অর্থনীতি

দেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়েছে, তা ফিরে আসবে বলে বলে আশায় আছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তবে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তার কোনো হিসাব তার কাছে নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

দেশ থেকে অর্থ পাচার বরাবরই্‌ আলোচনার বিষয় হয়ে থাকছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে বিরোধী রাজনীতিকরা বলে আসছেন।

গত বছর ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালেই বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়।

বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকা, যা জাতীয় বাজেটের দুই-তৃতীয়াংশ।

বৃহস্পতিবার প্রবাসীদের সম্মাননা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯-২০ প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থ পাচারের প্রসঙ্গটি আসে।

ব্যবসায়ী ক্যাটেগরিতে সম্মাননা পাওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী ওমর ফারুক অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার যাচ্ছে, বিনিয়োগ হচ্ছে। এসব অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।”

তার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই অর্থ নিয়ে চলে যাওয়ার। আমরাও শুনছি। পৃথিবীর কয়েকটি দেশ আছে যারা অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতও সেরকম। সেখানে শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশ থেকেই অর্থ যায়।

“আমরা এগুলো শুনি। কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই আমাদের কাছে। ফরমাল চ্যানেলের বাইরে (ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে) অর্থ লেনদেন কোনো এক সময়ে প্রশ্ন তৈরি করবে। তবে আমরা একটা আশা নিয়ে আছি। সেটা বড় আশা। টাকা যেগুলো যাচ্ছে ..তা আবার ফিরে আসবে। আমরা এমনভাবে সুবিধা দেব, সবাই ফিরে আসবে বাংলাদেশে।”

প্রবাসীরা প্রস্তাব করেন, ওয়েজ আর্নার বন্ড কেনার সীমা তুলে দিয়ে এর অর্থ বিনিয়োগ শেষে ফেরত নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার। বর্তমানে একেজন প্রবাসী সর্বোচ্চ এক কোটি টাকার ওয়েজ আর্নার বন্ড কিনতে পারেন।

এক্ষেত্রে আশ্বাস দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা ধীরে ধীরে ডলার হিসাব ওপেন করছি। ওয়েজ আর্নার বন্ডের অর্থ ফেরত নিয়ে যাওয়া আর সীমা তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করব।”
প্রবাসীদের রেমিটেন্স ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “ব্যাংকের বাইরে পাঠানো রেমিটেন্স কিন্তু নিরাপদ নয়। রেমিটেন্স পেতে আমরা সবকিছু করব। এখন আমাদের রেমিটেন্স বড় প্রয়োজন।”

মূল্যস্ফীতি ও সরকারের ঋণ নিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “মূল্যস্ফীতি আন্তর্জাতিকভাবে হচ্ছে। সারা বিশ্বে একই অবস্থা। কিন্তু আমরা সফল হব। বর্তমানে ঋণ-জিডিপির অনুপাত ৩৪ শতাংশ। সবই সহজ শর্তের ঋণ। আমাদের কোনো হার্ড ঋণ নেই। তাই সমস্যা হবে না।”

কোভিড মহামারীতে ২০১৯ সালে রেমিটেন্স পাঠানো প্রবাসীদের সম্মাননা দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ২০১৯ ও ২০২০ সালের জন্য পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী ক্যাটেগরিতে ৫৩ জন ও প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এক্সচেঞ্জ হাউস এবং ব্যাংক মিলিয়ে ৬৭টি পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোয় উৎসাহ দিতে ২০১৪ সাল থেকে রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৯৯ জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

ঢাকার ফার্মগেইট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের এই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ছিলেন প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

গভর্নরও প্রবাসীদের রেমিটেন্স ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, “প্রবাসীদের জন্য ডলার ইনভেস্টমেন্ট ও প্রিমিয়ার ডলার বন্ড রয়েছে বিনিয়োগ করার। সেখানে বিনিয়োগ করতে পারেন। যা দেশীয় ব্যাংকের সুদহারের চেয়ে বেশি।”

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস্‌-উল ইসলাম বলেন, “রেমিটেন্স আহরণে অগ্রণী ব্যাংক তৃতীয় অবস্থানে। এক সময়ে দ্বিতীয় ছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার কারণে রেমিটেন্স আনতে পারছি না।

“প্রতিযোগিতার বাজারে সকলের জন্য এক রেট বা আমদানি-রপ্তানি রেটের বাইরেও ডলার আনার সুযোগ দেওয়া উচিৎ।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাছেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব শেখ মোহম্ম্মদ সলীম উল্লাহও বক্তব্য রাখেন।

