রাজনীতি

সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ফলে মানুষের মনে তৈরি হওয়া সকল আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,‘এই সংস্কার কমিশন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার-এর সব পদক্ষেপ গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদকে বিলুপ্ত করতে দেশের হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের, মানুষের আত্মত্যাগের প্রতিফলন না থাকলে কি হিসেবে আমরা সংবিধানের সংস্কার বা পরিমার্জন করবো? যেহেতু এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে কোনও সংস্কারই সম্ভব নয়, সেহেতু আমরা এও মনে করি যে চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ডকুমেন্টেড (ইতিহাসে লিপিবদ্ধ) করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।’

১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর থেকে ক্ষমতা বাক্সবন্দী করে রাষ্ট্রপতির বা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়ার প্রথাই ক্ষমতা এককেন্দ্রীকরণের পদ্ধতি এবং এ কারণেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র-ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিলো উল্লেখ করে সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা যেন না গড়ে উঠে। তার একটা সুবন্দোবস্ত করা।’

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন এবং পালিয়ে যাবার পর অনেক কথাই উন্মুক্তভাবে আলোচনা করা যাচ্ছে ও হচ্ছে। একজন কতবার প্রধানমন্ত্রী পদে আসতে পারবেন, ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতার জায়গা -এসকল বিষয় আমাদের আলোচনায় উঠে আসছে। এ বিষয়ে আমরা সাধারণ মানুষ, সুশীলজন এবং আমাদের অংশীদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই আন্দোলনের অভিপ্রায় ও মানুষের আকাক্সক্ষা কমিশনের সুপারিশের মধ্য দিয়ে সরকারের কাছে তুলে ধরবো।’

তিনি জানান,‘সরকারের কাজ সুপারিশসমূহ বিবেচনায় এনে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন করা। সরকার পরবর্তীতে এসব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা করবেন। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকেও তাদের জায়গা থেকে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ এই আন্দোলন থেকে তাদেরও অনেক কিছু বুঝার বা শেখার রয়েছে।’

এসময় সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও মোহাম্মদ ইকরামুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মো. মুস্তাইন বিল্লাহ এবং কমিশনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।

খেলাধুলা

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা প্রদান করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তিনি এ সংবর্ধনা প্রদান করেন।

এ সময় নারী ফুটবল দলের সদস্যরা তাঁদের স্বপ্ন ও খেলোয়াড় জীবনের প্রতিদিনের সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক ইউনূস বিজয়ী খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দাবি ও কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে সপ্তম সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শিরোপ জিতে নেয় বাংলাদেশ দল।

নারী ফুটবলারদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন ‘এই সাফল্যের জন্য আমি পুরো জাতির পক্ষ থেকে তোমাদেরকে অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়, আর তোমরা সেই সাফল্য এনে দিয়েছ।’

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।

তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীদের সামগ্রিকভাবে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’

২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করা সাবিনা তাঁর আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, আগের প্রজন্ম ফুটবলকে তাঁদের ভালবাসা হিসেবে বেছে নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন।

সাবিনা আরো বলেন, আমাদের অনেকে সাধারণ পরিবার থেকে এসেছে এবং তার পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন খুব বেশি নয়। এই বেতন দিয়ে পরিবারকে তেমন কোন সাহায্য করতে পারি না।’

এই তারকা স্ট্রাইকার তাঁর কয়েকজন সহযোদ্ধার সংগ্রামের গল্প, যেমন মারিয়া মান্দারের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রামের মারিয়া, যেখান থেকে সাফ বিজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় এসেছেন, ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে হারান এবং মা তাকে বড় করেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাঁদের আবাসন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন, আর মিডফিল্ডার মানিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার দূরবর্তী লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ফুটবলার হিসেবে উঠে আসার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।

মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী তাঁর নিজ জেলা দিনাজপুরের রানীশংকৈল উপজেলায় তার গ্রামের দূর্বল অবকাঠামোর কথা বলেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করেন যেন তাঁদের জন্য এশিয়ার বাইরে একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়, বিশেষ করে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার সঙ্গে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম ও তাদের বিভিন্ন দাবি আলাদাভাবে কাগজে লিখে তাঁর কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলেন।

