আন্তর্জাতিক

সৌদি আরবে দুই প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এক ভারতীয় নাগরিককে হত্যার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হত্যার ঘটনায় আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ওই দুই প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত আর্থিক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিক। আর তাদের হাতে খুন হওয়া ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক। ঘটনার দিন ওই ভারতীয় ব্যক্তিকে গাড়িতে করে একটি খোলা মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়।

ওই ব্যক্তিকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর পেছন থেকে কাপড়ের টুকরো দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এমনকি ওই ব্যক্তির মুখে কীটনাশক ছিটিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিহত ব্যক্তির লাশও পুঁতে ফেলেন অভিযুক্তরা।

তবে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর পর আদালতে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও আগের রায় বহাল রাখা হয়। এমনকি রাজকীয় আদেশ জারির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের রায় চূড়ান্ত বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জাজান অঞ্চলে ওই ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

আন্তর্জাতিক

গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-তুয়াম এলাকায় মেশিনগান দিয়ে লড়াইয়ে ইসরাইল স্পেশাল ফোর্সের অন্তত ১১ সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডস।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।

এর আগে বৃহস্পতিবার হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত তিন দিনে তাদের হামলায় ২৫ ইসরাইলি সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবরে শুরু হওয়া হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বেশি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তথ্য অফিসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁয়েছে। নিহতদের মধ্যে চার হাজার শিশু এবং ছয় হাজার ২০০ নারী রয়েছেন। এ ছাড়া এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ফিলিস্তিনের ৫৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, গাজায় এখন পর্যন্ত তাদের ১৩৭ সেনা নিহত হয়েছেন। তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি বলে দাবি হামাসের।

এ ছাড়া ইসরাইলের হিব্রু ভাষার এক সংবাদমাধ্যম কয়েক দিন আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় যুদ্ধ করতে গিয়ে অন্তত পাঁচ হাজার সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩ হাজার জনের হাত-পা গুরুতর জখম হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী, দুই হাজার সেনা যুদ্ধ করার সক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়েছেন। এ ছাড়া ইসরাইলের হিসাব অনুযায়ী, আল কাসেম ব্রিগেডের ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় এক হাজার ১৪০ ইসরাইলি প্রাণ হরিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক

গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা জোরদার করা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার ভোটাভুটি করেছে। দুই সপ্তাহের আলোচনা ও ভোটাভুটি নিয়ে কয়েক দিনের বিলম্ব শেষে প্রস্তাবনায় উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনার পরে এতে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ওয়াশিংটন গাজা যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সর্বশেষ খসড়া প্রস্তাবনা সমর্থন করতে প্রস্তুত। খসড়া প্রস্তাবটি ‘খুবই জোরালো’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক প্রস্তাব যেটি আমরা সমর্থন করতে পারি।’

তবে প্রস্তাবনার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেবে নাকি ভোটদানে বিরত থাকবে তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যরা, বিশেষ করে রাশিয়া প্রস্তাবনায় আনা সংশোধনীগুলো মেনে নেবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে প্রস্তাবে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে, তা নিয়ে এরই মধ্যে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ।

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গাজায় যুদ্ধ না থামলে ছয় মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেছে। এমন আশঙ্কার মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত ১৫ ডিসেম্বর গাজা নিয়ে খসড়া প্রস্তাবনা পেশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

সেই প্রস্তাবনায় গাজায় লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে অবাধে ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয় এতে। পাশাপাশি সব জিম্মিকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্র প্রথমত এ প্রস্তাবনায় লড়াইয়ের ‘অবসান’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি তোলে। ফলে এটি পরিবর্তন করে লড়াই ‘স্থগিত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

দ্বিতীয়ত ত্রাণ সরবরাহ একান্তভাবে জাতিসংঘের তদারকিতে রাখার ব্যবস্থা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র আপত্তি তুলেছিল। কারণ এতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ খর্ব হওয়ার আশঙ্কা ছিল (গাজায় ত্রাণ এবং জ্বালানি সরবরাহ ও বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ইসরাইল)। যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে সেটিও পরে সংশোধন করা হয়।

এসব সংশোধনীর পর, বিশেষ করে ‘লড়াই অবিলম্বে অবসানের’ আহ্বান বাতিল হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা হয়। এতে খসড়া প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার আশা জেগে ওঠে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের দুই মাস পেরিয়েছে। এখন যুদ্ধ তীব্রতম পর্বে প্রবেশ করেছে।

এ পরিস্থিতিতে গাজায় হামলা বন্ধ করা এবং গাজাবাসীর জন্য আরও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করা হচ্ছে না। তবে যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি জ্বালায়, যারা মানুষকে মারছে তাদের শাস্তির আওতায় নিচ্ছি।

