রাজনীতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান।
আজ সকাল ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র প্রধান তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা, মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতি, জাতীয় সংসদের হুইপবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন।

এদিকে, ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর মেয়াদ ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। শপথনামায় স্বাক্ষরের পরপরই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব¡ পালন করবেন।

আইনজীবী ওবায়দুল হাসান ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১১ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়।

তিনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০-এ সর্বোচ্চ আপিল বিভাগে বিচারক হিসাবে উন্নীত হন।

আখলাকুল হোসেন আহমেদ ও বেগম হোসনে আরা হোসেনের ছেলে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছায়াশী গ্রামে এক স্ম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতা ড. আখলাকুল হোসেন আহমেদ ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় গণপরিষদের সদস্য হয়ে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়নে অংশ নিয়েছিলেন।

হাসানকে ২৫ মার্চ, ২০১২ তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি ১১টি রায় ঘোষণা করেন।

তাঁর স্ত্রী নাফিসা বানু বর্তমানে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য (অর্থ) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই দম্পতির পুত্র সন্তান ব্যারিস্টার আহমেদ শাফকাত হাসান। তিনি যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক আইনের উপর এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

ওবায়দুল হাসান প্রাথমিকভাবে আইন বিভাগে অধ্যয়নের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৬ সালে ঢাকা জেলা আদালতে একজন অনুশীলনকারী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে নথিভুক্ত হন।

তিনি বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ ও গ্রন্থের রচিয়তা।

রাজনীতি

বিএনপিকে তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্যাপ্টেন (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমেরিকার ওয়াশিংটনে আছেন। তৈরি হয়ে যান। ক্যাপ্টেন আসলেই খেলা শুরু হবে। রাজপথ কে দখল করে দেখা যাবে। লাল সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ের মিছিল অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চলবে।

মঙ্গলবার বিকালে কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নৈরাজ্য, অপরাজনীতি এবং অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমা করবে না। আমাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন, আপনারা ৪৮ মিনিটও আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারবেন না।

তিনি বলেন, বিএনপি আমাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের বলতে চাই, আওয়ামী লীগের কারও ওপর হামলা হলে পালটা আঘাত হবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খেলা হবে। আমরা খেলতে চাই। অন্যায়, দুর্নীতি, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আমরা খেলতে চাই। আপনারা রাজি তো। আমাদের ক্যাপ্টেন আমেরিকা থেকে আসছেন। তার নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা খেলব। সেই খেলায় আমরাই জিতব।

সমাবেশে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এরা জনগণের সমর্থন পাবে না। ৭০ ভাগ মানুষের সমর্থন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে।

নসরুল হামিদ বলেন, ২০০৮ সালে ৪৩ পারসেন্ট বিদ্যুৎ ছিল। এখন প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে জনগণ।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এমপি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী চৌধুরী সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপ্লব, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম. ই. মামুন, জিনজিরা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সাকুর হোসেন সাকু প্রমুখ।

রাজনীতি

সরকার পতনের একদফা দাবিতে মঙ্গলবার তৃতীয়বারের মতো রোডমার্চ করল বিএনপি। টানা কর্মসূচির অংশ হিসাবে এদিন ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রোডমার্চ শুরু করে দলটি। মাগুরা ও যশোর হয়ে দীর্ঘ ১৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে খুলনা গিয়ে তা শেষ হয়। এতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। রোডমার্চ শুরুর আগে এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশ স্বাধীন করেছি গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। কোনো রাজা-রানির রাজত্ব করার জন্য নয়। দেশে আজ কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। দেশ আজ হীরক রাজার দেশে পরিণত হয়েছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। এখন দড়ি ধরে টান মারার সময় এসে গেছে।’ ভাইস চেয়ারম্যান

বরকতউ ল্লা বুলু বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করছে, খুন-গুম করা হয়েছে, কিন্তু রাজপথ ছাড়িনি। সরকার পতন ছাড়া আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আওয়ামী লীগ কখনো মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে পারেনি। তারা লুটপাটের রাজনীতি করেছে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের পতন হবে। দেশের মানুষ বিজয় মিছিল করবে।’

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে খুলনা অভিমুখে রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আপনারা উদ্দীপ্ত হন, সম্মিলিত হন। আমরা দড়ি ধরে টান মারব। এই হীরক রাজা আর থাকবে না।’ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কিছুদিন আগে দেখা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ম্যাডাম কিছু বলবেন? উনি মাথা নাড়লেন, কিন্তু কোনো কথা বললেন না। আমি তার চোখের দিকে তাকালাম। তার চাহনিতে অব্যক্ত ভাষা। তিনি হয়তো এটাই বলতে চেয়েছিলেন, তোমরা আমার জন্য কী করছ? আমি কি দেশের গণতন্ত্র, দেশের মানুষ ও রাষ্ট্রের জন্য কিছুই করিনি?’

ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, জালিম সরকারকে যতক্ষণ বিদায় না করতে পারব ততক্ষণ রাজপথ ছাড়ব না। আরেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি নেতা আমিরুজ্জামন খান শিমুলসহ ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার নেতারা।

পরে ঝিনাইদহ থেকে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলের বিশাল বহর নিয়ে খুলনা অভিমুখে রোডমার্চ শুরু হয়। পথিমধ্যে মাগুরা ও যশোরে কয়েকটি সমাবেশ করে। রাত ৯টার দিকে খুলনায় পৌঁছায় রোডমার্চ বহর। কর্মসূচি চলাকালে কখনো হাত নেড়ে, কখনো গাড়ি থামিয়ে রাস্তার দুপাশে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যায় মির্জা আব্বাসকে। রোডমার্চে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের হাতে ছিল জাতীয় কিংবা দলীয় পতাকা।

মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ থেকে রোডমার্চটি মাগুরায় প্রবেশ করে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে। মাগুরার প্রবেশমুখে আলমখালি এলাকায় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতাদের স্বাগত জানান। পরে পথে মাগুরা সদর উপজেলার শেখপাড়া এবং শালিখা উপজেলার আড়পাড়া বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি সভাপতি আলি আহমেদের সভাপতিত্বে পৃথক পথসভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

যশোর ব্যুরো জানায়, মাগুরা হয়ে বিকালে যশোর শহরের মুড়লী মোড়ে পথসভা হয়। এতে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বারবার শান্তিপূর্ণভাবে দাবিগুলো তুলে ধরেছি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। শুধু বিএনপি নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল বলেছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।’

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সরকারের সময় শেষ। পালানোর সময় পাবে না। ভালোয় ভালোয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তা না হলে জেলখানা ভেঙে বাংলার মানুষ বাংলার নেত্রীকে মুক্ত করবে।’

পথসভায় বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, জেলা বিএনপির সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, মিজানুর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

যশোর মুড়লী মোড়ে সমাবেশ শুরুর পর উপস্থিত নেতাকর্মীদের নজর কাড়ে খালেদা জিয়ার প্রতীকী কারাগার। এর ভেতর থেকে একটি শিশু খালেদা জিয়া সেজে সবাইকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল। একটি পিকআপের উপরে প্রতীকী কারাগারের বাইরে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় উৎসুক নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সেলফি ও ছবি তুলতে দেখা যায়।

খুলনা ব্যুরো জানায়, মঙ্গলবার খুলনায় রোডমার্চের পর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচন করতে হলে সঠিক নিরাপদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। জনগণ ভোটাধিকার ফেরত চায়। স্যাংশনের পর আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমেরিকা থেকে ৫ অক্টোবর ফেরত আসার কথা। এত তাড়াতাড়ি কেন ফেরত এলেন। এখনো সময় আছে জনগণের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান, দেশের মানুষ ক্ষমা করে দেবে। ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়েছেন আমাদের মহাসচিব। এ সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ না পাঠালে ভয়াবহ অবস্থা হবে।

মির্জা আব্বাস বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের যে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে তা তার নয়, ওই সম্পত্তি আমাদের। সে এমন কিছু করে না যে এত সম্পদ তৈরি করতে পারবে। এ সরকারের পতন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পারে শুধু মানুষ হত্যা করতে, কিছু লোককে গ্রেফতার করতে। আদালতে শুধু বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা। অন্য কোনো মামলা নেই। সারা বছর বিএনপি নেতাকর্মীদের আদালতে হাজিরা দিতে হয়। তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে ১ লাখ ৯ হাজার বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। ৮ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হারিয়ে গেছে। ব্যাংকে সোনা রাখলে সেটা তামা হয়ে যায়। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রোডমার্চ শেষে খুলনায় বিএনপির সমাবেশ শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে। নগরীর শিববাড়ী মোড়ে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা যোগদান করেন রাত ৯টায়। এদিন দুপুর থেকে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বিকাল ৩টার দিকে শুরু হয় জাসাসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উঠলে শুরু হয় সমাবেশের মূল পর্ব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উ ল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, উপকোষাধ্যক্ষ মাহমুদ আলম খান বাবু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলী, সহ-পরিবার ও কল্যাণ সম্পাদক জাহানারা বেগম।

সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি। এর আগে রোডমার্চ ও সমাবেশকে ঘিরে খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় খুলনা বিএনপি।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের পার্শ্ব ও দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি এসে পৌঁছেছেন।