অর্থনীতি

পণ্য রপ্তানিতে সুবাতাস বইছে। ধারাবাহিকভাবে আয় ও প্রকৃদ্ধি দুটোই বাড়ছে। সর্বশেষ এপ্রিল মাসে ৪৭৩ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

আয়ের লক্ষমাত্র ধরা হয়েছিলো ৩৩৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সে তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া গত বছর একই সময় আয় হয়েছে ৩১৩ কেটি ৪৩ লাখ ডলার। সেক্ষেত্রে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে।

এদিকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি আয়ের লক্ষমাত্র ধরা হয়েছিল ৩৫৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৪৩৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। সেক্ষেত্রে লক্ষমাত্রার তুলনায় আয় ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি হয়েছে।

এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছিল ৩২০৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার। গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সংস্থাটির তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, তৈরি পোশাকের পাশাপাশি হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্রকৌশল ও রাসায়নিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। বড় খাতের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে।

ইপিবি বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৯০৫ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ দশমিক শূন্য ৯৮ শতাংশ। হিমায়িত খাদ্য খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৪৬ কোটি ডলার। আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। কৃষি পণ্য রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯১ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ১০৪ কোটি ডলার। আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।

উৎপাদিত পণ্য খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬২ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৪ হাজার ১৮৩ কোটি ডলার। এ খাতে আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৫ কোটি ২৩ লাখ ডলার। আয় হয়েছে ১০১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। আয় বেশি হয়েছে ১৮ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

অন্যদিকে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের লক্ষমাত্র অর্জন হয়নি। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১১৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। আয় কম হয়েছে ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পাশাপাশি গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে।

অর্থনীতি

আমদানি থাকলেও খুচরা বাজারে সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪০ টাকা বাড়িয়েছেন মিল মালিকরা।

নতুন দর অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা, যা এতদিন ১৪০ টাকা ছিল। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা করা হয়েছে। ৫ লিটারের বোতলের দাম হবে ৯৮৫ টাকা।

আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মিল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ভোজ্যতেলের দাম ঘোষণা করা হলেও এবার মিল মালিকরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজেরাই মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।

ঈদের পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফাচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক বার্তায় ভোজ্যতেলের নতুন দর ঘোষণা করা হয়।

নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী, পরিশোধিত পাম সুপার তেল প্রতি লিটারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ১৭২ টাকা, যা এতদিন ছিল ১৩০ টাকা।

সেই হিসাবে পাম তেলের দাম বেড়েছে ২৪ শতাংশ। আর সয়াবিনের দাম খুচরায় বেড়েছে ২৮ শতাংশ, বোতলজাতের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর  পর সয়াবিনসহ ভোজ্য তেলের দর বিশ্ববাজারে চড়তে থাকায় দেশের ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়ানোর পক্ষে বলছিলেন।

এর মধ্যে রোজার ঈদের আগে হঠাৎ করেই খুচরা বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যায়, যদিও আমদানিতে কোনো সঙ্কট ছিল না।

সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৪৩ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে মিল মালিকরা দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রণালয়ে গেলেও সরকার সায় দেয়নি। গত মার্চের মাঝামাঝিতে তেলের আমদানি, পরিশোধন ও বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের পর ঈদের আগে লিটারে ৭ টাকা করে দাম কমানো হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে এপ্রিল ও মে মাসে ধীরে ধীরে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিতে থাকেন মিল মালিকরা। দাম বৃদ্ধির আশায় ডিলার ও পাইকারি বিক্রেতারাও তেলের মজুদ শুরু করেন। এসব ঘটনা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ধরা পড়ে।

কারওয়ান বাজারের একটি মুদি দোকানে বিভিন্ন ধরনের বোতলে খোলা সয়াবিন তেল ভরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

মিল মালিকদের ভাষ্য, বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের নিয়মিত মূল্য প্রতিটন ১২০০ ডলার থেকে বেড়ে ১৮০০ ডলারে উঠেছে। পরে সেটা কিছুটা কমে ১৬০০ ডলারে থিতু হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই দেশের বাজারে তেলের দাম বাড়াতে হচ্ছে।

টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার তসলিম মূল্য বৃদ্ধির নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার বলেন, “মিল মালিকরা বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে আলাপ করেই তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী কাল থেকে এই মূল্য কার্যকর হবে।”

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তেলের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে সেটা আমরাও বুঝতে পারছি। ভারতে লিটার ২০৫ টাকা করেছে। ইংল্যান্ডে তেলের বিক্রি সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। জার্মানে আরও খারাপ অবস্থা। ব্রাজিল সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী, তারাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এখন দেখা যাক তারা কী করে।”

তিনি বলেন, “মিল মালিকরা আমাদেরকে জানিয়েছে। তারা কাল থেকে কার্যকর করবে। দীর্ঘ দেড় মাস বাড়ানো হয়নি। এর মধ্যে দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাদের অনেক লস হচ্ছিল। লস হলে তো তারা মার্কেটে তেল দেবে না। আগামী সপ্তাহে আমরা হিসাব করে দেখবো, তারা সঠিকভাবে দাম বাড়ালো কি না?

