জাতীয়

রেলে অধিক যাত্রী পরিবহণে আরও ২০০ যাত্রীবাহী কোচ কেনা হচ্ছে। এসব কোচ ভারত থেকে আনা হবে। এ বিষয়ে সোমবার রেলভবনে চুক্তি সই হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী, ভারতীয় কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহুল মিত্তাল, ভারতীয় রেলওয়ের প্রোডাকশন ইউনিটের অতিরিক্ত সদস্য সঞ্জয় কুমার পংকজ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব করপোরেশন মিচেল ক্রেজা ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী বলেন, আমাদের ক্যারেজের খুব সমস্যা। এই মুহূর্তে আপনারা (ভারতীয়) যে ক্যারেজ দিচ্ছেন এর জন্য ধন্যবাদ।

রেলপথ সচিব বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ অংশে রেলের সংযোগ স্থাপন হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোর যোগাযোগ বাড়ছে। মহাপরিচালক বলেন, রেলের লক্ষ্য যোগাযোগ পরিধি বাড়ানো।

ভারত থেকে আসা বগিগুলো হবে স্টেইনলেস স্টিলের, দ্রুত গতিসম্পন্ন, বগির ছাদে এসি থাকবে, অটোমেটিক এয়ার ব্রেক পদ্ধতি থাকবে এবং পরিবেশবান্ধব হবে। এই বগিগুলো পরবর্তীতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

জাতীয়

আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) উন্নয়ন বাজেটের প্রধান অংশ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। এতে যুক্ত হচ্ছে বৈদেশিক ঋণের ২৫৭টি নতুন উন্নয়ন প্রকল্প।

ঋণদাতাদের আকৃষ্ট করতে অনুমোদন ও বরাদ্দহীনভাবে এসব প্রকল্পের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকার জোগান দেবে।

এগুলোর মধ্যে উচ্চ অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২১৭টি, মধ্যম ৩৬ এবং নিু অগ্রাধিকারে আছে ৪টি প্রকল্প। সম্প্রতি অনুমোদিত এডিপি পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) এডিপিতে এরকম প্রকল্প আছে ২৩২টি। আগামী অর্থবছর বেড়েছে ২৫টি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আজম শনিবার বলেন, এমন তালিকা থাকলে উভয় পক্ষেরই সুবিধা হয়। সরকারের অগ্রাধিকারের জায়গাগুলো পরিষ্কার থাকে। পরে উন্নয়ন সহযোগীরা নিজেদের অগ্রাধিকারের সঙ্গে মিলিয়ে অর্থায়ন করতে পারে। সরকারের চাহিদার সঙ্গে ঋণদাতাদের চাহিদার মধ্যে সমন্বয় করাটা সহজ হয়।

তবে এর মধ্যেও সময় সময় সরকারে অগ্রাধিকার পরিবর্তন হতে পারে। বাস্তবতার নিরিখে যে ধরনের প্রকল্প প্রয়োজন সেগুলো যুক্ত করা হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে বৈঠকের আয়োজনও করা হয়ে থাকে।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে যুক্ত হতে যাওয়া বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতের ৪৮টি। এগুলো বাস্তবায়নে ঋণের প্রয়োজন হবে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতের ৪৩ প্রকল্পের জন্য ঋণ লাগবে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা।

তৃতীয় স্থানে থাকা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৪২টি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন হবে ৪৩ হাজার ৭২৫ কোটি টাকার ঋণ। এছাড়া অন্যান্য খাতের মধ্যে সাধারণ সরকারি সেবা খাতের ১৩ প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ২ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবার ১৮ হাজার ৩ কোটি, কৃষির ১৯ প্রকল্পে ৯ হাজার ৩৫০ কোটি এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতের ১৬ প্রকল্পের জন্য দরকার ৪৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ।

আরও আছে স্বাস্থ্য খাতের ৭ প্রকল্পে ৬৬ হাজার ৭৪২ কোটি, ধর্ম ও সংস্কৃতির ৪ প্রকল্পে ৩৩৭ কোটি, শিক্ষার ১৬ প্রকল্পে ১০ হাজার ২১৬ কোটি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির ৮ প্রকল্পে ৭ হাজার ৮২ কোটি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতের ২ প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন ১৫৬ কোটি টাকা।

