রাজনীতি

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠক শেষে এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন প্রধান প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‘বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন। যেখানেই গেছি সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় বসতে হবে।’

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।’

রাজনীতি

গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও গণমাধ্যম এখনো ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালোদিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল ও চরম কর্তৃত্ববাদী একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে গোটা জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। ফলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। চিরায়ত গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং যার মূল শর্ত হচ্ছে বাক, চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহিতার আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে।

তারেক রহমান বলেন, পরবর্তীকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের কাঙ্খিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব প্রকার অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।

পৃথক এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা পেতে হলে প্রয়োজন দ্রুত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। বিএনপি বহুমত, পথ ও দলের বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে বারবার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বহুমাত্রিকতা বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ।

রাজনীতি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের শপথ পড়ানোর ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো আইন ভঙ্গ করেনি।

ডিএসসিসির নগর ভবন তালাবদ্ধ করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার আসিফ মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গেজেটের মেয়াদ এবং পরবর্তীতে সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দেওয়ার আর কোনো আইনি সুযোগ নেই।

উপদেষ্টা বলেন, ডিএসসিসির মেয়রের শপথ পড়ানোর আইনগত কোনো সুযোগ না থাকলেও ইশরাক হোসেন ক্ষমতা প্রদর্শন করে নগর ভবন দখল করে রেখেছেন। এজন্য দক্ষিণ ঢাকার দৈনন্দিন নাগরিক সেবায় বিঘ্ন ঘটানো দায়িত্বহীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি অবমাননাকর।

‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের একজন নেতার কাছ থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নগরবাসী প্রত্যাশা করে না’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অবরোধের কারণে বিগত মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ নাগরিক সেবা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের অফিসাররা ওয়াসা অফিসে বসে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত না হয়। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অংশীজনদের থেকে সরকার আরও দায়িত্বশীল এবং পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করে।

রাজনীতি

সংক্ষিপ্ত ওই সাক্ষাৎকারে স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের প্রসঙ্গ আসে। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয়, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশের সাহায্য কমিয়ে দিলে তার কতটা প্রভাব পড়বে।

রাজনীতি

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাভাবিক মনে করলেও যৌথ ব্রিফিংকে ‘ভালোভাবে’ নেয়নি জামায়াতে ইসলামী। এ ব্রিফিংয়ে একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে এবং তা প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে বলে মনে করে জামায়াত। তার জবাব দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, কোনো দলের প্রতি অনুরাগ নয়, বরং ২০২৬ সালের রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে বলে জামায়াতের আমির যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেটার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচনের নতুন সময়সীমা সামঞ্জস্যপূর্ণ।

লন্ডন বৈঠক নিয়ে শনিবার বিকালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের প্রতিক্রিয়া গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সালাহউদ্দিন এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ বৈঠক নিয়ে জামায়াতে ইসলামী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতেই বলা আছে যে জামায়াতের আমির গত ১৬ এপ্রিল একটি বিদেশি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ২০২৬ সালের রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে বলে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিলেন। ফলে লন্ডন বৈঠকের পর নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে ঘোষণা, তা জামায়াতের আমিরের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ; এটা কোনো দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজান মাসের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। এরপর শুক্রবার রাতে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল এনসিপি। দলটি মনে করে, নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচনসংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।

তিনি এ সংক্রান্ত এনসিপি প্রতিক্রিয়ারও জবাব দেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলটি (এনসিপি) লন্ডন এই বৈঠকের ঘোষণাকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছে। এ ক্ষেত্রে দলীয় দৃষ্টির ঊর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তাদের আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের পরামর্শ থাকবে।

রাজনীতি

আগামী ২৮ জুন ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পীর সাহেব চরমোনাই মহাসমাবেশ জনতার মহাসমুদ্রে রূপ নেবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়ায় উপজেলা দায়িত্বশীল তারবিয়াত ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মাওলানা জাকারিয়া বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে তাদের জনগণের শতভাগ জনমত প্রতিফলিত হয়নি। বরং কালো টাকা ও পেশি শক্তি ও অবৈধ অস্ত্রের প্রভাবে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাই ২৪ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে পদ্ধতি পরিবর্তন করা সময়ের দাবি। পিআর সিস্টেম বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব। যাতে জনগণের মতামতের শতভাগ প্রতিফলন হবে। তাই বিশ্বের প্রায় ৯১টি রাষ্ট্রে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