বাজারে তেল সঙ্কট সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা সরবরাহ সঙ্কটের জন্য নিয়মিত অ্যাকশন নিচ্ছি। অবৈধ মজুদের জন্য ভোক্তা অধিকার থেকে নিয়েমিত অভিযান করা হচ্ছে, জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করছি, মূল্য সমন্বয়ের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

অর্থনীতি

আগামী জুন মাসের যেকোনো দিন পদ্মাসেতু চালু হবে। ঈদের ছুটি শেষে দিন-তারিখ নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৩ মে) সকালে মাদারীপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এ কথা জানান।

শাজাহান খান বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ জুনের মধ্যেই পদ্মাসেতু দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে পদ্মাসেতু চালুর সময় রেল লাইন চালু করা সম্ভব হবে না। পদ্মাসেতু চালুর পরে রেল লাইন চালু হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এছাড়া পদ্মাসেতু চালুর আগেই সেতুর টোল নির্ধারণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৩ সালের ২৫ অক্টোবর প্রথম পদ্মাসেতু নির্মাণের কথা জাতীয় সংসদে প্রস্তাব দিলেও তৎকালীন সরকার তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল এই সেতু নির্মাণ। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে পেরে আমরা গর্বিত, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

মাদারীপুর পৌরসভার আয়োজনে সকাল ৮টায় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের জামাত পড়ান জেলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইলিয়াস হাবিবুল্লাহ। নামাজে অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহান্দার আলী জাহানসহ কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। নামাজ আদায় শেষে একে অপরে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন তারা।

অর্থনীতি

বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার দুপুরে মুহিতকে নিয়ে অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসে ড. মুহাম্মদ ইউনূস লিখেছেন, ‘মুহিত ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ওয়াশিংটন ডিসিতে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এটা রেডিওতে শুনে আমরা ন্যাশভিলের ছয়জন বাঙালি তাৎক্ষণিকভাবে একত্র হয়ে বাংলাদেশ সিটিজেনস কমিটি গঠন করলাম। প্রত্যেকে এক হাজার ডলার জমা করে একটা তহবিল বানালাম। আমি ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের দ্বিতীয় উচ্চতম ব্যক্তি এনায়েত করিমকে ফোন করলাম। বললাম আমি ওয়াশিংটন রওনা হচ্ছি। সবার সঙ্গে আলাপ করে কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। তিনি আমাকে উৎসাহ দিলেন চলে আসার জন্য। ছয় হাজার ডলারের তহবিল সঙ্গে নিয়ে পরদিন ওয়াশিংটনে গিয়ে সোজা উঠলাম এনায়েত করিমের বাসায়, যার সঙ্গে কোনোদিন আমার পরিচয় ছিল না।’

‘এর পর ওয়াশিংটনে প্রায় রাতে মুহিত ভাইয়ের বাসায় সবাইকে নিয়ে বসা আমাদের নিয়মিত কাজ হয়ে দাঁড়ালো। নানা সংবাদ দেওয়া নেওয়া। নানা উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্ক। হাতাহাতি। সব কিছুই এই বৈঠকের অংশ হয়ে দাঁড়ালো। যারা ওয়াশিংটনের লোক তারা সারাদিন তাদের অফিস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমরা কয়েকজন যারা অন্য শহর থেকে এসেছি তারা সার্বক্ষণিক কর্মী হয়ে কাজ করতে থাকলাম। একদিন মুহিত ভাই বললেন- একটা ওয়্যারলেস সেটের জন্য কিছু টাকার দরকার। আমি ন্যাশভিলের ছয় হাজার ডলার তার হাতে দিয়ে দিলাম। আমরা কয়েকজন আরেকটা দায়িত্ব নিলাম। এটা হলো- বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতে গিয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো। মুহিত ভাই আমাদের সঙ্গে দূতাবাসগুলোর পরিচয় করিয়ে দিতেন এবং আমাদের ব্রিফ দিতেন কার কাছে কীভাবে আমাদের প্রস্তাবটি উত্থাপন করতে হবে।’

