জাতীয়

দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।

সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নতুন ঘোষণা অনুযায়ী এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম দাঁড়াবে ১৭৮ টাকা। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে ১৯২ টাকায়। ৫ লিটারের দাম ৮৮০ টাকা করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভোজ্যতেল মালিক সমিতির সদস্যরা বর্তমানে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং এলসি খোলার জটিলতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও টি কে গ্রুপের এমডি মোস্তফা হায়দার।

নতুন দাম অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে কমেছে ১৭ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ১৪ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ৬৫ টাকা। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত ১৯২ টাকা এবং ৫ লিটারের দাম ৯৪৫ টাকা।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দুইজন মারা গেছেন। আগের দিন এই রোগে একজন মারা গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৩৭১ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

আজ ৩ হাজার ৭২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৫৩৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আগের দিন ৫ হাজার ৮০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৬৯৬ জন। দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

রোববার করোনায় শনাক্তের হার ছিল ১২ শতাংশ। আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশে।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ২৬ হাজার ২১২ জন। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ৪৭৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৯ লাখ ৬৬ হাজার ১০৭ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ০৩ শতাংশ। গতকালও সুস্থতার হার ছিল ৯৭ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এদিকে, রাজধানীসহ ঢাকা জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৭৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৫৬৮ জন। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

জাতীয়

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার রেকর্ড পরিমাণ অর্থের সঙ্গে মিলেছে বেশ কিছু চিঠি। এর মধ্যে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চিঠি পাওয়া গেছে; যা সবার নজর কেড়েছে।

এবার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার। শনিবার সন্ধ্যায় দানবাক্সের অর্থ গণনা শেষ হয়।

শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে মসজিদের সব দানবাক্স খোলা হয়। ১৫ বস্তার বেশি দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণ-রৌপ্যের সঙ্গে মিলেছে অসংখ্য চিঠি। এসব চিঠিতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের রয়েছে নানারকম আকুতি।

এর মধ্যে চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার প্রবণতার হাত থেকে বাঁচতে এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চিঠি পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীর চিঠিতে লেখা রয়েছে- ‘আমাকে বাঁচাও আত্মহত্যার হাত থেকে। আমি বাঁচতে চাই, আর নিতে পারছি না বেকারত্বের বোঝা। সবার খোঁচা দেওয়া কথা। একটা চাকরি হলে হয়তো বেঁচে যেতাম।’

ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পর পর সিন্দুকগুলো খোলা হয়। এবার তিন মাস পর শনিবার সিন্দুকগুলো খোলা হয়।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি জানায়, জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি সিন্দুক খোলা হয়। ১৫ বস্তারও বেশি দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার মিলেছে।

পাগলা মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, দানবাক্সে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার পাওয়া গেছে। এসব টাকা দিয়ে এখানে আন্তর্জাতিক মানের বহুতল কমপ্লেক্স তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

জাতীয়

দৈনিক বাংলার সম্পাদক ও একুশে পদক প্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন তোয়াব খান। সাংবাদিক হিসেবে সুদীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তার।

দৈনিক বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি হারুন আল রশিদ বাসস’কে জানান, বার্ধক্যজনিত জটিলতায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই তোয়াব খান তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকায় সমকালীন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতেন। ২০১৬ সালে একুশে পদক পাওয়া তোয়াব খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এবং প্রথম অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিবের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন এই যশস্বী সাংবাদিক।

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিন্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।

দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি।

এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তিনি।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ফের কিছুটা বেড়েছে। এই সময়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ জন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ১৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৭৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

সাত সপ্তাহ পর গত সোমবার দেশে এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা সাতশ ছাড়ায়, সেদিন শনাক্ত হয় ৭১৮ জন রোগী। এরপর মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩৭ জনে। বুধবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমে ৬৬৫ জন হয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আরও কমে ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ হয়েছে। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ।

নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৯ জন হয়েছে। মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৩৬২ জনে।

২৪ ঘণ্টায় ৩৫৪ জন কোভিড রোগীর সেরে ওঠার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫০১ জন।

গত একদিনে যে ৬৬৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে তাদের ৫২১ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। গত একদিনে দেশের সবকটি বিভাগের ২৮টি জেলায় করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে।

যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তার ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা। তাদের দুজনের বয়সই ছিল সত্তর বছরের বেশি। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় গত বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

২০২১ সালের ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এরপর বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়।

এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে। ডেল্টার পর করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন আঘাত হানে।

গত ২০ এপ্রিল করোনায় মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর টানা ৩০ দিন করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন পার করে বাংলাদেশ। সম্প্রতি করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হলেও পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।

জাতীয়

আসন্ন দুর্গাপূজায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। এরমধ্যে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৫০ যুবকের বিষয়টি নতুন করে ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের।

