অর্থনীতি

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করার পর এবার আখ চাষিদের জন্য সহায়তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে অনেক চাষিই আখ চাষ শুরু করতে পারেননি।

এ কারণে আগামী মৌসুমে আখ উৎপাদন ৩২ থেকে ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব চিনি উৎপাদনেও পড়বে।

হিসাব অনুযায়ী আগামী বছর ১০ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন কমে যাবে। বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন হয়।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চিনি উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো আখের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় চাষিরা নিরুৎসাহী। সময় মতো চাষিদের ঋণ ও কৃষি উপকরণ না দেওয়া। এছাড়া আমাদের উৎপাদিত আখগুলোর জাত ভালো না হওয়ায় চিনি পাওয়া যায় কম। উন্নত জাতের আখ চাষ করে বলে বিদেশে একই পরিমাণ জমিতে কম খরচে বেশি আখ পায় এবং তা থেকে চিনিও বেশি হয়। এখন প্রতি হেক্টর জমিতে আমাদের দেশীয় জাতের আখ উৎপাদন হয় ৮ থেকে ১৫ মেট্রিক টন। উচ্চ ফলনশীল আখ চাষ করে পাওয়া যায় হেক্টরপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টন। চিনি উৎপাদনেও তারতম্য রয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ১০০ টন আখ মাড়াই করে চিনি পাওয়া যায় ১২ টন। আর আমরা এখন পাচ্ছে ৫ থেকে ৬ টন।

এছাড়া চিনি বিক্রিতে অনিয়ম, কারখানার আধুনিকায়ন না হওয়াসহ নানা সমস্যায় চিনিশিল্প অনেক পিছিয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে শিল্পসচিব কে এম আলী আজম বলেন, আমাদের যে পরিমাণ আখের চিনি হচ্ছে তা দিয়ে আমরা বিভিন্ন রেশনিং কার্যক্রম চালাচ্ছি। এরপর কিছু ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করি। বর্তমানে আমাদের যেটা আছে সেটা এখন শর্ট পড়ার মতো অবস্থা। নতুন চিনি না এলে আবার সমস্যা হবে।

এবছর আখ চাষিদের সহায়তা না দেওয়ায় আখের উৎপাদন কমে যাবে যা চিনি উৎপাদনে কেমন প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত চাষিদের আখ চাষের জন্য সহায়তা দেওয়া হয়নি বলে যে দেওয়া হবে না, তেমন সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। আমরা যতোটা পারি তাদের সহায়তা দেবো।

৬টি চিনিকলে আখ মাড়াই কাজ বন্ধ রয়েছে এতে করে চিনির উৎপাদন কমে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ৬টি চিনিকলে যে আখ মাড়াই হতো তা পার্শ্ববর্তী চিনিকলগুলোতে দেওয়া হয়েছে। ফলে চিনির উৎপাদন কমবে না। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায়ও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে যে লিকেজগুলো ছিলো সেগুলো বন্ধ করা হচ্ছে। তাই খুব একটা কম হবে না। আনুপাতিক হারে ভালো হবে। আমরা চাচ্ছি আগে ১৫টা মিলে যে চিনি উৎপাদন করতো এখন ৯টি মিলেই সে চিনি উৎপাদন করবে। কারণ আগে দুই মাসের বেশি চিনিকল চালানো যেতো না। কিন্তু এ বছর আমরা সাড়ে তিন মাস কলগুলো চালু রাখবো।

