আন্তর্জাতিক

জিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর ও অন্য সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে চীন।

এ বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন এবং দাবি করে আসছে, বন্দিশিবিরগুলো মূলত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

তবে এবার বিভিন্ন দেশ একসঙ্গে উইগুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে চীনের এ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় দেশটির ওপর চাপ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানসহ আরও অনেক দেশ প্রতিবাদ করায় বিপাকে পড়েছে চীন। এসব দেশের পক্ষ থেকে জার্মানির জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফ হেউসজেন বলেন, জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন দেশগুলো।

তিনি বলেন, জিনজিয়াংয়ে নিরপেক্ষ পরিদর্শকদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক যেন তারা সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারে। জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১০ লাখ উইগুরকে বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং তাদের মানবিক এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাদের কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে, তাদের দিয়ে জোরপূর্বক কাজ করানো হচ্ছে এবং উইগুর নারীদের বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘে উপস্থাপিত জার্মানির ওই বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইউ) সদস্য দেশগুলো ছাড়াও কানাডা, হাইতি, হন্ডুরাস, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডসহ মোট ৩৯টি দেশ প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দেয়।

একাধিক কূটনীতিক হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা না করলে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে বিপাকে পড়বে চীন।

আন্তর্জাতিক

বাহরাইনের মানামায় অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছেন সৌদি আরবের রাজপুত্র তুর্কি বিন আল ফয়সাল।

আল জাজিরা জানায়, রোববার (৬ ডিসেম্বর) মানামা ডায়ালগ শীর্ষ সম্মেলনে অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রাজপুত্র তুর্কি বলেন, ‘নিরাপত্তা বিষয়ক অতি তুচ্ছ অভিযোগের ভিত্তিতে তরুণ, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষসহ সবাইকে বন্দি শিবিরে আটক করে রাখে ইসরায়েল। যারা কোনো সুবিচারের নিশ্চয়তা ছাড়াই বন্দিজীবন পার করছে। ’

ইসরায়েলের ‘উচ্চ নৈতিক নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ থাকার চিন্তাধারা পরিবর্তন করে ‘পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদী’ শক্তির অধীনে থাকা ফিলিস্তিনিদের জীবনযাপনের বর্ণনা দেন রাজপুত্র তুর্কি আল ফয়সাল।

ইসরায়েল সেনাদের হত্যাকাণ্ড ও বসতি উচ্ছেদের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের সেনারা যাদের মন চায় তাদের ঘর ধ্বংস করছে এবং যাকে ইচ্ছা তাকে হত্যা করছে। ’

অত্যন্ত কঠিন ভাষায় তিনি আরও বলেন, ‘অতি ক্ষুদ্র অস্তিত্ব নিয়ে হুমকিতে থাকা দেশ, যাকে চারপাশের রক্তপিপাসুরা অস্তিত্বহীন করতে মরিয়া, অথচ তারা বলে, সৌদি আরবের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে তারা বেশ আগ্রহী। ’

অবশ্য ইসরায়েল বিষয়ে সৌদি প্রিন্স আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থানের কথা জানাননি। ইসরায়েল বিষয়ে তার অবস্থানকে সৌদি বাদশাহ সালমানের অবিকল রূপ বলে আখ্যায়িত করা হয়। অবশ্য সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বেশ তৎপর।

প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল দুই দশকের বেশি সময় ধরে সৌদি আরবের আরবের গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি সৌদি রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে কাজ করেন।

আন্তর্জাতিক

দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করেছে বাংলাদেশ ও ভুটান। রোববার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশকে ভুটানের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক দিনে এই অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই হয়।

ভার্চ্যুয়াল এ অনুষ্ঠানে নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিপত্রে সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থ-বাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সংযুক্ত ছিলেন।

চুক্তি সইয়ের পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যেকার সম্পর্কের আরও উন্নতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন। তারা দুই দেশের ঐতিহাসিক ও বিদ্যমান সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে এই চুক্তি সইয়ের ফলে বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। আর ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে পণ্য সংখ্যা বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা থেকে বেড়ে ৫৭ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।

ভুটানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, প্লাস্টিক, ওষুধ, গৃহসজ্জাসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী রপ্তানি করে থাকে। আর ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর, সবজি-ফলমূল, নির্মাণসামগ্রী, কেমিক্যালস ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসাবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান। ঐতিহাসিক দিনটি সামনে রেখে ৬ ডিসেম্বর চুক্তি সই হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. টান্ডি দর্জি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমসহ দুই দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী এবং সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হবে। ফলে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বর্তমান প্রাপ্ত বাংলাদেশের কিছু বাণিজ্য সুবিধা লোপ পাবে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার ও নির্দেশনার ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর কার্যক্রম নিয়েছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে থাকছে- বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তিসমূহ সময়োপযোগী করা, পিটিএ এবং এফটিএ সস্পাদন। বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য। ডব্লিউটিও বিধি-বিধান মেনে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রিফারেন্টাল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) আলোচন/নেগোশিয়েশন অব্যাহত রেখেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২২-২৩ আগস্ট ২০১৯ সালে ভুটানের সঙ্গে থিম্পুতে পিটিএ নেগোশিয়েশন কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৬ জুন ২০২০ ভিডিও কনফারেলিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় খসড়া পিটিএ চুক্তি ও এর সঙ্গে সংযুক্ত রুলস অব ডিটারমিনেশন অব ওরজিন (আরও) নিজ নিজ দেশের অনুমোদনের পর সইয়ের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। বিধি মোতাবেক চুক্তিটি সইয়ের পর ডব্লিটিওতে নোটিফাই করা হবে।

২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১২ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ শূন্য দশমিক ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে ও একই সময়ে আমদানি করে ১২ দশমিক ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্য ৫৭ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। এ সময় বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৭ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে ভুটান থেকে আমদানি হয় ৪৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

আন্তর্জাতিক

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুই রাজ্য আসামের ধুবরি থেকে মেঘালয়ের ফুলবাড়ি পর্যন্ত তৈরি হতে চলেছে দেশটির দীর্ঘতম সেতু ৷ ব্রহ্মপুত্র নদের উপরে তৈরি হবে এই সেতুটি। সেতুটি সংযুক্ত করবে ১৯.৩ কিলোমিটার পথকে৷

জানা গেছে, ২০২৬- সালের মধ্যে শেষ হবে সেতুটির নির্মাণ কাজ৷ ভারতের সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত লাগিয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড৷

এই প্রকল্পটিতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে জাপানের সংস্থা জাইকা৷ এই সেতুটি তৈরি হলে আসাম ও মেঘালয়ের মধ্যেকার আড়াই ঘণ্টার দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে মাত্র ২০ মিনিটে৷ ১৯.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি তৈরি হলে এটাই হবে ভারতের দীর্ঘতম সেতু৷ আর এই সেতুটি ভারতকে সংযোগ করবে ভুটান এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে। এছাড়া মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং লাওসের মতো দেশগুলোর সাথেও ভারতের যোগাযোগ আরো তরান্বিত হবে।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এসময় প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কোভিড-১৯ অতিমারি সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ কাটিয়ে উঠতে শান্তির সংস্কৃতির মহান বার্তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথমবারের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে আসছে। এ বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভার্চ্যুয়ালি ‘শান্তির সংস্কৃতি: কোভিড-১৯ এর সময়ে পৃথিবীকে আবার ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের ফোরামটি অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড-১৯ সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত সঙ্কট মোকাবিলার ক্ষেত্রেও যে শান্তির সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে উচ্চ পর্যায়ের ওই ফোরাম তারই স্বীকৃতি।

সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশনটি গ্রহণ শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গভীর বিশ্বাস ও আস্থার বহিঃপ্রকাশ। রেজুলেশনটিকে উদারভাবে সমর্থন করার জন্য রাষ্ট্রদূত ফাতিমা সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, রেজুলেশনটির সার্বজনীনতার কারণেই আজ জাতিসংঘের প্রধান প্রধান কার্যাবলীতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী ধারণায় পরিণত হতে পেরেছে।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আরও বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত যা বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘ সনদের দায়বদ্ধতার পরিপূরক হিসেবেও ভূমিকা রেখে চলেছে।

শান্তির সংস্কৃতিকে বাংলাদেশের জনকেন্দ্রিক জাতীয় উন্নয়ন কর্মসূচির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

