খেলাধুলা

চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৫৯ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর এতে আইপিএলের পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এলো কেকেআর।

শুক্রবারের ম্যাচের আগে কেকেআর ছিল ষষ্ঠ স্থানে। চেন্নাইকে ৮ উইকেটে হারিয়ে আজিঙ্কা রাহানেরা উঠে এলেন তৃতীয় স্থানে।

মূলত, কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করল চেন্নাই সুপার কিংস। ৯ ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের ব্যবধানে হেরে গেছে সিএসকে। এ নিয়ে টানা পঞ্চম ম্যাচে হারল ধোনির দল সিএসকে।

শুক্রবার টস জিতে চেন্নাইকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কলকাতা অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে। কেকেআরের বোলিংয়ের সামনে ধসে যায় চেন্নাইয়ের ব্যাটিং। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মঈনের হাতে বল দেন রাহানে। চেন্নাইকে প্রথম ধাক্কা দেন মঈন আলী। আউট করেন আগের ম্যাচে অর্ধশতরান করা ডেভন কনওয়েকে। সেই শুরু। আরও একটি ম্যাচে ব্যর্থ রাচিন রবীন্দ্র।

আইপিএলের ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হয় চেন্নাই সুপার কিংস। ৯ উইকেট হারিয়ে সর্বসাকুল্যে স্কোরবোর্ডে ১০৩ রান তুলতে পারে স্বাগতিকরা। জবাবে ১০ দশমিক ১ ওভারেই জয় তুলে নেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কেকেআর।

কেকেআরের তিন স্পিনার মঈন, সুনীল নারাইন ও বরুণ চক্রবর্তীর সামনে এদিন কিছুই করতে পারেননি না চেন্নাইয়ের ব্যাটাররা। ১২ ওভারে মাত্র ৫৫ রান তুলতে পেরেছিল চেন্নাই। এর মধ্যেই উইকেটের পতন হয় ৬টি। পরে ৭৯ রানে ৯ উইকেটের পতন ঘটে চেন্নাইয়ের। সেখান থেকে অংশুল কম্বোজ এবং শিবম দুবের শেষ বেলায় লড়াইয়ের কারণে ১০৩ রানে পৌঁছায় তারা।

১০৪ রান তাড়া করে জিততে যে কেকেআরের বিশেষ সমস্যা হবে না তা বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু যেভাবে কলকাতা জিতল তা হয়তো কেকেআরের সমর্থকেরাও আশা করেননি।

এদিকে আইপিএলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে গুজরাত টাইটান্স। পাঁচটি ম্যাচ খেলে চারটিতে জয় পেয়ে তাদের পয়েন্ট ৮। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে তাদের পয়েন্ট ৮। পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এলো কলকাতা। ছয় ম্যাচ খেলে তৃতীয় জয় পেলেন রাহানেরা। তাদের পয়েন্ট ৬।

৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। পঞ্চম স্থানে রয়েছে পঞ্জাব কিংস। শুক্রবারের ম্যাচের পর ষষ্ঠ স্থানে থাকল লখনৌ সুপার জায়ান্টস। সপ্তম স্থানে রাজস্থান রয়্যালস।

পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, নবম স্থানে চেন্নাই সুপার কিংস আর ১০ম স্থানে রয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।

খেলাধুলা

ব্যাট শুনছিল না কথা, সায় দিচ্ছিল না শরীর। রোহিত শর্মা ধুঁকছিলেন। চাপ বাড়ছিল। তাকে বাদ রেখেই দল সাজানোর পরিকল্পনা কষেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। সেটিই একটু ভিন্ন উপায়ে হয়ে গেল। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো জানিয়েছে, আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে পারবেন না রোহিত। চোট পেয়েছেন মুম্বাইয়ে খেলা ভারতের অধিনায়ক।

ক্রিকইনফো জানিয়েছে, অনুশীলনের সময় হাঁটুতে চোট পেয়েছেন রোহিত। ইনজুরির অবস্থা পুরোপুরি জানাতে না পারলেও, চোট যে গুরুতর তা বাদ রাখার সিদ্ধান্তে বোঝা যায়। রোহিতের চোট কতটা গুরুতর, তা অবশ্য জানা যায়নি।

টসের সময় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া তেমন কিছু রোহিতের ব্যাপারে বলেননি। ঠিক কি কারণে বাদ পড়েছেন, সেটিই সামনে এনেছেন। তবে হার্দিক আশার কথা শুনিয়ে বলেছেন, ‘সে (জাসপ্রিত বুমরাহ) খুব দ্রুতই ফিরবে।’ তবে কবে নাগাদ, তা বলেননি।