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘তোমরা যা কিছু চাও তা লিখতে দ্বিধা করো না আমরা তোমাদের দাবিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব। যদি কিছু এখনই করা সম্ভব হয়, আমরা তা করব’।

কোচ পিটার বাটলার এবং ম্যানেজার মাহমুদা আক্তারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, সুপ্রদীপ চাকমা, অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং নূরজাহান বেগমও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার অনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’।

শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ৪০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা আয়োজিত গণসমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যে গণঅভ্যুত্থান, তাকে ধারণ করতে গেলে আর কোনো শোষণ-বঞ্চনা মেনে নেবো না। আমরা অনেক বৈষমের শিকার হয়েছি। আমরা আর কোনো বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। এসময় আট দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণাও দেন তারা।

এছাড়া সমাবেশে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সকল রাজনৈতিক শক্তি এবং দেশবাসির প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সকল অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান বক্তারা।

এছাড়া সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা। গণসমাবেশ থেকে ঐক্যমোর্চার সমন্বয়ক বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ সকল সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে করা সব মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এসময় ইসকন নিষিদ্ধের দাবির প্রতিবাদও জানান তারা।

সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও আট দফা দাবি এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ পুনর্গঠনে ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব চিন্তা করা যায় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই। গণতন্ত্র, সমতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, শ্রী শ্রী ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের অন্যতম সমন্বয়ক দীপঙ্কর শীল, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ঋষি পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়, রবিদাস ফোরামের সভাপতি চাঁদ মোহন রবিদাস, জগন্নাথ হল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি তপন মজুমদার, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের সুস্মিতা কর, মাইনোরিটি রাইটস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস প্রমুখ।

ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আধিবাসিসহ এ দেশের সবাই মিলেই আন্দোলন করেছে। সবাই মিলিতভাবেই ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু আমরা বৈষম্য, বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। এ কারণেই এই আট দফা দেওয়া হয়েছে।

চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ইসকনের কর্মকাণ্ড নেই। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হলে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবাদ আসবে।

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের জন্য ট্রাম্পের দরকার নাই। ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) সাহেব আপনি আপনার দেশের সমস্যা সমাধান করুন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধানের জন্য আপনার প্রয়োজন নেই। এদেশের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করব।

জাতীয়

রোববার (৩ নভেম্বর) জেল হত্যা দিবস। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান কারাগারের অভ্যন্তরে বিনা বিচারে ও বর্বরোচিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে হত্যার কিছুদিন পরই ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাসের বর্বর এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন। ওইদিন তাদের জেলখানার অভ্যন্তরে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থেকে এ জাতীয় চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে এ সরকার গঠিত হয় ও শপথ গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান। এ সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেস্বর বিজয় অর্জিত হয়। শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয়, স্বাধীনতার জন্য সব আন্দোলন-সংগ্রামেও এ চার নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

জাতীয়

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ও লেখক শাহরিয়ার কবিরের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ফের গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার দুপুরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় এক ঘন্টা চিকিত্সা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার শাহরিয়ার কবিরকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে একটি কারা এ্যাম্বুলেন্সে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পঁেৌছার পর কড়া পাহারায় তাকে এ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের হূদরোগ, মেডিসিন, অর্থোপেডিক বিভাগের বিশেষজ্ঞগণ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পরে তার কিছু টেস্ট করানো হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর একটি দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যার কারণে শাহরিয়ার কবিরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার মো. আমিরুল ইসলাম হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার কলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শাহরিয়ার কবিরকে রুটিন চেক আপ করানোর জন্য হাসপাতালে আনা হয়। আমরা কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক সমন্বয়ে তার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা করি। কিছু টেস্টও করা হয়। তিনি বয়সজনিত বিভিন্ন রোগে ভূগছেন, তবে জটিল কোন সমস্যা নেই।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, এটি একটি বেসরকারি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার চুক্তি। বিষয়টি দুই পক্ষের চুক্তির শর্তের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এই চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। সুতরাং, এ বিষয়ে জানানোর জন্য এখন আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে ভারতের আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড। সময়মতো বকেয়া বিল না পেয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় রণধীর জয়সওয়ালের কাছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও আদানি পাওয়ার লিমিটেডের মধ্যকার ইস্যুতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। এটি একটি বেসরকারি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার চুক্তি। তাই এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আদানি প্ল্যান্ট অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমানে একটি ইউনিট থেকে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যা জাতীয় উৎপাদনকে প্রভাবিত করেছে। এর আগে তারা বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বলেছিল।

