জাতীয়

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নামে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে এবং সেসব প্রোফাইল থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সেনাবাহিনী প্রধানের নিজস্ব কোনো ফেসবুক প্রোফাইল বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নেই এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের কোনো অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করার পরিকল্পনা নেই।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নামে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া প্রোফাইল খোলা হয়েছে এবং সে সকল প্রোফাইল থেকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমতাবস্থায়, জনসাধারণ ও গণমাধ্যমকে এ ধরনের ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো।

এ ধরনের বিভ্রান্তমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি।

একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ”
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিমিয় সভায় এ মন্তব্য করেন জি এম কাদের। মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা মামলা প্রত্যাহারের পর বুধবার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমার এবং আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। ”

তিনি বলেন, “একজন দোষীকে শাস্তি দিতে দশজন নিরাপদ মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে। বাড়িঘর ও অফিসে আগুন দিয়ে, মামলা-হামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বর্তমান সরকারের অপকর্মের বিরোধিতা করছি, ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলছি। সরকারের জুলুম নির্যাতনের ভয়ে আমরা থেমে যাব না। ”

সম্প্রতি লাঙ্গল প্রতীক চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে জাতীয় পার্টির আরেক অংশ। সেই প্রসঙ্গ টেনে জি এম কাদের বলেন, “আমাদের লাঙ্গল অন্য কাউকে দিতে চাইলে আমরা রাজপথে আন্দোলন করব। যারা ভূমিকা রাখতে পারবে তারাই জাতীয় পার্টির প্রকৃত নেতা। ”

রাজনীতি

তৈরি করা নির্বাচনের পাঁয়তারা চলছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা ইলেকশন চাই, সিলেকশন চাই না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যেতে চায়।

কিন্তু তার আগে নির্বাচনের যে বিষয়গুলো প্রয়োজন তা করতে হবে বলেও যোগ করে এ জামায়াত নেতা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত মিছিল পূর্ব বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং এর আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়তের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিতে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সেলিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি রেজাউল করিম।

আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনের তফসিলকে শুধুমাত্র একটি দল স্বাগত জানিয়ে এটাই বোঝা যায় এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

সংস্কার অবশ্যই আগামী নির্বাচনের আগে হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি পরবর্তী সরকার দেবে। তাহলে এ সরকারের তো কোনো আইনগত ভিত্তি থাকে না।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বলছেন আমরা পিআর বুঝি না। তবে গতকালকে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে দেখলাম দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন চায়। তাহলে তারা কীভাবে বুঝলো। তাহলে আপনি বুঝেন না এাট ঠিক, নাকি না বোঝার ভান করেন এটা ঠিক।

তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে এসেছি আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে। আর গণতন্ত্রের মূল বক্তব্য হচ্ছে অধিকাংশ জনগণের মতকে প্রাধান্য দেওয়া। আর দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে। আপনাদের বিরোধিতার কোনো অধিকার নেই।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। আর একটা ওয়ান ইলেভেনের দিকে নিয়ে যাবেন না।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কেন আমাদের কথা বলতে হচ্ছে। আমরা কোথাও কোথাও দেখতে পাচ্ছি আগে কোনো কোনো সরকারি অফিস একটি দলের অফিসে পরিণত হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি বলছেন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা। আপনি এখনো সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারেননি।

তিনি বলেন, আপনাদের ভুলে গেলে চলবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বুক পেতে দিয়েছে দেশের জনগণ। জনগণের আন্দোলনের দাবি নিরপেক্ষ নির্বাচন হতেই হবে। জামায়াতের এ দাবি, এটি জনগণের দাবি।

জাতীয়

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় দু’দিনে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিএনপির ১৪ ইউনিয়নের সম্মেলন হয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার দিনব্যাপী এসব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—ঢালুয়া ইউনিয়নের ঢালুয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেসাখাল ইউনিয়নের দায়েমছাতি উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের বাঙ্গড্ডা ফাজিল মাদরাসা।

মঙ্গলবার বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলী ইউনিয়নের বটতলী এম এ মতিন উচ্চ বিদ্যালয় ও বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদরাসা ও বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জোড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোড্ডা বাজার সিদ্দিকীয়া আলিম মাদরাসা, এবং জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের দুয়ারিয়া জামিউল উলূম কওমী মাদরাসা।