ঋণের জন্য বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবি, জাইকা, চীন, ভারত, রাশিয়াসহ প্রচলিত এবং অপ্রচলিত উন্নয়ন সহযোগীর খোঁজ করা হবে বলে জানা গেছে।

এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প হলো-পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের প্রত্যাশা হচ্ছে ৫৬ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। ২০২৯ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করতে চায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন ৬১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। ঋণ পেলে এটি আগামী অর্থবছরের শুরু থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সাউথ করিডর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফরিদপুর-বরিশাল এবং বরিশাল-কুয়াকাটা) এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯১৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের প্রত্যাশা ২৮ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের শুরু থেকে ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে। ওয়াটার ফ্রন্ট স্মার্ট সিটি কেরানীগঞ্জ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৫৪ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা।

২০৩৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়া তুরাগ নদীর বন্যা প্রবাহ অঞ্চলের সংরক্ষণ এবং কমপ্যাক্ট টাউনশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্য ৪৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। ২০৩৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার।

ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (মেট্রোরেল লাইন-৫) এর মোট ব্যয় হবে ৫৪ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করতে চায় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ।

আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হলো, হাওড় ফ্ল্যাড এন্ড লাইভলিহুড প্রজেক্ট, জলবায়ু সহনশীল টেকসই জীবিকা প্রসার প্রকল্প, ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক উন্নয়ন এবং ভাঙ্গা জয়শন (ফরিদপুর) হতে বরিশাল হয়ে পায়রাবন্দর ও কুয়াকাটা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলাইন নির্মাণ প্রকল্প।

জাতীয়

ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ।

নিখোঁজ সংসদ সদস্যের ভারতীয় নম্বরের লোকেশন বিহারের মুজাফফরাবাদের দিকে শনাক্ত করা গেছে। প্রতিনিয়ত ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ভারতীয় পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছে।

রোববার (১৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।

তিনি বলেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ১২ মে দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে কলকাতা যান। কলকাতায় তার পরিচিত গোপাল নামে একজনের বাসায় ওঠেন। পরদিন ১৩ মে সকালে নাস্তা করে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যান। সেদিন সন্ধ্যায় কলকাতায় গোপালের বাসায় যাওয়ার কথা থাকলেও সেখানে আর যাননি তিনি।

তখন থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার এপিএস ও মেয়ে মোবাইলে যোগাযোগের করে ব্যর্থ হন। সংসদ সদস্যের মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপে যে মেসেজগুলো এসেছে, ‘তিনি দিল্লীতে আছেন, ওমুক-তমুকের সঙ্গে দেখা হবে। ’ কিন্তু এই মেসেজগুলো আনারের পরিবার বিশ্বাস করছে না।

হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমি বিষয়টি দুইদিন আগেই জানতে পারি। ভারতীয় একজন ভদ্রলোক সংসদ সদস্যেরও পরিচিত তিনি আমাকে টেলিফোন করে সংসদ সদস্যকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয়টি জানান। বিষয়টি জানার পর, ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা এসটিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ভারতীয় থানা পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, সংসদ সদস্যের একটি বাংলাদেশি ও আরেকটি ভারতীয় নম্বর ছিল। ১৬ মে সকাল ৭টার দিকে সংসদ সদস্যের নম্বর থেকে দুটি ফোন আসে। একটি আসে সংসদ সদস্যের এপিএসের নম্বরে, আরেকটি ফোনকল আসে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নম্বরে। কিন্তু তখন দুজনের কেউই টেলিফোন ধরতে পারেনি।

ভারতীয় পুলিশের সহযোগিতায় জানতে পেরেছি, খুঁজে না পাওয়া সংসদ সদস্যের ভারতীয় নম্বরের লোকেশন মুজাফফরাবাদ, অর্থাৎ বিহারের দিকে। সবকিছু মিলিয়ে আমরাও খোঁজ-খবর রাখছি।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে এসেছে আমাদের কাছে। এমপির নম্বরটি মাঝেমধ্যে খুলছে, আবার বন্ধ হচ্ছে। কারা কাজটি করছেন। তিনি কোনো ব্ল্যাক মেইলের শিকার হয়েছেন কি-না সবকিছুই গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ভারতীয় পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার তার কানের চিকিৎসা করাতে ভারতে যান।

