-জনতার মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ১১, ১২ ও ১৩ নভেম্বর রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সম্প্রতি রংপুরে দুজন উপদেষ্টা এলে তারা এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান। এ কথা জানার পর রংপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আরও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিনদিনের মধ্যে উপদেষ্টা নিয়োগ না হলে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা এবং ঢাকা-রংপুর মহাসড়কসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় ধরনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

উপদেষ্টা নিয়োগের দাবির কারণ হিসাবে বলা হয়, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রংপুর অঞ্চল উন্নয়নবঞ্চিত, রংপুর অঞ্চলের কৃষকদের উন্নয়ন এবং খাদ্য উৎপাদনে অবদান থাকা সত্ত্বেও তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। তিস্তা নদীসংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উত্তরবঙ্গের উপদেষ্টার প্রয়োজন। রংপুরের উন্নয়ন এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে উপদেষ্টা নিয়োগ অপরিহার্য বলে তারা মনে করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির রংপুর জেলা সমন্বয়ক ইয়াসীর আরাফাত, আলমগীর নয়নসহ অন্য নেতারা। তারা বিশ্বাস করেন, দ্রুত উপদেষ্টা নিয়োগের মাধ্যমে রংপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হবে।

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের জেরে ও দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ছাত্রদল ক্যাডারের নেতৃত্বে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদের মাথা ও শরীর ইট দিয়ে থেঁতলে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তিনি দৈনিক কালবেলা প্রত্রিকার রূপগঞ্জ প্রতিনিধি।

ঘটনা শেষে ছাত্রদল ক্যাডার ইয়াসিন বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রূপগঞ্জজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রতিবাদে রূপগঞ্জে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা না হলে সাংবাদিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ বড় ধরনের আলটিমেটামের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ছাত্রদল ক্যাডার ইয়াসিন মিয়া ওরফে ফেন্সি ইয়াসিন উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের সোনাব এলাকার আবু বক্করের ছেলে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া ৫নং ক্যানাল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনীর একটি দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, জমি দখলবাজসহ অপরাধীরা দলের কেউ না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ দলে কোনো অপরাধীর ঠাঁই নেই। অপরাধ করলে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এ হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণীর তথ্য গোপনীয়তার স্বার্থে সিলগালা করা খামে কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল করতে হবে। সম্পদ বিবরণী দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর।

রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ছকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। ছকটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

দুর্নীতির লাগাম টানতে বছর বছর সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হিসাব বিবরণী দেওয়ার কথা থাকলেও এ বছর তা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দিতে বলেছে মন্ত্রণালয়। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯, যা ২০০২-এ সংশোধনী এনে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী পাঁচ বছর পরপর দেওয়ার বিধান করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ১ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দেয়।

কে কোথায় দাখিল করবেন- ক্যাডার বা নন-ক্যাডার (নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেড) কর্মকর্তা তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।

গেজেটেড বা নন-গেজেটেড কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা (১০ম থেকে ২০তম গ্রেড) নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।

খেলাধুলা

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের বিদায়ী ম্যাচে রানের দেখা পেলেন না ইমরুল কায়েস। আগের দিন প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিলেন ১৬ রান করে।

এবার দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১ রান করতে পেরেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।

ইমরুলের বিদায়ী ম্যাচের দিনে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন অমিত হাসান। আগের ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নজর কেড়েছিলেন তিনি। এবার ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন সিলেট অধিনায়ক। তার ১০১ রানের ইনিংসেই দ্বিতীয় দিন শেষে ভালো অবস্থানে রয়েছে সিলেট।

অমিতের সঙ্গে আসাদুল্লাহ আল গালিবের ৫৬ ও মুবিন আহমেদ দিশানের ৪৩ রানের ইনিংসে সিলেটের প্রথম ইনিংস থামে ৩৭৬ রানে। ২৪৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে ঢাকা মেট্রো। এখনো ১৯৭ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

অন্যদিকে মিরপুরে ইমরুলের বিদায়ী ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে হারের সামনে দাঁড়িয়ে খুলনা। প্রথম ইনিংসে খুলনা করেছিল ১৭২ রান। জবাবে ১৬০ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা। খুলনার হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার আল আমিন হোসেন, মাসুম খান টুটুল ও বাঁহাতি স্পিনার আরিদুল ইসলাম। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯১ রানে অলআউট হয়ে হারের পথে খুলনা। ইমরুলের মতো তার দলের বাকিরাও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। পেসার এনামুল হক ৪টি ও বাঁহাতি স্পিনার মাহফুজুর রহমান ৩টি উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ আর মাত্র ১০৪ রান করতে হবে ঢাকাকে।