নাশকতার আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পুলিশসহ প্রস্তুত আছে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পূজা উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা-ঝুঁকি দুই ধরনের হয়। একটা হল জঙ্গি হামলার আশঙ্কা। আর অন্যটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণদের উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করা।

আমরা জঙ্গি হামলার শঙ্কা আমরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। কারণ গত এক মাস ধরে আমরা একটা বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আপনারা জানেন ৫০ জন ছেলে তাদের বাসা-বাড়ি ছেড়েছে। তারা কোথায় ট্রেনিং নিচ্ছে আমরা এখনও তা জানি না। তবে আমাদের গোয়েন্দারা এ নিয়ে কাজ করছে, আমরা আশা করি তারা ফিল্ডে কোনো অপারেশনে আসার আগেই তাদের ধরে ফেলতে পারব।

আর অন্যদিকে গুজব রোধে আমাদের সাইবার মনিটরিং চলছে। অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে, ভুয়া পোস্ট দিয়ে সহিংসতার ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। গত বছর কুমিল্লায় একটি মণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখা নিয়ে যে ঘটনা হলো এবারও এ রকম অপতৎপরতা থাকতে পারে।

এমন ঘটনা প্রতিরোধ করতে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমরা সারাদেশের ডিসি-এসপিদের নিয়ে মিটিং করেছি। কোথাও এ ধরনের কোনো অপতৎপরতা পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডিসি-এসপিরা ওইসব জায়গায় চলে যাবেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণদের নিয়ে এ ঘটনা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করবেন। যারা এ গুজব ছড়াবেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।

পূজা উদযাপনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা প্রস্তুত আছি যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারে। আমাদের পাশাপাশি এবার মণ্ডপে প্রতিমা থাকা অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পাহাড়া দিতে আয়োজক কমিটিকে আমরা বলেছি যেন কোনো ভাঙচুরের ঘটনা না ঘটে। কারণ আমরা দেখেছি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা তখনই ঘটে যখন মণ্ডপ ফাঁকা থাকে।

রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরীতে ২৪২টি মণ্ডপে এবার পূজা উদযাপন করা হবে। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে। এগুলোতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সিসিটিভি স্থাপন করে মনিটর করা হবে। পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে ভিভিআইপি নিরাপওা নিশ্চিত করা হবে।

অন্যগুলোতে মন্দিরের গুরুত্ব অনুযায়ী কোথাও একজন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই), কোথাও একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আনসার ও মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

নারী-পুরুষদের মণ্ডপে ঢুকতে ও বের হতে আলাদা পথ ব্যবহার করতে হবে। কেউ কোনো ধরনের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে মণ্ডপে আসতে পারবে না, এমনটা হলে সেগুলো মণ্ডপের গেটের বাইরে রেখে ভেতরে ঢুকতে হবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।

জাতীয়

ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।দুইপক্ষের রেষারেষি ও মারামারির ঘটনায় কমিটি স্থগিত করার পাশাপাশি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৭ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

রোববার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।’

‘একইসঙ্গে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, তানজিলা আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।’

‘এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের যারা জড়িত রয়েছেন, অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

জাতীয়

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাটের নৌকাডুবির ঘটনায় মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে আনন্দযাত্রায় নেমে এলো বিষাদের ছায়া। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে। এ ঘটনায় এই খবর লেখা পর্যন্ত স্থানীয়, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

নিহতদের মধ্যে ১৩ জন শিশু, ৮ জন নারী ও ৪ পুরুষ রয়েছেন। এখনো ২৩ নৌকাযাত্রী নিখোঁজ আছেন বলে জানিয়েছেন মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।

এ ঘটনায় নদীর পাড়ে স্বজনদের আহাজারিতে সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে মরদেহ সৎকারের জন্য ২০ হাজার করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও বোদার উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল এখনো উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মরদেহগুলো এখন নৌকাডুবির ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার ভাটিতে পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর আলোর স্বল্পতার কারণে উদ্ধারকাজ চালানো যাবে না বলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন।

নৌকাডুবির ঘটনাস্থলের চারপাশে স্বজনদের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্থানীয় সাংবাদিক বদরুল হাসান বাবু জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শী ও নৌকা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীর কাছে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে- নৌকার যাত্রীদের দূরদূরান্ত গ্রামসহ স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছেন। শ্যালোচালিত নৌকাটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ৪০ থেকে ৫০ জনের মতো। কিন্তু সেখানে অন্তত শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি যাত্রা শুরু করে। নদীতে পানির স্রোত বেশি ছিল তাই নৌকাটিতে মেশিনের ফিতা ছিঁড়ে যাওয়ায় বিকট শব্দ হলে যাত্রীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এ সময় নৌকাটি ভারসাম্য হারিয়ে নদীর মাঝপথে ডুবে যায়।

