আন্তর্জাতিক

ফাতিমা ইয়াসমিন এডিবির নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় নবগঠিত সেক্টর গ্রুপ, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব্ পালন করবেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

প্রথম নারী সচিব হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গত বছর যোগ দেওয়া ফাতিমা ইয়াসমিনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

আগামী তিন বছরের জন্য ফাতিমা ইয়াসমিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে বুধবার ম্যানিলাভিত্তিক এ উন্নয়ন সংস্থা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন। ফাতিমা ইয়াসমিন ছাড়াও এডিবির আরো পাঁচজন ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়েছেন।

অগাস্টের শেষদিকে ফাতিমা ইয়াসমিন এডিবিতে যোগ দেবেন জানিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, এডিবির নতুন উন্নয়ন মডেল ‘সেক্টার ও থিম’ এ দুটি গ্রুপ থাকবে। যার মধ্যে একটির নেতৃত্ব দেবেন ফাতিমা ইয়াসমিন।

নতুন এ উন্নয়ন মডেলটি আগামী ৩০ জুন উদ্বোধন করবে এডিবি।

কর্মজীবনে ৩২ বছরের বেশি অভিজ্ঞ ফাতিমা ইয়াসমিন এডিবির নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় নবগঠিত সেক্টর গ্রুপ, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব্ পালন করবেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ফাতিমা ইয়াসমিন বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব। এর আগে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ছিলেন।

তিনি এডিবিতে চলে যাওয়ায় নতুন অর্থসচিব নিয়োগ দিতে হবে সরকারকে।

আন্তর্জাতিক

ইউনেস্কোর আন্তঃসরকারি সমুদ্রবিজ্ঞান কমিশনের (আইওসি) ২০২৩-২৫ মেয়াদের জন্য সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দফতরে আইওসির ৩২তম অধিবেশনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থে‌কে পাঠা‌নো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা‌নো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কাউন্সিলে বাংলাদেশের নির্বাচন বিশ্বে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত সামুদ্রিক শাসন ব্যবস্থা এবং সমুদ্র শাসন বজায় রাখার জন্য বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদ্যোগ, পদক্ষেপ এবং অবদানের বৈশ্বিক স্বীকৃতির বহিঃপ্রকাশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সামুদ্রিক ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা বাংলাদেশকে আইওসি’র নির্বাহী পরিষদে প্রার্থিতা দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এটি প্রযুক্তি-ভিত্তিক সমুদ্রবিজ্ঞান বহুপাক্ষিক বাস্তুতন্ত্রকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে আইওসির বিস্তৃত বৈশ্বিক উপস্থিতি, বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজন সম্পর্কিত বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলোতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সামুদ্রিক ইস্যুতে বেশ কয়েকটি বৈঠকের আয়োজন করেছে। সম্প্রতি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় নবম আইওসিআইডিআইও সম্মেলন এবং ২০২৩ সালের মে মাসে ভারত মহাসাগর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতএব, কাউন্সিলে বাংলাদেশের নির্বাচন জাতিসংঘ ব্যবস্থায় তার সামুদ্রিক কূটনীতির প্রসারে সহায়তা করবে এবং এই প্রতিষ্ঠানের জন্য সুবিধা অর্জন করবে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার করবে।

বাংলাদেশ মধ্য ভারত মহাসাগরের জন্য আইওসি সাব-কমিটির মর্যাদা পরিবর্তন করে আইওসি সাব-কমিশনে পরিবর্তনের জন্য নিবন্ধন করেছে যা আইওসিন্ডিও নামে পরিচিত, যা ৩২ তম আইওসি অ্যাসেম্বলির বর্তমান অধিবেশনে (২১-৩০ জুন ২০২৩) অনুমোদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা রিয়ার এডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম আশা প্রকাশ করেন, আইওসি’র ৩২তম অধিবেশনে একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হবে। তিনি ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা ও তার টিমকে নির্বাচনের সময় নিবেদিত প্রাণ কাজের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

আন্তর্জাতিক

ব্রিটেনে সহসা বাড়ছে না সরকারি খাতের বেতন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সরকারি খাতে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ উপেক্ষার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

যদিও কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দাবি করছেন তারা চরম অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার জন্য সরকারি খাতের বেতন সংস্থাগুলোর প্রস্তাব বাতিলের পরিকল্পনা করেছেন।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেলেন হোয়াটলি সোমবার (২৬ জুন) সকালে স্কাই নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় এ বিষয়ে উন্নতির কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেন।

