খেলাধুলা

কলকাতায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শুক্রবার ৮ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজও জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে ভারত। এর পাশাপাশি রোহিত শর্মার দল ১০০তম টি-টোয়েন্টি মাইলফলকেও নাম লিখিয়েছে।

বছরখানেক আগে পাকিস্তান এই মাইলফলকে নাম লিখিয়েছিল। তবে সময়ের হিসাবে দ্রুততম না হলেও ম্যাচের হিসাবে পাকিস্তানকে ভারত পার হয়ে গেছে।

গত বছরের এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসেছিল পাকিস্তান দল। সে মাইলফলকে পৌঁছাতে তাদের লেগেছিল ১৬৪ ম্যাচ। শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতের ১৫৫তম।

তালিকার তিনে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৪৭ ম্যাচে ৮৬টি জয় পেয়েছে। সুতরাং তাদের পক্ষেও ভারতের রেকর্ড ভাঙা সম্ভব হবে না। শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, তালিকায় পরে থাকা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষেও ভারতের রেকর্ড ভাঙা সম্ভব নয়।

এই দলগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এরই মধ্যে ভারতের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ম্যাচ কম খেললেও ১০০-তে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় জয়ের সংখ্যার চেয়ে ম্যাচসংখ্যায় ভারতের সঙ্গে তাদের ব্যবধান কম।

এদিক থেকে শুধু আফগানিস্তানই হতে পারে ভারতের রেকর্ডের পথে বড় হুমকি! টি-টোয়েন্টিতে জয়ের সংখ্যার তালিকায় নবম আফগানিস্তানের এই মুহূর্তে জয়ের সংখ্যা ৬০, কিন্তু এত জয় পেতে তাদের ম্যাচ লেগেছে মাত্র ৮৮টি। অন্তত ৫০টি জয় আছে, এমন দলগুলোর মধ্যে জয়ের হারের বিচারে আফগানিস্তানের ওপরে আর কেউ নেই, দুইয়ে ভারত।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১২৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। এর মধ্যে জিতেছে মাত্র ৪৩টি। অন্তত ৪০ ম্যাচ জিতেছে, এমন ১২টি দলের মধ্যে জয়ের হারে সবার তলানিতে বাংলাদেশ।

খেলাধুলা

টেস্টের পর আরেক সংস্করণে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার হাতছানি। স্বাভাবিকভাবেই মাহমুদুল হাসান জয় ভাসছেন খুশির জোয়ারে। তবে ভালো করেই জানেন, এটা কেবল প্রথম ধাপ। লড়াই করেই জায়গা করে নিতে হবে। সেখানে মুখোমুখি হতে হবে রশিদ খান, মোহাম্মদ নবি, মুজিব উর রহমানদের উঁচুমানের স্পিনের। যুব বিশ্বকাপজয়ী মাহমুদুল বললেন, সহজাত ক্রিকেট দিয়েই উতরাতে চান কঠিন এই পরীক্ষায়।

পরিবর্তনের ছড়াছড়ির মধ‍্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম‍্যাচের ওয়ানডে দলে ডাক মিলেছে মাহমুদুলের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে খেলেছেন স্রেফ ১৩ ম‍্যাচ। ২০১৯ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ দিয়ে এই সংস্করণে অভিষেক তার। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপির হয়ে ৭ ম‍্যাচে ২৭.১৪ গড়ে করেছেন ১৯০ রান, সর্বোচ্চ ইনিংস ৮৫ রানের।

৫০ ওভারের ক্রিকেটে তার সেরাটা দেখা যায় বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়ে। গত বছর মার্চে আইরিশদের বিপক্ষে ৫ ম‍্যাচে এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটিতে করেন ২৮৫ রান।

২০২০ সালে বাংলাদেশের যুবাদের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান ছিল মাহমুদুলের। সেমি-ফাইনালে নিউ জিল‍্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরি। গত জানুয়ারিতে কিউইদের বিপক্ষেই মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় ৭৮ রানের ইনিংসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেন আগমণী বার্তা।

ঐতিহাসিক জয় পাওয়া সেই টেস্টেই চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান মাহমুদুল। চোট কাটিয়ে বিপিএলে এসেও ভালো করে ডাক পেয়ে গেলেন ওয়ানডে দলে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মঙ্গলবারের ভিডিও বার্তায় এই তরুণ জানালেন তার প্রতিক্রিয়া।

“অবশ‍্যই আমি অনেক খুশি। টেস্টের পর ওয়ানডে দলেও ডাক পেয়েছি। তাই আমি যদি সুযোগ পাই, দেশের জন‍্য ভালো করার চেষ্টা করব।”

“সাদা বল ও লাল বলের খেলা পুরোই ভিন্ন। তিনটা ওয়ানডে আছে, এই তিনটা ম‍্যাচে কীভাবে আমি ভালো করতে পারি, সেটা নিয়ে ভাবছি। আমার সহজাত ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব। টেস্টে একটু সময় নিয়ে ব‍্যাটিং করা যায়। ওয়ানডেতে ওভার নির্দিষ্ট, ওখানে হাই ইনটেনসিটি থাকে, চাপ থাকে। খুব তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারলে, ভালো পারফরম‍্যান্স করা যায়। ”

চট্টগ্রামে আগামী ২৩, ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি হবে ওয়ানডে তিনটি। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায় এই সিরিজে প্রতিটি ম‍্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। রশিদ, মুজিব ও নবির মতো স্পিনার থাকায় বাংলাদেশের জন‍্য বড় চ‍্যালেঞ্জ দেখছেন মাহমুদুল।

“আফগানিস্তান এখন বিশ্বের ভালো দলগুলোর একটি। ওদের টপ কোয়ালিটি স্পিনার আছে। যদি আমরা আমাদের সেরা পারফরম‍্যান্স করতে পারি, তাহলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।”

লম্বা সময় ধরে বড় দৈর্ঘ‍্যের ক্রিকেটে ডুবে ছিলেন মাহমুদুল। খেলেন জাতীয় ক্রিকেট লিগ ও নিউ জিল‍্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। মাঝে ঘরের মাঠে পাকিস্তান টেস্ট সিরিজের দলেও ছিলেন তিনি, দুই টেস্টের ওই সিরিজে খেলার সুযোগ পাননি যদিও। টানা লাল বলে খেলে অনুভব করছিলেন, ব‍্যাট সুইং একটু কমে গেছে। তবে বিপিএল খেলতে এসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রধান কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও পরামর্শক স্টিভ রোডসের কোচিংয়ে ঠিক করে নিয়েছেন সেটা।

“বিপিএলে যোগ দেওয়ার পর সালাউদ্দিন স‍্যারের সঙ্গে ব‍্যাট সুইং নিয়ে কাজ করলাম। চার দিনের ম‍্যাচ খেলার কারণে, ব‍্যাট সুইং একটু মন্থর হয়ে যায়। তারপর বিপিএলে স‍্যারের সঙ্গে ব‍্যাট সুইং নিয়ে কাজ করার পর এখন সব ঠিকঠাক আছে।”

“সালাউদ্দিন স‍্যারের কাছ থেকে টেকনিকের কিছু বিষয় আমি শেখার চেষ্টা করছি। স্টিড রোডসও আমাকে কিছু ড্রিল দেখিয়ে বলেছেন, যখন তিনি থাকবেন না, তখনও সেই ড্রিলগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন‍্য। এগুলো করলে সাদা বলে উন্নতি করা যাবে। দুই জনের কাছ থেকেই টেকনিকের কিছু বিষয় শেখার চেষ্টা করেছি। উনারা যখন থাকবেন না, তখনও আমি যেন ওই ব‍্যাপারগুলো কন্টিনিউ করতে পারি। এই ব‍্যাপারে স‍্যারেরা আমাকে আইডিয়া দিয়েছেন।”

খেলাধুলা

বিপিএল অষ্টম আসরে সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করা বরিশাল সবার আগেই উঠে গেল ফাইনালে।

সোমবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে বিপিএলের দুইবারের শিরোপাজয়ী দল কুমিল্লাকে ১০ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বরিশাল।

কুমিল্লার জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩২ রান। হাতে ছিল ৬ উইকেট। কিন্তু শেষ দিকে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি কুমিল্লার বিদেশি তারকা ফাফ ডু প্লেসি ও সুনিল নারিনরা।

শেষ দিকে দুর্দান্ত বোলিং করেন মেহেদি হাসান রানা, ডুয়াইন ব্রাভো ও মুজিব উর রহমানরা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় কুমিল্লা।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। আফগান  অফ স্পিনার মুজিব উর রহমানের করা ওভারে ৭ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় কুমিল্লা। ১০ রানের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বরিশাল।

তবে হেরে গেলেও দুশ্চিন্তার কারণ নেই কুমিল্লার। আরও একটি সুযোগ থাকছে তাদের জন। প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচের জয়ী দল চট্টগ্রামের সঙ্গে বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জিতলে শুক্রবার বরিশালের সঙ্গে ফাইনাল খেলার সুযোগ পাবে কুমিল্লা।

