অর্থনীতি

অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।

মঙ্গলবার (২৮ মে) কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দুদক থেকে জানা গেছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য বেনজীর আহমেদকে আগামী ৬ জুন তলব করেছে অনুসন্ধানকারী টিম। একই অভিযোগে তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে ৯ জুন তলব করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে দুদক তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরেই সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানকারী দলের পক্ষ থেকে এই তলবি নোটিশ পাঠানো হয়।

গত ১৮ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। ইতোমধ্যে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা দুইশ শতাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া স্ত্রী-সন্তানসহ বেনজীরের বিও হিসাবও অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিমে রয়েছেন উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।

গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ঢাকায় বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক আইজিপি ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

অর্থনীতি

আইএমএফ-এর শর্ত পূরণে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটে খাদ্য সহায়তা ভর্তুকি কমছে। অর্থাৎ খোলাবাজারে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির ভর্তুকি চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। অপরদিকে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খাদ্য আমদানি খাতে সরকারি ব্যয়ে বড় উল্লম্ফন ঘটছে। চাল ও গম আমদানিতে আগামী অর্থবছরে পৌনে ১৩শ কোটি টাকা বেশি গুনতে হবে। সবমিলিয়ে ব্যয় পরিচালন করতে আগামী বাজেটে খাদ্য খাতে সম্ভাব্য বরাদ্দ থাকছে ২২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এটি চলতি বাজেটের চেয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বেশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

ওএমএসসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে ভর্তুকি কমিয়ে আনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে নতুন করে অনেক মানুষ গরিব হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্যে ভর্তুকি বাড়ানো দরকার ছিল। ডব্লিউএফপি (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি) গত মাসে বাংলাদেশের খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল; যা এর আগের মাসের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।

৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি তার প্রথম বাজেট। সংকট পরিস্থিতিতে নতুন বাজেটে প্রাধান্য পাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। সে হিসাবে খাদ্য সংগ্রহ ও মজুত খাতে বরাদ্দকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন কম হওয়ায় বিদেশ থেকে চাল ও গম আমদানিও প্রাধান্য পাচ্ছে।

প্রতিবছর সরকার ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে চাল গরিব মানুষের কাছে বিক্রির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে আসছে। চলতি বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৮ কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয় ৫ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। মূল্যস্ফীতির হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসাবে দরিদ্র মানুষের মধ্যে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা বৃদ্ধি করা হয়। মূল্যস্ফীতি এখন ৯ শতাংশের ওপরে আছে। সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর হিসাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১৫ শতাংশের ওপরে। সে হিসাবে আগামী বাজেটে খাদ্য ভর্তুকির অঙ্ক আরও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। কিন্তু সম্ভাব্য ভর্তুকি বরাদ্দ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের খাদ্য ভর্তুকির চেয়ে ৩২২ কোটি টাকা কমিয়ে আগামী বাজেটে ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে। মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের যে ঋণ দিয়েছে, তার অনেক শর্তের মধ্যে একটি হলো ভর্তুকি ব্যয় হ্রাস করা। সে শর্ত পালন করতে গিয়ে সরকার খাদ্য ভর্তুকিতে হাত দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, খাদ্য ভর্তুকি কমানোর সিদ্ধান্ত সঠিক হচ্ছে না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি আরও বাড়ানো দরকার। এ ভর্তুকি গরিব মানুষ পাচ্ছে। মূল্যস্ফীতির কারণে এ শ্রেণির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আমি এ উদ্যোগ সমর্থন করি না।

