আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য হারিয়েছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় রুশ মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী ৪৬০ জনের বেশি সেনা, চারটি ট্যাংক, চারটি ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল, একটি সাঁজোয়া কর্মী পরিবহন যান, ৯টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান, ৫৭টি যানবাহন, পাঁচটি আর্টিলারি সিস্টেম, একটি মর্টার, একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ স্টেশন, একটি সাঁজোয়া পুনরুদ্ধার যান, চারটি ইউএভি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং একটি গোলাবারুদ ডিপো হারিয়েছে।

এ নিয়ে কুরস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেন মোট ৫৩,৩৩০ জনের বেশি সেনা এবং ৩০৮টি সামরিক যান হারিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এদিন আরেকটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ সামরিক অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সেনারা দুটি সম্প্রদায়কে মুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সক্রিয় যুদ্ধ অভিযানের ফলে ব্যাটলগ্রুপ ওয়েস্টের ইউনিটগুলো লুগানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের নভোয়েগোরোভকা বসতি মুক্ত করেছে। অন্যদিকে ব্যাটলগ্রুপ সেন্টারের ইউনিটগুলো শত্রুর প্রতিরক্ষার গভীরে অগ্রসর হতে থাকে এবং দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের শেভচেঙ্কোর বসতি মুক্ত করেছে। সূত্র: তাস

বিনোদন

ধনকুবের ইলন মাস্ক। সম্পদ কিংবা তার নিত্যনতুন আবিষ্কার নিয়ে হরহামেশা-ই খবরের শিরোনাম হন। ফের যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছের এই বন্ধু শিরোনামে। তবে এবার সম্পদ বা কোন আবিষ্কার নয়, বরং ওজন কমিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি।

এক প্রতিবেদনে ভারতীয় গণমাধ্যম পিংকভিলা জানিয়েছে, টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক ওজন কমানোর সংগ্রামের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছেন। কীভাবে তিনি ওজন কমিয়েছেন তা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছেন এই শীর্ষ ধনকুবের।

হুট করেই ওজন কমিয়ে হাজির হয়ে সবাইকে বিমোহিত করেছেন ইলন। তার অনুসারীরাও এতে হতবাক। ওজন কমানো নিয়ে নিজের অনুসারীদের পরামর্শ দিয়েছেন এই ধনকুবের।

ইলন মাস্ক জানান, ওজেমপিকের (ওজন কমানোর ওষুধ) পরিবর্তে মৌনজারো নামের একটি ইনজেকশন নিয়েছেন তিনি। আর এতেই তার ওজন আগের তুলনায় কমেছে। তবে, ইনজেকশনটি নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শের কথাও বলেছেন এই ধনকুবের।

নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) স্যান্টা ক্লসের পোশাক পরিধান করে একটি ছবি পোস্ট করেছেন ইলন মাস্ক। সেই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেনে, ‘ওজেমপিক সান্টা। ওজেমপিকের চেয়ে মৌনজারো আমার দেহে বেশি কার্যকর। ওজনপিক আমাকে মোটা করে তুলেছিল।’

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আবার হোয়াইট হাউজে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

এরপর জাতির উদেশে ভাষণ ট্রাম্প। বলেন, ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রাখার কারণ আছে। তিনি বলেন, শিগগিরিই পরিবর্তন আসবে।

ট্রাম্প জানান, সোমবারই মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হবে।

প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের শপথ উপলক্ষ্যে সোমবার ওয়াশিংটনের সর্বত্রই ছিল সাজসাজ রব। নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পুরো শহর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ২৫ হাজার সদস্য এ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ বছর পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের আয়োজন খোলা স্থানেই করা হয়। কিন্তু তীব্র ঠান্ডার কারণে কংগ্রেস ভবনের ভেতরে এবার অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো কংগ্রেস ভবনের রোটুন্ডায় করা হয় পুরো আয়োজন। ভয়াবহ ঠান্ডার কারণে এমনটি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন। কংগ্রেস ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবার বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ার সুযোগ ছিল না। সেখানে মাত্র ২০ হাজার অতিথির বসার স্থান রয়েছে। যারা ভেতরে ঢোকার টিকিট পাননি, তারা ন্যাশনাল মলে বড় স্ক্রিনে অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করেছেন। শপথের পর ট্রাম্প ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউজে একটি জমকালো প্যারেডের মাধ্যমে যাত্রা করেন। ট্রাম্পের সম্মানে ক্যাপিটল রোটুন্ডায় কুচকাওয়াজও আয়োজন করা হয়। এর আগে ১৯৮৫ সালে ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পর ১২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরাজয়ের পর দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফিরলেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি : ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি ছিল বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের প্রধান নির্বাহী শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে ছিলেন। বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামাও উপস্থিত ছিলেন। অন্য প্রেসিডেন্টদের স্ত্রীরা উপস্থিত থাকলেও মিশেল ওবামা অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থি নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়টি অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে।