শিক্ষা, টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মানবাধিকার সুরক্ষা, পুরুষ ও নারীর সমতা, গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, সহনশীলতা ও সংহতি বজায় রাখা, তথ্য ও জ্ঞানের অবাধ প্রবাহ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা-এই আটটি ক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক নীতি কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি পুরোপুরি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

শান্তির সংস্কৃতি উন্নয়নে অপরিহার্য বিষয়সমূহ যেমন শান্তি, সহিষ্ণুতা, উদারতা, অন্তর্ভুক্তি ও পারষ্পরিক সম্মান ইত্যাদি যাতে তরুণ সমাজ ধারণ করতে পারে সেজন্য শান্তির শিক্ষা ও বৈশ্বিক নাগরিক হওয়ার শিক্ষার মাধ্যমে শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংসার ধারণাটি এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশ গৃহীত আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি, সহিংস উগ্রবাদ দমন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাসহ বিভিন্ন জাতীয় কর্মসূচির উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আরও বলেন, আমরা যেহেতু কোভিড-১৯ অতিমারির বিরুদ্ধে এবং পৃথিবীকে পূর্বের ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি, তাই আসুন, আমরা আমাদের জনগণের জন্য, বিশ্বের জন্য এবং উন্নত পৃথিবী বিনির্মাণের বাধা অপসারণের জন্য শান্তির সংস্কৃতি সম্পর্কিত ঘোষণা ও কর্মসূচির প্রতি পুনঃপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই।

এবছর ১১০টি জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্র বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা এটি গ্রহণের সময় বক্তব্য দেন।

আন্তর্জাতিক

তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বাঁধ নির্মাণের আগে চীন তার সকল প্রতিবেশী দেশের স্বার্থের দিকটি বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের চীনা দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা। বুধবার তিনি এমনটি জানান।

সোমবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয় যে তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাটির মুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি জলবিদ্যুৎ কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নদের ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশে জলপ্রবাহ বিঘ্নিত হতে পারে বলে ধারণা করছিলেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা ।

এদিকে চীনের বাঁধ নির্মাণের খবর প্রকাশ হওয়ার পর পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত ছিলো ভারত। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১০ গিগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করছে তারা।

এ বিষয়ে একটি বিবৃতিতে ভারতের চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তা জি রং বলেন, বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই নদের ওপর যে কোনও প্রকল্প উজান এবং ভাটির উভয় দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনার করে বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার মাধ্যমে করা হবে।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের বাণিজ্যিক বিমানকে নিজেদের আকাশপথ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে সৌদি আরব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সৌদি বাদশাহ মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছে ইসরাইলি গণমাধ্যম। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।

সংযুক্ত আরব আমিরাত যেতে ইসরাইলি বাণিজ্যিক বিমান এখন থেকে সৌদি আরবের আকাশপথ ব্যবহার করতে পারবে।

কুশনার সৌদি প্রশাসনের বৈঠকে বিমান চলাচলের ইস্যুটি উত্থাপন করেন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত এভি বেরকোইৎস ও ব্রায়ান হুক।

মঙ্গলবার সকালে প্রথমবারের মতো ইসরাইলি বাণিজ্যিক বিমান আরব আমিরাত যাচ্ছে। এর আগেই যুক্তরাষ্ট্র তার ঘনিষ্ঠ মিত্রের সুবিধার জন্য সৌদি আরবের আকাশপথ ব্যবহারের অনুমতি পাইয়ে দিল।

ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কেনার চেষ্টা করে আসছে আরব আমিরাত। সম্প্রতি আরব আমিরাত ছাড়াও ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় মধ্যপ্রচ্যের আরব দেশ বাহরাইন ও আফ্রিকার মুসলিম দেশ সুদান।

আন্তর্জাতিক

সরীসৃপ ও ছোট প্রাণীদের পারাপারের জন্য সেতু বানাচ্ছে ভারতের পর্বতময় উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বন কর্মকর্তারা। বনের ভিতর দিয়ে যাওয়া ব্যস্ত মহাসড়ক পারাপারে প্রাণীদের জন্য ব্যবহৃত হবে সেতুটি।

বাঁশ, পাট ও ঘাস দিয়ে তৈরি ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের ‘ইকো সেতু’টি বিশ্বে প্রথম সেতু বলে দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

