অর্থনীতি

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, এখন চালের মান অনেক ভালো। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা খোঁজ নিয়েছি, যে চাল বাজারে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়- তা ওএমএসে ৩০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে, আবার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে সেই চাল ১৫ টাকায় পাওয়া যাবে।

বুধবার বিকালে সাড়ে ফেনী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, খারাপ মানের জিনিস কিন্তু দেওয়া হয় না। এক সময় রেশনের চাল রান্না করলে অনেক গন্ধ বের হতো। আগে চালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধপত্র দেওয়া হতো, এখন সেদিন চলে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের ২২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ২০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি রয়েছে চাল। আমন ফসল ভালো হলে আমদানিও খুব বেশি করতে হবে না।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ১৭ আগস্ট খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। গত বছর পর্যন্ত এ কর্মসূচিতে পাঁচ মাস ৫০ লাখ পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এবার এটি সম্প্রসারিত করে ৫৫ লাখ পরিবার ও ছয়মাস করা হয়েছে। তার মধ্যে আগস্ট থেকে নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে চাল দেওয়া হবে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সাধারণত আমন ফসল আসে, সেজন্য মাঝে এ দুমাস বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাও সচেষ্ট রয়েছেন।

জাতীয়

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করে ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’ ভেস্তে গেছে। যদিও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধাপে ধাপে ছিল ভয়াবহ সব নাশকতার ছক। দেশবিরোধী এসব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল দেশপ্রেমিক পেশাদার কর্মকর্তা।

এই টিমে সেনা ও পুলিশ বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত টিম নানাভাবে রাত-দিন কাজ করেছে। এর ফলে এখন বলা যায়, ষড়যন্ত্রকারীদের প্রথমদফার অপতৎপরতার ছক একে একে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তারা বসেও নেই। ফেব্রুয়ারিতে হতে যাওয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাতে দেশে ফিরতে না পারেন সেজন্য দ্বিতীয় ধাপের ষড়যন্ত্রের ছক হাতে নিয়েছে। যা অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে চায়। পুলিশের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

যেভাবে সক্রিয় হচ্ছে প্ল্যান-২: নির্ভরযোগ্য সূত্রের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারকে ফেলে দিতে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা-২ সক্রিয় করা হচ্ছে। যার প্রধান টার্গেট অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। ৩ মাসজুড়ে সক্রিয় থাকবে। এর আগে সরকারকে অচল করে দিতে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিশেষ কিছু কার্যক্রম শুরু হবে।

এসব গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ বেশ কয়েকজন।

অফিশিয়ালি বসে কাজের সমন্বয় করতে ইতোমধ্যে কলকাতা ও দিল্লিতে আওয়ামী লীগের পৃথক গোপন অফিসও খোলা হয়েছে। সেখানে তারা ৫ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করেছেন। এ চক্রের কাজে সহায়তা দিতে বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নেপথ্যে থেকে সক্রিয়ভাবে রসদ জোগাচ্ছেন।

ষড়যন্ত্রকারীদের থ্রি টার্গেট: এ চক্রের প্রধান টার্গেট বা লক্ষ্য তিনটি। এক. আগামী জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল করে দেওয়া, দুই. যে কোনো উপায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা প্রতিরোধ করা এবং তিন. একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে দেশকে এমন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া-যাতে সৃষ্ট প্রতিবিপ্লবের অগ্নিগর্ভ পরিবেশে শেখ হাসিনা ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই দেশে ফিরে আসতে পারেন।

কেন এই টার্গেট: আওয়ামী লীগের পলাতক নীতিনির্ধারক মহলের বদ্ধমূল ধারণা-টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে তারা ভয়াবহ যেসব অপরাধ করেছেন, তার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে মাঠের রাজনীতিতে পাকাপোক্তভাবে ফিরে আসা সহজ হবে না। ফের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এজন্য তারা উলটো পথে শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই ক্ষমতায় বসাতে মরিয়া। এজন্য যা যা করার তারা সেটিই করতে চান।

এখন কী করবে আওয়ামী লীগ: প্রথমদফার ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের মাস্টারমাইন্ডরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তার অনেক কিছুতে তারা সাফল্যও পেয়েছেন। এখন তারা প্রথমদফার সফলতা ও ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে এবার আরও নিখুঁত অ্যাকশন প্ল্যান সাজাতে চান।

