আন্তর্জাতিক

আগামী জানুয়ারিতেই হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেই তিনি প্রধান প্রধান পদগুলো সাজানো শুরু করেছেন।

বুধবার তিনি দেখা করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি মার্কো রুবিওর নাম ঘোষণা করেছেন। তুলসী গ্যাবার্ড হচ্ছেন আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের নতুন প্রধান। ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে নিয়েছেন কংগ্রেসম্যান ম্যাট গায়েৎজকে।

এদিকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা জিতেছে রিপাবলিকান পার্টি। বিবিসির মার্কিন সহযোগী সিবিএস নিউজের পূর্বাভাসে এমনটি জানানো হয়েছে।

রিপাবলিকান পার্টি কমপক্ষে ২১৮টি আসনে জিততে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের চূড়ান্ত সংখ্যা ২২০-২২২ এর মধ্যে থাকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।

গত জুনে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের পর এই প্রথম বাইডেন ও ট্রাম্পের সাক্ষাৎ হলো। সেই বিতর্কের পর চাপের মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাইডেন।

ট্রাম্পের কিছু মনোনয়ন রাজনৈতিক মহলে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে, বিশেষত ম্যাট গায়েৎজকে অ্যাটর্নি জেনারেল পদে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত। এটি একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ, যা দুই দলের আইনপ্রণেতাদের মধ্যেই ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

রাজনীতি

আর কখনো যেন ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, তেমন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা : ৩১ দফার আলোকে সংস্কার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমান বলেন, আমরা সবাই এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে আর কখনো ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই, যেখানে গণ-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে, নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার নিশ্চিত করবে জনগণের মালিকানা ও অংশীদারি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও স্বেচ্ছাচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রতিটি লেভেলে নিশ্চিত করা হবে, কেউ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না।

তিনি বলেন, আজ আমরা যারা এখানে উপস্থিত রয়েছি, আমাদের রাজনৈতিক দর্শনে ভিন্নতা আছে; সেটিই স্বাভাবিক। তবে আমি বিশ্বাস করি, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ধারার মধ্যেও বৃহত্তর পরিসরে আমাদের সবার মধ্যে একটি বিষয়ে আদর্শিক ঐকমত্য রয়েছে। আর সেই বিষয়টি হলো, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের সময় তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি দেখার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, পতিত সেই রাজনীতির ভিত্তি ছিল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়ন। অন্যদিকে জনগণের ভোটে বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, আপনারা দেখতে পাবেন, আমাদের ৩১ দফার আলোকে, জনগণের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারির রাজনীতি। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হবে আইনের অনুশাসন, মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতা।

তিনি বলেন, আমরা যদি একটি রুলস-বেসড রাষ্ট্র কাঠামো নিয়ে আসতে পারি, সারা পৃথিবী থেকে প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ও প্রাইভেট ক্যাপিটাল নিজ গতিতেই বাংলাদেশে আসবে। আমাদের পাবলিক সেক্টরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে; দেশের উন্নয়ন ও উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।

বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দল-মত নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে চায় বলেও জানান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ঠিক যেভাবে আজ থেকে দুই দশক আগে, বিএনপি সরকারের সময়, বাংলাদেশে মিডিয়া নির্ভয়ে সরকারের সমালোচনা করতে পারতো, কার্টুন আঁকতে পারতো; আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আমাকে নিয়ে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিডিয়ার একাংশ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছিল; মিডিয়া ট্রায়াল ও প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন করেছিল। কিন্তু আমরা তার প্রতিদানে কোনো মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করিনি, কাউকে হেনস্তা করিনি, কোনো সম্পাদককে জেলে পাঠাইনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ বছরে আমার নিজের, আমার দলের এবং গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি তথা আপনাদের অনেকের ফ্রিডম অব স্পিচ, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন এবং ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। সেই উপলব্ধিকে ধারণ করে, আমরা সব নাগরিক, বিশেষত মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা, যেখানে ইউটিউব, ফেইসবুক ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের ভাবনা প্রকাশের কারণে কিংবা প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে মন্তব্যের দায়ে কাউকে হেনস্তা করা হবে না। সত্য গোপন করতে মেইনস্ট্রিম ও সোশ্যাল মিডিয়া যেমন বাধ্য থাকবে না, তেমনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেটির প্রচারেও সরকার কাউকে চাপ দেবে না। তবে দেশ গঠনের দায়িত্ব সবার এবং আমরা মিডিয়ার কাছ থেকে নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি।

অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নামলো ১৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন এক হাজার ৮৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার ডলারে (বিপিএম৬)।

একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪১৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর সেপ্টেম্বর–অক্টোবর দুই মাসের এক দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার দায় পরিশোধ করার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলো। অবশ্য ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা ওপরে।

আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে এর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে থাকে।

গত সপ্তাহর শেষে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) ডলার। আর মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার, বা দুই হাজার ৫৭২ কোটি ৮৮ লাখ ২০ হাজার ডলার।

রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামা দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, রিজার্ভ চলমান একটি বিষয়। একবার কমবে, আবার বাড়বে। তবে এখন প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ইতিবাচক আছে, সাময়িকভাবে কমলেও আবার বাড়বে রিজার্ভ।

জাতীয়

দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এবিএম আবদুল্লাহ ব্লাডপ্রেসারে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। তার সেই আলোচনার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

আমার দুই একজন রোগী আছেন, যাদের অতিরিক্ত ব্লাডপ্রেসার; কিন্তু ওনাদের ওষুধ দিলে খাবেন না। তারা বিখ্যাত লোক, নাম বলতে চাই না। নাম বললে সবাই চিনবেন। তারা ওষুধ খেতে আগ্রহী না।

তারা আমাকে বলেন- ‘আমি ওষুধ খাই না। তবে একটা জিনিস খাই, যেটা খেলে আমি ভালো হয়ে যাই। জিনিসটা হলো প্রতিদিন হাইকোর্টের মাজারে গিয়ে দুই টান মারি।’ কী টান, মারেন তাতো সবাই বুঝেন! টান মারলেই নাকি উনি খুব ভালো থাকেন। প্রেসার ভালো, ঘুম সুন্দর হয়। কোনো দুশ্চিন্তা থাকে না। এভাবেই তার বছরের পর বছর কাটছে। উনি অবশ্য এখন আর বেঁচে নেই। ওনার বদনাম করার জন্য বলছি না। একটা ধারণা নেওয়ার জন্য বলছি।

পাঁচ মিনিটের ব্যায়ামে ঠিক হতে পারে রক্তচাপ

আপনারা জানেন না, হাইকোর্টের মাজারে আগে নুরা পাগলা নামে একজন থাকত। সে মনে হয় এখন আর বেঁচে নেই। সে আবার পাগলার মুরিদ ছিল। তার ধারণা ছিল রক্তচাপ হলে ওষুধ লাগবে না। দুই টান খাইলেই চলবে!

আরেকজন অবশ্য বেঁচে আছেন। ওনারও হাইপ্রেসার। ওষুধ খাবেন না। সেও বিখ্যাত লোক। তাকে যদি বলি ওষুধ খান। সে একটা ভালো জিনিস খায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়ে। রাতে এশার নামাজ শেষে, বেশি খায় না। শুধু এক বোতল হুইস্কি খায়। এটা খেলে নাকি ওনার ঘুম ভালো হয়। টেনশন থাকে না। তার প্রেসার ভালো থাকে। সে বলছে- ‘এক বোতল হুইস্কি খাইলে তার সব ঠিক।’ এটাই নাকি তার ব্লাডপ্রেসারের সবচেয়ে ভালো ওষুধ।

আমি তাকে বললাম, এটাতো খাওয়া ঠিক হবে না। ধর্মীয় দিক থেকে হারাম। উনি বললেন, ‘হারাম-টারাম বুঝিনা ভাই। আমি ওষুধ হিসেবে খাই।’ উনি হয়তো নিজের মতো করে একটা ফতুয়া বানিয়ে নিয়েছেন। দেখলাম ওনার সঙ্গে আর্গুমেন্ট করে কোনো লাভ নেই। উনি এখনো বেঁচে আছেন। এভাবেই ওনার দিনকাল চলছে। ওনার সঙ্গে দীর্ঘদিন আমার যোগাযোগ নেই।

এ কথাগুলো বললাম এজন্য যে, মানুষের কিছু ভুল ধারণা আছে। এমন কিছু উদারহরণও আছে। যেমন ধরেন- ব্লাডপ্রেসার হলে অনেকে পানিতে গুলিয়ে তেঁতুল খান। আমার চেম্বারে অনেকে এসে এমন কথা বলেন। আমি তখন তাদের বলি এত ওষুধপত্র ফার্মেসির কী দরকার, আপনারা সকলে তেঁতুলের গাছ লাগান, প্রেসার হলে তেঁতুল খান! এই যে একটা ভুল ধারণা, তেঁতুল খাইলে বা তেঁতুলের রস খাইলে সে ভালো হয়ে যাবে। এ ধরনের অনেক ভুল বোঝাবুঝি আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে। এগুলোর কোনো অবকাশ নেই।