তিনি লেখেন, ‘দেশে ফিরে আসার পর আবার মুহিত ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হলো তারই উদ্যোগে। তিনি আমার কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি সরকারি চাকরিতে বিরক্ত হয়ে গেছেন। বললেন, তিনি আমার কর্মকাণ্ড চাক্ষুষ দেখতে চান। আমি সানন্দে ব্যবস্থা করলাম। তাকে নিয়ে পুরো একটা দিন টাঙ্গাইলের হাঁটুভাংগা শাখায় কাটালাম। তার হাজারও প্রশ্নের জবাব দিলাম। ঢাকা ফেরার পথে অনেক কথা বললেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন। আমার সঙ্গে গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করবেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা স্থাপন করবেন সিলেটে। পরবর্তীতে শুনলাম তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তারপর মনে হয় বিদেশ চলে গেছেন। আবার দেখা হলো- ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে। কুমিল্লা একাডেমিতে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। আমরা দুজনেই সম্মেলনের বক্তা। আগের দিন সন্ধ্যায় অনেক আলাপ হলো। বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এনিয়ে আমি একটা কনসেপ্ট পেপার লিখেছিলাম। সেটা তাকে দিলাম এবং মুখে সবিস্তারে বুঝালাম। সম্মেলনের পরের দিন সকাল বেলায় আমাদের সবার ঢাকায় ফেরার কথা। কিন্তু হঠাৎ সারা দেশে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা কুমিল্লায় আটকে গেলাম। দুজনে আরও বহু কথা বলার সুযোগ পেলাম। কারফিউ প্রত্যাহারের পর সন্ধ্যায় ঢাকা ফিরলাম। পরদিন ঘোষণা শুনলাম- মুহিত ভাই নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রী হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আমি অভিনন্দন জানালাম। তিনি দেখা করার জন্য খবর পাঠালেন। মনে মনে খুশি হলাম এই ভেবে যে, এবার গ্রামীণ ব্যাংককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সুযোগ পাবো।’

ড. ইউনূস লেখেন, ‘দেখা করলাম। তারপর ঘটনা এগুতে থাকলো। এক পর্যায়ে এসে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ জারি হলো। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হলো- নতুন ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে। আমরা অনুষ্ঠানের জন্য এক পায়ে খাড়া। কিন্তু মন্ত্রণালয় চায় এটা ঢাকায় করতে। আমরা বেঁকে বসলাম। আমরা বললাম গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গ্রামে হবে। মন্ত্রণালয় কিছুতেই এতে রাজি হবে না। আমি মুহিত ভাইকে ফোন করলাম। তিনি সোৎসাহে বললেন- অবশ্যই এটা গ্রামে হবে এবং আমি সেখানে যাবো।’

‘১৯৮৩ সালের ৩ অক্টোবর টাঙ্গাইলের জামুর্কী গ্রামে ভূমিহীন নারীদের এক বিরাট সমাবেশের মাধ্যমে মুহিত ভাইয়ের উপস্থিতিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের বহু আনন্দময়, স্বপ্নময়, গৌরবময় স্মৃতিগুলি স্মরণ করে মুহিত ভাইকে আজ বিদায় জানাচ্ছি। আল্লাহ তার রূহের মাগফেরাত দান করুন।’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মুহিত। তিনি ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। রোববার তাকে সিলেটে দাফন করা হয়।

অর্থনীতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন গর্বিত শিক্ষার্থী ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শনিবার (৩০ এপ্রিল) এক শোক-বাণীতে উপাচার্য বলেন, আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।

শিক্ষা, সাহিত্য, অর্থনীতি, পরিবেশ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ দখল ছিল। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বয়োজ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিবিদ ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সমাজ সংস্কারক। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন বিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ মহান ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বাধীনতা পদকে ভূষিত আবুল মাল আবদুল মুহিত একজন খ্যাতিমান লেখকও ছিলেন। সদা হাস্যোজ্বল, সৎ, সাহসী, সজ্জন, সরল এই বিজ্ঞ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রকৃত দেশপ্রেমিক এবং অর্থনীতিবিদকে হারালো। দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনীতিতে অনবদ্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ২৯ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

অর্থনীতি

দেশের অর্থনীতিতে আবারও পাটের সম্ভাবনা বাড়ছে। গার্মেন্টসনির্ভর রপ্তানি খাতকে বহুমুখী করতে সামনে আসছে এক সময়ের গৌরবের সোনালি আঁশ পাট। পাশাপাশি বিশ্বে পরিবেশবান্ধব শিল্প হিসাবেও বাড়ছে পণ্যটির চাহিদা।