সূত্রমতে, প্রতিবছর চাল ও গমের চাহিদার একটি অংশ সরকার বিদেশ থেকে আমদানি করে। আগামী অর্থবছরে ১১ থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও গম আমদানির লক্ষ্য রয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এ সময়ে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির বড় প্রভাব পড়েছে খাদ্য আমদানি ব্যয়ে। চলতি বাজেট প্রণয়নের সময় প্রতি ডলারের মূল্য ১১০ টাকা ধরে সব ধরনের ব্যয়ের হিসাব করা হয়। এখন সে ডলারের মূল্য ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে চলতি অর্থবছরের সংশোধনী এবং আগামী অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় আগামী অর্থবছর চাল ও গম আমদানি খাতে ব্যয় পৌনে ১৩শ কোটি টাকা বেড়ে ৫ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকায় উঠেছে। এর মধ্যে চাল আমদানিতে ২ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা এবং গমে ২ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। এছাড়া আসন্ন বোরো মৌসুমে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টন ধান, চাল ও গম সংগ্রহ করবে সরকার। এর মধ্যে ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান, ৪৫ টাকা কেজি দরে ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৪৪ টাকায় আতপ চাল ১ লাখ টন এবং ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন গম সংগ্রহ করা হবে। আগামী বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে চাল খাতে ৮ হাজার ৭০৬ কোটি এবং গম কিনতে ব্যয় হবে ৩৬ কোটি টাকা। যদিও বর্তমানে ধান ও চালের মজুত আছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, জুনে সংগ্রহ অভিযান শুরু হলে মজুত আরও বাড়বে।

আগামী বাজেটে অন্যান্য আনুষঙ্গিক, বিশেষ করে চাল বহনে বস্তা ক্রয়, পরিবহণ, খাদ্য খালাসসহ অন্যান্য ব্যয় খাতে ১ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অর্থনীতি

হবিগঞ্জে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোসহ বিদ্যুৎ বিভাগের পাঁচটি সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ প্রকল্পে অতিরিক্ত ৯৭ কোটি৭২ লাখ ১৯ হাজার ২০৫ টাকা ব্যয় বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সোমবার (২৭ মে) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, মাধবপুর, হবিগঞ্জ ৮৬ মেগাওয়াট গ্যাস ভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্ধিত মেয়াদের ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পন্সর কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে সরকারের ১৫ বছর চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তীর্ণ হয়।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর সুপারিশ করে বাবিউবো। বাবিউবো এবং নেগোসিয়েশন কমিটি কর্তৃক স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশকৃত চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে গ্যাস ভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ৫ বছর বৃদ্ধির জন্য স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৭.০৪১২ টাকা হিসেবে নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট ভিত্তিতে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

বর্ধিত মেয়াদে (৫ বছরে) স্পন্সর কোম্পানিকে ১ হাজার ৮৫৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। বর্ণিত প্রস্তাবে ট্যারিফ আগের তুলনায় হ্রাস পাওয়ায় বর্ধিত মেয়াদে প্রায় ৭১.২০ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে।

সচিব জানান, সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-১ এর পূর্ত কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ১২ কোটি ৭০ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৩ টাকা ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বেঙ্গল সোলার যৌথ কোম্পানি।

বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো: ‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-২ এর পূর্ত কাজের ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮৭ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।
‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-৩ এর পূর্ত কাজের ১৭ কোটি ৭০ লাখ ৩২ হাজার ২০৭ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি।

‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-৪ এর পূর্ত কাজের ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৪৯১ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-৫ এর পূর্ত কাজের ১৭ কোটি ২৮ লাখ ২৯ হাজার ৭৪ টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্যাকেজ নম্বর-এসপিআইপি-ডব্লিউ-৬ এর পূর্ত কাজের ১৪ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৩৩ টাকা টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেছে বেঙ্গল সোলার যৌথ কোম্পানি।

ভেরিয়েশনের কারণ হিসেবে, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশীয় এবং বিদেশি বিভিন্ন মালামালের মূল্য বৃদ্ধি, যাতায়াত, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ের খরচ ও সময় বৃদ্ধি, গ্রাহক সংগ্রহে প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় এবং ডলারের দাম বাড়ার কথা বলা হয়েছে ।

অর্থনীতি

মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ থাকছে না।

উলটো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে রাজস্ব আয় বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে সংসার খরচ আরও বাড়বে। প্রায় অর্ধশত পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট হার এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে।

পথের ভিখারি থেকে ধনিকশ্রেণির মানুষকেও ভ্যাটের ভার বইতে হবে। এ তালিকায় আছে মোবাইল ফোন, সিগারেট, আমসত্ত্ব, ফলের জুস, কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাল্ব প্রভৃতি।