তিনি নিউইয়র্ক থেকে সড়ক পথে ওয়াশিংটন ডিসিতে সন্ধ্যে ৬টায় এসে পৌঁছান।

ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শনিবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) নিউইয়র্কে তার আবাসস্থল দ্য লোটে থেকে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে রওনা হন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছান।

প্রধানমন্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন এবং ৩ অক্টোবর পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থান করবেন।

সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন। আগামী ৪ অক্টোবর তাঁর ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।

রাজনীতি

আওয়ামী লীগ কোনো ভিসানীতির প্রয়োগ বা নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না। কোনো দেশের ভিসানীতি বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্রে প্রভাব রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার(২৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এমনটি জানান তিনি।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতি দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর আস্থা রেখেই সরকার পরিচালনা করে আসছে। জনগণই আওয়ামী লীগের একমাত্র শক্তি।

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো ধরনের অপতৎপরতাকে প্রতিহত করবে দেশের জনগণ। আওয়ামী লীগ কোনো ভিসানীতির প্রয়োগ বা নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না। আওয়ামী লীগ পরোয়া করে দেশের জনগণকে। কোনো দেশের ভিসানীতি বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্রে কোনো প্রভাব রাখতে পারবে না। জনগণের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই দেশের গণতন্ত্রের পথরেখা নির্ধারিত হবে।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা বরাবরের মতো তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করছেন। বিএনপি নেতাদের মনে রাখা উচিত, তারা কোনো আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারেননি, বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদার মানবিকতার কারণে খালেদা জিয়া একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়েও নিজ বাসায় বসবাস করছেন এবং নিজের পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। কিন্তু বিএনপি নেতারা তা না করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে আইনবিরোধী কথাবার্তা বলছেন। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে গায়ের জোরে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দাবি আদায়ের জন্য তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই, ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন এবং রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা থেকে সরে আসুন। জাতিকে বিভক্ত করার দুরভিসন্ধি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে এদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক চেতনা ও সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করার দায় তাদের নিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করলে যেকোনো উপায়ে তা প্রতিহত করা হবে।

রাজনীতি

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠনোর আল্টিমেটাম দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে অসুস্থ খালেদার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির সমাবেশে মহাসচিব সরকারের কাছে এই সময়সীমা বেঁধে দেন।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। এত অসুস্থ যে এখন তার চিকিৎসকরা বলেছেন যে অবিলম্বে তার চিকিৎসা না করা হয় বিদেশে… বাংলাদেশে তার সেই চিকিৎসা সম্ভব নয়। তা নাহলে তাকে বাঁচানো দুষ্কর হয়ে যাবে। আমি যখন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছি তখন তারা বলেছেন, আপনাদের যদি কিছু করার থাকে তাহলে করেন দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।

‘আজকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। ’

‘অন্যথায় ম্যাডামের কিছু হলে তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই কথাটা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী সরকারকে বলতে চাই… দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত হাসপাতালে প্রেরণ করুন। এই ক্ষেত্রে যদি কোনো ক্ষতি হয় তাতে নেত্রীর ক্ষতি হবে না, তার পরিবারের ক্ষতি হবে না, এই বাংলাদেশের বড় ক্ষতি হবে।

শুধু বাংলাদেশ নয় এই এশিয়া উপমহাদেশে যে ক’জন নেতা-নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছেন তাদের কয়েকজনের মধ্যে আমাদের নেত্রী আছেন। কয়েকদিন আগে আমাদের অফিসে জার্মান শার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স এসেছিলেন তিনি বললেন, ম্যাডাম কেমন আছেন। আমরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। আমরা তাকে অন্যভাবে দেখি। এই হচ্ছে পাশ্চাতের ধারণা। ’

বিদেশে যেতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এ ধরনের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব ছলচাতুরি করে কোনো লাভ নেই… আবেদন করেননি। পরিবার থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে তার মুক্তির কথা বলা হয়েছিল। একইসঙ্গে তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ’

‘আপনারা এখন বেমালুম চেপে গিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। আমি বলব, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। গণতন্ত্রের মাতাকে মুক্তি দিয়ে এখন প্রমাণ করে যে, আপনারা গণতন্ত্রের কিছুটা হলে বিশ্বাস করেন। ’

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার, ফুসফুস, হৃদরোগ ভুগছেন। ৯ আগস্ট অসুস্থ অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘যে নেত্রী অত্যন্ত শক্ত মনের জোর নিয়ে সব প্রতিকূলতা থেকে কাটিয়ে উঠেন যিনি পাঁচ বছর বন্দি থাকা অবস্থাও কোনোদিনও তার চোখে আমরা পানি দেখিনি। ’

