জাতীয়

‘এক মাসের বেশি সময় ধরে গোলাগুলি চললেও এতদিন ভয় লাগতো না। কয়েকদিন আগে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক রোহিঙ্গা যুবক মারা যাওয়ার পর এখন আতঙ্কে আর ঘুমাতে পারি না।

ঘুমেও এখন গুলির শব্দ শুনতে পাই!’

এভাবেই আতঙ্কের কথা জানালেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু পশ্চিমকূল গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক উদ্দিন (২৩)। শুধু রফিক নন, পার্শ্ববতী দেশ মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দে গত মাসখানেক সময় ধরে সীমান্ত এলাকার বেশির ভাগ মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে।

সীমান্তের বাসিন্দা রফিক জানান, গ্রামের মসজিদে ইমামতি করেন তিনি। ঘুম তো দূরের কথা শুক্রবারে জুমার নামাজ আদায় করাও এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, রাতের বেলায় ঘুম তো আসেই না। চোখে একটু একটু ঘুম এলেই গুলির শব্দে আবার ভেঙে যায়। গুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দে বার বার চমকে ওঠে আমাদের ছেলেমেয়েরা।

বান্দরবানের ঘুমধুম পশ্চিমকূল গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ নুর আহম্মদ বলেন, ১৯৭১ সালেও হয়তো আমার বাপ-দাদারা এরকম গোলাগুলির শব্দ শোনেনি। আমি আমার জীবদ্দশায় এ ধরনের পরিস্থিতি আগে কখনো দেখিনি। গোলাগুলির শব্দে আশপাশ কেঁপে ওঠে।

তিনি বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ। ঘুমাতে পারছি না অনেকদিন। এতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছি। কখন যে এই দুর্দশা থেকে রেহাই পাবো, ভালো করে ঘুমাতে পারবো জানি না!

নুর আহম্মদের মতো এলাকাবাসীর প্রশ্ন কখন শান্ত হবে মিয়ানমার। আবার কখন শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন তারা।

রফিক উদ্দিন জানালেন, এখন পুরো এলাকাজুড়েই আতঙ্ক। গত কয়েক দিনে উত্তর পাড়া, কোনার পাড়াসহ আশপাশের এলাকায় অনেকগুলো গোলা এসে পড়েছে। মর্টার শেল এসে পড়াতে এক রোহিঙ্গা যুবক মারা গেছেন। বাংলাদেশি এক চাকমা যুবকের পা উড়ে গেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এমন পরিস্থিতিতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায় যাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না রফিক।

৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ

ঘুমধুম সীমান্তের এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে থাকা ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের কথা ভাবছে প্রশাসন।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে মিয়ানমারে গোলাগুলি চলছে। এতে সীমান্ত এলাকার মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। বিষয়টি বিবেচনা করে সীমান্ত এলাকার অন্তত ৩০০ পরিবার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ওই ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে এনে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখার পরিকল্পনা চলছে। সোমবার এসব বিদ্যালয় ও এলাকাগুলো জেলা প্রশাসক পরিদর্শন করে এখানকার সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে জানান ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজী জানান, ঘুমধুম এলাকার মানুষকে কীভাবে নিরাপদে রাখা, তাদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবছি। পরিস্থিতির বিবেচনা করে যেকোনো সময় আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা ঘুমধুম এলাকাটি আমি পরিদর্শন করেছি। লোকজনকে সরিয়ে এনে কোথায় রাখা যাবে সেটা দেখছি।

এর আগে একদিনের নোটিশে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪৩৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জাতীয়

রাজধানীর মিরপুরে সমাবেশ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর জোনের ডিসি জসীম উদ্দিন।

ডিসি বলেন, মিরপুর-৬ রোডে বিএনপির সমাবেশের পাশ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শোকসভায় যাচ্ছিলেন। তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ওপর হামলা করে। এ সময় পুলিশ আওয়ামী লীগের লোকদের সরিয়ে দেয়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে পুলিশের কয়েকজন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসি জসীম উদ্দিন বলেন, এখানে বিএনপির একটি মিটিং ছিল। তারপর পাশ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শোকসভায় যাওয়ার সময় বিএনপির লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। আওয়ামী লীগের লোকজনের ওপর হামলা করার পর আমরা তাদের সরিয়ে দেই।তারপর বিএনপির নেতাদের উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা করে।