পূর্বঘোষণা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে স্কুলে এসে মাঠে সম্মেলনের মঞ্চ ও শত শত নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখে হতবাক হয়। পরে কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করে। কিছু প্রতিষ্ঠানে মাইকের উচ্চ শব্দ উপেক্ষা করে কয়েক ঘণ্টা পাঠদান চললেও শেষ পর্যন্ত সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপি নাঙ্গলকোটের ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ ইউনিয়নের সম্মেলন ১২ ও ১৩ আগস্ট করার ঘোষণা দেয়।

ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম দিন ৭ ইউনিয়ন এবং পরদিন ৭ ইউনিয়নের সম্মেলন হয়। এর মধ্যে দৌলখাঁড়, আদ্রা উত্তর, রায়কোট দক্ষিণ ও পেরিয়া ইউনিয়নের সম্মেলন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। মৌকরা ও সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সম্মেলন জেলা বিএনপি স্থগিত করে। বাকি ১০ ইউনিয়নের সম্মেলন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হওয়ায় মোট ১৫টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ব্যাহত হয়।

বাঙ্গড্ডা ফাজিল মাদরাসার আলিম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস শুরুর কিছুক্ষণ পর বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে স্লোগান শুরু করেন। পরে শিক্ষকরা ছুটি দেন। পড়াশোনার সময় রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। চাইলে খালি মাঠ বা ছুটির পর অনুষ্ঠান করতে পারতো।

জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেফায়েত উল্লাহ বলেন, মাইকের শব্দ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক নজির আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এভাবে সম্মেলন আয়োজন দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম করার বিধান নেই। যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানাব।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিন সরকার বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যৌন সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ অব্যাহত থাকলে আগামী বছর তাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘের কালো তালিকায় উঠতে পারে।

নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বন্দিদের যৌনাঙ্গে সহিংসতা, জোরপূর্বক নগ্ন করে রাখা ও অপমানজনক পোশাক তল্লাশির অভিযোগ রয়েছে।

পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার না থাকায় পূর্ণাঙ্গ যাচাই কঠিন হলেও এসব কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ, নিরপেক্ষ তদন্ত ও সেনাদের জন্য স্পষ্ট আচরণবিধি প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে সিদে তেইমান কারাগারে এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নয়জন ইসরায়েলি সেনাকে আটক করা হয়। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দানি দানন বলেন, দাবি ভিত্তিহীন এবং জাতিসংঘের উচিত হামাসের অপরাধে মনোযোগ দেওয়া।

রাজনীতি

জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশের বিষয়ে দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাবর নিন্দা ও প্রতিবাদপত্র দিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে মোদী বরাবর ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় এ চিঠি দেওয়া হয়।

এর আগে জাগপা সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বেলা ১১টায় চিঠি স্বাক্ষর করার পর আসাদ গেটে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্দেশ্যে রওনা করে।

প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর জাগপার আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু। তারা হাইকমিশনে পৌঁছালে কোনো কর্মকর্তা সামনে না এসে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার তালাত মাহমুদ শাহান শাহের মাধ্যমে চিঠি গ্রহণ করেন।

চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সম্বোধন করে বলা হয়, ভারতের জনগণকে ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

‘আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যাত্রা শুরু করে, যখন ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের সম্পদ লুট করে। শুরু থেকেই ভারত বাংলাদেশকে একটি করদ রাজ্য হিসেবে দেখতে চেয়েছিল, যা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ’

চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভারত দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করেছে। অবৈধভাবে ভারত বাংলাদেশের কিছু অংশ দখল করে রেখেছে। উপরন্তু, ভারত তার নিজেদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট রুট ও করিডোর ব্যবহার করেছে। এসব কিছুর ওপরে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী অননুমোদিতভাবে বাংলাদেশের প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করেছে—এটি একটি অনৈতিক কাজ যা আপনার দেশের জন্য লজ্জাজনক।

ভার সরকার বারবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে কারসাজিও আছে, ফলশ্রুতিতে যা ভারতের স্বার্থকেই রক্ষা করেছে। অবৈধ প্রভাব এবং গোপন কার্যক্রমের মাধ্যমে ভারত আমাদের রাজনৈতিক, শিল্প, সাংস্কৃতিক এবং গণমাধ্যম খাতকে ব্যবহার করেছে।

একইসঙ্গে, সীমান্তে চলমান অবৈধ পুশ-ইন এবং বছরের পর বছর পাখির মতো বাংলাদেশিদের হত্যা অগ্রহণযোগ্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ভারতের আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে, ভারত শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা ও আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এটি আরও তীব্র হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, যার বর্তমানে কোনো বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত।

