অর্থনীতি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে শিল্পমালিক, ব্যবসায়ীদের তথা ব্র্যান্ডগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নির্মল পরিবেশ রেখে যেতে না পারি, তাহলে উন্নয়ন টেকসই হবে না।

তিনি কর্পোরেট দায়িত্ব ও টেকসই উদ্যোগের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে কাজ করার জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার লা মেরিডিয়ানে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম (বিবিএফ) আয়োজিত দ্বিতীয় এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ভূমিকা রাখা বিভিন্ন ব্র্যান্ডকে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক টেকসইতা পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্ক যুক্ত। এসডিজি লক্ষ্য পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করায় অন্যরাও উৎসাহিত হবে। আয়োজনের জন্য বিবিএফকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এবং বেসরকারি শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ একত্রে এই দেশের পরিবেশ বাসযোগ্য করতে কাজ করে যেতে হবে।

আয়োজক বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম ছাড়াও বিভিন্ন স্বনামধন্য শিল্প ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়েছেন মো. জাকির হোসেন চৌধুরী ও ড. মো. কবির আহাম্মদ। দুজনই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (যথাক্রমে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে গত ৮ সেপ্টেম্বর আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ এবং অবসর-উত্তর ছুটি (পিআরএল) স্থগিতের শর্তে যোগদানের তারিখ হতে তিন বছরের জন্য ডেপুটি গভর্নর পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগ জানায়, দুই ডেপুটি গভর্নর কাজে যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

মো. জাকির হোসেন চৌধুরী

মো. জাকির হোসেন চৌধুরী ১৯৯৩ সনের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে মেধা ভিত্তিতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২১ সালে তিনি নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগের আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩১ বছরের বেশি অভিজ্ঞতায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্যাংকিং সুপারভিশন, বৈদেশিক মুদ্রা নীতি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স, কৃষি ঋণ, হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এমপ্লয়িজ রিকগনিশন এওয়ার্ড প্রাপ্ত বিএফআইইউ-এ হেড অব অপারেশন ও মহাব্যবস্থাপক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেডও দায়িত্ব পালন করেন জাকির হোসেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তরের পর তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে সন্ধ্যাকালীন এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। দাপ্তরিক প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন জাকির হোসেন। গ্রহণ করেন পেশাদার উচ্চতর প্রশিক্ষণ।

ড. মো. কবির আহাম্মদ

ড. মো. কবির আহাম্মদ ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২১ সালে নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগের আগে তিনি ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ এবং এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

কবির আহাম্মদ ৩১ বছরের অধিক কর্মজীবনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট, হিউম্যান  রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট, পলিসি এনালিসিস ইউনিট (গবেষণা অর্থনীতিবিদ হিসেবে), ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট, কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস্ ডিপার্টমেন্ট, গভর্নর সচিবালয় এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশ বলে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক, খুলনা অফিস; রংপুর অফিস এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন।

ড. কবির আহাম্মদ কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ হতে উচ্চচমাধ্যমিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ হতে প্রথম শ্রেণিসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ হতে এমবিএ, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং হতে ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্সে ডিস্টিংশনসহ এমএসসি ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

দাপ্তরিক কাজে বিভিন্ন দেশ সফর করেন কবির আহাম্মদ। গ্রহণ করেন দেশি-বিদেশি উচ্চতর প্রশিক্ষণ।

অর্থনীতি

সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তবে একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব ছাড়া কোনো ব্যক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগ থেকে এ সম্পর্কিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বিএফআইইউ কর্তৃক মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ২৩ (১) (গ) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানিলন্ডারিং অপরাধ সন্দেহে কতিপয় ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হিসাবের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ওই নির্দেশনার বাইরেও ব্যক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির হিসাবসমূহের লেনদেন স্থগিত করেছে।

ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের দৈনিন্দন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান ও অনেক ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট লেনদেন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের এ ধরনের কার্যক্রম অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরর্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন, যা মোটেই কাম্য নয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিএফআইইউ কর্তৃক সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীনের প্রতিষ্ঠান নামে পরিচালিত হিসাব ব্যতীত ব্যক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়নি।