ইউনিয়ন এবং বিরোধী দলগুলো এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, মুদ্রাস্ফীতি নার্স এবং শিক্ষকদের মজুরি দ্বারা চালিত হচ্ছে না। বরং ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রক্ষণশীলদের দ্বারা নেওয়া সিদ্ধান্তে অর্থনীতি পরিচালিত হচ্ছে।

আজ প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি খাতের বেতন মূল্যস্ফীতির একটি প্রধান চালিকা শক্তি কিনা। এ ব্যাপারে ঋষি সুনাক বলেন, সরকারি ঋণ মুদ্রাস্ফীতিকে আরও খারাপ করে তুলবে। আমাদের নিজস্ব সম্পদ কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়, সে বিষয়ে সরকারকে অগ্রাধিকারের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সেই কারণেই যখন সরকারি খাতের বেতনের কথা আসে। আমাদের ন্যায্য হতে হবে, সেই সঙ্গে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

গত বছর থেকেই যুক্তরাজ্যে আইনজীবী, ফেরিঘাটের শ্রমিক ও অন্য শিল্প খাতের কর্মীরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেন। সেই ধর্মঘট ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্যখাত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেও।

তখন স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, তারা যা বেতন পান, তা দিয়ে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগাম ছাড়া। দৈনন্দিন জীবন যাপন করতে তাদের ভয়াবহভাবে লড়াই করতে হচ্ছে।

ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বেতন বাড়ানোকে ‘যুক্তিসংগত’ বলেছেন। তবে তিনি একই সঙ্গে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বেতন বাড়ালে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বিপন্ন হবে।

আন্তর্জাতিক

গ্রিসের ভোটাররা নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের নির্বাচন করতে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট রক্ষণশীল দলের কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।

রোববার (২৫ জুন) পার্লামেন্টের ভোট হয়। তারপর ৯৫ শতাংশ ব্যালট গণনা হয়ে গেছে।

মিৎসোতাকিসের নেতৃত্বে রক্ষণশীল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি দাবি করেছে, তারা ৪০ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সরকার গঠন করা নিয়ে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই।

মিৎসোতাকিস জানিয়েছেন, এরপর সংস্কার কর্মসূচি রূপায়ণে কোনো বাধা থাকলো না। অন্য কোনো দলের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। মানুষ আমাদের নিরাপদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে।

দলের সদর দপ্তরের বাইরে সমর্থকদের মিৎসোতাকিস বলেছেন, এবার দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধি হবে।

ম্যাকেঞ্জির সাবেক পরামর্শদাতা ৫৫ বছর বয়সী এই নেতার দাবি, সবার পারিশ্রমিক বাড়বে।

এখন যা অবস্থা তাতে ৩০০ সদস্যের পার্লামেন্টে মিৎসোতাকিসের দল পাবে ১৫৭টি আসন। গ্রিসের আইন অনুসারে, পরপর নির্বাচন হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ৫০টি আসন বেশি পাবে। মাস দুয়েক আগের নির্বাচনে মিৎসোতাকিস সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে পাঁচটি আসন কম পেয়েছিলেন। তিনি তাই আবার নির্বাচনের পথে হাঁটেন।

রোববার ৩২টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। ৯৮ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছিলেন। চরম বামপন্থিদের জোট ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। মে মাসের নির্বাচনের তুলনায় তাদের ফল খারাপ হয়েছে।

কমিউনিস্ট পার্টি পেয়েছে ৭ শতাংশ, অতি জাতীয়তাবাদী স্পার্টার্ন পেয়েছে ৫ শতাংশ। পিএএসওকে পেয়েছে ১৩ শতাংশ ভোট।

আন্তর্জাতিক

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজের বার্ষিক আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম রোববার থেকে শুরু হবে। সারা বিশ্বের ২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ হজ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বৈশ্বিক করোনা মহামারি সৌদি কর্তৃপক্ষকে এ হজ আয়োজনের আকার কমাতে বাধ্য করার পর থেকে এটিই হবে সবচেয়ে বড় হজ আয়োজন।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে ৯,২৬,০০০ এরও বেশি মুসলমান হজ পালন করেছেন। এর আগের বছর প্রায় ৫৯,০০০ জন হজ পালন করেছেন। করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ লোক হজ পালন করেছেন।