উৎপাদন বাড়ানো প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিল্পসচিব বলেন, উন্নতজাতের আখের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, পানিসহনীয় আখের জাত উদ্ভাবন, পণ্যের বহুমুখীকরণ, নতুন মেশিন বা অধুনিকায়ন, আখ ক্রয়ে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে চিনির পাশাপাশি বিভিন্ন বাই প্রডাক্ট তৈরি করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে উৎপাদিত আখের লাল চিনি দিয়ে চাহিদার মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। লোকসানে জর্জরিত চিনিকলগুলোতে ‘সংস্কার করা হবে’ এমনটা জানিয়ে সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসএফআইসি) ছয়টি কলের আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। যদিও সরকার ৬টি কলের সব আখ পার্শ্ববর্তী কলে মাড়াইয়ের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আখ মাড়াই না হওয়ায় চাষিরা এ বছর আখ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আখের বীজ বপনের সময় আমরা চাষিদের ঋণ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করে থাকি। কিন্তু এ বছর বাকি ৯টি কলের চাষিদের এটা দেওয়া হয়নি। এখন চাষিরা ব্যক্তি উদ্যোগে যতোটুকু পারে আখ চাষ করছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে উৎপাদন অবশ্যই কমে যাবে। এর ফলে ৩২ থেকে ৪০ শতাংশ আখের উৎপাদন কমে যাবে। যার প্রভাব চিনি উৎপাদনেও পড়বে। আমাদের ধারণা আগামী বছর আমাদের ১০ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন কমে যাবে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে সরকারের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, যা হচ্ছে চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের। ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বর্তমানে আমাদের ট্রেডগ্যাপ আছে ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর ব্যাংকের কাছে ঋণ রয়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকার যদি ব্যাংক ঋণ, ট্রেডগ্যাপের টাকা দেয় তাহলে আমরা নিজেরাই চলতে পারবো। একই সঙ্গে আর আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন জাতীয় রাজস্ব থেকে করার ব্যবস্থাসহ শিল্পগুলোকে আধুনিকায় করলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১৫টি চিনিকল রয়েছে। বিগত ১৯৩৩ সাল হতে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এসব চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হয়। মিলগুলোর প্রতিষ্ঠাকালীন মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ ১০ হাজার ৪৪০ মেট্রিকটন। কিন্তু মিলগুলো পুরাতন হয়ে পড়ায় ও আখ হতে চিনি আহরণের হার কমে যাওয়ায় এবং মিলে আখের পর্যাপ্ত যোগান না থাকায় কারণে বর্তমানে বার্ষিক চিনি উৎপাদন গড়ে ৬৭ হাজার ৫৭৭ মেট্রিক টন।

বর্তমানে মিলভেদে উৎপাদিত চিনির কেজি প্রতি খরচ ৯৩ টাকা থেকে ১৮৬ টাকা। মিলের বিপরীতে গৃহীত ঋণের সুদসহ বিবেচনা করলে তা ১৩১ থেকে ৩১১ টাকা ও গড় হিসেবে কেজি প্রতি উৎপাদিত চিনির খরচ ২২৫ টাকা ৬০ পয়সা। অথচ বর্তমানে চিনির বাজারমূল্য ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। বিএসএফআইসি বর্তমানে তার উৎপাদিত চিনি লুজ কেজি প্রতি ৬০ ও প্যাকেটজাত ৬৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রয় করছে। উৎপাদন খরচও বিক্রয়মূল্যের এ বিরাট ব্যবধানের কারণে শুধু গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে মিলগুলো ৯৩৭ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।

এছাড়া ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মিলগুলোর দায় দেনার পরিমাণ ৮ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। মিলগুলোর লোকসান কমিয়ে আনার জন্য ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি চিনিকলের উৎপাদন পরিচালনা করা হচ্ছে। বাকি ৬টি মিলে সাময়িকভাবে আখ মাড়াই বন্ধ করেছে সরকার।

উল্লেখ্য, আমাদের দেশে বার্ষিক চাহিদা ১৮ লাখ মেট্রিকটন। তারমধ্যে আমরা উৎপাদন করি ৬০ থেকে ৭০ লাখ মেট্রিকটন। আমাদের মজুদ আছে ৪০ হাজার মেট্র্রিক টন। দেশে উৎপাদিত আখের লাল চিনি দিয়ে চাহিদার মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। বাকিটা আমদানি করে মেটাতে হচ্ছে।

বর্তমানে দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চিনিকলগুলোতে উৎপাদিত দেশী আখের চিনির মজুদ রয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিকটন।

অর্থনীতি

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরার প্রচারিত প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নিজেদের প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় টেলিফোনে সংবাদমাধ্যমকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জানান, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ রশীদ দিয়ার সঙ্গেও কথা হয়েছে। ফেসবুক অফিসিয়ালি জানিয়েছে, তারা খুব দ্রুতই আল জাজিরার প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেবে।

‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ সরাতে এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক রিটের শুনানি হয় হাইকোর্টে। সেখানে আদালত আল জাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ সব ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন।