উপজেলা সভাপতি মাওলানা কাজীম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সেক্রেটারি মো. সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি আল আমিন, হাজী আজহারউদ্দিন, আব্দুল মতিন ইঞ্জিনিয়ার এহতেশামুল হক পাঠান প্রমূখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাকারিয়া আরও বলেন, ‘জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছরে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত এনে অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার ও আহত-পঙ্গুদের পুনর্বাসন এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং জুলাই ঘোষণা সহ প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বিশেষ অতিথি মুহম্মদ আল আমিন বলেন, দায়িত্বশীলদেরকে গাজীপুর কাপাসিয়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত ও সৌন্দর্য পৌঁছে দিতে হবে। আগামী বাংলাদেশকে ইসলামের বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। ইসলামী আন্দোলন ২৮ তারিখ মহাসমাবেশ সফল করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

রাজনীতি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে গিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

হাসিনাপুত্র জয় বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষনেতা ।

এছাড়া ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোর একাধিক সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, গত ৬ জুন (শুক্রবার) সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতের মাটিতে পা রাখেন। তার পরেরদিনই ছিল কোরবানির ঈদ। মায়ের সঙ্গেই ঈদ কাটিয়েছেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছেলের দেখা হলো। মায়ের সঙ্গে ঈদ করলেও দিল্লিতে অবস্থানরত বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে জয়ের দেখা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত মায়ের সঙ্গে ঈদ পালন করার উদ্দেশ্যেই ভারতে গিয়েছেন জয়। তার এই সফর যতটা না রাজনৈতিক, তার থেকেও বেশি পারিবারিক – এমনটিই দাবি সূত্রগুলোর।

ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মাস কয়েক পরে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল জয়ের। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সবুজ সংকেত দিয়েছিল। তবে সেই সফর এগিয়ে এনে শুক্রবারই দিল্লিতে নামেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

সূত্রগুলো আরও জানায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয় শেখ হাসিনা যেখানে অবস্থান করছেন সেই গোপন ঠিকানায়। ভিভিআইপিদের যেভাবে পাইলটকারসহ সামরিক পোশাক পরিহিত নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে নিয়ে যাওয়া হয় জয়কে সেভাবে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অত্যন্ত গোপনে কাজটি করা হয়, যেন কাকপক্ষীও টের না পায়।

পারিবারিক সফর

পালিয়ে ভারতে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে একাধিক জন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই ভারত সফর মূলত পারিবারিক।

এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে এত মাস পরে ছেলের দেখা হয়েছে। তারা ঈদ কাটিয়েছেন একসঙ্গে, গত কয়েকদিন একসঙ্গেই আছেন। নিশ্চই রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে কিছু। তবে জয়ের এই সফর বেশিটাই পারিবারিক সফর। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কদিনের মধ্যে নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। কিন্তু যখন কথা হবে, নিশ্চয়ই আমরা জানতে পারব যে তাদের দুজনের মধ্যে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন তারা পারিবারিক সময় কাটাচ্ছেন। ’

অন্য নেতাদের সঙ্গে কী দেখা হয়েছে জয়ের?

মা-ছেলের দেখা হয়েছে নিশ্চিত করা গেলেও পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে জয়ের দেখা হয়নি  বলেই জানা যাচ্ছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে ভারতে পালিয়ে আসার পর থেকে দিল্লিতেই শেখ হাসিনার থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার। প্রথম দু-চারদিন শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশের বিমান বাহিনীর।

পরে ভারত সরকার হাসিনাকে হিণ্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কোনো গোপন ঠিকানায় নিয়ে যায়। হাসিনার অবস্থানের ব্যাপারে ভারত সরকার কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষকে জানিয়েছিলেন. ‘শেখ হাসিনাকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া, কিংবা তার সঙ্গে অন্যদের দেখা করানোর ব্যবস্থা– এটাও যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ’

তবে শেখ হাসিনার মুভমেন্টস বা ভিজিটস যে পুরোপুরি বন্ধ নয়, তার কথায় সে ইঙ্গিতও ছিল!

ভারতে অবস্থানরত এক শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার নিয়মিত কথা হলেও সশরীরে কারও সঙ্গে দেখা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী – এরকমটা তার জানা নেই।

কতদিন ভারতে থাকবেন জয়?

