আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, এটি একটি বেসরকারি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার চুক্তি। বিষয়টি দুই পক্ষের চুক্তির শর্তের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এই চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। সুতরাং, এ বিষয়ে জানানোর জন্য এখন আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে ভারতের আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড। সময়মতো বকেয়া বিল না পেয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় রণধীর জয়সওয়ালের কাছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও আদানি পাওয়ার লিমিটেডের মধ্যকার ইস্যুতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। এটি একটি বেসরকারি সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার চুক্তি। তাই এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আদানি প্ল্যান্ট অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমানে একটি ইউনিট থেকে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, যা জাতীয় উৎপাদনকে প্রভাবিত করেছে। এর আগে তারা বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বলেছিল।

অন্যথায় ৩১ অক্টোবর ২০২৪ থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেয়।

সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে এখন পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে কেন্দ্রটির কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন ভোটাররা বাছাই করবেন তাদের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে। তাই মারিজুয়ানার ব্যবহার থেকে শুরু করে অভিবাসী কিংবা পররাষ্ট্র ইস্যুতে প্রার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই বাইরের পৃথিবীরও চোখ থাকে।

বিভিন্ন ইস্যুতে কমলা ও ডোনাল্ডের অবস্থান এবং সেসব বিষয়ে তাদের নীতি কী, তা তুলে ধরা হয়েছে এ লেখায়।

মূল্যস্ফীতি

কমলা হ্যারিস বলেছেন, প্রথম দিন থেকেই তার অগ্রাধিকার হবে শ্রমজীবী পরিবারের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের খরচ কমানো।

নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দাম নির্ধারণের প্রবণতা বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। প্রথমবার বাড়ি কেনায় সহায়তা এবং আবাসন খাতে প্রণোদনা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

বাইডেনের শাসনামলে মূল্যস্ফীতি উর্ধ্বমুখী হয়েছে। অবশ্য কোভিড পরবর্তী সময়ে সরবরাহ সংকট এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলোকেও ভুগতে হয়েছে। তবে, সেসব দেশে পরবর্তীতে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

ট্রাম্পের অঙ্গীকার মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সবকিছু মানুষের ক্রয় সামর্থ্যের মধ্যে আনবেন। তার ভাষায়, ‘মেইক আমেরিকা অ্যাফোর্ডেবল অ্যাগেইন’।

প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তেলের জন্য খনন বাড়ালে জ্বালানির মূল্য কমে আসবে।

তিনি সুদহার কমানোর অঙ্গীকারও করেছেন। যদিও সুদহার নিয়ন্ত্রণের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির নেই।

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠালে আবাসনের ওপর চাপ কমবে বলেও মনে করেন ট্রাম্প।

এ ছাড়া তিনি আমদানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপের আভাস দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

কর

বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বছরে চার লাখ ডলারের বেশি আয় করা আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান কমলা হ্যারিস।

অবশ্য, কোনো পরিবারের করের বোঝা লাঘব করতে, সন্তানের বিপরীতে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন তিনি।

সম্পদ আহরণের ওপর বাইডেনের আরোপিত করের সঙ্গেও হ্যারিসের দ্বিমত রয়েছে।

ট্রাম্পও বিপুল পরিমাণ করছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন। একে তার ২০১৭ সালের করহ্রাসের নীতিরই বর্ধিত রূপ বলা চলে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনীদেরই সহায়তা করেছে।

তিনি বলেছেন, কর কমালে আয় যতটুকু কমবে তা তিনি উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি শুল্ক দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারবেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, দুজনের পরিকল্পনায়ই অর্থনৈতিক ঘাটতি বাড়াবে। তবে, ট্রাম্পের বেলায় সেটা বেশি বাড়বে।

গর্ভপাত

গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারণার কেন্দ্রে রেখেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি সারা দেশের জন্য অভিন্ন প্রজনন অধিকার সুরক্ষা আইনের পক্ষে কথা বলছেন।

গর্ভপাতের ইস্যুতে নিজের বক্তব্যে স্থির থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। সুপ্রিম কোর্টে তার সময়ে নিয়োগ দেওয়া তিন বিচারকের হাতেই গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হয়।