জাতীয়

রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় কক্সবাজার এক্সপ্রেসের বগি থেকে ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বগি ও ইঞ্জিনের সংযোগকারী হুক খুলে বিকল হয়ে পড়ে ট্রেন।

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটলে ট্রেনটি উদ্ধারে কমলাপুর স্টেশন থেকে অন্য একটি ইঞ্জিনের সহায়তায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে।

বাংলানিউজকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শাহাদাৎ হোসেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজার এক্সপ্রেসের ট্রেনটি তেজগাঁও থেকে কমলাপুর স্টেশনে ঢোকার সময় খিলগাঁও রেলগেটে ইঞ্জিন থেকে হুক খুলে গেছে। ওই ইঞ্জিনে আর কাজ করা যাবে না। এই ট্রেনটি উদ্ধারের জন্য কমলাপুর থেকে অন্য এক আরেকটি ইঞ্জিন ইতোমধ্যে সেখানে পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, উদ্ধারে কাজ চলছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রেনটি উদ্ধার করে কমলাপুর স্টেশনে নিয়ে আসা হবে।

জাতীয়

ডলারের প্রবাহ বাড়াতে বিশেষ প্রচারে নামছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠাতে উৎসাহিত করা হবে। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রবাসীদের জন্য অফশোর ব্যাংকিং ফিক্সড ডিপোজি টু সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২৪ মে এটি অনুষ্ঠিত হবে।

এতে অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। এই প্রথমবারের মতো ব্যাংকগুলোর পক্ষে বিদেশে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রবাসীরা বিদেশে যেসব অর্থ আয় করেন সেগুলোর একটি অংশ তারা দেশে পাঠান। আরেকটি অংশ বিভিন্ন ব্যাংকে রেখে খরচ করেন বা সঞ্চয় করেন। বিদেশের ব্যাংকে প্রবাসীরা যেসব অর্থ রাখেন তা দেশীয় ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে জমা রাখলে দেশে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। অন্যদিকে বাড়তি মুনাফার পাশাপাশি যখন খুশি তখনই এসব ডলার তুলে প্রবাসীরা খরচ করতে পারবেন। প্রবাসীরা বিদেশে থেকেই দেশের যে কোনো অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে হিসাব খুলে টাকা জমা রাখতে পারবেন।আবার যখন খুশি তখন তুলেও নিতে পারবেন। দেশের সব ব্যাংকই এখন অনলাইনে লেনদেন করছে। বিদেশে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর শাখা যেমন আছে, তেমনি এক্সচেঞ্জ হাউজও রয়েছে। এছাড়া প্রতিনিধিত্বকারী শাখাও আছে। অফশোর ব্যাংকিং হিসাবের আওতায় প্রবাসীরা যাতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলার জমা রাখতে উদ্বুদ্ধ হন, সেজন্যই ব্যাংকগুলো এই বিশেষ প্রচারের আয়োজন করেছে।

জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এমডিরা। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। বিশেষ অতিথি থাকবেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।

একই সময়ে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের আয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক ব্যাংক’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ব্যাংকগুলোর এমডিরা। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এসব ব্যাংক এমডির বিদেশ যাওয়া সংক্রান্ত নথি অনুমোদন করেছে। তবে ডলার সংকটের মধ্যে একসঙ্গে এত বেশি ব্যাংকের এমডির বিদেশে যাওয়া নিয়ে ব্যাংক খাতে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

জাতীয়

ঢাকা, রাজশাহীসহ চার বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার দাবদাহের সতর্কতা দিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এ সতর্কতা জারি করা হয়।