কাদের উস্কানিতে, কারা হামলা করেছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হামলার জন্য কারা উস্কানি দিয়েছে, কারা হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে- তা তদন্তের পর জানা যাবে। আমরা তাদের (বিএনপি) শন্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছি। অথচ তারা আমাদের ওপর হামলা করল।

এদিকে বিএনপির নেতাদের দাবি, আওয়ামী লীগ তাদের ওপর হামলা করেছে। তখন পুলিশ সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।

বিএনপি নেতাদের এই দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি জসীম উদ্দিন বলেন, তারা তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছে। তারা কী বক্তব্য দিয়েছে জানি না। আপনারা দেখেছেন তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে।

জাতীয়

সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রথম দিন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার দুটি কেন্দ্রে ও লোহাগড়ার একটি কেন্দ্রে পরীক্ষার শুরুতে বাংলা প্রথম পত্রের স্থলে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্নপত্র বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।

প্যাকেটের ওপরে বাংলা প্রথমপত্র লেখা থাকায় এমনটি হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।

তাৎক্ষণিকভাবে ভুল প্রশ্নপত্র উঠিয়ে নিয়ে প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র বিতরণ করে সফলভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। জেলায় মোট ২১টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টম্বর) পরীক্ষা শুরু হলে কালিয়া উপজেলার প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও বাঐসোনা কামশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নের পরিবর্তে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্ন বিতরণ করা হলে পরীক্ষার্থীদের কাছে ভুলটি ধরা পড়ে। এছাড়া লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটে।

কালিয়া প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব দীপ্তিরানী বৈরাগী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের ওপরে বাংলা প্রথমপত্রের কোড লেখা থাকায় এমনটি হয়েছে। পরে টের পেয়ে দ্রুত সেগুলো গুছিয়ে নেওয়া হয় এবং বাংলা প্রথম পত্রের অতিরিক্ত প্রশ্নপত্র দিয়ে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। কেন্দ্রটিতে প্রথম দিনে ৩৩০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে।

এছাড়া বাঐসোনা কামশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমলেন্দু হিরা জানান, ১৫টি প্রশ্ন বিতরণের পর বিষয়টি নজরে আসে। এরপর দ্রুত কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা প্রশ্নগুলো ফিরিয়ে নেন এবং সঠিক প্রশ্নপত্র বিতরণ করেন।

দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব সুভাষ চন্দ্র কুন্ডু বলেন, আমাদের এখানে সরবরাহকৃত একটি প্যাকেটে প্রথম পত্রের পরিবর্তে দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্ন ছিল। এ প্যাকেটে ১০০ প্রশ্ন ছিল। পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়ার আগেই বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে এটা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, প্যাকেট করার সময় ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রগুলো সঙ্গে সঙ্গেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি শিক্ষা বোর্ডকে জানানো হবে। তবে পরীক্ষা পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে থাকা অতিরিক্ত প্রশ্নপত্র দিয়ে প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ করা হয়েছে।

জাতীয়

রায়ে আদালত বলেছে, সরকারি চাকরি আইনের ওই ধারা ‘সংবিধান পরিপন্থি এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি’।

ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে বাতিল করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

তিন বছর আগে কার্যকর হওয়া সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারার বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় দেয়।

রায়ে আদালত বলেছে, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ওই ধারা ‘সংবিধান পরিপন্থি এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি’।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

রায়ের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “আদালত বলেছে, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে আছে, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান, সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে। তারপরও ৪১(১) ধারা করে সেখানে সরকারি কর্মচারীদের আলাদাভাবে একটি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তা কেনোভাবেই সংবিধান সম্মত নয়, এ আইন একটি মেলাফাইড উদ্দেশে করা হয়েছে।”

সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা দিতে এ আইনের ৪১(১) ধারা সংযোজন করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এ রায়ের ফলে তাদের গ্রেপ্তারে আর পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই।”

মনজিল মোরসেদ বলেন, “আমরা আদালতকে দেখিয়েছি, এই আইন করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য রয়েছে, সেখানে সরকারি কর্মচারীদেরকে সাধারণ নাগরিক থেকে একটু আলাদা করে তাদেরকে একটি বিশেষ শ্রেণি হিসেবে দেখিয়ে তাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। অপরাধ করলেও যেন তারা অপরাধী হিসেবে শাস্তি না পায়। বিশেষ করে এই আইনের মাধ্যমে দুদকের যে স্বাধীনতা, সেটা খর্ব করা হয়েছিল।”

২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়।

আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, “কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।”

নানা মহলের সমালোচনার মধ্যে আইনের এ ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাই কোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।

প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে হাই কোর্ট। সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল করা হবে না এবং এ ধারা সংবিধানের ২৬(১) ও ২৬(২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।

বুধবার সেই রুলের ওপর শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারায় এমন বিধান রাখা হয়েছিল। পরে তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করলে আদালত ওই ধারাটি বাতিল করেছিলেন। যদিও সরকার এখনও তা আইন থেকে বাদ দেয়নি। তখন আদালত একে ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন।”

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় আপিল বিভাগের একটি রায় তুলে ধরে বলেন, “আইনটি সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য করা হয়েছে। আইনটিতে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করেনি। সব সরকারি কর্মচারীর বেলায় এ বিধান প্রযোজ্য।”

তখন এক বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “আইন করার ক্ষেত্রে সরকার কীভাবে বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে দায়মুক্তি দেয়! এতে তো দুর্নীতিতে আরও উৎসাহ জোগাবে।”

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর এ সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি সংক্রান্ত ধারা ৪১(১) ও ৩ চ্যালেঞ্জ করে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান আরেকটি রিট আবেদন করেছিলেন। তার প্রাথমিক শুনানির পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর রুল দেয় হাই কোর্ট। এটি হাই কোর্টের আরেক বেঞ্চে বিচারাধীন।

জাতীয়

দিল্লিতে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হয়েছে।

কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনের লক্ষ্যে হতে চলা সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের পানি সম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়।

আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “কুশিয়ারা নদীর অন্তর্বর্তী পানিবণ্টনের ওপর সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু চূড়ান্ত করেছে উভয় দেশ।”

পাশাপাশি ২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারকের আলোকে ফেনী নদীর যে অংশ থেকে ত্রিপুরার সাব্রুমের জন্য পানি নেওয়া হবে, তার স্থান নির্ধারণ ও নকশা বৈঠকে চূড়ান্ত করার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।

দীর্ঘ ১২ বছর পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত বৈঠকে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীমও ছিলেন বৈঠকে।

জেআরসি: কুশিয়ারার জন্য এমওইউ চূড়ান্ত, তিস্তায় ফের আশ্বাস

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নদীর যৌথ প্রবাহ থেকে উভয় দেশ যাতে পানি নিতে পারে, সেজন্য দ্রুত সময়ে এমওইউ স্বাক্ষরে ভারতকে সহযোগিতার অনুরোধ করে বাংলাদেশ। ভারত নিশ্চিত করেছে, এটা তাদের সক্রিয় বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।

তিস্তা চুক্তি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা এ চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার অনুরোধ বাংলাদেশ আবারও জানিয়েছে বৈঠকে।

অন্যদিকে ভারত এ চুক্তি শেষ করতে ‘সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের প্রাপ্য পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের উপায় বের করতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ।

জেআরসি: কুশিয়ারার জন্য এমওইউ চূড়ান্ত, তিস্তায় ফের আশ্বাস
ভারতীয় হাই কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, যৌথ নদীগুলোর পানিবণ্টনের আলোচনার পাশাপাশি বন্যা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, নদী দূষণ রোধ ও নদীতীর রক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টনের সমঝোতা স্মারকটি সই হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এর আগে যৌথ নদী কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে।

জাতীয়

আগুন নেভার পর লাশগুলো পাওয়া গেছে রেস্তোরাঁর মাচায়, সেখানে কর্মীরা ঘুমাতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রেস্তোরাঁর ওপর যে মাচায় ঘুমাতেন কর্মীরা সেটাই দেখাচ্ছিলেন উদ্বিগ্ন স্বজনরা। ঠিক তখনই একজনের পোড়া হাত বের হয়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক তরুণ।

ভাই ওসমান ওই রেস্তোরাঁয় রাতের পালার কর্মী, ডুকরে কেঁদে জানালেন মো. ইকবাল নামে ওই তরুণ। এরপরই ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা মই দিয়ে মাচায় উঠে ছয়জনের পোড়া দেহের সন্ধান পান।

এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার দিকেও কথা হয় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক বজলুর রশিদের সঙ্গে। তখনও ঘটনাস্থলে হতাহতের কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে।

তিনি জানিয়েছিলেন, ভেতরে প্রচন্ড ধোঁয়া। সেখানে কাজ করতে গিয়ে কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

একটু পরই রেস্তোরাঁ কর্মীদের কয়েকজন আত্মীয় এসে জানান, তাদের স্বজনদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে চকবাজারের কামালবাগে দেবী দাস ঘাট এলাকার চারতলা একটি ভবনে আগুন লাগার পর ফায়ার সর্ভিসের ১০টি ইউনিট সোয়া দুই ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুন নেভার পর লাশগুলো পাওয়া গেছে ভবনের নিচতলায় ‘বরিশাল রেস্টুরেন্টের’ ছাদের নিচে কাঠ দিয়ে বানানো মাচায়। সেখানে কর্মীরা ঘুমাতেন বলে জানান চকবাজার থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম।

রাতের পালায় কাজ করা আটজন কর্মী দিনের বেলায় সেখানে ঘুমাতেন। সেখানেই মিলেছে ছয়জনের লাশ।

ফায়ার সার্ভিসের অয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মাচা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

তবে লাশগুলো শনাক্ত করা যায়নি। রেস্তোরাঁর নিখোঁজ কর্মী বিল্লালের ভাই আইয়ুব আলী বলেন, “আগুন লাগার পর থেকেই বিল্লালকে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছিল না।”

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও যখন বলা হচ্ছিল যে, হতাহত নেই তখন তারা আশায় বুক বাঁধছিলেন।

তিনি বলেন, “এমনও হতে পারে যে, তার ফোনটা পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে, তাই সব আত্মীয়-স্বজনকে আসতে বলেছি, যাতে খোঁজাখুঁজি করে বিল্লালকে পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত আর রক্ষা হল না।”

অগ্নিকাণ্ডে বিল্লাল এবং ওসমান ছাড়াও শরীফ এবং স্বপন নামে রেস্তোরাঁর আরও দুই কর্মীর সন্ধানে ঘটনাস্থলে এসেছেন তাদের স্বজনরা।

তবে উদ্ধার করা লাশগুলো স্বজনদের দেখতে দেওয়া হয়নি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে আসা স্বজনদের ঘটনাস্থল থেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

দেবী দাস ঘাটের সরু গলির মধ্যেই সারি সারি প্লাস্টিকের কারখানা ও প্লাস্টিক পণ্যের গুদাম। সোমবার দুপুরে যে ভবনটিতে আগুন লাগে তার নিচতলাতেই ওই রেস্তোরাঁ।

পাশেই প্লাস্টিক কারখানার কাঁচামালের দোকান আর উপরের তলায় প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির কারখানা। স্থানীয়রা জানান, কারখানাগুলোতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ হয়। তাই রেস্তোরাঁটিও রাত-দিন খোলা থাকে।

জাতীয়

রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডারের চাপায় একটি প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রীর নিহতের ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার, সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান ও ডিএমপির এডিসি মনজুর মোর্শেদ।

এর আগে সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরার আড়ং শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- গাড়ির মালিক রুবেল (৫০), ফাহিমা (৪২), ঝর্না (২৮), দুই শিশু জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনিকে (২১)।

হতাহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, বর হৃদয়ের বাবা নিহত রুবেল হোসেন গাড়ি চালাচ্ছিলেন। নিহত ফাহিমা কনে রিয়া মনির মা। এছাড়াও নিহত ঝরনা হৃদয়ের খালা। শিশু দুটির মা ঝরনা।

ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, ‘আহত দুইজনকে উদ্ধার করে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা আশঙ্কামুক্ত।’

তিনি বলেন, ‌‘ক্রেন দিয়ে একটি গার্ডার উপরে তোলার সময় নিচে পড়ে যায়। গার্ডারটি একটি প্রাইভেটকারের ওপরে পড়ে।’

জানা গেছে, নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া মনির বিয়ে হয় গত শনিবার। ঢাকায় সেই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে তারা আশুলিয়া ফিরছিলেন।

জাতীয়

নাটোরের সেই কলেজ শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গুরুদাসপুরে নিজ গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট গঠিত মেডিক্যাল টিম থেকে জানানো হয়েছে শ্বাসরোধের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