অন্যথায় ৩১ অক্টোবর ২০২৪ থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেয়।

সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে এখন পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন ভোটাররা বাছাই করবেন তাদের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে। তাই মারিজুয়ানার ব্যবহার থেকে শুরু করে অভিবাসী কিংবা পররাষ্ট্র ইস্যুতে প্রার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই বাইরের পৃথিবীরও চোখ থাকে।

বিভিন্ন ইস্যুতে কমলা ও ডোনাল্ডের অবস্থান এবং সেসব বিষয়ে তাদের নীতি কী, তা তুলে ধরা হয়েছে এ লেখায়।

মূল্যস্ফীতি

কমলা হ্যারিস বলেছেন, প্রথম দিন থেকেই তার অগ্রাধিকার হবে শ্রমজীবী পরিবারের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের খরচ কমানো।

নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দাম নির্ধারণের প্রবণতা বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। প্রথমবার বাড়ি কেনায় সহায়তা এবং আবাসন খাতে প্রণোদনা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

বাইডেনের শাসনামলে মূল্যস্ফীতি উর্ধ্বমুখী হয়েছে। অবশ্য কোভিড পরবর্তী সময়ে সরবরাহ সংকট এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলোকেও ভুগতে হয়েছে। তবে, সেসব দেশে পরবর্তীতে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

ট্রাম্পের অঙ্গীকার মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সবকিছু মানুষের ক্রয় সামর্থ্যের মধ্যে আনবেন। তার ভাষায়, ‘মেইক আমেরিকা অ্যাফোর্ডেবল অ্যাগেইন’।

প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তেলের জন্য খনন বাড়ালে জ্বালানির মূল্য কমে আসবে।

তিনি সুদহার কমানোর অঙ্গীকারও করেছেন। যদিও সুদহার নিয়ন্ত্রণের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির নেই।

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠালে আবাসনের ওপর চাপ কমবে বলেও মনে করেন ট্রাম্প।

এ ছাড়া তিনি আমদানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপের আভাস দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

কর

বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বছরে চার লাখ ডলারের বেশি আয় করা আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান কমলা হ্যারিস।

অবশ্য, কোনো পরিবারের করের বোঝা লাঘব করতে, সন্তানের বিপরীতে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন তিনি।

সম্পদ আহরণের ওপর বাইডেনের আরোপিত করের সঙ্গেও হ্যারিসের দ্বিমত রয়েছে।

ট্রাম্পও বিপুল পরিমাণ করছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন। একে তার ২০১৭ সালের করহ্রাসের নীতিরই বর্ধিত রূপ বলা চলে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনীদেরই সহায়তা করেছে।

তিনি বলেছেন, কর কমালে আয় যতটুকু কমবে তা তিনি উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি শুল্ক দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারবেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, দুজনের পরিকল্পনায়ই অর্থনৈতিক ঘাটতি বাড়াবে। তবে, ট্রাম্পের বেলায় সেটা বেশি বাড়বে।

গর্ভপাত

গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারণার কেন্দ্রে রেখেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি সারা দেশের জন্য অভিন্ন প্রজনন অধিকার সুরক্ষা আইনের পক্ষে কথা বলছেন।

