জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) যদি বেশি শর্ত দেয়, তবে বাংলাদেশ আর এই ঋণ নিতে আগ্রহী থাকবে না। কারণ আইএমএফের সব শর্ত মেনে ঋণ নিতে গেলে দেশের অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের জন্য অতিরিক্ত শর্ত চাপিয়ে দিলে বাংলাদেশ ঋণের চুক্তি থেকে সরে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাজেট বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। সেমিনারে কৃষি অর্থনীতিবিদরা সরকারের প্রতি কৃষি খাতে বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের আহ্বান জানান। তারা পোল্ট্রি খাতে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট হ্রাস, কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তি ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়ানোরও সুপারিশ করেন।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে চলেছে। এর প্রস্তুতি নিতে অর্থনীতির বেশ কিছু দুয়ার খুলে দিতে হচ্ছে। অনেক খাতে সংস্কার করতে হচ্ছে।

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে। এর আওতায় তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার ঋণ ছাড় করেছে আইএওমএফ। শর্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংস্থাটি ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড় করেনি। চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আগামী জুনে এক সঙ্গে ছাড় হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে ঋণের শর্তের বিষয়ে আইএমএফের সমঝোতা হয়নি। এ নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে।

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। পরিস্থিতি এমন যে, গোলা-কামান নিয়ে যুদ্ধে প্রস্তুত পারমাণবিক শক্তিধারী প্রতিবেশী দুই দেশ। তবে ভারত-পাকিস্তান এই দ্বন্দ্বের রয়েছে ৭৮ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস। শনিবার এক প্রতিবেদনে দুই ভূ-খণ্ডের সেই সংঘাতের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেছে আল-জাজিরা।

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে পাকিস্তান এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠের ভারতে বিভক্ত হয়। সেসময় থেকেই ‘ভূস্বর্গ’ খ্যাত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে হিন্দু রাজার শাসনাধীন কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৮ সালে প্রথম এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় সদ্য স্বাধীন ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

পাকিস্তান মূলত উত্তর ও পশ্চিম অংশ অর্থাৎ আজাদ কাশ্মীর, গিলগিট এবং বালতিস্তান নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে ভারতের নিয়ন্ত্রণে যায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশ। যার মধ্যে কাশ্মীর উপত্যকা এবং এর বৃহত্তম শহর শ্রীনগর, পাশাপাশি জম্মু এবং লাদাখও রয়েছে। কাশ্মীর স্বায়ত্তশাসিত থাকবে, এই অঞ্চলের নিজস্ব সংবিধান, পতাকা ও আইন থাকবে-এমন প্রতিশ্রুতিতে কাশ্মীরের হিন্দু রাজা হরি সিং ভারতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে চুক্তির অংশ হিসাবে নয়াদিল্লি প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ খাতের দায়িত্ব পালন করবে বলে ঠিক হয়। এই বিশেষ মর্যাদা ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা মোদি সরকার ২০১৯ সালে বাতিল করে দেয়।

কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান আরও দুটি যুদ্ধে লিপ্ত হয় ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালে। ২০০৩ সালে নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে এক হামলায় তিন দিনে ১৬৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতে জড়ানোর আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এছাড়াও ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে আমন্ত্রণ জানানোর পর দুই দেশ শান্তি আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে দেখা করায় সেই আশা ক্ষণস্থায়ী হয়।

২০১৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনীর ওপর এক মারাত্মক হামলা হয়, যার দায় স্বীকার করেছিল পাকিস্তানি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। এরপরই নরেন্দ্র মোদি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে নিজস্ব আইন নির্ধারণের উদ্যোগ নেন। বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর কাশ্মীর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ ছিল। মাঝেমধ্যে ফোন সিগন্যাল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া এবং বহু মানুষকে আটক করা হয়।

এরপর দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলার পর ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়। হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

অর্থনীতি

দেশে গ্রিন রেল পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে সরকার ৯৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ে এই ‘গ্রিন রেলওয়ে পরিবহন প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে আনুমানিক ব্যয় ৯৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ২০২৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই শেষ হবে।

মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ২৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি ৬৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিশ্বব্যাংকের আইডিএ থেকে প্রকল্প ঋণ হিসেবে নেওয়া হবে।

প্রকল্পটি সম্প্রতি একনেক সভায় অনুমোদন করা হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরের অধীনে কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন এবং ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) এবং তারপর সিজিপিওয়াই থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার বে টার্মিনাল এবং চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পর্যন্ত প্রকল্পটির অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বিশ্বব্যাংক থেকে পাওয়া অর্থ বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে স্টেশন ভবন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা, বিদ্যমান কার্যকরী ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা স্থানান্তরের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা, কমলাপুর স্টেশনে মাল্টিমডাল পরিবহন হাব তৈরির জন্য স্টেশন বিল্ডিং ইয়ার্ড পুর্ননির্মাণসহ প্রকল্পের জন্য ব্যয় করা হবে।

এছাড়াও, প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রামের গুডস পোর্ট ইয়ার্ড এবং বে টার্মিনাল পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপন এবং মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নত রেল সংযোগ স্থাপন।

বাসস’র সাথে আলাপকালে, পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির একটি সভা করে যেখানে পরিকল্পনা কমিশন কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের মূল ঋণ থেকে প্রকল্প প্রস্তুতিমূলক অগ্রিম (পিপিএ) হিসাবে ৬০ লক্ষ ডলার প্রদানে রাজি হয়েছে।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে, কমলাপুর এবং ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে ‘মাল্টিমডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’ নির্মাণের সুবিধার্থে বিদ্যমান পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধাগুলো স্থানান্তরসহ স্টেশন বিল্ডিং ইয়ার্ডগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হবে।

ফৌজদারহাট থেকে চট্টগ্রামের গুডস পোর্ট ইয়ার্ড এবং বে টার্মিনাল পর্যন্ত রেল সংযোগ উন্নয়নের জন্য একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হবে।

মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে মালবাহী লোকোমোটিভ, ত্রাণ ট্রেন এবং পরিবহনের ক্রয় এবং রেল সংযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন মূল প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে। গ্রিন রেল পরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে চালু হলে, কার্বন নির্গমন কম হবে যা পরিবেশ দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা বলেন, গ্রিন রেল পরিবহনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, রেলওয়ে অবকাঠামোর যথাযথ উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের পাশাপাশি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পরিষেবার মান উন্নত করা।

উন্নত রেল পরিবহন ব্যবস্থা সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করবে, পরিবহন খরচ বহুগুণ কমাবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে সহায়তা করবে এবং এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

এর আগে, বিশ্বব্যাংক ইস্যুকৃত এক পত্রে বলা হয়েছে, তারা মূল বিনিয়োগ প্রকল্পের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রকল্পের অর্থায়নের পরিকল্পনা করছে।

চলতি অর্থবছরের (২৫ অর্থবছর) জন্য সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে বিদেশি অর্থায়নে অপ্রকাশিত প্রকল্পগুলোর নতুন তালিকায় প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হবে।

খেলাধুলা

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ক্রিকেট কাঠামো ও নেতৃত্ব প্রসঙ্গে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

তার মতে, যে কেউ নিজের জেলা বা বিভাগীয় ক্রিকেটের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ, তার বোর্ডে আসা উচিত নয়।

বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক সমিতির এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তামিম বলেন, “আমার অনুরোধ থাকবে—ক্রিকেট বোঝেন, এমন লোককেই কাউন্সিলর করা হোক। যাদের স্বপ্ন আছে—জেলার ক্রিকেট, দেশের ক্রিকেটকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার। তারা যেন বোর্ডের দায়িত্বে আসেন। ”

“বোর্ডে এসে নিজের জেলা ভুলে যাওয়া ঠিক নয়”