সূত্রমতে, তাদের প্রথম দফার অ্যাকশন প্ল্যানে সফলতার মধ্যে রয়েছে-বিপ্লবী সরকার গঠন হতে না দেওয়া, গণ-অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থাকা সমন্বয়কদের অনেকের মধ্যে বিভেদ ও সন্দেহ সৃষ্টি করা, একাধিক গ্রুপে বিভক্ত করে ফেলা, নানা পদ্ধতিতে বিতর্কিত করা, রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি, একে অপরকে প্রতিপক্ষ বানানো, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অপেক্ষাকৃত কম বিতর্কিতদের গণ-অভ্যুত্থানের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটানো, আওয়ামী লীগ যেসব ভুল করে ক্ষমতা ছাড়া হয়েছে সেসব ভুলের পথে বিএনপিকে ঠেলে দেওয়া, প্রশাসনের সর্বস্তরে নীরব আওয়ামীপন্থিদের বিশেষ পন্থায় কাজে লাগানো এবং একই ভাবে ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কালচারাল সেক্টরে টিকে যাওয়া চতুর সাইলেন্ট গ্রুপকে ধীরে ধীরে সক্রিয় করে তোলা।

যেভাবে অকার্যকর হলো ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’: চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ভয়াবহ পতন হওয়ার পর পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়া নেতৃত্ব খুব ধীরস্থিরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। যে কারণে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার প্রথমদিন থেকেই তারা বিভিন্ন মাত্রার ‘ষড়যন্ত্র মিসাইল’ নিক্ষেপ শুরু করে।

গত এক বছরে নানাভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আওয়ামী দোসরদের সহায়তায় অন্তর্ঘাতমূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কোনোটি সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছে, কোনোটি আঁচ করতেও পারেনি। মূলত এভাবে তারা ছয় মাস আগে বছরপূর্তির আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে সরকার উৎখাতের চূড়ান্ত রূপরেখা প্রস্তুত করে। যার অলিখিত নাম দেওয়া হয় ‘আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান’। অর্থাৎ একযোগে আঘাতটা এমনভাবে করতে হবে, যাতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। আর ওই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেশে ফেরানো নিশ্চিত করা।

পুলিশের দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ সূত্র যুগান্তরকে এ প্রসঙ্গে জানান, ‘দেখুন-মানুষ যত পরিকল্পনা করুক না কেন, আল্লাহ মহাপরিকল্পনাকারী। এ কারণে অবিশ্বাস্যভাবে ২০২৪ সালের বর্ষাবিপ্লবে ৫ আগস্ট আল্লাহর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। শেখ হাসিনাকে কিভাবে পালাতে হয়েছে তা সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। রুমের এসি পর্যন্ত বন্ধ করার সময় পাননি। রান্না করা খবারও খেতে পারেননি। গুছিয়ে নেওয়া সবকটি স্যুটকেসও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, ভয়াবহ পতন হলেও আওয়ামী লীগ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে না। তারা সরকার উৎখাতে নানারকম ধ্বংসাত্মক পথে এগোবেই। সেজন্য আমরা বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার শুরু থেকেই এ বিষয়ে অ্যালার্ট ছিলাম। আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্বস্ত অনেকে যুক্ত ছিলেন এবং এখনো আছেন। কখনো আলাদাভাবে আবার কখনো সমন্বয় করে কাজ করেছি। কেউ কারও সোর্স ওপেন করিনি। উদ্দেশ্য ছিল-দেশকে রক্ষা করা। সবার আগে দেশ। এত মানুষ এভাবে জীবন দিয়ে গেছে। ওদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা এই বাংলাদেশ ভোগ করছি। ফলে এতটুকু বলতে পারি, নানামুখী প্রচেষ্টার একপর্যায়ে আমরা শত্রুপক্ষের ঘরের মধ্যে বিশ্বস্ত সোর্স যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি এবং সেখান থেকে পাওয়া তথ্যগুলো বারবার বিভিন্ন পন্থায় ক্রসচেক করেছি। এরপর সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সমন্বয় করে আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকরভাবে নিতে পেরেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে সূত্রটি বলে, ‘পালিয়ে থাকা রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কিছুসংখ্যক লোকের মধ্যে অপরাধবোধ এবং অনুশোচনা কাজ করছে। কেউ কেউ রাজসাক্ষীও হতে চান। ধরে নিতে পারেন, এই শ্রেণির অনেকে সতর্কভাবে সহযোগিতা করায় আমরা ফ্যাসিস্টদের সরকার উৎখাতের প্রথম দফার ষড়যন্ত্র অকার্যকর করে দিতে পেরেছি বলে আপাতত মনে করছি।’

