আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিপুল সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগদানকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুসের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

আজ ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

এতে আরো বলা হয়, এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন উপলক্ষে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ এ সভাটি ছিল মহাপরিচালকের সাথে কোন দেশের সাথে প্রথম সভা। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে বিগত পনেরো বছরের অর্জন, করোনা অতিমারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থন ও সহযোগিতা, দক্ষিণ পূর্ব এশীয় দেশসমূহের আঞ্চলিক পরিচালক পদের নির্বাচনে সায়মা ওয়াজেদের বিপুল বিজয় ও অব্যাহত সহযোগিতার জন্য মহাপরিচালককে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ, ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট স্থাপন ও ভ্যাকসিন তৈরি, কমিউনিটি ক্লিনিককে জনস্বাস্থ্য সেবার মূল কেন্দ্রে রেখে অধিকতর শক্তিশালীকরণ, আউট অব পকেট এক্সেপেন্ডিচার কমানোসহ ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে স্বাস্থ্য খাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরো বেশি সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মহাপরিচালক বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিপুল অর্জন ও উত্তম সেবা সমূহের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তার দপ্তর থেকে সকল প্রকার সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ড. টেড্রোস আধানোম গ্যাব্রেয়াসুসকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে আগ্রহের সাথে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সাথে দ্বিপাক্ষিক এ সভার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম, জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, যুগ্ম সচিব মো: মামুনুর রশীদ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের অবিরত হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেনাদের লাগাতার বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে সব কিছু। দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট। ফুরিয়ে গেছে খাবার পানি।

চরম খাদ্য সংকটে অনাহারে ভুগছেন বাসিন্দারা। এরই মধ্যে রাফাহ ক্রসিং বন্ধ থাকায় ত্রাণের খাবারও পৌঁছাতে পারছে না ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর দুয়ারে। মিসর থেকে গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা কিছু খাবার তাদের কাছে পৌঁছানোর আগেই পচতে শুরু করেছে সেখানেই।

শনিবার রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাফায় ইসরাইলের আক্রমণ বাড়ার পর থেকে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকে রয়েছে বেশ কিছু খাবার সরবরাহের ট্রাক। সেখানেই পচে যাচ্ছে গাজার ত্রাণের খাবার।

৬ মে ইসরাইলি বাহিনী রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে এটি গাজার মানবিক ত্রাণের পাশাপাশি কিছু বাণিজ্যিক সরবরাহের প্রধান এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল।

সেনারা ক্রসিং দখলে নেওয়ার পর থেকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। মাহমুদ হুসেন নামে একজন ট্রাকচালক জানিয়েছেন, এক মাস ধরে তার গাড়িতে পণ্যবোঝাই করে রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে রোদে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছু খাদ্যসামগ্রী ফেলে দেওয়াও হচ্ছে। আবার কিছু খাবার সস্তায় বিক্রিও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হুসেন আরও বলেছেন, আপেল, ডিম, কলা, চিকেন এবং পনিরসহ অনেক কিছু পচে গেছে। কিছু জিনিস ফেরত দেওয়া হয়েছে। ৭ অক্টোবর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকে রাফাহ দিয়ে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু রাফায় ইসরাইলের হামলা জোরদার করার পর থেকে খাদ্য সরবরাহ একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে।

মিসরীয় কর্মকর্তারা শুক্রবার বলেছেন, মানবিক কার্যক্রম সামরিক কার্যকলাপের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্য ইসরাইলকে ক্রসিংটি ফিলিস্তিনিদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

মিসরীয় প্রেসিডেন্সি বলেছে, রাফাহ না খুলে দেওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের নিকটবর্তী কেরেম শালোম ক্রসিংয়ের মাধ্যমে সাহায্য পাঠাবে মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্র। এটি রাফাহ থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) পশ্চিমে মিসরীয় ক্রসিং এবং আল-আরিশ শহরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।

আন্তর্জাতিক

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রাইসির লাশ মাশহাদে ইমাম রেজার (আ.) মাজার কমপ্লেক্সে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাতে মাশহাদ পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। খবর রেডিও তেহরান, এপি, আলজাজিরার।