অর্থনীতি

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের কার্যক্রম শুরু করেছে অর্থমন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত অন্যতম প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিশেষত রাজস্ব আহরণসংক্রান্ত নীতিমালা তৈরিতে বড় ভূমিকা থাকে এনবিআরের।

এ লক্ষ্যে অতীতের বছরগুলোর মতো এবারও ব্যবসায়ী সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে প্রস্তাব চেয়েছে এনবিআর।

আগামী ৮ মার্চের মধ্যে এ প্রস্তাব দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে বাজেট সমন্বয়ের লক্ষ্যে এনবিআরের প্রথম সচিব মো. গোলাম কবীরকে প্রধান বাজেট সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে।

বাজেট প্রস্তুতে সহায়তার লক্ষ্যে বিভিন্ন চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনকে তাদের স্ব স্ব বাজেট প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) কাছে লিখিতভাবে পাঠাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রস্তাবের একটি সফটকপি ই-মেইলে ([email protected]) পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

অর্থনীতি

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ পরিবেশ দূষণ কমাতে ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক বর্জন করেছে। প্যাকেজিং থেকে সম্পূর্ণরূপে প্লাস্টিক অপসারণ করতে কাগজের বোতলের প্রাথমিক পরীক্ষা শুরু করেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পানীয় তৈরির সংস্থা কোকাকোলা।

এই সূত্রেই ইয়োরোপে ২০৩০ সালের মধ্যে দূষণ কমাতে এবং প্লাস্টিক ওয়েস্টের পরিমাণ কমাতে এই সংস্থা কাগজের বোতলের ব্যবহার শুরু করছে। এর আগে এমন কাগজের বোতল প্রথমবারের জন্য তৈরি করেছিল ডেনমার্কের একটি কোম্পানি।শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং কার্বনেটেড পানীয়সমূহের গ্যাস নিঃসরণ রোধে সক্ষম এমন প্লাস্টিকমুক্ত বোতল উৎপাদন করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

পরীক্ষামূলকভাবে এই বোতলে পানীয় বাজারজাত করবে কোকাকোলা। শক্ত কাগজ দিয়ে পরিবেশবান্ধব বোতল তৈরি করেছে একটি ডেনিশ কোম্পানি। এক্ষেত্রে কাগজের বোতল ভিজে যাওয়ার বা লিক হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। কারণ অতিরিক্ত মোটা কাগজ দিয়ে তৈরি হবে বোতলগুলি। যাতে ভিতরে একটি পলিথিন লাইনার দেওয়া থাকবে। যা রিসাইকেল পলিথিন টেরিফথ্যালেট বা পইটি দিয়ে তৈরি হবে। সংস্থা জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ১০০ শতাংশ প্লাস্টিক ফ্রি বোতল তৈরি করা।

এই নিয়ে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে কোকাকোলা’র তরফে ১১ ফেব্রুয়ারি একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেখানেই কাগজের বোতল প্রস্তুত করার কথা ভাবা ও তা ইয়োরোপের মার্কেটে আনার কথা ঘোষণা করেন তারা। এই বোতল ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত কাগজটির কোন আঁশ যেন পানীয়তে না মেশে। এটি ঘটলে একদিকে যেমন পানীয়র স্বাদে পরিবর্তন আসবে তেমনি স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।

 

অর্থনীতি

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সৌদি বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এসসা ইউসেফ এসসা আল দুলাইহান।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন সৌদি রাষ্ট্রদূত।

এ সময় পর্যটন খাতে বিনিয়োগের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী এ সময় বলেন, সৌদি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নে একত্রে কাজ করাটা হবে আনন্দের। একই সঙ্গে আমরা এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নেও একত্রে কাজ করতে পারবো বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

কোভিড-১৯ মহামারীর এই সময়ে সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের দিকে খেয়াল রাখায় সৌদি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।

বর্তমানে বিশেষ ব্যবস্থায় বিমান সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনা করছে জানিয়ে বিমানের সিডিউল ফ্লাইট পরিচালানার অনুমোদন ও কোভিড-১৯-এর কারণে সৌদি আরবে ফেরত যেতে না পারা ও নতুন ভিসাপ্রাপ্ত ৮৬ হাজার বাংলাদেশী কর্মীর দ্রুত ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সৌদি রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান তিনি।

