অর্থনীতি

অর্থনৈতিক সংকট ও রিজার্ভ বাড়াতে মধ্যমেয়াদে (২০২৪-২৬) ৫টি খাতে বড় ধরনের সংস্কার কর্মসূচি নিচ্ছে অর্থ বিভাগ। যার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক ঋণের সুদ হারে করিডোর বা বাজারভিত্তিক চালু ও একক মুদ্রা বিনিময় হার বর্তমান পদ্ধতির পরিবর্তে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া।

এছাড়া অস্বাভাবিক ভর্তুকির অঙ্ক ও সরকারের ঋণব্যয় পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে কম ঋণ নেওয়া। পাশাপাশি আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংক কোম্পানি এবং ফাইন্যান্সিয়াল আইন সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে। সংস্কার কর্মসূচির মধ্যে আগামীতে রাজস্ব আয় (বর্তমান পর্যায় থেকে ১.৭ শতাংশ) বাড়ানো এবং তিন মাস অন্তর জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির হার প্রকাশ করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে। শিগগিরই এই সংস্কার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তবে প্রতিটি সংস্কারই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরি জানান, ডলারের মূল্য এখন অনেক বেশি। মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হলে ধারণা করা হচ্ছে ডলারের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে। এছাড়া ব্যাংক ঋণের সুদ হারে করিডোর চালু করা দরকার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করা যেতে পারে।

সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কমানো প্রসঙ্গে সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ জানান, সঞ্চয়পত্র এক ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে কাজ করছে। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল। কারণ এখানে বিনিয়োগ করে মুনাফা বা সুদ অন্য ক্ষেত্র থেকে বেশি পাওয়া যায়। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে অনেকে সঞ্চয়পত্র বেছে নিচ্ছেন। সরকার এ খাত থেকে ঋণ নেওয়া কমালে এর বিক্রি কমবে। এতে অনেকেই কিনতে পারবে না। এখানে খুব বেশি কড়াকড়ি না করাই ভালোই। জানা গেছে, চলতি মাসেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। সেখানে ব্যাংক ঋণের সুদহার এবং একক মুদ্রানীতি হার বাজারভিত্তিক চালুর ঘোষণা আসতে পারে। প্রসঙ্গত আইএমএফের শর্তে একই কথা হয়েছে। সংস্থাটি বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিপরীতে ঋণের সুদহারে করিডোর চালু করতে বলেছে। পাশাপাশি মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে শর্ত দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সুদ হারে করিডোর এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে সুদহারের বেঁধে দেওয়া সীমা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হবে। তবে ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার কত হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক তা প্রতি মাসে নির্ধারণ করে ঘোষণা করবে। এ হার ঠিক করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নির্ধারিত সূত্র অনুসরণ করবে। নতুন এ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা আগামী জুলাই থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি ভোক্তা ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার কত হবে, তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান ব্যাংক ঋণের সুদ হারের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্যাপ আরোপ করে রেখেছে।

যে কারণে আমানত ও ঋণের সুদ ৬-৯ শতাংশের মধ্যে বিরাজ করছে। অপরদিকে ডলারের মূল্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক করে দিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, সংস্কারের আওতায় সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম কাজ হবে ভর্তুকি ব্যয় কমিয়ে আনা বা যৌক্তিকরণ। টাকার অবমূল্যায়ন ও বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ, সার, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেলে সরকারের অস্বাভাবিক ভর্তুকি ব্যয় বেড়েছে। এ ব্যয় সরকারের দায়কে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রস্তাবিত (২০২৩-২৪) বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৬ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ৫০ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। ভর্তুকি ব্যয় কমানো প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগ সংস্কার কর্মসূচির প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্ববাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা এবং ভর্তুকির পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যে গত আগষ্টে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য বাড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় একটি ফর্মুলাভিত্তিক নতুন পদ্ধতি চালু করা হবে। যা পেট্রোলিয়াম পণ্যের ভর্তুকির প্রয়োজনীয়তা দূর করবে।