এই রোগটা (ব্লাডপ্রেসার) আল্লাহ দিয়েছেন, এই রোগ হলে ভালো হবে না এমন কোনো কথা নেই! এটা কিউরেবল না, তবে কন্ট্রোলঅ্যাবল। আর কন্ট্রোল না করলে আপনার শরীরের ৪টি ভাইটাল জিনিস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ব্রেন নষ্ট হতে পারে, হার্ড নষ্ট হতে পারে। কিডনি নষ্ট হতে পারে, চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কোনো একটা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় তখন ভালো করা কঠিন হয়ে যাবে। সেজন্যই ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এবং নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। সেজন্য অনেক মেডিসিন আছে। এগুলো ওষুধ ছাড়া কন্ট্রোল করা কঠিন। সব সময় যে ওষুধ খেতে হবে তাও না।

আপনার ওষুধ ছাড়াও কিন্তু সমস্যার সমাধাণ করা সম্ভব। সেটা আপনাকে ডাক্তার বলবে- ওজন কমানো, লবণ কম খাওয়া, টেনশন না করা। এগুলো কন্ট্রোল করলে ওষুধ ছাড়াও কন্ট্রোল হতে পারে। এটা আমাদের বুঝতে হবে। আমরা যারা ডাক্তার আমাদেরও রোগীদের বুঝাতে হবে। আমরা হয়তো রোগীকে সেভাবে সময় দেই না, বুঝাতে চাই না।

জাতীয়

গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভেতর দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রবেশ করতে না পেরে ট্রাইব্যুনালের গেটের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে চিফ প্রসিকিউটরের নামে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ তোলেন। নুরের ‘এমন’ আচরণকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ হিসেবে দেখছে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ বিকেল ৫টার দিকে গণ-অধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর তার একদল সহযোগী ও বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে উসকানিমূলক ও মানহানিকর স্লোগান দিতে দিতে একটি মিছিল নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল প্রবেশ গেট দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করেন। ’

‘পরে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে না পেরে নুরুল হক নুর তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালের গেটে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের ভিত্তিহীন, বানোয়াট, অসত্য ও উসকানিমূলক কিছু অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন। ’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার আনা এসব মিথ্যা অভিযোগ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। নুরুল হক নুরের এ বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মর্যাদা ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ’

‘নুরুল হক নুর এবং তার দলীয় কর্মীদের এমন বেআইনি কার্যকলাপ সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তার এ হঠকারী কার্যক্রমে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করার শামিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে নুরুল হক নুর ও তার দলীয় কর্মীদের এ বেআইনি ও ষড়যন্ত্রমূলক কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। ’

‘জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত নতুন এই বাংলাদেশে দুই সহস্রাধিক হত্যা ও অর্ধলক্ষ ভাই-বোনের নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার জন্য পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও বিজ্ঞ চিফ প্রসিকিউটর সম্পর্কে ব্যক্তি স্বার্থে এমন কার্যক্রম অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। নুরুল হক নুর তার এ ভিত্তিহীন, অসত্য ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অর্থনীতি

দেশের বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চালের শুল্ক প্রত্যাহার, টাস্কফোর্স গঠন, আমদানির অনুমোদন, কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়াসহ সরকারের নানা উদ্যোগেও ভোক্তার স্বস্তি মিলছে না। চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতিতে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।

সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি এবং ভারতসহ উজানের দেশগুলো থেকে আসা ঢলে আমনের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ধান ও চালের মজুত গড়ে তুলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে।

একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে চালের দাম দেশের বাজারের তুলনায় বেশি। এসব কারণে গত ১৫ দিনে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

সম্প্রতি দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করে সরকার। ফলে ১৯ মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।

এরইমধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হলেও কমছে না চালের দাম। এদিকে ভারতও চালের ওপর শুল্ক কমিয়েছে। তাতেও আমদানিতে আগ্রহী নন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

দেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল যদি আমদানি করা হয়, তবে বর্তমানে দেশের বাজারের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে ক্রেতাদের কিনতে হবে। শুল্ক কমানো হলেও এ মুহূর্তে দেশে চালের দামে প্রভাব পড়বে না। আর যে চাল আমদানি করা হয়েছে, তাও বাজারে আসতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ কাজে আসছে না। শুল্ক কমানোর পর এর সুবিধা একটি পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তারা পাচ্ছেন না। সরকারের নজরদারিতে ঘাটতি রয়েছে, তদারকি আরও বাড়াতে হবে।

তারা বলছেন, সরকার এখন শুধু খুচরা পর্যায়ে তদারকি করছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদক, করপোরেট, মিল, পাইকারি ও খুচরা— সব স্তরেই তদারকি করতে হবে, যা হচ্ছে না।

তারা আরও বলছেন, যেভাবেই হোক, বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সরকার বাজার সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না নেওয়ায় শৃঙ্খলা ফিরছে না। বাজার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ তাদের।

মঙ্গলবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালের দাম কমেনি। অথচ চালের দাম কমাতে গত অক্টোবরে দুদফায় শুল্ক সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে দুই শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এরপরও কমেনি।

খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে চিকন চাল দেশি বাসমতির কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭২ থেকে ৮২ টাকা, মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঝারি মানের বি আর ২৮, ২৯ নম্বর চাল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা এবং গুটি, স্বর্ণা, চায়না ইরিসহ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৮ টাকায়।

সূত্রাপুর বাজারের মেসার্স আদনান অ্যান্ড আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, আমদানির চাল এখনো বাজারে আসেনি। চাল ঢুকলে দাম কমতে পারে। চালের বাজার একটু দেখছি। ভারতে থেকে চাল এনে লাভ করতে পারব না। কারণ সেদেশেই চালের দাম বেশি, ডলার রেট ও পরিবহন খরচও বেশি। তাই আমাদের বাজারে দাম কমার সুযোগ কম।

এদিকে পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চাল প্রতি কেজি দেশি বাসমতি চাল প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৮ টাকায়। মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

মাঝারি মানের বি আরের কেজি ২৮ চাল ৬০ টাকা। বি আর ২৯ চালের কেজি ৫৮ টাকা। পাইজামের কেজি ৫৭ থেকে ৬১ টাকা। মোটা চাল গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড ধানের চাল (গুটি) বা সব চেয়ে মোটা চালের কেজি ৪৯ টাকা।

রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন চালের দাম সাত থেকে ১০ শতাংশ বেশি। এক মাসে বেড়েছে দুই শতাংশ পর্যন্ত। বাজারে এখন মোটা চালের কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।

মাঝারি মানের চালের কেজি ৫৮ থেকে ৬৩ টাকা। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে যায় প্রায় এক শতাংশ। গত মাসে বাড়ে প্রায় দুই শতাংশ।

বার্ষিক হিসাবে চিকন চালের দাম বেড়েছে নয় দশমিক শূন্য নয় শতাংশ। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মোটা চালের দাম বেড়েছে সাত দশমিক ১৪ শতাংশ।

এদিকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাল উৎপাদন ব্যাহত হয়। পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল রপ্তানিতে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং কোনো কোনো মানের চালের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির সরকার।

তবে গত ২৩ অক্টোবর ভারত সরকার টনপ্রতি ন্যূনতম রপ্তানি দাম ৪৯০ ডলার তুলে দিয়ে বাসমতি ছাড়া অন্য চালের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। ভারত সেদ্ধ চালের ওপর ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক তুলে নেওয়ার একদিন পর এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এসব উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমাতে সহায়তা করতে পারে। তবে স্থানীয় আমদানিকারকেরা বর্তমান দাম বিবেচনায় আমদানির কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির মালিক বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে বাজারে চালের সরবরাহ কম। সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে। কয়েকদিন পর আমন উঠবে। তখন মোটা চালের দাম কমবে। আর সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমদানির চাল বাজারে আসতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে আমদানি করা চালের দাম দেশি চালের চেয়ে বেশি হলেও তা মানুষ খাবে। কারণ চালের মান ভালো। যারা ভালোটা খান, তাদের কাছে দাম কোনো বিষয় নয়। আমরা আশা করছি, চালের দাম শিগগিরই কমে যাবে।