জবাবে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা সবসময়ই বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করি। এজন্যই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সৌদি আরবের বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তা বন্ধ হয়নি।

সিডিউল ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন শুরু হলে বাংলাদেশ বিমান প্রথমেই অগ্রাধিকারভিত্তিতে তা পাবে।

অর্থনীতি

ভোজ্যতেল সয়াবিনের যৌক্তিক মূল্য প্রতি লিটারের (খোলা বাজারে) খুচরা মূল্য ১১৫ টাকা ও বোতলজাত ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

একইসঙ্গে ভোজ্য তেলের মূল্য অস্থিতিশীল থাকায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা প্রতিমাসেই আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে অত্যাবশকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সভায় বাণিজ্যসচিব জাফর উদ্দিন, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, ভোজ্য তেল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি লিটার সয়াবিন খোলা বাজারে মিল গেটে ১০৭ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের মিল গেট মূল্য ১২৩ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১২৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা। ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের মিল গেট মূল্য ৫৮৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৬০০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ৬২৫ টাকা। আমাদের দেশে যে তেল ব্যবহার করি, তার ৭০ শতাংশ পাম সুপার, যার প্রতি লিটারের মিল গেট মূল্য (খোলা) ৯৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৯৮ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১০৪ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোজ্য তেলের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

সামনে রমজান মাস, বর্তমানে যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। সব হিসাব নিকাশ করে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ঘোষণার পর শক্ত হাতে দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দাম কমে গেলে বিবেচনা করা হবে, বেড়ে গেলেও বিবেচনা করা হবে। আমরা যে তেল ব্যবহার করি, তার ৯০ শতাংশ আমদানি করতে হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে গত ৬ মাসে ৬৫ শতাংশ তেলের দাম বেড়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শিপিং কস্টও বেড়েছে। জাহাজের তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচও বেড়েছে। অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের আমদানিতে আরোপিত ভ্যাট ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় আরও বেশি যৌক্তিকহারে নির্ধারণের জন্য এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে রাজস্ব ব্যুরোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

অর্থনীতি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত হওয়ার পর তা ব্যবহারে টোল দিতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মঙ্গলবার একনেকে ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পটি অনুমোদনের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

অন্যগুলোর তুলনায় এই মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করার ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

একনেক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার পর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসের পরিকল্পনামন্ত্রী।

মান্নান বলেন, সভায় ঢাকা-সিলেট চার লেইন প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই সড়ক নির্মাণ শেষ হলে টোল আদায় করতে হবে।

“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিনা পয়সায় সেবা পাওয়ার দিন শেষ। আমরা সেবা পেতে চাই, কিন্তু পয়সা দিতে রাজি না। এটা আমাদের কালচার। এই কালচার থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।”

দেশের সব বড় বড় সড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থা করতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই অর্থ একটা ইয়ার মার্ক অ্যাকাউন্ট করে জমা রাখতে হবে। যেন ওই সড়কগুলো মেরামত করতে হলে ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ দিয়ে করা যায়।”

ব্যয় বাড়ার ব্যাখ্যা

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে এডিবির অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ৯০ লাখ টাকা, বাকি ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অর্থায়ন করবে এডিবি।

দেশে এর আগের বিভিন্ন মহাসড়ক চার লেইনের করতে যে ব্যয় হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হতে যাচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করতে।

প্রায় ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক চার লেইনের করতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ৮০ কোটি টাকার বেশি।

যেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয়েছিল ২১ কোটি টাকা। ময়মনসিংহ-জয়দেবপুর মহাসড়কে এই ব্যয় ছিল ২১ কোটি টাকা। হাটিকুমরুল থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেইন সড়ক নির্মাণে ছিল ৫৫ কোটি টাকা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে ব্যয় বাড়ার কারণ দেখিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যা ব্যয় হবার তাই হবে। কস্ট কম্প্রোমাইজ করে কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।”

তিনি বলেন, “এটা একটা হিউজ প্রজেক্ট। এই প্রকল্পে ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আছে। এই কস্টও তো আমাকে ধরতে হবে। এছাড়া দুই পাশে সার্ভিস লেন রয়েছে।”