অভিবাসন

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তের সংকট সামাল দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কমলা হ্যারিসকে। তিনি কোটি কোটি ডলার অনুদান সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ করে উত্তর অংশ অভিমুখে স্রোত ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০২৩ এর শেষ নাগাদ মেক্সিকো থেকে রেকর্ড সংখ্যক লোক প্রবেশ করেছে বটে কিন্তু পরবর্তীতে সংখ্যাটা কমে আসতে থাকে।

হ্যারিস তার প্রচারণায় নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা যেমন বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় আইনজীবী হিসেবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের কথাও মনে করিয়ে দিয়ে থাকেন।

ট্রাম্প এ দফায় সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে চান। সেই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে আরও বেশি করে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েনের অঙ্গীকার করছেন তিনি।

কিন্তু হ্যারিসের উদ্যোগে কঠোর অভিবাসন নীতি সম্বলিত কোনো ক্রস পার্টি আইন (সর্বদলীয়) প্রণয়নের অংশ না হতে রিপাবলিকানদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

হ্যারিস বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি এ বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী প্রত্যর্পণ ঘটানোর অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। গণহারে অবৈধ অধিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেছেন, এই উদ্যোগ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

পররাষ্ট্র নীতি

ইউক্রেনকে যতদিন প্রয়োজন ততদিন সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি নির্বাচিত হলে, চীন নয়, ২১ শতকের প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রই জিতবে, দিচ্ছেন এমন প্রতিশ্রুতিও।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে সোচ্চার। গাজা যুদ্ধ বন্ধে আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের অবস্থান ‘একলা চলো’ অর্থাৎ বিচ্ছিন্নতার পক্ষে। বিশ্বের অন্যান্য স্থানের সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে রাখতে চান তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানবেন। ডেমোক্রেটদের দাবি, এই পদক্ষেপ ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও শক্তিশালী করবে।

ইসরাইলের কট্টর সমর্থক হিসেবে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন কিভাবে, এ নিয়ে তাকে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায় না।

বাণিজ্য

ট্রাম্পের আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনার সমালোচনা করছেন কমলা হ্যারিস। তার মতে, এতে প্রকারান্তরে শ্রমজীবী মানুষের ওপর নতুন করে কর আরোপ করা হবে, যার ফলে একটি পরিবারকে বছরে প্রায় চার হাজার ডলার বেশি খরচ করতে হবে।

আমদানির ওপর কর আরোপের ক্ষেত্রে আরও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চান কমলা।

ইতোমধ্যেই বাইডেন প্রশাসন চীন থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ির মত কিছু পণ্য আনার ক্ষেত্রে যে শুল্ক চালু করেছে, সেটিই অনুসরণ করবেন কমলা হ্যারিসও।

নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্পের অঙ্গীকারের কেন্দ্রে রয়েছে শুল্ক ব্যবস্থা। বেশিরভাগ বৈদেশিক পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের অভিপ্রায় তার। আর চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে সেই হার হবে আরও বেশি।

কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রেই পণ্য উৎপাদনের জন্য উৎসাহিত করতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প।

জলবায়ু

জো বাইডেনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে মূলস্ফীতি কমানোর আইন পাশে ভূমিকা রেখেছিলেন হ্যারিস। এই আইন পাশের ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন খাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রণোদনা মিলবে।

কিন্তু, ‘ফ্র্যাকিং’ পদ্ধতিতে খননের মাধ্যমে তেল-গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রে বিরোধিতা থেকে সরে এসেছেন কমলা। পরিবেশবাদীরা এই পদ্ধতির বিপক্ষে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকাকালীন পরিবেশ সুরক্ষার বহু উদ্যোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রত্যাহার করে নেওয়া তেমন উদ্যোগেরই একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও যানবাহন থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ সীমিত রাখা।

এবারের প্রচারণায়, নির্বাচিত হলে তিনি জ্বালানির জন্য উত্তর মেরুতে খনন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এবং ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে কথা বলছেন।

