আন্তর্জাতিক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতার উপস্থিতিতে হামাস-ইসরাইল শান্তি পরিকল্পনা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিসরে শান্তি সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি।

এই নথিতে ট্রাম্প ছাড়াও মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিসহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা স্বাক্ষর করেছেন।

শান্তি সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় মিসরের উপকূলীয় শহর শারম আল-শেখে।

সম্মেলনে প্রায় ৩৫ জন বিশ্বনেতা অংশ নেন। গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে এ চুক্তি সই হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর ট্রাম্প বলেন, আজ আমরা শুধু এক যুদ্ধের অবসান ঘটালাম না, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক নতুন ইতিহাস রচনা করলাম। এটি সবচেয়ে বড় চুক্তি, যা শান্তির নতুন ভোর এনে দেবে।

এদিকে, স্বাক্ষরিত চুক্তিটির বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে চুক্তি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘এটি টিকে থাকবেই’।

গাজাবাসীর সঙ্গে ৬ মুসলিম দেশের বিশ্বাসঘাতকতা

হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে গাজাবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে মধ্যপ্রাচ্যের ৬ মুসলিম দেশ। সামনে গণহত্যাকে নৃশংস-বর্বর বললেও গোপনে ইসরাইলকে নানাভাবে সাহায্য করেছে। এমনকি সামরিক সহায়তা দিয়েও তেল আবিবের পাশে থেকেছে দেশগুলো। মধ্যস্থতা নয়-গাজার মানুষের সঙ্গে কার্যত বিশ্বাসঘাতকতা করেছে দেশগুলো। আরব মুলুকের মার্কিন দোসর ওই আরব রাষ্ট্রগুলোর প্রথম কাতারেই সৌদি আরব। সঙ্গী ছিল বাহরাইন, মিসর, জর্ডান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। সদ্য ফাঁস হওয়া এক মার্কিন নথিপত্র থেকে বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। শনিবার পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়-এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসরাইলের সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো নামে গোপন সামরিক জোটে যুক্ত হয়ে কাজ করেছে।

ইসরাইলের হামলার দিন থেকেই (৭ অক্টোবর, ২০২৩) গাজার অসহায় মানুষের অধিকার নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছেন আরব নেতারা। তবে মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশের ভূমিকা যুদ্ধ বন্ধে ছিল একেবারেই নীরব দর্শকের মতোই। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের হাতে আসা মার্কিন গোপন নথিতে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। নথিতে বলা হয়, ২০২২ সালে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকমের নেতৃত্বে এই জোট গঠিত হয়। জোটটির মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের হুমকি মোকাবিলা। তবে বাস্তবে এই জোটের কার্যক্রমের বড় অংশই ছিল গাজা ও হামাসবিরোধী যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই গোপন নেটওয়ার্কে অংশ নেওয়া দেশগুলো একসঙ্গে টানেল যুদ্ধ মোকাবিলা, আকাশ প্রতিরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। আর গাজায় বোমাবর্ষণে এই কৌশল ব্যবহার করেছে ইসরাইল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আরব দেশগুলো পর্দার আড়ালে ইসরাইলি সেনা ও মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়া, গোপন বৈঠক ও তথ্য আদান-প্রদান চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এই ছয় আরব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রাডার ও সেন্সর নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। এর মাধ্যমে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন মোকাবিলার নাম করে তেল আবিবের সঙ্গে কার্যত একীভূত হয় তাদের সেনাবাহিনী। সেপ্টেম্বর মাসে ইসরাইলি বিমান হামলায় দোহায় নিহত হন একাধিক হামাস নেতা। আরব-ইসরাইলি এই গোপন সহযোগিতা তখন বড় সংকটে পড়ে। ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে কাতারের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, আরব বিশ্বের নেতারা প্রকাশ্যে যা বলছেন, কৌশলগত কারণে গোপনে তার উলটো কাজ করছে। কারণ তাদের কাছে ইরানের আঞ্চলিক হুমকি ফিলিস্তিন সমস্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমনকি আরবদের এই দ্বৈত অবস্থানের কারণেই গাজাবাসীর সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

আন্তর্জাতিক

আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়ে গেছেন বলে জানিয়েছে ফরাসি রেডিও আরএফআই। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক চুক্তির পর রাজোয়েলিনাকে ফরাসি সামরিক বিমানে করে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) রয়টার্স জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটিতে দুর্নীতি, দারিদ্র্য এবং সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে হাজারো তরুণের বিক্ষোভ চলছিল। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ‘ক্যাপসাট’ প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করে বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে রাজোয়েলিনা ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল গত ২৫ সেপ্টেম্বর। রাজধানী আন্তানানারিভোতে পানি ও বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে জেন-জিদের বিক্ষোভ শুরু হলেও অল্প সময়েই তা রূপ নেয় বৃহত্তর অসন্তোষে। দুর্নীতি, খারাপ প্রশাসন ও মৌলিক সেবার অভাবের বিরুদ্ধে এটি একটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়।

