রাজনীতি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, নিহতদের রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া, আহতদের সুচিকিৎসায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া এবং জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য জোর দিতে বলেন।

এছাড়া গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আলাদা-আলাদাভাবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আগে দেখা হয়েছে। আজকে অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। ভালো হলো। তোমাদের কথা শুনতেই মূলত আজকে বসা। তোমরা সরকারের কাছে কী চাচ্ছো, আশাগুলো কী, কোনো পরামর্শ আছে কি না- এটি জানতে চাওয়া। ’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘তোমরা রাষ্ট্রের অভিভাবক, তোমাদের কারণেই রাষ্ট্র। এই ভূমিকা ভুলে যেও না। নিজেদের ভূমিকা ভুলে যেও না। অনেকে এখানে আছে, অনেকে নেই। যারা নেই, তারাও রাষ্ট্রের অভিভাবক। তোমাদের দায়িত্ব আছে রাষ্ট্র যেন ঠিক পথে চলে, যেন বিচ্যুত না হয়। এইটুকু মনে রাখলে রাষ্ট্র ঠিক থাকবে। নিজের অভিভাবকতত্ব ভুলে যেও না। ’

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরামর্শকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য ঠিক থাকতে হবে। সিন্ডিকেট নাকি কী এই ধরনের ব্যাখ্যা আমরা চাই না। কতগুলো লোক বাজারমূল্য কবজা করে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমরা চেষ্টা করছি দ্রব্যমূল্য ঠিক রাখার। আমরা দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে চাই। রমজানেও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে। হঠাৎ করে যেন কোনো পরিস্থিতি না হয়। ’

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পরামর্শে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার সংস্কারের জন্য কমিশন আছে। তারা পরামর্শ দেবে আমরা কাজ করব। আমরা চাই স্থানীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। খুব কম জিনিস উচ্চ পর্যায়ে থাকবে। দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেম, একবার একটা ফান্ড বানিয়ে দিলে কারা যেন খেয়ে ফেলে। সেজন্য সুশৃঙ্খলভাবে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে। যেন স্থায়ী হয়। ’

জুলাইয়ে শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মান ও খেতাবের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরামর্শে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। জুলাইয়ে যারা শহীদ হয়েছে তাদের অবদান আমরা ভুলব না। তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে। ’

শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের এমন পরামর্শের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। যেন বাংলাদেশে কেউ শিক্ষিত না হয়ে উঠতে পারে, দক্ষ হয়ে উঠতে না পারে সেজন্য পরিকল্পিতভাবে এটা হয়েছে। বেকারত্ব তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জন কিছু নেই। এটা আমদের ঠিক করতে হবে। তরুণদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থার করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রধান উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমাদের অর্থনীতি বিভাগে নারী শিক্ষার্থী ছিল মাত্র চারজন। তোমরা বলছো, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থী প্রায় ৫২ শতাংশ। এটি অত্যন্ত আনন্দের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রাজনৈতিক বলয়ের মধ্যে আগে সিট বণ্টন হতো সেই দাসপ্রথা এখন ভেঙে গেছে। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। ’

আজকের মতবিনিময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গণমাধ্যমে সরকারের কাজ সঠিকভাবে প্রচার না হওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। শিক্ষার্থীদের এমন বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে সরব এটা ঠিক। সরকারের নিজের কোনো পত্রিকা নেই। আছে শুধু প্রেস উইং। তারা পত্রিকায় প্রেস রিলিজ পাঠায়। কেউ ছাপে, কেউ ছাপে না কিংবা তাদের মনমতো শেষ পাতায় বা কোণায় ছোট করে দেয়। প্রেস উইং ওদের মতো করে চেষ্টা করছে, কাজ করছে। সরকার কোনো গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করবে না। সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে কাজ করবে- এটাই আমাদের নীতি। আমরা এই নীতিতে থাকব। আমি বুঝতে পারছি তোমরা কিছুটা মনক্ষুণ্ন। এটা আসলে কিছুটা মন খারাপ হওয়ার মতো যে সরকারের কাজ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। ’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরো সিস্টেমটাই ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। চারদিকে চুরি-চামারি, ব্যাংক কাজ করে না। কমিটি অর্থনীতির শ্বেতপত্র দিয়েছে। আমি বলেছি, এটা একটা ঐতিহাসিক দলিল। আমি মনে করি এটা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো উচিত। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার দায় আওয়ামী লীগের। তবে যারা উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছে তাদেরও ধরতে হবে। ’

