রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর-১০ মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন শেষে সারাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় দেশবাসীর কাছে বিচার চেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের (দেশব্যাপী তান্ডবের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের) বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায় বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মত আমার আর কোন ভাষা নেই।’

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আবেগাপ্লুত কন্ঠে এ কথা বলেন।

এছাড়াও তিনি দেশবাসীর প্রতি যারা ১৭ জুলাই থেকে একাধিক দিন ধরে তান্ডব চালিয়েছে এবং তাঁর সরকারের জনজীবনকে সহজ এবং বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করতে গত ১৫ বছরে নির্মিত সরকারি স্থাপনায় কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, এই মেট্রোরেল করবার সময়ও অনেক বাধা-বিঘœ আমাদের অতিক্রম করতে হয়েছিল। সব বাধা অতিক্রম করে এই মেট্রোরেল আমরা করে দিয়েছি এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা করতে পেরেছি। আজ মেট্রোরেল বন্ধ। এই স্টেশন যেভাবে ধ্বংস হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল, ইলেকট্রনিক সিস্টেম ও সম্পূর্ণ মডার্ন।  এটা যে কতদিনে ঠিক হবে আমি জানি না, কষ্ট পাবে সাধারণ মানুষ।

সরকার প্রধান বলেন, এটা তাঁর সরকার করে দিয়েছে সকলে যাতে সময়মত স্কুল কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে পারেন এবং কর্মস্থল থেকে আবার ঘরে ফিরে অন্তত কিছুটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। এতে আর্থিক দিকটাও সাশ্রয় হয়। সেসব কথা চিন্তা করেই তাঁর সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম নির্মাণ করে দিয়েছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এতে আপনারাই কষ্ট পাবেন। দেশের মানুষই কষ্ট পাবে। এই ঢাকা শহরের মানুষই কষ্ট পাবেন। ঘন্টার পর ঘন্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। কর্মস্থলে সময়মত পৌঁছানো আবার ফেরত আসায় দীর্ঘ সময় লাগবে, বসে বসে সেই ট্রাফিক জ্যামে কষ্ট পাওয়া থেকে আপনাদের এই কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ‘তাই আমি আপনাদেরকেই বলবো যে কষ্ট আমি লাঘব করতে চেয়েছি সেই দুর্ভোগ আবার যারা সৃষ্টি করলো তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিচার তাদের করতে হবে। আমি তাদের কাছেই বিচার চাই।’

এরআগে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন তিনি। তিনি পুরো স্টেশন ঘুরে দেখেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত শুক্রবার মেট্রোরেল স্টেশনে তান্ডবলীলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্যান্য স্থাপনার মতই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আধুনিক গণপরিবহনের এই মেট্রো স্টেশন।

ভাংচুর করা হয় সিসি ক্যামেরা, এলইডি মনিটর ও টিকেট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গা। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিষ।

শেখ হাসিনা বলেন, যে সব স্থাপনা মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে সেগুলো চিহ্নিত করে ধ্বংস করা হয়েছে। যারা উন্নয়নবিরোধী এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে জড়িত তাদের মানসিকতা কোন ধরনের সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আজ বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দৃশ্যমান।

বাংলাদেশ আজ বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যারা আজ বিদেশে যাচ্ছে, তারা সেই সম্মান পাচ্ছেন। আগে সেটা পেতেন না। ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে আমাদেরকে বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছিল। আজ সেটা নেই। কিন্তু আমি জানি না এই যে প্রতিটি স্থাপনা তৈরি করেছি যেগুলো মানুষকে সেবা দেয়, তাদের জীবনযাত্রা সহজ করেছে, মানুষের জীবনকে উন্নত করেছে ঠিক সেইগুলো ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেওয়া কোন ধরনের মানসিকতা!