রোহিত শর্মা এমন একসময় বাদ পড়েছেন, যখন তাকে নিয়ে বিতর্ক চলছে। দুদিন আগে অনুশীলনের সময় জহির খান ও রিশভ পান্তের সঙ্গে কথোপকথনের সময় রোহিত নেতৃত্ব নিয়ে কিছু বলছিলেন। যা নিয়েই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই ভারতের বর্তমান ও মুম্বাইয়ের সাবেক অধিনায়কের পিণ্ডি চটকিয়েছেন। কেউ কেউ রোহিতের খেলার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

খেলাধুলা

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ভারতের অবস্থান ১২৬, বাংলাদেশের ১৮৫। শক্তিমত্তায় পার্থক্য স্পষ্ট। তারপর আবার খেলাটা ভারতেরই মাটিতে। তবে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচেও দারুণ লড়াই করলো বাংলাদেশ। কখনও কখনও ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকা দল মনে হয়েছে অতিথিদের।

তবে গোলমুখ খুলতে পারেননি হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ। ভারতকে রুখে দিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। শিলংয়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি গোলশূন্য (০-০) ড্র হয়েছে।

ম্যাচের বয়স ৩০ সেকেন্ড না হতেই ভারতের শিবিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের গোলরক্ষক বিশাল বায়েতের ভুলে বল পেয়েছিলেন মজিবুর রহমান জনি। তিনি কাটব্যাক করতে পারলে প্রথম আক্রমণেই এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। পারেননি জনি। ভারত বেঁচে যায় প্রথম মিনিটেই।

১০ মিনিট পর আবার ভুল করে বসেন ভারতীয় গোলরক্ষক বিশাল। এবার সেই ভুলে বল পান মোহাম্মদ হৃদয়। বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারেনি দ্বিতীয় সুযোগও।

১২ মিনিটের মধ্যে দুইবার গোল খাওয়া থেকে বেঁচে গেলে ভারত যেন খেই হারিয়ে ফেলেন। সেই সুযোগ হামজা চৌধুরীকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ চড়াও হতে খেলতে শুরু করে। মোরসালিনের ক্রমে ইমনের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া হায় বাংলাদেশের।

১৯ মিনিটের মধ্যে ৩ বার ভারতের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েও হ্যাভিয়ের ক্যাবরোর দল লিড নিতে পারেনি। শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে থাকা ১৬ হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে তখন নেমে আসে পিনপতন নিরবতা।

শুরুর দিকের বিধ্বস্ত অবস্থা কাটিয়ে ভারত ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। ২২ মিনিটে বাংলাদেশ দলের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে আসে এ ম্যাচের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা তপু বর্মনের ইনজুরি।

ব্যথা পেয়ে তপু স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়লে বদলি হিসেবে নামেন রহমত মিয়া। তপুর মাঠ ছাড়ার পর ভারত আস্তে আস্তে বাংলাদেশের সীমানা চিনতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় ২৮ মিনিটে লিস্টন কোলাসো বক্স থেকে নেন দুর্বল শট। বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমার সেই শট ঠেকাতে কোনো বেগই পেতে হয়নি।

প্রথমার্ধে ভারত সবচেয়ে সহজ সুযোগ পায় ৩০ মিনিটে। পাল্টা আক্রমণ থেকেই সেই সুযোগটি এসেছিল ভারতের সামনে। উদান্তা সিংয়ের শট ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশের তরুণ ডিফেন্ডার শাকিল আহমেদ তপু। ফিরতে বলে বক্স থেকে শট নিয়েছিলেন ফারুক হাজি। তবে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সেই বল নিজের আয়ত্বে নিয়ে দলকে বাঁচান বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

ভারতের বিপক্ষে লিড নিয়ে সুযোগ বাংলাদেশ পেয়েছিল ৪২ মিনিটে। ডান দিক দিয়ে তৈরি হওয়া আক্রমণে ভারতীয় গোলরক্ষকে একা পেয়েছিলেন মজিবুর রহমান জনি।

তবে তিনি ঠিকঠাকমতো শট নেওয়ার আগে দৌড়ে এসে বাধা দেন ভারতের গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের শেষ রক্ষা হয় ভারতের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দুই দেশের প্রথম ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবে।

