আন্তর্জাতিক

প্রস্তাবে হামাসের এই সম্মতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা সোমবার একথা জানিয়েছেন। প্রস্তাবে হামাসের এই সম্মতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি হামাস পেয়েছে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে। এতে বলা হয়েছে, দুটি দলে ১০ জন করে জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর বিনিময়ে ৭০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।

এ সময়ের মধ্যে ইসরায়েল গাজার নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং ইসরায়েলে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা বেশ কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।

তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল জানুয়ারি মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিয়ে গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।

হামাস ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোও ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে। যদিও এবার হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করলে তারা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা কেবল সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি, তাও কেবল জিম্মিদের বিনিময়ে। তার ভাষায়, হামাস পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের হামলায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপরই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত এ যুদ্ধে অন্তত ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভূখন্ডটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, সেখানে খাদ্য সংকটে মারাত্মক অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক

বিমান থেকে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এসময় হঠাৎ ক্যামেরায় ধরা পড়ল এক অদ্ভুত দৃশ্য। বিমানের দরজার একপাশ থেকে কেউ যেন তাকে চড় মারলেন! পরিষ্কার বোঝা গেল, লাল পোশাক পরিহিত কেউ একজন কাজটি করেছেন। একটু পরই দেখা যায়, সেই লাল পোশাক পরিহিতা ফরাসি প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ব্রিজিত।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ভিয়েতনামে পা রেখেছেন ম্যাক্রোঁ। সেখানকার হ্যানয় বিমানবন্দরে এই ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়ে। মুহূর্তেই চড়-কাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সে ঘটনার পর অবশ্য একসঙ্গেই বিমান থেকে নেমেছেন ম্যাক্রো ও তার স্ত্রী ব্রিজিত। তবে বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় স্ত্রীর হাত ধরেননি প্রেসিডেন্ট। এ বিষয়টিও উপস্থিত অসংখ্য ক্যামেরার দৃষ্টি এড়ায়নি।

ম্যাক্রোঁর দপ্তর প্রথমে ভিডিওটি ‘ভুয়া’ দাবি করলেও পরে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। যদিও ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্র ঘটনাটিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য ‘সামান্য ঝগড়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

আন্তর্জাতিক

সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ হামলা নিয়ে পুতিনকে ‘পাগল’ বলে কটাক্ষ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এ প্রতিক্রিয়াকে ‘আবেগের মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ বলে খোঁচা দিয়েছে ক্রেমলিন।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার মস্কোতে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইউক্রেনে সর্বশেষ রুশ বিমান হামলা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ‘মাত্রাতিরিক্ত আবেগ’-এর ফল।

ট্রাম্প রোববার নিজের ট্রুথ সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লেখেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছেন’, কারণ টানা তৃতীয় রাতেও রাশিয়া ইউক্রেনে বিমান হামলা চালিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সবসময় বলে এসেছি, কেবল একটি অংশ নয়, তিনি (পুতিন) পুরো ইউক্রেন চান। হয়তো সেটাই সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। তবে যদি তিনি (পুতিন) তেমনটা করেন, তাহলে তা রাশিয়ার পতনের ডেকে আনবে!’

এক পৃথক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি যা দেখছি, তাতে আমি মোটেও খুশি নই। আমি জানি না ওঁর (পুতিন) কী হয়েছে। কী সর্বনাশটাই না করছে! অনেক মানুষকে হত্যা করছে, এটা আমি একদমই পছন্দ করছি না’।

এর আগে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া শনিবার রাতভর ৩৫৫টি ড্রোন ও ৯টি ‘খ-১০১’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। যার মধ্যে তারা ২৮৮টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

এদিকে ট্রাম্পের বক্তব্য প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং এটা সবার আবেগঘন প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। আবেগ মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ছে— সেটাও স্বাভাবিক’।

মস্কো সব প্রতিক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন’।

এ সময়, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনা শুরু হওয়াটাকে ‘একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্জন’ হিসেবে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে পেসকভ বলেন, এ আলোচনা আয়োজনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

তার ভাষায়, ‘এই আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করতে সহায়তা করার জন্য আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ—যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিও’।

তবে দ্বিতীয় দফার আলোচনার সময় ও স্থান নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ক্রেমলিন মুখপাত্র।