শেখ হাসিনা বলেন, এই মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্বিঘেœ মানুষ যাতায়াত করছে। এই মেট্রোরেলের ওপর কেন এতো আক্রমণ? এটাই আমার প্রশ্ন। এই মেট্রোরেল এবং এর স্টেশনগুলো যে আমরা তৈরি করেছি এর সার্ভিসসহ সবকিছুই ছিল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। অন্যান্য বহুদেশের তুলনায় একটি আধুনিক দৃশ্যমান সুন্দর মেট্রোরেল আমরা জাতিকে উপহার দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এটা বিশ^াস করা যায় না যে, এদেশের মানুষ এটা করতে পারে। কিন্তু, সেই কাজই তারা করেছে। আর আমার দুঃখ লাগে ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করলো আমি সাথে সাথে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো  সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার কিরুদ্ধে সরকার আপিল করলো। সেই সময়ে হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে তারা একটা সময় (সুপ্রিম কোর্ট) দিলেন। এই সময়ের মধ্যে সকলের বক্তব্য শুনে তারা একটা সিদ্ধান্ত দেবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোলনকারি থেকে শুরু করে দেশবাসীকে বললাম একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এটাতো সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। সেই আশ^াস দিয়ে তাদেরকে বললাম বিরত থাকতে। একটুতো ধৈর্য ধরতে হবে। যে কোন নগারিককেই আইন আদালত মেনে চলতে হবে। আর এর সুযোগ নিয়ে ১৭ জুলাই থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো।’

তিনি বলেন, ’৭৫-এর পর ২৯ বছর এদেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রীজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে গত ১৫ বছরে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি প্রশ্ন করেন এগুলো কাদের জন্য? এই মেট্রোরেলে কি আমি চড়বো? আমাদের সরকার ও মন্ত্রীরা শুধু চড়বে না জনগণ চড়বে, এটা আমার প্রশ্ন। এর উপকারিতা আপনারা পাচ্ছেন। এদেশের সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন। তাহলে এটার ওপর এতো ক্ষোভ কেন? আমরা বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়েছে। আদালতের রায় নিয়েও আমরা বারবার কথা বলেছি, বোঝাতে চেষ্টা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মন্ত্রণালয়ের যারা এবং এই মেট্রোরেল নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত তাদের প্রত্যেকেরই চোখের পানি পড়ছে। এটা দেখে যে কীভাবে এই দানবীয় কর্মকান্ড হলো, আর কীভাবে করলো?

শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতেই কাজ করে যাচ্ছি এবং করেছিও। যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কী অবস্থা ছিল? আর আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের একধাপ উচ্চধাপে উঠে গেছে। সেখান থেকে নামাতে হবে কেন? আমার প্রশ্ন সেটাই।

আবেগপ্রবণ কন্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছি। এই অ্যালাইনমেন্টে (মেট্রোরেলের) আমি পরিবর্তন এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে দ্রুত সময়ে হয়।

তিনি এটাকে আরো বাড়িয়ে একেবারে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত করে দিয়েছেন। যাতে মানুষ আরো সুন্দরভাবে চলতে পারে। যারা এর ওপর আঘাত করলো এই মেট্রোরেল এভাবে ভাংচুর করলো, যেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ প্রতিদিন চলাচল করতে পারতো অল্প সময়ের মধ্যে। এদেশের মানুষ কত খুশি ছিল। এই আনন্দ যারা নষ্ট করলো, জনগণের চলাচলের পথ যারা রুদ্ধ করলো তাদের বিচার এদেশের জনগণকেই করতে হবে। আমি সেই বিচারের দিকে চেয়ে আছি। আমি এর নিন্দা জানানোর ভাষা পাচ্ছি না।

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি কয়েকজন বসতি স্থাপনকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের নামে।

খবর আল জাজিরার।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। সাত ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং অবৈধ তল্লাশি ফাঁড়ি স্থাপনকারী একটি কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

কট্টরপন্থী ওই গোষ্ঠীর নাম হিলটপ ইয়ুথ। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়ে অপরাধ করেছে গোষ্ঠীটি, বলেন ওং। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন বসতি স্থাপনকারীরা মারধর, যৌন হামলা এবং নির্যাতনের মতো অপরাধ ঘটিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এক বিবৃতিতে ওং বলেন, বসতি স্থাপনকারী সহিংস অপরাধীদের জবাবদিহি করতে এবং তাদের চলমান বসতি স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ করতে আমরা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাই। এসব কর্মকাণ্ড উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য স্থিতিশীলতা ও সম্ভাবনাকে আরও দুর্বল করে।

অস্ট্রেলীয় সরকারের পদক্ষেপ সাধারণত তার মিত্র যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জাপানের অনুরূপ পদক্ষেপ অনুসরণ করে থাকে।

গত ১১ জুন ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং উগ্র-ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী লেহাভার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র তাদের নিজেদের একটি সহিংস আন্দোলন চালাতে মূলত একটি অরাজনৈতিক ও অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে সাম্প্রতিক এক পোস্টে লিখেছেন, এরকম শান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন কীভাবে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সহিংসতা এবং লুটপাটের আন্দোলনে পরিণত হল? কারণ যথারীতি বিএনপি ও জামায়াত জোট তাদের নিজস্ব একটি সহিংস আন্দোলন চালানোর জন্য মূলত একটি অরাজনৈতিক ও অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করেছে।

জয় লিখেছেন, স্বার্থান্বেশী মহলের সম্পৃক্ততা উপলব্ধি করে, প্রতিবাদকারীরা নিজেরাই সহিংসতায় লিপ্ত থাকার কথা অস্বীকার করে বেশ কয়েকটি বিবৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে, এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে একটি তৃতীয় পক্ষ জড়িত রয়েছে, যার সাথে প্রতিবাদকারীদের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে, এই কাপুরুষরা বিক্ষোভকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে জনগণকে আতংকের মধ্যে ঠেলে দিয়ে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে। তারা আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সরকারি ও বেসরকারি পরিবহন এবং সম্পত্তি, গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহকে টার্গেট করেছে।

জয় বলেন, তারা যেখানেই সুযোগ পেয়েছে সেখানেই সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তিতেও ব্যাপক লুটপাট করেছে। তারা একটি কারাগারে হামলা করে সকল বন্দীকে মুক্ত ও অস্ত্র লুট করে।

তিনি বলেন, এই ধরণের নজিরবিহীন মাত্রার সহিংসতার কারণেই সরকার সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন এবং অস্থায়ীভাবে কারফিউ জারির মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর কারণ হল, আরও কোনো সহিংসতা প্রতিরোধ, সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখা সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।

দেশের শিক্ষার্থীরা মোটেও সন্ত্রাসী নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র তাদের বাংলাদেশ ভাঙার দলীয় এজেন্ডার আড়ালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।

তিনি মঙ্গলবারের এই পোস্টে লিখেছেন, বিএনপি-জামায়াত কিভাবে সাধারণ ছাত্রদেরকে বাংলাদেশ ভাঙার দলীয় এজেন্ডার জন্য ব্যবহার করেছে, বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রের এই শত্রুদের ক্ষমা করবে না।

অন্য এক পোস্টে, জয় একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে উল্লেখ করেছেন, যখন আওয়ামী লীগ সরকার এবং ছাত্র আন্দোলনকারীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার বা বিলুপ্তি নিয়ে একই আন্দোলনে ছিল, তখন কীভাবে শান্তিপূর্ণ ও অরাজনৈতিক কোটা আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠল?

১৮ জুলাইয়ের এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা আরেকটি ভিডিও শেয়ার করে বলেছেন, এই ভিডিও থেকে তিনটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেন, কোন ছাত্র সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির প্রতি এতটা অবজ্ঞা প্রদর্শন করতে পারে না, এসব ঘটনার জন্যই কারফিউ আরোপ করতে হয়েছে এবং সরকারের এসব পদক্ষেপ তাদের একটি ইতিবাচক দায়িত্ব।

জাতীয়

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নরসিংদী জেলখানসহ সারাদেশে যারা নজিরবিহীন তান্ডব ও নৈরাজ্য চালিয়েছে তাদেরকে খুুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

আজ দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন আরো বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। যারা বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে তাদেরকে খুুঁজে বের করতে সরকারের পক্ষ থেকে করণীয় সব কিছু করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নরসিংদী জেলখানায় যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে সেজন্য সরকার সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ বাহিনীসহ সরকারের প্রতিটি সেক্টরকে কাজে লাগিয়ে আজ নরসিংদীসহ দেশের পরিস্থিতি শান্ত করেছেন।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-১ আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্ণেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক, নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, নরসিংদী-৩ আসনের সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুুখ।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত সমন্বয় সভায় তিনি একথা জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কয়েকটি থানা ও ওয়ার্ডের নেতাদের এই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে ওবায়দুল কাদের সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানান।

কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। জনগণের মুক্তির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই সরকারের লক্ষ্য। কোটা আন্দোলনে ভর করে বিরোধীরা যে ধ্বংসস্তূপ করেছে- তা পরিদর্শন করে বিদেশিরা কম্পিত হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচার করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে।

এদিন দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে খাদ্যবিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওবায়দুল কাদের।

এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের টার্গেট শেখ হাসিনার সরকারের পতন। আজকে যে পরিস্থিতি সময় আরও খারাপ হতে পারে। শত্রুরা আড়ালে-আবডালে আরও প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ করতে পারে। সাহস করে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সদস্য আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমি রুহুল, ডা. দিলীয় কুমার রায়, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, মিরাজ হোসেন মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াবাজারে কোটা আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় আহত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং অসহায় কর্মহীন মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।

এ সময় নগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে হুমায়ুন কবির ঢাকা মেডিকেলে আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে যান।

বিনোদন

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্তরা হাসপাতালে মারা যান তিনি।

শাফিন আহমেদের ভাই হামিন আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।

শাফিন আহমেদ বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী ও সুরকার। তিনি মাইলস ব্যান্ডের সদস্য। তিনি মাইলসের বেজ গিটারিস্ট ও প্রধান গায়ক ছিলেন। ব্যান্ডের বাইরে তিনি সলো ক্যারিয়ারে সুনাম অর্জন করেছেন। এছাড়া বেশকিছু সলো কিংবা মিক্সড অ্যালবামে তার গান রয়েছে।

১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন শাফিন আহমেদ। তার মা সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগম ও বাবা সুরকার কমল দাশগুপ্ত। এ পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে ছোট বেলা থেকেই শাফিন আহমেদ গানের ভেতরেই বড় হয়।

বাবার কাছে মাঝে মধ্যে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিখেছেন আর মার কাছে শিখেছেন নজরুলগীতি। এরপর বড় ভাই হামিন আহমেদসহ ইংল্যান্ডে পড়াশোনার সুবাদে পাশ্চাত্য সংগীতের সংস্পর্শে এসে ব্যান্ড সংগীত শুরু করেন এবং মাইলস ব্যান্ড গড়ে তোলেন, যা পরে বাংলাদেশের অগ্রগামী ব্যান্ডদলসমূহের মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তিনি সেই সময় প্রচারিত বিটিভির নিয়মিত মাইলসকে নিয়ে করা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন।

শাফিন আহমেদের জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে চাঁদ তারা সূর্য, জ্বালা জ্বালা, ফিরিয়ে দাও ও ফিরে এলেনা অন্যতম।

২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি ব্যক্তিগত কারণে মাইলস ছাড়েন শাফিন আহমেদ এবং রিদম অব লাইফ নামে নতুন একটি ব্যান্ডদল প্রতিষ্ঠা করেন।

এ দলে তার সঙ্গে যোগ দেন ওয়াসিউন (গিটার), শাহিন (গিটার), সুমন (কি-বোর্ড), উজ্জ্বল (পার্কিশন), শামস (বেজ গিটার) ও রূমি (ড্রামস)। পরে একই বছরের শেষ দিকে শাফিন আবারও মাইলসে ফিরে আসেন।

৩ বার ‘মাইলস’ ছাড়েন শাফিন আহমেদ

ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল শাফিন আহমেদের। ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে গত দু’দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

কিন্তু আর ফেরা হলো না। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  বাংলাদেশ সময় আজ (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড তারকা।
আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় ছিল ব্যান্ড সংগীত। সোলস, ফিলিংস (নগর বাউল) ও এল আর বি’র সঙ্গে যে ব্যান্ডটি সমানতালে পাল্লা দিত সেটি হলো মাইলস।

আর মাইলসের বেজ গিটারিস্ট ও প্রধান গায়ক ছিলেন শাফিন। ভাই হামিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে মাইলসকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যান শাফিন। শাফিন-হামিমের কণ্ঠে ব্যান্ডটি থেকে প্রকাশিত ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ফিরিয়ে দাও’ ও  ‘কি যাদু’সহ অনেক গান সে সময় ছিল মানুষের মুখে মুখে।

কনসার্ট বা কোনো সঙ্গীতায়োজন মানেই এসব গান। এমন জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরও বিভিন্ন সময়ে তিনবার মাইলস মাইলস ছেড়ে বের হয়ে যান শাফিন আহমেদ। আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই শাফিনের ব্যান্ডটি ছাড়ার মূল কারণ বলে জানা যায়।

২০১০ সালের শুরুর দিকে একবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন শাফিন। কয়েকমাস পর ফের ব্যান্ডে ফেরেন।

এরপর ২০১৭ সালে অক্টোবরেও তিনি একবার মাইলস ছেড়ে দেন। কয়েকমাস পর দ্বন্দ্ব ভুলে ফের ব্যান্ডে ফিরেছিলেন।