এছাড়া শূন্য শুল্কের শতাধিক পণ্যের ওপর এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

বর্তমানে ৩৭ লাখ ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে বড় অংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির করদাতা। এ শ্রেণির করদাতাদের জন্য বাজেটে আয়কর খাতে ছাড় থাকছে না। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও আয়কর আদায়ের কথা চিন্তা করে বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। তবে করদাতা হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করা হচ্ছে।

এজন্য বাজেটে আয়কর আইনে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যক্তি ও কোম্পানি-দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।

এনবিআর মনে করে, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়লে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী আয়করের আওতার বাইরে চলে যাবে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, সেই সঙ্গে আনুপাতিক হারে মানুষের আয়ও বেড়েছে। তাই সীমা বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করে না সংস্থাটি।

অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এনবিআর কখনোই টানা করমুক্ত আয়ের সীমা কমায়নি। সাধারণত ২-৩ বছর বিরতিতে আয়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ২০২০-২১ সালে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা করা হয়।

অবশ্য বিত্তশালীদের কাছ থেকে বাড়তি কর আদায়ের পদক্ষেপ থাকছে বাজেটে। বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ রয়েছে। বছরে সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এটিকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। বছরে সাড়ে ৪৬ লাখ টাকার বেশি থাকলে ৩০ শতাংশ আয়কর দিতে হবে।

অন্যদিকে রাজস্ব আয় বাড়াতে পরোক্ষ কর (আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট) খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পরোক্ষ করের হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভাব সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষের ওপর পড়ে। পথের ভিখারি থেকে ধনিকশ্রেণি-সব মানুষকে পরোক্ষ কর দিতে হয়।

আসন্ন বাজেটে স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করে আনা; সিগারেট এবং মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। বর্তমানে মোবাইল ফোনে কথা বলায় ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত আছে।

অন্যদিকে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাটের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আছে। এর সঙ্গে ভোক্তাদের এক শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়। আসন্ন বাজেটে আরও ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে মোবাইল সেবার দাম বাড়তে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ভোক্তা বর্তমানে মোবাইল ফোনে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৮৩ টাকার কথা বলতে পারেন। বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসাবে কেটে নেয় মোবাইল অপারেটরগুলো। পরে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। মোবাইল সেবার ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তারা ৭৮ টাকার কথা বলতে পারবেন। একইভাবে ইন্টারনেট খরচ বাড়বে।

অবসরে পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য অনেকে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে ঘুরতে যান। রাজস্ব আয় বাড়াতে সেখানেও হাত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে প্রবেশে এবং রাইডে চড়তে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত আছে। এটি বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে পার্কে ঘোরার খরচ বাড়বে। এছাড়া প্রতিবছরের মতো এবারও সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এতে ধূমপায়ীদের পকেট খরচ বাড়বে।

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, ফলের জুস, আমসত্ত্বের দাম বাড়তে পারে। কারণ, সরবরাহ পর্যায়ে এসব পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআর-এর একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে একটি স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাট হার (১৫ শতাংশ) ছিল। নানা কারণে সেটি রাখা সম্ভব হয়নি বিধায় বর্তমানে একাধিক হারে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে এ হার যৌক্তিক করা হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ভ্যাট হার বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআর-এর। ২০২৬ সাল নাগাদ পর্যায়ক্রমে সব পণ্য ও সেবার ওপর স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাট হার আরোপ করা হবে।

অন্যদিকে আইএমএফ-এর পরামর্শে কর ব্যয় কমিয়ে আনতে আমদানি শুল্ক খাতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। শূন্য শুল্কহারবিশিষ্ট শতাধিক পণ্যের ওপর এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এ তালিকায় আছে চাল, গম, ভুট্টা, সরিষা বীজ, পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েল, সানফ্লাওয়ার বীজ, তুলা বীজ, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ, ক্রুড অয়েল, সার, প্রাকৃতিক গ্যাস, বিটুমিন, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, ইনসুলিন, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক ওষুধ এবং ভ্যাকসিন ও ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন ধরনের দরকারি রাসায়নিক ইত্যাদি। বর্তমানে ৩৩৫টি আইটেমের পণ্য আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় না।

