আন্তর্জাতিক

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই প্রথম পণ্যবাহী কোনো জাহাজ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে এসেছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাহাজটি করাচি থেকে রওনা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে।

ঘটনাটিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশন।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের নৌবাণিজ্য পুনর্স্থাপনে চিন্তিত ভারত হয়েছে বলা হয় পাকিস্তান হাইকমিশনের বিবৃতিতে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এ ঘটনাকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে একটি প্রধান পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।

তবে এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দিল্লি।

আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে এ ধরনের সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের কাছাকাছি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্র বলেছে, গত বছর মোংলা বন্দরের একটি টার্মিনালের অপারেটিং অধিকার সুরক্ষিত করে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত জয়লাভ করেছিল ভারত। কিন্তু এখন, পাকিস্তান চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। দুটি বন্দরের সমুদ্রপথে এখন পাকিস্তানি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেবে। বিষয়টি অবশ্যই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে কারণ, মিয়ানমার চট্টগ্রামের খুব কাছাকাছি ।

বুধবার করাচির ওই জাহাজটি তিনশর বেশি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে।

জাহাজ ভেড়ানো সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ।

এ সময় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এই নতুন রুটটি পণ্য পরিবহনের চেইনকে স্ট্রিমলাইন করবে, ট্রানজিট সময় কমিয়ে দেবে এবং উভয় দেশের জন্য নতুন ব্যবসার সুযোগ খুলে দেবে।

টেলিগ্রামকে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও মোংলা বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং উভয়ই পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ বাইরে রয়েছে। সিঙ্গাপুর বা কলম্বোতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য হতো। এখন যেহেতু পাকিস্তানি জাহাজগুলি সরাসরি চট্টগ্রামে আসবে, ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির জন্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধ পণ্য পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারবেন না।

চট্টগ্রামে ২০০৪ সালের অস্ত্র উদ্ধারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অবৈধ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা এখনও সবচেয়ে বড় ঘটনা সেটি।

এদিকে পাকিস্তানের জাহাজ বাংলাদেশে নোঙরের বিষয়টিকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের নতুন শাসনব্যবস্থা সরাসরি সমুদ্র সংযোগকে স্বাগত জানায়। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধিরও আশা করে কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বাণিজ্যের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়নের নিচে নেমে গিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বলেছেন, তাঁর সরকার দেশের তৈরি খাতে আরও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করার প্রয়াসে শ্রম খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করবে।

এখানে প্রাপ্ত এক খবরে বলা হয়েছে, আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করার সময় অধ্যাপক ইউনূস তাকে বলেন, ‘শ্রম ইস্যুটি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের অন্যতম এবং আমরা সকল শ্রম সমস্যার সমাধান করতে চাই।’

থেরেসা মে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রম ইস্যুতে কাজ করার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মানব পাচার ও অভিবাসন ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস আইনি মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অভিবাসন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি ঝুঁকি ও অনিয়মিত অভিবাসন কমিয়ে দেবে এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।

অধ্যাপক ইউনূস থেরেসা মেকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় বাংলাদেশী তরুণদের আঁকা গ্রাফিতি ও ম্যুরাল বিষয়ক বই আর্ট অফ ট্রায়াম্ফের একটি অনুলিপি উপহার দেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, তুরস্ক এবং আজারবাইজানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ওভালে অফিসে পৌঁছান।

এদিন স্থানীয় সময় সকালে ফ্লোরিডার বাসভবন থেকে গাড়িবহর নিয়ে বের হতে দেখা যায়। এরপর তিনি বিমানে করে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে রওনা দেন। ওভাল অফিসে যাওয়ার আগে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।

গত জুনে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের পর এই প্রথম বাইডেন ও ট্রাম্পের সাক্ষাৎ হলো। সেই বিতর্কের পর চাপের মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাইডেন। খবর বিবিসি

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকান জাতি ও বিশ্ব যেসব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা এবং অভ্যন্তরীণ নীতি সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সেগুলো নিয়ে উভয় নেতা আলোচনা করেছেন। তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ভালো আলোচনা হয়েছে।