বাবুবাজারের চালের আড়ত মেসার্স ফেমাস রাইস এজেন্সির বিক্রয়কর্মী মো. সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ভারতে চালের দাম বেশি। মিনিকেট আনলে দাম পড়বে ৭৪ টাকা। আর দেশি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়। চিকন চাল এনে লাভ হবে না।

তিনি বলেন, মোটা চাল আনলে দাম একটু কমবে। আমনের মোটা চাল উঠলে দাম কমবে। চিকন চাল বৈশাখ মাসের আগে আসবে না। তার আগে আর চালের দামও কমবে না।

হাজী রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, গত ১৫ দিনে মোটা চিকন সব ধরনের চালে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। চাল আমদানি হয়েছে শুনেছি। কিন্তু বাজারে এখনও আসেনি। মনে হয় না তেমন কোনো লাভ হবে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারেও চালের দাম বেশি।

তিনি বলেন, নভেম্বরের শেষে বাজারে নতুন আমন চাল এলে মোটা চালের দাম একটু কমবে। আর এ সময়ের মধ্যে আমদানি করা চালও বাজারে আসবে। মোটামুটি বলা যায়, ডিসেম্বর থেকে চালের দাম কমে যাবে।

গত অক্টোবরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এর আগে বলা হয়েছিল, চাল আমদানি বাড়াতে শুল্ক-কর পুরোপুরি তুলে নেওয়া দরকার। চাল সরকারের জন্য একটি সংবেদনশীল পণ্য। গরিব মানুষের খাদ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ যায় চালের পেছনে।

ওই প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারের একটি চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছর আগের তুলনায় এখন চালের দাম ১১ শতাংশ কম। গত এক মাসে তা ৪ থেকে ৫ শতাংশ কমেছে। কিন্তু তারপরও আমদানি করতে গেলে খরচ অনেক পড়বে।

কমিশন বলেছিল, থাইল্যান্ডের চালের দাম পড়বে ৬৬ টাকা কেজি। এর সঙ্গে শুল্ক-কর ও অন্যান্য খরচ যোগ করলে দেশে দাম পড়বে ৯২ থেকে ৯৫ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করতে গেলে প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫৪ টাকা। এর সঙ্গে শুল্ক-কর ও অন্যান্য খরচ যোগ করে দাম পড়বে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের মত ছিল, এ দামে চাল আমদানি কঠিন। তাই শুল্ক-কর তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে সরকার ২০ অক্টোবর এক দফায় চালের শুল্ক-কর সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামায়। শুল্ক কমানোর ফলে প্রতি কেজিতে আমদানি খরচ ১৪ টাকা ৪০ পয়সা কমে। তবে এরপরও আমদানির ঋণপত্র বাড়েনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুল্ক-কর প্রথম দফায় কমানোর পর সেই পর্যন্ত মাত্র ২৬ টন চাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়। ট্যারিফ কমিশন বাকি শুল্ক-করও তুলে নেওয়ার সুপারিশ করে। তবে সুনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। ৩১ অক্টোবর এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) চালের শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এদিকে খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মাসের শেষ দিকে তাদের গুদামে চালের মজুত ১০ লাখ টনের নিচে নেমে যায়, যা ১৫ আগস্ট ছিল প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টন। সরকারিভাবে বিতরণ বাড়ানোয় মজুত কমে যাওয়ার ব্যাখ্যা দেওয়া হয় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। এরপর আমদানিতে উৎসাহ দেওয়ার পরামর্শ আসে।

সে কারণে রপ্তানিকারক দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘জি টু জি’ ভিত্তিতে (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি) চাল আমদানির বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে সরকার পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২ লাখ টনের বেশি চাল আমদানি করেছিল। পরের বছর আমদানি হয় এক হাজার টনেরও কম।

ইতোমধ্যে ভারত থেকে আমদানি করা চাল আসা শুরু হয়েছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১১ নভেম্বর ভারতীয় দুটি ট্রাকে চাল আমদানির প্রথম চালান দেশে প্রবেশ করে। ইতোমধ্যে মোট ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ ২৫ হাজার টন সেদ্ধ ও এক লাখ ৬২ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এলসির বিপরীতে বরাদ্দপ্রাপ্তরা চাল আমদানি করতে পারবেন।

খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমদানিকারকরা চাল আমদানি শুরু করেছেন। এরইমধ্যে হিলি বন্দর দিয়ে দেশে চাল এসেছে। সামনের দিনগুলোতে আরও চাল আসবে। আগামী সপ্তাহে বাজারে আমন চাল আসবে। আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে দাম কিছুটা হলেও কমবে।