বিরোধীদলীয় নেতা সিতেনি র্যান্দ্রিয়ানাসোলোনিয়াইকো জানিয়েছেন, সংসদের বিরোধী সদস্যরা রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন।

রোববার প্রেসিডেন্ট সতর্ক করেছিলেন, ক্ষমতা দখলের একটি ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ সেনাবাহিনীর যে ‘ক্যাপসাট’ ইউনিট ২০০৯ সালে তাকে ক্ষমতায় আনতে সাহায্য করেছিল, সেই ইউনিট এবার তার বিরোধিতায় নেমেছে।

ক্যাপসাট ইউনিট দাবি করেছে, তারা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নিয়েছে এবং নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়েছে। একই সঙ্গে প্যারামিলিটারির একটি অংশও বিক্ষোভকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

এদিকে জনরোষের মুখে সিনেট সভাপতিকে বরখাস্ত করে জ্যাঁ আঁদ্রে ন্দ্রেমাঞ্জারিকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট অনুপস্থিত থাকলে সিনেট সভাপতি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজধানীর কেন্দ্রে সোমবার হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে ‘প্রেসিডেন্টকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে’ স্লোগান দেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২২ বছর বয়সি এক হোটেলকর্মী জানান, মাসে ৩ লাখ আরিয়ারি (৬৭ ডলার) আয় করে তার শুধু খাবার জোটানোই কঠিন। তিনি বলেন, ‘১৬ বছরে সরকার শুধু নিজেদের ধনী করেছে, আর তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে।’

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। এই ধরনের ক্ষোভ মাদাগাস্কার ছাড়াও নেপাল, কেনিয়া ও মরক্কোর তরুণদের আন্দোলনেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

প্রায় ৩ কোটি জনসংখ্যার মাদাগাস্কারে গড় বয়স ২০ বছরেরও কম। দেশটির তিন-চতুর্থাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। স্বাধীনতার পর থেকে মাথাপিছু জিডিপি ৪৫ শতাংশ কমেছে। ভ্যানিলা উৎপাদনের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত মাদাগাস্কারের অর্থনীতি টিকে আছে নিকেল, কোবাল্ট, বস্ত্র ও চিংড়ি রপ্তানি করে।

উল্লেখ্য, জেন-জির এমন বিক্ষোভের মুখে সরকার পতন ঘটে শ্রীলঙ্কা ও নেপালেও।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন আগ্রাসনবাদী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

খবর বিবিসির।
যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত এই পরিকল্পনাকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

যুদ্ধবিরতি ও হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি এই চুক্তির আওতায় প্রথম ধাপে ইসরায়েলও শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে। গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করবে এবং গাজায় প্রতিদিন ত্রাণ সামগ্রীবাহী ট্রাক প্রবেশ করবে বলে কথা রয়েছে।

এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নজর রাখতে বহুজাতিক সেনা মোতায়েন করা হবে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে তারা গাজায় প্রবেশ করবে না। যুদ্ধবিরতি এবং অন্যান্য লঙ্ঘন হচ্ছে কি না সেই বিষয়ে নজর রাখবে।

অবশ্য ফিলিস্তিনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজার ‘অনেক জায়গায়’ দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে খান ইউনিসে বিমান হামলা হয়েছে। উত্তরে নেটজারিম করিডোরের আশেপাশেও হামলার খবর মিলেছে। এছাড়া আল-সাব্রা এবং তাল আল-হাওয়া এলাকায় গোলাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

রয়টার্সের ফুটেজে স্থানীয় সময় আনুমানিক ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে আলোর ঝলক এবং তারপরে একটি বিস্ফোরণের দৃশ্য ধরা পড়েছে।

যুদ্ধবিরতির তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আনন্দের মুহূর্ত চোখে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও আনন্দের বার্তা এসেছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে একটি নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। গাজায় সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রীবাহী ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে।

হামাসের হাতে থাকা জিম্মি ও ইসরায়েলের হেফাজতে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। দুপক্ষই মৃতদেহ ফিরিয়ে দেবে।

গাজায় রয়েছেন এমন ৪৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে । এই পরিকল্পনার হাত ধরেই ইসরায়েল ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।

বিবিসি জানিয়েছে, চুক্তি অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোরে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