কাতার সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নাগরিক পরিসর সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিশ্বের ছয়টি সংগঠন। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের (আরএফকেএইচআর) ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করছি না, নির্যাতন করছি না। যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি; বিশেষ করে, বাস, ট্রেন, ট্রাক জ্বালায়, যারা মানুষকে মারছে তাদের আমরা শাস্তির আওতায় নিচ্ছি। আমরা কোনো রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছি না। আমরা যাদের গ্রেপ্তার করছি তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। আমরা আহ্বান করবো- যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছেন, সেটা পরিহার করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যাদের আমরা ধরেছি, তাদের সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলে ধরেছি। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের হয়রানি করছি না।

বিবৃতিতে মানবাধিকার ইস্যুতে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন রাখা হলে দ্বিতম পোষণ করে মন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিবেদন দেখিনি। আপনি অন্যান্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন, আমরা একটা আদর্শ দেশ। গাজায় কী ধরনের মানবাধিকার হচ্ছে? এমনকি অন্যান্য উন্নত দেশেও লোকজন ক্লাবে-স্কুলে মেরে ফেলে। আমাদের এখানে বিনা বিচারে কাউকে মারে না।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছ থেকে অন্যান্যদের মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের বিষয়ে শিক্ষা নেওয়া দরকার।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইল ও হামাসের চলমান যুদ্ধে অবরুদ্ধ গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৪১২ জনে পৌঁছেছে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫০ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ২০৭ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৪৫০ জন। ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় উপত্যকাজুড়ে ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে আরও অসংখ্য মানুষ আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ) বলছে, গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনী ৭ হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, গাজা উপত্যকায় টানা বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে বোমা হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। মিসরীয় সীমান্তের কাছে রাফাহ ক্রসিংয়ের দক্ষিণে বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। হামাস কর্মকর্তারা বলছেন, ওই এলাকায় ইসরাইলের বিমান হামলায় মঙ্গলবার অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় গাজার বেশিরভাগ হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানকার এক তৃতীয়াংশেরও কম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা আংশিকভাবে চালু আছে।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান গাজা উপত্যকা পরিদর্শনের পর বলেছেন, গাজার লোকজন ‘পৃথিবীতে নরক’ সহ্য করছেন। জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলের অবিরাম হামলায় বেশিরভাগ ভূখণ্ডেই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। এতে ইসরাইলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকারে অক্টোবরের শেষের দিকে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। গাজায় স্থল অভিযান পরিচালনার সময় এখন পর্যন্ত ইসরাইলের অন্তত ১০৫ সৈন্য নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

হামাসের সঙ্গে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান সব দিক থেকেই সম্প্রসারণ করেছে। সোমবারও টানা চতুর্থ দিনের মতো ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএএফ)।

এতে তিন দিনে নিহতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে সোমবার সকালে আরও ২০টি এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়ে আইডিএএফ সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিয়েছে। গাজার উত্তরের অভিযান শেষ করে তারা এখন ক্রমেই দক্ষিণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। খবর আলজাজিরা, বিবিসির।

হামাসের সঙ্গে শুক্রবার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় শেষ হওয়ার পর গাজায় স্থল অভিযান বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। এর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গাজাজুড়েই হামাসের শক্ত অবস্থান লক্ষ্য করে আইডিএফ অভিযান জোরদার করেছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইল গাজায় প্রায় ১০ হাজার বিমান হামলা চালিয়েছে।

ইসরাইল সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি জানিয়েছেন, অভিযান শুরুর পর আইডিএএফ ৮০০ উঁচু স্থাপনা নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে ৫০০টি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বেসামরিক এলাকাতে নির্মিত অনেক টানেল ও রাস্তাও ধ্বংস করা হয়েছে। এ দিকে ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার বলেছেন, দক্ষিণ গাজায় ইসরাইলের সম্ভাব্য অভিযান নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায় থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে, উত্তরে যা ঘটানো হয়েছে, দক্ষিণে কোনোভাবে সেটা ঘটতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, প্রতি ১০ মিনিটেই একটি করে বোমা ফেলা হচ্ছে। এখানে হাসপাতাল, আশ্রয় শিবির বা অন্য কোথাও কেউ নিরাপদ নয়। আমিও কোথাও নিরাপদ বোধ করছি না। কেউই এখনো নিরাপদ বোধ করেন না। এদিকে আইডিএফ সোমবার জানিয়েছে গাজায় ২০০ লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

শনিবার থেকে ইসরাইলি বাহিনীর এ হামলায় ৮শর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫,৫২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ডা. আশরাফ আল কুদরা বলেন, এ হামলায় ৪১,৩১৬ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

এদিকে সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে হাসপাতালে মরদেহ আসতে শুরু করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুর্স আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘মরদেহের প্রবাহে আমাদের হাসপাতগুলো প্লাবিত হয়ে গেছে। আমাদের হাসপাতালগুলো আহতদের আর কোনো চিকিৎসা দিতে পারছে না। ইসরাইলের সেনারা আমাদের সব চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করে দিয়েছে।’ তিনি জানিয়েছেন, বিদ্যুতের অভাবে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলের কামাল আদওয়ান হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাবে।

মহাপরিচালক আরও জানিয়েছেন, ইসরাইলিদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, যার মধ্যে মাত্র ৪০০ জন দক্ষিণ দিকের রাফাহ অঞ্চলে পৌঁছাতে পেরেছেন।

‘কৌশলগত পরাজয়’ ঘটতে পারে ইসরাইলের : গাজা উপত্যকায় চলমান অভিযানে যদি শিশু-নারী ও বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে যুদ্ধে হামাসের বিরুদ্ধে জয় পেলেও কৌশলগতভাবে ইসরাইল পরাজিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।

রোববার ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক অনুষ্ঠানে অস্টিন বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় বর্তমানে যে যুদ্ধ চলছে তাতে বর্তমানে সেখানে গুরুত্বের একদম কেন্দ্রে অবস্থান করছে উপত্যকার সাধারণ বেসামরিক লোকজন। ইসরাইলের অভিযানের কারণে হামাসের ওপর যদি তাদের নতুন করে আস্থা বাড়তে শুরু করে সেক্ষেত্রে হামাসের বিরুদ্ধে জয়ী হলেও কৌশলগতভাবে পরাজিত হবে ইসরাইলি বাহিনী।

আন্তর্জাতিক

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা তাকিয়ে তাকিয়ে ফিলিস্তিনের হত্যাযজ্ঞ দেখে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।

মন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইওসেফ রামাদানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে আরো বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে যেভাবে গাজায় নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে এবং যারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বরং ইসরাইলি আক্রমণকারীদের পক্ষ অবলম্বন করেছে, আমি মনে করি তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ সবার কানে ফিলিস্তিনিদের এই আর্তনাদ পৌঁছাবে, অবিলম্বে সেখানে পূর্ণ যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হবে এবং ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।’

‘আমাদের সরকার, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছিলেন, আছেন, থাকবেন’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নেতা হিসেবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিশেষ আলোচনার আয়োজন করেছেন।

বৈঠক প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী জানান, ফিলিস্তিনের পাশে থাকার জন্য আমাদের সরকারের অঙ্গীকার এবং ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান রাষ্ট্রদূতকে পুনর্ব্যক্ত করেছি। আমরা মনে করি, স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব অন্য কোনো কিছু নয়।

হাছান মাহমুদ আরো জানান, ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চার হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন করে ফিলিস্তিনি ডাক্তারেরা গাজায় কিভাবে সেবা দিচ্ছে সেগুলোর ভিডিও তিনি আমাকে দেখিয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে যে সাহায্য সহযোগিতা পাঠিয়েছি সেগুলো তিনি সবিস্তারে বলেছেন।

বৈঠক শেষে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইওসেফ রামাদান সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলোর পরিবেশিত সংবাদ এবং শব্দ এদেশের গণমাধ্যমে হুবহু কপি না করে যাচাই করে পরিবেশনের অনুরোধ জানান।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের প্রতিনিধির উপস্থিতি এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দেশটির চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে (কপ-২৮) অংশ নেওয়া ইরানের একটি প্রতিনিধিদল সংযুক্ত আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের স্থান ত্যাগ করেছে।

জ্বালানিমন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ানের নেতৃত্বে ইরানের প্রতিনিধিদল শুক্রবার দুবাইয়ে জাতিসংঘের কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

দুবাই ছাড়ার আগে মেহরাবিয়ান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলনে ভুয়া ইহুদিবাদী সরকারের রাজনৈতিক ও পক্ষপাতদুষ্ট উপস্থিতি এ সম্মেলনের উদ্দেশ্যের বিপরীত।

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি সরকারের কয়েক দশক ধরে রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞের জবাবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস দখলদারদের বিরুদ্ধে আকস্মিক অপারেশন আল-আকসা স্ট্রোম শুরু করার পর গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি হামলায় ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

গাজায় ইসরাইলি সহিংসতা পশ্চিম তীরেও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে ৭ অক্টোবর থেকে সেনা বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে প্রায় ২৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় আটক ১০৫ জন ইসরাইলি বন্দি এবং ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়।

আন্তর্জাতিক

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় নেতৃত্ব এবং সোচ্চার কণ্ঠস্বরের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এশিয়া ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে কপ-২৮ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি এ পুরস্কার দেয়।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে এ পুরস্কার নেন কপ-২৮ এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

