রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মামলা বাণিজ্য বন্ধ না হলে ফের মাঠে নামব। নৈরাজ্য বন্ধ না হলে শহীদদের রক্ত ছুঁয়ে করা কসমের মর্যাদা রাখতে ফের মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরে শহীদ আবু সাইদ চত্বরের পথসভায় এসব কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান।

পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর দিনাজপুর অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা মমতাজউদ্দিন, কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য ও অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর মহানগর আমির এটিএম আজম খান, সেক্রেটারি আনোয়ার ইসলাম কাজল, তাজহাট থানার আমির মাওলানা রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

জামায়াত আমির বলেন, জুলাই বিপ্লবে হত্যাকাণ্ডের জন্য কেবল সরি বললেই হবে না। বরং প্রত্যেকটি খুনের বিচার হতে হবে। খুনিদের ক্ষমা করার তারা কেউ নন। দেশবাসীকে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগেও রংপুর বিভাগে একাধিক পথসভা হলেও জুলাই বিপ্লবের টার্নিং পয়েন্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে প্রথমবার কোনো সমাবেশ করল জামায়াতে ইসলামী। এজন্য বিকেল থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিট ও শাখা থেকে কর্মী সমর্থকরা জড়ো হতে থাকে আবু সাঈদ চত্বরে। প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগেই সভাস্থল পূর্ণ হয়ে যায়।

রাজনীতি

স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জাতীয় জীবনে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের তাত্পর্য অপরিসীম। সুতরাং আজকের এ মহান দিনে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।’

ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘২৪ জানুয়ারি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৬৯ সালের এ দিনে তদানীন্তন পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গণ-আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে তা গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছিল। পতন নিশ্চিত হয়েছিল সামরিক স্বৈরশাসকের।’

তিনি বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় প্রশস্ত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ। গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্যই ছিল স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন, বহুদলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম, বহুমত এবং চিন্তার চর্চা ও মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া।’

আরেক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ছাত্র-জনতার দৃঢ় ঐক্য দীর্ঘ আন্দোলনকে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ দিয়েছিল। স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল। দেশের গণতন্ত্র ও নাগরিকের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় গণঅভ্যুত্থান দিবস আমাদের প্রেরণার উত্স।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এ দিবস আমাদের গণতন্ত্র ও স্বাধিকার অর্জনের চেতনাকে শানিত করে এবং সব অন্যায়-অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আজও অনুপ্রেরণা জোগায়।’

রাজনীতি

সরকারের কোনো উপদেষ্টা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত হলে তারা সরকারে থাকবেন না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। একই সঙ্গে নতুন কোনো দল গঠনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করছে না বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবিসি বাংলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে নির্বাচন, নতুন রাজনৈতিক দল, নিরপেক্ষ সরকার প্রভৃতি প্রসঙ্গ আলোচনায় আসে। মির্জা ফখরুলের বক্তব্য প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি বক্তব্যের মূল নির্যাস যেটা বুঝেছি সেটা হলো-সরকার যেন নিরপেক্ষতা হারিয়ে না ফেলে। আমি মনে করি, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়-সরকারের নিরপেক্ষতা হারানোর কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু এটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে আসা একটা সরকার, এটা তত্ত্বাবধায়ক না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যেহেতু এটা গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত একটি সরকার, সেখানে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং নেতৃত্ব দেওয়া যে গোষ্ঠী, তাদের থেকে তিনজন প্রতিনিধি আমাদের এখানে আছেন।

