অর্থনীতি

কাস্টমারের দেনা-পাওনাসহ সার্বিক তথ্য দেওয়ার জন্য ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় বেধে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার (১১ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, আমরা ইভ্যালিকে চিঠি দিয়েছিলাম ১৯ জুলাই। তারপরে তারা ৩১ তারিখ জবাব দিয়ে চিঠি দিয়েছে, এতে সেখানে ১২ দিন সময় চলে গেছে। এখন এই মাসে আরও ১১ দিন গেছে। আজ আমরা বৈঠকে সব কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, তিন সপ্তাহের তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে প্রথমে সম্পদ এবং দায় সম্পর্কিত তথ্য, গ্রাহকদের দেনা-পাওনার তথ্যের জন্য ৭ দিনের মতো হতে পারে এবং মার্চেন্টদের তথ্য দেয়ার জন্য তিন সপ্তাহ হতে পারে।

তিনি বলেন, ইভ্যালি দেনা কীভাবে পূরণ করবে, কাস্টমারের দেনা কীভাবে পরিশোধ করবে সেটির বিষয়ে জানতে চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। সে বিষয়ে ০১ আগস্ট তারিখ তাদের চিঠি রিসিভ করেছি। তাদের তথ্য তৈরি করতে ৬ মাস সময় লাগবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তারা বলেছে, এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের চুক্তি করেছে। এরমধ্যে ২০০ কোটি টাকা পেয়েছে।

তাদের দাবি অনুযায়ী, ৬ মাসের মধ্যে নিয়মিত তারা পণ্য ডেলিভারি দেবে বলে জানিয়েছে। তারা ১৫ দিন অন্তর অন্তর তথ্য জানাবে। তবে তারা বলছে, ৬ মাসের মধ্যে থার্ড পার্টি দিয়ে অডিট করে রিপোর্ট দেবে।

এর আগে গত রবিবার (৮ আগস্ট) ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মো. হাফিজুর রহমানকে প্রধান করে ৯ সদস্যের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা কমিটিতে থাকছেন। এ ছাড়া থাকছেন কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজীব উল আলম। কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে ইভ্যালির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা এবং বিবিধ।

ইভ্যালির কার্যক্রম নিয়ে গত ১৯ জুলাই কারণ দর্শানেরা নোটিশ প্রদান করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পর ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে আবেদন করে। ওই নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ কেন? বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে থাকলে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, না থাকলে দিতে হবে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা। ইভ্যালি কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপূর্ণ জবাব দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে ১ আগস্ট আবেদন করে।

অর্থনীতি

আজ জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুজাতিক কোম্পানি শেল অয়েলের কাছ থেকে তিতাস, রশিদপুর, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্র কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১০ সালের ১২ আগস্ট এক পরিপত্রে ৯ আগস্টকে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে : নসরুল হামিদএ উপলক্ষে গতকাল রবিবার ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ ম্যাগাজিন ‘বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি কৌশল ও আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয় করে বঙ্গবন্ধু জ্বালানি নিরাপত্তার যে ভিত্তি রচনা করেছিলেন, তা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। টেকসই জ্বালানিব্যবস্থা গড়ার নেপথ্যের কাজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। চাহিদা মোতাবেক তেল-গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। আবাসিক ব্যবহারের জন্য এলপিজি সহজলভ্য করার উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।

এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অর্থনীতি

করোনায় ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করার জায়গা নেই বল্লেই চলে। এর সঙ্গে সরকারঘোষিত প্রণোদনার টাকা যুক্ত হয়েছে ব্যাংকে। অন্যদিকে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণও বাড়ছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পাহাড় জমে গেছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে।

ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা এ অতিরিক্ত তারল্য তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী সোমবার থেকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’-এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সে উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’-এ অংশগ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, মুদ্রাবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে এ বিল বিক্রি করে বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা তুলে নেবে। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো মুনাফা পাবে। তবে এর মাধ্যমে ঠিক কত টাকা তুলে নেওয়া হবে, তা এখনো নির্ধারণ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ০৯ আগস্ট সোমবার ৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত হবে। এ নিলামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশে নিবাসী সব ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বিড দাখিল করতে পারবেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাব পরিচালনাকারী যে কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব বা তাদের ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের পক্ষে বিড দাখিল করতে পারবেন।