এক শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বাজারে সেসব পণ্যের দাম বাড়বে না বলে মনে করছে এনবিআর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআর-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপণ্য রাখতে শুল্কছাড় বা শূন্য শুল্ক রয়েছে।

এছাড়া বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা, শিল্পের প্রসার, রপ্তানি পণ্যের বাজার টেকসই করা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অনেক পণ্যে শুল্কহার শূন্য রাখা হয়। রাজস্ব আয় বাড়াতে এবং আইএমএফ-এর ঋণের শর্ত পূরণে শূন্য শুল্কের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের বিকল্প নেই।

অর্থনীতি

প্রবাসীদের জন্য সরকারের দেওয়া স্বল্প সুদে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি তারা যেন সঠিকভাবে পায় এর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জাতীয় সংসদের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে কমিটি সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এম এ মান্নান, এ কে আব্দুল মোমেন, আহমেদ ফিরোজ কবির, মো. আবুল কালাম আজাদ ও রুনু রেজা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যায় কিনা এবং পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল, ২০২৪ এর ওপর আলোচনা হয়।

প্রবাসীদের জন্য সরকারের দেওয়া স্বল্প সুদে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি যেন তারা সঠিকভাবে পায় তার জন্য প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিবসহ অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের জন্য ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ সফররত অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওঙ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ কথা জানান।

অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী এবং ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিয়া সিম্পসন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৬  বছরে এটিই প্রথম কোনো অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দান ও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী গো হুইটল্যামকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রোহিঙ্গাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করায় পেনি ওঙকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ জানান, আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, বাংলাদেশের ১০০টি বিশেষ ইকনোমিক জোন এবং ৪০টি আইটি ভিলেজে অস্ট্রেলীয় বিনিয়োগ, বাংলাদেশিদের মৌসুমি কর্মসংস্থান, সেখানে প্রবাসীদের কল্যাণ, অবৈধ অভিবাসন রোধ, জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার টেকনিকাল এন্ড ফারদার এডুকেশন (টিএএফই) সহায়তার আওতায় বাংলাদেশের টেকনিকাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে (টিটিসি) উন্নত প্রশিক্ষণ সহযোগিতা কামনা করেছি, বলেন মন্ত্রী হাছান।

একই সঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ইউটিসি’র সঙ্গে আমাদের চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা রয়েছে যেমনটি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

গত চার বছরে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে চার বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলারে দাঁড়িয়েছে যা আমরা আগামী পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করি, বলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওঙ বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ব্যাপক উন্নতি করেছে, তা আরো এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেরিটাইম সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তার দেশের কোস্ট গার্ড প্রধান বাংলাদেশ সফর করবেন।

ভারত মহাসাগরীয় দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করেন তিনি।

অর্থনীতি

দেশে চালু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান, মানবাধিকার, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সাল থেকে প্রতি দুবছর পরপর সম্মানজনক এই পদক দেওয়া হবে।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিক, কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী, সমাজসেবক, রাজনীতিক এ পদকের জন্য বিবেচিত হতে পারেন।

এ ছাড়াও নোবেল বিজয়ী ও বাংলাদেশে অবস্থিত দূতাবাসের প্রধানরা সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।

সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড গঠন করা হবে। সেই সঙ্গে একটি নীতিমালাও করা হবে।

মাহবুব হোসেন জানান, প্রতি দুইবছর পরপর ১৭ মার্চ পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি ২৩ মে পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ১ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণের আর্থিক পুরস্কারের সঙ্গে ১৮ ক্যারটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক পাবেন।

অর্থনীতি

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাঁচ কৌশলে গুরুত্ব দিচ্ছে জাতিসংঘ। রোববার রাজধানীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) অনুষ্ঠিত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) সভায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক (সহযোগিতা) বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস।