আবহওয়াবিদ ওমর ফারুকের সই করা বার্তায় বলা হয়, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগে চলমান দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার দিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এখন আবহাওয়া ও বৃষ্টির ধরন পালটেছে। একদিন বৃষ্টি না হলেই তাপমাত্রা আগের প্রখর তাপমাত্রায় ফিরে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে আবহাওয়ার এ ধরনের বৈরিতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বৃষ্টিপাত বাড়লে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। দেশের ওপর দিয়ে বর্তমানে বয়ে চলা মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ কমবে বৃষ্টি এলেই। তারা জানান, ১৯ মে থেকে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে। পরবর্তী সময় অর্থাৎ ২০-২২ মে বৃষ্টিপাত আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ২৪ মে’র পর তাপমাত্রা আবার বৃদ্ধি পেতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, চলমান তাপপ্রবাহ গত বৃহস্পতিবার ৮ বিভাগেই ছিল। শুক্রবার সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি শনিবার সিলেট বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। ১৯ মে থেকে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে এবং ২০ মে বৃষ্টিপাত সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে পারে। এই বৃষ্টিপাত ২০-২২ মে থাকতে পারে সারা দেশে। একেকদিন একেক এলাকায় আধা থেকে ১ ঘণ্টা সময় নিয়ে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। এতে চলামন তাপপ্রবাহ অনেকটা প্রশমিত হবে। তবে এই সময়ের মধ্যেও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় মৃদু তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ থাপমাত্রা ছিল ৩৭.৭ ডিগ্রি সে.। শুক্রবার দুপুরে ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি সে.।

নতুন করে হিট অ্যালার্ট দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত হিট অ্যালার্ট জারি ছিল। এই সময়ে বৃষ্টিপাতের যে ধরন তাতে একদিন বৃষ্টি না হলে পরের দিন তাপমাত্রা আগের অবস্থানে চলে যায়। তিনি বলেন, তবে ২৪-২৫ মে’র পরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে, বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু ধরনের তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজের সময়ের পরিবর্তন আনা গেলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত খোলা মাঠে কাজ করা যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে বিকাল ৪-৫টা পর্যন্ত প্রখর রোদে না থাকাই ভালো। আবার বিকাল ৫টার পর কাজ করা যেতে পারে। পাশাপাশি এই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলা যেতে পারে। কৃষির ক্ষেত্রে কৃষি অধিদপ্তরের নির্দেশনা মানা গেলে ভালো হয়।

জাতীয়

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে অভিনব কায়দায় স্বর্ণ চোরাচালানকালে মোহাম্মদ শহীদ মিয়া নামের এক যাত্রীকে গ্রেফতার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তার কাছ থেকে ৪৪৬২ গ্রাম অপরিশোধিত স্বর্ণ ও ৩০ গ্রাম অলংকার জব্দ করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

শুক্রবার সকালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শারজাহ থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আসলে আটক হন ওই যাত্রী। শরীরে পরিহিত ৯টি শর্ট ও একটি ফুল প্যান্ট এবং ৬টি স্যান্ডো গেঞ্জির মধ্যে বিশেষ কৌশলে সোনা চোরাচালান করছিলেন তিনি।

শুক্রবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে গোপন সংবাদ আসে শারজাহ থেকে ঢাকায় আগত ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের (স্কাই আপ) ফ্লাইট নম্বর বিএস ৩৪৬ যোগে শুক্রবার সকাল ৮টা ৪১ মিনিটে এক যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালানের কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। এ প্রেক্ষিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালকের তত্ত্বাবধানে এবং শিফট ইনচার্জের নেতৃত্বে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল এয়ারপোর্ট এ-শিফট এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

ইউএস বাংলার বিমানটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেইট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রিন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করা হয়। যাত্রী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে সকাল সাড়ে ৯ টায় গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিন অতিক্রম করার পর তাকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর টিম এর সদস্যরা চিহ্নিত করে। তার কাছে স্বর্ণালংকার/স্বর্ণবার/স্বর্ণজাতীয় কোনো কিছু আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তার কাছে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার থাকার কথা স্বীকার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে ওই যাত্রীর কাছে ৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। তার কাছে আর কোনো স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করায় আর্চওয়ে করানো হয় এবং যাত্রীর পরনে অত্যধিক পরিমাণ জামাকাপড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যাত্রীর জামাকাপড়ের ওজন অস্বাভাবিক পরিলক্ষিত হওয়ায় জামাকাপড়গুলো খুলে স্ক্যানিং মেশিনে স্ক্যান করা হয় এবং জামাকাপড়ের মধ্যে বিশেষভাবে লুকায়িত স্বর্ণের ইমেজের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে যাত্রীকে কাস্টমস হলে নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে যাত্রীর শরীরে পরিহিত ১৬ পিস কাপড় (যার মধ্যে শর্ট প্যান্ট-৯ টি, স্যান্ডো গেঞ্জি-৬ টি ও ফুল প্যান্ট-১টি) স্থানীয় স্বর্ণকার কর্তৃক যাত্রী ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ এ নিয়ে পোড়ানো হয়। পোড়ানোর পরে অপরিশোধিত ৪ হাজার ৪৬২ গ্রাম পরিমাণ স্বর্ণ নির্ণয় করা হয়। তার কাছ থেকে মোট ৪ হাজার ৪৯২ গ্রাম স্বর্ণ আটক করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিমানবন্দর থানায় যাত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।