এতে আরও বলা হয়, প্রতি ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের জন্য ডিস্কাউন্টে বিলের প্রস্তাবিত ক্রয়মূল্য উল্লেখসহ মোট অভিহিত মূল্য উদ্ধৃত করে ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় বেলা সাড়ে ১২ টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত এমআই মডিউলে বিড দাখিল করতে হবে। একই দিনে নিলাম অনুষ্ঠিত হবে এবং বেলা ২টার মধ্যে ঘোষণা করা হবে। নিলামে অংশগ্রহণের বিশদ পদ্ধতিগত নির্দেশনা ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পত্রযোগে জানানো হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ সর্বশেষ ব্যাংকগুলো থেকে এভাবে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। এর আগে ২৯ জুলাই চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, অতিরিক্ত তারল্য আর্থিক খাতে বুদ্বুদ তৈরি করলে তা তুলে নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অতিরিক্ত তারল্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বা সম্পদের দাম বেড়ে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতি গ্রহণে দ্বিধা করবে না।

এ ছাড়া করোনার মধ্যে প্রবাসী আয় অনেকটা বেড়েছে। ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে। এতে ব্যাংকগুলোতে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা জমা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা একেবারেই অলস। বাকি টাকায় কেনা হয়েছে বিভিন্ন বিল ও বন্ড। অনেক ব্যাংক অলস টাকার অপব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে একবারে অলস পড়ে আছে ৬২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অলস এ অর্থের বিপরীতে কোনো সুদ পায় না ব্যাংক। এতে করে অধিকাংশ ব্যাংক এখন আমানত নিতে অনীহা দেখাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর বাজারে তারল্য বাড়াতে নানা নীতিসহায়তা দিলেও ঋণ চাহিদা বাড়েনি। যে কারণে অলস অর্থ বাড়ছে।

সাধারণভাবে নগদ জমার হার (সিআরআর) সংরক্ষণের পর ব্যাংকগুলোর ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা অলস থাকে। তবে করোনা শুরুর পর ২০২০ সালের জুন শেষে তা ২৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা হয়।

সম্প্রতি ঘোষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিআরআরের অতিরিক্ত রিজার্ভ গত এক বছরে প্রায় তিনগুণ বেড়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। উদ্বৃত্ত তারল্যের পরিমাণ গত বছরের জুনের তুলনায় প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যাংকের মোট দায়ের একটি অংশ বিধিবদ্ধ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। এর মধ্যে বর্তমানে নগদে রাখতে হয় সাড়ে ৪ শতাংশ, যা সিআরআর হিসেবে বিবেচিত। করোনা শুরুর আগে গত বছরও সাড়ে ৫ শতাংশ সিআরআর রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে বিভিন্ন বিল ও বন্ডের বিপরীতে বিধিবদ্ধ তারল্য বা এসএলআর রাখতে হচ্ছে আগের মতোই ১৩ শতাংশ।

উদ্বৃত্ত তারল্যের মধ্যে সিআরআরে থাকা অলস অংশ বাদে বাকি অর্থ ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ হিসেবে থাকে। এ টাকা সরকারকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়। ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অর্থ থাকায় সুদহার অনেক কমেছে। আমানতের গড় সুদহার নেমেছে ৪ দশমিক ১৩ শতাংশে। ঋণের গড় সুদহার ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশে নেমেছে।

অর্থনীতি

করোনা মহামারির প্রভাবে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জুন-জুলাই মাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। অথচ গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

বৃহস্পতিবা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০১৯-২০ অর্থবছরের দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি প্রকাশ করে। সেখান থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

বিবিএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে জুন-জুলাই মাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ফলে করোনা সংকটে এক বছরেই প্রবৃদ্ধি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।

২৩ জুলাই ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত এশিয়ার অর্থনীতির ওপর সম্পূরক পূর্বাভাসে এডিবি বলেছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গত এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। সম্পূরক পূর্বাভাসে এশিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাসের কারণ মূলত ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস।

মূলত এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ধারাবাহিকভাবে সেবা ও কৃষি খাতের অবদান কমছে। গত এক দশকে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। আর সেবা খাতের অবদান কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ।

তবে জিডিপিতে বেড়েছে শিল্প খাতের অবদান প্রায় ৮ শতাংশ। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন- কৃষি খাতের অবদান প্রবৃদ্ধিতে বেড়েছে, কমেছে সেবা ও শিল্পখাতের অবদান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব

বিবিএস মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। আমরা সবাই জানি সব খাতেই করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মূলত জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে।