তামিম অতীতে দেখা বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় কেউ জেলা বা বিভাগ থেকে বিসিবিতে আসেন, তারপর পরিচালক হন। কিন্তু পরে নিজ জেলা বা অঞ্চলের কথা ভুলে যান। এটা মোটেও কাম্য নয়। বরং নেতৃত্ব মানেই হচ্ছে নিজের ঘরের উন্নয়নে অবদান রাখা। ”

“বরিশালেও মানসম্পন্ন ক্রিকেট লিগ নেই”

আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামোর দুর্বলতার কথাও অকপটে বলেন দেশসেরা এই ওপেনার। “কয়েকদিন আগে বরিশালে গিয়েছিলাম। দেখলাম, সেখানেও ভালো মানের একটি লিগ পর্যন্ত হয় না। অথচ আমরা বলি, ক্রিকেট আমাদের সবচেয়ে বড় খেলা!”

তিনি মনে করেন, শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আগে স্থানীয় পর্যায়ের কার্যক্রমকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করানো জরুরি।

“ঘরোয়া উন্নয়ন ছাড়া বোর্ডে দায়িত্ব অযৌক্তিক”

তামিম ইকবালের ভাষায়— “ক্রিকেট যদি দেশের সবচেয়ে বড় খেলা হয়, তাহলে নিজের জেলা বা বিভাগের ক্রিকেট উন্নত না করে বোর্ডে আসার কোনও প্রয়োজন নেই। আগে ঘরের কাজ ঠিক করতে হবে, তারপর জাতীয় দায়িত্ব নিতে হবে। ”

বিনোদন

‘চল প্রেমে পুড়ে যাই, ভালোবেসে উড়ে যাই, হৃদয় গহনে এই মন গহীনে দু’জনে মিলে হবো ছাঁই’- এমন কথায় নতুন গান নিয়ে এলেন সংগীতশিল্পী নাদিয়া ডোরা। অটমনাল মুনের কথা-সুর ও সংগীত পরিচালনায় রোমান্টিক গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি মডেল হিসেবেও ধরা দিয়েছেন ডোরা।

নতুন গান প্রকাশের উচ্ছ্বাসে ভাসছেন ডোরা। শ্রোতাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসাও তাকে ভাসিয়ে নিচ্ছে নতুন এ সৃষ্টির অনুপ্রেরণায়।

গানটি প্রসঙ্গে অটমনাল মুন বলেন, গানটা করে যখন ডোরাকে পাঠালাম, ও দারুণ পছন্দ করলো। এ গানটা যে জনরার তাকে চিলস স্টেপ বলে। গানটিতে অন্যান্য মিউজিকের পাশাপাশি ইলেক্ট্রিক গিটার, অ্যাকুইস্টিক গিটার, ইলেক্ট্রনিক ইন্সট্রুমেন্ট মিক্স করে আমার সিগনেচারটা রেখেছি। গানটিতে সুদিং যে সাউন্ডটা তৈরি করেছি এটা শ্রোতাদের জন্য একটা সুন্দর ট্রিপের মতো অভিজ্ঞতা দিবে। আশা করছি গানটি শ্রোতাদের কাছে ধীরে ধীরে পৌঁছে যাবে।

মূলত ফোক গানে সবাই নাদিয়া ডোরাকে চিনলেও ডোরা এবার একটু অন্যরকম করেই ধরা দিলেন। তিন বছর রোমান্টিক গান নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হলেন তিনি।

ডোরা বলেন, আমার পক্ষ থেকে এটা ভক্তদের জন্য উপহার। আমি যে সবসময় ফোক গাই তা নয়, আমি যে রবীন্দ্রসংগীত গাই বা আধুনিক গানও গাই এ ম্যাসেজটাই ভক্তদের দিতে চেয়েছি এ গানের মধ্য দিয়ে। রূপ বদলে নতুন রূপ নিয়ে হাজির হলাম। ভালোবাসার এ গানে আমার ভয়েজের একটা ডিফরেন্ট আঙ্গিক ধরা পড়বে শ্রোতাদের কানে। মডেল হিসেবে অভিনয়ও করেছি। আশা করছি শ্রোতাদের ভালো লাগবে গানটা।