আলোচনা থেকে বেরোনোর পর ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, সেখানে আমাদের বর্তমান অবস্থান কী সে সম্পর্কে আমি তার মতামত জানতে চেয়েছিলাম এবং তিনি তা আমাকে জানিয়েছেন, তিনি খুব উদারভাবেই কথা বলেছেন।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি। আর এর আগে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করতে বুধবার(১৩ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠকে বসেন বাইডেন ও ট্রাম্প।

আন্তর্জাতিক

আগামী জানুয়ারিতেই হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেই তিনি প্রধান প্রধান পদগুলো সাজানো শুরু করেছেন।

বুধবার তিনি দেখা করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি মার্কো রুবিওর নাম ঘোষণা করেছেন। তুলসী গ্যাবার্ড হচ্ছেন আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের নতুন প্রধান। ট্রাম্প অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে নিয়েছেন কংগ্রেসম্যান ম্যাট গায়েৎজকে।

এদিকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা জিতেছে রিপাবলিকান পার্টি। বিবিসির মার্কিন সহযোগী সিবিএস নিউজের পূর্বাভাসে এমনটি জানানো হয়েছে।

রিপাবলিকান পার্টি কমপক্ষে ২১৮টি আসনে জিততে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের চূড়ান্ত সংখ্যা ২২০-২২২ এর মধ্যে থাকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।

গত জুনে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের পর এই প্রথম বাইডেন ও ট্রাম্পের সাক্ষাৎ হলো। সেই বিতর্কের পর চাপের মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাইডেন।

ট্রাম্পের কিছু মনোনয়ন রাজনৈতিক মহলে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে, বিশেষত ম্যাট গায়েৎজকে অ্যাটর্নি জেনারেল পদে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত। এটি একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ, যা দুই দলের আইনপ্রণেতাদের মধ্যেই ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা গত দুদিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অন্তত ২০ জন সেনাকে হত্যা করেছে।

গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে নিপীড়নমূলক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে, তার প্রতিশোধ হিসেবে হামাসের যোদ্ধারা এই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজার উত্তরাঞ্চলে দিনের শুরুতেই পাঁচজন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। খবর পার্সটুডে।

এর আগের দিন রোববার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা অঞ্চলে আরও ১৫ জন ইসরায়েলি সেনার প্রাণহানি ঘটে। তবে ইসরায়েল সরকার চারজন স্টাফ সার্জেন্ট সেনা সদস্য নিহতের বিষয়টি স্বীকার করেছে।

হামাসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে গুণগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, যা ইসরায়েলের ব্যর্থতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত আমাদের আক্রমণের মুখে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তাদের যুদ্ধযান ধ্বংস হচ্ছে এবং তাদের কোনো লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে আরও চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। গাজায় হামলার পর থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা এটি এখন পর্যন্ত।

সোমবার (১২ নভেম্বর) আরব লিগ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া এক ভাষণে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, সৌদি আরব তা তীব্রভাবে নিন্দা জানায় এবং এ হামলাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলের হামলার সমালোচনা করে সৌদি যুবরাজ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলকে ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানাতে বাধ্য করা। তেহরানের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক উন্নতির ইঙ্গিত দিয়ে তিনি ইসরায়েলকে ইরানে হামলা না চালাতে সাবধান করেন।

সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য নেতারা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

এদিকে ইসরায়েলকে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করার দায়ে অভিযুক্ত করে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারা ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা’।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মধ্য দিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে, হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় একটি সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত চলমান এই অভিযানে গাজায় ৪৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় বিগত ছয় মাসের সময়কালে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু।

গাজায় অবস্থানরত জাতিসংঘের কর্মী এবং ত্রাণ সহায়তার ওপর ইসরায়েলের অনবরত আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানান সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা।

সম্মেলনে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি সহ ইসলামি বিশ্ব নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

গাজা এবং লেবাননে ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে আরব এবং মুসলিম দেশগুলোর নেতারা সোমবার সৌদি আরবে একটি সম্মেলনে মিলিত হবেন।

সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এসপিএ-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি এবং লেবাননি ভূখণ্ডে বাড়তে থাকা সহিংসতা, বিশেষ করে ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসন আরব ও ইসলামিক নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

সম্মেলনটি গত বছরের নভেম্বরের আরব-ইসলামিক সম্মেলনের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই সম্মেলনে রিয়াদে গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন অঞ্চলের বিপজ্জনক ও অভূতপূর্ব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।

এসপিএ জানিয়েছে, ‘এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরব এবং ইসলামিক দেশগুলোর ঐক্যের প্রয়োজন’।

সোমবারের এই সম্মেলনে সৌদি আরব, জর্ডান, মিশর, কাতার, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, এবং ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও যোগ দেবেন আরব লিগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিবরাও।

তারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং স্থায়ী ও ব্যাপক শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

এ উপলক্ষ্যে রোববার সৌদি রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম আল-আখবারিয়া নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু এবং লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির রিয়াদে পৌঁছানোর দৃশ্য সম্প্রচার করেছে। সূত্র: আরব নিউজ

আন্তর্জাতিক

বিশাল ব্যবধানে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিরঙ্কুশ জয়ের পর ট্রাম্প যেমন অসংখ্য শুভেচ্ছা বার্তায় ভেসেছেন, ঠিক তেমনি তার জয় হতাশার কারণও হয়ে উঠেছে অনেকের মাঝে। যার জেরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ঘোষিত নীতির প্রতিবাদেই শুরু হয় এ বিক্ষোভ। রোববার দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, মূলত নারীদের গর্ভপাতের বিরোধিতা ও অভিবাসীদের দেশ ছাড়া করার প্রতিশ্রুতিকে কেন্দ্র করেই শনিবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে বেশ বিপাকেই পড়েছেন ট্রাম্প। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে ওয়াশিংটন ডিসি ও নিউইয়র্কেও।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীদের গর্ভপাতে অধিকার নিয়ে হুমকি, ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে এ বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নিতে নিউইয়র্ক, সিয়াটল ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে আসেন শত শত মানুষ।

বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীদের ‘আমরা আমাদের রক্ষা করব, আমরা পিছিয়ে যাব না, নিউইয়র্কবাসীরা একসঙ্গে দাঁড়াও এবং আমরা এই ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াই করব’ লেখা বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। নিউইয়র্কে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন পরামর্শক গ্রুপের কর্মীরাও। তারা কর্মীদের অধিকার ও অভিবাসীদের বিষয়ে ন্যায়বিচারের আশ্রয় নেওয়ার দাবি জানান।

এছাড়া ওয়াশিংটন ডিসিতে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন সংগঠন ‘উইমেন্স মার্চ’র কর্মীরা। এছাড়া নারীদের পদযাত্রার মাধ্যমে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং অনেক নারী বিক্ষোভ যোগ দেন।

এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের হাতে ‘ভালো আচরণের নারীরা ইতিহাস তৈরি করেন না’, ‘আপনারা কখনোই নিঃসঙ্গ নন’, ‘যেখানে আমার পছন্দের অধিকার নেই, সেখানে কোথায় আমার স্বাধীনতা’ ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড।

এছাড়া বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, আমরা জিতব!’ বিক্ষোভকারীরা সমবেত হন সিয়াটলের স্পেস নিডলের বাইরেও। সেখানে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘গণ-আন্দোলন গড়ে তুলুন এবং যুদ্ধ, নিপীড়ন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে লড়াই করুন’। সিয়াটলে বিক্ষোভকারীদের কারও কারও শরীরে ছিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এমন পোশাক। এছাড়া ওরেগনের পোর্টল্যান্ড শহর, পেনসিলভানিয়ার পিটাসবার্গেও বিক্ষোভ করেন অনেকে।

এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বুধবার হোয়াইট হাউজে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

