জাতীয়

লাইলাতুল কদর হচ্ছে একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। এ রাতে মহান আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির প্রতিটি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তাঁর আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন-আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়। মহান আল্লাহ এ রাতে বান্দার জীবন, মৃত্যু ও ভাগ্যলিপি চূড়ান্ত করে দেন।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় এ রাত হলো ফজরের সূচনা পর্যন্ত’ (সূরা কদর)। এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। যে ব্যক্তি এ রাত ইবাদতে মগ্ন থেকে কাটিয়ে দিল, সে যেন তিরাশি বছর চার মাসের বেশি সময় ধরে মহান আল্লাহর ইবাদত করল।

এ রাতটি কেন হাজার মাসের চেয়েও উত্তম? নবিজির একটি গল্পে এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। নবিজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। আমরা তো সেই উপাসকের মতো শ্রেষ্ঠ হতে পারব না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবিজির কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসাবে প্রমাণ করে দিলেন (তাফসিরে মাজহারি)। নবিজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোয় লাইলাতুল কদর তালাশ করো’ (বুখারি)। এই পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত।

লাইলাতুল কদরকে গোপন রাখা মহান আল্লাহর মহারহস্য। তিনি চান, মূল্যবান কিছু অর্জনে যেমন কষ্ট করতে হয়, তেমনি তার বান্দা লাইলাতুল কদর অন্বেষণেও সাধনা করুক। ওলামায়ে কেরাম বলেন, লাইলাতুল কদর যদি অনির্দিষ্ট রহস্যময় না হতো, তাহলে অনেক অলস ও হতভাগা লোক এ মহান রাতের অমর্যাদা করে আল্লাহর গজবে পতিত হতো। তবে লাইলাতুল কদর সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। এ রাতের ফজিলত শুধু মুমিনদের জন্য। যাদের ইমান আছে, যারা প্রকৃত মুমিন, তারাই শুধু লাইলাতুল কদরের সুফল পাবে। নবিজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে আত্মকল্যাণের উদ্দেশ্যে এ রাতে জেগে থেকে ইবাদত করবে, তার অতীতের সব পাপ মোচন করা হবে’ (বুখারি)। অন্যান্য ফরজ ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে নফল ইবাদত করে নির্ঘুম রাত অতিবাহিত করা লাইলাতুল কদরের প্রধান সুন্নত।

নবিজির আমলে অনেক সাহাবি রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসাবে স্বপ্নে দেখেছেন। সাহাবিরা নবিজিকে স্বপ্নের কথা জানালে নবিজি বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি, নবিজি (সা.) রমজানের ২৭ তারিখের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবিজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে নবিজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে (মুসনাদে আহমদ)। অনেক বিজ্ঞজনের মতে, লাইলাতুল কদর হচ্ছে রমজানের ২৭ তারিখে। তারা বলেন, আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দ দুটিতে ৯টি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে ‘লাইলাতুল কদর’ শব্দ দুটি তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে ফলাফল হয় সাতাশ। তাই ছাব্বিশতম রোজার দিবাগত রাত সাতাশ রমজানের রাতই হলো লাইলাতুল কদর রাত (তাফসিরে মাজহারি)। আবার অনেকের মতে, বছর ঘুরে লাইলাতুল কদরের তারিখ পরিবর্তন হয়। কোনো বছর একুশ, কোনো বছর তেইশ, কোনো বছর পঁচিশ, কোনো বছর সাতাশ, আবার কোনো বছর উনত্রিশ তারিখের রাতে লাইলাতুল কদর হয়। তবে সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে অনেক মহামনীষী রমজানের সাতাশ তারিখের রাতকে লাইলাতুল কদর হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।

লাইলাতুল কদরের নিদর্শন : বিজ্ঞজনের মতে, লাইলাতুল কদরের রাতের বিশেষ কিছু নিদর্শন রয়েছে। এ রাতে অন্ধকার গভীর হবে না। আলো-আঁধারি ছেয়ে থাকবে। অধিক গরম হবে না। শীতের তীব্রতাও থাকবে না। মৃদু বাতাস প্রবাহিত হবে। মহান আল্লাহর উপাসনায় মানুষ তৃপ্তি লাভ করবে। এ রাতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। লাইলাতুল কদর শেষে সূর্য উদয় হবে হালকা আলো নিয়ে পূর্ণিমার চাঁদের মতো করে। কিন্তু মুমিন বান্দার সঠিক কাজ হবে, রমজানের শেষ দশকের প্রত্যেক বিজোড় রাতেই লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করে মহান আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকা। তার ধ্যানে নিজেকে মগ্ন রাখা।