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের অংশ হিসাবে পুলিশসহ জনগণকে কিছুটা সতর্ক করতে ২৮ জুলাই পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। যেখানে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়। আসলে এই চিঠিটি প্রকাশ্যে আনার উদ্দেশ্য ছিল-শত্রুপক্ষকে ভিন্ন একটি বার্তা দেওয়া। যদিও এর অনেক আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ষড়যন্ত্রের অনেক কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ হয়তো পুলিশের ব্যর্থতা তালাশ করে। কিন্তু অনেকে জানেনই না, ষড়যন্ত্র ও অপরাধ প্রতিরোধ করতে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা গোপনে কিভাবে রাত-দিন কাজ করেন।

এখন যাদের গুরুদায়িত্ব

সূত্রটি জানায়, জাতীয় নির্বাচন হবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে। তফশিল ডিসেম্বরে। দেশ এখন নির্বাচনের ট্রেনে উঠে গেছে। এটাও সত্য। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। মনে রাখতে হবে, সুযোগ পেলে ষড়যন্ত্রকারীরা যে কোনো সময় সক্রিয় হবে। পালটা আঘাত করবে। ফলে পুলিশ মনে করে, এখন নির্বাচন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং একটি ভালো নির্বাচন সম্পন্ন করতে হলে সবচেয়ে বড় দায় এবং দায়িত্ব হলো গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা সব রাজনীতিবিদের। বিশেষ করে বিএনপির মতো বড় দলের জন্য গুরুদায়িত্ব তো বটেই।

তিনি বলেন, সবাই জানে নির্বাচন হলে ফলাফল কী হতে পারে, কারা ক্ষমতায় আসবে। এটা তো প্রশাসনের লোকজন জানে। ফলে যদি সবাই বুঝতে পারে-বিএনপি সরকার গঠন করবে, তাহলে বিএনপির লোকজন এখন কোথাও কোনো অপরাধ করলে পুলিশ তো সেভাবে অ্যাক্ট করবে না। তারা ভাববে আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা। এরাই তো দুদিন পর ক্ষমতায় আসবে। এছাড়া পুলিশ এখনো ট্রমা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। এটিই চরম বাস্তবতা। সবাইকে এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। তাছাড়া আমাদের দেশের দীর্ঘদিনের রাজনীতির যে কালচার, তা তো ওভারনাইট পরিবর্তনও হবে না। তাই আগামী নির্বাচন যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি বিএনপির মতো বড় দলের জন্যও অনেক বড় কঠিন পরীক্ষা। খোলা চোখে যেটা দেখা যায়, সেটাই আসল চিত্র নয়। দলের কেউ চাঁদাবাজি করলে শুধু বহিষ্কার কোনো সমাধান হবে না, আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের মতো বিএনপিকে আগাম প্রতিরোধমূলক পথে কাজ করতে হবে। অনেক বড় দল হওয়ায় দায়িত্বও বড়। এছাড়া এবার যেহেতু ভোট শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে-সেহেতু বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ সব দলকেও সরকারকে এখন থেকে সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে।

পুলিশের এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেন, আরও একটি বড় দায়িত্ব এখন গণমাধ্যমের। নিউ মিডিয়ার যুগে এখন তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেখবর আর গুজবের ছড়াছড়ি অবস্থা, সেখানে মেইনস্টিমের গণমাধ্যমকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অবশ্যই বেশির ভাগ সাংবাদিক সে কাজটি করে যাচ্ছেন। যে কারণে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।

তবে খেয়াল রাখতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য দেশকে ভালোবেসে শতভাগ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে যেন কোনো মিথ্যা বা অপতথ্য প্রকাশ না হয়ে যায়। তাহলে টিম স্পিরিট ধরে রাখা কঠিন হবে। অনেকে তো ষড়যন্ত্র করে ভালো অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে দিতে চাইবে। সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেষকথা হিসাবে তিনি বলেন, কোনোভাবে গণ-অভ্যুত্থানের ঐক্য বিনষ্ট করা যাবে না। এই ঐক্যই হলো এখন বড় শক্তি। নির্বাচন হবে। মানুষ যাকে খুশি ভোট দিয়ে তার নেতা নির্বাচন করবে। কিন্তু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল ও জনগণের ঐক্য বিনষ্ট হলে বিপদ যে কোনো মুহূর্তে ঘনীভূত হতে পারে।