উত্তরাখণ্ডের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র নৈনিতালে যাওয়ার পথে পড়েছে ব্যস্ত মহাসড়কটিতে দ্রুতগামী গাড়ির নিচে চাপা পড়ে বহু প্রাণী মারা যায়। তাদের রক্ষা করতে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

সেতুটির দিকে প্রাণীদের আকর্ষিত করতে কর্মকর্তারা এখন লতা ও ঘাস লাগাচ্ছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।

প্রাণীদের চলাফেরা নিরীক্ষণ করার জন্য কর্মকর্তারা সেতুটির উভয়পাশে ক্যামেরা বসিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের বন কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর জোশি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একজন বন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি একটি গভীর বন। হাতি, চিতা বাঘ, হরিণ, বনগরুর মতো প্রাণীও এই এলাকা দিয়ে চলাচল করে। দূর থেকেই চালকরা তাদের দেখতে পায় আর গাড়ির গতি কমাতে বা গাড়ি থামিয়ে দিতে পারে, কিন্তু তারা খুব কমই সাপ, গিরগিটি, গুইসাপ বা কাঠবিড়ালির জন্য এমনটি করে।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেন তার হোয়াইট হাউস কমিউনিকেশন্স টিমের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। টিমের সদস্য সবাই নারী। দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম কেবল নারী সদস্য নিয়ে হোয়াইট কমিউনিকেশন্স টিম গঠন করা হলো।

এদের মধ্যে আছেন হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রেসসচিব জেন সাকিও। বারাক ওবামার সময়ে কমিউনিকেশন্স টিমের সদস্য ছিলেন তিনি। খবর আল জাজিরার

বাইডেন ও কমলা হ্যারিস ২০ জানুয়ারির শপথ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে ভিন্ন ধরনের এই পদক্ষেপ নিলেন। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, এই প্রথম সব নারী নিয়ে কমিউনিকেশন্স টিম করতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। দেশ পরিচালনার কাজে সহায়তা করার জন্য অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ নারী কর্মকর্তাদের নিয়ে এই টিম গঠন করা হয়েছে।

৪১ বছর বয়সী সাকি ছাড়াও এই টিমে রয়েছেন, কেট বেডিংফিল্ড, অ্যাশলে এটিয়েন্নে, সিমন স্যান্ডার্স, পিলি টোবার ও এলিজাবেথ আলেকজান্ডার। নিয়ম অনুযায়ী হোয়াইট হাউস কমিউনিকেশন্স টিমের এই সদস্যদের নিয়োগে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।

উল্লেখ্য, গোয়েন্দা প্রধান ও হোমল্যান্ড সিক্যুরিটি প্রধান হিসেবে এই প্রথম দু’জন নারীকে নিয়োগ দিয়েছেন বাইডেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে জয়ী জো বাইডেন তার সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার ৬ সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন। নতুন মন্ত্রীসভায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও আরো শীর্ষ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে জানা গেছে। বাইডেনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ওই ছয় জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো।

সিএনএন বলছে, ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির দায়িত্ব দিয়েছেন জো বাইডেন। তার প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অভিজ্ঞ কূটনীতিক অ্যান্টোনি ব্লিনকেনকে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।৫৮ বছর বয়সী ব্লিনকেন হচ্ছেন বাইডেনের দীর্ঘকালীন একজন সহযোগী। বারাক ওবামার শাসনামলে ব্লিনকেন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মার্কিন সিনেট নিশ্চিত করলে ব্লিনকেন মাইক পম্পেও’র স্থলাভিষিক্ত হবেন।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জেনারেল সার্ভিস এডমিনিস্ট্রেশন বা জিএসএ বলছে তারা বাইডেনকে ‘আপাত বিজয়ী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।মূলত মিশিগানে নির্বাচনের ফল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্টিফায়েড হওয়ার পরপরই বাইডেনের জয় চূড়ান্ত স্বীকৃতি লাভ করে ।

এ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে দ্য জেনারেল সার্ভিস এডমিনিস্ট্রেশন বা জিএসএ । জিএসএ প্রধান এমিলি মারফি ঐ চিঠিতে বাইডেনকে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য বলেন।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজি হয়েছেন। একটি টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, হস্তান্তর প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থার ‘যা করার প্রয়োজন করুক’।