আগ্রহ বাড়ছে দেশি বিদেশি উদ্যোক্তাদের। ফলে দায়গ্রস্ত শিল্পটি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে সরকার। বাংলাদেশে পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কারের পর নতুন করে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নানা উদ্যোগের কথা বলছে সরকার।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে পাট খাতের চাহিদায়। এ কারণে পাট নিয়ে ধীরগতিতে আগানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ খাতে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি। জানতে চাইলে তত্ত্বাধবায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, জন্মরহস্য আবিষ্কার হওয়ায় পাটের সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। বিশ্ববাজারেও পাটপণ্যের চাহিদা রয়েছে। ফলে এসব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এ খাতে বিনিয়োগ জরুরি। তিনি বলেন, এ খাতে গবেষণা আরও বাড়াতে হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে অর্থনীতির অন্যতম দায় দেশের পাট খাত। মুনাফাতো দূরের কথা, এ খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে ১০ বছরে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। এ সময়ে লোকসান দিয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।

দুর্নীতি অনিয়মসহ নানা সীমাবদ্ধতায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় ২০২০ সালের ৩০ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) বন্ধ হয়ে যাওয়া ১৭টি জুট মিল ইজারার মাধ্যমে সচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে দুটি চালু হয়েছে। চালু হওয়ার পথে আরো দুটি। বাকি ১৩টি মিল ইজারায় নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ১৮টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দুটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাট খাতের এই দুরবস্তার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সীমাহীন দুর্নীতি, অদক্ষতা, আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, শ্রমিক ইউনিয়নের স্বেচ্ছাচারিতা, সুস্থ প্রতিযোগিতার অভাব এবং সরকারের অবহেলা। তবে সম্ভাবনাও কম নয়। কারণ বিশ্বে পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের।

এর মধ্যে চীনের দখলে অধিকাংশ বাজার থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান আছে ছোট আকারে। তবে ২০১৮ সালে ইউরোপের বাজারে সিনথেটিক পণ্য নিষিদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী বাড়ছে বায়োডাইবারসিফিকেশন ব্যাগ ও পণ্যের চাহিদা যা বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে দেশীয় পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কার করেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। ফলে জীবাণু প্রতিরোধক পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেই নানা উদ্যোগ। এদিকে পলিথিনের মোড়ক ব্যবহার করে পণ্য বাজারজাত করে এমন কোম্পানির ওপর এক শতাংশ ইকো ট্যাক্স আরোপ করা হয়। অবৈধ পলিথিন নির্মূল ও পলিথিন রি-সাইক্লিংয়ের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্র জানায়, পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১১৬ দশমিক ১৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। আর চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪২ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৬ কোটি ডলার বেশি। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে প্রতি বছর ১২ দশমিক ৩৫ লাখ একর জমিতে পাট চাষ হয়। মোট উৎপাদনের ৭৫ শতাংশই দেশে ব্যবহার হয়।

জানা গেছে, ২০০টি পাটকল রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) আওতায় ২২টি, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) আওতায় ৮১টি এবং বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় ৯৭টি। সরকারি হিসাবে তিন খাতে মোট শ্রমিক এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৪৯।

১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আদমজী পাটকল। পরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলে গড়ে ওঠে অনেক পাটকল যার বেশির ভাগই ছিল লাভজনক। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথমে ৬৭টি পাটকলকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। পরে আরও ৮২টি পাটকল সরকারি করে বিজেএমসির আওতায় আনা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর নেতৃত্ব ও কর্মপরিকল্পনায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ কখনো নেওয়া হয়নি, যা ক্রমশ পাটকলগুলোকে দুর্বল করেছে।

সূত্র আরও জানায়, দেশে পাট খাতে এখন বেশ সাড়া মিলেছে। এ জন্য প্রায় এক দশক পরে নীতিমালা তৈরি হয়েছে। এই নীতিতে বন্ধ হওয়া সরকারি পাটকলগুলো ক্রমান্বয়ে চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার এবং পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পাটবীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায় বিএডিসির সক্ষমতা বাড়ানো, পাটচাষিদের অর্থ সংকট লাঘবে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, বিক্রয়ের সঙ্গে সঙ্গে পাটচাষিরা অর্থ পেয়ে যান-এসব বিষয় পাটনীতিতে স্পষ্ট করে তুলে ধরা হচ্ছে।

বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান, আইভোরি কোস্ট, ব্রাজিল, ইথিওপিয়া, জার্মানি, স্পেন, ইংল্যান্ড, মিসর, চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। দেশের ভেতরেও পাটজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে বেসরকারি পাটকলগুলো। তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি এ খাতে সমস্যাও কম নেই।