এবারের হজে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে এবং বয়সের সীমা বাতিল করা হয়েছে। তাই আগের দুই বছরের তুলনায় উপস্থিতি অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সব মুসলমান জীবনে একবার মক্কায় হজ পালনের আকাঙ্ক্ষা লালন করেন এবং সামর্থ্যবানদের অবশ্যই জীবনে একবার এ হজ পালনের বিধান রয়েছে।

আন্তর্জাতিক

প্রায়ই অদ্ভুত কাণ্ডের জন্ম দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। এবারো নতুন এক ঘটনা ঘটালেন অঘটনঘটনপটীয়সী এই প্রধানমন্ত্রী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি থেকে নামার পর এক নারী কর্মী তার মাথার ওপর ছাতা ধরেন; কিন্তু ওই নারীর হাত থেকে ছাতা নিয়ে ওই নারীকেই বৃষ্টিতে ফেলে রেখে একা হেঁটে চলে যান শাহবাজ শরীফ।

ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টুইটার আইডি থেকে প্রথমে পোস্ট করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়- ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠেয় ‘সামিট ফর এ নিউ গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল প্যাক্ট’-এ যোগ দিতে প্যালাইস ব্রগনিয়ার্টে পৌঁছেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

এই ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় টুইটারজুড়ে। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন টুইটার ব্যবহারকারী অনেকে। সাঈদ আব্দুল্লাহ নামের একজন তার এ ঘটনার ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন- ওই নারীকে বৃষ্টিতে ফেলে রেখে কেন চলে এলেন শাহবাজ শরীফ। এ কেমন প্রধানমন্ত্রী?

আরেকজন তাকে পাকিস্তানের মি. বিন বলে উপহাস করে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকের সময় বারংবার কানের এয়ারফোন খুলে যাওযার ঘটনায় ভাইরাল হয়েছিলেন শাহবাজ শরীফ।

আন্তর্জাতিক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিশ্বের কল্যাণ, শান্তি, অগ্রগতি এবং স্থিতিশীলতার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এ কথা বলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে হোয়াইট হাউজের সবুজ লনে নজরকাড়া অভ্যর্থনা দেওয়া হয় মোদিকে। ১৯টি গান স্যালুট দেওয়া হয়। এরপর তারা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন হোয়াইট হাউজের লনে। আঞ্চলিক ও ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করেন নরেন্দ্র মোদি।
বাইডেনের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানান মোদি।

এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে বিশ্ব বদলে গেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত মিত্রতা করে একসঙ্গে কাজ করছে। অংশীদারত্ব শক্তিশালী হয়েছে। এটা হলো গণতন্ত্রের শক্তি। এ সময় তিনি বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র অভিন্ন গণতন্ত্রকে অনুসরণ করে। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, এর ওপর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।

শুরুতেই বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক সংজ্ঞায়িত করবে একবিংশ শতাব্দীকে। স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশ এক হয়ে কাজ করবে।

এ সময় তিনি অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অকাসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বলেন, অভিন্ন মূল্যবোধে দুই দেশ কাজ করবে। উত্থাপন করেন কোয়াড প্রসঙ্গ। বলেন, খাদ্য, জ্বালানি সংকট সমাধান এবং শান্তিপূর্ণ বিশ্বের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে দুই দেশ।

মোদিকে হোয়াইট হাউজে অভ্যর্থনা জানাতে এদিন নজরকাড়া আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রমুখ। হোয়াইট হাউজ ঘিরে ছিলেন ভারতীয়রা এবং ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত মার্কিনিরা।

নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, তাকে যে সম্মান জানানো হয়েছে, তা ১৪০ কোটি ভারতীয়ের, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ৪০ লাখ ভারতীয়ের। তিনি আরও বলেন, তিন দশক আগে বাইরে থেকে হোয়াইট হাউজ দেখেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেছেন। বলেন, ভারতীয়দের জন্য এদিন থেকে হোয়াইট হাউজের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের মেধা, কর্মনিষ্ঠার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন, তার এই অর্জন এনে দিয়েছেন এসব ভারতীয়। নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমরাই জনগণ’- এই শব্দগুলো দিয়ে উভয় দেশের সংবিধান শুরু হয়েছে। বৈচিত্র্যের জন্য উভয় দেশই গর্বিত।

আন্তর্জাতিক

আটলান্টিকে নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে এই জলযানের বাইরের আবরণের অংশ শনাক্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড এর আগে নিশ্চিত করে যে, অনুসন্ধান এলাকার মধ্যে একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি।

পানির তলদেশে অনুসন্ধান চালানো দূর নিয়ন্ত্রিত একটি যান টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের পাশেই নিখোঁজ সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করে।

বিস্তারিত তথ্য জানাতে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে (১৯০০ জিএমটি) যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।

ডাইভ এক্সপার্ট এবং উদ্ধার গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এক্সপ্লোরার ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মিয়ার্নস বিবিসিকে বলেন, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সাবমেরিনটির একটি অবতরণ ফ্রেম এবং পেছনের কভার (আবরণ) রয়েছে।

রোববার উত্তর আটলান্টিকে নিখোঁজ হয় সাবমেরিন টাইটান। এতে করে পাঁচ ক্র্যু টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিলেন। সাবমেরিনটিতে চার দিনের অক্সিজেন মজুত ছিল।

কিছু বিশেষজ্ঞের অনুমান যে, বহিঃঅবকাঠামোগত ব্যর্থতার কারণে এটি বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের শিকার হতে পারে।

মিনিভ্যান-আকারের ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিনটির মালিকানা বেসরকারি কোম্পানি ওশানগেট এক্সপিডিশনসের। কোম্পানিটি এই সাবমেরিন পরিচালনা করেছিল।

ওশানগেট এক্সপিডিশনসের সহ প্রতিষ্ঠাতা গুইলারমো সোহনলিন বিবিসিকে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন সাবমেরিনটির একটি তাত্ক্ষণিক বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।

উত্তর আটলান্টিকে ডুবে যাওয়া টাইটানিকের অবশিষ্ট অংশ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সাবমেরিনটি। এই সাবমেরিনে পাঁচ যাত্রী ছিলেন।

২১ ফুট লম্বা সাবমেরিনটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তারা। রোববার যাত্রা শুরুর ঘণ্টা দুয়েক পর থেকেই তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সাবমেরিনের খোঁজে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয়।

সাগরের প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে সাবমেরিনটির অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অঞ্চলের আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট রাজ্যের আয়তনের দ্বিগুণ। অঞ্চলটি ঝড়প্রবণ এবং দৃশ্যমানতা বেশ দুর্বল হওয়ায় অনুসন্ধান অভিযান চালানো ছিল বেশি চ্যালেঞ্জিং।

ওই সাবমেরিনে থাকা পাঁচ যাত্রীর পরিচয় প্রকাশ করেছে বিবিসি। তারা হলেন হ্যামিশ হার্ডিং, শাহজাদা দাউদ, সুলেমান দাউদ, পল হেনরি নারজিওলেট ও স্টকটন রাশ।

ধ্বংসাবশেষের সন্ধানের খবর পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে ওশানগেট বলেছে, এখন আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সিইও স্টকটন রাশ, শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হ্যামিশ হার্ডিং ও পল হেনরি নারজিওলেটকে আমরা দুঃখজনকভাবে হারিয়েছি।

এই ব্যক্তিরা সত্যিকারের অভিযাত্রী, যারা সাহসিকতার একটি স্বতন্ত্র চেতনা এবং বিশ্বের মহাসাগরগুলো অন্বেষণ এবং রক্ষা করার জন্য গভীর আবেগ ভাগভাগি করে নিয়েছিলেন।

আমাদের হৃদয় এই দুঃসময়ে এই পাঁচ আত্মা এবং তাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে রয়েছে। যারা জীবন হারিয়েছেন, তাদের পরিচিতজনদের জন্যও আমরা শোকাহত।

১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক সাগরে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। প্রায় ১৩ হাজার ফুট সমুদ্রের গভীরে চলে যায় এই বিশাল জাহাজ। কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূরে টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক (সুইস ব্যাংক) থেকে এক বছরে ১০ হাজার ১১৭ কোটি টাকা তুলে নিলেন বাংলাদেশিরা। অবশিষ্ট আছে ৬৮৪ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ১২৪ টাকা ধরে)।

ব্যাংকের হিসাবে ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের আমানত ৫ কোটি ৫২ লাখ সুইস ফ্র্যাংক। আগের বছর যা ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্র্যাংক। বৃহস্পতিবার সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংকটি তাদের ওয়েবসাইটে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে। তবে কোনো বাংলাদেশি তার নাগরিকত্ব গোপন রেখে টাকা জমা করলে, তার তথ্য এই প্রতিবেদনে নেই। সুইস ব্যাংকে আমানতের দিক থেকে এ বছর বিশ্বে প্রথম অবস্থানে যুক্তরাজ্য।

