জাতীয়

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চটি শনাক্ত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরিরা।

রোববার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান শীতলক্ষ্যা পাড়ে সাংবাদিকদের বলেন, লঞ্চটি পানির ২৫ মিটার (প্রায় ৫৫ হাত) গভীরে ডুবে আছে। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএর একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও একটি বার্জের সহায়তায় লঞ্চটিকে উঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রাতের মধ্যেই উদ্ধারকারী জাহাজ ঘটনাস্থলে আসবে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দুটি দলের পাঁচজন ডুবুরি এখানে কাজ করছেন। তারা পানির নিচ থেকে দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেছেন। আর একজন লঞ্চ যাত্রী সাঁতার কেটে ফিরে আসার পর মারা যান।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার রাতে জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে একটি টিম দুর্ঘটনাস্থলে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডুবন্ত জাহাজ পানির ওপরে তোলা হলে তার ভেতরে তল্লাশি চালানো হবে। পানির নিচে উদ্ধার অভিযান আগামীকাল (সোমবার) পুনরায় শুরু হবে।

এদিকে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঘটনার পর বিকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ ন ম বজলুর রশীদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

একই ঘটনার তদন্তে প্রকৌশলী ও জরিপকারক ওবায়দুল্লাহ ইবনে বশিরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর। এই কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবারের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

রোববার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে এম এল আশরাফ উদ্দিন নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

সোয়া দুইটার দিকে বন্দরের আল আমিন নগরের বাংলা সিমেন্ট ঘাট এলাকায় এলে এমভি রূপসী ৯ নামের সিটি গ্রুপের একটি মালবাহী জাহাজ দ্রুত গতিতে অতিক্রম করার সময় যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে পেছনের দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটি ডুবে যায়। এ সময় ১০-১৫ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠলেও অনেকেই নিখোঁজ হন।

জাতীয়

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ জন মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৭ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ৯ হাজার ৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮২ জন। আগের ২৪ ঘন্টায় ৭ হাজার ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬২।

গতকালের চেয়ে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে দশমিক ০৭ শতাংশ। গতকাল সংক্রমণের হার ছিল দশমিক ৮৩ শতাংশ। আজ তা বেড়ে হয়েছে দশমিক ৯০ শতাংশ।

দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ২৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৬০৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) গত ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ৪৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৬২ জন। শনাক্তের হার দশমিক ৯৬ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল দশমিক ৬৮ শতাংশ। আজ এই জেলায় ১ জন মারা গেছেন।

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৮৩৭ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৭১ জন। সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

জাতীয়

টাঙ্গাইলে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৬৬৩ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার করটিয়া এলাকার একটি টিনের গুদাম ঘর থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।

এ সময় আটক করা হয় চাল ব্যবসায়ী শরৎ চন্দ্র সূত্রধরকে। তিনি করটিয়া কলেজপাড়া এলাকার সুবল সূত্রধরের ছেলে।

র‌্যাব-১২ এর ৩নং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মো. এরশাদুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকালে সদর উপজেলার করটিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় শরৎ চন্দ্র সূত্রধরের টিনের গুদাম ঘর থেকে অবৈধভাবে মজুদ রাখা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৬৬৩ বস্তা চাল ও নগদ ১৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় শরৎ চন্দ্রকে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এসব চাল বেশি মুনাফার আশায় অবৈধভাবে সংগ্রহ করে মজুত করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জাতীয়

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো দেশে কারো মৃত্যু হয়নি।এর আগে লাগাতার দুই দিন (মঙ্গলবার ও বুধবার) করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন দেখে বাংলাদেশ। ফলে করোনায় দেশে মোট মৃত্যু ২৯ হাজার ১১২ জনই রয়েছে।

তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুর করে আরও ২৩৩ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৭ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় গত বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

২০২১ সালের ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এরপর বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়।

এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে।

২০২০ সালের এপ্রিলের পর গত বছরের ১৯ নভেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুহীন দিন পার করে বাংলাদেশ। সর্বশেষ দ্বিতীয়বারের মতো ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুশূন্য দিন পার করেছে দেশ।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে শুরু হয় ওমিক্রন ঝড়। ৩ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশ এবং ৬ জানুয়ারি তা ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এরপর থেকে সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করে। সম্প্রতি সে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

জাতীয়

পবিত্র শবে বরাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সব ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফাটানো, উৎপাদন, বিক্রি, মজুদ ও বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

বুধবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) জনসংযোগ শাখা থেকে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন সিএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) শাহাদত হুসেন রাসেল।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে শিশু কিশোরসহ অনেকে আতশবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের পটকা ফাটানোর চেষ্টা করে থাকে। পটকা ফাটানোর ফলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ইবাদত-বন্দেগিতে বিঘ্ন ঘটে ও শবে বরাতের ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুণ্ন করে এবং জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শুক্রবার (১৮ মার্চ) দিবাগত রাত পবিত্র শব-ই-বরাত উপলক্ষে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার (১৯ মার্চ) ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফাটানো, উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। আতশবাজি, পটকা ফাটানো ও উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে হতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে সোমবার সকালে।