জানাজায় আশপাশের হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এর আগে সন্ধ্যার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে পুলিশের সহায়তায় মরদেহ হস্তান্তর করেন তিন সদস্য বিশিষ্ট গঠিত মেডিকেল টিমের সদস্যরা।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে তার মরদেহটি দাফন করা হয়েছে।

এদিকে গঠিত মেডিক্যাল টিমের প্রধান নাটোর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সামিউল ইসলাম শান্ত রাতে বলেন, শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ভিসেরা রিপোর্ট এলে আসল কারণ জানা যাবে।

ইাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ বলেন, শিক্ষিকা মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই ইউনুস আলী একটি ইউডি মামলা করেছেন। ঘটনাটি স্পর্শ কাতর তাই গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষিকার স্বামী মামুন পুলিশ হেফাজতে আছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জাতীয়

নানা কর্মসূচিতে বাংলাদেশ স্মরণ করছে স্বাধীনতার স্থপতিকে।

সাতচল্লিশ বছর আগে ঘাতকের বুলেট যেদিন স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, সেই শোকের দিনটি ফিরে এল আবার।

কালের নিয়মে ঘুরে আসা বাংলাদেশের শোকের দিন ১৫ অগাস্ট; গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি পালন করছে জনককে হারানোর দিনটি।

স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে।

তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি।

জাতীয় এই শোকের দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়, পালিত হয় নানা কর্মসূচি।

ইতিহাসের জঘন্যতম সেই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু স্বাধীনতার স্থপতিকেই হারায়নি বাঙালি, দীর্ঘ কালের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে জাতীয় জীবনের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল, তাও উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে।

স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি আবার জেঁকে বসে এদেশের বুকে, যে স্বপ্ন-চেতনায় স্বাধীন হয়ে ছিল দেশ, তাও হয় অবদমিত।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্রলীগ গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় আসেন তিনি।

এরপর বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও ছেষট্টির ছয় দফা প্রণয়নে ভূমিকা রেখে এবং ১৯৬৮ সালে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি হিসেবে শেখ মুজিব বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে ওঠেন।

১৯৬৯ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কারামুক্ত হন শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর তাকে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করে ছাত্র-জনতা।

১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতার ডাক দেন তিনি। তার নেতৃত্বে রক্তাক্ত সংগ্রামেই অভ্যূদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ এর ওই ঘটনার দুই দশকের বেশি সময় পর ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সেই বঙ্গবন্ধুই থেকে যান অগোচরে, উপেক্ষিত থেকে যায় তার নীতি-আদর্শ। বিকৃত করা হয় ইতিহাস।

আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর ১৫ অগাস্টকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ ঘোষণা করলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের পাঁচ বছরে আবারও বাতিল করা হয় সেই শোকের দিবস। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে হাই কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সাল থেকে দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে।

৪৭ বছর আগে সেই রাতে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ছাড়াও স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরকে হত্যা করে।

সেই রাতেই নিহত হন বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবী ও শিশুপৌত্র সুকান্ত বাবু; বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত ও রিন্টু।

ধানমণ্ডির বাড়িতে পুলিশের বিশেষ শাখার সাব ইন্সপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

<div class="paragraphs"><p>গুলিবিদ্ধ বঙ্গবন্ধুর লাশ ৩২ নম্বরে</p></div>

(গুলিবিদ্ধ বঙ্গবন্ধুর লাশ ৩২ নম্বরে)

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইতিহাসের নৃশংসতম এই রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষায় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল।

২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচার শুরু হয়। তবে বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার পর মামলার গতি শ্লথ হয়ে যায়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর মামলার বিচার চূড়ান্তভাবে শেষ করার পর ২০১০ সালে পাঁচ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ২০২০ সালে ফাঁসি হয় আরেক খনি আবদুল মাজেদের।

অন্য আসামিদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরীর কানাডায় আছেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে সরকারের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সরকারের সাড়া মেলেনি।

আরেক আসামি মোসলেম উদ্দিন পাকিস্তানে আছেন বলে তথ্য ছিল ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) কাছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলেও পাকিস্তান কোনো জবাব দেয়নি। আর রশিদ ও ডালিম এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য এখনও জানতে পারেনি সরকার।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আহ্বান রাষ্ট্রপতির

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন। এ লক্ষ্যে স্বাধীনতার এক বছরের মাথায় প্রণয়ন করেন একটি গণমুখী সংবিধান।