আমদানির চাল দেশি চালের থেকে দামে বেশি হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা- এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাভ না হলে তো আমদানিকারকেরা আর আমদানি করবেন না। আমদানি করা চালের দাম দেশি চালের থেকে দুই এক এক বেশি ঠিক আছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্যে হলো বাজারে চালের সরবরাহ বাড়িয়ে দাম স্থিতিশীল রাখা। এজন্য আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর বাজারে সরবরাহ রাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে। আমাদের উৎপাদন খরচটাও মাথায় রাখতে হবে।

সচিব বলেন, আমদানি ছাড়াও চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আছে। টিসিবির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। তা বাড়ানো হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চালের বার্ষিক চাহিদা তিন কোটি ৭০ লাখ থেকে তিন কোটি ৯০ লাখ টন। গত অর্থবছরে তিন কোটি ৯০ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছিল। তারপরও বাজারে চালের দাম বেশি ছিল।

এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে দেশে আমদানি করা চাল আসছে। তারপরও কেন দাম কমছে না সে বিষয়ে সরকারকে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারের নজরদারিতে ঘাটতি রয়েছে, তদারকি আরও বাড়াতে হবে। সরকার এখন শুধু খুচরা পর্যায়ে তদারকি করছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদক, করপোরেট, মিল, পাইকারি ও খুচরা— সব স্তরেই তদারকি করতে হবে, যা হচ্ছে না।

বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটা গোষ্ঠী কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষকের কাছে কোনো ধান নেই। করপোরেট পার্টিগুলো সব কিনে নিয়ে গুদাম ভরে রেখেছে। বিভিন্ন করপোরেট গুদামে গিয়ে মনিটরিং করতে হবে।

তার পরামর্শ, বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া শুল্ক কমানোর পর এর সুবিধা একটি পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে, ভোক্তারা পাচ্ছেন না। এজন্য যেভাবে হোক বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এখন আমনের মৌসুম। সেই চাল বাজারে এলে দাম একটু কমবে বলে আশা করেন তিনি।

গত ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়। এ মৌসুমে ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, হয় ১১ লাখ ২৫ হাজার টন। আতপ চালও এক লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হাজার টন বেশি হয়। তবে ধানের সংগ্রহ কম হয়েছে। আর বর্তমান আমন মৌসুমে ১০ লাখ মেট্রিক টন ধান চাল সংগ্রহ করা হবে।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সীমিত ডিকার্বনাইজেশন সক্ষমতা সম্পন্ন বেশিরভাগ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সবুজ শিল্প বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও রেয়াতি ডিকার্বনাইজেশন ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাজে লাগিয়ে ক্লাইমেট ক্লাবের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনে জার্মানি ও চিলি আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের জলবায়ু ক্লাব নেতাদের সভায় বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন আরও বেশি দ্রুত ও টেকসই উপায়ে হ্রাস এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমাতে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-শূন্যে পৌঁছানোর জন্য উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করতে ব্যাপক আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।

তিনি বিশেষ করে উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে প্রমাণিত কম নির্গমন প্রযুক্তি প্রদর্শন ও স্থাপন করার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক ডিকার্বনাইজেশন প্রযুক্তির জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রিম বিনিয়োগের প্রয়োজন। অর্থায়নের সীমিত সুযোগ রয়েছে এমন দেশ বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো সবচেয়ে দুর্বল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ ধরনের অধিক মূলধন বিনিয়োগ করা শিল্পের জন্য একটি বাধা হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের মতো উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের শিল্পের জন্য রেয়াতি অর্থের সুযোগ লাভকে উৎসাহিত করে শিল্প ডিকার্বনাইজেশনের ক্ষেত্রে অর্থায়নের জন্য আর্থিক ব্যবস্থার বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তির আর্টিকেল ৬.৮ এর অধীনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

আমদানিতে সুষম কার্বন খরচ আরোপ করে একটি সুষম ক্ষেত্র তৈরি করতে কার্বন মূল্য নির্ধারণ বা সীমা সমন্বয় করের ওপর আন্তর্জাতিক চুক্তির ওপর জোর দিয়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে (এলডিসি) তাদের বিশেষ পরিস্থিতি ও উন্নয়ন চাহিদার প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকারমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে।