‘আমি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে, শেখ হাসিনাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ভারতের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, যিনি একজন স্বৈরশাসক ও গণহত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত। বাংলাদেশের জনগণ দেশের মাটিতে তার বিচারের অপেক্ষায় আছে। তাই, আমরা দাবি জানাচ্ছি ভারত সরকার দ্রুত শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের ফিরিয়ে দিক, যারা আপনার দেশের সরকারি সুরক্ষা এবং ভারতীয় করদাতাদের খরচে অবৈধভাবে বসবাস করছে। ’

চিঠিতে বলা হয়, প্রতিবেশীদের মধ্যে সুসম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে, ভারতের উচিত আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দ্রষ্টব্য: আমরা প্রতিবেশী, শত্রু নই।

আন্তর্জাতিক
জাতীয়
খেলাধুলা

গত মে মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এক জয়ে আইসিসির ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে নবম স্থানে উঠেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

কিন্তু গতকাল ১২ আগস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পাকিস্তানের সিরিজ হারে বিপদে পড়েছে টাইগাররা। গতকাল পাকিস্তানকে ৯২ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ২০২ রানের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় উইন্ডিজ।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ বছর পর সিরিজ জয়ে ক্যারিবীয়দের র‌্যাংকিংয়ে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ১০ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। যে কারণে ২০২৭ সালে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে টাইগাররা।

২০২৭ সালের বিশ্বকাপে ১৪টি দল অংশ নেবে। র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ ৮ দল এবং আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে স্বাগতিক কোটায় সরাসরি সুযোগ পাবে। বর্তমানে প্রোটিয়ারা র‌্যাংকিংয়ে ছয়ে থাকায় বাংলাদেশ ৯ নম্বরে থাকলেও সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে পারত। কিন্তু এখন ১০ নম্বরে নেমে যাওয়ায় সেই সুযোগ হারিয়েছে।

সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার জন্য ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ র‌্যাংকিং বিবেচনা করা হবে। র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি করতে বাংলাদেশ পাচ্ছে ২৬টি ওয়ানডে ম্যাচ। এর মধ্যে ১১টি এমন দলের বিপক্ষে, যারা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। এসব ম্যাচে জিতলে র‌্যাংকিং উন্নতি হবে সামান্য, কিন্তু হারলে ক্ষতি হবে অনেক।

গত কয়েক বছরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ধারাবাহিক নয়। তামিম ইকবালের অধীনে দুই বছর আগে ৩৫ ম্যাচে ২১ জয় পাওয়া দলটি শেষ দুই বছরে ৩৪ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ৯টি।

নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ; দলকে আবার প্রতিযোগিতামূলক জায়গায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে বিশ্বকাপে বাছাইপর্বে খেলতে হবে বাংলাদেশকে।

জাতীয়

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ছয় ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে বুধবার (১৩ আগস্ট) দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।

যাদের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ড.আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার।

ব্যাংক হিসাব তলবের তালিকায় সাবেক ডেপুটি গভর্নররা হলেন, এস কে সুর চৌধুরী, মো. মাসুদ বিশ্বাস, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের। এদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। মো. মাসুদ বিশ্বাস বিএফআইইউর প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। আবু হেনা মো. রাজী হাসান দীর্ঘদিন বিএফআইইউ’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. আতিউর রহমানকে আর দেশে দেখা যায়নি। ধারণা করা হয় তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন। ফজলে কবির দায়িত্ব শেষে দেশেই ছিলেন বলে জানা গেছে।

একমাত্র গভর্নর ফজলে কবির, যার জন্য আইন পরিবর্তন করে অতিরিক্ত মেয়াদে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়। তার অবসরের পর দায়িত্বে আসেন আব্দুর রউফ তালুকদার। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় গত বছরের ৭ আগস্ট ই-মেইলে পদত্যাগ করেন। তিনি এক বছর ধরে দেশেই গাঁ ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।

বিএফআইইউ-এর চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ, কেওয়াইসি ফরসহ সব তথ্য আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতেবলা হয়েছে। যদি কোনো হিসাব বন্ধ হয়ে থাকে, সেটির তথ্যও জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরআর্থিক কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সাবেক সরকারের সময়ে টাকা পাচারের বিভিন্ন ঘটনার। তদন্ত চলছে ক্ষমতার অপব্যবহার, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক সরকারের সময়ের তিন গভর্নর ও ছয় গভর্নরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হতে পারে।