এক বছরে হঠাৎ বিশাল অঙ্কের টাকা উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এর আগে নির্বাচনি বছরগুলোয় যেখানে আমানত বেড়েছে, এবার সেখানে এক বছরে আমানত কমেছে ৯৫ শতাংশ।

প্রতিবছর আমানতের তথ্য ফাঁস করায় পাচারকারীরা সুইস ব্যাংকে টাকা রাখাও এখন আর নিরাপদ মনে করছে না। ফলে এক বছরে তুলে নিয়ে গেছে ১০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই টাকা কোথায় গেছে, কে নিয়েছে, এর কোনো তথ্য ব্যাংকটির বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। তবে ব্যাংকের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য মজুত আছে।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে তথ্যগুলো জানতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত কে বা কারা টাকাগুলো সুইস ব্যাংক থেকে তুলে নিল এবং কোথায় নিয়ে গেল-এসব বিষয়ে দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুইস ব্যাংকের বাইরে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের অর্থ পাচার বাড়ছে। তাদের মতে, অনিশ্চয়তার কারণে বিত্তবানরা দেশকে নিরাপদ মনে করছেন না। ফলে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ পাচার হচ্ছে। ঋণের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা, বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ এবং ঘুস-দুর্নীতির টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেন, শুধু সুইস ব্যাংক নয়, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টেও বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের তথ্য আসছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের যে টাকা রাখা হয়েছে, এর বড় অংশই মূলত দুর্নীতির।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের মূলত তিনটি কারণ। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে দুর্নীতি। কারণ, দুর্নীতি বেড়েছে বলেই অর্থ পাচারও বেড়েছে। এছাড়া দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেও অর্থ পাচার বাড়ছে। তার মতে, পাচার রোধ করতে হলে দুর্নীতি কমিয়ে আনার বিকল্প নেই। পাশাপাশি নাগরিক জীবনেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশিদের আমানত : ২০২২ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের স্থিতি ৫ কোটি ৫২ লাখ ফ্র্যাংক। আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে যা ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্র্যাংক। ২০২০ সালে ৫৬ কোটি ২৯ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৯ সালে ৬০ কোটি ৩০ লাখ। ২০১৮ সালে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ। ২০১৭ সালে ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ। তবে শুধু সুইস ব্যাংক নয়, অন্যান্য সংস্থা থেকেও টাকা পাচারের তথ্য আসছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে টাকা পাচার হয়। বাংলাদেশের বিত্তবানরা নিজ দেশে তাদের সম্পদ রাখাকে নিরাপদ মনে করছে না। তাই তারা বিদেশে টাকা পাচার করছে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। কারণ, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তারা প্রচলিত রাজনৈতিক শক্তির ভেতরেই অবস্থান করছেন।

আন্তর্জাতিক ৬টি সংস্থার রিপোর্টে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের তথ্য আসছে। এগুলো হলো-যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই), সুইস ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (আইসিআইজে), পানামা প্যারাডাইস ও পেনডোরা পেপারস, জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ইউএনডিপি) রিপোর্ট এবং মালয়েশিয়া প্রকাশিত সেদেশের সেকেন্ড হোম রিপোর্ট।

এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সিঙ্গাপুরে বেশকিছু বাংলাদেশির অর্থ পাচারের তথ্য মিলেছে। গত বছরে ডিসেম্বরে প্রকাশিত জিএফআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ বছরে দেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। প্রতি ডলার ১১২ টাকা হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। গড়ে প্রতিবছর পাচার হচ্ছে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের আমানত : সুইস ব্যাংকে আমানত রাখার দিক থেকে এ বছর প্রথম অবস্থানে যুক্তরাজ্য। ২০২২ সালে দেশটিতে যুক্তরাজ্যের আমানতের পরিমাণ ২৯ হাজার ৯৪৩ কোটি ফ্র্যাংক। যুক্তরাষ্ট্র ১৩ হাজার ১০৯ কোটি, সিঙ্গাপুর ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি, চীন ১ হাজার কোটি, রাশিয়া ১ হাজার ৫২৫ কোটি, সৌদি আরব ৫২১ কোটি, ভারত ৩৪০ কোটি, পাকিস্তান ৩৮ কোটি, জাপান ১ হাজার ৩৪২ কোটি এবং নেপালের ৪৮ কোটি সুইস ফ্র্যাংক আমানত রয়েছে।