শিল্পের ডিকার্বনাইজেশন সম্পর্কে তিনি বলেন, কার্বন নির্গমন বিশ্বব্যাপী স্বল্প-কার্বন প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্ভাবনের জন্য প্রণোদনা কমিয়ে দিতে পারে, কারণ কিছু খাত টেকসই ব্যবস্থা অনুশীলনের তুলনায় ব্যয়কে অগ্রাধিকার দিতে পারে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, এসব ঝুঁকি প্রশমিত করার জন্য, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সাথে ডিকার্বনাইজেশন প্রচেষ্টার ভারসাম্য বজায় রাখতে কার্বন সীমা সমন্বয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মতো নীতিগুলি অপরিহার্য।

অন্যদিকে, এসব নীতি বাংলাদেশের মতো বিশেষভাবে দুর্বল উন্নয়নশীল দেশের কোম্পানিগুলির প্রতিযোগিতামূলকতাকে প্রভাবিত করতে পারে। অধিক নির্গমন নীতির কারণে উচ্চ উৎপাদন খরচের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী তাদের কম প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, ‘অতএব, স্বল্পোন্নত দেশগুলির জন্য তাদের বিশেষ পরিস্থিতি ও উন্নয়ন চাহিদার কারণে অগ্রাধিকারমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে। ’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খণ্ডিত উপায়ে উচ্চাভিলাষী প্রশমন নীতিগুলো শিল্প কর্মকাণ্ডকে এমন অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কার্বন মূল্যের কোনো নীতি নেই বা কম কঠোর, যা কার্বন নির্গমনের দিকে ধাবিত করে এবং এইভাবে সামগ্রিক বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন হ্রাসের বৈশ্বিক লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

তিনি বলেন, ইইউ প্রস্তাবিত কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম) রপ্তানিকৃত পণ্যগুলোতে নির্গমনের মান পরোক্ষভাবে প্রয়োগ করে এবং কার্বন নির্গমন প্রতিরোধ করে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু নীতি শক্তিশালী করতে উৎসাহিত করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনকে সমর্থন করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ও উদীয়মান বাজারে নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা গত দুদিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অন্তত ২০ জন সেনাকে হত্যা করেছে।

গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে নিপীড়নমূলক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে, তার প্রতিশোধ হিসেবে হামাসের যোদ্ধারা এই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজার উত্তরাঞ্চলে দিনের শুরুতেই পাঁচজন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। খবর পার্সটুডে।

এর আগের দিন রোববার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা অঞ্চলে আরও ১৫ জন ইসরায়েলি সেনার প্রাণহানি ঘটে। তবে ইসরায়েল সরকার চারজন স্টাফ সার্জেন্ট সেনা সদস্য নিহতের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

হামাসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে গুণগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, যা ইসরায়েলের ব্যর্থতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত আমাদের আক্রমণের মুখে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তাদের যুদ্ধযান ধ্বংস হচ্ছে এবং তাদের কোনো লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে আরও চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। গাজায় হামলার পর থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা এটি এখন পর্যন্ত।

সোমবার (১২ নভেম্বর) আরব লিগ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া এক ভাষণে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, সৌদি আরব তা তীব্রভাবে নিন্দা জানায় এবং এ হামলাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলের হামলার সমালোচনা করে সৌদি যুবরাজ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলকে ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানাতে বাধ্য করা। তেহরানের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক উন্নতির ইঙ্গিত দিয়ে তিনি ইসরায়েলকে ইরানে হামলা না চালাতে সাবধান করেন।

সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য নেতারা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

এদিকে ইসরায়েলকে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করার দায়ে অভিযুক্ত করে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারা ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা’।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মধ্য দিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে, হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় একটি সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত চলমান এই অভিযানে গাজায় ৪৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় বিগত ছয় মাসের সময়কালে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।

গাজায় অবস্থানরত জাতিসংঘের কর্মী এবং ত্রাণ সহায়তার ওপর ইসরায়েলের অনবরত আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানান সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা।

সম্মেলনে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি সহ ইসলামি বিশ্ব নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

খেলাধুলা

গতানুগতিক প্রথার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ভিন্নতা আনতে চাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বিপিএলের নতুন আসর।