অর্থনীতি

উন্নয়নকে সবসময় পরিবেশের বিপরীতে দাঁড় করানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, আইন যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবে পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ প্রয়োজন। তবে সবার আগে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত দুইদিনের বিশেষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেহমান সোবহান এসব কথা বলেন।

শুক্রবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাপা ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)। রেহমান সোবহান বলেন, দেশের বিদ্যমান আইন ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মানলেই পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব। অতি মুনাফা ও বাজার অর্থনীতি পরিবেশ ধ্বংসের মূল কারণ।

পরিবেশ সুরক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করে বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা নিজেই একজন পরিবেশবিদ। তিনি ইতোমধ্যে ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার কমিশন ও বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দেশের জ্বালানি সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা পূরণ হয়নি; বরং ওই অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পরিবেশ ধ্বংস করে এমন প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

একই অনুষ্ঠানের পৃথক অধিবেশনে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নদী আইনে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। তিস্তা নিয়ে সরকার একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে যাবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাপা সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বেনের প্রতিষ্ঠাতা ও বাপার সহসভাপতি নজরুল ইসলাম। স্ব-অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পরিবেশ রক্ষামূলক কাজের সংস্কৃতি অব্যাহত রাখা কঠিন হচ্ছে উল্লে­খ করে তিনি বলেন, এ কাজে সম্মিলিত উদ্যোগ ও সহযোগিতা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, দীর্ঘ পথচলায় বাপার অনেক অর্জন থাকলেও সারা দেশে কার্যকর পরিবেশ আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। দেশে স্থানীয় পরিবেশ সমস্যা নিয়ে ভুক্তভোগীরা আন্দোলন করছেন, যাদের অনেকের কাছে বাপা পৌঁছাতে পারেনি। প্রথম অধিবেশনে ‘রাজনীতিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে বাপা ও পরিবেশ রক্ষার সংগ্রাম’, দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘নদনদী ও পানি ব্যবস্থাপনা’ এবং তৃতীয় অধিবেশনে ‘বায়ু, শব্দ ও দৃষ্টিদূষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রথম অধিবেশনে বক্তৃতায় অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো পরিবেশের সমস্যাগুলো আমলে নিতে শুরু করেছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পরিবেশ আন্দোলনের কারণেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে পরিবেশের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

‘নদনদী ও পানি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নদী আইনে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। এজন্য সম্মতিপত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি এলেই বাংলাদেশ ওই আইনে স্বাক্ষর করবে। বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে ভারত ও চীন- এ দুই দেশের সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ফলে বাংলাদেশ জটিল অবস্থার মধ্যে পড়েছে। তবে তিস্তা নিয়ে সরকার একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে যাবে বলে তিনি উল্লে­খ করেন।

এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল লতিফ, বেন-এর বৈশ্বিক সমন্বয়কারী খালেকুজ্জামান, বাপার সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদুল ইসলাম ও খুশী কবির, বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির প্রমুখ।

শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘স্থায়িত্বশীল নগরায়ণ’, ‘জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও জলবায়ু পরিবর্তন’ এবং ‘বন, পাহাড়, উপকূল ও আদিবাসী অধিকার’ শীর্ষক তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সবার মতামতের ভিত্তিতে সম্মেলনের প্রস্তাব গৃহীত হবে।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ৫ আগস্ট ছিল আমাদের ঐক্যবন্ধ হওয়ার প্রতীক। ওই দিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। তাই এখন কিছু করতে হলে সবার মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। কাজেই জুলাই ঘোষণাপত্র সবার মতমতের ভিত্তিতে করতে চাই।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে, বসতে পারলে খুব ভালো লাগে। মনে সাহস পাই। কারণটা পরিষ্কার, এ সরকারের জন্ম হয়েছে ঐক্যের মাঝখানে, এটি ঐক্যের দ্বারা সৃষ্টি। যখন আমরা নিজেরা নিজেরা কাজ করি, যখন দেখি একা পড়ে গেছি, আশেপাশে কেউ নেই আপনারা, তখন একটু দুর্বল মনে হয়। যখন আবার সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তখন মনের মধ্যে সাহস বাড়ে, মনে হয় একতাবদ্ধ আছি। একতাতে আমাদের জন্ম। একতাই আমাদের শক্তি।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাঝখানে একদিন ছাত্ররা এসে বলল, তারা একটা ঘোষণপত্র দেবে। আমাকেও সেখানে থাকতে হবে। বুঝতে চাইলাম কী ঘোষণাপত্র দিচ্ছে, তারা বলল। আমি বললাম, এটা হবে না। আমার চাওয়াটা হবে না, তোমাদের চাওয়াটাও হবে না। তোমরা যদি ৫ আগস্টে ফিরে যেতে চাও, সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে যা হয়েছিল সেটাকে রিক্রিয়েট করতে হবে। একা এটা করা যাবে না। ওইদিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। কেউ বলে নাই তুমি অমুক, তুমি অমুক। কাজেই তোমরা করতে চাইলে সবাইকে নিয়েই করতে হবে- এটা পরিষ্কার। না করলে এটা ঠিক হবে না।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র সবার মতামতের ভিত্তিতে করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘শুধু ছাত্ররা করলে, যে একতা দিয়ে তোমরা ৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছিলে সেটার অবমাননা হবে। তারা আমার কথায় খুব খুশি হয়নি। কিন্তু ক্রমে তারা বুঝল, ৫ আগস্ট রিক্রিয়েট করতে হলে এভাবে করতে হবে। সেই কথা থেকে এ আলাপ শুরু। আজকের আলোচনা একে কেন্দ্র করেই হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে উদ্দেশ্যে ব্যাহত হবে। দরকারও নেই। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে।’

সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এক থাকলে সবাই ভাববে আমরা তো জেগে আছি এখনও। আমরা ভোতা হয়ে যাইনি। আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়নি এখনও, এখনও চাঙা আছে। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি।’

প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমি যতদিন আছি, একতা নিয়ে থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে। যখন আপনাদের (রাজনৈতিক নেতারা) সঙ্গে বসি, তখন সেই সাহসটা দেন। আজকে আপনাদের দেখে খুবই সাহসী মনে হচ্ছে। ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে আমরা একতাবদ্ধ আছি। সেই একতাকে কীভাবে মানুষের সামনে প্রকাশ করব, ৫ আগস্টকে রিক্রিয়েট করব, সেটি এখন আলাপের বিষয়বস্তু হবে।

ঘোষণাপত্রের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেশের সামনে আসতে পারলে তা দেশের জন্য ভালো। আন্তর্জাতিকভাবেও ভালো। সবাই দেখবে যে এ জাতির মধ্যে বহু ঠোকাঠুকি হয়েছে, কিন্তু নড়ে না। স্থির হয়ে আছে, শক্ত হয়ে আছে। একতার বিষয়টি সারা দুনিয়াকে জানাতে চাই, দেশবাসীকে জানাতে চাই।

বৈঠকে সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সাথে একসঙ্গে বসায় সারা জাতি আজ সাহস অনুভব করবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং সুন্দরভাবে এর সমাধানও হয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাবলি স্মরণ রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের সময় যে যেখানে ছিলাম, তখন আমাদের মনের মধ্যে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমরা কোনরকম সেই মুহূর্তে ফিরে যেতে পারি কি না, ঐতিহাসিকভাবে মুহূর্তটি যেন হারিয়ে না যায়। ফিরে যাওয়া বলতে বলছি, আমরা কিসের জন্য এটা করেছিলাম, কী উন্মাদনা আমাদের মধ্যে ছিল। সেই উন্মাদনা রেকর্ড করে রাখা, যাতে গোটা জাতি সেই মুহূর্তের বিষয় কী ছিল তা ভবিষ্যতে জানতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সেখানে বর্তমানের অনেক কথা এখানে ঢুকাবেন না, অতীতের কথা ঢুুকাবেন না। ওই দিনের মুহূর্তে যে আকাঙ্ক্ষা, যে যাতনা, যে উৎসাহ, বিপ্লবী অনুভূতি ছিল, সেগুলো যেন আমরা তুলে ধরি। কিছু বিষয় উচ্চারিত ছিল, কিছু অনুচ্চারিত ছিল, কিন্তু মনের মধ্যে ছিল। কাজেই সেগুলোকে রেকর্ড করা।