প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে। মৃত্যুর ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার মাশহাদেই জানাজা শেষে শিয়াদের অষ্টম ইমাম রেজার মাজারে তাকে লাশ দাফন করা হয়। ইরানে রাইসি হলেন প্রথম রাজনীতিবিদ যাকে এ মাজারে দাফন করা হলো। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টকে অভূতপূর্ব শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাইসির জানাজায় বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বও অংশ নেন। রাইসিকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই রাজধানী তেহরান থেকে ৭৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মাশহাদে জড়ো হতে থাকেন লাখো মানুষ। শহরের রাস্তায় রাইসির বড় বড় ছবি, কালো পতাকা এবং শিয়াদের নানা প্রতীক টানানো হয়।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট রাইসির মরদেহ ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে পৌঁছানোর পর শেষ বিদায় জানাতে জনসমুদ্র কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় লাখ লাখ জনতার সবার হাতে হাতে ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসির ছবি এবং বিভিন্ন বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড। শোকার্ত ইরানিরা সবাই বুক এবং মাথা চাপড়ে (আনুষ্ঠানিকভাবে শিয়াদের শোক প্রকাশ) প্রিয় নেতার জন্য শোক প্রকাশ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের বিরজান্দে নেওয়া হয় রাইসির মরদেহ। সেখানেও তাকে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ।

এছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের লাশ বৃহস্পতিবার তেহরানের অদূরে রেই শহরের ইমামজাদা আব্দুল আজিমের (আ.) মাজার এলাকায় দাফন করা হয়েছে। রেই শহরেও তার শেষবিদায় অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।

সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানী দল। দুর্ঘটনায় নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম, প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি। প্রাণ হারিয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলটও।

আন্তর্জাতিক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আগামীকাল শনিবার (২৫ মে) ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)। পরের দিন ২৬ মে (রোববার) সন্ধ্যায় রেমাল নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বৃহস্পতিবার সর্বশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণপূর্ব ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের নিম্নচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে সরে গিয়েছে এবং বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ ও পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলে অবস্থান করছে। আগামীকাল ২৫ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার কথা বলা হলেও— আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট করে বলা হচ্ছে এটি ভারতের উড়িশা অথবা বাংলাদেশের উপকূলে যেতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সংস্থা ইসিএআই এবং এনসিইপি ইঙ্গিত দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়বে।

অপরদিকে আইমডি, এনসিইউএম এবং আইএমডি এমএমই বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি সঞ্চার করে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে।

আর ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানা শুরু করতে পারে ২৬ মে বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে ২৭ মে রাত ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে।

‘রেমাল’ একটি আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ বালু। নামটি দিয়েছে ওমান। বঙ্গোপসাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে সেগুলোর নাম আগে থেকেই ঠিক করা থাকে।

২০২০ সালে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়। সেখান থেকেই এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। যখন এই ঘোষণা আসবে তখনই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ নিম্নচাপটিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল হিসেবে অভিহিত করা হবে।

আন্তর্জাতিক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিই মোহাম্মদ মোখবারের নাম ঘোষণা করেছেন।

নিয়মানুসারে ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। মোখবারকে এখন অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব সামলাবেন।

বর্তমান শাসকদের কাছে প্রাথমিকভাবে যে বিষয় গুরুত্ব পাবে তা হলো শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা। মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- তারা মানুষকে সেবা করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাবেন। কোনোরকম বিঘ্ন ছাড়াই সরকার কাজ করে যাবে বলে শপথ নিয়েছে মন্ত্রিসভা।

জার্মান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি টাইসের গবেষক হামিদরেজা আজিজি বলেছেন, ৬৯ বছর বয়সি মোখবার শিয়া ধর্মীয় নেতাদের আস্থাভাজন। তার সঙ্গে ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সম্পর্কও খুব ভালো। ফলে প্রশাসনে আইআরজিসি-র ভূমিকা আগের মতোই থাকবে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে আইআরজিসির নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়তে পারে।