ঘটনার সময় একদল পুণ্যার্থী ঘাটের ওপারে বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রারম্ভে মহালয়ার অনুষ্ঠানে শ্যালোইঞ্জিন চালিত নৌকায় নদী পার হচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নৌকাটি ঘাট ছেড়ে যাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে শ্যালোইঞ্জিনের মোটরের ফিতা ছিঁড়ে গেলে নৌকাটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। ফলে চোখের নিমিষেই ডুবে যায়। এলাকাটি অত্যন্ত দূরবর্তী অঞ্চল হওয়ায় সেখানে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল পৌঁছতে বিলম্ব হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে অনেক যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করেন।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নৌকাটি নদীর মাঝে গিয়ে ডুবে যায় এ সময় নৌকার যাত্রীরা চিৎকার দিলে নদীপাড়ের লোকজন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন।

অপর প্রত্যক্ষদর্শী আ. হান্নান জানান, ডুবে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই সাঁতার দিয়ে তীরে উঠে আসেন। এ সময় অনেকেই নদীতে তলিয়ে যান। তলিয়ে যাওয়া নৌকার যাত্রীদের কয়েকজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা জানান, এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আরও মরদেহ উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনো কতজন নিখোঁজ আছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, নিহতদের সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের তহবিল হতে প্রতিটি পরিবারে ২০ হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয়

নানা নাটকীয়তার পর মরিয়ম মান্নানের মা প্রায় এক মাস নিখোঁজে থাকা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পর প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মামলা করেন তার মেয়ে।

ওই মামলায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যারা এখন কারাগারে।

রহিমা বেগম উদ্ধার হওয়ার পর গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে আত্মগোপন করেছিলেন রহিমা। বিষয়টি জানতেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যরা।

রহিমাকে উদ্ধারের খবর পেয়ে রাতে দৌলতপুর থানায় ছুটে যান এ মামলায় আটক রফিকুল আলম পলাশ ও নুরুল আলম জুয়েলের বাবা আনসার উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, তার ছোট ছেলে রফিকুল আলম পলাশ চাকরি করে এবং বড় ছেলে নুরুল আলম জুয়েল মুদি দোকানি। তার দুই ছেলেকে রহিমাকে কথিত অপহরণের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন।

তিনি জানান, তাদের সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে মতবিরোধ থাকায় মামলা দিয়ে হয়রানি ও সম্মানহানি করা হয়েছে। রহিমা ও তার সন্তানরা কেন এই অপহরণের নাটক সাজালো সে ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এ মামলায় আটক ফুলবাড়িগেট এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী হেলাল শরীফের স্ত্রী মনিরা আক্তার বলেন, ২৮ দিন ধরে বিনা অপরাধে জেল খাটছেন আমার স্বামী। আগস্টের ৩০ তারিখে আমার স্বামী আটক হন আর সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখে আমার মেয়ে হয়েছে। অক্টোবরে আমার বাচ্চার ডেলিভারির তারিখ ছিল। কিন্তু স্বামী আটক হওয়ার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আগেই সিজার করে আমার মেয়ে হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমি আমার স্বামীকে কাছে পাইনি। বিনা অপরাধে জেল খেটে আমাদের হয়রানি, অর্থদণ্ড, মানহানি হয়েছে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে আটককৃতরা কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আমার স্বামী বের হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আমরা আশা করছি, দ্রুত আমার স্বামী ছাড়া পাবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও খুলনা জজকোর্টের আইনজীবী মো. মাছুম বিল্লাহ বলেন, যেহেতু রহিমা বেগম স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন সে কারণে তার নিখোঁজের মামলায় যারা জেলে রয়েছেন তাদের তো কোন সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে না। এখনো প্রমাণিত হয়নি যে আসামিরা নিখোঁজের বিষয়ে জড়িত। দণ্ডবিধির ২১১ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলা করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নির্দোষ প্রমাণিত হলে মিথ্যা অভিযোগকারী বা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার বিধান রয়েছে। এছাড়া মিথ্যা নালিশ আনয়নকারী সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যারা রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনায় জেল খাটছেন তারা যদি আইনি সহযোগিতা চান তাহলে আমি বিনিময় ছাড়া সহযোগিতা করবো।

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘসময় পরও তার খোঁজ না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টায় দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন তার মেয়ে আদুরী।

এরপর পুলিশ ও র‌্যাব ছয়জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়।

এদিকে, শুক্রবার দুপুরে রহিমা বেগমের মেয়েরা ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতপরিচয় নারীর মরদেহ ‘নিজেদের মায়ের লাশ’ দাবি করলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। উদ্ধার হওয়া লাশের পরনের কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের লাশ বলে জানায় রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান। তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ অর্ধগলিত ছিল দাবি করে লাশের ডিএনএ টেস্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