হামাসের নির্বাসিত গাজা প্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে এই বিষয়ে নিশ্চয়তা পেয়েছেন যে যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ‘গাজা শান্তি সম্মেলনে’ সহ-সভাপতির ভূমিকা পালন করবেন।

আগামীকাল সোমবার মিশরের পর্যটনবান্ধব শহর শার্ম এল-শেখ এ অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের নেতারা অংশ নেবেন। এতে উপস্থিত থাকবেন জাতিসংঘ প্রধানও।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহরে অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে ‘২০টির বেশি দেশের নেতা’ যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে সিসি’র কার্যালয়।

এই সম্মেলনের লক্ষ্য ‘গাজা উপত্যকার যুদ্ধ অবসান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক সুরক্ষার নতুন যুগের সূচনা।’

রোববার মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই ‘ঐতিহাসিক’ সম্মেলনে ‘গাজা উপত্যকার যুদ্ধ বন্ধ করার’ চুক্তি সই হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সম্মেলনে ‘শান্তি ও নিরাপত্তার নতুন অধ্যায় রচিত হবে এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও স্পেনের পেদ্রো সানচেজ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানও শার্ম এল-শেখে যাবেন বলে তাদের নিজ নিজ কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের এক মুখপাত্র জানান, সংগঠনটির প্রতিনিধিত্ব করবেন সভাপতি আন্তোনিয়া কস্তা।

মুখপাত্র আরও জানান, গাজার পরিকল্পনা ‘ন্যায্য ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার বাস্তবসম্মত সুযোগ সৃষ্টি করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এসব উদ্যোগে সমর্থন জানাতে এবং এর বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহও এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এতে অংশ নেবেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার মুখপাত্র।

আমন্ত্রণ পেলেও কয়েকটি দেশ এখনো প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেনি। চীন-রাশিয়ার মতো পরাশক্তি আদৌ নিমন্ত্রণ পেয়েছে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়।

হামাসের কোনো প্রতিনিধি সেখানে থাকবেন না বলে ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে। তবে ইরানকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হোসাম বাদরান এএফপিকে বলেন, তারা ‘এই উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়’।

এর আগে তিনি জানান, হামাস মূলত ‘কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।’

আন্তর্জাতিক

তিন দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড’।

বুধবার জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছেছে বলে আইএসপিআর এদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছানোর পর নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা আবু উবাইদাহ’ সফরকারী জাহাজটিকে স্বাগত জানায়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা সেই জাহাজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আইএসপিআর বলেছে, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা পেশাগত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিনিময়ের সুযোগ পাবে। পারস্পরিক কার্যক্রম এবং পেশাগত উৎকর্ষ প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে উভয় দেশের নৌ সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সমন্বয় ঘটবে।এর মাধ্যমে উভয় দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিনিময়ের একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি হবে। সেই সঙ্গে উন্নত বিশ্বের নৌ প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নৌবাহিনীর উৎকর্ষ সাধন বেগবান হবে।

এর আগে ২০২২ সালেও মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ শুভেচ্ছা সফরে আসার তথ্য দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর বলেছে, শুভেচ্ছা সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত বিষয়ে মত বিনিময়, ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষণ ও পারস্পারিক সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়।

সফর শেষে শুক্রবার বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করার কথা রয়েছে মার্কিন জাহাজটির।

আন্তর্জাতিক

রসায়নবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। এরা হলেন জাপানের কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সুসুমু কিতাগাওয়া, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড রোবসন ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমর এম ইয়াঘি।

বুধবার (৮ অক্টোবর) রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ী হিসেবে তাদের নাম ঘোষণা করে। সুইডেনের স্টকহোমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস’ উদ্ভাবনের জন্য তিন বিজ্ঞানীকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

তারা এমন এক ধরনের আণবিক কাঠামো উদ্ভাবন করেছেন, যার অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল ফাঁকা স্থান—যার মধ্য দিয়ে গ্যাস ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ সহজে প্রবাহিত হতে পারে। এই বিশেষ গঠনগুলোকে বলা হয় মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক (Metal-Organic Frameworks বা MOFs)। নোবেল কমিটির মতে, তাদের এই কাজ রসায়নের ব্যাকরণ যেন এক নতুনভাবে রচিত হয়েছে।

এ ধরনের রাসায়নিক কাঠামোর মাধ্যমে মরুভূমির শুষ্ক বাতাস থেকে পানি আহরণ, কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ, বিষাক্ত গ্যাস নিরাপদে সংরক্ষণ কিংবা রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা সম্ভব।