বিবিএস প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চূড়ান্তভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে কৃষিখাতে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছরে যা ছিল ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ফলে করোনা সংকটেও অর্থনীতির চাকা সচল ছিল কৃষিখাতে। করোনা সংকটের মধ্যে দেশকে মূলত বাঁচিয়ে রেখেছিল কৃষিখাত। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ দশমিক ০২ শতাংশ। খাদ্য শষ্য, প্রাণিজ ও বনজ সম্পদ আহরণ ঠিক ছিল করোনা সংকটেও। কৃষির উপখাতে মৎস্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধির ধস দেখা গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, অথচ গত অর্থবছরে যা ছিল ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

সেবাখাতেও বড় ধাক্কা লেগেছে প্রবৃদ্ধিতে। এই খাতে প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যা ছিল ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

অর্থনীতি

১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১০৪তম ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১ আগস্ট) ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিসের সম্মেলন কক্ষে এ ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

ছয় লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার বিজয়ীর নম্বর ০২১৮৪০৭। এছাড়া ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার দ্বিতীয় পুরস্কারের নম্বর ০৫৫১৯৮৫; এক লাখ টাকা করে তৃতীয় পুরস্কারের নম্বর ০৩৮৪৪৫৪ ও ০৯২৪১৩১ এবং প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা করে দুটি চতুর্থ পুরস্কারের বিজয়ীর নম্বর ০২৭৬০৫৮ ও ০৯৫৫৮৪৮।

একক সাধারণ পদ্ধতিতে (অর্থাৎ প্রত্যেক সিরিজের জন্য একই নম্বর) এই ‘ড্র’ পরিচালিত হয় এবং বর্তমানে প্রচলনযোগ্য ১০০ (একশত) টাকা মূল্যমানের ৬৫টি (পঁয়ষট্টি) সিরিজ যথা- কক, কখ, কগ, কঘ, কঙ, কচ, কছ, কজ, কঝ, কঞ, কট, কঠ, কড, কঢ, কথ, কদ, কন, কপ, কফ, কব, কম, কল, কশ, কষ, কস, কহ, খক, খখ, খগ, খঘ, খঙ, খচ, খছ, খজ, খঝ, খঞ, খট, খঠ, খড,
খঢ, খথ, খদ, খন, খপ, খফ, খব, খম, খল, খশ, খষ, খস, খহ, গক, গখ, গগ, গঘ, গঙ, গচ, গছ, গজ, গঝ, গঞ, গট, গঠ এবং গড এই ‘ড্র’-এর আওতাভুক্ত।

উপরোক্ত সিরিজগুলোর অন্তর্ভুক্ত ৪৬টি সাধারণ সংখ্যা পুরস্কারের যোগ্য বলে ঘোষিত হয়। নিম্নে বর্ণিত সংখ্যার বন্ডগুলো সাধারণভাবে প্রতিটি সিরিজের ক্ষেত্রে পুরস্কারের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

৫ম পুরস্কার প্রতিটি ১০,০০০ টাকার বিজয়ী প্রতিটি সিরিজের ৪০টি নম্বর হলো: ০০০৪৮৮৩, ০১৬৪৮৪৪, ০৪৬৮২৪৬, ০৭০৪৯৩৭, ০৮৬৭৬৮৬, ০০১৪৪৫৭, ০২১৮২৯৮, ০৪৮২২৪৬, ০৭৪০৫৯৬, ০৮৯৮৮৮৬, ০০৩৫৮০৭, ০২৫৯৮৫৮, ০৪৯৫১৫১, ০৭৪৫০৭৬, ০৯৩০২৯৯, ০০৮০২১৭, ০২৯৩৪৩৪, ০৫৩২৭৬১, ০৭৯৫১২৩, ০৯৩৯২৮৬, ০১০৮৬১৮, ০২৯৩৯৩৮, ০৫৪৭৯২২, ০৮০৭৬৯৫, ০৯৫৫৭১২, ০১৩৫৩৯৬, ০২৯৮৩৪২, ০৬২৪৭০৮, ০৮৩৭৬২১, ০৯৬৮৫৮৭, ০১৬২৪২৬, ০৩৭২৯৫৬, ০৬৪৮৯৯৮, ০৮৫৩৬৮৫, ০৯৭৭২৬৭, ০১৬২৭০৬, ০৪২১৩৬৭, ০৬৫৮৪৮৪, ০৮৬০৬৯৬ ও ০৯৮৬৪৪৪।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে, বিশেষ করে অফশোর তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।

শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে এক্সনমোবিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান বলে দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, উপদেষ্টা বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য স্টোরেজ সুবিধা নির্মাণে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জ্বালানি উৎসের সুষম ব্যবহার বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

“উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে এক্সনমোবিলের মত কোম্পানিগুলো, যারা বাংলাদেশে এলএনজি ব্যবসা করতে আগ্রহী, দামের অস্থিরতার ক্ষেত্রে তাদের হেজিংয়ের গ্যারান্টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি এক্সনমোবিলকে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান ত্বরান্বিত করতে এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক এবং স্থলভিত্তিক ফ্যাসিলিটি নির্মাণে বিনিয়োগ করতে বলেন।”

বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা নিশ্চিত করতে এক্সনমোবিল ‘কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ’ করেছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম সহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ও এক্সনমোবিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা তৌফিক-ই- এলাহী চৌধুরীর উপস্থিতিতে পরে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড এবং কমনওয়েলথ এলএনজির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান জ্বালানি সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এ ধরনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এর আগে ২৯ জুলাই সকালে উপদেষ্টা ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

অর্থনীতি

ঢাকার হারানো ঐতিহ্য মসলিনের দিন ফেরাতে ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মসলিনের বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুটো ফাইবার গ্লাস ইন্ড্রাস্ট্রিজের জমিতে এই ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় মন্ত্রী এ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন বলে সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।

মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার প্রকল্প এবার সরকারের জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে। এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের জন্যই বৃহস্পতিবারের সভার আয়োজন করা হয়।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, মসলিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল সংখ্যক লোকের, বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

শিগগিরই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকায় আবার মসলিনকে যুক্ত করার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ঢাকাই মসলিন রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

“অচিরেই বাংলাদেশের অন্যতম ব্র্যান্ডিং হবে ‘ঢাকাই মসলিন’। সোনালী ঐতিহ্যের ঢাকাই মসলিন আবারও মাতাবে বিশ্ব।”

গবেষকদের মতে, আড়াইশ কাউন্টের (২৫০ মিটার সুতার ওজন হবে ১ গ্রাম) চেয়ে মিহি সাদা সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হত শত বছর আগে। রাজ পরিবারের মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে থাকা এই শাড়ি বোনা হতো কার্পাসের সুতায়।

সেজন্য এক সময় বৃহত্তর ঢাকার মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীর সংলগ্ন অঞ্চলে হতো ফুটি কার্পাসের চাষ। সেই সুতা তৈরি হত নদীতে নৌকায় বসে, আর্দ্র পরিবেশে।

ব্রিটিশ শাসনামলে কল-কারখানা থেকে সাশ্রয়ী কাপড় আসায় একসময় হারিয়ে যায় দীর্ঘ সময় নিয়ে মসলিন তৈরির তাঁত ও সুতা।

সেই সুতা ফিরিয়ে আনতে সরকার ১২৪০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় ২০১৬ সালে।

কথিত আছে, ৮০০ কাউন্টের সুতায় বোনা পুরো একটি মসলিন শাড়ি একটি ম্যাচের বাক্সে ভরে ফেলা যেত।

ইতিহাসের বইয়ে সর্বোচ্চ ১২০০ কাউন্টের সুতার মসলিনের কথা আছে এবং সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ ধরনের মসলিন ঢাকায় তৈরি হত এক সময়।

রূপগঞ্জের এক কারিগরের বানানো ৩০০ কাউন্টের সুতার দুটি শাড়ি ২০১৬ সালে জাতীয় যাদুঘরে প্রদর্শন করা হয়। বারো হাত ও সাড়ে বারো হাত দৈর্ঘ্যের শাড়ি দুটির বেড় ছিল ৪৭ ইঞ্চি।

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, “বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য ও বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধার করে হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাপক অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে মসলিনের কাঁচামাল ফুটি কার্পাস খুঁজে বের করা, ফুটি কার্পাসের চাষাবাদ, সুতা উৎপাদন, কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়ন করে উন্নতমানের মসলিন উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।”

গত ১৭ জুন শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) ঢাকাই মসলিনকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জিআই নিবন্ধন সনদ দেয়।

অর্থনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশে সক্ষম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই ধরনের অংশীদারিত্বের জন্য ওষুধ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত রয়েছে।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে এক বৈঠকে রহমান এই আহবান জানান।

আজ এখানে এক তথ্যবিবরণীতে এ কথা বলা হয়।

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, পিপিই’র পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং ওষুধ উৎপাদন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তাদের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেবে।