ভর্তুকি কমানো ছাড়াও সংস্কার কর্মসূচিতে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কম নেওয়া, নগদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে ট্রেজারির সঙ্গে অ্যাকাউন্ট আওতা বৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ব্যবহার বাড়ানো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

মধ্যমেয়াদি এই সংস্কার কর্মসূচির পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ লাখ কোটি টাকা। পর্যায়ক্রমে ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং ৯ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, মধ্যমেয়াদে সরকার সতর্ক রাজস্বনীতি অনুসরণ করবে। এর মধ্যে বাজেটের ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখা হবে। যা প্রস্তাবিত বাজেটে আছে জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। সেখানে আরও বলা হয়, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে করনীতি এবং রাজস্ব প্রশাসনের সংস্কার করা হবে।

অর্থ বিভাগ সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেছে, বৈশ্বিক ও জাতীয় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা দরকার। এ উদ্দেশ্যে মধ্যে মেয়াদে বেশ কিছু সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতি

গরীব-ধনী সব শ্রেণির মানুষের জন্য বাজেট উপহার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। অন্যান্যা বছরের ন্যায় এবারও আমরা ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবো না। সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে।

একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে জানান, প্রস্তাবিত বাজেট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ মেনে করা হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের প্রয়োজন মোতাবেক করা হয়েছে, তবে সংস্থাটির যেসব পরামর্শ আমাদের জন্য ভাল কিংবা গ্রহণযোগ্য সেগুলো নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশও সেটা করে থাকে।

শুক্রবার আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিষমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম,শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসন,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে সহায়তা করেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, গত  ৫ বছর ধরে যেসব পদক্ষেপ বা প্রাক্কলন গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। যেটা বাদ আছে সেটা আগামীতে করা হবে।
তিনি জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় আছে তখন রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, এখন সেটা বেঁড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। তাহলে আমরা যেখানে এখনও পৌঁছাতে পারেনি, সেখানে পৌঁছাতে পারবো।

এক প্রশ্নের উত্তরে জানান অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ধীরে ধীরে কর্মসংস্থান তৈরি করছি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতেও উল্লেখ করার মত কর্মসংস্থান হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামীলগ ক্ষমতায় এলে তখন দেশে মোট কর্মসংস্থানের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৭ কোটি  ১১ লাখ।এ সময়ে প্রায় ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে করযোগ্য নয় এমন ব্যক্তিদের রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তবে টিআইএন সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। যেমন আমদানি-রপ্তানিকারক কিংবা বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন। গরীব মানুষের জন্য কিন্তু টিআইএন বাধ্যতামূলক নয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট করহার না কমানোর বিষয়ে তিনি জানান, গত কয়েকবছর ধরে ক্রমান্বয়ে কর্পোরেট করহার কমানো হচ্ছে। গত তিন বছর ২.৫ শতাংশ হারে কমাতে কমাতে কর্পোরেট করহার বর্তমানে ২৭ শতাংশে চলে এসেছে। আরও কমালে রাজস্ব আহরণের জায়গা সংকোচিত হয়ে যায়। দেশের স্বার্থে সেটি করা ঠিক উচিত হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পুঁজিবাজারের বিষয়ে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কোন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ না থাকলেও বাজার গতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংক ও সরকার সেটি নিয়মিত করে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।

অর্থনীতি

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের অংক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আদায় অনিশ্চিত বা মন্দ হিসাবে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণ সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকায় ওঠেছিল।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রতিবেদনটি রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অনুমোদন করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ উচ্চ খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। কারণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়। এর বেশি হলেই তা ঝুঁকি।

২০২০ সালে করোনার প্রভাব মোকাবিলা ও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেয়। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না। পরের বছর ২০২১ সালে বলা হয়, একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, কেউ তার মাত্র ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই খেলাপি হবেন না।