গানের শুটিং হয়েছে প্রকৃতি সমৃদ্ধ নেপালে। গানটি প্রকাশ করেছেন জি সিরিজ। নিয়মিত স্টেজ শো, নিজের ব্যান্ড প্যান্ডডোরা ও নতুন নতুন সলো গান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডোরা।

আন্তর্জাতিক

শিবপুর উপজেলার তরুণ হাবিবুল্লাহ ভূইয়া (২০), ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন আঁধারের আবছা আলোয় এসে তার হাতে ধরা দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কজন দালাল তাকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে।

ইতালি যাওয়া স্বপ্ন দেখা হাবিবুল্লাহ দালালের কৌশলে গিয়ে পড়েন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর হামলায় হাবিবুল্লাহ মারা গেছেন।

পরিবারের দাবি, ইতালি নিয়ে যাওয়ার আশ্বাসে একাধিক দালাল হাবিবুল্লাহকে রাশিয়ায় নিয়ে যায়। দালালরা তাকে ২০ লাখ টাকায় রুশ সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। নিদারুণ কষ্ট, নির্মম অত্যাচার সহ্য করেছিলেন হাবিবুল্লাহ। পরিবার এ মৃত্যুর খবর পায় তারই এক সহযোদ্ধার মাধ্যমে।

নিহত হাবিবুল্লাহ শিবপুর উপজেলার আয়ুবপুর ইউনিয়নের ঘাসিরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবু সিদ্দিক ভূইয়া ও মানসুরা বেগমের ছোট ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল সে।

পরিবার জানিয়েছে, এইচএসসি পাস করার পর থেকেই ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিল হাবিবুল্লাহ। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্রাহ্মন্দী গ্রামের এক দালাল ফারুকের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করে পরিবার। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দালালের মাধ্যমে হাবিবুল্লাহকে সৌদি আরবে নেওয়া হয় ওমরাহ ভিসায়। সেখানে দুই মাস অবস্থান করিয়ে তাকে তুরস্ক হয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

রাশিয়ায় প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন হাবিবুল্লাহ। পরে শফিক নামে ঢাকার এক দালাল তাকে ছাড়িয়ে নেয় এবং ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে সুলতান নামে আরেক দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর হাবিবুল্লাহকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজের কথা বলে একটি রুশ ভাষায় লেখা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে দিয়ে সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন সুলতান। সেখানে তাকে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হাবিবুল্লাহ তখনই বুঝতে পারেন, তাকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

গত ২৭ মার্চ, রাশিয়ান বাহিনীর ৪৫ সদস্যের একটি ইউনিটের সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশ নেন হাবিবুল্লাহ। যুদ্ধ শেষে তারা বিশ্রামের সময় ইউক্রেনীয় বাহিনীর অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারান। বুধবার হাবিবুল্লাহর মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছায় তার এক বাংলাদেশি সহযোদ্ধার মাধ্যমে।

হাবিবুল্লাহর বন্ধু নাইম ইসলাম অভি বলেন, রাশিয়ায় যাওয়ার পর মাঝে মধ্যে ওর সঙ্গে আমার কথা হতো। দালালরা তাকে মিথ্যে প্রলোভন দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গেছে। সেখানে তাকে অনেক অত্যাচার করা হয়। তাকে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে জোর করা হয়। সেখানে ও নিহত হলো। আমরা এর জন্য দায়ীদের বিচার চাই।

প্রতিবেশী ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সে খুব ভালো ছেলে ছিল। ছোট ভাইয়ের মতো দেখতাম। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না ও আর নেই। দালালদের বিচার চাই।

ছেলের মৃত্যুর খবরে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন বাবা-মা। হাবিবুল্লাহর বাবা আবু সিদ্দিক বলেন, আমার ছেলে ইতালি যেতে চেয়েছিল। দালালরা তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছে। চাইলে আমাদের কাছেই টাকা চাইতো, কিন্তু তারা টাকার লোভে আমার ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