তিনি কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কোভ্যাক্স ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ৫৫ লাখের অধিক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য মার্কিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

মহামারির শুরু থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দুই দেশ দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা কথা স্মরণ করে রহমান ভাইরাস মোকাবিলায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য মহামারি ব্যবস্থাপনা সরঞ্জামের বিশ্বব্যাপী উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-মার্কিন অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের প্রথম বৈঠকের ফলো-আপ ছিল এই বৈঠক।

জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির উপর কোভিড-১৯ মহামারির বিরূপ প্রভাব নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

ফলো-আপ বৈঠকে অংশগ্রহনকারীরা দুই দেশের মধ্যে চলমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ২০২০ সালের অংশীদারিত্ব বৈঠকের চিহ্নিত সহযোগিতার অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

দুটি বন্ধুত্বপ্রতীম সরকারের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরো গভীর করার জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এবং এর বাইরেও সম্পৃক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তারা।

এসময় তারা শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক বিমান চলাচল পুনরায় চালু সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা আরো উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন উপদেষ্টা।

বার্নিকাট এই খাতে বাংলাদেশের নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং আরো অগ্রগতির জন্য সহায়তার প্রস্তাব দেন।

যুক্তরাষ্ট্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে।

উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে যে, ২০২০ সালের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠক দুই দেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতাকে জোরদার করেছে এবং এ বছরের শেষের দিকে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।

বৈঠকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এখন রাজধানীর বনানী এলাকায় নিজ বাসভবনে থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

চলতি মাসে করোনার কিছু উপসর্গ দেখাসহ শারীরিকভাবে অসুস্থতাবোধ করেছিলেন তিনি। পরে ২৫ জুলাই (রোববার) করোনার নমুনা দেন তিনি। করোনার নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে পজিটিভ আসে তার। একইসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার বড় ছেলে শাহেদ মুহিতও। তার শারীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভালো।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সাবেক অর্থমন্ত্রীর বাসার কেয়ারটেকার বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় প্রথমে গুলশান স্কয়ার হাসপাতাল পরে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয় স্যারকে। এখন সুস্থতাবোধ করায় তিনি বাসভবন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে তার ছোট ভাই পল্লি শিশু ফাউন্ডেশন ও ঢাকা ডেল্টা হসপিটাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান এ এস এ মুয়িয সুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে আবুল মাল আবদুল মুহিতের সুস্থতার জন্য সিলেটসহ দেশ-বিদেশের সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।

অর্থনীতি

গবেষণা, উদ্ভাবন ও জ্ঞানবিনিময়ের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে অফিস কক্ষ থেকে ভার্চ্যুয়ালি ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী জাতিসংঘের ফুড সিস্টেম প্রিসামিটের ‘খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরে বিজ্ঞানের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো’ শীর্ষক সেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।

ধানের জাত উদ্ভাবনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি ১০০টিরও বেশি ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে ২৬টি জাত বন্যা, খরা, লবণাক্ততাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সহিষ্ণু। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বিনা ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারিও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সহিষ্ণু ধান ও অন্যান্য ফসলের বেশকিছু জাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া দেশের বিজ্ঞানীরা বিশ্বে প্রথম জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।

ইরি, সিমিট, ওয়ার্ল্ডফিশ, ইফরি, সিআইপিসহ সিজিআইএআরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ গত ৫০ বছর ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, চলমান কোভিডসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মিলিত সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানো ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক কৃষিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত সংগঠন-সিজিআইএআর ও আন্তর্জাতিক কৃষক সংগঠন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

জাতিসংঘের ফুড সিস্টেম সামিটে সিজিআইএআরের বিশেষ প্রতিনিধি কানায়ো এনওয়ানজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইথিওপিয়ার কৃষি প্রতিমন্ত্রী ফিকরু রিগাসা, মেক্সিকোর কৃষিমন্ত্রী ভিক্টর ভিল্লালোবোস, সিজিআইএআরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্লদিয়া সাদোফ, আন্তর্জাতিক কৃষক সংগঠনের মহাসচিব অ্যারিয়ানা জিওলিওদোরি, ২০২১ সালের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ বিজয়ী শকুন্তলা থিলস্টেড প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের ‘ফুড সামিট ২০২১’ কে সামনে রেখে এ প্রাক-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৪৫টির বেশি দেশ এতে অংশগ্রহণ করছে। সম্মেলনটি শেষ হবে আগামী ২৮ জুলাই।