জাতীয়

এস আলম গ্রুপের ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তির মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্রোক বা জব্দ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ইসলামী ব্যাংকের দায়ের করা একটি মামলায় চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত-১ এর বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।

এর আগে ২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ইসলামী ব্যাংক।

আদালত সূত্র জানায়, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের কাছ থেকে ২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানির জন্য এই ঋণ দেওয়া হয় এ কোম্পানিকে। এই ঋণ আদায়ে গত ১৮ জুন অর্থঋণ আদালতে ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। ঋণের টাকা উদ্ধারে ঝুঁকি থাকায় ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার ধানমন্ডি, মিরপুর ও গুলশানের বিভিন্ন স্থানে ৩০৬ শতক জমি ও সূত্রাপুরের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের নামে পূবালী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখায় চেকমূলে লিয়েন থাকা ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ক্রোক করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সবমিলিয়ে ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সম্পত্তি জব্দ করে রাখতে বলেন আদালত।

রাজনীতি

আসন্ন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রায়ে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় সমমনা জোট, এলডিপি ও লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আসছে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রায়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলের সিনিয়র নেতারা।

সমমনা দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার, সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

অর্থনীতি

বিদায়ি অর্থবছরের শেষ বা চতুর্থ প্রান্তিকে আগের বা তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে ১১ দশমকি ৯২ শতাংশ। যদিও সার্বিকভাবে রপ্তানি আয় বেড়েছে। ওই প্রান্তিকে রপ্তানি আয় কমার নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মীদের কর্মবিরতির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি। এতে রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত তৈরি পোশাক রপ্তানি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত জুন পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ি অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থাৎ এপ্রিল-জুনে দেশ থেকে ৯১১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি তার আগের প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চের তুলনায় ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ কম। গত এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাত বেশ কিছু গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে ছিল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন। যা ওই প্রান্তিকের রপ্তানি দক্ষতাকে দুর্বল করে দেয়। নীতিগত পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ (পরে কমে হয়েছে ২০ শতাংশ) অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ। তখন পর্যন্ত সেটি কার্যকর না হলেও বিদেশি ক্রেতারা রপ্তানির আদেশ স্থগিত করায় অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছিল।

মার্কিন প্রশাসন গত ৩১ জুলাই অন্য অনেক দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি পণ্যের অতিরিক্ত শুল্কের হার সংশোধন করে। এবারে বাংলাদেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক কমে ২০ শতাংশ হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হয়েছে। তাতে বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। কারণ, এ বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের মূল প্রতিযোগী ভিয়েতনামের অতিরিক্ত শুল্ক ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ভারতের ওপর পালটা শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। আর চীনের শুল্ক এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনবিআরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ধর্মঘটের কারণে শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় দেরি হয়, যা পণ্যের চালান প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। সময়মতো পণ্য পাঠানোকে উল্লে­খযোগ্যভাবে ব্যাহত করে। এদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রতিকূল পরিস্থিতি, দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদন ব্যয় ও রপ্তানি বাজারের বৈচিত্র্যহীনতার কারণেও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়।

এতে আরও বলা হয়, বিদায়ি অর্থবছরের এপ্রিল-জুন সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন কিছুটা কমেছে। এই প্রান্তিকে দেশ থেকে মোট ৯১১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে ৩৯৪ কোটি ডলারের কাঁচামাল আমদানি হয়। মূল্য সংযোজন দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের প্রান্তিকে মূল্য সংযোজন ছিল ৫৮ দশমিক ৯০ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক
জাতীয়

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গোটা সাংবাদিক সমাজ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স ও বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় না বিচার, আর এই দায়মুক্তির সংস্কৃতিই উৎসাহ দিচ্ছে নতুন হত্যাকাণ্ডকে। তারা তুহিন হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেন এবং সরকারকে হুঁশিয়ার করেন—এ বিচার না হলে সারা দেশে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবে।

জনকণ্ঠের প্ল্যানিং এডিটর জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘তুহিনের মতো একজন নির্ভীক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিককে যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু সাংবাদিক সমাজ নয়, পুরো জাতির জন্যই আতঙ্কের। আমরা বারবার বলেছি, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ছাড়া গণতন্ত্র রক্ষা অসম্ভব। আজ তুহিন, কাল আমরা—এবারই শেষবার!’

মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তুহিন হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি ধারাবাহিক দমন-পীড়নের অংশ। সাংবাদিকদের চাকরি হারানো, গুম হওয়া, এমনকি খুন হওয়া—এসব এখন নিত্যদিনের ঘটনা। আমরা আর চুপ থাকব না। সরকার যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেয়, তবে আন্দোলন অনিবার্য।’

জনকণ্ঠের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ইসরাফিল ফারাজি বলেন, ‘প্রতিটি হত্যার বিচারহীনতা নতুন হত্যার পথ খুলে দিচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই। তুহিন হত্যার বিচার হতেই হবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- জিআরইউর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক অন্তু মোজাহিদ (কালবেলা), হাসান মাহমুদ (দেশ টিভি), মাহমুদ হাসান ও তাওহিদ (নিউজ টুয়েন্টিফোর), আকরাম (কালবেলা), সাইমুন মুবির পল্লব (বাংলা নিউজ), সাইফুল ইসলাম (ঢাকা পোস্ট), রাজু আহমেদ (বার্তা টোয়েন্টিফোর), নাইম (যায়যায়দিন), সজল (ফেইস দ্য পিপল), আজহারুল ইসলাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), এবং সাদিয়া (ডেইলি ক্যাম্পাস)।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফখরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান।

রাজনীতি

চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা ফেসবুক লাইভে এসে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, নারী নেত্রীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে নোংরামি ও কুৎসা রটিয়ে তাদের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

লাইভে আবেগঘন কণ্ঠে লিজা বলেন, আমার দ্বারা আর রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি বোঝাতে পারব না চট্টগ্রামে মেয়েদের নিয়ে কতটা নোংরামি করা হয়, তাদের কতটা ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়। কে করে এসব? আমাদের নিজেদের মানুষই করে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে একসময় অনেক মেয়ে রাজনীতিতে ছিল। আজ তারা হারিয়ে গেছে। আজ আমাকে নিয়েও নোংরামি শুরু হয়ে গেছে। শুধু আমাকে মাইনাস করার জন্যই একের পর এক বাজে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে। আপনারা যারা বড় ভাই, যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, প্লিজ এসব বন্ধ করুন। মেয়েদের নিয়ে এই নোংরামি থামান।

নিজের বিদায়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিজা বলেন, চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে, তাদের চাওয়া-পাওয়ার কাছে আমাদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে। আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা অনেকেই হারিয়ে গেছেন। এখন বলতে গেলে কেউই আর নেই।

তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ভাই-ব্রাদার কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর একটা কোরাম বানিয়েছেন। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।

লাইভের পুরোটা জুড়েই লিজা ছিলেন স্পষ্ট ও সাহসী। ব্যক্তিগত কষ্ট এবং রাজনীতিতে নারীদের প্রতি বৈষম্যের বিষয়গুলো তিনি বারবার তুলে ধরেন। শেষ পর্যন্ত আবেগ সংবরণ না করে তিনি বলেন, আমার দ্বারা সত্যিই আর রাজনীতি করা সম্ভব নয়।

এই ঘটনার পর লিজার ফেসবুক পোস্ট এবং লাইভ ভিডিওতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই তার সাহসের প্রশংসা করছেন, আবার কেউ কেউ তীব্র সমালোচনাও করেছেন।

বিনোদন

মিস ওয়ার্ল্ড খেতাবজয়ী ঐশ্বরিয়া রাই রূপে ও অভিনয়গুণে সবার হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। পর্দায় ঐশ্বরিয়ার উপস্থিতি জাদুর মতো। ছিল ভক্তদের চোখ না সরানোর মতো মুহূর্ত।

যদিও অভিনেত্রীকে আগের মতো সিনেমায় দেখা যায় না। তবুও তার সাফল্যের গল্প থেমে থাকেনি। অভিনয়ের শুরু থেকে নিজের উপার্জনকে টেকসই বিনিয়োগে রূপান্তরিত করেছেন ঐশ্বরিয়া। বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছেন এক অবিশ্বাস্য মাইলফলকের দোরগোড়ায়।

ঐশ্বরিয়ার মোট সম্পত্তি এখন ১০০০ কোটি রুপির ঘরে; যা বাংলাদেশি মূল্যে প্রায় ১৩৮৮.৬ কোটি টাকা। পর্দার রানী ঐশ্বরিয়া যেন আসীন হচ্ছেন অর্থের সিংহাসনে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের অন্যতম ধনী অভিনেত্রী হতে চলেছেন ঐশ্বরিয়া। বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তারকাদের মধ্যে একজন তিনি। ঐশ্বরিয়া নাকি সিনেমা প্রতি প্রায় ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন।