জাতীয়

চলতি মেৌসুমে পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব গেছেন প্রায় ২২ হাজার যাত্রী। বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত এসব হজযাত্রী ৫৫টি ফ্লাইটে সেৌদি আরব গেছেন। কিন্তু বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৬ হাজারের বেশি হজযাত্রীর এখনো ভিসা হয়নি। যদিও নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে। ফের আবেদনের সময় বৃদ্ধির জন্য সেৌদি সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।

বুধবার (সপ্তম দিন) পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে পাঁচটি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ২ হাজার ৭৭ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে দুটি ফ্লাইটে ৮৩৮ জন, সেৌদি এয়ারলাইন্সে তিনটি ফ্লাইটে ১ হাজার ২৩৯ জন যাত্রী সেৌদি আরব গেছেন। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়।

বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার ভোর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সেৌদি আরবে জেদ্দার উদ্দেশে পাঁচটি ফ্লাইট ছেড়ে গেছে। এতে ২ হাজার ৭৭ জন যাত্রী ঢাকা ত্যাগ করেন।

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় ভিসা হয়নি ৬ হাজারে বেশি হজযাত্রীর। ভিসার আবেদনের সময় শেষ হয়ে গেলেও নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধি করেনি সেৌদি আরব। তবে আবেদনের সার্ভার সচল রয়েছে। দ্রুত বাকি ভিসার কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

যদিও ধর্মমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন ভিসা নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে। এদিকে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিবন্ধিত হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়াতে সেৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকায় নিযুক্ত সেৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান গণভবনে সেৌজন্য সাক্ষাত্ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে ভিসার আবেদনে সময় ছিল ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে ভিসার কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় প্রথম দফায় ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু সরকারিভাবে হজযাত্রীদের ভিসা হয়ে গেলেও ২৫৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সির অনেকেই এ বর্ধিত সময়ের মধ্যে ভিসার কার্যক্রম শেষ না করায় দ্বিতীয় দফায় সময় ১১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে নতুন করে ভিসা আবেদনের সময় বৃদ্ধি না করে আবেদনের সার্ভার খোলা রেখেছে সেৌদি আরব।

ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, ঢাকা হজ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর হজে যেতে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজ পালনে সেৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। এর মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৩২৩ জন। আর বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। প্রতি ৪৪ জনে একজন করে গাইড হিসাবে ১ হাজার ৮৯৯ জন হজযাত্রীদের সঙ্গে যাবেন। এতে সরকারিভাবে নিবন্ধনকৃত ৪ হাজার ১২৪ জনের ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে আর বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত প্রায় ৭৪ হাজার জনের ভিসা হয়েছে। এখনো ৬ হাজারের বেশি হজযাত্রী ভিসা পাননি।

জাতীয়

বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরলেও শিপিং সেক্টরে এখনো জলদস্যু আতঙ্ক কাটেনি। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ রুট ভারত মহাসাগর এবং এডেন উপসাগরে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে সোমালি জলদস্যুদের অপতত্পরতা।

এ কারণে সোমালিয়ার আশপাশে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের প্রায় এক হাজার নটিক্যাল মাইল এলাকাজুড়ে হুমকির মুখে পড়েছে বৈশ্বিক জাহাজ চলাচল।

ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশি জাহাজগুলোতে আর্মড গার্ডসহ পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এমভি আবদুল্লাহর মুক্ত নাবিকদের বরণ অনুষ্ঠানে ডিজিটালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এ সময় তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা (জাহাজ জিম্মি) না ঘটে সেজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যেসব জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে আর্মড গার্ডসহ যেন জাহাজ যায়, সেদিকে দৃষ্টিপাত করতে হবে।