উন্নত জাতের বীজ, আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, দক্ষ শ্রমিক, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ ও বিপণন কৌশলের অভাব রয়েছে পাটশিল্পে। সহযোগিতাও নেই পাট গবেষণায়। এসব দিকে এখনই নজর না দিলে বিশ্ববাজারে অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য গুরুত্ব দিতে হবে বীজ উৎপাদনে। কারণ মানসম্মত বীজের অভাব রয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে সাড়ে ১২শ টন উৎপাদন হলেও পাটবীজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় পাঁচ হাজার টন। ফলে ভারত বা চীন থেকে প্রতি বছর বীজ আমদানিতে চলে যাচ্ছে বড় অঙ্কের অর্থ। তবে পাট খাতে সরকারি বিনিয়োগে অসন্তোষ অবস্থানে রয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

এ সংস্থার মতে, অদক্ষতা, লুটপাট, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে লোকসানি মিলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে নতুন করে পাটের পুনর্জাগরণের ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অর্থনীতি

করোনা পরবর্তী অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার সম্ভাব্য বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা।

রোববার (১৭ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম এবং বর্তমান সরকারের টানা ১৪তম এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট। আসন্ন বাজেটে প্রাক্কলিত জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি
আগামী বাজেটে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রাক্কলন করা হযেছে। চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

রাজস্ব আদায়
আগামী অর্থবছরে সম্ভাব্য রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছর মোট আয় ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। ফলে আগামী বাজেটে মোট আয় বাড়ছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি জিডিপির প্রায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে।

এছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে এনবিআর বর্হিভূত খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত রাজস্ব ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটের ঘাটতি
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সে হিসাবে বাজেট ঘাটতি বাড়ছে ২৮ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

অর্থনীতি

রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থের বড় একটি অংশ উদ্ধারে নিউ ইয়র্কের আদালতে দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংক হেরে গেছে বলে ফিলিপাইনের সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

নিউ ইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট রায়ে ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার নেই’ উল্লেখ করে তিন বছর আগে করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এ মামলা খারিজ করে দিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে সাইবার হ্যাংকিংয়ের চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ২০‌১৯ সালে এ মামলায় পক্ষভুক্ত ফিলিপাইনের একটি ক্যাসিনো মালিকের প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে দেশটির এনকোয়ারার ও ফিলস্টার সোমবার এ খবর প্রকাশ করেছে।

নিউ ইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট গত ৮ এপ্রিল এ রায় দেয় বলে ব্লুমবেরি রিসোর্টু কর্প সোমবার ফিলিপাইন স্টক এক্সচেঞ্জকে (পিএসই) অবহিত করেছে। সেখানে ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ারের অভাবে’ বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা বাতিল করে দিয়েছে নিউ ইয়র্কের আদালত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখের মধ্যে ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধারের জন্য ২০২০ সালে এ মামলা করেছিল বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ মামলায় সোলারি রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনো ও ম্যানিলা বে পরিচালনাকারী ব্লুমবেরি রিসোর্টু কর্প, রিজার্ভ চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্প (আরসিবিসি) এবং ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে নিউ ইয়র্কের আদালতে মামলা করেছিল।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে।

রিজল ব্যাংকের এই শাখার মাধ্যমে লেনদেন হয় বাংলাদেশের রিজার্ভেররিজল ব্যাংকের এই শাখার মাধ্যমে লেনদেন হয় বাংলাদেশের রিজার্ভেরওই অর্থ স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধারের বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও কোনো হদিস মেলেনি।

রিজার্ভ চুরির তিন বছরের মাথায় ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মামলা পরিচলানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ল ফার্ম কোজেন ও’কনরকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা, ক্ষতিপূরণ ও আদায়ে এ মামলা দায়ের করেছিল বলে ২০১৯ সালের অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই সময় মামলা নিষ্প‌ত্তিতে তিন বছরের মত সময় লাগতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি।

আজমালুল হোসেন জানান, মামলার ১০৩ পৃষ্ঠার এজাহারে ১৫ জন ব্যক্তি ও সাতটি প্রতিষ্ঠানকে এ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ জনকে রাখা হয়েছে বিবাদীর তালিকায়।

এর আগে রয়টার্স জানিয়েছিল, ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) এবং ওই ব্যাংকের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ডজনখানেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে মামলার এজাহারে।

কয়েক বছর ধরে ‘জটিল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে’ আসামিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে।