এছাড়া রাজশাহীতে রংপুরের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৩৬ রান করেছে বরিশাল। তানভীর ইসলাম করেন ৫২ রান। ৫ উইকেটে ২১৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করে রংপুর। আরেক ম্যাচে নিজেদের প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রাম ২৫২ রানে অলআউট হয়েছে। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২০২ করে ৬২ রানে এগিয়ে আছে রাজশাহী।

রাজনীতি

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কড়া সমালোচনা করে গণভোটের বিধান পুনর্বহাল ও দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সংসদ সচিবালয়ের ক্যাবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের বৈঠকে এসব দাবি জানান বিশিষ্টজনরা।

কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনায় সংবিধান সংস্কার কমিশন কীভাবে সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

তবে এ নিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি।

বৈঠকে অংশ নেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআই প্রতিনিধি নাসরিন বেগম, চৌধুরী মূকিম উদ্দিন কেজে আলী, জামিল উদ্দিন মিল্টন, ইঞ্জিনিয়ার কবির হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন।

সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, ফিরোজ আহমেদ, মো. মুস্তাইন বিল্লাহ।

বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা এককভাবে প্রধানমন্ত্রীর ওপর ন্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় সরকারের আবরণে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছেন। যা গত ১৫ বছর আমরা লক্ষ্য করেছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট খুব জরুরি। কারণ, দ্বি-কক্ষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটিতে ‘একক ক্ষমতার বলয়’ বা ‘এক ব্যক্তির শাসন’ চলে না। রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী চাইলেই আইন প্রণয়ন ও বাতিল করতে পারে না।

৭০ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই অনুচ্ছেদের এক জায়গায় বলা আছে সংসদে দলের বিপক্ষে ভোট দান করলে তাদের আসন শূন্য হবে। ফলে কোনো সংসদ সদস্য চাইলেও তার দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া সম্ভব নয়। তার মানে হলো সরকারি দল যা চাইবে সংসদে তা-ই হবে!

তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলো মুছে দিয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনীর সমালোচনা করে বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের বুকে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে মানুষের মৌলিক অধিকার। দেশে আইনের শাসনের কবর রচনা করা হয়েছে। দেশের বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করার একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংশোধনীর উদ্দেশ্য এক ব্যক্তির নেতৃত্বের অধীনে ফ্যাসিজমকে দীর্ঘায়িত করা। তাই এই সংশোধনী বাতিল চাই।

৭ ক ও খ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা, সংকুচিত ও নির্বাসিত করার জন্য এই ৭ ক ও খ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একনায়কত্ব চালিয়ে নিতে এবং মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি ও কণ্ঠরোধ করতে এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করে।

গণভোট বিষয়ে তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোটের বিধানটি বাতিল করে মৌলিক বিষয়ে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণের সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান বিলোপ করে কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে।

গণভোটের বিধান পুনর্বহালের পক্ষে মত দেন তিনি।

কাদের গণি চৌধুরী সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন,পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে না পারা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ সংশোধনের প্রস্তাব আনেন।

সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান। আগে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটা যেভাবে আগে ছিল, সেভাবে চাইছি।

এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন কীভাবে আমাদের সুপারিশ বা পরামর্শ বাস্তবায়ন করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। গণভোট,নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ অনেক কিছু রয়েছে যা বাস্তবায়ন করা কঠিন। কমিশন আমার এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি। তারা কেবল নোট হিসেবে নিয়েছে।

বিনোদন

মিস ইউনিভার্সের ৭২তম আসরে সেরার মুকুট জিতলেন ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া কজেয়ার থেইলভিগ। ২১ বছর বয়সী ভিক্টোরিয়া একজন প্রতিযোগিতামূলক নৃত্যশিল্পী, উদ্যোক্তা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী আইনজীবী।

মেক্সিকো সিটিতে অনুষ্ঠিত বার্ষিক এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১২০ জনেরও বেশি প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। ভিক্টোরিয়া মিস ইউনিভার্স মুকুট জিতে ইতিহাস গড়লেন। কারণ তিনি এই প্রতিযোগিতায় প্রথম ডেনিশ বিজয়ী।

ভিক্টোরিয়াকে মুকুট পরিয়ে দিয়েছেন মিস নিকারাগুয়া, শেনিস প্যালাসিওস। এবারের আসরে প্রথম রানার আপ হয়েছেন নাইজেরিয়ার চিদিনমা আদেতশিনা। যেখানে দ্বিতীয় রানারআপ হলেন মেক্সিকোর মারিয়া ফার্নান্দা বেলট্রান।

সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবারের প্রিলিমিনারি ইভেন্টে ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই পর্বে এক বর্ণাঢ্য জাতীয় পোশাক প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর সেমি-ফাইনালে অংশগ্রহণকারীরা সাঁতারের পোশাকে প্রদর্শনী করেন। ১২ জন চূড়ান্ত পর্বে উন্নীত হয়ে তাদের সন্ধ্যার পোশাকে মঞ্চে পা রাখেন।