উচ্চ পর্যায়ের এ অনুষ্ঠানে সহ-সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ড্যানিস ফ্র্যান্সিস ও আওএমের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যামি পোপ।

আন্তর্জাতিক

হেনরি কিসিঞ্জার। জার্মান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। অভিবাসী হয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। হয়ে উঠেছিলেন সে দেশেরই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নাগরিক হওয়ার পর থেকেই দেশটির প্রতি তার অনুরাগ ও আনুগত্য বাড়তেই থাকে।

সেখান থেকেই জন্ম নেয় অপকর্মের। কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে গিয়ে চালিয়েছেন হত্যাযজ্ঞ। মিত্রদের সাথে হাত মিলিয়ে ভয়ংকর যুদ্ধাপরাধের মতো জঘন্য কাজও করেছেন সমানতালে। তার কূটনৈতিক বুদ্ধিতে বিভিন্ন দেশে ঘটেছে গৃহযুদ্ধও। অভিবাসী থেকে হয়ে উঠেছেন যুদ্ধাপরাধী। বারবার আলোচিত, সমালোচিত হওয়া শতবর্ষী এই নেতা বুধবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৮ সালে নাৎসি নিপীড়ন থেকে বাঁচতে জার্মানি থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। পরে ১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন। সেখানে হিসাববিজ্ঞান অধ্যয়নের পরিকল্পনা করলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। ভাষা দক্ষতা আর সামরিক বুদ্ধিমত্তায় ছিলেন এগিয়ে। পরে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সেও কাজ করেছেন। কিসিঞ্জার ১৯৬৮ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত হন। এটিই তাকে দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলার সুযোগ করে দেয়। প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের সময়ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

এখান থেকেই তার বীভৎস রূপ ফুটে উঠেছিল। এ পদ তাকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে দীর্ঘ ও বিস্তৃত স্নায়ুযুদ্ধ পরিচালনা করার সুযোগ দেয়। রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার করতে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান ঘটালেও খারাপ প্রভাব পড়ে যায় কম্বোডিয়ার উপরে। ১৯৬৯ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে কিসিঞ্জার তার সবচেয়ে ভয়ংকর অধ্যায়গুলোর সূচনা করেন। যেটা ছিল কম্বোডিয়ায় গোপন বোমা হামলা চালানো।

কম্বোডিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো যুদ্ধ হওয়ার কথা না থাকলেও চার বছর ধরে (১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত) দেশটিতে গোপন বোমা হামলা চালানো হয়। বিভিন্ন অনুমান অনুসারে, এ হামলার অভিযানে শেষ পর্যন্ত এক লাখ ৫০ হাজার থেকে দেড় মিলিয়ন কম্বোডিয়ান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

১৯৭১ সালে, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির দায়িত্বে থাকাকালীন সময় কিসিঞ্জার বাঙালি জনগণের ওপর নৃশংস দমনপীড়ন চালানোর জন্য পাকিস্তানের কাছে অবৈধ অস্ত্র বিক্রিরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের খলনায়ক। এ ছাড়াও ১৯৭৩ সালে চিলিতে সামরিক অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছিলেন। যার ফলে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সমাজতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার আগ্রাসনেও সমর্থন দিয়েছিলেন একইভাবে। ফোর্ড প্রশাসনের সময় তার নীতিগুলো আফ্রিকা বিশেষ করে অ্যাঙ্গোলার গৃহযুদ্ধকেও উসকে দিয়েছিল। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায়, কিসিঞ্জার হত্যাকারী শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, সংঘাত চালাতে যে ইন্ধন যুগিয়েছেন তা লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এছাড়া অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটিয়েছেন অহরহ। অথচ কিসিঞ্জার সেইসব অপকর্মের জন্য কখনো অনুশোচনা করেননি। এর বিনিময়ে কখনো মূল্যও চোকাতে হয়নি তাকে। উলটো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক, প্রেস এবং সামাজিক অভিজাতদের সদস্য হিসেবে ভালো অবস্থানে ছিলেন।

কিসিঞ্জার উত্তর ভিয়েতনামের লে ডুক থোর (ভিয়েতনামের বিপ্লবী নেতা) সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। এ সময়ও পড়েছিলেন নানা বিতর্কের মুখে। নোবেল শান্তি পুরস্কারে কিসিঞ্জারের নাম ঘোষণার পরপরই নোবেলের ব্যঙ্গাত্মক নাম ছড়িয়ে পড়ল দেশে দেশে- ‘নোবেল ফর দ্য ওয়্যার প্রাইজ’!কিসিঞ্জারের নামের সঙ্গে নিজের নাম ঘোষণায় পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন বিপ্লবী নেতা লে ডুক থোরও। হাওয়া বুঝে পুরস্কার নিতে যাননি কিসিঞ্জারও।