জুলাই বিপ্লবের ঘোসণাপত্রের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, যে নামেই এটাকে অভিহিত করেন, সে নামটা বের করতে পারব-আজকে সবাই আমরা সে বিষয়ে একমত হলাম। মূল কথা আসল জিনিসটা যেন হারিয়ে না যায়। যে জিনিসটা অনন্য হয়ে আছে, সেটাকে আমরা লিখিতভাবে রাখি। এমন না হয় আমরা চলে গেলে কেউ মনে করতে পারল না কী হয়েছিল। এটা কি হঠাৎ করে হয়েছিল, নাকি এর পেছনে অনেক জিনিস ছিল, যা ওই মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়েছিল।

বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল ও অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।

বিনোদন

পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিল ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’। সেই অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছিল ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামে একটি সংগঠন। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন। এই হামলার ঘটনায় সরব রয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।

সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে হামলার নিন্দা জানান জয়া। একইসঙ্গে বৈষম্য নিয়ে ছুড়ে দেন প্রশ্ন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে জয়া লেখেন, ‘আদিবাসী’ নাগরিকদের রক্তে ঢাকার রাস্তা যেভাবে রক্তাক্ত করা হলো, সেটা মর্মান্তিক। এই রক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জখম-আত্মা থেকেই বের হলো। কারণ, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আদিবাসীরাও শরিক হয়েছিল।

তিনি আরও লেখেন, ‘একদিকে আমরা সংবিধানের বৈষম্য দূর করতে চাচ্ছি, অন্যদিকে সংবিধানের দোহাই দিয়ে আদিবাসীদের ওপর হামলা করছি। আমাদের ইমান ঠিক আছে তো? এ দেশ থেকে সব ধরনের বৈষম্য দূর হোক।’

এদিকে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। অন্যদিকে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ছাড়া রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাজনীতি

বৈঠকে বসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা) অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডে থাকবেন যুক্তরাজ্যের দ্যা লন্ডন ক্লিনিকের ৪ জন প্রফেসর ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের ৩ জন চিকিৎসক, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৬ জন চিকিৎসক এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান।

এদিকে মায়ের সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর আগে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সব রিপোর্ট শুক্রবারের (১৭ জানুয়ারির) মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বেগম খালেদা জিয়া তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। যুক্তরাজের দ‍্যা লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীণ রয়েছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসকরা বলছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যেই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট আসবে এবং এর পরেই নেয়া হবে চিকিৎসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

জাতীয়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অডিও বক্তব্য ছড়িয়েছে। এবারের অডিও বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে এটি পোস্ট করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের এ অডিও বক্তব্যটি এসেছে। তবে তিনি কোথায় বক্তব্য দিয়েছেন সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও কিছু জানানো বা লেখা হয়নি।

অডিও বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আর রেহেনা যে বেঁচে গেলাম মাত্র ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে আমরা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমার আসলে এটাই মনে হয় ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া বা কোটালীপাড়ার ওই বিশাল বোমার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আবার এ ২৪-এর ৫ আগস্ট বেঁচে যাওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই আল্লাহর কোনো একটা ইচ্ছা আছে, হাত আছে। না হলে এবার তো বেঁচে যাওয়ার কথা না। … তবুও এটা বোধ হয় আল্লাহরই একটা রহমত যে, আল্লাহ আমাকে আর কিছু কাজ করাতে চান বলে তাই আমি এখনও বেঁচে আছি। যদিও আমার কষ্ট হচ্ছে আমি আমার দেশ ছাড়া, ঘর ছাড়া সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। ’

ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন ও শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর এ পাঁচ মাসে তার বেশ কিছু কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এসব অডিও বক্তব্যে ‘চট করে দেশে ঢুকে পড়া’সহ শেখ হাসিনার নানা বক্তব্য পাওয়া গেছে।

তবে একবারের জন্যও তার মুখ দেখা যায়নি গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোথাও।

২০২৪ সালের শুরুতে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার মাত্র সাত মাসের মাথায় তীব্র জনরোষে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী। ওইদিনই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

জাতীয়

উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি স্বাধীন ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনে একটি অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হয়েছে। এজন্য গতকাল (১৬ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়।

শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের রুটিন ভেটিং সাপেক্ষে অধ্যাদেশটির খসড়া চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কার রোডম্যাপের পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়নে বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হবে।

গণসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই দেশের বিচার বিভাগের মানোন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২১ সেপ্টেম্বর তিনি সুপ্রিমকোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা, সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং দেশের জেলা আদালতগুলোর বিচারকদের সম্মুখে বিচার বিভাগ আধুনিকায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এই রোডম্যাপে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি স্বাধীন ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠন করার বিষয়ে তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি জানান, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনাপূর্বক একটি প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সুপ্রিমকোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়।