‘যে ধ্বংসস্তূপে রেখে গেছে সেখান থেকে বের হওয়া কঠিন। যেদিকে হাত দেই সেদিকেই জঞ্জাল। এই জঞ্জাল পরিষ্কার করেই যাচ্ছি। কাজ শুরু করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। ’

শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারকাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা জানান, দেশের মানুষ সরকারের পাশে আছে। এটি গণমানুষের সরকার। জনগণ চায় অন্তর্বর্তী সরকার যেন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজটি সম্পন্ন করে।

প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘দেশের মানুষ ছাত্রদের ওপর ভরসা করে। এই বিশ্বাস ধরে রেখো। হাতছাড়া করো না। তোমরা কখনোই আশাহত হবে না। তোমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছ। দেশ বদলিয়ে ফেলেছ। তোমরাই পারবে। মানুষের আশা তোমাদের পূরণ করতে হবে। অন্তত সে পথে তোমাদের অগ্রসর হতে হবে। এক বিজয় করেছো, আরেক বিজয় আসবে। তোমরা বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেবে যেন আমরাও সতর্ক হই, সজাগ হই। ’

রাজনীতি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটায় গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় এ সাক্ষাৎ করেন তিনি।

বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার।

বৈঠক আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

রাজনীতি

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘২ ডিসেম্বর দুপুরে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে ভারতের একটি উগ্র সংগঠন ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়, অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত। এ ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের হাইকমিশনে ভাঙচুর চালানো ও জাতীয় পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ভিয়েনা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি। এ ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ বলেই আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, ভারত নিজের দেশে তার প্রতিবেশি দেশের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে যেখানে ব্যর্থ, সেখানে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার তাদের থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ তাদের মাথার ওপর কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করেনা। আমরা বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণকে চোখ-কান খোলা রেখে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্যই বিদেশী যে কোনো আগ্রাসন রুখে দিতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূল কথা হল ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।’ বাংলাদেশ সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। বাংলাদেশও বিশ্বের সকল দেশের কাছে একই নীতি আশা করে।

মিশনের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারত সরকারকে তাদের কর্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে তিনি যোগ করেন, আগরতলাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনসহ সকল হাইকমিশনের নিরাপত্তা বিধান করা ভারত সরকারের দায়িত্ব।

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থে আঞ্চলিক সংস্থা সার্ককে কার্যকর করতে সংস্থার সচিবালয়কে আরো নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্ক একটি বিস্মৃত শব্দ। এটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারলে এটি পুরো অঞ্চলের মানুষের কল্যাণ বয়ে আনবে।’

সার্কের মহাসচিব গোলাম সারওয়ার ঢাকার তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস এ মন্তব্য করেন।

সেক্রেটারি জেনারেল সারওয়ার সার্কের বড় সমর্থক হওয়ার জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে, বহুপক্ষীয় সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের কাছে তার সাম্প্রতিক আহ্বানে তারা উৎসাহিত হয়েছেন।

তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে কর্ম পর্যায়ে সার্কের চলমান কার্যক্রমের বিষয়ে অবহিত করেন, যার মধ্যে রয়েছে প্রোগ্রামিং কমিটি, আঞ্চলিক কেন্দ্রের গভর্নিং বডি এবং বিশেষায়িত সংস্থা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা, এসডিজি, আঞ্চলিক একীকরণ, শুল্ক সহযোগিতা ইত্যাদি।

তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের অভাবে কার্যকরী উদ্যোগগুলো পর্যাপ্ত শক্তি ও স্পষ্টতা পাচ্ছে না।

অধ্যাপক ইউনূস ও সার্ক মহাসচিব, পররাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য খাতের মন্ত্রীদের বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা এবং সংস্থার আরও ভাল কার্যকারিতার জন্য নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

মহাসচিব সারওয়ার বলেন, ‘আমাদের অনেক সংস্থার সাথে অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা সেগুলো অন্বেষণ করার চেষ্টা করছি।’

অধ্যাপক ইউনূস মহাসচিব সারওয়ারকে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে নেপালের জলবিদ্যুৎ রপ্তানির মতো বহুপক্ষীয় বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানা।

অধ্যাপক ইউনূস জানুয়ারিতে বাংলাদেশে যুব উৎসবে যোগ দিতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর তরুণদের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বলেব, ‘এটি ভালো হবে কারণ এটি তরুণদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। সার্কের পুরো ধারণাটি হল মানুষকে একত্রিত করা। এটি দ্বার উন্মোচনের একটি উপায় হতে পারে।