মা মানসুরা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ছেলে দেশে ফেরার জন্য কাঁদতো, আর আমরা অসহায়ের মতো কিছুই করতে পারিনি। এত টাকা খরচ করেও আজ তাকে কফিনে দেখতে হবে? এই দালালরা অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই এবং সরকারের কাছে ছেলের মরদেহ ফিরিয়ে আনার আবেদন জানাই।

এ বিষয়ে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানতে পারিনি। যিনি নিহত হয়েছে, তার পরিবার তথ্য দিলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মরদেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো এবং দালালদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি আত্মহত্যা করেননি, তারা খুন হয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন দুইজন। প্রথমে সাগর ও পরে ছুরিকাঘাত করা হয় রুনিকে। হত্যার আগে সন্তান মেঘকে নিয়ে একই খাটে শুয়ে ছিলেন তারা। তবে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড) অস্পষ্টতায় হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তদন্তের জন্য আরও সময় লাগবে উল্লেখ করে সম্প্রতি হাইকোর্টে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আলোচিত এ মামলাটির তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্স।

টাস্কফোর্সের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল (পিবিআই প্রধান) শনিবার (৩ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘হাইকোর্ট আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে কি কি কাজ করা হয়েছে। সেগুলোই হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে।’

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তদন্তে দাম্পত্য কলহ, চুরি বা পেশাগত কারণে খুনের তথ্য পায়নি টাস্কফোর্স। ভিসেরা রিপোর্টেও চেতনানাশক বা বিষজাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। রান্না ঘরে থাকা ছুরি ও বটি দিয়ে হত্যা করা হয় তাদের। ক্ষত নিয়েও অনেকক্ষণ জীবিত ছিলেন তারা। আগে থেকে বাসায় কেউ ছিল না, আর জোর করে কেউ প্রবেশ করেনি।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে র‌্যাবের কাছ থেকে সাগর-রুনি হত্যার তদন্তের দায়িত্ব সরিয়ে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিজ্ঞ কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নতুন টাস্কফোর্সের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। র‌্যাব ২০১২ সালে মামলাটির দায়িত্ব নেওয়ার পর বছরের পর বছর ধরে তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট থেকে এমন নির্দেশ দেয়। এর পর নবগঠিত টাস্কফোর্সকে চলতি বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও এখনো তদন্ত শেষ করতে পারেনি তারা। এখন পর্যন্ত নতুন করে ৭ সাংবাদিকসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে টাস্কফোর্স।

সম্প্রতি জমা দেওয়া টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে খুন হন সাগর-রুনি। এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি জানায়, প্রথমে সাগর ও পরে ছুরিকাঘাত করা হয় রুনিকে। হত্যার আগে সন্তান মেঘকে নিয়ে একই খাটে শুয়ে ছিলেন তারা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হত্যায় সাগর বাধা দিতে পারে- এমন ধারণায় তার হাত-পা বাঁধা হয়। রুনি নারী হিসেবে দুর্বল চিন্তা করে তার হাত-পা বাঁধার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়নি। ‘ব্লাড প্যাটার্ন’ পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা হয়, আগে মারা গেছেন রুনি। আর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে সমীকরণ মিলিয়ে টাস্কফোর্স বলছে, সাগরের মৃত্যু হয়েছে পরে।

হাইকোর্টে দাখিল করা টাস্কফোর্সের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিন (হত্যার রাতের পরদিন সকাল) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। এর আগে গণমাধ্যম কর্মী ও স্থানীয়দের পায়ের ছাপে ধ্বংস হয়ে যায় আলামত। তবে রান্নাঘরের বারান্দা সাড়ে ১৪ ইঞ্চি ও সাড়ে ৮ ইঞ্চির ভাঙা অংশটি সম্পূর্ণ নতুন ছিল। তা দিয়ে সহজে মানুষ ঢুকতে ও বের হতে পারে। যদিও সেখানকার পূর্ণাঙ্গ ফুটপ্রিন্ট পাওয়া যায়নি।