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ভারতেই থেকে গিয়ে দলের কাজকর্মে সশরীরে যোগ দেওয়ার অভিপ্রায় নেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের। তিনি শুধু তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার পরিকল্পনা নেই তার। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি হয়তো ফিরে যাবেন।

ভারত সফরে এসে জয় কলকাতাতেও আসতে পারেন বলে জানা গিয়েছিল। কারণ, কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিরা থাকছেন এবং এই অঞ্চলেই রয়েছেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ী, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবীরা। তাই কলকাতায় এসে তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন জয় – এরকমটা জানা যাচ্ছিল।

এখন ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে, অন্তত এবার জয়ের কলকাতায় আসার কোনো পরিকল্পনা নেই।

উল্লেখ্য, সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, কিন্তু তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ওই পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। এরপর সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট পান জয়। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কয়েক দিন আগেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পান। গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর থেকেই জয়ের ভারত ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছিল।

রাজনীতি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, আমরা সবাই আজ এখানে দেশ ও জাতির কল্যাণে একত্রিত হয়েছি। আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছে আমরা একটি অত্যন্ত সুন্দর জুলাই সনদ প্রস্তুত করতে পারবো।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফা সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূস নিজে ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার আশা করে যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে এনে জুলাই সনদ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, আমি খুব খুশি যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে এই সংলাপে অংশগ্রহণ করেছেন।

কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, কমিশনের মেয়াদ ২০২৫ সালের আগস্টে শেষ হচ্ছে এবং এর আগেই জুলাই মাসে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের ওপর অর্পিত এই পবিত্র দায়িত্ব পালনে অবশ্যই সফল হতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপ সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে শুরু হয়েছে। সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় জড়িত অংশীজনেরা অংশ নেন।

সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, সরকারি প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত পাঁচটি মূল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও চূড়ান্তকরণের জন্য এ ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। প্রথম দফার সংলাপ ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময়ে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হয়।

রাজনীতি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট আগের মতোই গতানুগতিক বলে মনে করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে এর আগের অর্থবছরের বাজেটের খুব একটা তফাত দেখা যায়নি। কোনো নতুনত্বের ছোঁয়াও পরিলক্ষিত হয়নি।

বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আজ সোমবার রাতে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম। এতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বাজেটে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় আশানুরূপভাবে প্রতিফলিত হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ এবং অন্যান্য অবৈধ অর্থ উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা প্রস্তাবিত বাজেটে লক্ষ করা যায়নি, যা জাতিকে হতাশ করবে। এ ছাড়া কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই অপচেষ্টা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে এর কাছাকাছিও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এবারও রাজস্ব আদায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

বাজেটে বিদেশনির্ভরতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে জামায়াত বলেছে, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেট বাড়িয়ে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার একটি বড় অংশ আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের পরোক্ষ কর বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ দেখা গেলেও প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধির তেমন উদ্যোগ বাজেটে দেখা যাচ্ছে না। সুতার আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করায় আরএমজি সেক্টরে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাজেটে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বরাদ্দ রাখায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম। তবে এ বরাদ্দ আরও বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

রাজনীতি

এবারের বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে।

সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় জাতির সামনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে আমরা যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বনভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। যার মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন হবে এ দেশের মানুষের জীবনমানের। মুক্তি মিলবে বৈষম্যের দুষ্টচক্র থেকে।

তিনি বলেন, এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যেসব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।

বাজেট প্রস্তাবের বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই বিপ্লবে আত্মোৎসর্গকারীরা আমাদের সামনে একটি বিরল সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করে ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত গড়ার। আপনাদের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতায় সে লক্ষ্য পূরণের প্রত্যয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের অঙ্গীকার পূরণ করাই হবে আগামী দিনে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

এসময় তিনি বলেন, গত দেড় দশকে দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে দেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। তাই দেশকে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের রূপরেখা তৈরি এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ইতোমধ্যে সবগুলো কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর সংশোধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে পাচার অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন অনুসরণে দুর্নীতি দমন কমিশন যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত ‘দুদক সংস্কার কমিশন’ সম্প্রতি তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে যা যাচাইপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।