শনিবার হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র প্রেস সেক্রেটারি কারিন জন পিয়ের এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউজে আসছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বুধবার তারা ওভাল দপ্তরে সাক্ষাৎ করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প। শনিবার পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ হলেও আগেই জয় নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। পূর্ণাঙ্গ ফল অনুসারে, দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের সব কটিতেই জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। সাতটির মধ্যে ছয়টিতে আগেই জিতে গিয়েছিলেন তিনি। অবশিষ্ট অ্যারিজোনার আসনটিতেও বিজয়ী হলেন ট্রাম্প।

শনিবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির ফল প্রকাশের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর্ব শেষ হলো। এ অঙ্গরাজ্যে রয়েছে ১১টি ইলেকটোরাল ভোট। এখানকার নির্বাচনি ফলাফলই ঘোষণা বাকি ছিল। এটিতে জেতায় ট্রাম্পের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১২ যা প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের থেকে অনেক বেশি। ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের ঝুলিতে গেছে ২২৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।

মার্কিন রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বরাবরই নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করে এই সাত অঙ্গরাজ্য। সেগুলো হলো- পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন, মিশিগান, জর্জিয়া, নেভাদা, অ্যারিজোনা ও নর্থ ক্যারোলিনা।

বলা হয়, এই ৭ অঙ্গরাজ্য যার দিকে ঝোঁকে আমেরিকার মসনদ যায় তার দখলেই। এই ৭ অঙ্গরাজ্যই এবার রিপাবলিকান প্রার্থীকে দুহাত উজাড় করে আশীর্বাদ দিয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের আগেই অবশ্য রিপাবলিকানরা দাবি করেছিলেন, দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো পুরোপুরি তাদের দখলেই থাকবে। সেটাই সত্যি হলো। একটিতেও জিততে পারেনি ডেমোক্রেটরা। ২০ জানুয়ারি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন ট্রাম্প।

২০২০ সালে জো বাইডেন অল্প ব্যবধানে জিতেছিলেন অ্যারিজোনায়। ১৯৯৬ সালে বিল ক্লিন্টনের পর কোনো ডেমোক্রেট সেই প্রথম জিতেছিলেন এখানে। কিন্তু এবার ট্রাম্পের জয়ে এই প্রদেশ ফের রিপাবলিকানদের দখলে চলে গেল।

এখানে প্রচারে এসে ট্রাম্প বারবার সীমান্ত সুরক্ষা, অভিবাসন ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কারণে ঘটে চলা অপরাধের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। ২০২৩ সালে রেকর্ডসংখ্যক অনুপ্রবেশকারীর প্রবেশ ঘিরে অ্যারিজোনার বহু মানুষই বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের মেয়েরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে জানিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এটি বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার আলাদা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কার্টার সেন্টারের এক প্রতিনিধি দল।তখন তিনি এসব কথা বলেন।

কার্টার সেন্টারের সিনিয়র অ্যাডভাইজর ল্যরা নিউম্যান বলেন, তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীরা কীভাবে তাদের জীবনমান উন্নয়ন ঘটাতে পারে সে বিষয়ে তারা কাজ করছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ছাত্রদের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। এ আন্দোলনে মাঝপথে ইন্টারনেট বন্ধ করে গুম ও খুনের তথ্য গোপন করে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কেউ যেন এভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করতে না পারে সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে।

ডিজিটালাইজেশনের নামে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছে ফলে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সুফল পায়নি। সে ক্ষেত্রে এক ধরনের ডিজিটাল ডিসক্রিমিনেশন তৈরি হয়েছে আমরা তা দূর করতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের ডিজিটাল লিটারেসি দরকার। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে।

জনগণ তথ্য পাওয়ার জন্য উদগ্রীব, এই সময় তারা সঠিক তথ্য না পেলে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানান কার্টার সেন্টারের সিনিয়র অ্যাডভাইজার। কীভাবে দেশব্যাপী বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তারা দেশব্যাপী তথ্য প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন যারা তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। দেশব্যাপী তথ্য প্রচারের এ কার্যক্রম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেও মনিটর করা হয়।

উপদেষ্টা আরও বলেন, সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে যেসব কমিশন গঠন করা হয়েছে তারা নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু করে জনগণের মতামত সংগ্রহ করছে। এসব বিষয়ে কার্টার সেন্টারের কোনো মতামত থাকলে তা প্রদানের জন্য উপদেষ্টা প্রতিনিধি দলকে আহ্বান জানান।

কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি জানান, জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তথ্য প্রাপ্তিতে নারীদের অধিকতর সক্ষম করে তোলার পাশাপাশি, জাতীয় ও কর্ম এলাকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহকে কার্যকর এবং শক্তিশালী করার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভূমিকা রাখবে।

এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, কার্টার সেন্টার বাংলাদেশের চিফ অব পার্টি সুমনা সুলতানা মাহমুদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের পাশাপাশি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছিল কাতার।

হামাস ও ইসরায়েল ‘আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আন্তরিক ইচ্ছা না দেখানো’ পর্যন্ত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতার চেষ্টা থেকে কাতার বিরত থাকবে, বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছেন।

শনিবার তিনি আরও জানান, পারস্য উপসাগরীয় ক্ষুদ্র আরব দেশটি আরও সিদ্ধান্তে এসেছে যে দোহায় হামাসের রাজনৈতিক দপ্তর ‘আর তাদের উদ্দেশ্য সাধন করছে না’।

এ বিষয়ে কাতার হামাসকে সতর্ক করেছে বলে আল আরাবিয়া নিউজ জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “কাতার একইসঙ্গে ইসরায়েল ও হামাসকে জানিয়ে দিয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা শুভ বিশ্বাসের সঙ্গে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হবে, তারা (দোহা) মধ্যস্থতা আর চালিয়ে যেতে পারবে না। আর এর ফলে হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরও আর এর উদ্দেশ্য সাধন করতে পারবে না।”

যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের পাশাপাশি কাতার গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে বিরতির ব্যবস্থা করার জন্য চলমান আলোচনায় বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছিল। অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হওয়া এ আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে, হামাস স্বল্প মেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাতার ইতোমধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত ‘ইসরায়েল ও হামাসের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়ে দিয়েছে’।

তিনি বলেন, “কাতার মার্কিন প্রশাসনকে জানিয়েছে, যখন হামাস ও ইসরায়েল আন্তরিক ইচ্ছার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে চাইবে তখন তারও মধ্যস্থতায় ফের যুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে।”

এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাতারের কাছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসকে আর নিরাপদ আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

ঊর্ধ্বতন কূটনৈতিক সূত্রগুলো আল আরাবিয়াকে নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ১০ দিন আগে দোহা হামাসকে দেশটি ছেড়ে যেতে বলেছে কারণ তারা গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামাসকে কাতার যে অনুরোধ জানিয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের দাবি বা অনুরোধের কারণে নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, “জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তাবগুলো বারবার প্রত্যাখ্যান করার পর এর (হামাসের) নেতাদের যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অংশীদার (দেশের) রাজধানীতে আর স্বাগত জানানো উচিত নয়। কয়েক সপ্তাহ আগে হামাস আরেকটি জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর আমরা এটি কাতারকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি।”

শুক্রবার একদল রিপাবলিকান সেনেটর বাইডেন প্রশাসনকে দোহায় বসবাস করা হামাস কর্মকর্তাদের সম্পদ জব্দ করার জন্য এবং হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খালেদ মেশাল ও খলিল আল হায়াকে প্রত্যর্পণ করার জন্য কাতারকে চাপ দিতে বলেছে। পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাদের আতিথেয়তা দেওয়াও বন্ধ করতে বলেছে।

ওই সেনেটররা লিখেছেন, “হামাসের পরাজয় আওতার মধ্যে এসে গেছে আর বিদেশে এর নেতাদের নিরাপদে বসবাসের ইতি ঘটানো একে পরাজিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাতারের একটি চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটি হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিয়েছিল। হামাস গাজা থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে উচ্ছেদ করার পর গোষ্ঠীটির সঙ্গে যোগাযোগের একটি পথ খোলা রাখার জন্য এর রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিতে দোহাকে অনুরোধ করেছিল ওয়াশিংটন।