রোববার আজারবাইজান সীমান্তে একটি বাঁধের উদ্বোধন করে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তেহরান ফিরছিলেন, তখনই তার হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। কোন পরিস্থিতিতে এ দুর্ঘটনা হলো, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।

হামবুর্গের থিংক ট্যাংক জার্মান ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিসের ইরান বিশেষজ্ঞ সারা বাজোবান্দি বলেছেন, এখন এ নিয়ে নানান ধরনের অনুমান ও অসমর্থিত রিপোর্ট সামনে আসবে।

তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার কারণ যান্ত্রিক হতে পারে, অর্ন্তঘাতও হতে পারে, এমনকি রাইসির রাজনৈতিক বৃত্তে থাকা কারোর হাতও থাকতে পারে। কিছুই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ইরানের মানুষ চাইবেন, এ দুর্ঘটনা নিয়ে আগামী দিনে আরও তথ্য সামনে আসুক।

কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশেষজ্ঞ করিম সাদজাদপোর বলেছেন, রাইসির মৃত্যুর ফলে ইরানে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের সংকট আসতে পারে। খুব কম মানুষই মনে করেন, স্বাভাবিক দুর্ঘটনায় রাইসির মৃত্যু হয়েছে।

রাইসির মৃত্যুর পর আরেকটি বিষয় সামনে আসতে পারে, তা হলো খামেনির উত্তরাধিকারী কে হবেন?

ইরান বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দুইজনের নাম নিয়ে আলোচনা হতো, তার মধ্যে একজন ছিলেন রাইসি এবং অন্যজন হলেন ৫৫ বছর বয়সি মোজতাবা, যিনি পর্দার পেছন থেকে এতদিন প্রভাব বিস্তার করেছেন।

অনেকে মনে করেন, মোজতাবা সর্বোচ্চ নেতা হলে ইরানের মানুষের একটা বড় অংশ খুশি হবেন না। সাজাদপোর লিখেছেন, মোজতাবা খামেনি সর্বোচ্চ নেতা হলে বিক্ষোভ হতে পারে। সেক্ষেত্রে মোজতাবা পুরোপুরি রেভলিউশনারি গার্ডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন।

কিন্তু বাজোবান্দি বলেন, নতুন করে ইরানে কোনো গণআন্দোলন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর অত্যন্ত কড়া হাতে বিক্ষোভ দমন করা হয়েছে। বিরোধীরা পুরোপুরি হতাশ হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের আমলেও কোনো দিশা পরিবর্তন হবে না। তিনিও খামেনির নির্দেশ মেনে চলবেন। পরবর্তী প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।

‘নির্বাচনে চমক প্রত্যাশিত নয়’

ইরান বিশেষজ্ঞ সারা বাজোবান্দি বলেছেন, ৫০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। এটা অনুমান করাই যায় যে, এর মধ্যে কোনো চমক থাকবে না। রাজনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎসাহ কম হতে পারে।

তিনি বলেন, মানুষ এ শাসকদের বিশ্বাস করে না। আর শাসক পরিবর্তনের আশাও তাদের নেই। অনেক নাগরিক মনে করেন, ভোট হওয়ার আগেই তারা জানেন, কে জিতবে। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ভোটে জিতে প্রেসিডেন্ট হতেই পারেন।

এখন ইরানে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ৫০ শতাংশ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া, প্রচুর মানুষ আর্থিক কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। ২০২৩ সালে সরকার ৮৫৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে। ২০১৫ সালের পর এত বেশি মৃত্যুদণ্ড কখনো কার্যকর হয়নি।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, গাজা উপত্যকায় সকল মানবিক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানের প্রতি রাশিয়া সমর্থন জানিয়েছে। খবর তাস’র।

কেবলমাত্র রাফাহ শহরের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে নেবেনজিয়া বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বিধানগুলো কঠোরভাবে মেনে চলার দাবি জানাই এবং ওই এলাকায় কর্মরত জাতিসংঘ স্টাফ এবং মানবিক কর্মীদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা এবং বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় এগিয়ে আসা সকল মানবিক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনার আন্তর্জাতিক ও স্বাধীন তদন্তের মহাসচিবের আহ্বানকে সমর্থন করি।’