এর রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট জব্দ করিনি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। যাদের একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, সবগুলো ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট। আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে চাই না। কর্মসংস্থান নষ্ট এবং উৎপাদন ব্যাহত হোক আমরা সেটা চাই না।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস (বিএসসি) পিএলসির সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

সোমবার গুলশানে বিএসসি পিএলসির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা এ তাগিদ দেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। প্রয়োজনে সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এ সময় বিএসসি পিএলসির কর্মকর্তারা উপদেষ্টাকে সাবমেরিন ক্যাবলস ৬ (SMW6)-এর সংযোগ এবং এর ফলে বাংলাদেশ কি কি সুবিধা পাবে- সেই বিষয়গুলো অবহিত করেন।

১৪টি দেশের ১৬টি প্রতিষ্ঠান সাবমেরিন ক্যাবলস ৬-এ সংযুক্ত থাকবে, যার মেয়াদকাল ২০৪৫ সাল পর্যন্ত বলেও তারা উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কমপক্ষে ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। তবে সরকার এসব ব্যাংক বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন গভর্নর।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি না কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হবে, তবে এটাও ঠিক অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে আছে। ১০টার মতো ব্যাংকের অবস্থা এমন। সরকার এসব ব্যাংক বাঁচানোর চেষ্টা করছে। গভর্নর ১০ ব্যাংকের কথা বললেও সেগুলোর নাম উল্লেখ করেননি।

ব্যাংক খাতের অবস্থা যাই হোক গ্রাহকদের কোনো ক্ষতি হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য আমানত ইন্সুরেন্স ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ গ্রাহকের স্বার্থ নিশ্চিত হবে। বিশ্বের কোনো দেশই ব্যাংকিং খাতের আমানতের ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দেয় না। আমরাও ৯৫ শতাংশ গ্যারান্টি দিচ্ছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের হিসাব জব্দ করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলে, ‘সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের হোক। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি।’

যদি কেউ এস আলমের সম্পত্তি কিনে তবে নিজ দায়িত্ব কিনবেন, তার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংক নিবে না বলেও সতর্ক করেছেন গভর্নর।

তিনি বলেন, ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকিং খাতের বাইরে চলে গিয়েছিল, ৩০ হাজারের মতো ফিরে এসেছে।

অর্থনীতি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে তিন বিলিয়ন অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এ অর্থের যেন অপচয় না হয় সেদিকে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

দায়িত্ব নিয়েছি-ক্ষমতা নয়, আমাদের সময়ে জনগণের অর্থ আর অপচয় হতে দেওয়া হবে না ।
বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর ও সংস্থা প্রধানদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান গবেষণার আউটপুট (ফলাফল) কাজে না লাগলে উন্নয়ন অর্থবহ হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে এটা নিয়ে গবেষণা ও গবেষণার প্রয়োগের ফলে। এক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। লোকজন অনুভব করুক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নামে একটি মন্ত্রণালয় আছে। শুধু রূপপুর দিয়ে মন্ত্রণালয়ের কাজ শেষ না। নিজেদের কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, সমাজে বা দেশের জন্য আপনাদের কন্ট্রিবিউশন (অবদান) ফেইলড (ব্যর্থ) হলে জনগণ এটার বিরুদ্ধে কথা বলবে। খুব দ্রুত হয়তো হবে না তবে ধীরে ধীরে হলেও কাজের পরিবর্তন আনতে হবে। কন্ট্রিবিউট করতে হবে।

দায়িত্ব নিয়েছি-ক্ষমতা নয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সবার কো-অপারেশন (সহযোগিতা) লাগবে।

এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন কাজে গতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।

অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে বেসরকারি ছয়টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ ১০টি ব্যাংকের মোট প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলো হলো: ন্যাশনাল ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক।

নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে তাদের আমানতের ০.৫০% থেকে ৫% প্রভিশন বজায় রাখতে হবে। তবে, প্রভিশনিংয়ের প্রয়োজনীয়তা খেলাপি ঋণের শ্রেণিবিন্যাসের ওপর নির্ভর করে ২০% থেকে ১০০% পর্যন্ত হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৪,৯৬৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চের শেষ পর্যন্ত এ খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২,১১,৩৯১ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশে পৌঁছেছে।