তিনি আরও বলেন, এ প্রতিনিধি হিসাবে তারা তিনজন দল গঠন করছেন বা নাগরিক কমিটিতে আছেন, মোটেই এরকম নয়। যদি তারা কখনো মনে করেন নতুন কোনো দল গঠন পক্রিয়ায় তারা সম্পৃক্ত হবেন, তাহলে তারা সরকার ছেড়ে দেবেন। সরকার ছেড়ে গিয়ে দল গঠন করতে পারেন। যে কোনো মানুষই যে কোনো সময় দল গঠন করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন। তখন তিনি আর সরকারে থাকতে পারবেন না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের নিরপেক্ষতা হারানোর ব্যাপারে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, আমি এর উত্তরে বলব, এরকম কোনো সুযোগ আসলে নেই। সরকারে থেকে কেউ দল গঠন করবে না। যদি কেউ দল গঠন করতে চায়, সরকার থেকে চলে যাবে এবং তারপর দল গঠন করবে। আর আমি ওনার সাক্ষাৎকার যেটুকু পড়েছি, উনি সরকারের সঙ্গে ওনাদের যে আস্থার সম্পর্ক রয়েছে, সেটা বারবার বলেছেন।

রাজনৈতিক দল গঠনে সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করছে-এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরকম অভিযোগ ভিত্তিহীন। যদি এরকম অভিযোগ থাকে, তাহলে বলব-আমি কোনো ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছি না। সরকার কীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করবে? সরকারের মধ্যে কে পৃষ্ঠপোষকতা করছে? আশঙ্কার জায়গা থেকে ওনারা যেটা বলেছেন, সতর্কবার্তা হিসাবে নেওয়াই যায়। কিন্তু এটা এখন পর্যন্ত আমি কোনো ভিত্তি দেখতে পাচ্ছি না। সরকার কোনোভাবেই পৃষ্ঠপোষকতা করছে না।

তিনি আরও বলেন, আরেকটা কথা বলি-এই যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের ক্ষেত্রেও কিন্তু সব রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত ছিল। আমরা কিন্তু ছিলাম না। ওনারা মিলে আমাদের নির্বাচিত করে, মনোনীত করে এনেছেন।

সেক্ষেত্রে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা তো সবচেয়ে আগে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি কেউ দল গঠন করে, তাহলে ‘দে উইল নট বি পার্ট অব দ্য গভর্নমেন্ট অ্যানিমোর’।

রাজনীতি

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন প্রদানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে আপনার সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছি।’

সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের ওপর রাজনৈতিক ঐক্যমত্য গঠনের প্রচেষ্টা এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন।

জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি আশা করছেন রাজনৈতিক দলগুলো ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাবে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিরোধী মত পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমত্য গঠন করা ‘কঠিন’ কাজ। তিনি উল্লেখ করেন, প্রস্তাবিত ঘোষণাপত্রের মূল বিষয়বস্তু হলো ‘ঐক্য’।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সরকার কেবলমাত্র সহযোগীর ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হলো ঐকমত্য গঠন। আমি কোনো ধারণা চাপিয়ে দিচ্ছি না।’

ড. ইউনূস জানান, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হলে সরকার তাদের জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য অনুরোধ করবে।

তিনি মার্কিন এই কূটনীতিককে বলেন, ‘আমরা জানি না জুলাই ঘোষণাপত্রে অনেক বিষয় থাকবে, নাকি সীমিত কিছু বিষয় থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের এখানে বহুত্ব মতবাদ রয়েছে, তাই ঐক্যমত্য গঠনের কাজটা খুব কঠিন। তবে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একবার এটি স্বাক্ষর হয়ে গেলে আমাদের রাজনীতি জুলাই সনদের ভিত্তিতে এগোবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সাংবাদিকদের আটক এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার কিছু রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার সকল নাগরিকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স উভয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের অগ্রগতি এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের মূল্য দেয়। তিনি বলেন, ‘এই ধারণা থেকেই সার্ক গঠিত হয়েছিল এবং আমরা এই সংস্থার উদ্ভাবক।’

সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদলে একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তর করতে সাম্প্রতিক উদ্যোগের বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ অঞ্চলে প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চান।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তুলার শীর্ষ আমদানিকারক দেশ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পোশাক আমদানির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সেটি হলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার রফতানি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

রাজনীতি

“যারা এমন কিছু করবে যা আপনাকে-আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা আমার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা আমাদের দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলব,” বলেন তিনি।

রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

দলটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, জাতিসংঘ মিশনের পক্ষে ছিলেন সারা পিট্রোপাওলি, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং নির্বাচনী সহায়তা বিভাগ; আদিত্য অধিকারী, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগ ও জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ; নাজিয়া হাশেমি, উপদেষ্টা ডিজিটাল যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া (ইউএনডিপি)।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

সাক্ষাৎ শেষে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘জাতিসংঘের নির্বাচনী মিশনের সঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের আমন্ত্রণে আজ আমরা এখানে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছি। তারা কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছিল, ইলেকশনে ইউএনডিপি কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে, স্বচ্ছ-ফেয়ার ইলেকশন হওয়ার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার এবং সে ব্যাপারে আমরা কী ভাবছি। এসব বিষয়ে তারা কথা বলেছে এবং ইউএনডিপির এ মিশনকে আমরা ওয়েলকাম করি কিনা। আমরা বলেছি, যেকোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আমরা ওয়েলকাম করি সহযোগিতার জন্য। তবে ইন্টারফেয়ার করার জন্য নয়। উইদাউট ইন্টারফেয়ারয়ে যদি আমাদের টেকনিক্যাল এবং ফান্ডিংয়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করে সেটার জন্য আমরা বলেছি, ইউ আর ওয়েলকাম।

তিনি আরও বলেন, ইলেকশন ফেয়ার হওয়ার ব্যাপারে আমরা আরেকটি কথা বলেছি, প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সংযোগ করার জন্য। কারণ সিসি ক্যামেরা থাকলে ইলেকশনের সার্বিক পরিস্থিতি বুঝা যাবে। এখানে হিউজ ফান্ডের কথা আসছে। আমরা বলেছি, এক্ষেত্রে তোমরা আমাদের সহযোগিতা করো। ইলেকশন ফেয়ার করার জন্য এটা বড় ধরনের সহযোগিতা হবে। তারা পার্টিসিপেটরি ইলেকশনের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমরা বলেছি, আমরা নীতিগতভাবে পার্টিসিপেটরি, ফেয়ার, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এটা আমাদের মূলনীতির ভেতরেই আছে। এরপর তারা বলেছে, নির্বাচনের তারিখ কখন হতে পারে? আমরা বলেছি, অ্যাজ আরলি অ্যাজ পসিবল টাইমে সম্ভব। তবে এখানে কিছু জরুরি রিফর্মস প্রয়োজন। উইদাউট রিফর্মসয়ে যদি ইলেকশন হয়, তবে ইলেকশন আগের মতোই হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জরুরি রিফর্মস করা এবং ইলেক্টরাল ল’ চেঞ্জ করা যেটা ইলেকশনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বেশি অথরিটি দেবে; আমরা সেটার ওপর জোর দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি সাংবিধানিক মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার। দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী কন্টিনিউ করতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এসব বিষয়েও রিফর্মস হওয়া দরকার বলে আমরা জানিয়েছি। এক্ষেত্রে রিফর্মস কমিশন যেসব প্রস্তাব জমা দিয়েছে। আমরা মনে করি, সেগুলোকে নিয়েই সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনতিবিলম্বে ডায়ালগ শুরু করা দরকার। ডায়ালগ শেষ করেই কনসেসাস তৈরি করা প্রয়োজন মৌলিক বিষয়গুলোতে। এরপর ইলেকশন শুরু করার জন্য যে সময় দরকার তার ভিত্তিতেই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা দরকার। সুতরাং মিনিমাম, পসিবল, নেসেসারি রিফর্মস এবং তারপর নিয়ারেস্ট শর্টেড টাইমের ভেতের নির্বাচন করা। এটা হচ্ছে আমাদের স্ট্যান্ড- এর কথা। উইদাউট রিফর্মস-এ যদি ইলেকশন হয়, তবে ইলেকশন ত্রুটিপূর্ণ থেকে যাবে, এটা আমরা মনে করি। আর রিফর্মস- এর নামে অযথা সময়ক্ষেপণ করা এটাও সঠিক হবে না। মৌলিকভাবে এসব বিষয়ে আজ আমাদের কথা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় দল। তাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং তারাও তাদের বক্তব্য রেখেছে। আমরা বলেছি, প্রয়োজনীয় রিফর্মস করে যথাসম্ভব নির্বাচন দেওয়া। এটাই আমাদের স্ট্যান্ড।