ওই কূটনীতিক বলেন, ‘এই ছিটমহলে মানবিক সহায়তা প্রবেশের কোনো স্থিতিশীল চ্যানেল নেই। গত দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলী প্রতিরক্ষা বাহিনী রাফাহ এবং কেরেম শালোম চেকপয়েন্ট দিয়ে ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সাহায্য নিয়ে আসা ৩ হাজার ট্রাকের প্রবেশ ঠেকিয়ে দিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গাজা উপত্যকার দক্ষিণ এবং মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি আবারো ছিটমহলে ফিলিস্তিনিদের সাতটি গণকবর আবিষ্কারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা একটি স্বাধীন তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। এই ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাদের এক বিবৃতিতে এমন তদন্তের দাবি করেছিল।’

আন্তর্জাতিক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ও তাদের সফরসঙ্গীদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারকে লেখা এক চিঠিতে শেখ হাসিনা এ শোক প্রকাশ করেছেন।

চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখের এই সময়ে বাংলাদেশ সরকার ও আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি ইরানের সরকার ও ভ্রাতৃপ্রতীম দেশটির জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

‘প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি একজন জ্ঞানী ও নিঃস্বার্থ নেতা ছিলেন- যিনি তার দেশের সেবায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন এবং ইরানের জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।’

আন্তর্জাতিক

ঘন কুয়াশার কারণে রোববার রাতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তবে আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজে গতি বাড়ে।

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, প্রথমে তুরস্কের বায়রাকতার আকিঞ্জি ড্রোন অবস্থান সনাক্ত করে। সেখানকার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ ইরানি কর্তৃপক্ষকে জানায় তারা। পরে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

রেড ক্রিসেন্ট সদস্য ও অন্যদের ধারণ করা বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

তাতে দেখা যায়, স্ট্রেচারে করে মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ি অসমতল পথে তাদেরকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডস এর ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানায়, সবগুলো মরদেহই তাবরিজে নিয়ে যাওয়া হবে। কাল শেষকৃত্যের আগ পর্যন্ত সেখানকার ফরেনসিক বিভাগেই থাকবে লাশ।প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার সহচরদের গন্তব্যই ছিল তাবরিজ শহর।

আরেকটিতে ভিডিওতে, হেলিকপ্টারের একটি দরজা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দরজায় লেখা ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। সেখানে সমবেত হয়ে আছেন অনেকে। পোশাক দেখে যাদের সেনাসদস্য বলেই প্রতীয়মান হয়।

অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে জড়ো হয়েছেন ইরানের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক

ইরানের পূর্ব আজারাবাইজান প্রদেশে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার মাটিতে আছড়ে পড়েছে। দেশটির কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

রোববারের এই দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

কেউ কেউ জানান, আছড়ে পড়া হেলিকপ্টারটিতে রাইসি ছিলেন না। আবার অনেকে দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার থেকে হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে।

তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারে না থাকা এবং হেলিকপ্টার থেকে যোগাযোগ করার যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে— সেগুলোর কোনোটিই সত্যি নয়।

কিন্তু যেটি সত্য সেটি হলো রাইসি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাকে খুঁজে পেতে অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

হেলিকপ্টারটি পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের একটি ঘন বন ও পাহাড়ি এলাকায় আছড়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই জায়গাটি একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় সেখানে উদ্ধারকারীদের পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

আলজাজিরা আরও জানিয়েছে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে ইরানেই ধোঁয়াশা চলছে। কেউ স্পষ্টভাবে কোনো তথ্য জানাচ্ছে না।

প্রেসিডেন্ট রাইসি গতকাল শনিবার আজারবাইজানে গিয়েছিলেন। সেখানে আজারি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটি ড্যাম উদ্বোধন করেন তিনি।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, এই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। যার মধ্যে দুটি নিরাপদে ফিরে আসে।