সমুদ্রে জাহাজ চলাচলে নিরাপত্তা প্রদানকারী ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টা’ও সোমালিয়াসংলগ্ন এলাকা দিয়ে যাতায়াতের সময় বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রামভিত্তিক কেএসআরএমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। তাদের ২৪টি সমুদ্রগামী জাহাজ রয়েছে।

আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের জাহাজগুলোতে সংযোজন করেছে গার্ডিয়ান নামের অত্যাধুনিক স্ক্যানিং সিস্টেম। এর আওতায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কেএসআরএমের জাহাজগুলোকে মনিটরিং করবে।

তারা জাহাজের অবস্থান স্ক্যান করে এর আশপাশে কোনো সন্দেহজনক নেৌযান আছে কিনা তা জানিয়ে দেবে। ফলে ক্যাপ্টেন সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবেন। আন্তর্জাতিক নেৌবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ও মিলবে।

শিপিং-সংশি্লষ্ট সূত্র জানায়, একদিকে আরব সাগরে কয়েকটি দেশের জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। অপরদিকে ভারত মহাসাগর ও এডেন উপসাগরে সোমালি জলদস্যুরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। এর ঢেউ লেগেছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজগুলোতেও। বর্তমানে সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পণ্যবাহী ৯৯টি জাহাজ চলাচল করছে।

বেশ কয়েক বছর চুপ থাকার পর গত বছরের নভেম্বর থেকে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে সোমালি জলদসু্যরা। তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণ চালাচ্ছে।

সর্বশেষ ১০ মে সোমালিয়ার বোসাসো থেকে ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ ক্রিস্টাল আর্কটিকে হামলা করে জলদসু্যরা। জাহাজটির প্রাইভেট সিকিউরিটি ও জলদসু্যদের মধ্যে এ সময় গুলিবিনিময় হয়।

ওই সময় খবর পেয়ে আক্রান্ত জাহাজের কাছাকাছি থাকা ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার একটি যুদ্ধজাহাজ এসে একটি নৌযানসহ ৬ সন্দেহভাজন জলদস্যুকে আটক করে।

আটলান্টা অপারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত প্রায় ৬ মাসে সোমালি উপকূলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৩টি জাহাজে হামলা অথবা হামলার চষ্টো করে জলদসু্যরা। এর মধ্যে কয়েকটি জাহাজ তারা ছিনতাই করতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহও রয়েছে। জাহাজটি ১২ মার্চ জিম্মি করেছিল সোমালি জলদস্যুরা ।

৩৩ দিনের মাথায় মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর জাহাজ ও এর ২৩ নাবিককে মুক্তি দেওয়া হয়। সোমবার মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। নাবিকরা চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে পৌঁছেছে পরদিন।
দসু্যতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন শিপিং-সংশি্লষ্টরা।

নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, জাহাজে যেসব নিরাপত্তা নেওয়া হয়, তা কিন্তু কোনো প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার ব্যবস্থা নয়। এটা হলো সময়ক্ষেপণ করার একটা বন্দোবস্ত। অর্থাৎ আমি জলদস্যুদের বন্দুকের বিরুদ্ধে পানি ছিটিয়ে তাদের প্রতিহত করব, এটা সম্ভব নয়। পানি মেরে তাদের একটু ডিস্টার্ব করব যেন হাতে কিছুটা সময় পাই। যে সময়ের মাঝখানে নেৌবাহিনী এসে আমাদের সাহায্য করতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী জাহাজে যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তার সবকিছু করেছি এবং করছি। নতুন করে একটা পদক্ষেপ নিয়েছি। ভারত মহাসাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোর জন্য স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাতীয়

এক মাসের ব্যবধানে আবারও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন রাত সাড়ে ৯টায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, কিছু জরুরি পরীক্ষার জন্য ম্যাডামকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে উনাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।

উনার কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। রাতেই মেডিকেল বোর্ড বসে চিকিৎসার পরবর্তি বিষয়গুলো ঠিক করবে।

গুলশানের বাস ‘ফিরোজা’ থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

হাসপাতালে নেওয়ার পরই তার বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড তাকে দেখার পর হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন। ওই সময় চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে রেখে দুইদিন চিকিৎসা দেন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।

তার সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পরপর বাড়ানো হলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।