এদিকে তুরস্কের উদ্যোগে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৬ মে। তিন বছর বিরতির পর ইস্তাম্বুলে হওয়া সেই বৈঠকে উভয় পক্ষ সম্মত হয় যে, প্রত্যেকে ১,০০০ বন্দি বিনিময় করবে এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে।

এ সময় পেসকভ এ আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তুরস্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির খসড়া নিয়েও কাজ চলছে। সূত্র: আনাদোলু

আন্তর্জাতিক

জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ রোধে আরও কঠোর হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন থেকে দেশটিতে ভ্রমণের উদ্দেশে যেতে চাওয়া ব্যক্তিদের ভিসার আবেদন পর্যালোচনায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা আরও খুঁটিয়ে ভিসাপ্রার্থীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করবেন। সন্দেহজনক মনে হলেই বাতিল করবেন ভিসার আবেদন।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।

বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তারা যদি মনে করেন যে ভ্রমণের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্মদান এবং সন্তানের জন্য মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জন করা, তাহলে তারা পর্যটন ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করবেন। এটি অননুমোদিত।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিলসহ একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের ইতি টানার চেষ্টায় নিম্ন আদালতগুলোতে বার বার ধাক্কা খেয়ে পরে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থও হন তিনি। ট্রাম্প এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করার পর তার আদেশের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে অভিবাসীদের সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন। এরপর দেশটির বিভিন্ন প্রদেশেও এই আদেশ বাধার মুখে পড়ে।

কেউ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলে তিনি জন্মসূত্রে দেশটির নাগরিকত্ব পান। এই বিধান বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। শপথ নেওয়ার পর এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। তবে শুধু নির্বাহী আদেশ দিয়েই এই নীতি পরিবর্তন করা কঠিন। কারণ, মার্কিন সংবিধানেই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষমতা বাতিল করার সিদ্ধান্তে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার বোস্টনের ফেডারেল আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’। বিবিসি, রয়টার্স।

এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হার্ভার্ড আর কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। বর্তমানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন, তাদের অবশ্যই স্থানান্তর করতে হবে। না হলে তারা আইনগত বৈধতা হারাবেন।

এছাড়া দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় জনিয়েছেন, হার্ভার্ড ‘আইন মেনে না চলায়’ তাদের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সনদ বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও লেখেন, ‘এটি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সতর্কবার্তা হিসাবে বিবেচিত হোক।’

এ সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের চাই। এ ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে তারা। হার্ভার্ড এবং এ দেশকে অসামান্যভাবে সমৃদ্ধ করে এ শিক্ষার্থী ও গবেষকরা।’

হার্ভার্ডের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, আমরা দ্রুত আমাদের কমিউনিটির সদস্যদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও সহায়তা দিতে কাজ করছি। এ প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হার্ভার্ড কমিউনিটি ও আমাদের দেশের ওপর গভীর ক্ষতির হুমকি তৈরি করেছে। পাশাপাশি হার্ভার্ডের শিক্ষা ও গবেষণা মিশনকেও দুর্বল করছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের ফলে হার্ভার্ডে অধ্যয়নরত হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে। এ সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছালে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় সাত হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন। এটি গত শিক্ষাবর্ষে ভর্তি মোট শিক্ষার্থীর ২৭ দশমিক ২ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলে কাটছাঁট শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আন্তর্জাতিক

ইতালির রাজধানীতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পঞ্চম দফার পারমাণবিক আলোচনা শুক্রবার শেষ হয়েছে। তবে রোমে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা থেকে কোনো সিদ্ধান্তমূলক অগ্রগতি অর্জিত হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্টিভ উইটকফ ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নীতিনির্ধারণ প্রধান মাইকেল অ্যান্টন। তিনি এই আলোচনা সংক্রান্ত কারিগরি বিষয়েও যুক্ত। অন্যদিকে ইরানের পক্ষ থেকে এতে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় কিছু প্রস্তাব উঠে এসেছে। এ দফার আলোচনা ‘পেশাদারিত্ব’ বজায় রেখে হলেও পরমাণু ইস্যু নিয়ে জটিলতা এখনো রয়ে গেছে।