যে হেলিকপ্টারটি আছড়ে পড়েছে সেটিতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ছাড়াও ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমিরাব্দুল্লাহিয়ান এবং আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলি-হাসেম। তিনি ওই অঞ্চলে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার প্রতিনিধি ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি পাওয়া গেছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। কিন্তু প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং অন্যান্যদের অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

তবে ইরানের রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মকর্তা, যিনি হেলিকপ্টারটির উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন, তিনি জানিয়েছেন হেলিকপ্টারটি খুঁজে পাওয়ার উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যম বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার খুঁজে পাওয়ার ‘অসমর্থিত’ তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর আল-জাজিরার

দেশটির রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিভিশনের এক সাংবাদিক জ্বালানিমন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ানের বরাতে জানিয়েছেন, হেলিকপ্টার খুঁজে পাওয়ার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

কিন্তু ওই সাংবাদিক জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে হেলিকপ্টারটি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখান থেকে উদ্ধারকারীরা আর মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে রয়েছেন।

রোববার দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি আছড়ে পড়ে। ওই সময় এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন।

যেখানে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে উদ্ধারকারীরা পায়ে হেঁটে যান। জায়গাটি এতটাই দুর্গম যে সেখানে পৌঁছাতে উদ্ধারকারীদের কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।

রোববার আজারবাইজানে একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারে করে তাবরিজে যাচ্ছিলেন। সেখানেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ইরানি বার্তাসংস্থা ইরনা নিউজ জানিয়েছে, সেখানকার স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, তারা প্রচণ্ড জোরে কিছু আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্য জানার পরই ঘটনাস্থলে কমান্ডো বাহিনী ও উদ্ধারকারীদের পাঠানো হয়।

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের আগে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যা বলেছেন রাইসি

আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর রোববার হেলিকপ্টারে চড়ে ফিরছিলেন রাইসি। এ সময় বিধ্বস্ত হয় হেলিকপ্টারটি। এখনো নিখোঁজ প্রেসিডেন্ট রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দুর্ঘটনার আগে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে এক আলোচনায় রাইসি বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যু মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন ও ইহুদিবাদী সরকারের প্রতি ঘৃণা নিয়ে ইরান ও আজারবাইজানীয় দেশগুলো সবসময় ঐক্যবদ্ধ।

আরাস নদীর তীরে নির্মিত যৌথ কিজ কালাসি বাঁধের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ফাঁকে দুই প্রেসিডেন্ট সাক্ষাৎ করেছেন। তখন এ কথা বলেছেন রাইসি।

প্রেসিডেন্ট রাইসি এই প্রকল্পকে উন্নয়নের প্রতীক এবং পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে দুই দেশের দৃঢ় সংকল্পের নিদর্শন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি আরো বলেন, আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ‘অটুট’।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এক টুইটবার্তায় তিনি বলেছেন, মাননীয় প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার সম্পর্কে ইরান থেকে দুঃখজনক সংবাদ শুনেছি। প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা নিয়ে ‘সব ঠিক আছে’ এমন সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করছি। আমাদের প্রার্থনা এবং শুভকামনা মাননীয় প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং সমগ্র ইরানী জাতির সঙ্গে রয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এক টুইটবার্তায় লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির আজকের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা এই সঙ্কটের সময়ে ইরানি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি এবং প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধস্ত হওয়ার প্রতিবেদনগুলো যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষণ করছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও নিখোঁজ হেলিকপ্টারটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, আমরা আশা করি, আল্লাহ মহামান্য প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের জাতির কাছে ফিরিয়ে দেবেন। সকলকে তাদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করতে হবে। ইরানি জাতির উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়।

এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশাসনে ‘বিঘ্ন না ঘটানোর’ আহ্বান জানান খামেনি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভারজাকান এবং জোলফা নামক জায়গার একটি ঘন বন জঙ্গল ও পাহাড়ি অঞ্চলে। ইরানি বার্তাসংস্থা ইরনা নিউজ জানিয়েছে, সেখানকার স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, তারা প্রচণ্ড জোরে কিছু আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন।