জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ হাজার ৮৬৯ জনে। আর এই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৪ জন।

শনিবার (২৭ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারী। তারা সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, একদিনে ২৪ হাজার ৬৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক হাজার ৯৭১ জন। এ নিয়ে দেশে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াল পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার ৯২২ জনে।

 

জাতীয়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত সরকারের দেওয়া গান্ধী শান্তি পুরস্কার তার ছোট মেয়ে শেখ রেহানার হাতে তুলে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমঞ্চে বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে নরেন্দ্র মোদির হাত থেকে পুরস্কার নেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটা ভারতের জন্যও গর্বের আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিতে পেরেছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

গান্ধী শান্তি পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর প্রধান ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মহাত্মা গান্ধী যে অহিংসার পথ দেখিয়ে গেছেন, একই ধরনের পথে বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরে অসামান্য অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধুকে এই পুরস্কার জন্য মনোনীত করেছে ভারত সরকার।

এতে আরও বলা হয়, নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতার দাবি আদায়ে বঙ্গবন্ধু একজন চ্যাম্পিয়ন। ভারতীয়দের কাছেও তিনি একজন বীর।

‘বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে, তার অনুপ্রেরণায় দুই দেশের সম্পর্কের শিকড় আজ অনেক গভীরে। তার নীতির পথ ধরেই গত কয়েক দশকে আমাদের দুই দেশের অংশীদারিত্ব যৌথ উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির এক মজবুত ভিত্তিতে পৌঁছেছে।’

জাতীয়

রাজশাহীর কাটাখালীতে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে ১৭ জন নিহত হয়েছেন; তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও দুইজন।

নিহতদের মধ্যে দুই পরিবারের পাঁচজন করে আর একটি পরিবারের তিনজন রয়েছেন।

রাজশাহী সিটি পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, কাটাখালী থানার সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে শুক্রবার বেলা ২টার দিকে তারা হতাহত হন।

নিহত ১৪ জন হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জ থানার রাজারামপুর গ্রামের সালাহউদ্দিন, তার স্ত্রী কামরুন্নাহার, কামরুন্নাহারের বোন সামসুন্নাহার, তাদের সন্তান সাজিদ ও সাবা, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার তাজুল ইসলাম ভুট্টু, স্ত্রী মুক্তা, সন্তান ইয়ামিন, দাঁড়িকাপাড়া গ্রামের মোখলেসুর, বড় মজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া, স্ত্রী নাজমা, তাদের সন্তান সুমাইয়া, সাদিয়া ও চালক ফয়সাল।

অন্য তিনজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।

পুলিশসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহী থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। আর মাইক্রোবাসটি রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। পথে বাস ও মাইক্রোসাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসে ১১ যাত্রী পুড়ে মারা যায়। আহত আট যাত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ছয়জন অল্প সময়ের মধ্যে মারা যান।
অন্য দুইজনকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান তারা। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী পুড়ে মারা যায়। আহত আটজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে আরও ছয় যাত্রী মারা যায়।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাঁশভর্তি একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও এক কিশোর সাইকেল চালিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছে। একটি দ্রুতগতির মাইক্রোবাসও যাচ্ছে শহরের দিকে। আর বিপরীত দিক থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাস আসছে।
পুলিশ কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস বলেন, মাইক্রোবাস ওই বাঁশের ভ্যানটিকে অতিক্রম করার সময় বাসটি ঢুকে পড়ে। এতে বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই একটি লেগুনা দাঁড়িয়ে ছিল। লেগুনার সঙ্গে বাস বা মাইক্রোরবাসের সংঘর্ষ হয়নি।

জাতীয়

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৭৩৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৩ জনের।

দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে ৩৭ শ পেরিয়ে গেছে, যা প্রায় নয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

এর আগে গতবছরের ২ জুলাই এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৪ হাজার ১৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। মহামারী শুরুর পর থেকে সেটাই এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে, যা ৫ ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি।

নতুন শনাক্ত ৩ হাজার ৭৩৭ জনকে নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৩২ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৩ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৮৩০ জনের মৃত্যু হল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৫৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৫১ জন হয়েছে।

বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৫৫ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৫৬ হাজার।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২২৪টি ল্যাবে ২৭ হাজার ২৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ লাখ ৫৩ হাজার ২২১টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৯টি।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ আর নারী ১২ জন। তাদের ১ জন বাড়িতে বাকী সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ১৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর,৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৮৩০ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৬৭১ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ১৫৯ জন নারী।

যারা মারা গেছে তাদের ৪ হাজার ৮৩২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ১৯৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৯৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৩১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

মৃতদের মধ্যে ২৬ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন রাজশাহী বিভাগের বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এর মধ্যে ৫ হাজার জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৯০ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭১ জন খুলনা বিভাগের, ২৬৭ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৬ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭১ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

জাতীয়

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩ জন ।

বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামের আবুল কাসেম প্রধানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে কী কারণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

এ ঘটনায় অহেদুল (৩৬), সোবহান মিয়া (৪০) ও বোরহান উদ্দিন প্রধান (৩৬) নামে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত বোরহান উদ্দিন প্রধান ওই গ্রামের আবুল কাসেম প্রধানের ছেলে, অহেদুল ইসলাম একই গ্রামের কবির মিয়া ছেলে ও মো. সোবহান মিয়ার বাড়িও একই গ্রামে।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মেহেদী হাসান ৩ জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এখানে সিআইডির টিম ও বিস্ফোরক বিষেশজ্ঞ দল না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার কয়েক মিনিট আগে ৩ থেকে ৪ জন অপরিচিত ব্যক্তি আবুল কাসেম প্রধানের বাড়িতে আসে। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির মধ্যে শোরগোল ও গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণে আবুল কাসেমের একটি ঘরের টিনের চাল উড়ে যায়। এসময় আহত অবস্থায় পালানোর সময় এলাকাবাসী অপরিচিত একজনকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছে।

এ ঘটনায় গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ঘটনার কথা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।

জাতীয়

গ্যাস সরবরাহ চলমান অবস্থা আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে সমাধান হবে বলে জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় তিতাস।

এদিকে বিজ্ঞপ্তিতে, তিতাস অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় ঢাকা শহরসহ সব এলাকায় প্রয়োজনীয় পরিমাণে ও চাপে গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

এছাড়া আজও রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা, যার জন্য ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রাহকেরা। এর আগে সাভারের আমিনবাজার এলাকায় সড়কে কাজ করার সময় তিতাসের ফিডার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে করে বিঘ্ন হয় গ্যাস সরবরাহে।

তিতাস সূত্র জানায়, আজও এই কাজ শেষ করা সম্ভব না। তবে বুধবার থেকে গ্রাহকেরা আবারও আগের মতো করে গ্যাস পাবে।

জাতীয়

দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ৩৮০তম দিনে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯১৫ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, এদের মধ্যে পুরুষ ১৮ ও নারী ৭ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ হাজার ৭৬৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। গতকাল মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।

আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ২৭ হাজার ৫০২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ২৫ হাজার ৯৫৪ জনের নমুুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৫৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। গতকালের চেয়ে আজ ১৩ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন।

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮০৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ৩৪ লাখ ১৪ হাজার ২৫৬টি হয়েছে সরকারি এবং ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩০টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার একই ছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯১৫ জন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৫৪ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৬১ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯০৯ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৩ শতাংশ কম।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৭ হাজার ৬৮৩ জনের। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২৬ হাজার ৩৫৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৩২৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ১৪০টি ও বেসরকারি ৬৯টিসহ ২১৯টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ৫০২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ২৫ হাজার ৯৫৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৫৪৮টি নমুনা বেশি পরীক্ষা করা হয়েছে।

জাতীয়

মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতে সারাদেশের এক হাজার ৫০০ মাদরাসায় ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের মাদরাসাগুলোতে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে পাঠিয়েছে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু চেতনা ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কর্নারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। ফলে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোনো শিক্ষার্থী জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকবে না।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জন ও বাড়িতে দুইজন মারা যান। এ নিয়ে দেশে পর্যন্ত ৮ হাজার ৬৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নতুন করে এক হাজার ৮৯৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৮ হাজার ৯১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। দেশে রোগী শনাক্তের হার ১০ দশমিক শূন্য চার শতাংশ।

শুক্রবার দুপুরে করোনা ভাইরাসের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬১৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৯ হাজার ১৪১ জন হয়েছে।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বেশ কয়েক ধাপ বাড়ানোর পর আগামী ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয়