তিন বছর পরই গত ৮ এপ্রিল এ রায় হয় বলে জানায় এনকোয়ারার ডটকম। সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, আরসিবিসি ব্যাংকসহ ফিলিপাইনের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে দায়ের করা এ মামলায় অর্থ সরিয়ে নেওয়া/চুরি/অপব্যবহার, ষড়যন্ত্র ও প্রতারণায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

এর আগে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপিন্সের পক্ষ থেকে তাদের দেশের আদালতে একটি মামলা করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ওই মামলার রায়ে আরসিবিসির শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগিতোকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলাতেও তাকে আসামি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ২০১৬ সালে মতিঝিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে যে মামলাটি করা হয়েছিল, সেখানে সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।

তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ আদালতে এখনও প্রতিবেদন দিতে পারেনি।

অর্থনীতি

সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার পরও দেশ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পাচার কোনোভাবেই থামছে না। মোট অর্থ পাচারের ৮০ ভাগই হচ্ছে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে। পাচার রোধে দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) রাষ্ট্রীয় সাতটি সংস্থা কাজ করছে। কিন্তু আসছে না কোনো কার্যকর ফল। পাচার বন্ধ না হওয়ার নেপথ্যে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতাসহ ১১ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্পদ পুনরুদ্ধার অর্থাৎ বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরতের ক্ষেত্রেও ৪টি প্রতিবন্ধকতা শনাক্ত হয়েছে।

দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন (২০২০ ও ২০২১) উঠে এসেছে এসব তথ্য। সম্প্রতি এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হয়। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ বছরে দেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। প্রতি ডলার ৮৮ টাকা হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় ৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি। এ হিসাবে গড়ে প্রতি বছর পাচার হচ্ছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

দুদকের প্রতিবেদনে অর্থ পাচারের কারণ ও প্রতিকার এবং পাচারকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারে সীমাবদ্ধতা ও করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে দুদককে আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান  বলেন, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কার্যক্রমের পরিধি বিস্তৃত। তবে মানি লন্ডারিং কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় বাধা হলো সমন্বয়হীনতা। দুদক ছাড়াও আরও ছয়টি সংস্থা এ আইন প্রয়োগের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। কিন্তু কোনো সংস্থার সঙ্গেই কোনো রকম সমন্বয় নেই। যখন কোনো দায়িত্ব সবাইকেই দেওয়া হয়, তখন মূলত কোনো দায়িত্বই কাউকে দেওয়া হয় না। যখন সবাই অর্থ পাচার প্রতিরোধে কাজ করে, তখন মূলত কেউই সঠিকভাবে কাজ করে না বা করতে পারে না। বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা সংশোধনের জন্য ইতোমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অর্থ পাচার প্রতিরোধ অন্যান্য সংস্থাগুলোও কাজ করবে। তবে অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি দুদককে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দিলে কাজে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সৃষ্টি হবে। অর্থ পাচার ঠেকানো ও পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত কার্যক্রমে গতি ফিরবে।

জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই অর্থ পাচারের অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো সংস্থাগুলো করে থাকে। বাংলাদেশেও এক্ষেত্রে (অর্থ পাচার প্রতিরোধ) সফলতা পেতে চাইলে দুদককে ক্ষমতা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দুদক কাজ করবে। এছাড়া অর্থ পাচারের কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে হবে। একইসঙ্গে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরতের ক্ষেত্রেও যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

অর্থ পাচার ঠেকাতে ৭ সংস্থা : বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডি), মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কাস্টমস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও দুদক অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বিদ্যমান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২৭টি সম্পৃক্ত অপরাধের মধ্যে দুদক শুধু ‘ঘুস ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অর্থের মানি লন্ডারিংয়ের অনুসন্ধান ও তদন্ত করছে। বাকি ২৬টি সম্পৃক্ত অপরাধের তদন্তভার সিআইডি ও এনবিআরসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর কাছে ন্যস্ত। দুদকের এ আইনি সমস্যার সমাধানে ১৭ ফেব্রুয়ারি দুদক সচিব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ সংশোধনের কথা বলা হয়েছে।