বিগত আসরগুলো অসন্তোষের কমতি ছিল না। তবে এবার তেমনটা হবে না বলে আশা করছেন ফারুক।
নতুনত্ব নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন একটা সরকার পেয়েছি। আমরা চেষ্টা করেছি, এর আগে যে ১০টা বিপিএল এসেছে, সেসবের চেয়ে আলাদা করার জন্য। অনেক পরিকল্পনা করেছি। আশা করি, খুব ভালো টুর্নামেন্ট হবে। আমার মনে হয়, সেটা সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে, আপনারা সবাই বিপিএল উপভোগ করবেন। ’

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে নিয়মিতই। তাছাড়া ব্রডকাস্টিং ইস্যুতে আছেই।

সেসব নিয়ে ফারুক বলেন, ‘ডিজিটাল রাইটস যাদের আছে, আমরা তাদের বলেছি, ডিজিটাল পেরিমিটার বোর্ড চাই আমরা। টিভি প্রোডাকশনকে বলেছি, টিভিতে যারা খেলা দেখাবেন এবং প্রোডাকশন— দুটোই যেন অত্যন্ত চমৎকার হয়। হক-আই, ডিআরএস— এগুলো সবই থাকবে। আম্পায়ারিং আমরা খুব উন্নত করার চেষ্টা করছি। বিদেশি আম্পায়ার থাকবে। আপনারা জানেন, ধারাভাষ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মানটা উন্নত করতে আমরা অনেক চেষ্টা করছি। বড় নাম (তারকা ধারাভাষ্যকার) আনতে প্রোডাকশনের সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি। সব বিবেচনা করেই আমার মনে হয় ভালো বিপিএল হতে যাচ্ছে। ’

১২ বছরের বেশি পার হয়ে গেলেও বিপিএল সফল টুর্নামেন্টে রূপ নিতে পারেনি। কোনো না কোনো ইস্যু থাকেই। তবে সামনে আরও বড় পরিসরে পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ফারুক।

তিনি বলেন, ‘১০টা বিপিএল চলে গেল, আমরা এখনো একটা নিখুঁত ভিতের ওপর দাঁড়াতে পারিনি। এই বিপিএল আমাদের এই চক্রে শেষ টুর্নামেন্ট। আমরা পরের বছর থেকে আরও বড় পরিকল্পনা করব, লম্বা সময়ের জন্য দেব দলগুলোকে। তবে এখন আমি দলগুলোকে বলব, আপনারা নিজেদের বিদেশি খেলোয়াড়, কখন অনুশীলন শুরু করবেন— সব যেন ঠিকঠাকমতো করে ফেলতে পারেন। ’

টিকিট কেনা-বেচার প্রক্রিয়া নিয়ে ফারুক বলেন, ‘এবার আমরা চেষ্টা করছি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য। যেন সবাই সবার সুবিধামতো টিকিট কিনে খেলা উপভোগ করতে পারেন। আপনারা জানেন, আমরা তিনটি ভেন্যুতে (বিপিএল) করেছি। ঢাকায় শুরু করে আমরা যাব সিলেটে, ওখান থেকে আমরা যাব চিটাগং, তারপর আবার ঢাকায় এসে শেষ রাউন্ড খেলব। যারা খেলা দেখতে ইচ্ছুক, মোবাইল ফোন এবং অনেক অ্যাপস দিয়ে আপনারা ডিজিটাল টিকিটগুলো কিনে ফেলতে পারবেন। ওই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, আমাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এই মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। ’

এবারের বিপিএল নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সে এবার আমরা যে অলিম্পিক দেখলাম, ২০১৪ বা ২০১৬ সালে এক বক্তব্যে অলিম্পিকটি পেতে সাহায্য করেছিলেন। উনি এত বড় বড় জায়গায় কাজ করেছেন, আমাদের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাকে অনুরোধ করেছেন, উনি দেশের বাইরে এত সাহায্য করেছেন, বিপিএলকে আরও কতটুকু সম্পৃক্ত করা যায়। ’

‘আমরা চেষ্টা করেছি ওনার চমৎকার কিছু ভাবনা এই বিপিএলে সংযুক্ত করতে। আমরা চেষ্টা করছি, গ্যালারি যেন নোংরা না হয়, পানির কিছু কর্নার থাকবে। সেই কর্নারে আপনারা পানি পাবেন। এটার একটা নাম থাকবে, বিপিএল শুরু হলে দেখতে পাবেন। পানিটা আমরা বিনামূল্যে দেওয়ার চেষ্টা করব। স্টেডিয়ামের ভেতরেও আমরা চেষ্টা করছি জিরো ওয়েস্টজোন গ্যালারি রাখতে। চেষ্টা করব সবকিছু পরিষ্কার রাখতে। ’