তার ভাষায়, ‘আমরা অত্যন্ত পেশাদার একটি আলোচনা সম্পন্ন করেছি। তবে বিষয়গুলো এখনো পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি’।

এদিকে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে তা সিদ্ধান্তমূলক নয়। আমরা আশা করি আগামী দিনে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হবে। যাতে একটি সম্মানজনক ও টেকসই চুক্তির পথে অগ্রসর হওয়া যায়’।

মূল মতপার্থক্য:

• ইরান ঘোষণা করেছে, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করবে না।

• যুক্তরাষ্ট্র বলছে, পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না হলে চুক্তি সম্ভব নয় এবং ‘পরমাণু কর্মসূচি ভেঙে ফেলা’ বিষয়ক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে।

টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি এই আলোচনায় চুক্তি না হয়, তাহলে তারা সামরিক ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিকল্প বিবেচনা করবে। যাতে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে রোধ করা যায়।

এদিকে ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলোচনা ব্যর্থ হলে ‘SnapBack’ মেকানিজম সক্রিয় করা হতে পারে। এর ফলে ইরানের ওপর আগের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় কার্যকর হবে।

চুক্তি নিয়ে সংশয়:

অন্যদিকে ইরানের দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন দাবি করেছে, তেহরান এ দফার আলোচনায় অংশ নিয়েছে কেবল ওয়াশিংটনের সর্বশেষ অবস্থান যাচাই করার জন্য। কোনো অগ্রগতির প্রত্যাশা নিয়ে নয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির মতে, ‘তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিকতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান সন্দেহ পোষণ করছে’।

মূলত পঞ্চম দফার আলোচনাকে অনেকেই ভবিষ্যতের জন্য নির্ধারক মনে করলেও বাস্তবিক অগ্রগতি অনিশ্চিতই থেকে গেছে।

আন্তর্জাতিক

কিছু বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

তবে কী ধরনের চুক্তি হলে বৈঠক সম্ভব—সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি পেসকভ। পুতিন ও জেলেনস্কি সর্বশেষ মুখোমুখি হন ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে।

তুরস্কে চলমান শান্তি আলোচনা ঘিরে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট চলতি সপ্তাহেই পুতিনকে সরাসরি সাক্ষাতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুতিন সেখানে না গিয়ে সহকারী ও কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল পাঠান, যারা শুক্রবার ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২০২২ সালের মার্চের পর প্রথমবারের মতো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে পুতিন-জেলেনস্কি সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়টি তোলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইউক্রেন।

এ প্রসঙ্গে পেসকভ বলেন, এমন বৈঠক সম্ভব, তবে তা হতে হবে দুই দেশের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু চুক্তি এবং আলোচনার ফলাফলের ভিত্তিতে।

তিনি আরও বলেন, চুক্তিপত্রে সইয়ের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ইউক্রেনের পক্ষে ঠিক কে সেই চুক্তিতে সই করবেন।

পেসকভ তার এই মন্তব্য ব্যাখ্যা না করলেও বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিন এর আগেও জেলেনস্কির প্রেসিডেন্ট হিসেবে বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ, তার নির্বাচিত মেয়াদ গত বছর শেষ হয়ে গেছে।

বর্তমানে যুদ্ধকালীন আইন জারি থাকায় ইউক্রেনে নতুন নির্বাচন এখনও হয়নি। ফলে চুক্তিতে জেলেনস্কির সইয়ের বিষয়টি ঘিরে ক্রেমলিনের আপত্তি থেকেই যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

গত বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে তিনি সে দেশেই অবস্থান করছেন।

এই দীর্ঘ ৯ মাসে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি শেখ হাসিনার। জয় এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি তিনি মার্কিন নাগরিকত্বও গ্রহণ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শিগিগিরই শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের। আর সেই সাক্ষাৎ হবে অবশ্যই ভারতে। ভারত সফরে আসছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে কবে দেখা হতে পারে এ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি প্রতিবেদনে।

জয়ের ভারত সফরের প্রেক্ষাপট এমন এক সময়, যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

নিউজ এইটিন জানিয়েছে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল করে দেওয়ার পর তিনি আমেরিকার নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। জয় ভারতে এলে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এটিই হবে মা-ছেলের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ।

এদিকে জয়ের সম্ভাব্য ভারত সফর ও মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের খবরে আওয়ামী লীগের নির্বাসিত নেতাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের একজন সাবেক মন্ত্রী নিউজ এইটিনকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন জয় এবং নির্বাসিত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সরকার যেভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক। এটি আগামী নির্বাচনে দলটিকে প্রতিযোগিতার বাইরে রাখতে নেওয়া কৌশলের অংশ। ’

উল্লেখ্য, আওয়ামী শাসন আমলের দুইবারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ‘চুপিসারে’ দেশত্যাগের ঘটনায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জোরদার হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের টানা আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। গত ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের সব অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের বিচার ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের প্রচার, মিছিল, সভা, সেমিনার, গণমাধ্যমে প্রকাশনা বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। প্রজ্ঞাপনটি সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর করা হয়েছে।

এতদিন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছিলেন শেখ হাসিনা। তবে সরকারের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার ফলে আওয়ামী লীগের সব ধরনের কর্মকাণ্ড এখন স্থবির হয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে জয়ের ভারত সফরের খবর উৎসাহ যোগ করেছে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদেও প্রথম বিদেশ সফর করলেন সৌদি আরবে। দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)-এর প্রতি অকুণ্ঠ প্রশংসা জানালেন তিনি। রিয়াদে বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতাদের এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প মজা করে যুবরাজকে প্রশ্ন করেন, মোহাম্মদ, আপনি রাতে ঘুমান কিভাবে? কী অবিশ্বাস্য কাজ আপনি করেছেন!

ট্রাম্প বলেন, তিনি (এমবিএস) রাতে আমাদের মতোই বিছানায় গড়াগড়ি করেন। ভাবেন— ‘আর কীভাবে উন্নতি করবো?’ এ মন্তব্যে যুবরাজ হাসি দিয়ে সাড়া দেন এবং উপস্থিত শ্রোতারা দাঁড়িয়ে করতালি দেন।

৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্প সৌদি আরবের পরিবর্তনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সমালোচকরা মনে করত এটা সম্ভব না। কিন্তু গত আট বছরে সৌদি আরব তাদের ভুল প্রমাণ করেছে। আমি তাকে (এমবিএস) অনেক পছন্দ করি, খুব বেশি পছন্দ করি।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, এমবিএস এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অনুরোধে তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন।

এ সময় ট্রাম্প রসিকতা করে বলেন, ক্রাউন প্রিন্সের জন্য আমি কী-না করি!

ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ’ বলেও অভিহিত করেছেন। তিনি সৌদি নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক রূপান্তর এবং বৈশ্বিক মঞ্চে দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

সৌদি নেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আপনারা বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ, রিয়াদ একটি বৈশ্বিক বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে উঠবে। মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ এখান থেকেই শুরু।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘দিন-রাত পরিশ্রমী নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দুই পুত্র– কাসিম ও সুলেমান– দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে তাদের বাবার কারাবন্দি অবস্থার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। খবর সামা টিভির।

ইমরান খানের গ্রেফতারের পর এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন দুই ভাই। কাসিম খান বলেন, আমরা কখনো কল্পনাও করিনি যে আমাদের বাবা এত দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে থাকবেন। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমাদের হাতে এখন খুব কম অপশন আছে, তাই আমরা মনে করি জনসমক্ষে কথা বলার সময় এসেছে।

তারা অভিযোগ করেন, ইমরান খান কারাগারে অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং তার মৌলিক মানবাধিকার পর্যন্ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কাসিম শঙ্কা প্রকাশ করে আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে কিছু অভিযোগের সাজা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এখন তারা আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ইমরান খানের মুক্তির পথ খুঁজছেন এবং এজন্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কাসিম বলেন, এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য ট্রাম্পের চেয়ে উপযুক্ত আর কে হতে পারে? আমরা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কাছে সাহায্য চাইছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আইনি পথে যা যা করা সম্ভব, সব করেছি। বাবার মুক্তির জন্য এবং পাকিস্তানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমি মনে করি না, তিনি কখনো নিজের মুক্তির বিনিময়ে কোনো আপস করবেন।