করোনার প্রভাব কমে আসলে গত বছরের জুনে সার্কুলার দিয়ে জানানো হয়, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিস্তির ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধ করলে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই হার কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে। এ সিদ্ধান্তের প্রভাবে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে ডিসেম্বর প্রান্তিকে। কিন্তু চলতি বছর থেকে তা তুলে নেওয়ায় আবারো বেড়েছে খেলাপি ঋণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ মাস শেষে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫৭ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ খেলাপি।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে আলোচিত সময় ঋণ বিতরণের অংক ১১ লাখ ৫ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এ খাতে খেলাপি ঋণ ৬৫ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪১ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ খেলাপি এবং বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর ৩৬ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ।

অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক বাজারের বিবেচনা করলে অকটেন, পেট্রোল, ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম গ্রাহক পর্যায়ে লিটারে ৫ থেকে ১০ টাকা কমানো যায় বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘স্টেট অব দ্য বাংলাদেশ ইকনোমি’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি খাতে বেশি ভর্তুকি দিয়েছে। এখানে এখন কিছু করা যেতে পারে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ে, তখন দেশের বাজারের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে, তখন স্থানীয় বাজারে দাম কমানো হয় না।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল কেনার পর বর্তমানে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতি লিটার ডিজেলে ৫ টাকা এবং প্রতি লিটার অকটেনে ১৩ টাকা মুনাফা করে।

২০১৫-১৬ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত এই ৭ বছরে বিপিসি মোট ৪৩ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা লাভ করেছে। কর দেওয়ার পর মোট মুনাফা ৩৬ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। আর এই সময়ে ৭ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা কর দিয়েছে বিপিসি।

অর্থনীতি

এ পথে সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইনের ট্রায়াল হবে আর অক্টোবরে শুরু হবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি প্রায় ৯২ ভাগ বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন।

শুক্রবার (২৬ মে) প্রকল্পের পরিচালক আফজাল বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা-মাওয়া অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে পুরোদমে। আর অক্টোবরে যাত্রীবাহী রেল চালানোর পরিকল্পনা আছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চালাতে কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।

এ প্রকল্পের কাজ দু’অংশে বিভক্ত হয়ে চলমান রয়েছে। প্রথম অংশ ঢাকা-ভাঙ্গা, দ্বিতীয় অংশ ভাঙ্গা-যশোর।

ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে মোট দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার, এরমধ্যে ৭৭ কিলোমিটারে রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। এরমধ্যে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে এ বছরের ৪ এপ্রিল। আর কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ২৩ কিলোমিটারে পাথর বসানোসহ রেললাইনের কাজ বাকি আছে মাত্র সাড়ে ৬ কিলোমিটার।

এ অংশে একের পর এক নির্মাণ হচ্ছে রেললাইন। এই সাড়ে ৬ কিলোমিটার লাইন বসানোর কাজ শেষ হলেই ঢাকা-ভাঙ্গা রুটের কাজ সম্পন্ন হবে।

অন্যদিকে ভাঙ্গা-যশোর কাজের অগ্রগতিও ভালো। এ অংশের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুনে এ অংশের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলছে পুরো কর্মযজ্ঞ।

পুরো প্রকল্পে ১৪টি নতুন রেল স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে এখন। একইসঙ্গে পুরনো ৬টি স্টেশনকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে এ প্রকল্পের আওতায়।

এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, স্টেশন নির্মাণ, সিগন্যালের কাজসহ অন্যান্য কাজ খুবই দ্রুতগতিতে চলছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন বসানো এবং স্টেশন ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতু রেল লিংক রুটটি। এ রুট পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

একইসঙ্গে বিদ্যমান ভাঙ্গা-রাজবাড়ী থেকে কুষ্টিয়া রেলপথ ব্যবহার করতে পারবে ফরিদপুরসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষ। ফলে কম খরচেই ঢাকার সঙ্গে পণ্য ও যাত্রীরা চলাচল করেতে পারবে।

 

অর্থনীতি

স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো অবস্থানের কারণে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব।

মঙ্গলবার (২৩ মে) কাতারে হোটেল ওয়ালডর্ফ অ্যাস্তোরিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ এবং সৌদি অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিমের কাছ থেকে এ প্রস্তাব আসে।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