“বঙ্গবন্ধু শুধু একটি দেশই উপহার দেননি; তিনি সদ্য স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামো কেমন হবে, তারও একটি যুগোপযোগী রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন।”

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু সবসময় জনগণের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখতেন। উন্নয়ন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জনে মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ প্রচেষ্টাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো সেই পথে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে স্বনির্ভর দেশ গড়ার লক্ষ্যে। দেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে তিনি ঘোষণা করেছেন ‘রূপকল্প ২০৪১’। বাংলাদেশের উন্নয়নের অনন্য মাইলফলক পদ্মা সেতু ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ আরো কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হবে।”

“আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞান-গরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে। আসুন, জাতীয় শোক দিবসে আমরা জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি এবং তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি,” বলেছেন রাষ্ট্রপ্রধান।

গণতন্ত্রবিরোধীদের চক্রান্ত মোকাবেলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, “জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী চক্র তাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে।

“এই হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে জাতির পিতার হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে; সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে; হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে; বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দেয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়; রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে; রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী অবৈধ সামরিক সরকার এবং বিএনপি-জামাত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।”

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

<div class="paragraphs"><p>আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে&nbsp;শেখ হাসিনা</p></div>

(আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে শেখ হাসিনা)

তিনি বলেন, “গত সাড়ে ১৩ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। এই সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হয়েছে। আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

“ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রবিরোধী চক্র এখনও নানাভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এই অপশক্তির যে কোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, “বাংলাদেশ ও বাঙালির বিভিন্ন ঐতিহাসিক দিবসের প্রায় সবই অর্জনের, গৌরবের; কিন্তু জাতীয় শোক দিবস হারানোর দিন, কলঙ্কের দিন।এই দিনে ইতিহাসের বর্বরোচিত ও মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে।”

শোকাবহ এদিনে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

দিনের কর্মসূচি

জাতীয় শোক দিবসে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবন, বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

তথ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর তিনি সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে জাতির পিতার পরিবারের সদস্য ও অন্য শহীদের কবরে শ্রদ্ধা জানাবেন।

সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে ফুল দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে হবে বিশেষ মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এতে অংশ নেবেন বলে বঙ্গভবন থেকে জানানো হয়েছে।

শোক দিবসে সারাদেশের মসজিদগুলোতে জোহরের নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত হবে। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে প্রকাশ করা হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর পোস্টার প্রকাশ করেছে। সারাদেশে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করবে।

তথ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ সচিবালয়ে সপ্তাহব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বিভাগীয় পর্যায়েও আঞ্চলিক তথ্য অফিস আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন শোক দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

সব সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হামদ-নাত প্রতিযোগিতা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে।

জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালিত হবে।

রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে ১৬ অগাস্ট আলোচনা সভা করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাতে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেই সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

জাতীয়

শিশুদের সুরক্ষায় ৫-১১ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বাড়াতে কোভ্যাক্সের আওতায় এই টিকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

দেশের শিশুদের জন্য দ্বিতীয় দফায় আরও ১৫ লাখ ডোজ ফাইজারের কোভিড-১৯ টিকা অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের সুরক্ষায় টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বাড়ানোর অংশ হিসাবে কোভ্যাক্সের আওতায় এই টিকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে ৩০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দেওয়া ফাইজার উৎপাদিত শিশুদের কোভিড টিকার ১৫ লাখ ডোজের চালান বাংলাদেশে আসে।

নতুন সহায়তা মিলিয়ে বাংলাদেশের জনগণের জন্য এ পর্যন্ত ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি কোভিড টিকা উপহার দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে পাওয়া কোভিড-১৯ টিকা অনুদানের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও আমেরিকার জনগণের পক্ষ থেকে।

জাতীয় কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রমের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে জানিয়ে বলা হয়, এর মধ্যে ৫১ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও অন্যান্য কর্মীকে নিরাপদ টিকা প্রদানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ১৮টি ফ্রিজার ভ্যান, ৭৫০টি ফ্রিজার ইউনিট ও টিকা বহনকরার ৮ হাজার বাক্স অনুদান দেয়ার কথাও জানিয়েছে দূতাবাস।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভিড-১৯ বিষয়ে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১৪ কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।