নোবেল কমিটি জানিয়েছে, এই তিন বিজ্ঞানীর যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর থেকে রসায়নবিদরা ইতোমধ্যে হাজার হাজার ভিন্নধর্মী মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছেন, যেগুলো মানবজাতির বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

পুরস্কারের এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার তারা সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

গত বছর রসায়নেবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন তিন বিজ্ঞানী। এরা হলেন ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পার। এর মধ্যে ডেভিড বেকার যুক্তরাষ্ট্রের এবং ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার যুক্তরাজ্যের নাগরিক।

আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে জাঁকালো আয়োজনে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীর ঘরে জন্ম নেওয়া ওমর পেলেন রসায়নে নোবেল

‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ উদ্ভাবনের কারণে এ বছর রসায়নে নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। এর মধ্যে রয়েছেন ওমর এম ইয়াগি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

বর্তমানে মার্কিন নাগরিক হলেও ওমরের জন্ম হয়েছিল এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী বাবা-মায়ের ঘরে। নিজ দেশ ফিলিস্তিন থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ওমরের বাবা-মা চলে যান জর্ডানের আম্মানে। ১৯৬৫ সালে সেখানেই জন্ম হয় তার।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবার অনুপ্রেরণায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। ওই সময় খুব বেশি ইংরেজি না জানলেও যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে ভর্তি হন। এরপর সেখানেই গ্র্যাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে পিএইচডি করেন।

জর্ডানে যে সময় ছিলেন তখন বাবা-মায়ের সঙ্গে অন্য আরও ভাইবোনদের নিয়ে মাত্র একটি রুমে থাকতে হতো তাকে। এছাড়া যেখানে থাকতেন সেখানে পানির প্রকট সমস্যা ছিল। প্রতি দুই সপ্তাহে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য পানি আনার সুযোগ পেতেন তারা। এ কারণে পরবর্তীতে পানি সংগ্রহ বিষয় নিয়ে কাজ করেন তিনি।

২০২১ সালে সৌদি আরব তাকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়। ভিশন ২০৩০ এর অংশ হিসেবে দেশটির নাগরিক হন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় থাকা জ্ঞানী ও গুণী অনেককে নাগরিকত্ব দিয়েছে সৌদি।

এদিকে ওমরের সঙ্গে এ বছর রসায়নে নোবেল পেয়েছেন আরও দুজন। তারা হলেন সুসুমু কিতাগাওয়া এবং রিচার্ড রবসন। সুসুমু জাপানের কিউটো বিশ্ববিদ্যালয়, অপরদিকে রিচার্ড রবসন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

আন্তর্জাতিক

ওমানের দুকুম সিদরা নামে একটি এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের সাতজন প্রবাসী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ওমান সময় বিকেলে এ দুর্ঘনা ঘটে।

নিহতদের সবাই সাগরে মাছ ধরার পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশি প্রবাসীদের একটি বড় অংশ বসবাস করে।

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সন্দ্বীপজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের মাতম চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতদের সহকর্মী শিপন এবং সজীব চৌধুরী জানিয়েছেন, নিহতরা সবাই সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। আজ দুপুরে তারা সাগরে কাজ শেষে আবাসস্থলে ফিরছিলেন। পথে দুকুম সিদরা এলাকায় পৌঁছানোর পর একটি বেপরোয়া গতির গাড়ি তাদের বহনকারী গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই সাতজন প্রাণ হারান।

তাদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন সারিকাইত ইউনিয়নের আলী আকবার সেরাংয়ের ছেলে মোহাম্মদ আমিন সওদাগর, শহীদ উল্লার ছেলে আরজু, মনু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ বাবলু, সিদ্দিক আহমেদের ছেলে সাহাব উদ্দিন, ইব্রাহিম মিস্ত্রির ছেলে মোহাম্মদ রকি, জামাল উদ্দিনের ছেলে জুয়েল।

এছাড়া বাকি অন্যজনের পরিচয় শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আন্তর্জাতিক

ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশি স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ‘স্টার্টআপ কানেক্ট’ আয়োজন করেছে। এ অনুষ্ঠানে ৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা অংশ নেন।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর)  ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, ‘স্টার্টআপ কানেক্ট’ ভারত ও বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির ওপর জোর দেয় এবং সহযোগিতার সুযোগগুলো প্রদর্শন করে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি  এবং ভারতীয় উভয় স্টার্টআপই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তাদের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, শক্তিশালী আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারে এবং ভবিষ্যৎমুখী অংশীদারিত্বে ভাগাভাগি করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে তা তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ভারত-বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে উদ্ভাবনী-নেতৃত্বাধীন প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে স্টার্টআপগুলো কেবল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সমাধান প্রদানই করে না, বরং নতুন ধারণা এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দুই দেশকে সংযুক্ত করার সেতু হিসেবেও কাজ করে। হাই কমিশনার ভার্মা আশা প্রকাশ করেন যে ‘স্টার্টআপ কানেক্ট’ প্ল্যাটফর্ম ভবিষ্যৎমুখী সহযোগিতার শক্তির ওপর ভিত্তি করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য একটি নতুন আখ্যান তৈরি করবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং এমসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট  হাবিবুল্লাহ এন. করিম বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্টার্টআপ খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।