গতিমুখ অনুযায়ী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসলে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড়ের কোনো বার্তা না দিলেও এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নাম হবে অশনি (asani)। শ্রীলঙ্কার দেওয়া এই নামের অর্থ বাজ বা বজ্র।

ঘূর্ণিঝড় অশনির অবস্থান

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাস জানিয়েছেন, ১৫ মার্চ ভারত সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ধীরে ধীরে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বদিকে এগিয়ে ১৯ মার্চ সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগরে লঘুচাপটি গভীর লঘুচাপে পরিণত হবে। ২০ মার্চ আনন্দাম নিকোবর দ্বীপের কাছাকাছি এসে পরিণত হবে নিম্নচাপে। আর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে ২১ মার্চ সকালে।

২২ মার্চ এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগুতে পারে। ২৩ মার্চ আরও উত্তর ও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে পৌঁছাতে পারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে।

বর্তমানে লঘুচাপের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠে যাচ্ছে ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. পর্যন্ত। এটি বাড়তে বাড়তে ২৩ মার্চ ৮০ কিলোমিটারে উঠে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) থেকেই সাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। ২৩ মার্চ প্রবল বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠতে পারে।

গত কয়েক বছর ধরে যত সামুদ্রিক ঝড় আসছে সবগুলোই প্রায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হেনেছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক এ বিষয়ে বলেন, একটা সিস্টেম ফরম করছে। তবে এটার গতিবিধি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ঘূর্ণিঝড়ের গতি ও গতিমুখ নিয়ে এত অগ্রিম কিছু বলা যায় না। কেননা, বারবার এগুলো পরিবর্তন হয়। আগে লঘুচাপটি উত্তর বঙ্গোপসাগরে আসুক, তারপর আমরা সবাইকে বলবো।

বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে কক্সবাজার-মিয়ানমার উপকূলে আসতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ওইদিকে তেমন কোনো ঝড় যায়নি। তবে এটি ওদিকে যেতে পারে। আসলে এত অগ্রিম কিছু সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।

জাতীয়

দেশে জঙ্গি অর্থায়নের ১৭টি তথ্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

মঙ্গলবার মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত সংস্থাটির সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

জঙ্গি অর্থায়নের এসব গোয়েন্দা তথ্যসহ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১১ ধরনের অপরাধের ৭৩টি তথ্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গত অর্থবছরে আর্থিক অনিয়ম তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থাটির কাছে সবচেয়ে বেশি ৩৩৪টি আর্থিক তথ্য চেয়েছে পুলিশের সিআইডি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৫টি, দুর্নীতি দমন কমিশন ১১৪টি, পুলিশের অন্যান্য বিভাগ ৪৪টি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ৭টি তথ্য চেয়েছে। আর অন্যান্য সংস্থা চেয়েছে ৭৪০টি তথ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে বিএফআইইউ এর ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন ইউনিটটির প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস।

প্রশ্নোত্তর পর্বে ওই অর্থবছরে বাংলাদশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে জানতে চাইলে তা আইনগত কারণে জানানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ বিভিন্ন সূত্র থেকে মোট ৫ হাজার ২৮০টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পায়, যেগুলোর ৮৫ শতাংশই এসেছে ব্যাংকগুলো থেকে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় টাকার হিসাবে যা ৭৪ শতাংশ এবং সংখ্যার বিচারে ৪৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের সবগুলোই অপরাধ নয়। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সত্যিকারের অপরাধ খুঁজে বের করার কাজটি করে বিএফআইইউ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিএফআইইউ নিজেরা গবেষণা করে তিনটি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্য পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে আরও ১৪টি জঙ্গি অর্থায়নের ঘটনার তথ্যের বিষয়ে এ ইউনিটের সাহায্য চাওয়া হয়।
আর বছরজুড়ে ৭৩ অপরাধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে ২১টি, দুর্নীতি ও ঘুষের ১৬টি, জালিয়াতির ১১টি, টাকা পাচারের ছয়টি, মানব পাচারে চারটি, কর ফাঁকির ঘটনা তিনটি বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে।

আগের বছরের তুলনায় এবার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন বাড়ার বিষয়ে বিএফআইইউ এর প্রধান মাসুদ বিশ্বস জানান, আগের চেয়ে প্রশিক্ষণ বাড়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন ধরার ক্ষমতা বেড়েছে।

তবে মাত্র ৭৩টি গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে এ ইউনিটের উপমহাব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে কাজ করা যায়নি বলে কম ‘রিপোর্ট’ করা গেছে।

আগের অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৭৫টি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে মোট ১১৬টি বিভিন্ন অপরাধ খুঁজে বের করেছিল বিএফআইইউ।

জাতীয়

দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে বিদেশ থেকে তিনটি জাহাজে করে আসছে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল।