এ বছর সার্ক ঐতিহাসিক ৪০তম সনদ দিবস উদযাপন করছে। সার্ক মহাসচিব সংস্থার চার্টার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সার্ক প্রক্রিয়ার পুনরুজ্জনে করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে অব্যাহত সহায়তা ও নির্দেশনা কামনা করেন।

রাজনীতি

বাংলাদেশের জনগণ তাদের মাথার ওপর কারো দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জামায়াত আমির তার পোস্টে ভারতের সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ভারত নিজের দেশে তার প্রতিবেশি দেশের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে যেখানে ব্যর্থ। সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার তাদের থাকতে পারে না।

বাংলাদেশের জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যই তার কার্যকর ঔষধ।

প্রসঙ্গত, ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে সোমবার ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের পতাকাও পোড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় ‍ইতোমধ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছে ভারত। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ বলছে, ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন করেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

রাজনীতি

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ অনেক দুর্বল হয়ে গেলেও আগামী নির্বাচন দেশের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে কঠিন হতে যাচ্ছে। কারণ, মানুষের চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাই আপনাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে, যাতে জনগণের সমর্থন আপনার প্রতি ও দলের প্রতি থাকে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন আমরা ক্ষমতায় চলে যাচ্ছি বা চলে গেছি। এটা কিন্তু ঠিক না। আমরা ক্ষমতায় যাইনি। তখনই আমরা ক্ষমতায় যেতে পারব, যখন আমরা জনগণের সমর্থন পাব। তাই জনগণের সমর্থন আমাদের আদায় করতে হবে। জনগণের সমর্থন পেতে হলে আপনার কথা, আচরণ, ওঠাবসা, কথাবার্তাসহ সবকিছুর ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে কি না। এজন্য জনগণের আস্থা আমাদের ধরে রাখতে হবে। সোমবার খুলনা ও ময়মনসিংহে ‘রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপি প্রদত্ত ৩১ দফা’র বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের সহস্রাধিক নেতা এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন।

খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে দিনব্যাপী বিভাগীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। তারেক রহমান বলেন, কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে, তাহলে একজন নেতা হিসাবে তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব। সব নেতাকে ভুল শুধরে নিয়ে জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের সঙ্গে থাকুন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ এবং কৃষকদের জন্য ‘ফার্মার্স কার্ড’ তৈরি করব। ফ্যামিলি কার্ডটি হবে পরিবারের মা অথবা স্ত্রীর নামে। এতে তার পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বাড়বে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড করা হবে, যা প্রতি মৌসুমে কৃষকের সার-বীজ বা আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে কাজে লাগবে।

তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপির সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। নেতাকর্মীদের সব কর্মকাণ্ড হচ্ছে বিএনপির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনার সঙ্গে থাকে, বিএনপির সঙ্গে থাকে। দলকে রক্ষা করা, সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সবার। তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে সমাজের কিছু ব্যক্তি সংস্কারের কথা বলছেন। ৫ মাস আগেও তারা বলেননি। কিন্তু বিএনপি দুই বছর আগে থেকে বলছে। বিএনপি দেশ ও মানুষের কথা চিন্তা করে। ৩১ দফা তারই প্রমাণ। ৩-৪ মাস ধরে সংস্কারের যে কথা বলছে, এর সবকিছুই ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। এই ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, বাংলাদেশের পক্ষে গণতান্ত্রিক সব দলের। ৩১ দফা সফল করতে যে কোনো মূল্যে জনগণের সমর্থন রাখতে হবে। ৩১ দফার সবকিছু জনগণের মাঝে নিয়ে যেতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, নারীর যোগ্যতা ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করা উচিত। এটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করা উচিত। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নারীদের জন্য শিক্ষাব্যবস্থা ফ্রি করে দিয়েছিলেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করব। প্রান্তিক মানুষকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ন্যূনতম সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। এটি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পাবে। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপণ, নদী ও খাল খনন। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলায়ও এগিয়ে নেওয়া হবে। তিনি ৩১ দফার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন নেতাকর্মীদের কাছে। তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রের সম্পদ দেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য। বিশেষ কোনো ব্যক্তির জন্য নয়। দেশের সম্পদ কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটি আমরা চেষ্টা করব।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল প্রশিক্ষক ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন এবং উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব মো. শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ। বিভাগীয় এ কর্মশালায় খুলনা অঞ্চলের ১০টি জেলা এবং একটি মহানগরের এগারোটি ইউনিট বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা দিনভর স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

