আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের উদ্যোগে সহায়তা প্রদানের জন্য বৈদ্যুতিক যান এবং লোকোমোটিভ সংগ্রহের ক্ষেত্রে জার্মানির বিনিয়োগ চেয়েছেন।

আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

জার্মানিকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে ড. মোমেন বাংলাদেশে জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অফিস খোলার আমন্ত্রণ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তরুণ বাংলাদেশী আবেদনকারীদের স্টুডেন্ট ভিসা সহজতর করার জন্য জার্মান দূতাবাসের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় তারা জার্মান কোম্পানির ই-পাসপোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং আইটি ভিত্তিক সেবাসহ সহযোগিতার অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোর বিষয়েও মতবিনিময় করেন।

ড. মোমেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে জার্মানিকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানান এবং এ যাবৎ জার্মানির সহায়তার কথা স্বীকার করেন।

মন্ত্রী প্রায় ৮ মিলিয়ন অ্যাস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদানের জন্য জার্মানির প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রশংসা করেন।

তিনি নতুন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজকে তার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বায়োরবককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে উদারভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন সর্ব সম্মতিক্রমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়েছে। শুক্রবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

তিনি বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্র ও অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর ১০৯টি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পনসর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণা এগিয়ে নিতে একটি ব্যাপক সমর্থন। রেজুলেশনটির প্রতি এই সমর্থন এবং প্রতিবছর সর্বসম্মতভাবে এটি গ্রহণ শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশাল আস্থারই সাক্ষ্য বহন করে।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রেজুলেশনটি উত্থাপনকালে বলেন, এ বছর রেজুলেশনটি আরও প্রাসঙ্গিক ও জরুরি। কারণ বিশ্বব্যাপী আমরা করোনাভাইরাস মহামারির নজিরবিহীন ও বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছি।

তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেজুলেশনটির প্রাসঙ্গিকতা বহুগুণে বেড়েছে। এর ফলে জাতিসংঘের প্রধান প্রধান কার্যাবলিতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি বৃহত্তর পদচিহ্ন রাখতে পেরেছে এবং একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী রেজুলেশনে পরিণত হতে পেরেছে।

ফাতিমা বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত। যা বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘ সনদের দায়বদ্ধতার পরিপূরক হিসেবেও ভূমিকা রেখে চলেছে।

জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন এবং এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

এ বছরও ৭ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমগুলোতে সবার অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি আরও এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে তা তুলে ধরা হয় ফোরামটিতে।

রেজুলেশনটিতে করোনাকালীন বাস্তবতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে আয়, সুযোগ, তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও টিকার নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যগুলো। এ ছাড়া করোনার সময়ে লিঙ্গবৈষম্য ব্যাপকতর হয়েছে। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, কালিমা লেপন, বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষ অর্থাৎ যেসব বিষয় শান্তিকে বিপন্ন করে তুলে তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে রেজুলেশনটিতে।

এতে সহনশীলতা, বৈষম্য বিলোপ, বহুত্ববাদ, মত প্রকাশ ও কথা বলার স্বাধীনতাসহ ঘৃণাত্বক বক্তব্য মোকাবিলা করার মতো বিষয়গুলো আরও এগিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করোনা পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় রাষ্ট্রগুলো যাতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি কাজে লাগায় সে আহ্বানও জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক নিহত হয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষাবাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত।

তামিলনাড়ুর কুন্নুরের গভীর জঙ্গলে স্থানীয় সময় বুধবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে  দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী সেনা হেলিকপ্টারটি। ওই দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াত আর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতসহ ১৩ জন আরোহী নিহত হয়েছেন। ওই হেলিকপ্টারের একমাত্র জীবিত আরোহী গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংহ তামিলনাড়ুর ওয়েলিংটনের সেনা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

বিপিন রাওয়াত স্বাধীন ভারতের সামরিক ইতিহাসে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার সর্বাধিনায়ক হওয়ার কৃতিত্বের অধিকারী। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি এই পদে নিযুক্ত হন তিনি।

১৯৫৮ সালের ১৬ মার্চ উত্তরাখণ্ডের পৌড়ীর এক গঢ়ওয়ালি রাজপুত পরিবারের জন্ম বিপিনের। তার পরিবারে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ইতিহাস পুরুষানুক্রমিক। বাবা লক্ষ্মণ সিংহ রাওয়ত ছিলেন ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল। সেই রীতি মেনেই সেনায় যোগদান করেন রাওয়াত।