জিতলেই ফাইনাল নিশ্চিত। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই বিপিএলের অষ্টম আসরের প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয় বরিশাল-কুমিল্লা।

সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিস গেইলের সঙ্গে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করেন তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। ৯ ওভার শেষে বরিশালের সংগ্রহ ছিল গেইলের উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান। খেলার এমন অবস্থায় অনুমেয় ছিল স্কোর দুইশ পার করতে পারে বরিশাল।

কিন্তু এরপর কিছু ভুলের কারণে শেষ ১১ ওভারে ৫৯ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩/৮ রানে ইনিংস গুটায় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪৩/৮ রান (মুনিম শাহরিয়ার ৪৪, ক্রিস গেইল ২২, জিয়াউর রহমান ১৭, ডুয়াইন ব্রাভো ১৭, নুরুল হাসান সোহান ১১; শহিদুল ৩/২৫, মঈন আলী ২/২৩)।

কুমিল্লা: ২০ ওভারে ১৩৩/৭ রান (লিটন দাস ৩৮, মঈন আলী ২২, ফাফ ডু প্লেসি ২১, মাহমুদুল হাসান জয় ২০, সুনিল নারিন ১৭; মেহেদি হাসান রানা ২/১৫, শফিকুল ইসলাম ২/১৬, মুজিব উর রহমান ২/৩৩)।

ফল: বরিশাল ১০ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: মেহেদি হাসান রানা (বরিশাল)।

খেলাধুলা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে শনিবার।

গ্রুপ পর্বের শেষ দিন প্লে অফ নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স।

এর আগে প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

গ্রুব পর্ব শেষে এখন শীর্ষে আছে ফরচুন বরিশাল। ১০ ম্যাচ শেষে ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে তারা। ১০ ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

আর ১০ ম্যাচ শেষে সমান ১০ পয়েন্ট করে নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থস্থানে আছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স।

প্লে অফ শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর বিপিএলের পর্দা নামবে ১৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের মাধ্যমে।

প্লে অফে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি দিনের প্রথম ম্যাচটি হবে এলিমিনেটর। এই ম্যাচে খেলবে তৃতীয় ও চতুর্থস্থানে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স।

এলিমিনেটর ম্যাচে যে দল হারবে সে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে।

১৪ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে প্রথম কোয়ালিফাইয়ার। এই ম্যাচে খেলবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশাল। এ ম্যাচে যে জয় পাবে সে দল সরাসরি ফাইনালে খেলবে।

১৬ ফেব্রুয়ারি হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচ। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে এলিমিনেটরর ম্যাচের জয়ী দল ও প্রথম কোয়ালিফাইয়ারের পরাজিত দল খেলবে। এখানে যে জয় পাবে সে ফাইনালে যাবে।

খেলাধুলা

বাংলাদেশের মাঠে প্রস্তুতি নিয়েই বাংলাদেশকে হারানোর অভিযানে নামবে আফগানিস্তান। দুই দলের সিরিজের আগে এখানে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার অনুরোধ করেছিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে আফগানদের ক্যাম্প করার অনুমতি দিয়েছে বিসিবি।

খেলাধুলা

ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছেন তামিল নাড়ুর সাবেক ব্যাটসম্যান রাজাগোপাল সতিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রলোভন দেখানো বানি আনান্দ নামের একজনের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গালুরু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।

খেলাধুলা

তিনশ ছাড়ানো রান তাড়ায় ৬৩ রানে নেই ৪ উইকেট। চাপের মধ্যে দুর্দান্ত এক ইনিংসে আশা জাগালেন দাসুন শানাকা। কিন্তু যথেষ্ট হলো না শ্রীলঙ্কা অধিনায়কের প্রচেষ্টা। ব্যাটসম্যানদের এনে দেওয়া বড় পুঁজির পর বোলারদের নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়ে পেল দারুণ জয়।

খেলাধুলা

কোভিড মহামারিকালের প্রথম বিপিএলে থাকছে না ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম)। করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণের কারণে বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়াতেই ডিআরএস রাখা যাচ্ছে না বলে দাবি বিপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলের। ধারাভাষ্যকারদের ক্ষেত্রেও বেশি ‘ফোকাস’ রাখা হচ্ছে স্থানীয়দের দিকেই।

আগামী শুক্রবার শুরু হচ্ছে বিপিএলের অষ্টম আসর। ২০১৯ সালের আসরে ডিআরএস থাকলেও শুরুতে ছিল না আল্ট্রাএজ প্রযুক্তি। প্রবল সমালোচনার পরে তা যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এবার গোটা ডিআরএসই নেই। বিশ্বের শীর্ষ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এই চিত্র অকল্পনীয়।

বিপিএল গর্ভনিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বললেন, পরিস্থিতির কাছে তারা অসহায়।

“কোভিড পরিস্থিতিতে আমরা রাখতে পারছি না ডিআরএস। এখন ওরা (টেকনিশিয়ানরা) কেউ ফ্লাই করতে পারছে না। ওদের দুইটা টিম এখন দুই দেশে আছে, সেখান থেকে এই অবস্থায় বাংলাদেশে আসতে পারবে না।”

“ডিআরএসের সোর্স সারাবিশ্বে একটাই (হক-আই কোম্পানি)। ওরাই দেয় সব জায়গায়। ওমিক্রনের কারণে কেউ আসতে চাচ্ছে না। বিপিএলের পর আফগানিস্তান সিরিজ। সেটিতেও রাখতে পারব কিনা, সেটাও কথা বলতে হচ্ছে।”

শেষ নয় এখানেই, বিসিবির এই পরিচালক শোনালেন আরেকটি বড় আশঙ্কার কথাও।

“আমাদের বিদেশি আম্পায়ার ঠিক করা ছিল ইংল্যান্ডের, সেও জানিয়ে দিয়েছে যে আসতে পারবে না। এখন আমরা আবার বিকল্প খুঁজছি। হয়তো শ্রীলঙ্কা বা ভারত থেকে দুইজনকে নেব।”

ডিআরএস না থাকা মানে নিশ্চিতভাবেই বিতর্কের অবকাশ রেখে দেওয়া। বিদেশি আম্পায়ার কিংবা মানসম্পন্ন বিদেশি আম্পায়ার না পাওয়া গেলে সেই পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে, সংশয় নেই। বিপিএলের মতো আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর খরচ প্রচুর। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দলকে ভুগতে হলে তা মেনে নেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। ডিআরএস ও ভালো বিদেশি আম্পায়ার না থাকা মানে তাই বিতর্ককেই ডেকে আনা।

ইসমাইল হায়দার মল্লিক তবু চেষ্টা করলেন ক্রিকেটীয় বাস্তবতার কথা তুলে ধরতে।

“ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে তো আসলে আলোচনার কিছু নেই। ডিআরএস পাইনি, তাদেরকে জানিয়ে দেব। আর শুধু বিপিএলে তো নয়, আন্তর্জাতিক সিরিজেও ভুল সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও আম্পায়াররা আমাদের ৪-৫টা ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এটা গোটা বিশ্বেই হয়। সবাইকে তা বুঝতে হবে।”

“একপাশে বিদেশি আম্পায়ার থাকবে, আরেকপাশে দেশি। আমার মনে হয় না, আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থাকবে।”

বিপিএল নিয়ে আরেকটি বড় অভিযোগের জায়গা বরাবরই থাকে নিম্নমানের টিভি সম্প্রচার ও ভালো মানের ধারাভাষ্যকার দল না রাখা। প্রতিবারই সম্প্রচারের মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া বিখ্যাত ধারাভাষ্যকারদেরও আনা হয়নি এই টুর্নামেন্টে।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব বললেন, ডিআরএস ছাড়া সস্প্রচারের বাকি সবকিছু মানসম্পন্নই থাকবে।

“প্রোডাকশন ভালো করার চেষ্টা করা হবে। প্রতিবারই ২৬-২৭টি ক্যামেরা থাকে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের চেয়ে বেশি থাকে, এবারও থাকবে। অতীতে গ্রাফিক্স নিয়ে সমস্যা হয়েছে। এবার সতর্ক থাকার চেষ্টা করা হবে।”

“ওভারঅল প্রোডাকশন লেভেল ভালো হবে আশা করি। ডিআরএস না থাকলে তো বড় ঘাটতি থাকেই। তবে অন্যান্য সব প্রযুক্তি, ড্রোন বা যা থাকে, সব থাকবে।”

ধারাভাষ্যকার নিয়ে ইসমাইল হায়দার মল্লিকের দাবি, তারা ইচ্ছে করেই দেশের ধারাভাষ্যকারদের ওপর জোর দেন। বিদেশিদের ক্ষেত্রে যথারীতি বললেন কোভিড পরিস্থিতির কথা।

“আমরা তো স্থানীয়দের ওপর ফোকাস বেশি করতে চাই। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তো বটেই, বিপিএলেও। এখন আমরা স্থানীয় তরুণ কিছু ধারাভাষ্যকারকে প্রমোট করার চেষ্টা করছি। অন্তত ৫০ ভাগ ধারাভাষ্যকার আমরা স্থানীয় রাখতে চাই। এটা আমাদের চাওয়া, পুরোটাই বিদেশি ভালো ধারাভাষ্যকার রাখার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা চাই স্থানীয়দের স্লট যেন অর্ধেক থাকে।”