চূড়ান্ত পাঁচ প্রতিযোগীকে নেতৃত্ব ও স্থিতিস্থাপকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। ‘কেউ যদি আপনাকে বিচার না করে, তবে কীভাবে বাঁচবেন?’ এই প্রশ্নে ভিক্টোরিয়া উত্তর দেন, ‘আমি প্রতিদিনের মতোই বাঁচব। ’

দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যেখান থেকেই আসুন না কেন, লড়াই চালিয়ে যান। আমি এখানে দাঁড়িয়েছি কারণ আমি পরিবর্তন চাই, ইতিহাস গড়তে চাই এবং আজ রাতে আমি সেটাই করছি। ’

মিস ইউনিভার্সের ৭২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২৮ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলাদের অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গর্ভবতী নারী, মা এবং বিবাহিত নারীদের অংশগ্রহণেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। মাল্টার বিয়াট্রিস এনজোয়া, ৪০ বছর বয়সী প্রতিযোগী, চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে এই প্রতিযোগিতার নতুন রেকর্ড গড়েছেন।

ভিক্টোরিয়া কজেয়ার থেইলভিগের এই বিজয় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার জন্য এক যুগান্তকারী মুহূর্ত, যা বৈচিত্র্য, ক্ষমতায়ন এবং আধুনিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

অর্থনীতি

পবিত্র রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে এমন ১১ ধরনের পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পণ্যগুলো হচ্ছে– চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর।

রোববার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা বলছে, এসব পণ্য আমদানিতে এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এলসি মার্জিন ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শীঘ্রই এ নির্দেশনা কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে।

অভ্যন্তরীণ বাজারে এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানি ঋণপত্র খুলতে অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে বেশি ব্যবহৃত পণ্যগুলো আমদানির ক্ষেত্রে আগের বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর আমদানির এলসি খুলতে শতভাগ মার্জিন লাগবে না। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সাধারণত ৫ থেকে ২০ শতাংশ মার্জিন নেওয়া হয়, উল্লেখিত পণ্য আমদানি ক্ষেত্রেও এখন থেকে মার্জিনের এই হার নির্ধারণ করা যাবে।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে পবিত্র রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে এমন ১১ ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের অনুমতি দিয়ে নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে এসব খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানি করা যাবে। এক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার সময় আমদানিকারকদের কোনো অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকে জমা দিতে হবে না। এতে এসব খাদ্যপণ্য দ্রুত ও সহজে আমদানি করা যাবে।

যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো– চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর। এসব পণ্য বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য জাহাজে ওঠানোর ৯০ দিন পর পর্যন্ত ব্যাংকের বিল পরিশোধ করা যাবে।

সরকারের এ সব উদ্যোগের ফলে রমজানে ব্যবহৃত পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কোনো সিঙ্গেল ইস্যু বা এজেন্ডায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এ সম্পর্ক বহুমুখী ও বিস্তৃত। দুই দেশ একে অপরের প্রতি আগের চেয়ে বেশি নির্ভরশীল।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা রোববার (১৬ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৪’- শীর্ষক সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য দেন প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খুবই গঠনমূলক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে অপরের প্রতি পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে হাইকমিশনার জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে এবং বিশ্বাস করে যে এ দুই দেশের শান্তি, নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি বহুমুখী সম্পর্কের প্রতিফলন হিসেবে বাণিজ্য, পরিবহন ও জ্বালানি সংযোগ এবং মানুষে-মানুষে সম্পৃক্ততার ক্রমাগত অগ্রগতির ওপর জোর দেন, যেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তন নির্বিশেষে দুই দেশের পারস্পরিক নির্ভরতা ও দ্বিপাক্ষিক মঙ্গলের বাস্তবতা নিজেকে পুনর্ব্যক্ত করতে থাকবে।

ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সূচনা এবং পেট্রাপোল-বেনাপোল সমন্বিত চেকপোস্টের অবকাঠামো বিবর্ধনকে দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে অব্যাহত অগ্রগতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন হাইকমিশনার।

ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতাকে তিনি বিম্‌সটেকের মতো কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক একত্রীকরণের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটি নোঙর হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স দুই দেশের সম্পর্ককে গভীর করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়েও বেশি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।

হাইকমিশনার শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য দুই দেশের যৌথ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে এবং অংশীদারত্বের মাধ্যমে উভয় পক্ষের সাধারণ জনগণের উপকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

শনিবার বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ বছরের সম্মেলনে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশগ্রহণকারী যোগ দেন।