খেলাধুলা

বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল রাজনৈতিক কাজে লন্ডনে অবস্থান করছেন, বাফুফের সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ঢাকায় ফেরার পথে লন্ডনে গেছেন। তাবিথ ও সবুজ, দুজনেই লন্ডন থেকে লেস্টারে গিয়েছিলেন। লেস্টার সিটির হোম গ্র্যাউন্ডে। লেস্টার সিটির খেলা ছিল ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে, ২-০-তে হেরেছে হামজার দল। হামজা চৌধুরী এ ম্যাচ খেলেননি। শেষ তিন ম্যাচ খেলেননি হামজা।

পরশু রাতে কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামের হামজার অতিথি হিসেবে হসপিটালিটি ফ্যামিলি লাউঞ্জে বসে তাবিথ ও সবুজ ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করেন, একই সঙ্গে ছিলেন হামজার বাবা ও মা। রাত সাড়ে ৯টায় খেলা শেষ করে সাড়ে ১০টায় তাবিথদের সঙ্গে দেখা হয় স্টেডিয়ামেই। ইংলিশ লিগের ফুটবলার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলতে মুখিয়ে আছেন।

বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং সদস্য ইমতিয়াজ হামিদ সবুজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে হামজা বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কথা জানিয়েছেন। রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাবিথ-সবুজের। হামজা বাংলাদেশে খেলতে এলে সিলেটে যাবেন। সিলেটে তার মায়ের বাড়ি। এক রাত হলেও সেখানে তিনি থাকতে চান। লন্ডন থেকে সবুজ জানিয়েছেন, হামজা বাংলাদেশে এসে দেশের বাড়িতে এক দিন থাকার কথা বলেছেন।

বাংলাদেশের ফুটবল অনুশীলনে নামার আগে বাংলাদেশের ফুটবল ক্যাম্পে গিয়ে সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন হামজা। সবুজ বলেন, ‘হামজা মনে করেন তিনি একজন নতুন ফুটবলার। আগে আমাদের দেশের কারো সঙ্গে খেলেননি। এখানে একটা জড়তা কাজ করবে। অনুশীলনে নামার আগে যদি সবার সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়, তাহলে অনুশীলনে নেমে ফুরফুরে মেজাজে খেলা যাবে। হঠাৎ করে মাঠে নেমে গেলে সবার সঙ্গে দূরত্বটা কমিয়ে আনতে সময় লেগে যায়।

হামজাই নাকি এ সব কথা বলেছেন খাবার টেবিলে। হামজার সঙ্গে ডিনার করেছেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ। অনেকের ধারণা ছিল হামজা এসে একটু সময় দিয়েই চলে যাবেন। কিন্তু হয়েছে তার উলটো।’ সবুজ জানিয়েছেন প্রায় দুই-আড়াই ঘণ্টা বসে কথা বলেছেন হামজা।

ইংলিশ লিগের ফুটবলার। জন্ম ইংল্যান্ড। কিন্তু তার মুখে বাংলা শুনে কিছুটা অবাকই হয়েছেন তাবিথ এবং সবুজ। কোনো কথা ইংরেজিতে বললে হামজা বাংলায় জবাব দিয়েছেন। কথা বলার সময় হামজার বাবা-মা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। তারাও তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। হামজা বাংলা খুব ভালো বলেন। সব কথা বাংলাতে বলার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের ফুটবলার নিয়ে, দেশে নিয়ে তার পরিবার, বাবা-মা সবাই আলোচনায় এসেছে। বাংলার সংস্কৃতি নিয়েও তার আগ্রহ বেশ। অনেক কিছুই জানা আছে; যা তাবিথ ও সবুজকে বিস্মিত করেছে।

হামজা যতক্ষণ ছিলেন, প্রত্যেকটা মুহূর্ত হাসিমুখে কথা বলেছেন। হামজা ও তার বাবা-মা বিদায় নিলে লেস্টার শহর থেকে ফিরতে পথে ঘন কুয়াশার কারণে তিন ঘণ্টা লেগে যায়, রাত সাড়ে ৩টায় ঘরে ফেরেন। ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। শিলংয়ে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি নিশ্চিত না। ম্যাচ নিয়ে কথা হয়েছে। কবে আসবেন হামজা, সেটি নির্ভর করছে দলবদলের ওপর। সবুজ জানিয়েছেন হামজা নতুন দলে যোগ দিতে পারেন। নতুন দলে যোগ দেওয়ার পর সিডিউল তৈরি হবে।