জাতীয়

হাইকোর্টে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ইভ্যালির পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা। বুধবার ওই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সময় তারা বলেন, গ্রাহকদের টাকা নিয়ে প্রতারণা করার উদ্দেশেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি গঠন করা হয়েছিল। বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল।

তবে ই-কমার্সভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু হবে কি না, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো মতামত দেয়নি বোর্ড।

আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এ তথ্য জানান পরিচালনা বোর্ডের প্রধান আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

বুধবার পদত্যাগ করা ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালির গঠিত হয়েছিল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার উদ্দেশে। এর নেপথ্যে ছিলেন সিইও রাসেল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ের পাশাপাশি ক্যাশব্যাকের অফার দিয়ে আলোড়ন তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ইভ্যালি নিয়ে সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে বিপাকে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মোহাম্মদ রাসেল গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে নানা উদ্যোগের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত কথা রাখতে পারেননি। তাই প্রতারণার মামলা হলে গ্রেফতার করা হয় রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে। এরপর আদালতের নির্দেশনায় গঠিত হয় নতুন পরিচালনা বোর্ড।

এদিন ইভ্যালির দায়িত্ব ছেড়ে দেন হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের পরিচালনা বোর্ড। বুধবার তাদের পদত্যাগপত্র বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন কোম্পানি বেঞ্চে দাখিল করা হয়। একই সঙ্গে পরিচালনা বোর্ডের অডিট রিপোর্ট ও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্ধারিত দিনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বুধবার বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা ছিল কোম্পানির অডিট রিপোর্ট ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা, আজ আমরা তা দাখিল করেছি।

ইভ্যালির পুরো ঘটনার জন্য কোম্পানির এমডি রাসেলকে দায়ী করে তিনি বলেন, রাসেল শুরু থেকেই প্রতারণামূলক অভিসন্ধি নিয়ে এই কোম্পানিটা করেছিলেন। তার ইচ্ছা কখনই ভাল ছিল না। তার ইচ্ছা ছিল মানুষকে ঠকানোর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা। রাসেল কোনো নিয়মনীতি মানতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে কখন কাকে কত টাকা দিয়েছে কোনো হিসাব নেই। কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, তার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। আমরা ধারণা করছি এখানে অর্থ পাচার হতে পারে, সেটারও তদন্ত হওয়া দরকার।

বিচারপতি মানিক বলেন, উচ্চ আদালত আমাদের আরেকটি দায়িত্ব দিয়েছিল যে, যদি আমরা মনে করি কোম্পানি আর চলবে না, তাহলে সেটাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা। কিন্ত সেটা আমরা করিনি এই জন্য যে, এখানে শত শত মানুষের ভাগ্যের বিষয় জড়িত।

তিনি বলেন, কোম্পানির বর্তমান যে আর্থিক অবস্থা, তাতে কোম্পানি আর চালাতে পারবে না। যদি চালাতে হয় তাহলে নতুন কোনো বিনিয়োগকারী আসতে হবে। যদি কেউ এগিয়ে আসে তাহলেই কোম্পানি চলতে পারবে।

অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি বলেন, জড়িতরা টাকাগুলো কি করেছে তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এই কোম্পানিতে বর্তমানে জিনিসপত্র এবং নগদ মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে পঞ্চাশ কোটি টাকার মত রয়েছে। সেই টাকা দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না, কারণ পাওনাদারের সংখ্যা অনেক বেশি।

বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আরও বলেন, আজ আমরা রিজাইন (পদত্যাগ) করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। গতকাল নয়, আজ (বুধবার) আমরা পদত্যাগ করেছি এবং পদত্যাগপত্র হাইকোর্টে জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে ২১ সেপ্টেম্বরের স্বাক্ষর রয়েছে। ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আদালতের নির্দেশে পাঁচজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, তার মা ফরিদা আক্তার ও বোনের স্বামী মামুনুর রশীদ।

এদিকে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইভ্যালির পরিচালা বোর্ডের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমদিন বোর্ড মিটিং শুরুর আগে অফিস পরিদর্শনকালে কোনো কক্ষেই চেয়ার, টেবিল ছাড়া কম্পিউটার, ফানির্চার, ল্যাপটপ পাওয়া যায়নি। এমনকি সব সিসি ক্যামেরার ডাটা রেকর্ডারও পাওয়া যায়নি।

এর আগে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন হাইকোর্ট। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

গত ১০ আগস্ট ইভ্যালি পুনরায় চালু করার বিষয়ে আদালতের নির্দেশে গঠিত বোর্ডের কাছে আবেদন করেন কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। একই আবেদনে শামীমা এবং তার মা ও বোনের স্বামীকে পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন।