রাজনীতি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ৫ আগস্ট ছিল আমাদের ঐক্যবন্ধ হওয়ার প্রতীক। ওই দিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। তাই এখন কিছু করতে হলে সবার মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। কাজেই জুলাই ঘোষণাপত্র সবার মতমতের ভিত্তিতে করতে চাই।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে, বসতে পারলে খুব ভালো লাগে। মনে সাহস পাই। কারণটা পরিষ্কার, এ সরকারের জন্ম হয়েছে ঐক্যের মাঝখানে, এটি ঐক্যের দ্বারা সৃষ্টি। যখন আমরা নিজেরা নিজেরা কাজ করি, যখন দেখি একা পড়ে গেছি, আশেপাশে কেউ নেই আপনারা, তখন একটু দুর্বল মনে হয়। যখন আবার সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তখন মনের মধ্যে সাহস বাড়ে, মনে হয় একতাবদ্ধ আছি। একতাতে আমাদের জন্ম। একতাই আমাদের শক্তি।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাঝখানে একদিন ছাত্ররা এসে বলল, তারা একটা ঘোষণপত্র দেবে। আমাকেও সেখানে থাকতে হবে। বুঝতে চাইলাম কী ঘোষণাপত্র দিচ্ছে, তারা বলল। আমি বললাম, এটা হবে না। আমার চাওয়াটা হবে না, তোমাদের চাওয়াটাও হবে না। তোমরা যদি ৫ আগস্টে ফিরে যেতে চাও, সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে যা হয়েছিল সেটাকে রিক্রিয়েট করতে হবে। একা এটা করা যাবে না। ওইদিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। কেউ বলে নাই তুমি অমুক, তুমি অমুক। কাজেই তোমরা করতে চাইলে সবাইকে নিয়েই করতে হবে- এটা পরিষ্কার। না করলে এটা ঠিক হবে না।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র সবার মতামতের ভিত্তিতে করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘শুধু ছাত্ররা করলে, যে একতা দিয়ে তোমরা ৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছিলে সেটার অবমাননা হবে। তারা আমার কথায় খুব খুশি হয়নি। কিন্তু ক্রমে তারা বুঝল, ৫ আগস্ট রিক্রিয়েট করতে হলে এভাবে করতে হবে। সেই কথা থেকে এ আলাপ শুরু। আজকের আলোচনা একে কেন্দ্র করেই হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে উদ্দেশ্যে ব্যাহত হবে। দরকারও নেই। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে।’

সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এক থাকলে সবাই ভাববে আমরা তো জেগে আছি এখনও। আমরা ভোতা হয়ে যাইনি। আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়নি এখনও, এখনও চাঙা আছে। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি।’

প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমি যতদিন আছি, একতা নিয়ে থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে। যখন আপনাদের (রাজনৈতিক নেতারা) সঙ্গে বসি, তখন সেই সাহসটা দেন। আজকে আপনাদের দেখে খুবই সাহসী মনে হচ্ছে। ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে আমরা একতাবদ্ধ আছি। সেই একতাকে কীভাবে মানুষের সামনে প্রকাশ করব, ৫ আগস্টকে রিক্রিয়েট করব, সেটি এখন আলাপের বিষয়বস্তু হবে।

ঘোষণাপত্রের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেশের সামনে আসতে পারলে তা দেশের জন্য ভালো। আন্তর্জাতিকভাবেও ভালো। সবাই দেখবে যে এ জাতির মধ্যে বহু ঠোকাঠুকি হয়েছে, কিন্তু নড়ে না। স্থির হয়ে আছে, শক্ত হয়ে আছে। একতার বিষয়টি সারা দুনিয়াকে জানাতে চাই, দেশবাসীকে জানাতে চাই।

বৈঠকে সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সাথে একসঙ্গে বসায় সারা জাতি আজ সাহস অনুভব করবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং সুন্দরভাবে এর সমাধানও হয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাবলি স্মরণ রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের সময় যে যেখানে ছিলাম, তখন আমাদের মনের মধ্যে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমরা কোনরকম সেই মুহূর্তে ফিরে যেতে পারি কি না, ঐতিহাসিকভাবে মুহূর্তটি যেন হারিয়ে না যায়। ফিরে যাওয়া বলতে বলছি, আমরা কিসের জন্য এটা করেছিলাম, কী উন্মাদনা আমাদের মধ্যে ছিল। সেই উন্মাদনা রেকর্ড করে রাখা, যাতে গোটা জাতি সেই মুহূর্তের বিষয় কী ছিল তা ভবিষ্যতে জানতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সেখানে বর্তমানের অনেক কথা এখানে ঢুকাবেন না, অতীতের কথা ঢুুকাবেন না। ওই দিনের মুহূর্তে যে আকাঙ্ক্ষা, যে যাতনা, যে উৎসাহ, বিপ্লবী অনুভূতি ছিল, সেগুলো যেন আমরা তুলে ধরি। কিছু বিষয় উচ্চারিত ছিল, কিছু অনুচ্চারিত ছিল, কিন্তু মনের মধ্যে ছিল। কাজেই সেগুলোকে রেকর্ড করা।

জুলাই বিপ্লবের ঘোসণাপত্রের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, যে নামেই এটাকে অভিহিত করেন, সে নামটা বের করতে পারব-আজকে সবাই আমরা সে বিষয়ে একমত হলাম। মূল কথা আসল জিনিসটা যেন হারিয়ে না যায়। যে জিনিসটা অনন্য হয়ে আছে, সেটাকে আমরা লিখিতভাবে রাখি। এমন না হয় আমরা চলে গেলে কেউ মনে করতে পারল না কী হয়েছিল। এটা কি হঠাৎ করে হয়েছিল, নাকি এর পেছনে অনেক জিনিস ছিল, যা ওই মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়েছিল।

বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল ও অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।

বিনোদন

পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিল ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’। সেই অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছিল ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামে একটি সংগঠন। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন। এই হামলার ঘটনায় সরব রয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।

সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে হামলার নিন্দা জানান জয়া। একইসঙ্গে বৈষম্য নিয়ে ছুড়ে দেন প্রশ্ন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে জয়া লেখেন, ‘আদিবাসী’ নাগরিকদের রক্তে ঢাকার রাস্তা যেভাবে রক্তাক্ত করা হলো, সেটা মর্মান্তিক। এই রক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জখম-আত্মা থেকেই বের হলো। কারণ, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আদিবাসীরাও শরিক হয়েছিল।

তিনি আরও লেখেন, ‘একদিকে আমরা সংবিধানের বৈষম্য দূর করতে চাচ্ছি, অন্যদিকে সংবিধানের দোহাই দিয়ে আদিবাসীদের ওপর হামলা করছি। আমাদের ইমান ঠিক আছে তো? এ দেশ থেকে সব ধরনের বৈষম্য দূর হোক।’

এদিকে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। অন্যদিকে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ছাড়া রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাজনীতি

বৈঠকে বসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা) অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডে থাকবেন যুক্তরাজ্যের দ্যা লন্ডন ক্লিনিকের ৪ জন প্রফেসর ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের ৩ জন চিকিৎসক, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৬ জন চিকিৎসক এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান।

এদিকে মায়ের সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর আগে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সব রিপোর্ট শুক্রবারের (১৭ জানুয়ারির) মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বেগম খালেদা জিয়া তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। যুক্তরাজের দ‍্যা লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীণ রয়েছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসকরা বলছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যেই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট আসবে এবং এর পরেই নেয়া হবে চিকিৎসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

জাতীয়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অডিও বক্তব্য ছড়িয়েছে। এবারের অডিও বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে এটি পোস্ট করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের এ অডিও বক্তব্যটি এসেছে। তবে তিনি কোথায় বক্তব্য দিয়েছেন সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও কিছু জানানো বা লেখা হয়নি।

অডিও বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আর রেহেনা যে বেঁচে গেলাম মাত্র ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে আমরা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমার আসলে এটাই মনে হয় ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া বা কোটালীপাড়ার ওই বিশাল বোমার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আবার এ ২৪-এর ৫ আগস্ট বেঁচে যাওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই আল্লাহর কোনো একটা ইচ্ছা আছে, হাত আছে। না হলে এবার তো বেঁচে যাওয়ার কথা না। … তবুও এটা বোধ হয় আল্লাহরই একটা রহমত যে, আল্লাহ আমাকে আর কিছু কাজ করাতে চান বলে তাই আমি এখনও বেঁচে আছি। যদিও আমার কষ্ট হচ্ছে আমি আমার দেশ ছাড়া, ঘর ছাড়া সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। ’

ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন ও শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর এ পাঁচ মাসে তার বেশ কিছু কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এসব অডিও বক্তব্যে ‘চট করে দেশে ঢুকে পড়া’সহ শেখ হাসিনার নানা বক্তব্য পাওয়া গেছে।

তবে একবারের জন্যও তার মুখ দেখা যায়নি গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোথাও।

২০২৪ সালের শুরুতে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার মাত্র সাত মাসের মাথায় তীব্র জনরোষে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী। ওইদিনই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

জাতীয়

উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি স্বাধীন ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনে একটি অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হয়েছে। এজন্য গতকাল (১৬ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়।

শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের রুটিন ভেটিং সাপেক্ষে অধ্যাদেশটির খসড়া চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কার রোডম্যাপের পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নে বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হবে।

গণসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই দেশের বিচার বিভাগের মানোন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২১ সেপ্টেম্বর তিনি সুপ্রিমকোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা, সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং দেশের জেলা আদালতগুলোর বিচারকদের সম্মুখে বিচার বিভাগ আধুনিকায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এই রোডম্যাপে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি স্বাধীন ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠন করার বিষয়ে তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি জানান, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনাপূর্বক একটি প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়।

খেলাধুলা

বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল রাজনৈতিক কাজে লন্ডনে অবস্থান করছেন, বাফুফের সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ঢাকায় ফেরার পথে লন্ডনে গেছেন। তাবিথ ও সবুজ, দুজনেই লন্ডন থেকে লেস্টারে গিয়েছিলেন। লেস্টার সিটির হোম গ্র্যাউন্ডে। লেস্টার সিটির খেলা ছিল ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে, ২-০-তে হেরেছে হামজার দল। হামজা চৌধুরী এ ম্যাচ খেলেননি। শেষ তিন ম্যাচ খেলেননি হামজা।

পরশু রাতে কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামের হামজার অতিথি হিসেবে হসপিটালিটি ফ্যামিলি লাউঞ্জে বসে তাবিথ ও সবুজ ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করেন, একই সঙ্গে ছিলেন হামজার বাবা ও মা। রাত সাড়ে ৯টায় খেলা শেষ করে সাড়ে ১০টায় তাবিথদের সঙ্গে দেখা হয় স্টেডিয়ামেই। ইংলিশ লিগের ফুটবলার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলতে মুখিয়ে আছেন।

বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে হামজা বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কথা জানিয়েছেন। রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাবিথ-সবুজের। হামজা বাংলাদেশে খেলতে এলে সিলেটে যাবেন। সিলেটে তার মায়ের বাড়ি। এক রাত হলেও সেখানে তিনি থাকতে চান। লন্ডন থেকে সবুজ জানিয়েছেন, হামজা বাংলাদেশে এসে দেশের বাড়িতে এক দিন থাকার কথা বলেছেন।

বাংলাদেশের ফুটবল অনুশীলনে নামার আগে বাংলাদেশের ফুটবল ক্যাম্পে গিয়ে সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন হামজা। সবুজ বলেন, ‘হামজা মনে করেন তিনি একজন নতুন ফুটবলার। আগে আমাদের দেশের কারো সঙ্গে খেলেননি। এখানে একটা জড়তা কাজ করবে। অনুশীলনে নামার আগে যদি সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়, তাহলে অনুশীলনে নেমে ফুরফুরে মেজাজে খেলা যাবে। হঠাৎ করে মাঠে নেমে গেলে সবার সঙ্গে দূরত্বটা কমিয়ে আনতে সময় লেগে যায়।

হামজাই নাকি এ সব কথা বলেছেন খাবার টেবিলে। হামজার সঙ্গে ডিনার করেছেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ। অনেকের ধারণা ছিল হামজা এসে একটু সময় দিয়েই চলে যাবেন। কিন্তু হয়েছে তার উলটো।’ সবুজ জানিয়েছেন প্রায় দুই-আড়াই ঘণ্টা বসে কথা বলেছেন হামজা।