মারিজুয়ানা বা গাঁজা

বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে মারিজুয়ানা বা গাঁজার ব্যবহারকে বৈধতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস।

তার মতে, বহু মানুষকে শুধু সঙ্গে গাঁজা রাখার কারণে কারাগারে যেতে হয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ এবং ল্যাটিন নাগরিকদের গ্রেফতারে ক্ষেত্রে সংখ্যাগত অসামঞ্জস্যের দিকেও ইঙ্গিত করেন তিনি।

ট্রাম্প তার দৃষ্টিভঙ্গি নমনীয় করেছেন।

তিনি বলেছেন, ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে অল্প পরিমাণ মারিজুয়ানা বহনের জন্য ‘অপ্রয়োজনে গ্রেফতার এবং কারাগারে পাঠানো বন্ধ করার’ এখনই সময়।

বিনোদন

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন লিজ দিচ্ছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার– এমন তথ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে কোনো দেশের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব গুজব থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া এমন এক গুজবের বিষয়ে শনিবার পোস্ট করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে চালু হওয়া প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেকিং পেজ।

পোস্টে প্রেস উইং জানায়, ফেসবুকে সেনাবাহিনীর একটি চুক্তির ছবি শেয়ার করে সুশান্ত দাস গুপ্ত নামের এক ব্যক্তির পোস্টে বলা হয়েছে, ডিল ডান, সেন্ট মার্টিন গন?

মূলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এর সঙ্গে সেন্টমার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব। অন্তর্বর্তী সরকার অনেকবার জানিয়েছে সেন্টমার্টিন কোনো বিদেশি দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই।

রাজনীতি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ বলেছেন, একতাই সমবায় আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু সমবায় সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় মামলা-মোকদ্দমা আদালতে যাচ্ছে। এসব মামলা উচ্চ আদালত এমনকি আপিল বিভাগেও গেছে। সমবায়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে একত্রে কাজ করা। মামলা-মোকদ্দমা করে বিভাজন সৃষ্টি কাম্য নয়।

শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমবায় ভবনে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, দুটি মানুষ একসঙ্গে থাকলে মতবিরোধ থাকবে। প্রচলিত সমবায় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে সেই বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। নীতিগত কারণে যে বিরোধ দুটি পক্ষের মধ্যে থাকে তা আলাপ-আলোচনা বা আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু স্বার্থের সংঘাত সমবায়ে হবে, এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, একটি সমবায় আন্দোলন কতটা শক্তিশালী হতে পারে তা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে দিয়েছে। এই বিপ্লব সব ধর্ম বর্ণের মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। সমবায়কে কেন্দ্র করে বিশ্বের অনেক দেশে শতভাগ শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং শতভাগ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। বাংলাদেশেও সমবায় সমিতিগুলোর মাধ্যমে এই প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

অনুষ্ঠানে এবারের সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন বলেন, সব সমবায় সমিতি এক হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সমবায় সমিতি।

অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে ৭টি সমবায় সমিতি ও ৩ জন সমবায়ীকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। এ বছর বিশেষ ও অন্যান্য শ্রেণিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (পলওয়েল)। সমিতির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম।

রাজনীতি

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনে সমর্থনকারী এবং গত ১৫ বছরের দুর্নীতি, অনিয়ম ও টাকা পাচারকারীদের সমর্থকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

সোহেল তাজ বলেন, দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার ও কীভাবে দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। এসব বিষয়ে আমি সত্য কথা বললে, কেউ কিছু মনে করলে আমার কিছু যায় আসে না।

তিনি বলেন, যারা এগুলো দেখেও না দেখার ভান করে, তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আমি খোলামেলা মানুষ, স্পষ্টবাদী মানুষ। সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে সবাই সমান। ধনদৌলত ও প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা যায় না। চরিত্র দিয়ে মানুষকে বিচার করতে হয়। এটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমি সাদাকে সাদা বলি, কালোকে কালো বলি।

বিনোদন

বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের জন্মদিন শনিবার (০২ নভেম্বর)। এই অভিনেতার প্রতিভা, তার ক্যারিশমায় শুধু অনুরাগীরা নন, তারকারাও মুগ্ধ।