আওয়ামী লীগের ইলেকশনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, পিপল উইল সে, এনভায়ারনমেন্ট উইল সে- পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। সেখানে পরিস্থিতি এবং জনগণের যে মতামত এবং ম্যান্ডেট থাকবে সেটাই আমাদের স্ট্যান্ড। সেখানে আমাদের বিশেষ কোনো নিজস্ব কিছু নেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে আইনগত বিষয়ে মতামত দেবে না। এটা জনগণ উইল ডিসাইড, সোসাইটি উইল ডিসাইড, সিসুয়েশন উইল ডিসাইড, এনভায়ারনমেন্ট উইল ডিসাইড।

আগে স্থানীয় সরকার না জাতীয় সরকার নির্বাচন সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবজার্ভ করছি। আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মতামত ঠিক করিনি। আমরা আলোচনা করব এবং তারপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাবো।

কেয়ারটেকার সরকারের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা তো একেবারেই আমাদের মৌলিক দাবি। এর আগে যে কেয়ারটেকার সরকারের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল তা জামায়াতে ইসলামীই আগে করেছিল। পরে অন্যান্য দল এটাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করেছি। এটা সংবিধান সংযোজিত হয়েছিল। কিন্তু আনফরচুনেটলি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে। তারাও আন্দোলন করেছিল আমাদের সঙ্গে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য। নিজের সুবিধার জন্য তারা এটি বন্ধ করেছে। সুতরাং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এটা আমাদের মৌলিক দাবি এবং এটাই হতে হবে।

রাজনীতি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ৫ আগস্ট ছিল আমাদের ঐক্যবন্ধ হওয়ার প্রতীক। ওই দিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। তাই এখন কিছু করতে হলে সবার মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। কাজেই জুলাই ঘোষণাপত্র সবার মতমতের ভিত্তিতে করতে চাই।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে, বসতে পারলে খুব ভালো লাগে। মনে সাহস পাই। কারণটা পরিষ্কার, এ সরকারের জন্ম হয়েছে ঐক্যের মাঝখানে, এটি ঐক্যের দ্বারা সৃষ্টি। যখন আমরা নিজেরা নিজেরা কাজ করি, যখন দেখি একা পড়ে গেছি, আশেপাশে কেউ নেই আপনারা, তখন একটু দুর্বল মনে হয়। যখন আবার সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তখন মনের মধ্যে সাহস বাড়ে, মনে হয় একতাবদ্ধ আছি। একতাতে আমাদের জন্ম। একতাই আমাদের শক্তি।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাঝখানে একদিন ছাত্ররা এসে বলল, তারা একটা ঘোষণপত্র দেবে। আমাকেও সেখানে থাকতে হবে। বুঝতে চাইলাম কী ঘোষণাপত্র দিচ্ছে, তারা বলল। আমি বললাম, এটা হবে না। আমার চাওয়াটা হবে না, তোমাদের চাওয়াটাও হবে না। তোমরা যদি ৫ আগস্টে ফিরে যেতে চাও, সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে যা হয়েছিল সেটাকে রিক্রিয়েট করতে হবে। একা এটা করা যাবে না। ওইদিনের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। কেউ বলে নাই তুমি অমুক, তুমি অমুক। কাজেই তোমরা করতে চাইলে সবাইকে নিয়েই করতে হবে- এটা পরিষ্কার। না করলে এটা ঠিক হবে না।’

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র সবার মতামতের ভিত্তিতে করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘শুধু ছাত্ররা করলে, যে একতা দিয়ে তোমরা ৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছিলে সেটার অবমাননা হবে। তারা আমার কথায় খুব খুশি হয়নি। কিন্তু ক্রমে তারা বুঝল, ৫ আগস্ট রিক্রিয়েট করতে হলে এভাবে করতে হবে। সেই কথা থেকে এ আলাপ শুরু। আজকের আলোচনা একে কেন্দ্র করেই হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে উদ্দেশ্যে ব্যাহত হবে। দরকারও নেই। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে।’

সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এক থাকলে সবাই ভাববে আমরা তো জেগে আছি এখনও। আমরা ভোতা হয়ে যাইনি। আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়নি এখনও, এখনও চাঙা আছে। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি।’

প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমি যতদিন আছি, একতা নিয়ে থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে। যখন আপনাদের (রাজনৈতিক নেতারা) সঙ্গে বসি, তখন সেই সাহসটা দেন। আজকে আপনাদের দেখে খুবই সাহসী মনে হচ্ছে। ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে আমরা একতাবদ্ধ আছি। সেই একতাকে কীভাবে মানুষের সামনে প্রকাশ করব, ৫ আগস্টকে রিক্রিয়েট করব, সেটি এখন আলাপের বিষয়বস্তু হবে।

ঘোষণাপত্রের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেশের সামনে আসতে পারলে তা দেশের জন্য ভালো। আন্তর্জাতিকভাবেও ভালো। সবাই দেখবে যে এ জাতির মধ্যে বহু ঠোকাঠুকি হয়েছে, কিন্তু নড়ে না। স্থির হয়ে আছে, শক্ত হয়ে আছে। একতার বিষয়টি সারা দুনিয়াকে জানাতে চাই, দেশবাসীকে জানাতে চাই।

বৈঠকে সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সাথে একসঙ্গে বসায় সারা জাতি আজ সাহস অনুভব করবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং সুন্দরভাবে এর সমাধানও হয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাবলি স্মরণ রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের সময় যে যেখানে ছিলাম, তখন আমাদের মনের মধ্যে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমরা কোনরকম সেই মুহূর্তে ফিরে যেতে পারি কি না, ঐতিহাসিকভাবে মুহূর্তটি যেন হারিয়ে না যায়। ফিরে যাওয়া বলতে বলছি, আমরা কিসের জন্য এটা করেছিলাম, কী উন্মাদনা আমাদের মধ্যে ছিল। সেই উন্মাদনা রেকর্ড করে রাখা, যাতে গোটা জাতি সেই মুহূর্তের বিষয় কী ছিল তা ভবিষ্যতে জানতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সেখানে বর্তমানের অনেক কথা এখানে ঢুকাবেন না, অতীতের কথা ঢুুকাবেন না। ওই দিনের মুহূর্তে যে আকাঙ্ক্ষা, যে যাতনা, যে উৎসাহ, বিপ্লবী অনুভূতি ছিল, সেগুলো যেন আমরা তুলে ধরি। কিছু বিষয় উচ্চারিত ছিল, কিছু অনুচ্চারিত ছিল, কিন্তু মনের মধ্যে ছিল। কাজেই সেগুলোকে রেকর্ড করা।

জুলাই বিপ্লবের ঘোসণাপত্রের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, যে নামেই এটাকে অভিহিত করেন, সে নামটা বের করতে পারব-আজকে সবাই আমরা সে বিষয়ে একমত হলাম। মূল কথা আসল জিনিসটা যেন হারিয়ে না যায়। যে জিনিসটা অনন্য হয়ে আছে, সেটাকে আমরা লিখিতভাবে রাখি। এমন না হয় আমরা চলে গেলে কেউ মনে করতে পারল না কী হয়েছিল। এটা কি হঠাৎ করে হয়েছিল, নাকি এর পেছনে অনেক জিনিস ছিল, যা ওই মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়েছিল।

বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল ও অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।

রাজনীতি

বৈঠকে বসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা) অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডে থাকবেন যুক্তরাজ্যের দ্যা লন্ডন ক্লিনিকের ৪ জন প্রফেসর ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের ৩ জন চিকিৎসক, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৬ জন চিকিৎসক এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান।