সিলেট মহাসড়ক ৪ লেইন করতে ব্যয় হচ্ছে বেশি

বৃহত্তর সিলেটের বাসিন্দা মান্নান বলেন, এই মহাসড়কে যাত্রী ও গাড়িচালকদের নানা সুবিধাও নিশ্চিত করা হবে।

“প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই যে সড়কে যাওয়ার পথে যেন বিশ্রামের জায়গা থাকে, কফি খাওয়ার জায়গা থাকে। একটু বসে হাল্কা হওয়ার জায়গা থাকে। একটা সুন্দর ওয়াশরুম যেন থাকে। নারীদের চেঞ্জিং রুম ও বসার জায়গা যেন থাকে।”

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাএকনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য মহাসড়কেও এই সব ব্যবস্থা রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু করে আগামী ২০২৬ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে ভারত, চীন,মিয়ানমার, ভুটান ও নেপালসহ ছয় দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এই টেকসই সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে বলে সরকার জানিয়েছে।

মন্ত্রী মান্নান এই প্রসঙ্গে বলেন, “অতীতে আমরা পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এখন সময় এসেছে পূর্ব দিকে তাকানোর।”

বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্প

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকে ১৯ হাজার ৮৪৪ কোটি ৫৭ টাকা ব্যয়ের মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে ৬ হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে, বাকি ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে আসবে।

>> ‘বিটিসিএল’র ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় ৯৪৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

>> ‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুসঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্প (১ম সংশোধন)। এর ব্যয় ৫৩৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা হয়েছে।

>> ‘বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৩১ কোটি টাকা।

>> ‘পশ্চিম গোপালগঞ্জ সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (১ম পর্যায়)’। এর ব্যয় ১৩৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

>> ‘চট্টগ্রাম জেলাধীন হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষা’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি টাকা।

>> ‘ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলাধীন দৌলতখান পৌরসভা ও চকিঘাট এবং অন্যান্য অধিকতর ঝুকিপূর্ণ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৫২২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

>> ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষনা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় ২১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

>> ‘অনাবাদী পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন’ প্রকল্প। এর ব্যয় ৪৩৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

অর্থনীতি

রমজান ঘিরে এবারও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নতুন করে ফাঁদ পেতেছে। রমজান শুরুর দুই মাস আগ থেকে নিত্যপণ্যের দাম নীরবে পরিকল্পিতভাবে বাড়ানো হচ্ছে-রমজানে পণ্যের দাম বেড়েছে-এমন অভিযোগ যাতে না ওঠে।

এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের ডাল, ভোজ্যতেল, আদা-রসুন-পেঁয়াজ, হলুদ-মরিচ, চিনি-লবণ এমনকি খেজুরের দাম বাড়ানো হয়েছে। গরুর মাংস ও মুরগির দামও বেড়েছে। বাড়তি দরে পণ্য কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠেছে।

ভোক্তারা জানান, বরাবরের মতো এবারও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পরিকল্পিতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।

মনে হচ্ছে, গত কয়েক বছরের মতো এবারও ৫-১০ রোজা পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হবে। এরপর হয়তো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকার সংশ্লিষ্টদের বৈঠকের পর দাম কমতে শুরু করবে।

কিন্তু দেখা যাবে, যে পরিমাণে দাম বেড়েছে, সে পরিমাণে কমানো হয়নি। তাই রোজার আগে বাজারের দিকে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়াতে হবে। কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সোমবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ১৬ ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।

এর মধ্যে প্রতি কেজি ছোট দানা মসুর বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। প্রতি কেজি মুগ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা।

খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১১৬ টাকা, এক মাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা।

প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১০৭ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০২ টাকা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।

এরপর নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে নিু আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। তিনি আরও বলেন, বাজার নজরদারির জন্য আমরা সব সময় বলে আসছি; কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

কী কারণে দাম বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা উচিত। এক্ষেত্রে কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানো হলে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

টিসিবির তথ্যমতে সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩৫ টাকা, এক মাস আগে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি হয়, এক মাস আগে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয় ৩০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা। দেশি হলুদ বিক্রি হয় ২৪০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা।