জুন প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) শ্রেণিকৃত ঋণ ৩০ মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শ্রেণিকৃত ঋণের সবচেয়ে বড় অংশ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর (১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বা ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ), বিশেষায়িত ব্যাংক (৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ), বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক (৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ) এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ ঋণ রয়েছে।

অর্থনীতি

অর্থ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। একই সঙ্গে কয়েক মাসের মধ্যে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে- এমনটাই দেখতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে বায়িং হাউজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যে সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল, সেটা কী দৃশ্যমান হয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই দৃশ্যমান হয়েছে। অনেক বিষয়ই দৃশ্যমান। যেমন- খেলাপি ঋণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব ব্যাংকের সমস্যা ছিল সেসব ব্যাংক রিঅর্গানাইজ করা হচ্ছে। লিকুইডিটির যে সমস্যা ছিল সেটা সমাধান করেছেন গভর্নর।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আমরা অলরেডি বলে দিয়েছি, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। একই সঙ্গে সংস্কারের বিষয়ে কথাবার্তা বলেছি, এগুলোও একেবারে দৃশ্যমান।

এ সময় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আলু পেঁয়াজের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। এগুলো যাতে নিশ্চিত করা হয় সেটার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মাছ, মাংস, ডিমের বিষয়ে কথা বলেছি, বাজার মনিটরিংয়ের কথা বলেছি।

সরকার এখনও পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দাম কমাতে পেরেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না। জিনিসপত্রের দাম কমেনি। অনেক কারণে দাম বেড়ে গেছে, সেটা চট করে টেনে নামিয়ে আনা যাবে না। তবে কমছে কিনা, সেটা কয়েক মাসের মধ্যে দেখতে পারবেন।

কতদিনের মধ্যে দাম কমার বিষয় দৃশ্যমান হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অলরেডি টাস্কফোর্স হচ্ছে।

বায়িং হাউজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কী আলোচনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা বলেছেন ডিরেক্টর ছাড়াই বায়িং হাউজের মাধ্যমে অনেক সময় অর্ডার দেওয়া হয়। রপ্তানির ক্ষেত্রেও সহায়তা করে। এমন কিছু কিছু ব্যাপার রয়েছে। যেমন- ইপিবির রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক, অর্ডারের বিষয়ে সমস্যা সমাধান করলে রপ্তানি বাড়বে। আমরা বলেছি, রপ্তানি আরও বেড়ে ৫০ বিলিয়ন হবে। তারা বলেছেন, ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। আমি বলেছি, এটা আমরা দেখব, যেটা ভালো হয় সেটা করব।

অর্থনীতি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে প্রবাসী আয় পাঠানো বন্ধ রাখার ঘোষণায় কমেছিল রেমিট্যান্সের প্রবাহ। তবে আওয়ামী সরকার পতনের পরে তা বাড়তে থাকে।

চলতি আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২০৭ কোটি ডলার, যা দেশি মুদ্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা।

গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার।

গত জুলাই মাসে ১৯১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধানকে করে ১২ সদস্যদের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে সরকার একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কমিটির অপর ১১ সদস্যকে মনোনীত করেন।

চিঠিতে কমিটির কার্যপরিধি ও অন্যান্য বিষয়াবলি সম্পর্কে বলা হয়

ক) বর্ণিত শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে প্রতিফলন থাকবে;
খ) কমিটির সদস্যগণ অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন;
গ) কমিটির দপ্তর পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সে স্থাপিত হবে;
ঘ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে;
৬) সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ। দপ্তর/ সংস্থা কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সকল ধরণের সহযোগিতা প্রদান করবে;
চ) কমিটি আগামী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট হস্তান্তর করবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদিত ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য নেতৃত্বাধীন শ্বেতপত্র প্রস্ততি কমিটির অপর ১১ সদস্য হলেন

১. ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ব্যবসা ও অর্থনীতি অনুষদের ডিন এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক;
২. বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম;
৩. ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন;
৪. বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. কাজী ইকবাল;
৫.বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এবং ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম তামিম;
৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্টে স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ;
৭. সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান;
৮. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান;
৯. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরমিন্দ নীলোর্মি;
১০. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী এবং
১১. বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও বিশিষ্ট কলামিস্ট ড. জাহিদ হোসেন।