সবশেষ তথা তৃতীয়বার মাইলস ছাড়েন ২০২১ সালের নভেম্বরে। শাফিন আহমেদ জানান, তিনি মাইলস থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ব্যান্ডের সব কার্যক্রম বন্ধের দাবিও করেন তিনি।

সে সময় এক ভিডিও বার্তায় শাফিন বলেন, ‘মাইলসের সঙ্গে আমার পথ চলা সেই ১৯৭৯ সালে। অনেক সময় দিয়েছি, শ্রম দিয়েছি, অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ হয়েছে। মাইলসের আজকের অবস্থানের পেছনে আমার কতটা অবদান সেটা সবাই জানেন। চলতি বছরের শুরুতে একটা সিদ্ধান্ত নেই মাইলসের বর্তমান লাইনআপের সঙ্গে আমার মিউজিকের কোনো কার্যক্রম সম্ভব হবে না। বর্তমান লাইনআপের সঙ্গে সব ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকব। ’

মাইলস ছাড়লেও সংগীত ছাড়বেন না বলে স্পষ্ট করেছিলেন শাফিন। তবে মাইলস নামটি যেন অপব্যবহার না হয় সে দাবিও রাখেন।

শাফিন বলেছিলেন, ‘মাইলসের সঙ্গে যদি কাজ না করতে পারি তাহলে এখানেই মাইলসের কার্যক্রম স্থগিত করাই বেস্ট ডিসিশন বলে আমি মনে করি।  অন্য কেউ যেন মাইলস নামটি ব্যবহার না করে। তবে আমাকে স্টেজে পাওয়া যাবে, আমাকে রেকর্ডিংয়েও পাওয়া যাবে। ’

ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। দলটির প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালে। তার আগে প্রকাশিত হয় দুটি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’।

শাফিন-হামিন ছাড়াও মাইলস ব্যান্ডের প্রাণ যারা- মানাম আহমেদ (ভোকাল ও কী-বোর্ড), ইকবাল আসিফ জুয়েল (ভোকাল ও গিটার), সৈয়দ জিয়াউর রহমান তূর্য (ড্রামস), ওয়াসিউন (গিটার), শাহিন (গিটার), সুমন (কী-বোর্ড), উজ্জ্বল (পার্কিশন), শামস (বেজ গিটার) ও রূমি (ড্রামস)।

‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি’র মতো মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে- ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’,  ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।

আন্তর্জাতিক

ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুধু যুদ্ধাপরাধী নন, তিনি একই সঙ্গে মিথ্যাবাদীও। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর দেওয়া ভাষণের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বার্নি স্যান্ডার্স একথা বলেন। আনাদোলু এজেন্সি।

স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘নেতানিয়াহু একজন যুদ্ধাপরাধী। গাজা যুদ্ধ অবসানের জন্য আমাদের সবকিছু করতে হবে এবং সেখানে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে হবে।’

সামাজিক মাধ্যম এক্স পেজে দেয়া এক পোস্টে স্যান্ডার্স এসব কথা বলেন। মার্কিন এ সিনেটর আরও বলেছেন, ইসরাইলিরা নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চায়। এজন্য আগাম নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি মার্কিন কংগ্রেসে তার নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে এসেছেন।

ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে স্যান্ডার্স সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, মার্কিন কংগ্রেসে কোনো যুদ্ধাপরাধীকে সম্মান জানানোর এটিই প্রথম কোনো ঘটনা। এর আগেও স্পষ্টবাদী স্যান্ডার্স বহুবার ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। এছাড়া, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল যে দমন-পীড়নমূলক নীতি অনুসরণ করে আসছে তার প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর সমালোচনা করে থাকেন বার্নি স্যান্ডার্স।

মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাসও। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যায় পরিপূর্ণ এবং তিনি যুদ্ধবিরতি চান না বলে মন্তব্য করেছেন হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বলেছেন, মার্কিন কংগ্রেসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ভাষণ থেকে বোঝা যায় যে তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে চান না। এক সাক্ষাৎকারে আবু জহুরি আরও বলেছেন, গাজার জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ ঢাকতে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মুখে নিজেদের ব্যর্থতা ও পরাজয় ঢাকতে তিনি সফল হবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন ওই সিনিয়র কর্মকর্তা।

বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে বক্তব্য দেন নেতানিয়াহু। ভাষণে ইরানকে মোকাবিলায় মধ্যপ্রাচ্যে একটি নিরাপত্তা জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে আবু জহুরি বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে যে কোনো দলের জোট হবে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ৭ অক্টোবরের পর থেকে চলমান এ হামলায় আহত হয়েছেন ৯০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

খেলাধুলা

সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ১৭ বছর পর ফের শিরোপা জিতল ভারত। দেশকে বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দিয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও তারকা অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজা।

রোহিত-কোহলি-জাদেজার মতো তারকা অবসরে। চোটে দলের বাইরে তারকা পেসার মোহাম্মদ শামি। বিশ্বকাপ শেষে বিশ্রামে জসপ্রিত বুমরাহ। এই তারকা ক্রিকেটারদের ছাড়াই শ্রীলংকা সফরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে গেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল।

আগামী শনিবার থেকে শ্রীলংকার বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নামবে ভারত। এই সুযোগ ভারতীয় দলকে হারাতে চায় শ্রীলংকা। এমনটি জানিয়ে শ্রীলংকান কোচ জনাথ জয়সুরিয়া।

তিনি বলেন, রোহিত এবং কোহলি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। তাদের প্রতিভা এবং তারা যে ধরণের ক্রিকেট খেলেছে তা দেখে আমরা সবাই জানি জাদেজাসহ তারা কোথায় রয়েছে। তাদের অনুপস্থিতি ভারতীয় দলের জন্য বিশাল ক্ষতি এবং এক্ষেত্রে আমাদের সেখান থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে হবে।

লংকান এই কিংবদন্তি আরও বলেন, রোহিত-কোহলি ও জাদেজার অনুপস্থিতিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে হবে শ্রীলংকাকে। ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সূর্যকুমার যাদব। তার ডেপুটি হিসেবে কাজ করবেন শুভমান গিল।

তিনি আরও বলেন, লংকান প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার পর আমরা মাত্র মৌসুম শুরু করেছি। বেশিরভাগ খেলোয়াড় এলপিএলে খেলেছে। এজন্য তারা ক্রিকেট নিয়েই ব্যস্ত ছিল। আমরা চাই তারা যত বেশি সম্ভব ক্রিকেট খেলুক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে নতুন কৌশল, নতুন পরিকল্পনা এবং নতুন শট শেখা গুরুত্বপূর্ণ।

জাতীয়

চলমান কারফিউ আরও শিথিল হচ্ছে। শুক্র ও শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক শেষে রাত ১২টার দিকে কারফিউ শিথিলের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে এই কারফিউ বলবৎ থাকবে। তবে এসব এলাকায় শুক্র ও শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। অন্যান্য জেলায় কারফিউর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকেরা।

গত সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় অন্তত ২০৪ জন নিহত হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়। একই দিনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। এখনো বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। এরপর ধাপে ধাপে কারফিউ শিথিল করছে সরকার।

জাতীয়

আমরা অনেক সময় বাইরের কেনা মিনারেল ওয়াটার পান করি। আর ঘরে সাধারণত ফিলটার করা বা  ফুটানো পানিতেই আস্থা রাখি।

আমরা কি জানি ফিলটার করা পানি থেকে শুধু ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করা যায়। কিন্তু মিনারেল ওয়াটার নানারকম খনিজ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ।

কাজেই বুঝতেই পারছেন যে, মিনারেল ওয়াটার যদি নিয়মিত পান করা যায় তা হলে শরীরের নানা উপকারে তা লাগে। তবে একথাও ঠিক যে প্রতিদিন মিনারেল ওয়াটারের জার বা বোতল কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে খুব অল্প খরচে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন মিনারেল ওয়াটার।

কীভাবে, জেনে নিন

উপকরণ 

ফিলটার করা পানি, বেকিং সোডা, এপসম সল্ট, পটাশিয়াম বাই-কার্বোনেট।

যেভাবে করবেন 

একটি পরিষ্কার পাত্রে ফিলটার করা পানি -২ লিটার, বেকিং সোডা -চা-চামচের ১৪, ইপসম সল্ট  চা-চামচের ১৪ এবং পটাসিয়াম বাইকার্বোনেট – চা-চামচের ১৪।

এবার সব উপকরণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ছেঁকে বোতলে ভরে রাখুন আপনার বিশুদ্ধ-নিরাপদ পানি।

নিয়মিত মিনারেল ওয়াটার পানে পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তসঞ্চালন এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।