এই মুগ্ধতা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরও রয়েছে। তাই তো বলিউড বাদশার জন্মদিনে বিশেষ বার্তা দিলেন ঋতুপর্ণা।
শাহরুখের সঙ্গে নিজের একটি ছবি সামাজিকমাধ্যমে ভক্ত-অনুরাগীদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন ঋতুপর্ণা। ছবিতে লাল শাড়ি রয়েছে অভিনেত্রীর পরনে। কালো স্যুটে ছিলেন শাহরুখ। একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়েছেন দুজন।

ছবির ক্যাপশনে অভিনেত্রী লেখেন, বলিউডের কিং-কে জানাই শুভ জন্মদিন। শাহরুখ আপনার প্রতিভা, ক্যারিশমা আর টাইমলেস পারফরম্যান্স আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনি সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন আর আর অসংখ্য সাফল্য পান এই কামনা করি।

সিনিয়র সিটিজেন হওয়া থেকে একধাপ দূরে দাঁড়িয়েও শাহরুখের শরীরী ভাষা আজও একই রকম। যে ভাষা আবারও পড়ার আকাঙ্ক্ষাতেই অন্যান্য বছরের মতো এবছরও বাদশার জন্মদিনে মান্নাতের সামনে বিপুল জনজোয়ার। পাশাপাশি সামাজিকমাধ্যমে অনুরাগীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’, ‘ডানকি’- একই বছরে তিনটি ব্লকবাস্টার দিয়েছেন শাহরুখ। ‘জওয়ান’ তো বলিউডের সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে বক্স অফিসের ব্যবসায়। এবার শাহরুখ নিজেকে তৈরি করছেন পরের চমকের জন্য। আর সেই চমক সুজয় ঘোষের ‘কিং’ সিনেমা।

আন্তর্জাতিক
জাতীয়

ওজন কমিয়ে ধরে রাখতে হলে কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হয়।

কমানোর পর যদি ঠিকমতো জীবনযাপন করা না হয় তবে আবারও ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

একজন্য কথায় বলে, ওজন কমানোর মতো সেটা ধরে রাখাও কঠিন হয়।

এই বিষয়ে ইটদিসনটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্যালিফোর্নিয়া’র নিবন্ধিত পরামর্শক ডা. অ্যামি লি বলেন, “আপনার অভ্যাসই বলে দেবে কত তাড়াতাড়ি ওজন বাড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “জীবনযাত্রার পদ্ধতি যেমন ওজন কমাতে সহায়ক তেমনি কাঙ্ক্ষিত ওজন ধরে রাখতেও সাহায্য করে।”

এমন সঙ্গী খোঁজা যিনি পেশাদার পরামর্শ দেবেন

শরীরচর্চা পছন্দ করেন বা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে ভালোবাসেন এমন সঙ্গী জোটানো উপকারী। পাশাপাশি খাদ্য ও জীবনযাপন পরিবর্তনে যারা পেশাদার পরামর্শ দেয় তাদের কথা মানতে হবে।

কারণ ডা. লি বলেন, “অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। আর সৎ সঙ্গে থাকলে ইতিবাচক উৎসাহ মিলবে। ফলে অন্যকে দেখে নিজে ঠিক থাকতে চেষ্টা করবেন।”

সকালের নাস্তায় উচ্চ মাত্রায় আঁশ ও প্রোটিন

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক পুষ্টিবিদ অ্যামি গুডসন একই প্রতিবেদনে বলেন, “সকালের নাস্তায় প্রোটিন ও আঁশ ধর্মী খাবার খেলে পেটভরা অনুভূতি থাকে অনেকক্ষণ, ক্ষুধার হরমোন কমে, সারাদিন খাইখাই-ভাব থাকে না। ফলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ধরে রাখা সম্ভব হয়। যা কিনা ওজন বাড়তে দেয় না।”

ভারসাম্যহীন খাবার খাওয়া যাবে না

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্যের সমন্বয় করে খেতে হবে।

গুডসন বলেন, “প্রোটিন পেশি গড়তে সাহায্য করে। আঁশ পেটভরা অনুভূতি দেয় অনেকক্ষণ, বেশি খাওয়া কমায়।”