তার স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত  মধ্যপ্রদেশের প্রয়াত রাজনীতিবিদ ছিলেন মৃগেন্দ্র সিংয়ের মেয়ে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন তিনি।

স্বামী সেনার সর্বাধিনায়ক হওয়ায় মধুলিকা ছিলেন ‘ডিফেন্স ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’এর সঙ্গে যুক্ত।

মধুলিকা রাওয়াত ভারতের অন্যতম বড় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আর্মি ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

মৃত সেনা সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে নিয়মিত দেখা যেত মধুলিকাকে।

মৃত সেনা সদস্যদের স্ত্রীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে এই সংগঠন বিউটিশিয়ান কোর্স চালায়। এ ছাড়াও কেক ও চকোলেট বানানো শেখানো হয়। সেই সব কাজে যুক্ত ছিলেন মধুলিকা।

আন্তর্জাতিক

বর্তমান আফগান সরকারকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি না দেওয়া ‘অন্যায্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তালেবান নেতা আনাস হাক্কানি।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের পশ্চিমা সমর্থিত সরকারপ্রধান আশরাফ গনি বিদেশে পালিয়ে যান। এর মধ্যে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে তালেবান। এই ঘটনার দুই সপ্তাহ পর তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে। কিন্তু দেশটিতে নারী অধিকার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনসহ বিভিন্ন ইস্যু তুলে বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘে তালেবান সরকারের প্রতিনিধিত্ব ঠেকাতে সংস্থাটির সাধারণ সভা ভোট দিয়েছে। এর অর্থ হলো- সাবেক আশরাফ গনি সরকারের নিয়োগ করা রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবে। যদিও তালেবান সুহেল শাহিনকে জাতিসংঘে তাদের সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়ে কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য আনাস হাক্কানি বলেন, ‘স্বীকৃতি দিতে শর্তাবলি আরোপ এবং শক্তি প্রয়োগ আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধান করবে না। আফগানিস্তানের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের এই আচারণ অন্যায্য। প্রথমে তারা শান্তি এবং নিরাপত্তার কথা বলেছিল, এখন তারা নতুন শর্তারোপ করে বলছে, সেগুলো মানতে হবে।’

আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় চার মাসের মধ্যে দেশটিতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও মানবিক সঙ্কট বিরাজ করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সঙ্কট কাটাতে তালেবানকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘ভারত এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় না, যা বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চমৎকার ‘সোনালী অধ্যায়’ এ ফাটল ধরাতে পারে।’

সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা (ভারত) এমন কোনো ঘটনাও দেখতে চায় না, যা বাংলাদেশ-ভারতের (সোনালী অধ্যায়) সম্পর্কে কোন ধরনের (ফাটল) ধরাতে পারে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি একটি সৌজন্য বৈঠক ছিল। কারণ আজ (মঙ্গলবার) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সব দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে শ্রিংলার আলোচনা হয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, সংক্ষেপে তারা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত হত্যা ও পানিবন্টনসহ বেশ কয়েকটি অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের সীমান্তের অবাঞ্ছিত ঘটনা রোধে একটি ফর্মুলা দিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে পানিবন্টন সমস্যা সমাধানে পরবর্তী যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক আয়োজনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্যও ঢাকা ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের চলমান ‘সোনালী অধ্যায়’ কীভাবে সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়েও তারা আলোচনা করেছেন।তিনি আরও বলেন, আমাদের এই সম্পর্কটি দৃঢ় করতে হবে…। এটি উভয় দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য প্রয়োজন।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে মধুর অভিহিত করে ড. মোমেন বলেন, দুই দেশ এটিকে আরও উন্নত করতে চায়।

শ্রীংলা মঙ্গলবার সকালে দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এবং আগামী ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের রাষ্ট্রীয় সফরের প্রস্তুতিতে সহায়তা করার জন্য দুই দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত মার্চে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে যোগ দেন এবং ভারতীয় রাষ্ট্রপতির আগামী ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ৫০তম বিজয় দিবসে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এই সফরগুলো আমাদের সম্মানিত করেছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব আগামীকাল (বুধবার) নয়াদিল্লিতে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ২০২১ সালে বিশ্বে ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। সমাজ, সংস্কৃতি ও বিশ্বকে নতুন করে সাজাতে যে নারীরা ভূমিকা রেখেছেন, এ তালিকায় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এবারের তালিকায় নাম থাকা ১০০ নারীর মধ্যে অর্ধেকই আফগানিস্তানের নাগরিক। আফগানিস্তানে কাজ করতে গিয়ে দমন-পীড়নের শিকার হওয়া নারীদের উৎসর্গ করে এবারের তালিকায় ৫০ জন আফগান নারীকে রাখা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন এবং ছবি দেননি।