অর্থ পাচারের কারণ ও প্রতিকার : বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় অর্থ পাচার ঠেকানো ও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিরোধ না হওয়ার পেছনে অন্তত ১১টি উল্লেখযোগ্য কারণ পাওয়া যায়। দেশে আইন থাকলেও এসব কারণেই মূলত এর সুফল জনগণ পাচ্ছে না। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থ পাচার প্রতিরোধ না হওয়ার কারণগুলো হলো-১. দুদকসহ অন্য সাতটি সংস্থার বিদ্যমান ব্যবস্থায় অনুসন্ধান বা তদন্তকারী কর্মকর্তার দ্বারা সার্ভিলেন্স পরিচালনা ও আন্ডারকভার অপারেশনের কোনো বিধান বা ব্যবস্থা নেই। এর সমাধানে প্রো-অ্যাক্টিভ অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ২. মানি লন্ডারিং ও আর্থিক অপরাধ উদ্ঘাটনের ক্ষেত্রে ফরেনসিক অ্যাকাউন্টিং টেকনিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংস্থাগুলোতে ফরেনসিক অ্যাকাউন্টিং টেকনিক অবশ্যকীয়ভাবে ব্যবহার করতে হবে। ৩. দুদকসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোতে মূলত রিঅ্যাক্টিভ অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আন্ডারকভার অপারেশন পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়ন ও বিশেষায়িত লোকবল নিযুক্ত করতে হবে। ৪. ক্রস-বর্ডার অপরাধের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য দুদকসহ অন্যান্য সংস্থা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউর ওপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ পেতে গ্লোব নেটওয়ার্ক বা এন্টি করাপশন এজেন্সিগুলো নিয়ে গঠিত আঞ্চলিত প্লাটফরমে বাংলাদেশকে অবশ্যই সংযুক্ত হতে হবে। ৫. মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় কৌশলপত্রের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পলিসি ও গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে। ৬. মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) প্রণয়ন ও প্রেরণ, বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন, এপিজির সঙ্গে যোগাযোগ, মিউচ্যুয়াল ইভ্যালুয়েশনের জন্য ডকুমেন্ট তৈরি, প্রস্তুতি গ্রহণ ইত্যাদি কাজের জন্য বিদ্যমান অর্গানোগ্রামে নেই ডেডিকেটেট শাখা বা ডেস্ক নেই। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ লোকবল নিয়োগ করে মানি লন্ডারিং অনুবিভাগে পৃথক ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। ৭. বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকে, সেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি না থাকায় শুধু ইউনাইটেড ন্যাশন কনভেনশন এগেইনস্ট করাপশনের (আনকাক) আওতায় তথ্য বা সাক্ষ্য-প্রমাণ কিংবা সম্পদ পুনরুদ্ধারে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আইনি সহযোগিতা চুক্তি করতে হবে। ৮. বিদ্যমান অনুসন্ধান ও তদন্তের সংখ্যার বিপরীতে কর্মরত তদন্তকারী কর্মকর্তার সংখ্যা অপ্রতুল। এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং, ব্যাংক ও বিমা সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান ও তদন্ত, ফরেনসিক অ্যাকাউন্টিং, ডিজিটাল ফরেনসিক, সার্ভিলেন্স ও আন্ডারকভার বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও স্টাডি ট্যুরের আয়োজন করতে হবে। ৯. এমএলএআর প্রেরণ পরবর্তী কার্যক্রমের কোনো আপডেট তথ্য থাকে না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে পাঠানো এমএলএআরের সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করা এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দুদক, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সমন্বয় সভা করতে হবে। ১০. অনুসন্ধান/তদন্তকারী কর্মকর্তার নামে ডোমেইন সংবলিত ইমেইল (অফিসিয়াল) না থাকায় বিদেশি এজেন্সি বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা। এক্ষেত্রে সব অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের স্ব স্ব নামে ডোমেইন সংবলিত অফিসিয়াল ইমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। ১১. তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে সর্বোপরি দুর্নীতি প্রতিরোধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে যোগদান করতে হবে।

সম্পদ পুনরুদ্ধারে বাধা ও করণীয় : কমিশনের কর্মপরিকল্পনার মধ্যে সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিশনের সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বড় ৪টি বাধা রয়েছে। এগুলো হলো-১. বিদেশে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে দুদকের আইনি সীমাবদ্ধতা। অর্থ পাচার রোধ ও বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে দুদকের অগ্রণী ভূমিকা দেখতে চাইলে দুদককে পর্যাপ্ত আইনি ক্ষমতা দিতে হবে। ২. বিদেশ থেকে অর্থ ফেরতের সার্বিক প্রক্রিয়া জটিল ও সময় সাপেক্ষ। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের দুর্নীতি দমন সংস্থার সঙ্গে দুদকের এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা চুক্তি করতে হবে। ৩. বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরতে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংশ্লিষ্ট দেশের আইনি সহায়তা। এজন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করার জন্য দুদক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডেডিকেটিড লোকবল নিয়োগ করে দেশ-বিদেশে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. অর্থ পাচারের অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার ও আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।