দুয়ে মিলে বেশি খেয়ে ফেলার ঝুঁকি কমাতে পারে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা

ওজন কমে গেলেও ব্যায়াম ছাড়া যাবে না। স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতি নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে।

গুডসন বলেন, “শারীরিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে ‘স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং’ এবং ‘কার্ডিও’র মিশ্রণে ব্যায়াম চালিয়ে গেলে বিপাকী কার্যক্রমে সামঞ্জস্য থাকে এবং শক্তির খরচ ঠিকমতো হয়।”

পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ

খাবারের পরিমাণে দিকে নজর দেওয়া জরুরি। সেটা বাইরে কিংবা বাসায়- যেখানেই হোক।

গুডসনের ভাষায়, “খাবার খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা অভ্যাস গড়লে অতিরিক্ত খাওয়া কমানো যায়, বিশেষ করে ক্যালরিযুক্ত খাবার।”

লক্ষ্য হল যতক্ষণ না খিদা না লাগছে ততক্ষণ না খাওয়া। আর প্লেটের অর্ধেক নিতে হবে সবজি, বাকি অর্ধেকের একভাব থাকবে চর্বিহীন প্রোটিন আর একভাব থাকবে উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ কার্বোহাইড্রেইট। এভাবে খেলে খাওয়াতে তৃপ্তি আসবে। ফলে খিদার পরিমাণ কমবে।

নিয়মিত খাওয়া

খাওয়ার পরিমাণ কমালেও, নিয়মিত তিন/ চার বেলার খাবার খেতে হবে।

গুডসন বলেন, “প্রতিবেলার খাবার ঠিক সময়ে খেলে বিপাকীয় পদ্ধতিতে সমাঞ্জস্য থাকে, পরের বেলায় অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা কমে।”

সারাদিন ধরে প্রতি তিন চার ঘণ্টা পর খাওয়ার লক্ষ্য থাকা উচিত।

দীর্ঘমেয়াদে উদ্দেশ্য ভুলে যাওয়া যাবে না

ওজন কমানো কোনো মৌসুম ভিত্তিক কারবার নয়। সারা জীবন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হয়।

তাই ওজন কমানো ও সেটা ধরে রাখতে ওপরের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো আজীবন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, এই বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতি

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর দেশের আমদানি বাণিজ্য আবার সচল হওয়ার পথে। ২০২০ সাল থেকে করোনার সংক্রমণ, বৈশ্বিক মন্দা, দেশে ডলার সংকট, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আমদানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

টানা পাঁচ বছর আমদানি ব্যাহত হওয়ার পর এখন এ বাণিজ্য সচল হওয়ার পথ খুলেছে। আড়াই বছর ধরে চলা ডলার সংকট ক্রমেই কেটে যাচ্ছে, বকেয়া বৈদেশিক ঋণের স্থিতিও কমতে শুরু করেছে। ফলে ঋণ পরিশোধে চাপও কমছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বাজারেও পণ্যের দাম বেশ খানিকটা কমেছে। আগামী বছরে তা আরও কমে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন চলে যেতে পারে। জ্বালানি তেলের দামও কমেছে। আগামীতে আরও কমে প্রতি ব্যারেল ৭৩ ডলারে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এসব মিলে আমদানি বাণিজ্য আগামীতে বেড়ে যাবে।

সূত্র জানায়, ২০২০ সালের শুরু থেকে করোনার সংক্রমণের কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউন শুরু হলে আমদানিও ব্যাহত হয়। এই ধারাবাহিকতা চলে ২০২১ সালের শেষ সময় পর্যন্ত। ২০২১ সালের শেষদিক থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম হুহু করে বেড়ে যায়। এতে দেশে আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়।

ওই বছরের এপ্রিল থেকে দেশে শুরু হয় ডলার সংকট। জুলাইয়ে গিয়ে তা প্রকট আকার ধারণ করে। যা গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলমান ছিল। ওই সময়ে ডলার সাশ্রয় করতে ও রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে প্রথমে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্যে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করে। এরপর তা বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ মার্জিন আরোপ করে। পরে আরও বাড়িয়ে শতভাগ মার্জিন আরোপ করে। একই সঙ্গে বিলাসী পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে।