দ্বিতীয়ার্ধে ভারত তুলনামূলক ভালো খেলেছে। তবে স্বাগতিকদের চড়াও হতে দেয়নি হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ। শেষ ৫ মিনিটে বাংলাদেশ দুইবার ভারতের জালে বল পাঠানোর সুযোগ পেয়েছিল। ৮৯ মিনিটে রহমতের লম্বা থ্রো থেকে ফিরতি বলে সুযোগ পেয়েছিলেন ফাহিম। ভারতের গোলরক্ষক বাম দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন।

তার আগে ভারত গোটা তিনেক সুযোগ পেয়েছিল। শুভাসিসের হেড, সুনিলের শট ঠিকঠাকমত লক্ষ্যে না থাকায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ
মিতুল মারমা, তপু বর্মন (অধিনায়ক) (রহমত মিয়া), তারিক কাজী, শাকিল আহমেদ তপু, হামজা চৌধুরী, মোহাম্মদ হৃদয় (সোহেল রানা), মোরসালিন (সোহেল রানা-২), রাকিব হোসেন, সাদ উদ্দিন, মজিবর রহমান জনি (ফাহিম), শাহরিয়ার ইমন (চন্দন)।

খেলাধুলা

তৃতীয়বারের চেষ্টায় কৃতকার্য হলেন সাকিব আল হাসান। তার বোলিং অ্যাকশনকে বৈধ বলে রায় দিয়েছে ইংল‍্যান্ডের লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার রিপোর্ট। এখন থেকে যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে বোলিং করতে পারবেন সাকিব।

গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রথম সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে সারের হয়ে বোলিং করতে গিয়ে অ‍্যাকশন নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হন তিনি। ফলে ইসিবি (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে সাকিবের বোলিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এরপর এই লাফবোরোর ল‍্যাবেই প্রথমবারে বোলিংয়ের পরীক্ষা দেন সাকিব। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আসে নেতিবাচক। অর্থাৎ অকৃতকার্য হলেন তিনি। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেন ভারতের চেন্নাইয়ে। সেই পরীক্ষায়ও সুসংবাদ পাননি সাকিব। সর্বশেষ তৃতীয়বার পরীক্ষা দিলেন সেই লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল‍্যাবে। এবার সেখান থেকে সুসংবাদ পেলেন তিনি।

লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল‍্যাবে সাকিবের বোলিং অ্যাকশনের সর্বশেষ পরীক্ষা হয়েছে গত ৯ মার্চ। যার ফলাফল সাকিব জেনেছেন গতকাল, বুধবার। সেই ফল অনুসারে- তার বোলিং অ‍্যাকশন এখন বৈধ।

সর্বশেষ বোলিং পরীক্ষায় সাকিব মোট ২২টি ডেলিভারি দিয়েছিলেন। যার প্রায় সবই ত্রুটিমুক্ত। দু-একটি ডেলিভারিতে সামান্য সমস্যা থাকলেও তা ধরার মধ্যে নেননি লাফবোরোর বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, বোলিংয়ের পরীক্ষা দেয়ার জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ইংল্যান্ডে থাকছেন সাকিব। লন্ডনের কেনিংটন ওভালের কাছের এক হোটেলে প্রায় দুই সপ্তাহ সারে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন কিয়া ওভালে। সেই অনুশীলনে সাকিবকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছে সারে। প্র্যাকটিস উইকেট, বিশেষজ্ঞ কোচ, জিমনেসিয়াম- সব সুযোগ-সুবিধাই সাকিব পেয়েছেন। সারের উদ্দেশ্য হলো, সাকিবকে দলে নেয়া।

বোলিংয়ের পাশাপাশি সাকিব ব্যাটিং অনুশীলনও করে গেছেন। প্রায় দুই সপ্তাহের অনুশীলনের পর তৃতীয়বারের মত পরীক্ষা অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন তিনি।

খেলাধুলা

শতবর্ষ পূর্তিতে ভিন্ন আয়োজন হয়েছিল। দেড়শ বছর পূর্তিকেও আলাদা করে রাখার পরিকল্পনা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, টেস্ট ক্রিকেটের পথচলার শুরুর ভেন্যুতেই বসবে ১৫০ বছর পূর্তির ম্যাচ। খেলাটি হবে ডে-নাইট। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড লড়াই চলবে গোলাপি বলে।

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৮৭৭ সালে প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। ঐতিহাসিক সেই ভেন্যুতে ২০২৭ সালের মার্চেই হবে মাইলফলকের সাদা পোশাকের লড়াই।