প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৯২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৬০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ ও দেশি মুরগি বিক্রি হয় ৪৫০ টাকা, এক মাস আগে ১৩৫ ও ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পাশাপাশি প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৭০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা ও প্রতি কেজি খেজুর (সাধারণমানের) বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, বরাবর দেখা গেছে ব্যবসায়ীরা রমজানে পণ্যের দাম খুব কম বাড়ায়।

রমজান আসার এক থেকে দুমাস আগে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়।

এ কারণে রমজান আসার আগে বিষয়টি নিয়ে কঠোর মনিটরিং করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া বাজার ব্যবস্থায় বর্তমানে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা নেই।

অযৌক্তিক মুনাফা করতে ব্যবসায়ীরা সময় ও সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়ায়। এ প্রবণতা ভোক্তা কিংবা সরকার কারও জন্যই শুভ নয়।

তিনি বলেন, আজ থেকে বাজার ঠিকমতো মনিটরিং করা না হলে যে সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে, তা রমজান পর্যন্ত থামানো যাবে না। তাই এখন থেকে বাজার গভীরভাবে পর্যালোচনা করে তদারকি করা উচিত।

ভোক্তাদের উদ্দেশে গোলাম রহমান বলেন, রমজান ঘিরে ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে। ১৫ দিনের পণ্য যাতে একদিনে না কেনেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণেও ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন।

সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, রমজান সামনে রেখে সব পণ্য নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। রমজানে যাতে মানুষের কষ্ট না হয়, সে জন্য সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সরকারের একাধিক সংস্থা কঠোর মনিটরিং করছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে।

রমজান ঘিরেও তদারকি শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া অধিদপ্তরের টিমের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদারকি সদস্যরা কাজ করছেন।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। অনিয়ম পেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। দরকার হলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

অর্থনীতি

জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে জমে ওঠেছে ফুলের বেচাকেনা। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ বাজারে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম।

আজ “ভালবাসা দিবস”,  সামনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস,বাংলা নববর্ষ, বসন্ত উৎসব উপলক্ষে ফুল বেচা-কেনায় ব্যস্ত ফুল চাষি- ক্রেতারা। করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ১০মাস ফুলের বেচাকেনায় মন্দাভাব ছিল বলে জানান ফুলচাষিরা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ফুলের বেচাকেনা জমে ওঠেছে গদখালিতে। রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারি ফুল ক্রেতারা গদখালিতে এসে ফুল কিনছেন। সারা বছর ফুলচাষিরা ফুল বিক্রি করলেও তাদের মূল লক্ষ্য থাকে ফেব্রুয়ারি মাসের তিনটি উৎসব। এছাড়া বাংলা নববর্ষেও ফুলের জমজমাট বেচাকেনা হয়ে থাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গদখালি, পানিসারা ও মাগুরা এলাকায় সাড়ে ৬ হাজারের বেশি কৃষক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন রজনীগন্ধ্যা, গোলাপ, রডস্টিক, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, জিপসি, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ ১২ ধরনের ফুল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,জেলার ৩ উপজেলায় ফুল চাষ হয়ে থাকে।এ জেলায় মোট ৬শ’৪০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে।এর মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলায় ফুল চাষ হয়েছে ৬শ’৩০ হেক্টর জমিতে।ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এ উপজেলার গদখালি, পানিসারা ও নাভারন ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া আরো ৪টি ইউনিয়নসহ হাড়িয়া, নীলকন্ঠ নগর, চাওরা, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁদপুর, বাইশা, কুলিয়া, পাটুয়াপাড়া, নারানজালি গ্রামসহ প্রায় ৫০টি গ্রামে ফুল চাষ হয়ে থাকে বলে তিনি জানান। জেলার শার্শা উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে এবং কেশবপুর উপজেলায় ফুল চাষ হয়েছে ১ হেক্টরের সামান্য বেশি জমিতে।দেশের ফুলের মোট চাহিদার ৭০ভাগই যশোরের গদখালি ও শার্শা থেকে সরবরাহ হয়ে থাকে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়।

গদখালি বাজারের ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখানকার ফুল দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে রপ্তানী হচ্ছে।