লাইলাতুল কদরের ইবাদত : এ রাতে মুমিন বান্দা কিছু নফল ইবাদত করবে। ধীরগতিতে নফল নামাজ পড়বে। তাকওয়া ও স্থিরতার সঙ্গে রুকু-সিজদা করবে। বারবার মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। এ রাতে যে মুমিন বান্দা অনেক কিছু পেল কিন্তু ক্ষমা পেল না; তাহলে তার চাওয়া-পাওয়া সবই ব্যর্থ। তার জীবন পুরোটাই অনর্থ। এ রাতে একনিষ্ঠ চিত্তে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করবে। মুমিন এ মর্মে আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে যে, সে জীবনে সব পাপ ছেড়ে দেবে। সে অন্যায় করেছে বলে মহান আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হবে। কোনো বান্দার অধিকার বিনষ্ট করলে তার অধিকার আদায়ের প্রতিশ্রুতি দেবে। একজন মুমিনের কাজ হবে এই পবিত্র রাতে মহান আল্লাহর কাছে নিজের দুঃখ-কষ্টগুলো তুলে ধরা। নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাঁর ধ্যানে মগ্ন হয়ে নির্ঘুম রাত অতিবাহিত করা। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবিজি (সা.) তাকে একটি দোয়া শিখিয়ে দিলেন এবং বললেন, তুমি লাইলাতুল কদরে আল্লাহর কাছে এই দোয়াটি করবে-‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’, অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাসো। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা করো।

মুহসিন আল জাবির : ইসলামি গবেষক ও বিশ্লেষক

জাতীয়

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা পরেও অনেক যাত্রী এখনো মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে জড়ো হচ্ছেন। সকালে দুইটি ফেরিতে কয়েক হাজার যাত্রী পার হয়।

এরপর থেকে মাইকিং করে ঘোষণা করা হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ এবং ঘাট ছাড়ার জন্য বলে পুলিশ, প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিসি। তবুও এলাকায় যাত্রীরা ভিড় করছে পদ্মা পাড়ি দিতে।
পরিস্থিতি সামলাতে রোববার ভোর থেকে শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু, বিজিবি মোতায়েনের পরও শিমুলিয়া ঘাটে আসছে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখী যাত্রীরা। তবে গত দুই দিনের তুলনায় চাপ কম।

এদিকে, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধিনিষেধ অমান্য করে যাত্রী পারাপারের অভিযোগে আবারও ১৭টি ট্রলার জব্দ করেছে নৌপুলিশ।

মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী দিনের বেলা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। লাশবাহী গাড়িগুলোকে যমুনা সেতু ব্যবহার করার জন্য বলা হচ্ছে। রাতে শুধু পণ্যবাহী যানবাহন পার করা হবে।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ইনচার্জ হিলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, সকালে দুইটি ফেরি শিমুলিয়াঘাট থেকে ছেড়ে যায়। আবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে দুইটি ফেরি আসে।

বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়াঘাট ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, বিকেলে উপস্থিত যাত্রীদের জানানো হয়েছে ঘাট এলাকা ত্যাগ করার জন্য। ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে দিনে।

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবীর বাংলানিউজকে জানান, লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলারে যাত্রী পারাপারে এখন সম্পূর্ণ নিষেধ আছে। কিন্তু, যাত্রীরা অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ট্রলারে যাত্রী উঠানোর কারণে শিমুলিয়া ঘাট, কান্দিপাড়া ও মাওয়া মৎস আড়ৎ ও পদ্মানদীর লৌহজং চ্যানেল থেকে ১৭টি ট্রলার জব্দ করা হয়। এসময় ১৬ জন ট্রলার চালকদের আটক করা হয়। যাত্রীদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জব্দ করা ট্রলার নৌপুলিশের হেফাজতে আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয়