টেস্টের একশ বছর পূর্তিতেও বিশেষ টেস্টের আয়োজন হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। মেলবোর্নের সেই টেস্টে অস্ট্রেলিয়া জেতে ৪৫ রানে! টাইমলেস টেস্টের সেই সময় ১৮৭৭ সালেও অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে জিতেছিল।

বিশেষ টেস্টটি মাঠে গড়াবে ১১ থেকে ১৫ মার্চ। যার মধ্য দিয়ে মেলবোর্নের ১ লাখ দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ভেন্যুটিতে এবারই প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট হতে যাচ্ছে। খেলা হবে গোলাপি বলে। ২ বছর আগেই সব কিছু আয়োজন করে রাখছে মেলবোর্ন।

খেলাধুলা

এক যুগ পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফের চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। টুর্নামেন্টের ৯টি আসরের মধ্যে তিনবার শিরোপা জিতে রেকর্ড গড়ল টিম ইন্ডিয়া।

সবশেষ ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত।

আইসিসির ওয়ানডে ফরম্যাটে দীর্ঘ ১২ বছর পর আজ ফের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হলো রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল।

তবে ২০০২ সালে টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরে শ্রীলংকার সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল।

এতদিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দুটি শিরোপা জিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে ছিল ভারত।

আজ নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শীর্ষে উঠে গেল টিম ইন্ডিয়া।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরে প্রথমবার ফাইনালে উঠেই ভারতকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পায়। ২৫ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে সেই ভারতের কাছেই হেরে গেল নিউজিল্যান্ড।

রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে উড়ন্ত সূচনা করে নিউজিল্যান্ড।

ইনিংসের প্রথম ৪৭ বলে কিউইদের সংগ্রহ ছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান। ইনিংসের শুরু থেকে গড়ে সাতের উপরে রান করে যাওয়া দলটি এরপর মাত্র ৫১ রানে প্রথমসারির ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

উইলি ইয়াং, রাচিন রবিন্দ্র, কেন উইলিয়ামসন ও টম ল্যাথামের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এরপর গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারেল মিচেল দলকে খেলায় ফেরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তারা ৮৭ বলে মাত্র ৫৭ রানের জুটি গড়েন।

শেষ পর্যন্ত ড্যারেল মিচেলের ১০১ বলের গড়া ৬৩ এবং মিচেল ব্রাসওয়েলের ৪০ বলের অপরাজিত ৫৩ রানের সুবাদে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান করে নিউজিল্যান্ড।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ব্যাটিং তাণ্ডব চালান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দলীয় রান যখন ৬৫ তখন রোহিত শর্মা ফিফটি পূর্ণ করেন।

রোহিত উইকেটের একপ্রান্তে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকালেও অন্যপ্রান্তে দেখেশুনে ব্যাটিং করে যান তরুণ ওপেনার শুভমান গিল। তিনি ৫০ বলে ৩১ রান করে দলীয় ১০৫ রানে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন।

এমন ভালো সূচনার পরও ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২ বল খেলে ১ রানে আউট হয়ে ফেরেন ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। দলীয় ১২২ রানে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ওপেনার রোহিত শর্মাও। তার আগে ৮৩ বলে ৭টি চার আর তিন ছক্কার সাহায্যে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৭৬ রান।

এরপর অক্ষর প্যাটেলকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৭৫ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন স্রেয়াশ আইয়ার। দলীয় ১৮৩ রানে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন স্রেয়াশ। তিনি ৬২ বলে দুই চার আর দুই ছক্কায় ৪৮ রান করেন।

দলীয় ২০৩ রানে ফেরেন অক্ষর প্যাটেল। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেন ৪০ বলে ২৯ রান। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নেমে ১৮ বলে ১৮ রান করে ফেরেন অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া।

তবে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নামা আরেক অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে ৯ বলে ১৩ রানের ছোট এবং কার্যকরী জুটি গড়ে ৬ বল আগেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লোকেশ রাহুল।

খেলাধুলা

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নবম আসরের ফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। আজ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড ৫০ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

আগামী ৯ মার্চ দুবাইয়ে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত।

লাহোরে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ রানের সূচনা পায় নিউজিল্যান্ড। জুটিতে ২১ রান অবদান রেখে আউট হন ওপেনার উইল ইয়ং।

দ্বিতীয় উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন রাচিন-উইলিয়ামসন জুটি ১৫৪ বলে ১৬৪ রান যোগ করেন। জুটি গড়ার পথে ৯৩ বলে ওয়ানডেতে পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রাচিন। ক্যারিয়ারের সবগুলো ওয়ানডে শতক আইসিসি ইভেন্টে করেছেন তিনি। আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ সেঞ্চুরির মালিকও এখন রাচিন।

সেঞ্চুরির পর পেসার কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০১ বলে ১০৮ রানে আউট হন রাচিন।

এরপর ড্যারিল মিচেলের সাথে ৩৯ রান যোগ করার পথে ৯১ বলে ওয়ানডেতে ১৫তম সেঞ্চুরি করেন উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরপরই উইয়ান মুল্ডারের শিকার হন তিনি। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯৪ বলে ১০২ রান করেন উইলিয়ামসন।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একই ইনিংসে দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে এটি ষষ্ঠ ঘটনা।

দলীয় ২৫১ রানের মধ্যে রাচিন ও উইলিয়ামসন ফেরার পর নিউজিল্যান্ডকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। পঞ্চম উইকেটে মিচেলের সাথে ৩০ বলে ৫৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ব্রেসওয়েলকে নিয়ে ২২ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়েন ফিলিপস। ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৬২ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।

৪টি চার ও ১টি ছক্কায় মিচেল ৩৭ বলে ৪৯, ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ফিলিপস ২৭ বলে অপরাজিত ৪৯ এবং ১২ বলে ১৬ রান করেন ব্রেসওয়েল।

দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিডি ৩টি ও রাবাদা ২টি উইকেট নেন।

জবাবে ২০ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হবার পর দ্বিতীয় উইকেটে ১০৫ রান যোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার তেম্বা বাভুমা ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি করেন। বাভুমা ৫৬ ও ডুসেন ৬৯ রান করেন।

দলীয় ১৬১ রানের মধ্যে বাভুমা-ডুসেনের বিদায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একাই লড়াই করেন ডেভিড মিলার। সতীর্থরা সঙ্গ দিতে না পারায় ২৫৬ রানে নবম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এসময় অন্যপ্রান্তে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মিলার।

এরপর শেষ উইকেটে লুঙ্গিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর চার-ছক্কার ঝড় বইয়ে দেন মিলার। ইনিংসের ৪৯তম ওভার শেষে তার রান গিয়ে দাঁড়ায় ৮২।

পেসার কাইল জেমিসনের করা শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ১৬ রান তুলে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান মিলার। শেষ বলে ২ রান নিয়ে ওয়ানডেতে সপ্তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

লুঙ্গির সাথে ২৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রান যোগ করে দলের হার এড়াতে পারেননি মিলার। ৯ উইকেটে ৩১২ রান পর্যন্ত যেতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।

মিলার ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৭ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার ৩টি উইকেট নেন।

খেলাধুলা

ভারতকে আড়াইশর মধ্যে আটকে দিয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না নিউজিল্যান্ড। ব্যাটিং ব্যর্থতায় লক্ষ্য থেকে বেশ দূরেই থেমেছে তারা। বরুণ চক্রবর্তীর ঘূর্ণিতে কিউইদের ৪৪ রানে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে ভারত। আর এই হারের ফলে রানার্স আপ হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতের দেওয়া ২৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বেশিরভাগ কিউই ব্যাটার পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পাননি। শুধু অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসন-ই যা একটু লড়াই করেছেন। ১২০ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৮১ রান তুলতে পেরেছেন তিনি।

ভারতীয় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী স্রেফ ৪২ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেছেন। আরেক স্পিনার কুলদীপ যাদব ঝুলিতে পুরেছেন ২ উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল না ভারত। ৩০ রানের মধ্যেই কোহলি, রোহিত ও শুবমান ধরেন সাজঘরের পথ। তবে চারে নেমে শ্রেয়াস আইয়ারের ৭৯, আর হার্দিক পান্ডিয়া (৪৫) ও অক্ষর প্যাটেলের (৪২) চল্লিশোর্ধ্ব দুই ইনিংসে সম্মানজনক স্কোর পায় ভারত। তাদের ব্যাটে চড়ে ৫০ ওভারে ভারত জমা করে ৯ উইকেটে ২৪৯ রান।

কিউই পেসার ম্যাট হেনরিও বরুণের সমান ৪২ রান খরচায় ঝুলিতে পোরেন ৫ উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত কিউইদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ঢাকা পড়ে গেছে হেনরির দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্য।