এর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে আমদানিনির্ভর কাঁচামালের শিল্পের উৎপাদন কমে যায়। আমদানিনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমদানি পণ্যের সরবরাহ সংকটের কারণে দাম বেড়ে যায়। যে কারণে আমদানি পণ্যের মূল্যস্ফীতির হারও বেড়ে যাবে। ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে বিভিন্ন সময়ে আমদানি পণ্য মূল্যস্ফীতি বাড়াতে সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ ভ‚মিকা রেখেছে।

দেশ ২০১৮ সাল থেকে অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তা প্রকট হয়েছে। করোনা ও মন্দার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় আমদানি কমে যায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ওই বছরে আমদানি হয়েছিল ৫ হাজার ৬৯ কোটি ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় কিছুটা বেড়ে ৬ হাজার ৬৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। আগের বছরের চেয়ে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয় ১৯ দশমিক ৭১ শতাংশ।

মূলত করোনার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। যে কারণে দামও বাড়তে থাকে। এ কারণে ওই বছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বেড়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে। ওই বছরে আমদানি ব্যয় ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ২৪৯ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। বৈদেশিক ঋণসহ আমদানি ব্যয় বেড়েছিল ৪৮ শতাংশ। ওই বছরের এপ্রিলে সর্বোচ্চ ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়। এর প্রভাবে আমদানি খরচও বৃদ্ধি পায়।

ওই বছরের এপ্রিল থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি পণ্য আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। এতে পণ্য আমদানি কমার পাশাপাশি এ খাতে ব্যয়ও কমে যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যয় ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে ৭ হাজার ৭৫ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

ওই বছর থেকে এখনো আমদানি ব্যয় কমছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় আরও ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩২৪ কোটি ডলারে নেমে যায়। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসে আমদানি হয়েছে ৯৯১ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কমেছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

সূত্র জানায়, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আগের আরোপিত এলসি মার্জিন প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে কেবল ১৪টি বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন আরোপিত রয়েছে। এছাড়া অর্থ পাচার বহুলাংশে কমে যাওয়ায় এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়তে থাকায় বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়ছে। আগে প্রতি মাসে রিজার্ভ কমত। এখন রিজার্ভ না কমে বরং বাড়ছে। রিজার্ভে হাত না দিয়েই আমদানি ব্যয়সহ নিয়মিত দেনা শোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ শোধ করা হয়েছে। ফলে রিজার্ভে চাপ কিছুটা কমেছে।

এসব কারণে আমদানি বাড়ার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলার প্রবণতা বেড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কম হওয়ার কারণে আগের তুলনায় কম দামে এখন বেশি পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে। এতে আমদানিনির্ভর শিল্প মন্দা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সে ইস্যু সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে প্রয়াত সাবিহ উদ্দিন আহমেদে দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় যোগ দিয়ে বের হওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। অযথা নানা ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সে ইস্যু সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে জাতীয় পার্টি ইস্যুতে।

এর আগে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে প্রয়াত কূটনীতিক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

স্মরণ সভায় উপস্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন সাহেবও এক সময় ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি ছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, ধারণা গভীর ছিল, সমাজটাকে পরিবর্তন করব, বদলে দেব। পরে সরকারি চাকরিতে চলে যাওয়ায় আর সম্ভব হয়নি। সরকারি চাকরিতে গিয়ে সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন সবাই।

একজন দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের মানুষ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারনের উপদেষ্টা, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত প্রয়াত সাবিহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্মরণে থাকবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের জন্য, দেশের গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন কাজ করেছেন সাবিহউদ্দিন আহমেদ। ক্রীড়া অন্তপ্রাণ মানুষ সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন অফুরান প্রাণশক্তি সম্পন্ন। সব সময় একসঙ্গেই থাকতাম। চড়াই-উৎরাই সময় পার করেছি অনেক। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখে যেতে পারলে খুশি হতেন তিনি।

স্মরণ সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ দীর্ঘদিনের সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য দেন।