দেশের কয়েকটি শীর্ষ ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব আমদানি করেছে। দুটি জাহাজে ৩২ হাজার টন তেল এরই মধ্যে বন্দরে পৌঁছে গেছে, ৪২ হাজার টন নিয়ে আসছে আরেকটি জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অপরিশোধিত সয়াবিনের দুটি জাহাজ বন্দরের আউটারে এসেছে গত বৃহস্পতিবার। ওই দুটি থেকে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্য জাহাজটি ১৯ মার্চ আউটারে আসবে।

এসব সয়াবিন তেল পরিশোধনের পর রোজার আগেই বাজারে ঢুকবে বলে সয়াবিনের সঙ্কট থাকবে না আমদানিকারকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ‘এমটি লুকাস’ নামের একটি মাদার ট্যাংকার এনেছে ১২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন। এর মধ্যে টিকে গ্রুপের শবনম ভেজিটেবল অয়েল এনেছে পাঁচ হাজার টন, বে শিপিং করপোরেশন এনেছে ২ হাজার ৯৭৫ টন এবং সুপার রিফাইনারি এনেছে ৮ হাজার টন।

একই দিন বহির্নোঙরে আসা ‘এমটি প্যাসিফিক রুবি’তে এসেছে ২০ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এর মধ্যে রয়েছে মেঘনা গ্রুপের মেঘনা এডিবল অয়েল রিফাইনারির ৭ হাজার টন, সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন সিটি এডিবল অয়েলের ১০ হাজার টন।

৪২ হাজার ৮৫০ টন সয়াবিন তেল নিয়ে যে ‘এমটি স্ট্যাভেঞ্জার পাইওনিয়ার’ বন্দরে আসছে, তাতে সিটি গ্রুপ ছাড়াও টিকে গ্রুপ, সেনা এডিবল অয়েল, বালাদেশ এডিবল অয়েলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তেল রয়েছে।

আমদানিকারকরা জানান, আমদানি করা অপরিশোধিত সয়াবিন শুরুতে পতেঙ্গার ট্যাংক টার্মিনালে রাখা হবে। শুল্ক কর পরিশোধন শেষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় রিফাইন করে বাজারে ছাড়বে।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে সয়াবিন তেলের নতুন নামকরণ হয়েছে। কেউ কিনতে বা জানতেই চাইলে দোকানিরা তেলকে ডাকছেন ‘সোনার হরিণ’ নামে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সয়াবিন আমদানি অব্যাহত রেখেছি। দাম বাড়তি সত্ত্বেও বিদেশ থেকে সয়াবিন এনে খালাস করা হচ্ছে। খালাস শেষে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে বাজারজাত করা হবে।”

“আসন্ন রোজায় সয়াবিন তেলের সঙ্কট হবে না,” বলেন তিনি।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টনের মতো, যার ১৮ লাখ টনই আমদানি করতে হয়। আর ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

কোভিড মহামারীর মধ্যে গত কিছু দিন ধরেই বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

যুক্তরষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড’র তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ৭৩৫ ডলার।

তিন জাহাজে করে বাংলাদেশে আমদানি করা সয়াবিন কত দরে কেন হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য জানা যায়নি।

আমদানি মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট, পরিশোধন, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ যুক্ত করে বাজারের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এরমধ্যে দাম কমাতে কয়েক পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সরকার।

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “সরকার আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমিয়েছে। এর প্রভাব হয়ত বাজারে পড়বে। তবে আমাদের আমদানি করা সয়াবিনের ভ্যাটসহ অন্যান্য কর আগেই পরিশোধ করা হয়েছে।”

জাতীয়

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের লাশ গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগীতে পৌঁছেছে।

সোমবার রাত ১০টায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি হোসনাবাদে পৌঁছলে সেখানে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।

এ সময় হাদিসুরের লাশ দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী। কফিনের ভেতর পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া হাদিসুরের দেহ দেখে চিৎকার করতে থাকেন মা-বাবা, ভাইবোনসহ স্বজনরা। স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি এলাকার নারী-পুরুষরা।

নিহত হাদিসুরের ছোটভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স জানান, আগেই দাফনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পেছনের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে হাদিসুরের লাশ দাফন করা হবে।

এর আগে হাদিসুর রহমানের লাশবাহী তুরস্ক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি সোমবার দুপুর ১২টা ৭ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

রোববার দুপুরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো বিমানে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাশটি পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু ইস্তাম্বুলে তুষারপাত থাকায় গতকাল লাশ আনা সম্ভব হয়নি।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১১২ জনের।

নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৩৯ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ জন।

সোমবার (১৪ মার্চ) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৮০৮ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৭৮টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৩৫টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৬৭টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ৪০৪টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত একজন পুরুষ এবং তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৩৪ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৫০ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৪২ হাজার ৮৫৫ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ছয় হাজার ৩৮৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩৬ হাজার ৪৭০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।