ময়মনসিংহে বিভাগীয় কর্মশালা : সোমবার নগরীর টাউনহলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিএনপির বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। এর আগে সকালে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনা করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, সাবেক সংসদ-সদস্য রেহানা আক্তার রানু, লাইলা বেগম, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবীবা, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকারসহ বিএনপির বিভাগীয়, জেলা ও মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এতে ময়মনসিংহ বিভাগের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩৬০ ডেলিগেট অংশগ্রহণ করেন।

রাজনীতি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের দিয়ে দেশের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেন, চেষ্টা করব আপনাদের ঋণ পরিশোধের।

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালে তিনটি মন্ত্রণালয় মন্ত্রী হিসেবে জামায়াত নেতারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাদের দুই হাত দুর্নীতিমুক্ত ছিল। হাজার চেষ্টা করেও কেউ অভিযোগ আনতে পারেনি। তাদের হাতে গড়ে দেওয়া মানুষ দেশে এখনও আছে।

রোববার রাতে বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে অনুষ্ঠিত পথসভায় জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।

ঢাকা থেকে সড়কপথে ঝালকাঠী যাওয়ার সময় বরিশাল মহানগর জামায়াতের এই পথসভায় তিনি যোগ দেন।

জামায়াত আমির আরও বলেন, আমরা মালিক হবো না, সেবক হয়ে থাকব। আমরা সাম্যতার সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। জনগণের মধ্যে আস্থা জন্মালেই জনসেবার সুযোগ পাওয়া সম্ভব। জনসেবার সুযোগ পেতে আমরা কোনো আজেবাজে কৌশল অবলম্বন করব না। আমি আমার নিজের ব্যাপারে কথা দিতে চাই, আমার সম্পদের পরিমাণ বাড়বে না।

পথসভায় শহিদদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন জামায়াত আমির।

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, একটি পক্ষ উসকানি দিচ্ছিল দেশে যাতে রক্তের হলিখেলা হয়। নির্মমভাবে ওই আইনজীবীকে হত্যা করা হলেও দেশের জনগণ কোনো প্রতিশোধ নেয়নি। এটাই আমাদের সম্প্রীতির সোনার বাংলাদেশ। এই দেশকে আমরা সবাই মিলে আরও উচ্চতায় নিতে যেতে চাই। এজন্য আমরা ত্যাগ, আঘাত-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো। জীবন যাবে তবুও এক ইঞ্চি মাটি কারো হাতে তুলে দেব না।

সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলাম সব মানুষের অধিকার সংরক্ষণ করেছে। সংখ্যালঘুরা মুসলমানদের কাছে আমানত। দেশে মসজিদ পাহারা দিতে হয় না, তাহলে মন্দির কেন পাহারা দিতে হবে? কিছু হুতুম পেঁচা আমাদের সুসম্পর্ক নষ্ট করতে চায়। সেই সুযোগ আমরা দেব না।

বরিশাল মহানগরের আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ভোলা জেলা আমীর জাকির হোসাইন, পটুয়াখালী জেলা আমির অ্যাডভোকেট নামজুল আহসান।

রাজনীতি

ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি, মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট গণফোরামের কেন্দ্রেীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে আসুন ঐক্যবদ্ধ হই’স্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গণফোরামের ৭ম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ১০ টায় শুভ উদ্বোধন করেন আলহাজ শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া (আন্দোলনে নিহত শহীদ মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়ার পিতা)। সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

উদ্বোধনী অধিবেশন পরবর্তীতে বিকাল ৩ টায় কাউন্সিল অধিবেশন মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে উত্থাপিত সাংগঠনিক প্রস্তাব, রাজনৈতিক প্রস্তাব ও অর্থবিষয়ক প্রস্তাবের উপর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ আলোচনা করেন। কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি নির্বাচনের জন্য বিষয় নির্বাচনী কমিটি গঠিত হয়। বিষয় নির্বাচনী কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করে। এসময় কাউন্সিলরগণ করতালির সঙ্গে দুই হাত তুলে নতুন কমিটিকে সমর্থন ও স্বাগত জানায়।

ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি করে গণফোরামের কমিটি

নির্বাচনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট সগির আনোয়ার। নির্বাচনী কমিটির পক্ষে নতুন কমিটির সদস্যদের নাম পড়ে শুনান সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা হলেন— ইমেরিটাস সভাপতি- ড. কামাল হোসেন, সভাপতি- বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টু।