আইকোরি এবং টেন মিনিট স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা  মির্জা সালমান হোসেন বেগ বাংলাদেশে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ এবং স্টার্টআপ খাতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সফল সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

শপআপ বাংলাদেশেরসহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও  আতাউর রহিম চৌধুরী, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি প্রতিভাদের অ্যাক্সেস এবং সর্বোত্তম অনুশীলন গ্রহণে ভারতের সাথে অংশীদারিত্বের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন এ ধরনের বিনিময় আন্তঃসীমান্ত উদ্ভাবনী সহযোগিতা, তহবিল অ্যাক্সেস, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বাজার অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে। এ অনুষ্ঠানটি চলতি বছরের ৯-১০ অক্টোবর কোয়েম্বাটুরে অনুষ্ঠিতব্য তামিলনাড়ু গ্লোবাল স্টার্টআপ সামিট  সামনে রেখে আয়োজন করা হয়।  যেখানে বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি স্টার্টআপ অংশগ্রহণ করবে। ভারতের বৃহত্তম স্টার্টআপ সমাবেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে স্বীকৃত, এ বছরের তামিলনাড়ু গ্লোবাল স্টার্টআপ সামিটে ৩৯টি দেশের প্রতিনিধিদের একত্র করবে, যা স্টার্টআপ  বিনিয়োগকারীদের, শিল্প নেতাদের এবং নতুন ব্যবসায়িক সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি প্রাণবন্ত প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে।

আন্তর্জাতিক

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও তাদের আশ্রয়দাতা কক্সবাজারের স্থানীয়দের জন্য মৌলিক অবকাঠামো এবং জরুরি সেবার জন্য ৫৮.৬ মিলিয়ন ডলারের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এডিএফ) অনুদান এবং ২৮.১ মিলিয়ন ডলারের স্বল্প সুদে একটি ঋণের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এডিবি সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে এডিএফ অনুদান দিয়ে থাকে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং আজ বাংলাদেশ ও এডিবি’র পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

ঢাকায় ইআরডি কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এডিবি’রর কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয়দের স্থিতিশীলতা ও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ জোরদারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থী শিবিরগুলার বাসিন্দা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করছি।

তিনি আরো বলেন, নতুন এই অনুদান জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আমাদের পূর্ববর্তী সহায়তা ও এর অতিরিক্ত অর্থায়নের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এডিবি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের সুবিধার্থে মোট ১৭১.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ঋণ প্রদান করেছে।

‘ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস অ্যান্ড লাইভলিহুড ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটিজ ইমপ্রুভমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য, সড়ক ও সেতু, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুত এবং দুর্যোগ সহনশীলতা উন্নত ও সম্প্রসারিত করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার ও ভাসান চর অঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এবং আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগণের জন্য পৃথক পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা হবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজারে সোলার-পাওয়ারড স্ট্রিটলাইট স্থাপন বা প্রতিস্থাপন, ভাসান চরে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন এবং রান্নার জন্য বায়োগ্যাস উৎপাদনকে সমৃদ্ধ করা হবে।

কক্সবাজার ও ভাসান চরে প্রাকৃতিক সমাধানে ড্রেনেজ খাল পুনঃস্থাপন করা হবে এবং নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সুবিধা বাড়াতে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের ৯টি উপজেলায় মিনিপাইপড পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের নয়টি উপজেলাজুড়ে ক্ষুদ্র পাইপযুক্ত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

টেকনাফের পানি সংকটাপন্ন এলাকায় পরিশোধিত পানি সরবরাহের জন্য পালংখালী ইউনিয়ন ও উখিয়ায় একটি ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে এবং একটি ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। কক্সবাজার ও ভাসান চরে রাস্তার উন্নয়নের ফলে গতিশীলতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।

বর্তমানে কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ বাস করছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী ও শিশু। নোয়াখালী জেলার ভাসান চরে ৩৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়েছে।

এডিবি হলো একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার বর্তমানে সদস্য ৬৯টি। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য ৫০টি।

আন্তর্জাতিক