এছাড়া অভিনয়ের পাশাপাশি, উচ্চ মানের ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে প্রমোট করার জন্য ৬ থেকে ৭ কোটি রুপি আয় করেন ঐশ্বরিয়া। এ শক্তিশালী ব্র্যান্ড প্রেজেন্স অভিনেত্রীকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করেছে। যার মাধ্যমে তার মোট সম্পত্তি ৯০০ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, অভিনয় এবং ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্ট ছাড়াও, ব্যবসার দুনিয়ায় পদার্পণ করেছেন বলিউডের এ বিউটি কুইন। নিজস্ব বুদ্ধিমান বিনিয়োগের কারণে, বলিউডের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী নারী হিসেবে পরিচিত ঐশ্বরিয়া।

এছাড়া রিয়েল এস্টেট ব্যবসার কথাও শোনা যায়। ঐশ্বরিয়া একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক। মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় একটি বিরাট বাংলোতে বসবাস করছেন ঐশ্বরিয়া। যার মূল্য ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া দুবাইয়ের একটা ভিলার মালিক অভিনেত্রী।

এদিকে বলিউডে পা রাখার সময়েই মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করেছিলেন ঐশ্বরিয়া। এখন সিনেমায় অভিনয়ের কাজ তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে শুরুর দিকে যে টাকা উপার্জন করেছিলেন। সেটাকে বিনিয়োগ করে বহুগুণ করে তোলার অঙ্কে এই অভিনেত্রী যে পাকা, সেটা বুঝতে কারও অসুবিধা হয় না। এ কারণে ঐশ্বরিয়ার মোট সম্পত্তি খুব শিগগির পৌঁছে যাবে ১০০০ কোটি টাকার ঘরে।

অর্থনীতি

জাপানের মানুষেরা সাধারণত দীর্ঘায়ু হন। সেই দীর্ঘায়ু মানুষের এক অনন্য প্রতিনিধি এহেন শিগোকো কাগাওয়া, যার বয়স এখন ১১৪ বছর। এ শতায়ু ২০২১ সালে মশাল দৌড়েও অংশ নিয়েছিলেন।

তিনি জানালেন, দীর্ঘায়ু হওয়ার রহস্যের কথা। তিনি ৮৬ বছর বয়স পর্যন্ত প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের ভূমিকা পালন করেছিলেন। এখনো দৈনিক সংবাদপত্র পড়েন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে।

বর্তমানে শিগোকো কাগাওয়া দেশের সবচেয়ে বেশি আয়ুসম্পন্ন মানুষ। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল— কী করে দীর্ঘায়ু হলেন তিনি? এর উত্তরে শিগোকো বলেন, আমি যখন চিকিৎসক ছিলাম, তখন তো এত গাড়ি-টাড়ি ছিল না, হেঁটেই এখান থেকে ওখান যেতে হতো। আর এ কারণেই হয়তো এত শক্তিশালী ও সুস্থ থাকতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমার এনার্জি আমার সবচেয়ে বড় অ্যাসেট। আমি যেখানে খুশি যেতাম, যা খুশি খেয়েছি, যা খুশি করেছি, স্বাধীন থেকেছি আগাগোড়া।

তবে তার জীবনযাপনের একটা রুটিন ছিল বলে জানান শিগোকো। দিনে তিনবার নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে খাবার খেয়েছেন। ঠিক সময়ে শুতে গেছেন, উঠেও পড়েছেন ঘড়ি ধরে। ফলে যা খুশি করে বেড়ালেও এক ছন্দোবদ্ধ জীবন ছিল তার। আর সে কারণেই হয়তো তিনি দীর্ঘায়ু হতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।

এর আগে জাপানে সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচার রেকর্ড ছিল মিয়োকো হিরোয়াসুর। মৃত্যুর আগে তিনিও জানিয়েছিলেন— স্বতঃস্ফূর্ত জীবনযাপন করে যাওয়াটাই তাকে দীর্ঘ জীবন দিয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত তিনিও কাগজ পড়েছেন, ছবি এঁকেছেন এবং তাস খেলেছেন। অর্থাৎ জীবনকে বেঁচে নিয়েছেন প্রাণভরে। আর এভাবে বেঁচে থাকাটাই হয়তো দীর্ঘ জীবন দিয়েছে তাকে। যেমন দিয়েছে শিগোকোকেও।