গর্ভপাতের ইস্যুতে নিজের বক্তব্যে স্থির থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। সুপ্রিম কোর্টে তার সময়ে নিয়োগ দেওয়া তিন বিচারকের হাতেই গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হয়।

অভিবাসন

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তের সংকট সামাল দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমলা হ্যারিসকে। তিনি কোটি কোটি ডলার অনুদান সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ করে উত্তর অংশ অভিমুখে স্রোত ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০২৩ এর শেষ নাগাদ মেক্সিকো থেকে রেকর্ড সংখ্যক লোক প্রবেশ করেছে বটে কিন্তু পরবর্তীতে সংখ্যাটা কমে আসতে থাকে।

হ্যারিস তার প্রচারণায় নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা যেমন বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় আইনজীবী হিসেবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের কথাও মনে করিয়ে দিয়ে থাকেন।

ট্রাম্প এ দফায় সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে চান। সেই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে আরও বেশি করে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েনের অঙ্গীকার করছেন তিনি।

কিন্তু হ্যারিসের উদ্যোগে কঠোর অভিবাসন নীতি সম্বলিত কোনো ক্রস পার্টি আইন (সর্বদলীয়) প্রণয়নের অংশ না হতে রিপাবলিকানদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

হ্যারিস বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি এ বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী প্রত্যর্পণ ঘটানোর অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। গণহারে অবৈধ অধিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেছেন, এই উদ্যোগ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

পররাষ্ট্র নীতি

ইউক্রেনকে যতদিন প্রয়োজন ততদিন সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি নির্বাচিত হলে, চীন নয়, ২১ শতকের প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রই জিতবে, দিচ্ছেন এমন প্রতিশ্রুতিও।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে সোচ্চার। গাজা যুদ্ধ বন্ধে আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের অবস্থান ‘একলা চলো’ অর্থাৎ বিচ্ছিন্নতার পক্ষে। বিশ্বের অন্যান্য স্থানের সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে রাখতে চান তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানবেন। ডেমোক্রেটদের দাবি, এই পদক্ষেপ ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও শক্তিশালী করবে।

ইসরাইলের কট্টর সমর্থক হিসেবে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন কিভাবে, এ নিয়ে তাকে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায় না।

বাণিজ্য

ট্রাম্পের আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনার সমালোচনা করছেন কমলা হ্যারিস। তার মতে, এতে প্রকারান্তরে শ্রমজীবী মানুষের ওপর নতুন করে কর আরোপ করা হবে, যার ফলে একটি পরিবারকে বছরে প্রায় চার হাজার ডলার বেশি খরচ করতে হবে।

আমদানির ওপর কর আরোপের ক্ষেত্রে আরও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চান কমলা।

ইতোমধ্যেই বাইডেন প্রশাসন চীন থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ির মত কিছু পণ্য আনার ক্ষেত্রে যে শুল্ক চালু করেছে, সেটিই অনুসরণ করবেন কমলা হ্যারিসও।

নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্পের অঙ্গীকারের কেন্দ্রে রয়েছে শুল্ক ব্যবস্থা। বেশিরভাগ বৈদেশিক পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের অভিপ্রায় তার। আর চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে সেই হার হবে আরও বেশি।

কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রেই পণ্য উৎপাদনের জন্য উৎসাহিত করতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প।

জলবায়ু

জো বাইডেনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে মূলস্ফীতি কমানোর আইন পাশে ভূমিকা রেখেছিলেন হ্যারিস। এই আইন পাশের ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন খাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রণোদনা মিলবে।

কিন্তু, ‘ফ্র্যাকিং’ পদ্ধতিতে খননের মাধ্যমে তেল-গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রে বিরোধিতা থেকে সরে এসেছেন কমলা। পরিবেশবাদীরা এই পদ্ধতির বিপক্ষে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন পরিবেশ সুরক্ষার বহু উদ্যোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রত্যাহার করে নেওয়া তেমন উদ্যোগেরই একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও যানবাহন থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ সীমিত রাখা।