এদিকে মায়ের সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর আগে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সব রিপোর্ট শুক্রবারের (১৭ জানুয়ারির) মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বেগম খালেদা জিয়া তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। যুক্তরাজের দ‍্যা লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীণ রয়েছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসকরা বলছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যেই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট আসবে এবং এর পরেই নেয়া হবে চিকিৎসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এ দেশ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবার। কাজেই সুন্দর দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা লাগবে।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই যেখানে ব্যবসায়ীদের কাছে কেউ চাঁদাবাজি করবে না, হুমকি-ধমকি দিবে না, কেউ দখলবাজি করবে না, ঘুসখোররা ঘুস খাবে না। আর এমন দেশ গড়তে গেলে কুরআনের আইন চালু করতে হবে। আমাদের সন্তানেরা যারা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে তারা এমন বৈষম্যমুক্ত দেশ চায়। আমাদের সন্তানেরা যে স্বপ্ন নিয়ে প্রাণ দিয়েছে, সে স্বপ্ন পূরণে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা কারো কাছে মাথা নত করব না। আমরা কখনও কোন দুরাচারের সাথে আপস করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ একটা মানবিক দেশ না হবে, দুর্নীতিমুক্ত, দু:শাসনমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে। এ লড়াইয়ে দেশের মানুষকে আমরা পাশে চাই।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাইপাস চত্বরে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম, জেলা অ্যাস্টিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল হাকিম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আবুল হোসাইন, নাটোর শহর আমীর রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিক এবং উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাজমুল ইসলামসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জামায়াতের আমির উপজেলার রাজাপুর বাজার ও ধানাইদহ বাজারে পৃথক পথসভায় বক্তব্য রাখেন। শনিবার তিনি রাজশাহীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।

রাজনীতি

সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন অন্তবর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মানবিক এই উদ্যোগের জন্য ভিডিও বার্তা দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সাফল্য কামনা করেন। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১০তলা ভবনের কিডনি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করল তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর তেমুখী-বাদাঘাট-বাইপাস সংলগ্ন নাজিরেরগাঁওয়ে ১০তলা ভবনের এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘অনেকগুলো আলোকিত উদ্যোগী প্রাণ মানুষ সেবা করার মন-মানসিকতা নিয়ে কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটে মিলিত হয়েছেন। সম্মিলিত ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে সৃষ্টি এই প্রতিষ্ঠান সেবায় রোলমডেল হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি। দেশের মানুষকে এই ভালো উদাহরণগুলো রীতিতে পরিণত করতে হবে। তাহলে সহজেই বাংলাদেশ তার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।’

দায়িত্বের জায়গা থেকে এই অসাধারণ কাজের সঙ্গে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হওয়া একটা বড় পাওয়া বলে উল্লেখ করেন শারমীন এস মুরশিদ।

তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যবস্থাপনায় অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইলেও সহজে হওয়া যায় না। সরলরেখায় শুধু পিপিপি হলেই সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের মতো চমৎকার কিছু ঘটবে এমনটি কিন্তু নয়। কয়েককজন অসাধারণ মানুষের তীব্র ইচ্ছার কারণে এ হাসপাতালটি বাস্তব চিত্রটা পেয়েছে।’

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত ছিয়াত্তর হাজার প্রতিষ্ঠানকে সুব্যবস্থাপনায় আনা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানকে সুগঠিত করতে হলে কয়েকজন সুগঠিত মানুষ লাগে। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটকে এত উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন করার জন্য এধরনের নিবেদিত প্রাণ নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর রশিদ, মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান, বীর উত্তম, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক কর্নেল এম এ সালাম (অব.) প্রমুখ।

হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ২০ কোটি টাকা দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণ ছাড়াও হাসপাতালের যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার অর্থ বিভিন্ন অনুদান থেকে ব্যয় করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিলেটের ব্যবসায়ী জুবায়ের আহমদ চৌধুরী প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের ১১০ শতক ভূমি বিনামূল্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দান করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল চালু হওয়ায় কিডনি রোগীরা সিলেটেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা পাবেন। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য আর দেশের বাইরে যেতে হবে না। গরীব ও দুঃস্থ রোগীরা স্বল্পমূল্যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনামূল্যেও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।