ঢাকা, ৮ মে, ২০২১ : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ৪২৭তম দিনে ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৫ জন। একই সময়ে নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮৫ এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৯২ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ২৬ ও নারী ১৯ জন।

গতকালের চেয়ে আজ ৮ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা মহামারিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ হাজার ৮৭৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান ছিল।

গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ১২ জন এবং ষাটোর্ধ বয়সী ২২ জন রয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে, খুলনা বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে রয়েছেন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ ও বেসরকারি হাসপাতালে ১০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৭০৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ২৮৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৭ হাজার ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৮২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। দেশে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ১৫ শতাংশ কম।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৫৬ লাখ ১৩ হাজার ৯৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭ লাখ ৭২ হাজার ১২৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৮১টি হয়েছে সরকারি এবং ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৮টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৯২ জন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ১৭৮ জন। গতকালে চেয়ে আজ ৩১৪ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬ হাজার ৮৩৩ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ৯১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩২৪ জনের। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৩২৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩ হাজার ৫টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৩৬৬টি ও বেসরকারি ৭৭টিসহ ৪৪৩টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭০৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ১৩ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৩১০টি নমুনা কম পরীক্ষা হয়েছে।

জাতীয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান জানিয়েছেন, তিনি মানবিক বোধ থেকেই বিদায় বেলায় ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

শনিবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

তদন্ত কমিটিকে বলা তথ্য তুলে ধরে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, আমি আগে থেকেই বলেছি এই নিয়োগগুলো হওয়া দরকার ছিল। ২০১৩ সালের পর ২০২১- এই ৮ বছরে কোনো নিয়োগ হয়নি। আমরা নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে করোনা চলে আসে। আমরা তখন নিয়োগ বন্ধ করে দেই। এরপর ক্যাম্পাসে গুঞ্জন শোনা যায় কিছু শিক্ষকের মুখে। তারা বলতে থাকেন যে এ নিয়োগ দেওয়া যাবে না, মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা আসবে। সেটা অবশেষে সত্য হলো। ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ সকালে আমার কাছে ইমেইল আসে। আমি বিষ্মিত হলাম। যারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছিল তারা কীভাবে জানল যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে?

তিনি বলেন, আমরা যখন ভাইভা নেব তখন নিষেধাজ্ঞা আসে। করোনার জন্য স্থগিত রাখি। ২০০টি পদে আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম, যারা প্রার্থী ছিল তাদের সবকিছু হয়ে গিয়েছিল। শুধু বাকি ছিল ভাইভা।সুতরাং তারা এটা পাওয়ার দাবি রাখে।

সদ্য সাবেক এই ভিসি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শুধু এই নিয়োগ না, আরও নিয়োগ দিতে হবে।তিনি আরও বলেন, কিছু শিক্ষক শুরু থেকেই বিরোধিতা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার, স্বাভাবিক কাজকর্ম চলতে না দেওয়ার। সেটাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর ১২ (৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমি এই নিয়োগ দিয়েছি। এখানে কেউ হয়তো বলার চেষ্টা করছে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছিল। কিন্তু আমি মনে করি, যেখানে সুস্পষ্ট একটা আইন আছে, ক্ষমতা দেওয়া আছে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা আসতে হলে তো ওই আইনটা (অ্যাক্ট) বাতিল হওয়া উচিত আগে।

অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান বলেন, নিয়োগ না টেকার কী কারণ আমি বলতে পারব না। এটার সিদ্ধান্ত কারা নেবে আমি জানি না। অ্যাডহকে নিয়োগ তো অনেক হয়েছে। মাস্টাররোলে ৫৪৪ জনের চাকরি তো এখনো টিকে আছে। সুতরাং এটা না টেকার কী কারণ আছে?

মানবিক কারণে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, এখানে যারা এ নিয়োগটা ডিজার্ব করে তারাই পেয়েছে। আমি মানবিক কারণে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। তাদের প্রত্যেকেই অনার্স-মাস্টার্স পাস। তারা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণির একটা চাকরি করবে, আমি মনে করি এটা যৌক্তিক। তারা আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাদের ক্রমাগত দাবিতে আমি মানবিক বোধ করেছি তাদের চাকরি পাওয়া উচিত। তাদের চাকরি দিয়েছি, কেউ আমাকে বলেনি।

প্রসঙ্গত, ৬ মে সদ্যবিদায়ী ভিসি এম আবদুস সোবহান শেষ কার্যদিবসে ১৪১ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। পরে পুলিশ প্রটোকলে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ভিসি সোবহান। সদ্যবিদায়ী এই ভিসির দেওয়া ১৪১ জনের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বত্র তোলপাড় চলছে। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে তিনি এ ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিতর্কিত এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার সেই তদন্ত কমিটি রাবি ক্যাম্পাসে গিয়ে সদ্যবিদায়ী ভিসি আব্দুস সোবহানসহ এই নিয়োগের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

এদিকে এম আব্দুস সোবহানের দেওয়া ১৪১ জনের নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান এবং এ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়েছে- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৫ মে ইস্যুকৃত সব অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে কোনোরূপ সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ওই নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তদসংশ্লিষ্ট সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হলো।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ হাজার ৮৩৩ জনে। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে আরও নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৬৮২ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল সাত লাখ ৭০ হাজার ৮৪২ জন।

শুক্রবার (৭ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৩২৯ জনের নমুনা সংগ্রহ ও ১৭ হাজার ১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৫ লাখ ৯৯ হাজার ২৭৬টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৭৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৪ হাজার ৩৪১ জন।

মৃত ৩৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৯, চট্টগ্রামে ১১, রাজশাহীতে ২, খুলনায় ১, বরিশাল ১, সিলেটে ২ এবং ময়মনসিংহে ১ জন মারা গেছেন।

মৃত ৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২৩ এবং নারী ১৪ জন। এদের মধ্যে বাসায় মারা গেছেন একজন। বাকিরা হাসপাতালে।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২০ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৫ এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন রয়েছেন।

জাতীয়

করোনা মহামারিকালে ঘরের বাইরে মাস্ক পরার বিষয়ে আটটি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ মে) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে বলে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (৬ মে) সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মাস্ক হচ্ছে অন্যতম মাধ্যম বা উপকরণ যেটি করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। কোনো জরুরি কাজে কেউ ঘরের বাইরে গেলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সরকারের নির্দেশনা সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলতে হবে।

মাস্ক পরার বিষয়ে সরকারের ৮ নির্দেশনা হলো:

১. কয়েক স্তর বিশিষ্ট সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, যা এককালীন ব্যবহার করতে হবে।

২. অনেকে মাস্ক পরার সময় নাক খোলা রেখে শুধু মুখ ঢেকে রাখেন, যা সঠিক নয়। বরং, ওপরের মেটাল অংশটিকে নাকের সঙ্গে চেপে ও নিচের অংশটিকে থুঁতনির নিচে নিয়ে উভয়ই ঢেকে রাখতে হবে। সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল ঢেকে রেখে মাস্ক পরতে হবে।

৩. অনেকে মাস্ক থুঁতনি পর্যন্ত খুলে রেখে কথাবার্তা বলেন। এটাও ঠিক নয়। এতে লেগে থাকা জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।

৪. সার্জিক্যাল মাস্ক ঘরে রেখে দিয়ে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। একটি মাস্ক সর্বোচ্চ একদিন ব্যবহার করে সেটাকে ধ্বংস করে দিতে হবে।

৫. যেসব স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা মুশকিল, যেমন- গণপরিবহন ও বাজার বা দোকানপাট, সেসব জায়গায় মাস্ক পরতেই হবে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় ও হাত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

৬. সাধারণ কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের পর অবশ্যই পরিষ্কার করতে হবে। অপরিষ্কার মাস্ক পরলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ব্যবহার করা মাস্ক জীবাণুমুক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাস্ক সাবান পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৭. ভেজা মাস্ক পরিধান উচিত নয়। এতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

৮. বাইরে গেলে দুটি মাস্ক ব্যাগে রাখা দরকার। মুখে বাঁধা মাস্ক কোনও কারণে নষ্ট হলে বা ভিজে গেলে অন্যটি ব্যবহার করতে হবে।