সৌদি দুই মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে ড. মোমেন বলেন, তারা বলেছেন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি ইস্যু দেখি। প্রথমত দেশের স্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ দেখেন, স্থিতিশীলতা দেখেন। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভালো। যার কারণে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সৌদি দুই মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই ভালো, তাদের ভিশন ও কমিটমেন্টস খুবই ভালো।

তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুব ভালো ও স্থিতিশীল সরকার রয়েছে।

সৌদি দুই মন্ত্রী বলেন, তারা পতেঙ্গা বন্দরে এবং এর পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলে কী করতে চান সে বিষয়ে ইতোমধ্যে কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছেন।

তারা বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশকে তাদের বেশ কিছু পণ্যের প্রধান আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যদি এটিকে সৌদি আরব আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে তাহলে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশে সরবরাহ করতে পারবে।

দুই মন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশ থেকে পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, বিমানের জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রধান বিতরণ কেন্দ্র করতে চান।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতোমধ্যে অনুমতি দিয়েছেন এবং শিগগিরই তাদের কাজ শুরু করতে বলেন।

পারস্পরিক লাভে শেখ হাসিনা মাতারবাড়ি, পায়রা বন্দর ব্যবহার ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দেন।

বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করতে যদি কোনো বাধা থাকে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই দেশের লাভে কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করে সৌদি আরব।

এ প্রসঙ্গে তারা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

হজ ইস্যুতে আলাপকালে সৌদি দুই মন্ত্রী তাদের দেশে হাউজিং ও হাসপাতাল নির্মাণে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করার অনুরোধ করেন।

দুই দেশের জনগণের লাভের জন্য সৌদি আরবে ওষুধ, পানীয় ও রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

এ সময় সৌদি দুই মন্ত্রী বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের প্রশংসা করেন।

ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।

অর্থনীতি

২৬ হাজার গ্রহকের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেড। এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং) পদ্ধতিতে প্রতারণা করছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আকতার হোসেন সোহেল এমএলএম প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ডেসটিনি অকার্যকর হওয়ার পর তিনি প্রতারণার নতুন ফাঁদ পাতেন। সারা দেশেই তিনি ফেলেছিলেন জাল। তার জালে বেশি পড়েছেন সাবেক সেনা সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছিল অভিনব প্রতারণা। সম্প্রতি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের এবং বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পড়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে এক পরিচালককে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। রোববার তাকে গ্রেফতারের পর সোমবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, একেক শ্রেণির লোকের কাছে একেক ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তরা। সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে নিজেকে একজন সাবেক জিওসির ছেলে পরিচয়ে আকতার হোসেন সোহেল বলতেন, ‘আমি আপনাদের সন্তান। সেনাবাহিনীর রেশন খেয়ে বড় হয়েছি। আপনারা আমার বাবার মতো। আমি কি আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারি?’ সাধারণ মানুষের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমে ঢাকার আশপাশে কোনো প্রক্রিয়াধীন আবাসন প্রকল্পে নিয়ে যান ব্রাইট ফিউচারের কর্মকর্তারা। তাদের সঙ্গে মিডিয়া হিসাবে জায়গা-জমির দাম-দর করেন। এরপর টাকা নেন। কিন্তু তারা প্লট দিতে পারেন না। গ্রাহক টাকা ফেরত চাইলে বলেন, ‘আমরা তো মিডিয়া হিসাবে কাজ করি। প্লটের জন্য যাদের কাছে টাকা দিয়েছি, তারা সেই টাকা অন্য প্রকল্পে ব্যয় করে ফেলেছে। তাই এ মুহূর্তে আপনার টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না। আমাদের নিজস্ব প্রকল্প আছে। আপনি চাইলে আমাদের প্রকল্পে এই টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনার বিনিয়োগের টাকার ওপর প্রতিমাসে লাখে তিন হাজার টাকা করে লাভ দেওয়া হবে। চার বছর পর আপনাকে মূলধনের দ্বিগুণ ফেরত দেওয়া হবে।’