এদিকে সিআইডির সঙ্গে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে টাস্কফোর্স জানায়, একসঙ্গে দুই বা তিনজনের ডিএনএ থাকলে শনাক্ত করা সম্ভব। সংখ্যায় এর বেশি হলে শনাক্ত করা কঠিন। নমুনায় ৫ থেকে ৬ জনের ডিএনএ থাকায় তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। ওই সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে কর্মরত ছিলেন সাগর। আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

রাজনীতি

 উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রয়োজনে দেশে শক্তিশালী উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সবাই কার্যকর অবদান রাখবেন-এ প্রত্যাশা করি।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘আইপি এন্ড মিউজিক : ফিল দ্য বিট অব আইপি’ যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংগীত এক সর্বজনীন ভাষা, যা হৃদয়ের গভীরে প্রতিধ্বনিত হয় এবং আমাদের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় শিল্পধারাকে প্রতিফলিত করে। লোকগান থেকে শুরু করে আধুনিক গানের মূর্ছনায় আমাদের শিল্পীরা প্রতিনিয়ত বিশ্বকে মুগ্ধ করে চলেছেন।

তিনি বলেন, সংগীত শিল্পের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তুলতে মেধাসম্পদ আইন ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। এতে শিল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।’

জাতীয়

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে ইতালির রাজধানী রোমে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময়) রোমে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

এর আগে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ইতালির উদ্দেশে কাতার ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছালে সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ভ্যাটিকান সিটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।

স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া ৩টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা সেন্ট পিটার স্কয়ারে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ড. ইউনূস পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিতে আবার সেন্ট পিটার স্কয়ারে যাবেন।

এর আগে সোমবার ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন পোপ ফ্রান্সিস, যিনি জন্মেছিলেন হোর্হে মারিও বেরগোলিও নামে।

রাজনীতি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদিচ্ছা এবং সক্ষমতা প্রমাণের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা বলেছে, ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো নির্বাচন উপহার দিবে। আমরা তাদের একটু এসিড টেস্ট দেখতে চাই। আগে স্থানীয় নিবাচন দিন। আমরা দেখি আপনাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা কতটুকু। যদি এতে জনগণ সন্তুষ্ট হয়, তাহলে পরবর্তীতে আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দেবে। এখানে যদি আপনাদের কিছু ধরা পড়ে, তাহলে জনগণ আপনাদের হলুদ ও লাল কার্ড দেখাবে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ৯টায় সম্মেলন শুরু হয়ে বেলা ১২টায় শেষ হয়।

মহানগর জামায়াতের আমীর কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. ছামিউল হক ফারুকী, জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল করিম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর কামরুল হাসান, মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আসাদুজ্জামান সুহেলসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলা নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের মহানগর শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং জেলার সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বিশেষ কোনো দল ও গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার কোন সুপারিশ মানবো না। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই, যেখানে জুলুম হবে না। শোষণ হবে না। নিপিড়ন হবে না। নতুন কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম নিবে না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষে মানুষে কোন বৈষম্য থাকবে না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবো না। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদশ চাই। বিচারের বাণী আর নীরবে-নিভৃতে কাঁদবে না।

এ সম্মেলনে আবারও আনুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের যে দাবি উঠেছে, উভয়ক্ষেত্রেই এমন ব্যবস্থা চালু করা উচিত।

এ সময় নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশে কিছু জায়গায় কোরআন ও সুন্নাহর খেলাপ করা হয়েছে দাবি করে তা বাতিলের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কারের নামে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা হয়েছে। সেই রিপোর্টে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে যা কোরআন ও সুন্নাহর সম্পূর্ণ খেলাপ। যারা এই সুপারিশ পেশ করেছেন তারা এই দেশের সাড়ে ৯ কোটি মায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা যে জায়গায় সমাজকে নিতে চায় সেটা হতে দেওয়া হবে না।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে জানিয়ে সরকারকে সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান জামায়াতের আমির।

এদিকে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ময়মনসিংহ জামায়াতে ইসলামীর এই কর্মী সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ‍্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে ৮০ হাজার স্কয়ার ফুটের সম্মেলনস্থল পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।