ইংলিশ লিগের ফুটবলার। জন্ম ইংল্যান্ড। কিন্তু তার মুখে বাংলা শুনে কিছুটা অবাকই হয়েছেন তাবিথ এবং সবুজ। কোনো কথা ইংরেজিতে বললে হামজা বাংলায় জবাব দিয়েছেন। কথা বলার সময় হামজার বাবা-মা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তারাও তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। হামজা বাংলা খুব ভালো বলেন। সব কথা বাংলাতে বলার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের ফুটবলার নিয়ে, দেশে নিয়ে তার পরিবার, বাবা-মা সবাই আলোচনায় এসেছে। বাংলার সংস্কৃতি নিয়েও তার আগ্রহ বেশ। অনেক কিছুই জানা আছে; যা তাবিথ ও সবুজকে বিস্মিত করেছে।

হামজা যতক্ষণ ছিলেন, প্রত্যেকটা মুহূর্ত হাসিমুখে কথা বলেছেন। হামজা ও তার বাবা-মা বিদায় নিলে লেস্টার শহর থেকে ফিরতে পথে ঘন কুয়াশার কারণে তিন ঘণ্টা লেগে যায়, রাত সাড়ে ৩টায় ঘরে ফেরেন। ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। শিলংয়ে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি নিশ্চিত না। ম্যাচ নিয়ে কথা হয়েছে। কবে আসবেন হামজা, সেটি নির্ভর করছে দলবদলের ওপর। সবুজ জানিয়েছেন হামজা নতুন দলে যোগ দিতে পারেন। নতুন দলে যোগ দেওয়ার পর সিডিউল তৈরি হবে।

জাতীয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স এরই মধ্যে পাঁচ মাস পার হয়ে গেছে। গঠিত হয়েছে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন। এরই মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা হয়েছে। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত এই সরকার কতদিন দায়িত্ব পালন করবে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে, কবে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে-এ প্রশ্ন এখন সবার। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে না থাকা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগে মন্দা, প্রশাসনে অস্থিরতা, পরাজিত শক্তির নানা অপকৌশল-এসব কারণে সরকারের ওপর দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার চাপ প্রবল হয়ে উঠেছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও এ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর। তবে বহির্বিশ্বের চাপে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের দিন শেষ বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশির ভাগ দেশই সরকারের সংস্কারপদ্ধতির জোর সমর্থন দিচ্ছে। হাসিনা সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করে। তবে আন্তর্জাতিক মহল শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের কথা বলে। সংস্কার ইস্যুতে সরকারের সময় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বিদেশিরা। প্রয়োজনীয় সময়ের পক্ষেই ছিল তাদের অবস্থান। কিন্তু দুই মাস ধরেই সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে আলাপ-আলোচনা জোরালো হচ্ছে।

এদিকে, দেশের অভ্যন্তরে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকেও দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে চাপ বাড়ছে। বিএনপি ও তার মিত্র ছয়দলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, ১২ দলীয় জোট, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ অন্তত ৪৮টি রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রার শুরুতে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানালেও এখন দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ চাইছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলেও মনে করছে এসব দল। একই মত ছয়দলীয় বাম গণতান্ত্রিক জোটেরও। পাশাপাশি জামায়াত, গণ-অধিকার পরিষদ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টও (এনডিএম) দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে।

রাজনীতিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে একের পর এক সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সাময়িক হিসাবেই সবাই বিবেচনা করছে। নির্বাচন দিতে দেরি হলে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা বাড়বে এবং বর্তমান সরকারের প্রতি সমর্থনও কমে যেতে পারে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিদেশিরা তাদের নিজস্ব মতামত, নিজস্ব ধারণা দেবে। তাদের একেক রকম চিন্তাভাবনা, আমাদের বিচন্তাভাবনা হলো বাংলাদেশের জনগণের চিন্তাভাবনা। তিনি বলেন, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি এই সরকার হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে পারে না। সরকার জনগণকে কথা দিয়েছে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ক্ষমতা নিয়েছে। অতএব যত দ্রুত নির্বাচন করতে পারে এবং জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে ততই এই সরকার এবং দেশের জন্য মঙ্গল। আমাদের মহাসচিব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) বিএনপির মতামত জানিয়েছেন, আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যেই নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের সে প্রস্তুতি আছে। এটা সম্ভব। তাই আশা করি সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে একটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে। এই স্বল্পকালীন সরকারের পক্ষে সংস্কার প্রস্তাবগুলো সব সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই যারা নির্বাচিত হবে তারা বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করবে এটাই প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ন্যূনতম সংস্কার করতে যেটুকু সময়, যৌক্তিক সে সময়টুকু নিয়ে সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। যৌক্তিক সময় যেটুকু লাগে সে সময়টুকু সরকারকে দেওয়া উচিত। তবে খুব লম্বা সময় দরকার নেই। তা হলে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের মতো হবে বলে আমরা মনে করি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন নির্বাচনে জো বাইডেনের দলের পরাজয়ের পর থেকে বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের সঙ্গে ভারতের আলোচনা বাড়ে। এর আগে বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনের প্রতি ভারতের আগ্রহই বেশি দেখা গেছে। শেখ হাসিনা ইস্যুতে ঢাকা-দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও ওয়াশিংটন মাথা ঘামায়নি। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করেছে বলে জানান ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি। এছাড়া আঞ্চলিক দুই প্রভাবশালী দেশ ভারত, চীনসহ আরও কয়েকটি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিদেশিদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগ্রহের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর মন্তব্যে। গত সোমবার দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক নিয়ে নির্বাচিত সরকারের সময় কথা হওয়া উচিত।’ যদিও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার মতো তিনি যথাযথ লোক নন।

গত শনিবার কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটির বক্তব্যের দুদিন পর ভারতের সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে ঘিরে আলোচনা শুরু হয়। এরিক গারসেটি বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত সময়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত আলোচনা করেছে। সম্প্রতি দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ে একটি বৈঠক হয়, যেখানে বাংলাদেশে সম্ভাব্য নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউআইওএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরিক গারসেটি আবারও জানান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন চায়। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন বাংলাদেশে নতুন অধ্যায় খুলতে সহায়ক হবে। মার্কিন এই কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা উভয়ই (ভারত-যুক্তরাষ্ট্র) যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে চাই। আর এটি বাংলাদেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে সহায়তা করবে।’

এমন মন্তব্যের মাধ্যমে দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একক নীতিতে বিশ্বাস করে। সেটি হলো, উভয় দেশই শান্তিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া দেখতে চায়। এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র।’

এদিকে নির্বাচন ও সংস্কারের বিষয়ে বিএনপিসহ অংশীজনদের কী অবস্থান, তা জানতে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার রোববার বিএনপি ও অন্য দলগুলোর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। একই সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূত গত সোমবার বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন।

নির্বাচনে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশে কাজ শুরু করছে। ইউএনডিপির একটি প্রতিনিধি দল এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেছে। নির্বাচনে সহায়তা চেয়ে নির্বাচন কমিশন জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছিল, এটি জানিয়ে ঢাকায় সংস্থাটির আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে কী সহায়তা প্রয়োজন, তা মূল্যায়ন করা হবে। এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে ইউএনডিপি কী সহায়তা দিতে পারে, তা জানানো হবে। এছাড়া জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরের সময় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সেখানেও কারিগরি সহায়তার বিষয়টি উঠে আসে। ফলে বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা চাপ বিদেশিদের পক্ষ থেকে তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অবশ্য জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন মনে করেন, বহির্বিশ্বের চাপে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ার দিন শেষ। এখানে আগে আমরা দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রে স্যাংশনের দিকে তাকিয়ে থাকত, নির্বাচনের আগে ভারত কী বলল সেদিকে তাকিয়ে থাকত। বাংলাদেশে এই দিন আর ফেরত আসবে না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অভ্যন্তরীণভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই এখানে নির্বাচন কবে হবে এবং কী ধরনের নির্বাচন হবে, কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী করবে না-এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। পৃথিবীর সব দেশেই নানা ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আছে। আমরা যেমন কারও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সম্পৃক্ত হই না, শুধুমাত্র মানবাধিকার ইস্যু বাদে। আমরা মনেও করি না যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এবং নির্বাচনিব্যবস্থায় কারও হস্তক্ষেপ দেশের মানুষ মেনে নেবে। কারণ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ গণ-অভ্যুত্থান করেছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি আমরা আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না। এটি পরিবর্তনের জন্য আমরা লড়াই করব বলে মানুষকে কথা দিয়েছি। সুতরাং এটি আমরা করব।