‘গতকাল তাকে অত্যন্ত অসুস্থ দেখেছি, আমার প্রথমবারের মতো মনে হয়েছে যে, সত্যি আমাদের ম্যাডাম আমাদের মাতা, আমাদের ম্যাডাম অনেক অনেক বেশি অসুস্থ।

এই সময়ে নেতাকর্মীরা বার বার স্লোগান দিতে থাকেন ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে আগুন জ্বলবে ঘরে ঘরে’।

বিকেল তিনটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই সমাবেশ হয়।

নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার ছবি সম্বিলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিল করে সমাবেশ স্থলে আসেন। বিকেল চারটার মধ্যে নয়াপল্টনের সড়ক জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, হাসান জাফির তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবীদলের আব্দুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক লুতফুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে ছড়াকার আবু সালেহ তার লেখা ছড়া ‘ধরা যাবে না, বলা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না কথা, রক্ত দিয়ে পেলাম শালার আজব স্বাধীনতা’ আবৃত্তি করে শোনান।

রাজনীতি

যুদ্ধ, স্যাংশন ও সংঘাতের পথ পরিহারে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে বাংলায় দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, আসুন যুদ্ধ, স্যাংশন ও সংঘাতের পথ পরিহার করি এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি।

রোহিঙ্গা সংকটের ওপর আলোকপাত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি।

শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। তবে, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আর্থিক অবকাঠামো লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে যেমন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তেমনি এটি সঙ্কটের সময় উন্নয়নশীল দেশগুলির আর্থিক চাহিদা মেটাতেও সক্ষম নয়।

তিনি বলেন, আজ এমন একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক অবকাঠামো আমাদের জরুরিভাবে প্রয়োজন, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিশেষ ছাড়ে, কম খরচে, কম সুদে এবং ন্যূনতম শর্তে অর্থ সংগ্রহে সহায়তা করবে। তা ছাড়া, জরুরি অবস্থা এবং দুর্যোগের সময় আইএমএফের এসডিআর তহবিলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। সমস্ত ঋণ ব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত বিশেষ বিধান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০০ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাবনার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা এই প্রস্তাবনার দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করছি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা, আমার তিন ছোট ভাই, দুই ভ্রাতৃবধূ, চাচাসহ পরিবারের মোট আঠার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। আমার ছোট বোন এবং আমি বিদেশে থাকায় সেই বর্বরতা থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম। এর আগে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ দেশবাসীকে হত্যা করা হয়, দুই লাখ নারী নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২২ মিনিটে তিনি ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সপ্তদশ বারের মতো ইউএনজিএ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।

এ বছরের ইউএনজিএর মূল প্রতিপাদ্য, ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ত্বরান্বিতকরণ পদক্ষেপ।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং সেখানে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন সফর শেষ করে তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। সেখানে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত অবস্থান করবেন এবং অবশেষে ৪ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।

রাজনীতি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক কে আসলো আর কে গেলো, সেটি দেখার বিষয় নয়। দেশে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দেয়ার কাজ চলছে, সেটি করছে ইলেকশন কমিশন।

তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়ায় প্রিমিয়াম ওয়াটার পার্ক ‘মানা বে’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই নির্বাচনকালে প্রয়োজন হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে পরিবর্তন হবে।

তিনি বলেন, সরকার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে, এটি সরকারের একটি বড় সাফল্য।

অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন ও পুলিশ সুপার আসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নিয়ে গেছে। এ দফায় তাকে দুইবার সিসিইউতে নেওয়া হলো। তিনি গুরুতর অসুস্থ। এ সরকারের আজ্ঞাবহ বিচার বিভাগ মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়ে পাঁচ বছর আগে কারারুদ্ধ করেছিল। এরপর তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। শর্ত দিয়েছে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। চিকিৎসা ব্যবস্থা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কারাগারে থাকলেও সব বন্দিকে চিকৎসা দিতে হবে। তার চিকিৎসকরা ও দলের পক্ষ থেকে বলেছি, মানবিক কারণে চিকিৎসার স্বার্থে দ্রুত বিদেশে উন্নত হাসপাতালে পাঠানো হোক। পরিষ্কার করে বলতে চাই- দেশনেত্রীর যদি সুচিকিৎসা না হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয় তাহলে এই হাসিনার সরকার দায়ী থাকবে।

শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কারাবন্দি অবস্থায় বিদেশে পাঠানোর অনেক নজির আছে। জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। আজকের যিনি জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেও ওয়ান ইলেভেনের সময় কানের চিকিৎসার জন্য প্যারোলে আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল। আমরা সে কথা তো ভুলে যাইনি। আর আজকে দেশনেত্রীর জীবন মরণের সমস্যা। তার চিকিৎসকরা বলছেন, এখন যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যদি তার সঠিক চিকিৎসা না হয় জীবন বিপন্ন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক নম্বরের নেত্রী। শহিদ রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর এ দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছিল। তা মুক্ত করার জন্য সেদিনকার গৃহবধূ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। খালেদা জিয়ার রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। দেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, পথে-প্রান্তে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচারকে উৎখাত করে ৯১ সালে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুইবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এখনও কারাগারে থেকেও অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে কোনো আপস করেননি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে চলেছেন। সব কিছু বাদি দেন, একজন নারী তিনি স্বামীকে হারিয়েছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দুই শিশুপুত্রকে হাতে ধরে নিয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেরিয়েছেন। আজকে এ দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকারে যদি কেউ থেকে থাকেন তার মধ্যে খালেদা জিয়া এক নম্বর, দুই নম্বর তারেক রহমান। নেত্রীকে শুধুমাত্র প্রতিহিংসার কারণে আটক করে রেখেছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ অবস্থায় নিয়ে গেছে। তারা জানে দেশনেত্রী যদি বাইরে বেরিয়ে আসেন তাহলে তার ডাকে কোটি কোটি মানুষ বেরিয়ে আসবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে কেন্দ্রীয়সহ মহানগর ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতারা অংশ নেন।

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে বিকৃত করার বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশের জনগণই আগামীতেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, একজন শিল্পীর চিত্রকলা হৃদয় দিয়ে বোঝা যায় এবং তা একই সঙ্গে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে এবং চেতনাকে জাগ্রত করে।

তিনি আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই চেতনায় বাংলাদেশের মানুষ জাগ্রত হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে তারা আগামীতে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদের নির্বাচিত চিত্রকর্ম নিয়ে “১৯৭৩-২০২৩ রেট্রোস্পেকটিভ” শীর্ষক বিশেষ শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মাসব্যাপী প্রদর্শনীতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের আঁকা প্রায় ১৪০টি নির্বাচিত শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।

শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্মের প্রদর্শনীকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রকৃতি, দেশের জনগণের অবস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জনগণ, বিশেষ করে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের সামনে তুলে ধরছে।
তিনি আরো বলেন, জনগণ এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে শিল্পীর অনুভূতি জানার পাশাপাশি তার অনেক দুর্লভ চিত্রকর্ম দেখার সুযোগ পাবেন।

তিনি আরো বলেন, “আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মাসব্যাপী প্রদর্শনীর সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, শাহাবুদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং মনে হয় তিনি এখনও একজন মুক্তিযোদ্ধা, কারণ তার শিল্পকর্ম মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা ও চেতনাকে প্রতিফলিত করে, যা আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কারণ তিনি তার শিল্পকর্ম ও চিত্রকর্মের মাধ্যমে সারা বিশ্ব থেকে বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে রেট্রোস্পেকটিভ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। তিনি প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত চিত্রকর্মগুলোও পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ‘শাহাবুদ্দিন, এ রেট্রোস্পেকটিভ ১৯৭৩-২০২৩’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খলিল আহমেদ, চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয়।

চিত্রকর্ম মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পকর্ম মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম ও চেতনা জাগ্রত করতে পারে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শ ও ইতিহাস মুছে দেয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, তবে কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও লেখকরা তাদের রচনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, “তারা সেই সময় চেতনা ধরে রেখেছিলেন। আমরা রাজনীতিবিদরা পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি এবং রাজনৈতিক উপায়ে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি এবং অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশ গড়ার পদক্ষেপ নিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরে আসতে শুরু করেছে, যা একটি বড় অর্জন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রদর্শনী পরিদর্শনের মাধ্যমে জনগণের হৃদয়ে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হবে।

শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর চিত্রশিল্পী হিসেবে শাহাবুদ্দিন আহমেদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।

বক্তব্য প্রদানকালে শাহাবুদ্দিন আহমেদ আবেগাপ্লুত কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার অনুরাগ ও জাতির পিতার স্মৃতির কথা বর্ণনা করেন। তিনি শ্রোতাদের আরও বলেন, কীভাবে বঙ্গবন্ধু তাকে স্বাধীনতার পর ফ্রান্সের প্যারিসে পাঠিয়েছিলেন যা তার আজকের অবস্থানে পৌঁছানোর ভিত্তি তৈরি করেছিল।