এ ছাড়া তালিকায় স্থান পেয়েছেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই, সামোয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ফিয়ামে নাওমি মাতাফা, ভারতের আইনজীবী ও অধিকারকর্মী মঞ্জুলা প্রদীপ, সাবেক আফগান নারী পুলিশ সদস্য মোমেনা ইব্রাহিমি, আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের প্রথম নারী পাইলট মহাদেসি মিরজায়ির মতো নারীরাও।

প্রতিবছর নির্দিষ্ট একটি থিমের ভিত্তিতে প্রভাবশালী নারী বাছাই করা হয়। এ বছরের থিম হলো- ‘পৃথিবীর বদলে নারী’।

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির কারণে অনেক মানুষই তাদের জীবনযাপনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে জীবনযাপনে পরিবর্তন ও যাপনের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনে যে নারীরা ভূমিকা রেখেছেন, তারা তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

বিবিসির একটি দল ১০০ প্রভাবশালী নারীকে বাছাই করার জন্য কাজ করে থাকে। এ দলের সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী নারীদের নামের তালিকা জমা দেন।

এরপর বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস নেটওয়ার্কের ভাষা নিয়ে কাজ করা দলের পরামর্শ অনুযায়ী ছোট একটি তালিকা তৈরি করা হয়। যেসব প্রার্থী গত এক বছরে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন, কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন কিংবা সমাজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছেন; তাদেরই মূলত নির্বাচন করা হয়।

আন্তর্জাতিক

সরকারি অফিসে বসে হাতে পিস্তল নিয়ে সেলফি তুলছেন এক নেত্রী। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ঘটনার পর প্রতিপক্ষ দল দাবি করেছে, এই নেত্রীর কক্ষে তল্লাশি চালানো হলে শুধু পিস্তল নয়, বন্দুক, বোমা এমনকি একে-৪৭ রাইফেলও পাওয়া যাবে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে এই নেত্রীর নাম মৃণালিনী মন্ডল মাইতি। তিনি মালদা জেলার তৃণমূলের সিনিয়র নেত্রী।

খবরে আরও বলা হয়েছে, মালদা জেলার এই তৃণমূল নেত্রী মৃণালিনী মন্ডল ‘ওল্ড মালদা পঞ্জায়েত সমতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। স্থানীয় সরকারের ব্লক ডেভলপমেন্ট (বিডিও)অফিসে পিস্তল হাতে তার একটি ছবি ভাইরাল হয়।

এই ঘটনায় তৃণমূলের নেতারা নিজেরাও অস্বস্তিতে রয়েছেন
এই ঘটনায় তৃণমূলের নেতারা নিজেরাও অস্বস্তিতে রয়েছেন

ঘটনার পর মালদা জেলার বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র মন্ডল বলেন, এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করলে পিস্তল ছাড়া আরও অনেক কিছু পাবে। পুলিশ বন্দুক, বোমা এমনকি একে-৪৭ খুঁজে পাবে বলেও মন্তব্য করে তিনি। এই বিজেপি নেতা বলেন, আমি নিশ্চিত মমতা ব্যানার্জি এটা দেখেছেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেবেন না।

এদিকে এই ঘটনায় তৃণমূলের নেতারা নিজেরাও অস্বস্তিতে রয়েছেন। এমন সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে যখন তৃণমূলের প্রধান মমতা ব্যনার্জি ওই জেলায় ভ্রমণ করেছেন। ওই নেত্রীর হাতে সত্যিকারের পিস্তল ছিল, না-কি খেলনা পিস্তল; সেটা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত দাবি করা হয়েছে।

তৃণমূলের রাজ্য মহাসচিব কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, তার মনে হয়েছে এটা সত্যিকারের পিস্তল। এই ঘটনা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে উল্লেখ করে তিনি পুলিশকে ঘটনা তদন্ত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, তৃণমূল নেত্রী মৃণালিনী মন্ডল মাইতি একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। তার স্বামীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারিকে মারধরসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনায় মন্তব্য নিতে তৃণমূল নেত্রী মৃণালিনী মন্ডল মাইতির সঙ্গে এনডিটিভি যোগাযোগ করে। কিন্তু তিনি যোগাযোগে সাড়া দেননি।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে উন্মুখ বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার এক টুইটে এ কথা জানান তিনি।