আন্তর্জাতিক

আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শুক্রবার রায়ের পরপরই গ্রেফতার করা হয় তাকে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির এ মামলায় সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানকে ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

রাওলপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকক্ষে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেও তা পেছানো হয়েছিল। আর সবশেষ এক বছর ধরে এই কারাগারেই রয়েছেন পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা।

জেলের পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে ইমরান-বুশরা দম্পতিকে। ইমরান খানকে ১০ লাখ ও বুশরাকে পাঁচ লাখ অর্থদণ্ড করা হয়েছে। জরিমানা না দিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অতিরিক্ত ছয় মাস কারাগারে থাকতে হবে। আর বুশরাকে থাকতে হবে তিন মাস।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, বাড়তি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এ রায় দেওয়া হয়। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বুশরা বিবি। রায়ের পর সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তার ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টাবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। মামলায় ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। আর সাধারণ নির্বাচনের পরপর গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন করা হয়েছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের অ্যাকাউন্টাবিলিটি আদালতে মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে শীতকালীন ছুটির কারণে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১৩ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত আদালতকক্ষে হাজির হতে পারেননি উল্লেখ করে সেদিনও রায় স্থগিত করা হয়। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

চল্লিশোর্ধ্ব বুশরা গত বছর রাজধানী ইসলামাবাদে হাজার হাজার পিটিআই সমর্থকদের একত্রিত করে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন। কঠোর নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। দেশটির পার্লামেন্টের অদূরে তিনি ডি-চকের ঐতিহাসিক চত্বরের কাছে একটি ট্রাকের ছাদ থেকে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং ইমরান খানের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান করার আহ্বান জানান।

কয়েকদিনের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পর অবশেষে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দলীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুশরা নিকটবর্তী পিটিআইয়ের শক্ত ঘাঁটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পালিয়ে যান, যেখানে তিনি শুক্রবার আদালতে হাজির হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ ১৫ মাসের যুদ্ধের পর ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি কিছুটা আশাবাদ জাগিয়েছে। এই চুক্তি ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

তবে এই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেশ কিছু বিশ্লেষক। তাদের আশঙ্কা, চুক্তিটি পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। এই বিভাজনটিই মূলত চুক্তির শর্ত ভঙ্গ বা বিশেষ করে, চুক্তি থেকে ইসরাইলের পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উস্কে দিতে পারে।

এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ৪২ দিন ধরে কারাগারে বন্দি ও জিম্মিদের মুক্তি, ইসরাইলি সৈন্যদের জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া এবং মানবিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও কিছু সংখ্যক বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত কয়েক মাস ধরেই এই যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে আসছেন। এমনকি হামাসের সঙ্গে মীমাংসা করার পরিবর্তে তাদের ধ্বংস করতে চেয়েছেন। যে কারণে তিনি বন্দিদের মুক্তির পর হয়তো হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় আক্রমণ শুরু করতে পারেন।

এছাড়া সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপটি তার রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য হতে পারে। কারণ নেতানিয়াহুর জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

রাজনৈতিক চাপ এবং নেতানিয়াহুর অবস্থান

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহু এবং তার সরকার যুদ্ধবিরতি বিরোধী পদক্ষেপ নিতে পারে। কারণ তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হতে পারে এবং ইসরাইলের ইহুদিবাদী মন্ত্রীরা, বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এই যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছেন। তারা নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সম্মত না হতে চাপ দিচ্ছেন। যার ফলে ইসরাইলে সরকার ভেঙে যেতে পারে এবং নতুন নির্বাচন হতে পারে।

যুদ্ধবিরতির শর্তে অস্পষ্টতা

এদিকে বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তির বিষয়টিকে ‘একটি তাত্ক্ষণিক বিরতি’ হিসেবে দেখছেন, যা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