পাচারের অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ : এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ পাচারকারীদের বিশেষ সুযোগ দিয়েছিল সরকার। কেউ ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে বৈধ করতে পারবে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় এ পর্যন্ত ১ টাকাও ফেরত আসেনি। তবে এ ধরনের সুযোগের সমালোচনা করছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা। বর্তমানে দেশে একজন নিয়মিত করদাতা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দেন। সে হিসাবে অর্থ পাচারকারীদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের টাকার পুরোটাই দেশ থেকে পাচার হয়েছে, তা বলা যাবে না। তবে সিংহভাগই পাচার।

তিনি বলেন, শুধু সুইস ব্যাংক নয়, আরও অনেক দেশে টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর, কানাডা, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই টাকা গেছে। ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, এটা মোটামুটি বলা যায়। আর এই অর্থ পাচারের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত। পরস্পর মিলেমিশেই এ কাজ করছে।

তিনি বলেন, পাচার বন্ধ করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। অপরদিকে পাচারের অর্থ ফেরত আনার দৃষ্টান্ত আমাদের দেশে রয়েছে। সেক্ষেত্রে যেভাবে সৎসাহস, দৃঢ়তা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার, সেখানে ঘাটতি আছে। ফলে টাকা ফেরত আনা যাচ্ছে না।

মোট আমানত : প্রতিবেদন অনুসারে আলোচ্য সময়ে বিশ্বের সব দেশের আমানত বেড়েছে। আলোচ্য বছরে সুইজারল্যান্ডের ২৫৬টি ব্যাংকে আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে যা ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। এ হিসাবে এ বছরে আমানত কমেছে ২৫ হাজার ফ্র্যাংক।

আন্তর্জাতিক

আটলান্টিক মহাসাগরে ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে পাঁচ পর্যটকসহ হারিয়ে যায় ডুবোযান ‘টাইটান’। ছোট সাবমেরিনটির সন্ধানে রাত-দিন চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডার উদ্ধারকারী দল।

এক্ষেত্রে তিন দেশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ডুবোযানটিতে ৪ দিনের অক্সিজেন মজুত ছিল। সে হিসাবে আজ ভোর ৫টায় এই অক্সিজেন শেষ হওয়ার কথা। ফলে পর্যটকদের জীবিত উদ্ধার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। খবর বিবিসি, এএফপি ও সিএনএনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।

খবরে বলা হয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশেনগেটের ডুবোজাহাজটি নিউফাউন্ডল্যান্ডের রাজধানী সেন্ট জনস থেকে প্রায় এক হাজার ৪৫০ কিলোমিটার পূর্ব এবং ৬৪৩ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের কমান্ডাররা। সবাইকে জীবিত উদ্ধারে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞ দল।

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড জানিয়েছে, রোববার টাইটান ডুবে যাওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মাথায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গেল ৪ দিনে সেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করেও এর অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। তারা আরও জানান, কানাডার একটি পি-৩ আকাশযান পানির নিচে ‘শব্দ’ শনাক্ত করেছে। সেটি ছিল ‘আঘাতের মতো শব্দ’।

কিন্তু এ শব্দ কতক্ষণ স্থায়ী ছিল তা জানা যায়নি। এ শব্দ টাইটানের সন্ধান পেতে তাদের সহায়তা করতে পারে বলে আশা কোস্টগার্ড কমান্ডারদের।

পর্যটকবাহী সাবমেরিনে যারা রয়েছেন তাদের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন-৫৮ বছর বয়সি ব্রিটিশ ধনকুবের হামিস হার্ডিং, ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী ৬১ বছর বয়সি স্টকটন রাস। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ৭৭ বছর বয়সি নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডাইভার পল হেনরি নারগোলেট।

আবহাওয়ার কারণে আটলান্টিকে অভিযানের কাজটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এবং জটিল বলেছেন সাবেক নাসা মহাকাশচারী এবং মার্কিন নৌবাহিনীর অধিনায়ক মার্কিন সিনেটর মার্ক কেলি।

১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রথমযাত্রায় বিশাল আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের। দুই টুকরো হয়ে যাওয়া
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। আটলান্টিক মহাসাগরের এ এলাকাটি কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেইন্ট জোন্স থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে।

পর্যটন সংস্থা ওশেনগেট টাইটানিকের ওই ধ্বংসাবশেষ দেখাতে নিয়ে যায় পর্যটকদের। সেজন্য তারা ব্যবহার করে কার্বন-ফাইবারের তৈরি প্রায় ট্রাকের সমান আকারের একটি সাবমারসিবল। যার নাম টাইটান। এটি সাগরতলের ৪০০০ মিটার গভীরে যেতে পারে।