সূত্রমতে, ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেড যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তাদের কাউকেই টাকা ফেরত দেয়নি। ঠিকমতো লাভও দেয়নি। দুই-এক মাস লাভ দেওয়ার পর টালবাহানা শুরু করে। এ বিষয়ে ৪ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী মীর মো. জান্নাত হোসেন। মামলায় ২০-২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে এই জালিয়াতচক্রে অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন। মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি আকতার হোসেন সোহেল, পরিচালক আলতাব হোসেন, মোজাম্মেল হক, হারুন অর রশিদ বাবু, হারুন অর রশিদ, মনির হোসেন, রাজা-উল করিম, ডিএমডি পারভিন আক্তার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহম্মেদ এবং উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের কাজী শামসুর রহমান।

মামলার এজাহারে মীর জান্নাত হোসেন বলেন, ‘আসামিরা প্রলোভন দেখায় যে, আশুলিয়ার ইছরকান্দি মৌজায় তাদের অনেক জমি কেনা আছে। সেখানে আমাকে স্বল্প দামে পাঁচ কাঠার প্লট কিনতে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের কথায় বিশ্বাস করে আমি ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্লটের জন্য আট লাখ টাকা দিই। পরে ২০২২ সালের ১০ আগস্ট আরও ৫০ হাজার টাকা দিই। শুধু তাই নয়, তাদের প্রলোভনে পড়ে আমি বিভিন্ন সময়ে আমার কয়েকজন আত্মীয়র কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়ে তাদের দিই। কিন্তু তারা আমাকে প্লট দিতে পারেনি। টাকা ফেরত চাইলে লভ্যাংশ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। কিন্তু লভ্যাংশও দেয়নি। বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর এখন তারা পলাতক।’

গত জানুয়ারিতে পুলিশের এক গোপনীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়িতে ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেডের অফিস রয়েছে। সেখানে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন হচ্ছে। পাওনা টাকা নিয়ে অনেকেই বিরোধে জড়াচ্ছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সেখানে এ নিয়ে আন্দোলনও হয়। বাড়িটি ঘেরাও করে আমানতকারীরা। কিন্তু টাকা লেনদেনসংক্রান্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা পুলিশের এখতিয়ারবহির্ভূত। তারপরও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের কাছে গ্রাহকরা তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানায়। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যে কোনো সময় তারা পালিয়ে যেতে পারে।’

রোবাবার রিমান্ড আবেদনে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাসান মাহামুদ উল্লেখ করেন, গ্রেফতার মোজাম্মেলসহ এজাহারভুক্ত আসামিরা সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যাদের গ্রেফতার করা যায়নি, তারা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারে। অন্য আসামিদের সঠিক নাম-ঠিকানা ও পাসপোর্ট নম্বর সংগ্রহের জন্য মোজাম্মেলকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

ভুক্তভোগী মেজর (অব.) মাহমুদ আকবর ভূঁইয়া বলেন, ২০১৯-২০ সালে আমি ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেডে চার কোটি টাকা বিনিয়োগ করি। তারা আমাকে প্রতিমাসে লভ্যাংশ দিয়ে চার বছরের মধ্যে ৪৮ কিস্তিতে দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। সে অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে আট কোটি টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু কয়েকটি কিস্তি দেওয়ার পরই তারা লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। লভ্যাংশসহ তাদের কাছে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা পাব। বেশ কয়েকবার তাদের অফিসে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি। এখন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা লাপাত্তা। তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করতে পারছি না।