ভারত-নিউজিল্যান্ডের এই ম্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব। এবার সেমিফাইনালের পালা। আগামী ৪ মার্চ প্রথম সেমিফাইনালে গ্রুপ ‘বি’র রানার্স আপ অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে ভারত। পরদিন (৫ মার্চ) গ্রুপ ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবিলা করবে নিউজিল্যান্ড।

এই দুই ম্যাচের জয়ী দল আগামী ৯ মার্চ মেগা ফাইনালে মুখোমুখি হবে।

খেলাধুলা

২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে প্রাইজমানি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল আইসিসি। ২০২৭ সালের আসরের তুলনায় যা ৫৩ শতাংশ বেশি।

সে হিসেবে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে থেকে আসর শেষ করা দুই দল পাবে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। তাদের চেয়ে সপ্তম ও অষ্টম স্থানে থাকা দুই দল প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার ডলার কম পাবে।

এবারের আসরে ইংল্যান্ড হেরেছে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই। তাতে বাংলাদেশের ষষ্ঠ স্থান নিশ্চিত হয়ে গেছে। এতে আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। প্রাইজমানি হিসেবে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ঢুকলো শান্তবাহিনীর পকেটে।

বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের দুটিতে হারের পর তৃতীয়টি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। আর তাতে সমান ১ পয়েন্ট পেলেও রানরেটে এগিয়ে থাকায় স্বাগতিক পাকিস্তানের উপরে ছিল বাংলাদেশ। এদিকে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে অষ্টম স্থানে নেমে গেছে ইংল্যান্ড। তাদের পয়েন্ট শূন্য। ১ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে সপ্তম স্থানে।

আইসিসির ঘোষণা অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়ায় ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার পেতো বাংলাদেশ। এর সঙ্গে সপ্তম হলে আরও ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার মিলতো। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ পেতো ২ লাখ ৬৫ হাজার ডলার বা প্রায় ৩ কোটি ২১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। কিন্তু এখন ষষ্ঠ হিসেবে আসর শেষ করার তারা পাচ্ছে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমান প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার বেশি।

এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর রানার্সআপ দল পাবে ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া দুই দল পাবে ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

খেলাধুলা

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে ভারত। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারায় ভারত।

তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিতে এক পা ভারতের। পাকিস্তান আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে। জবাবে কোহলির অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪২.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে জয় নিশ্চিত করে ভারত।
ভারতের যখন জিততে দরকার ২ রান, তখন সেঞ্চুরি করতে লাগে তার ৪ রান! হতাশ করেননি তিনি। ৪৩তম ওভারের তৃতীয় বলে খুশদিল শাহর ডেলিভারি ঠেলে দিলেন এক্সট্রা কাভার দিয়ে। বল চলে গেলো বাউন্ডারির বাইরে। ভারতের জয় নয়, পুরো মাঠে আনন্দ ছড়িয়ে দিলো কোহলির ৫১তম সেঞ্চুরি। এই হারে পাকিস্তান খাদের কিনারায়। তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচের দিকে। তবে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে হারালেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের।

সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেছেন সৌদ শাকিল। জবাবে খেলতে নেমে ৪২ ওভার ৩ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন বিরাট কোহলি। শচিন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৪ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে রেকর্ড সমৃদ্ধ করা ৫১তম সেঞ্চুরি উপহার দিলেন কোহলি। ৭ চারে ১১১ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা তিনিই।

৩১ রানে ওপেনিং জুটি ভেঙেছিল ভারতের। রোহিত শর্মাকে শুরুতে হারানোর প্রভাব এতটুকু পড়তে দেননি কোহলি ও শুবমান গিল। রোহিত শর্মা ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। তবে ১৫ বলে ২০ রানের বেশি করতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। আরেক ওপেনার শুবমান গিলও একই মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫২ বলে ৪৬ রান। তিনে নেমে এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন বিরাট কোহলি। পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ইনিংসের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি। ১১১ বল খেলে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তাছাড়া শ্রেয়াস আইয়ার করেছেন ৬৭ বলে ৫৬ রান।

এর আগে ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেন ভারতীয় বোলাররা। ছয়জন বোলার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করলেন রোহিত। তিনজন পেসার, বাকি তিনজন স্পিনার। মোহাম্মদ শামির পেসতোপ সামলে নিলেও পাকিস্তান পড়ে কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিপাকে। টিকে থাকার লড়াইয়ে আড়াইশরও কম রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।