“কোভিড পরিস্থিতিতে লোক (ধারাভাষ্যকার) পাওয়াই কঠিন। তারপরও খারাপ থাকার কথা নয়। মোটামুটি ভালো মানেরই আসার কথা। তবে ওমিক্রন পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছু সম্ভব হচ্ছে না।”

মজার ব্যাপার হলো, বিপিএলের এক সপ্তাহ পর শুরু হবে যে টুর্নামেন্ট, সেই পাকিস্তান সুপার লিগে প্রযুক্তি পুরোপুরি সব থাকছে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও ধারাভাষ্যকার হিসেবে ড্যানি মরিসন, ম্যাথু হেইডেন, গ্রায়েম স্মিথ, অ্যালান উইলকিন্স, কেপলার ওয়েসেলস, জন্টি রোডসরা থাকবেন বলে জানা গেছে। বিপিএল পিছিয়ে পড়েছে অনেক পরে সবকিছুর প্রক্রিয়া শুরু করাতেই।

ইসমাইল হায়দার মল্লিক সেই অভিযোগ কিছুটা মেনে নিলেন। সঙ্গে আবারও বললেন মহামারির কথা।

“আমাদের তো যোগাযোগ একটু পরেই করতে হয়েছে। কারণ সময়টা তো আমরা আগে ঠিক করতে পারিনি যে কখন হবে টুর্নামেন্ট। দেরিতেই সবকিছু শুরু করতে হয়েছে। এটা একটা কারণ তো অবশ্যই। তবে ওমিক্রন না থাকলে তো ঝামেলা হতো না।”

“ডিআরএস না থাকলে টুর্নামেন্ট অবশ্যই আবেদন হারায়। কিন্তু কিছু করার নেই। দর্শকের ক্ষেত্রেও যেমন, আমরা চেয়েছিলাম এবার পূর্ণ গ্যালারি রাখতে। সরকার থেকে অনুমতিও পেয়েছিলাম। কিন্তু সব বদলে গেল ওমিক্রনের কারণে।”

খেলাধুলা

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিল ভারত। কিন্তু সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচে হেরেছে। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছে।

আজ শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে হারার পরই ভারতের সিরিজ হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কথা বলতে আসেন টেস্ট অধিনায় বিরাট কোহলি। সিরিজ হারার জন্য তিনি নিজ দলের ব্যাটসম্যানদেরই দোষ দেন তিনি।

ম্যাচ শেষে কোহলি বলেন, আমাদের সিরিজ হারার কারণ হলো ব্যাটিং। আমাদের ব্যাটিংয়ের দিকে মনযোগ দিতে হবে। এটি হালকাভাবে নেয়ার কোনো উপায় নেই। সব সময় ব্যাটিংয়ে ধস নামা, ভালো বিষয় নয়। আমাদের বিশ্লেষণ করে সমস্যা বের করতে হবে। সমস্যা ঠিক করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ রেকর্ড গড়লেও দ্বিতীয় টেস্টে হচ্ছে তার উল্টো। দারুণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও দুর্দান্ত নিউজিল্যান্ড গড়েছে কয়েকটি রেকর্ড।

ব্যক্তিগতভাবে ব্যাট হাত ল্যাথামের রেকর্ডের পর এবার বল হাতে ৩০০ উইকেটের কীর্তি গড়েছেন দেশটির পেসার ট্রেন্ট বোল্ট।

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে বোল্ড করে ৩০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছালেন বোল্ট। ২৯৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করেন বোল্ট এদিন সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজকে আউট করে ক্যারিয়ারের তিন’শ উইকেট পূর্ণ করেন।

বোল্টের আগে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় দেশটির কেবল তিনজন বোলার রয়েছেন। ৪৩১ উইকেট নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন স্যার রিচার্ড হ্যাডলি। ৩৬১ উইকেট নিয়ে দুইয়ে আছেন সাবেক স্পিনার ড্যানিয়েল ভেটোরি। টিম সাউদি ৩২৮ উইকেট নিয়ে আছেন তিনে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়া বোল্ট ৩০০ উইকেট নিয়ে অবস্থান করছেন তালিকার চারে।

৩০০ উইকেট শিকার করতে বোল্টের লাগল ৭৫টি টেস্ট। নিউজিল্যান্ডের হয়ে যেটি দ্বিতীয় দ্রুততম। প্রথমে থাকা সাউদির লেগেছিল ৭৬ টেস্ট।