নারানজালি গ্রামের ফুলচাষি আবু তাহের ও পাটুয়াপাড়া গ্রামের মুনজুর আলম জানান, তারা প্রত্যেকে এক একরের বেশি জমিতে ফুল চাষ করেছেন। বংলা নববর্ষসহ সামনের তিনটি উৎসবে তারা সবচেয়ে বেশি ফুল বিক্রি করে থাকেন।গদখালি বাজারের ফুলের পাইকারি ব্যবসায়ী সেলিম রেজা ও জাহিদুল ইসলাম জানান,ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ফুলের বাজার দর বেশ ভালো।চলতি মাসের বিভিন্ন উৎসবের আগে ফুলের দাম আরো বাড়বে।ফলে চাষিরা লাভবান হবে বলে তিনি জানান। গদখালি বাজারের ফুলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত ৩ দিনে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। গদখালি বাজারের ফুলের পাইকারি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, উৎসব এলে তিনি প্রতিদিন ঢাকা ও চট্রগ্রামে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ফুল পাইকারি বিক্রি করে থাকেন।

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান,ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি, পানিসারা, নাভারন ও মাগুরা ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হয়ে থাকে।এ চারটি ইউনিয়নের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি ফুল চাষি ফুল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন।ফুলের চাষ বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শনীসহ ফুলচাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।

অর্থনীতি

করের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে (ডিজিটাল) আনার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

দেশের কর জিডিপির অনুপাত ১৫ থেকে ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও জাতীয় রাজস্ব বার্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরের) সম্মেলন কক্ষে সেরা করদাতাদের ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “করের হার বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় যেতে হবে। তা হলে করের খাত আরও বেড়ে যাবে। নতুন নতুন খাত বের হয়ে আসবে।

দেরি না করে কর ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করার নির্দেশ দিয়ে এনবিআরকে এ বিষয়ে ‘দায়িত্ব নিয়ে’ কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

দেশে প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য অনুষ্ঠানে তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এ কর আরও বাড়াতে হবে।… রেট না কমালে করের আওতায় বাড়বে না। মোট কথা খাত বৃদ্ধি করতে হবে। সেটা করতে পারলে আমারা লক্ষ্য পৌঁছতে পারব।”

প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কর-জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি সামনে এনে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কর জিডিপির অনুপাত অন্তত ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ হওয়া উচিত।”

তার ভাষ্য, “আগে কর নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ভয়ভীতি ছিল। সেই ভীতি এখন অনেকটাই দূর হয়েছে। এখন কর আহরণ সিস্টেম উন্নত করা দরকার। এটা করতে পারলে জনগণ করের আওতায় চলে আসবে।”

দেশের মানুষ কর দিতে চাইলেও রাজস্ব বিভাগ তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন মুস্তফা কামাল।

দেশের ‘সামর্থ্যবান’ সবাইকে কর দেওয়ার আহবান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নিজে কর দেবেন, অন্যকে কর প্রদানে উৎসাহিত করবেন।”

তিনি বলেন, যোগাযোগসহ অবকঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে ‘উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। আরো মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকার এত বড় বড় প্রকল্প নেওয়ার সাহস পাচ্ছে করদাতাদের কাছ থেকে।

“তাই করের আওতায় বৃদ্ধি করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে,” বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের কর দাতাদের মধ্যে ৩৬টি ক্যাটাগরিতে ঢাকাসহ সারাদেশের মোট ৬৬৫ জনকে ‘সেরা করদাতা’ হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়।

এর মধ্যে ১৪১ জনকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৬ জন, ৫৩ কোম্পানি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১২ জন ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন ।

কোম্পানি ও ব্যক্তি পর্যায়ের মোট ১০ জন এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সম্মাননা স্মারক ও ট্যাক্স কার্ড নেন।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্রামীণফোন, আকিজ গ্রুপ, বাংলাদেশ আমেরিকান টোবাকো, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক ও ইউনিলিভার লিমটেডের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে ট্যাক্স কার্ড নেন।

আর ব্যক্তি পর্যায়ে স্মারক ও ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, রুবাইয়া ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লাইলা হোসেন ও হাজী মো. কাউস মিয়া। বাকি ১৩১টি ট্যাক্স কার্ডের প্রাপকরা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া এনবিআরের ৮ কর্মকর্তার পরিবারের হাতে অনুষ্ঠানে ‘সমবেদনা স্মারক’ তুলে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।