এবারের প্রচারণায়, নির্বাচিত হলে তিনি জ্বালানির জন্য উত্তর মেরুতে খনন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এবং ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে কথা বলছেন।

মারিজুয়ানা বা গাঁজা

বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে মারিজুয়ানা বা গাঁজার ব্যবহারকে বৈধতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস।

তার মতে, বহু মানুষকে শুধু সঙ্গে গাঁজা রাখার কারণে কারাগারে যেতে হয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ এবং ল্যাটিন নাগরিকদের গ্রেফতারে ক্ষেত্রে সংখ্যাগত অসামঞ্জস্যের দিকেও ইঙ্গিত করেন তিনি।

ট্রাম্প তার দৃষ্টিভঙ্গি নমনীয় করেছেন।

তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে অল্প পরিমাণ মারিজুয়ানা বহনের জন্য ‘অপ্রয়োজনে গ্রেফতার এবং কারাগারে পাঠানো বন্ধ করার’ এখনই সময়।

বিনোদন

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন লিজ দিচ্ছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার– এমন তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে কোনো দেশের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব গুজব থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া এমন এক গুজবের বিষয়ে শনিবার পোস্ট করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে চালু হওয়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেকিং পেজ।

পোস্টে প্রেস উইং জানায়, ফেসবুকে সেনাবাহিনীর একটি চুক্তির ছবি শেয়ার করে সুশান্ত দাস গুপ্ত নামের এক ব্যক্তির পোস্টে বলা হয়েছে, ডিল ডান, সেন্ট মার্টিন গন?

মূলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এর সঙ্গে সেন্টমার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব। অন্তর্বর্তী সরকার অনেকবার জানিয়েছে সেন্টমার্টিন কোনো বিদেশি দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই।

রাজনীতি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ বলেছেন, একতাই সমবায় আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু সমবায় সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় মামলা-মোকদ্দমা আদালতে যাচ্ছে। এসব মামলা উচ্চ আদালত এমনকি আপিল বিভাগেও গেছে। সমবায়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে একত্রে কাজ করা। মামলা-মোকদ্দমা করে বিভাজন সৃষ্টি কাম্য নয়।

শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমবায় ভবনে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, দুটি মানুষ একসঙ্গে থাকলে মতবিরোধ থাকবে। প্রচলিত সমবায় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে সেই বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। নীতিগত কারণে যে বিরোধ দুটি পক্ষের মধ্যে থাকে তা আলাপ-আলোচনা বা আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু স্বার্থের সংঘাত সমবায়ে হবে, এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, একটি সমবায় আন্দোলন কতটা শক্তিশালী হতে পারে তা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে দিয়েছে। এই বিপ্লব সব ধর্ম বর্ণের মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। সমবায়কে কেন্দ্র করে বিশ্বের অনেক দেশে শতভাগ শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং শতভাগ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। বাংলাদেশেও সমবায় সমিতিগুলোর মাধ্যমে এই প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

অনুষ্ঠানে এবারের সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন বলেন, সব সমবায় সমিতি এক হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সমবায় সমিতি।

অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে ৭টি সমবায় সমিতি ও ৩ জন সমবায়ীকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। এ বছর বিশেষ ও অন্যান্য শ্রেণিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (পলওয়েল)। সমিতির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম।

রাজনীতি

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনে সমর্থনকারী এবং গত ১৫ বছরের দুর্নীতি, অনিয়ম ও টাকা পাচারকারীদের সমর্থকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

সোহেল তাজ বলেন, দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার ও কীভাবে দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। এসব বিষয়ে আমি সত্য কথা বললে, কেউ কিছু মনে করলে আমার কিছু যায় আসে না।

তিনি বলেন, যারা এগুলো দেখেও না দেখার ভান করে, তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আমি খোলামেলা মানুষ, স্পষ্টবাদী মানুষ। সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে সবাই সমান। ধনদৌলত ও প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা যায় না। চরিত্র দিয়ে মানুষকে বিচার করতে হয়। এটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমি সাদাকে সাদা বলি, কালোকে কালো বলি।