সভায় জানানো হয়, সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্ক ২০২২-২০২৬ সময়কাল ধারণ করে জাতিসংঘের সহায়তার রূপরেখা দেবে। এই ফ্রেমওয়ার্কের কৌশলগুলো হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ন্যায়সঙ্গত মানব উন্নয়ন এবং সুস্থতা, টেকসই-স্বাস্থ্যকর ও স্থিতিস্থাপক পরিবেশ, রূপান্তরমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন এবং লিঙ্গ সমতা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা দূর করা।

সভায় আরও জানানো হয়, ২০২৩ সালের ফলাফল প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার দিয়েছে। ২০২৩ সালে সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে এই সহায়তা দেওয়া হয়। ফলে ২৮ মিলিয়ন মানুষ আর্থিক পরিষেবায় ডিজিটালের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়েছে। ২ লাখ ৫০ হাজার প্রান্তিক শিশু প্রতিকারমূলক শিক্ষায় পৌঁছেছে। ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯১টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘ-সমর্থিত গ্রাম আদালতের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা থেকে বেঁচে থাকা ২ লাখ ৬৭ হাজার ৬০০ মানুষ টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।

অর্থনীতি

পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেখে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যোগাযোগ ও অবকাঠামোখাতে ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সভাকক্ষে এনইসি চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

এনইসি সভাশেষে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার ব্রিফিংয়ে জানান, আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিবি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাকী ১ লাখ কোটি টাকার অর্থায়ন আসবে বিদেশী উৎস থেকে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল এডিবির আকার ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

সত্যজিত কর্মকার বলেন, ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপি ছাড়াও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের প্রায় ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থের মধ্যে ১১ হাজার ৬৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা স্থানীয় উৎস্য থেকে এবং ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিদেশী উৎস থেকে আসবে।

স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার ব্যয় মিলিয়ে আগামী অর্থবছরে সামগ্রিক এডিপি আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা সচিব বলেন, আগামী অর্থবছরের এডিবিতে ১,৩২১টি প্রকল্প রয়েছে যার মধ্যে ১,১৩৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ২১টি সম্ভাব্যতা প্রকল্প, ৮৭টি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রকল্প এবং ৮০টি প্রকল্প স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশন দ্বারা বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, এবারের এডিপিতে প্রায় ১,২২৫টি নতুন প্রকল্পের মধ্যে ৮০টি পিপিপি প্রকল্প এবং ৩০০টি প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বাস্তবায়ন করা হবে।

বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ খাত, শ্রম-শক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

নতুন এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের মধ্যে রাজধানীর নতুন মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা রেলসেতুসহ গুরুত্বপূর্ণ চলমান বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প বরাদ্দের কারণে সার্বিকভাবে এ খাতের বরাদ্দ বেড়েছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

নতুন এডিপিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ১৫ শতাংশের বেশি। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা খাতে। এ খাতে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা, যা মোট এডিপির প্রায় ১২ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে মোটাদাগে ১৫টি খাত ৯৬ শতাংশের বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে। পরিবহন ও যাতায়াত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ছাড়া অন্য খাতগুলোর মধ্যে গৃহায়ণ খাতে ২৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা এবং কৃষি খাত ১৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে।

অর্থনীতি

বিশ্বের ‘ট্যাক্স হেভেন’ দেশগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার (৫.৯১ বিলিয়ন ডলার) অফশোর সম্পদ রয়েছে। যা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে ৬০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে, বাকিটা ইউরোপ ও আমেরিকায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্যাক্স অবজারভেটরির সম্প্রতি প্রকাশিত ‘অ্যাটলাস অফ অফশোর ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