থানায় দেওয়া অভিযোগে লাভলী খাতুন নামের এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, ‘সরলবিশ্বাসে ব্রাইট ফিউচারের কাছে আমি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বিনিয়োগ করি। ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ টাকা পরিশোধ করি। আমাকে ৪৫টি কিস্তির মাধ্যমে দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ২-৩টি কিস্তি দেওয়ার পর থেকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।’ মহিউদ্দিন, হামিদা আলম, শাহানাজ, রফিক, রশিদ, সাজ্জাত, রুদ্র, আইয়ুবসহ আরও অনেকেই কাছে নিজেদের প্রতারিত হওয়ার কাহিনি তুলে ধরেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম বলেন, ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রতারণার বিষয়টি আমরা অবগত। একাধিক অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে চক্রের একজনকে ধরেছি। বাকিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক কোম্পানি অ্যাসেনচুয়েট টেকনোলজির কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন পরিশোধিত চিনি কিনছে সরকার। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই চিনি কেনা হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮২ টাকা ৮৫ পয়সা, দেশীয় খুচরা বাজারের দাম থেকে প্রায় ৬০ টাকা কম।

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য এই চিনি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ওই চিনি কিনতে মোট ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা।

এর আগে ৮২ টাকা ৯৪ পয়সা দরে তুরস্কের একটি কোম্পানির কাছ থেকে চিনি ক্রয় করেছে সরকার।

দেশের বাজারে সম্প্রতি চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা করে বাড়িয়ে প্রতি কেজি ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত এই দামকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতি কেজি চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে যেসব দেশ বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা হবে না বলে দুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে আজ (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানির কাছ থেকে চিনি ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হলো।

র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দেশটির একটি কোম্পানির কাছ থেকে চিনি কেনার সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাংবাদিকরা অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে পৃথকভাবে আলোচনা হয়নি।

অর্থনীতি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য নতুন করে ৩ কোটি ‘ব্লাঙ্ক স্মার্ট কার্ড’ কিনছে সরকার। এতে মোট ৪০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে।

মঙ্গলবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জন্য ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিন কোটি ‘ব্লাঙ্ক স্মার্ট কার্ড’ কেনা হবে।

নির্বাচন কমিশনের জন্য এসব ‘ব্লাঙ্ক স্মার্ট কার্ড’ কেনা হবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ) থেকে। এতে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এর আগে গত ৯ মার্চ ‘ব্লাঙ্ক স্মার্ট কার্ড’ কেনার প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় জাতীয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায়।

অর্থনীতি

ঈদের মাস এপ্রিলে প্রবাসী আয়ে ছন্দপতন হলো। পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) ১৮ হাজার ১৭ কোটি ৪০ হাজার টাকা। অথচ গত মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। মঙ্গলবার (২ মে) এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, আগের তিন মাস ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও মার্চের ধারাবাহিকতা হিসেব করে ঈদের মাসে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসবে বলে ধারণা করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও মার্চে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন যথাক্রমে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার, ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার ও ২০২ কোটি ২৫ লাখ ডলার। কিন্তু এপ্রিল তা কমে আসে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা থেকে হঠাৎ করে নিম্নমুখী হয় প্রবাসী আয়। এরপর ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠাতে নানামুখী উদ্যোগ নিলে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। মার্চ মাসেও সে ধারা অব্যাহত ছিল। এপ্রিলে প্রবাসীরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠাবে ধরে নেওয়া হলেও ঈদ শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্সের যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় আয়ে আবার ছন্দপতন ঘটেছে।

প্রবাসী আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ইতিবাচক ফলও পাওয়া যাচ্ছিল। পদক্ষেপগুলো হলো- বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা; প্রবাসী আয় পাঠানো প্রবাসীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া; প্রবাসী আয় বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা; অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া; ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ।

এছাড়া সেবার বিনিময়ে দেশে প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করার ব্যবস্থা করা হয়। ঘোষণা ছাড়াই সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ২০ হাজার মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়।

এ সব উদ্যোগের ফলে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছিলো। কিন্তু সব উদ্যোগ ভেস্তে যায়। বড় ধরণের ছন্দ পতন ঘটে প্রবাসী আয়ে। প্রবাসী আয়ের এ ছন্দ পতন টের পেয়ে প্রতি ডলারে আগের রেট ১০৭ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০৮ টাকা করা হয়। যা মঙ্গল (২ মে) থেকে কার্যকর হয়েছে।