আজ ১৭ই মার্চ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় শিশু দিবসও আজ। ১৯২০ সালের এই দিনে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তত্কালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। তার পিতার নাম শেখ লুত্ফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। পিতা-মাতার চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে তিনি ছিলেন তৃতীয়। খোকা নামের সেই শিশুটি পরে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির ত্রাতা ও মুক্তির দিশারি।

গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। রাজনৈতিক সংগ্রামবহুল জীবনের অধিকারী এই নেতা বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদান চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আজ থেকে আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনের নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশে শুরু হবে মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। এই আয়োজনের থিম করা হয়েছে ‘মুজিব চিরন্তন’। অনুষ্ঠানমালায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরা হবে। এতে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা। এছাড়া ৫০টি জাতীয় পতাকা সংবলিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী র্যালি শুরু হবে ঢাকা থেকে, যা দেশের ৬৪টি জেলা প্রদক্ষিণ করে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরবে। ঐ দিনই সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী কর্মসূচি সমাপ্ত হবে। এদিন মুজিববর্ষের কর্মসূচিও শেষ হবে। এর মাঝখানে বছরজুড়ে সারা দেশে অনুষ্ঠিত হবে নানা অনুষ্ঠান। তবে শেষ মুহূর্তে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় দুটি ব্যতিক্রমী আয়োজন লেজার ও ড্রোন শো হচ্ছে না।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনা প্রতিরোধ, প্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীসহ জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াইয়ের দুর্জয় প্রেরণা, ইস্পাতকঠিন প্রত্যয় আর সব ষড়যন্ত্রের কুহেলিকা ভেদ করে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও রায় কার্যকরের দৃপ্ত শপথ নিয়ে কৃতজ্ঞ বাঙালি আজ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ২০০৪ সালে বিবিসির একটি জরিপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ হিসেবে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত হন।

আজীবনসংগ্রামী বঙ্গবন্ধুর যখন জন্ম হয়, তখন ছিল ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ অধ্যায়। গ্রামের স্কুলে তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তত্কালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় তার বিপ্লবী জীবন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে সক্রিয়ভাবে তিনি ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে, অর্থাত্ দেশবিভাগের বছর এই কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে গঠন করেন ছাত্রলীগ।

অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। কালের পরিক্রমায় কখনো ভাষার জন্য, কখনো স্বাধিকারের জন্য চলতে থাকে আন্দোলন। এসবের আড়ালে গড়ে ওঠে স্বাধীনতার আন্দোলন। ’৬৬-র ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। ১৯৪৮ সাল থেকে ’৫২-র মহান ভাষা আন্দোলন, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ঐতিহাসিক ৬ দফা, স্বায়ত্তশাসনের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে, কথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ হন।’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায় বাঙালি জাতি। এতে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের ম্যান্ডেট লাভ করে। ’৭১-এর মার্চে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।

৭ই মার্চ তত্কালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেদিন গোটা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ’৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইটের’ নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কারাগারে আটক রেখে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তার প্রথম বিচার শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা মোতাবেক ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বীর বাঙালি ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে। জন্ম হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের।’৭২-এর ১০ জানুয়ারি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে তিনি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু সেই সুযোগ বেশি দিন পাননি তিনি। ১৯৭৫ সালে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি তথা একটি শোষণমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তিনি জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকদের তপ্ত বুলেটে সপরিবারে নিহত হন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রতিনিধিদল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’ আয়োজিত কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।

এছাড়া সবাইকে ঘরে বসে গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত কর্মসূচি দেখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী ২১ মার্চ রবিবার বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে সারা দেশে যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্্যাপনের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

জেপির বিবৃতি ও কর্মসূচি : জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম জাতির পিতার ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসায়। একই সঙ্গে আমরা স্মরণ করছি ১৫ আগস্ট নির্মম ঘাতকের আঘাতে শাহাদতপ্রাপ্ত জাতির পিতার পরিবারের অন্য সদস্যদের। মহান এই নেতা ও তার শহিদ পরিবারবর্গের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

দলের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে : সকাল ৬টা ১০ মিনিটে জেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। বেলা ১১টায় র্যালিসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার মাজারে জেপির পক্ষ থেকে মাজার জিয়ারত, ফাতিহা পাঠ ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। এছাড়া দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে মরহুম নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মসজিদসহ সব প্রার্থনালয়ে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।