যেসব দেশে অন্য দেশ থেকে গোপনে অর্থ পাচার বা জমা রাখার সুযোগ রয়েছে সেই দেশগুলোকে বলা হয় ‘ট্যাক্স হেভেন’। লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড কিংবা বারমুডার মতো বিভিন্ন দেশে অর্থের উৎস জানানোর ঝামেলা নেই। করের হিসাব-নিকাশও নেই। এ ধরনের ট্যাক্স হেভেন দেশে বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দিয়ে সম্পদ ক্রয় করতে পারে। এই সম্পদকে বলা হয় অফশোর সম্পদ।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. এমকে মুজেরি বলেন, দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে সম্পদ ও অর্থ পাচার একটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশে এ সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি বলেছে, দেশ থেকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। এটি একটি অনুমান নির্ভর। আমার ধারণা, আরও বেশি টাকা পাচার হয়েছে। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অবসর অর্থ হিসাবে বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেখানে এই বিনিয়োগের অর্থ বৈধ না অবৈধ সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় না। তিনি বলেন, এই পাচার রোধ করতে প্রয়োজনীয় আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না। আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ হচ্ছে না। কারণ যারা পাচারের সঙ্গে জড়িত তারা অনেক প্রভাবশালী। দেশি কাগজে অনেক পাচারের খবর বের হয়েছে। কোনোটির বিচার না হওয়ায় এটি স্থায়ী সংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছে।

অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, টাকা পাচার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। পুঁজি পাচারের ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। তা না হলে বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের যে পতন সেটি থামানো যাবে না। পুঁজি পাচার থামাতে না পারলে অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়বে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অফশোর বিনিয়োগের ২০২২ সালের তথ্য দিয়ে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এর আগে ২০২১ সালে ট্যাক্স হেভেনে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন অফশোর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ১৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এরমধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, হংকংসহ এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্যাক্স হেভেনে আবাসন খাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করা মোট অফশোর সম্পদের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ। এই বিনিয়োগের বেশিরভাগই হয়েছে সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে। এছাড়া লন্ডন ও প্যারিসে কিছু বিনিয়োগ হয়েছে এ খাতে।

এতে আরও বলা হয়, অফশোর আবাসন শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীর মালিকানাধীন হয় কিংবা জটিল অফশোর কাঠামোর মাধ্যমে ভিন্ন দেশের কোনো বাসিন্দার মালিকানাধীন হয়ে থাকে যেখানে প্রকৃত মালিকের পরিচয় অস্পষ্ট থাকে।

ট্যাক্স অবজারভেটরির মতে, না জানিয়ে এই অফশোর বিনিয়োগে শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন কর পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের শতভাগ রেডিমেট (প্রস্তুত) আবাসন সম্পদ কিনেছেন বা অপ্রস্তুত আবাসন সম্পদ কেনার জন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা ফাঁস হয়েছে। তালিকায় ৩৯৪ জন বাংলাদেশির নাম এসেছে। ওই বছর তারা মোট ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সম্পদ কিনেছেন। সেবার বাংলাদেশিরা মোট ৬৪১টি সম্পদ কিনেছিলেন। তবে অবজারভেটরির মতে, ওই বছর সর্বমোট ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন। কারণ ফাঁস হওয়া সম্পদ কেনার ঘটনার সঙ্গে ট্যাক্স অবজারভেটরি নিজেদের আনুমানিক হিসাবও দিয়েছে। যেখানে ফাঁস হওয়া ঘটনার সঙ্গে ফাঁস না হওয়া ঘটনাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে কারা এসব সম্পদ কিনেছেন, সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশিরা দুবাই শহরে প্রস্তুত ও অপ্রস্তুত সম্পদ কিনেছেন এবং যাদের কথা ফাঁস হয়েছে, এমন বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৪০৫ জন এবং তাদের কেনা সম্পদের মূল্য ছিল ২১ কোটি ১২ লাখ ডলার; সেই বছর বাংলাদেশিরা মোট ৬৫৭টি সম্পদ কিনেছিলেন।

এতে বলা হয়, ২০২২ সালে যে ৫৩২ জন বাংলাদেশি আবাসন কিনেছেন, তাদের কেনা সম্পদের অর্থের মূল্য ছিল ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। ২০২০ সালে সে সংখ্যাটা ছিল ৫৬২ জন; অর্থের মূল্য ছিল ৩৭ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পদ কেনার হার কমলেও তার অর্থের মূল্য বেড়েছে।