জাতীয়

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচন করা নিয়ে ডাকা বিশেষ সাধারণ সভায় সরকার ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে বারের সভাপতির শূন্য পদে অ্যাটর্নি জেনারেল এ.এম আমিন উদ্দিনকে মনোনীত করেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকা আওয়ামীপন্থী সাত নেতা এ মনোনয়ন দেন। পরে তা কন্টভোটে পাস হয়। তবে বারের সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপিপন্থী ছয় নেতা তাতে সমর্থন না দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।

গত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত বারের নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন সরকার সমর্থিত প্যানেল থেকে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু। একই প্যানেল থেকে সহ-সভাপতিসহ আরও সাতজন নির্বাচিত হন। কিন্তু করোনায় মতিন খসরু মারা গেলে বারের সভাপতি পদটি শূন্য হয়।

এই শূন্য পদে সভাপতি নির্বাচনে মঙ্গলবার (৪ মে) বিশেষ সভা ডাকা হয়। সভার শুরুতে বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঘোষণা দেন যে, বারের সংবিধান অনুযায়ী তিনি সভা পরিচালনা করবেন। তখন সরকারপন্থী আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন। এ পর্যায়ে বারের আওয়ামীপন্থী প্যানেল থেকে নির্বাচিত সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্লাহ দাঁড়িয়ে সভায় সভাপতিত্ব করার ঘোষণা দেন।

তখন ব্যারিস্টার কাজল বলেন, শফিক উল্লাহকে সভাপতিত্ব করার কোনো কার্যবিবরণী পাস হয়নি। সহ-সভাপতি পদে উনার চেয়ে সিনিয়র আরেকজন রয়েছেন।

শফিক উল্লাহ বলেন, আমি আজকের সভার সভাপতি। এই সভা থেকে ঘোষণা করছি, আজ থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাটর্নি জেনারের এ.এম আমিন উদ্দিন।

তখন হলরুমে অবস্থান করা আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা তার প্রস্তাবে সমর্থন দেন। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হৈচৈ ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে মিলনায়তনের বিদ্যুত ও মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। মঞ্চের ওপর ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।

তখন বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সাধারণ সভা করার মতো পরিবেশ-পরিস্থিতি না থাকায় সভা মুলতবি করা হলো। এরপর তারা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন।

পরে সহ-সভাপতি শফিক উল্লাহর নেতৃত্বে বারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাত সদস্য রেজুলেশন পাস করে এম আমিন উদ্দিনকে সভাপতি ঘোষণা করেন। সেই রেজুলেশনে সাক্ষর ছিলো না বারের সম্পাদক কাজলসহ কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকা বিএনপিপন্থী ছয় নেতার।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমি শুনতে পেলাম বিশেষ সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমাকে যদি আবারও সভাপতি নির্বাচিত করা হয় আমি বিগত দুই বছরের মতো বারের উন্নয়নকাজ করে যাব।

প্রসঙ্গত বারের এবারের নির্বাচনে সভাপতিসহ আটটি পদে জয়ী হয় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। আর সম্পাদকসহ ছয়টি পদ পান বিএনপিপন্থী প্যানেল। এর আগের দুটি নির্বাচনে বারের সভাপতি পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন এএম আমিন উদ্দিন। তখন বারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন তিনি।

জাতীয়

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৭০৫ জনের।

এ সময় নতুন করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯১৪ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬ জনে। মঙ্গলবার (৪ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৭০ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৯৫ হাজার ০৩২ জন। ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৯১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৪টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ এবং ২৫ জন নারী। মারা যাওয়াদের মধ্যে হাসপাতালে ৫৯ জন ও বাসায় ২ জন মারা গেছেন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৪৪ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

জাতীয়

” আমি জনগনের টাকা নেই না-সরকার দেয় আমার যোগ্যতায় “  মোহাম্মদপুর ফারটালিটি সেন্টারের পরিচালক ডাঃ মনিরুজ্জামান সিদ্দিকি কথাগুলো বল্লেন সোনার বাংলা টিভি-র চেয়ারম্যন ও জিজিএন২৪.কম – সম্পাদক মোহাম্মদ লুুৎফুর রহমানকে । তিনি বার বার একটি কথাই বুঝানোর চেষ্টা করলেন আমি মোহাম্মদপুর ফারটালিটি সেন্টারের পরিচালক ডাঃ মনিরুজ্জামান সিদ্দিিকি ” মুই কি হুুনুরে ” ।

দোতলার বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছেন পরিচালক বাহাদুর সামনে গিয়ে ছালাম দিলাম – আমার দিকে তাকিয়েই বল্লেন আপনার মাক্স সোজা করেন আমিও সাথে সাথে পরিচালক বাাহাদুর যেভাবে বল্লেন সেভাবেই মাক্সটা ঠিক করলাম , কাচু-মাচু হয়ে পরিচালক বাহাদুর ডাঃ মনিরুজ্জামান সিদ্দিকি মহোদয়কে বল্লাম জরুরী এ্যাসাইনমেন্টে কাল ঢাকার বাইরে যাব ১১ দিনের জন্য – তাই আগামী পরশু-র (কালকের পরের দিন) পরিবর্তে দয়া করে আজকে করোনার সেকেন্ড ডোজ টিকা দেওয়া যায় কি-না । তিনি (পরিচালক বাহাদুর) রাগতসূরে বলেন আপনারা দু-টাকার সাংবাদিকদের এইটাই দোষ- সব জায়গায় আনডিও এডবানটেজ খোঁঁজেন । বিমর্ষবদনে তাকে জিজ্ঞাস করলাম যেমন , পরিচালক বাহাদুর বল্লেন সাংবাদিকরা যা করেন সবই বাড়াবাড়ি- এখন আপনি যা্ন, পরশু এসে টিকা নিয়ে যাবেন ।

সাংবাদিকরা কি বাড়াবাড়ি করে তা আপনাকে বলতে হবে – আপনার কথা যৌক্তিক মনে হলে তা আমরা করবোনা, অতএব আপনি বলেন আমরা কি বাড়াবাড়ি করি ?

আপনাকে চলে যেতে বলেছি দাড়িয়ে আছেেন এটার নামই বাড়াবাড়ি ।

পেশাগত কারনে এরকম বাড়াবাড়ি আমাদের প্রাইয়শই করতে হয়, কছুদিন আগে মানিক মিয়া এভিনিউতে ডাক্তার মহিলার পাশে দাড়িয়ে ছিলাম বলেেই ভ্রাম্যমান বিচারক-কে তরিৎ বদলি করা হয়েছিল ।

আর আপনারা যারা সরকারের বা জনগনের ডাক্তার তাদের উচিৎ জনগনের ভালমন্দ দেেখবাল করা ।তিনি বলে উঠলেন ” আমি জনগনের টাকা নেইনা- আমার যৌগ্যতা আছে বলেই সরকার আমাকে বেতন দেয় “

ডাঃ মনিরুজ্জামান সিদ্দিকি বলে উঠেন আপনি যাবেন নাকি ধাক্কা মেরে বের করব ? আমি বুঝতে পারলাম ডাক্তার সাহেব খুবই রাগি মানুষ, আমার গলায় পিআইডি কার্ড ঝুলানো অবস্হায় সে ধাক্কা মারতে আসেে, আমিত অবাকই হলাম আর আসার সময় ভাবতে থাকলাম আমার মেয়েটাওত ডাক্তার কিছু দিন আগে মাত্র ইন্টানি শেষ করেছে, সেওকি মানুষের সাথে এরকম ব্যবহার করবে ? আমার বিশ্বাস আমার মেয়ে তা করবেনা ইনশাল্লাহ্ ।

জাতীয়

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৩৯ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮২ জনে।

আর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের। এদের মধ্যে ৪২ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারী।

সোমবার (৩ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৩৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৯১ হাজার ১৬২ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪২০টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১২৪টি, জিন এক্সপার্ট ৩৪টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ২৬২টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৪৫২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৩১টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৪১০টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৫০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫২ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৬৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪ জন। এছাড়া রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে ৬ জন রয়েছেন।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৫ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৫ জন ও বাড়িতে ৫ জন।

মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরে ঊর্ধ্বে ৩৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন ও শূন্য থেকে ১০ বছরের নিচে ১ জন রয়েছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৩৭৫ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৬৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৯০৬ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৫৭৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৩৩১ জন।

এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত হয় সাত হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে একদিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড। আর গত ৬ এপ্রিল একদিনে করোনা শনাক্ত হয়েছিল সাত হাজার ২১৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।