ফিলিস্তিনি আইনজীবী ডায়ানা বুটু বলেছেন, চুক্তির শর্তাবলী খুবই অস্পষ্ট, বিশেষ করে গাজা থেকে ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে। একটি শর্তে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজার সীমান্ত থেকে ৩০০ মিটার দূরে সরে যাবে। কিন্তু এটি ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ফিরে যাবে কিনা, তা পরিষ্কার করা হয়নি। এ ধরনের অস্পষ্ট ভাষা ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে।

ইহুদিবাদী মন্ত্রীদের প্রভাব এবং ইসরাইলের রাজনৈতিক অস্থিরতা

নেতানিয়াহুর সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভিরের মতো অতি ইহুদিবাদী মন্ত্রীরা ইসরাইলের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই অবস্থান ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা আবারও যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছেন।

এর ফলে, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্থিতি রক্ষা করতে হয়তো যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হতে পারেন।

গাজার ভবিষ্যৎ এবং একক রাষ্ট্রের ধারণা

এই চুক্তির ফলে গাজার সার্বিক পরিস্থিতি কতটা পরিবর্তিত হবে, তা নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গাজার ওপর ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ থাকলে হামাস তাদের ক্ষমতা পুনর্গঠন করতে পারে। আর ইসরাইলও যেকোনো পরিস্থিতিতেই গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চাইবে।

যেমনটা নেতানিয়াহু আগেই বলেছিলেন যে, ইসরাইলকে গাজা উপত্যকায় ‘সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ রাখতে হবে। আর এটাই ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করবে।

মার্কিন পরিকল্পনা ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) ভূমিকা

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ফাতাহ তথা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) গাজায় ফিরিয়ে আনার পক্ষে কথা বলছে। যা গাজার পুনর্গঠন এবং রাজনৈতিক পুনঃসংযুক্তির দিকে একটি পদক্ষেপ হতে পারে।

তবে ইসরাইল এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। কারণ এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যা নেতানিয়াহু চান না। দখলদার ইসরাইল মনে করে, যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা ফাতাহ আবার গাজায় ফিরে আসে, তাহলে তারা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। যা ইসরাইলের জন্য চাপ সৃষ্টি করবে।

স্থায়ী শান্তির জন্য

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গাজায় একটি স্থায়ী শান্তির জন্য একটি রাজনৈতিক কাঠামোর প্রয়োজন। যা বর্তমান যুদ্ধবিরতির চুক্তি পূর্ণ করতে সাহায্য করবে। তাদের মতে, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একতরফা যুদ্ধবিরতির চেয়ে অনেক বেশি কিছু প্রয়োজন। যেমন– রাজনৈতিক সমাধান এবং দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সূত্র: আল-জাজিরা

রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এ দেশ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবার। কাজেই সুন্দর দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা লাগবে।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই যেখানে ব্যবসায়ীদের কাছে কেউ চাঁদাবাজি করবে না, হুমকি-ধমকি দিবে না, কেউ দখলবাজি করবে না, ঘুসখোররা ঘুস খাবে না। আর এমন দেশ গড়তে গেলে কুরআনের আইন চালু করতে হবে। আমাদের সন্তানেরা যারা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে তারা এমন বৈষম্যমুক্ত দেশ চায়। আমাদের সন্তানেরা যে স্বপ্ন নিয়ে প্রাণ দিয়েছে, সে স্বপ্ন পূরণে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা কারো কাছে মাথা নত করব না। আমরা কখনও কোন দুরাচারের সাথে আপস করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ একটা মানবিক দেশ না হবে, দুর্নীতিমুক্ত, দু:শাসনমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে। এ লড়াইয়ে দেশের মানুষকে আমরা পাশে চাই।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাইপাস চত্বরে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম, জেলা অ্যাস্টিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল হাকিম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আবুল হোসাইন, নাটোর শহর আমীর রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিক এবং উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাজমুল ইসলামসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জামায়াতের আমির উপজেলার রাজাপুর বাজার ও ধানাইদহ বাজারে পৃথক পথসভায় বক্তব্য রাখেন। শনিবার তিনি রাজশাহীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।