মোদি বলেন, ‘আজ ভারত ও বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে। আমরা যৌথভাবে আমাদের ৫০ বছরের বন্ধুত্বকে স্মরণ ও উদযাপন করছি।’

মোদি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের বন্ধনকে আরও বিস্তৃত ও গভীর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে আমি উন্মুখ।’

এদিকে জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের উপর মনোনিবেশ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কাজ করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার মৈত্রী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রচারিত দুই মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্বে বিশ্বাস করে চলেছি। একইসঙ্গে এই বর্ষপূর্তি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং সামনের পথ চলা সম্পর্কে চিন্তা করার সুযোগ এনে দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী গতিশীল অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নিজেদের পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য ও এটি একটি উপলক্ষ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল বিষয় এখন জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, বাণিজ্য, ব্যবসা ও যোগাযোগে মনোনিবেশ করা দরকার, যা উভয় পক্ষের জন্য পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তিনি জানান।

আন্তর্জাতিক

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগদানের লক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ১৫ ডিসেম্বর। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে আসছেন।

দিল্লিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ সফরের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে, সফরের প্রস্তুতির লক্ষ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দুদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন মঙ্গলবার। অপরদিকে, ভারতের রাষ্ট্রপতির সফরের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে দেশটির একটি অগ্রগতি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছে।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, সফরকালে দু’ দেশের রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি বছরের ২৬ ও ২৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের প্রতিবেশি প্রথম নীতির বড় স্তম্ভ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রগতিশীল, বিস্তৃত ও কার্যকর সহযোগিতা রয়েছে। এসব ক্ষেত্রসমূহের মধ্যে আছে নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরক্ষা, পানি সম্পদ, বাণিজ্য, পরিবহন ও কানেকটিভিটি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি ও জনগণের পর্যায়ে সম্পর্ক, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ উন্নয়নে অংশীদারিত্ব এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা। কোভিড-১৯ মহামারিকালে উভয় দেশ উভয় দেশ নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঐতিহাসিক উৎসবে ভারতের রাষ্ট্রপতির আসন্ন সফরের মাধ্যমে উভয় দেশ যে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উচ্চ অগ্রাধিকারে বিশ্বাসী তার প্রতিফলন পাওয়া যায়। উভয় দেশের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বহুমুখী অংশীদারির ক্ষেত্রে অভিন্ন প্রত্যাশার পুনরায় অঙ্গীকারেরও প্রতিফলন।

আন্তর্জাতিক

যা ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে আগেই নেদারল্যান্ডসে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বিবিসি জানায়, গত ১৯ ও ২৩ নভেম্বরের মধ্যে নেদারল্যান্ডসে সংগ্রহ করা দুটি নমুনায় ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তখনও ওমিক্রন সংক্রমণের খবর আসেনি।

দক্ষিণ আফ্রিকা করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরন প্রথম শনাক্ত হওয়ার খবর জানায় গত ২৪ নভেম্বর।

নেদারল্যান্ডসে প্রথমদিকের পরীক্ষায় যাদের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে, তাদের কেউ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ভ্রমণ করেছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।

আগে ভাবা হয়েছিল, রোববার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা দুটো ফ্লাইটের যাত্রীরাই নেদারল্যান্ডসে প্রথম ওমিক্রন নিয়ে এসেছেন।

নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে নামা ওই ফ্লাইটের করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৬১ জনের মধ্যে ১৪ জনের দেহে ওমিক্রন পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই যাত্রীদের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে নেদারল্যান্ডসে করোনাভাইরাসের এই ধরনের উপস্থিতি ছিল।

করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ আছে এবং কিছু অঞ্চলে এটি ‘মারাত্মক পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে বলে এরই মধ্যে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সংস্থাটির আশঙ্কা, নতুন এই ধরন বিশ্বের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের এই ধরনে কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নতুন ধরনটির বিরুদ্ধে প্রচলিত কোভিড টিকা কার্যকর কিনা তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এরই মধ্যে ওমিক্রন সংক্রমণ লাফিয়ে বেড়েছে। এছাড়াও, নেদারল্যান্ড ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশেই ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ করাসহ ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।