সভাপতি পরিষদ সদস্য- বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এস এম আলতাফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট, এ. কে. এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক, জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, মোশতাক আহমেদ, অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সরকার, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, হারুনুর রশিদ তালুকদার, শ্রী রতন ব্যানার্জী, আব্দুল হাসিব চৌধুরী, আবুল হাসনাত, অ্যাডভোকেট নিলেন্দু দেব, গোলাম হোসেন আবাব, অ্যাডভোকেট কাজী মেজবাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী বাদল।

সাধারণ সম্পাদক- ডা. মো. মিজানুর রহমান।

কোষাধ্যক্ষ- শাহ নূরুজ্জামান।

সম্পাদক পরিষদ— আয়ুব খান ফারুক, অধ্যক্ষ মো.ইয়াছিন, লতিফুল বারী হামিম, রফিকুল ইসলাম পথিক, মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, অ্যাডভোকেট এ কে এম রায়হান উদ্দিন, আলীনূর খান বাবুল, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম সজল, মো. নাজমুল ইসলাম সাগর, মামুনূর রশিদ মামুন, মির্জা হাসান, মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, আব্দুল হামিদ মিয়া, অ্যাডভোকেট বিশ্বজিৎ গাঙ্গুলী, অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন তালুকদার, তাজুল ইসলাম, রনজিদ সিকদার, আজিজুর রহমান ভূঁইয়া মজনু, অ্যাডভোকেট সানজিদ রহমান শুভ, আজাদ হোসেন, প্রভাষক বকুল ইমাম, মোমেনা আহমেদ মুমু, খনিয়া খানম ববি, মো. আশরাফুল ইসলাম, তৌফিকুল ইসলাম পলাশ, মো.আলী লাল, অ্যাডভোকেট মো. সাইফুলইসলাম, মো মজিবুর রহমান শিবলু, মাহফুজুর রহমান মাসুম, ফারুক হোসেন।

রাজনীতি

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন নয়। দেশের পুরো প্রক্রিয়া শেষে কমপক্ষে ২ বছরের আগে আমরা কোনো নির্বাচন চাই না। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এখনো কিভাবে মিছিল মিটিং করে এমন প্রশ্ন রেখে এদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার ঘোষণা দেন।

রোববার বিকাল ৪টার দিকে শহরের নতুনবাজার এলাকা গণঅধিকার পরিষদ পটুয়াখালী জেলা শাখা আয়োজিত জুলাই বিপ্লব ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ভিপি নুর বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জনসমর্থন পাওয়া সরকার। ডান, বাম, বিএনপি, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল এ সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। অনেক জায়গায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাঁদাবাজ মাফিয়াদের দমন করছে। তাদের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে তারা দ্রুত নির্বাচন চায় যাতে তড়িঘড়ি করে ক্ষমতায় বসে আবারো ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নয়ন হয়নি। তাই জনগণের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে। ফ্যাসিবাদ যাতে আবার আসতে না পারে, এ ব্যাপারে বিএনপি, জামায়াতসহ আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান।

রোববার বিকালে গণঅধিকার পরিষদ পটুয়াখালী জেলা কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জহির মুন্নার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও অর্থ সম্পাদক কৃষিবিদ মো. শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম শিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় নতুন বাজারের ব্যবসায়ী খোকন দের নেতৃত্বে ১০০ হিন্দু পরিবার ভিপি নুরুল হক নুরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদে যোগদান করেন। ভিপি নুর সদ্য যোগদানকারী হিন্দু পরিবারের সদস্যদের স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় ভিপি নুর সদ্য যোগদানকারীদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা আগের চেয়ে এখন নিরাপদে আছেন এবং নিরাপদে থাকবেন।

রাজনীতি

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতা এবং হিন্দু-মুসলিমসহ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন।

পরে প্রধান উপদেষ্টরা প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে শান্ত থাকতে বলেছেন এবং শান্তি ও জাতীয় ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন।’

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকেও জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানান প্রেস সচিব।

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে যা যা করার দরকার, সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে।’

প্রেস সচিব জানান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ইতোমধ্যে ৩৩জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম হত্যার ভিডিও দেখে সন্দেহভাজন ৬ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় ২১জন এবং আওয়ামীলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ৬ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।

বৈঠকে বিএনপি’র প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদ।