আন্তর্জাতিক

জাতীয় নগর দারিদ্র্য হ্রাসকরণ কর্মসূচির আওতায় নানা প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন সুইডেনের রাজকুমারী ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। বাংলাদেশে তাঁর চার দিনের সফরে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে কালুরঘাটে ইউএনডিপির প্রকল্প পরিদর্শন করেন।

ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তিনি এ সফর করেন। প্রিন্সেস জলবায়ু অভিঘাতের ফলে বাস্তুচ্যূত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় সফল নারীদের সঙ্গে কথা বলেন।

জাতীয় নগর দারিদ্র্য হ্রাসকরণ কর্মসূচির আওতায় কালুরঘাটের দক্ষিণ জেলেপাড়া ওয়ার্ডে এলজিডি, যুক্তরাজ্যের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) ও ইউএনডিপির অর্থায়নে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহায়তায় জলবায়ু সহিষ্ণু পৌর অবকাঠামো তহবিলের (সিআরএমআইএফ) মাধ্যমে বিভিন্ন জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো নির্মিত হয়। এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ১১৫ দশমিক ৮৫ মিটার রিটেইনিং ওয়াল, ১১৫ দশমিক ৮৫ মিটার ভরাট রাস্তাসহ সিসি রাস্তা, ৪ দশমিক ৫৭ মিটার স্লুইস গেট, ১৫০টি বৃক্ষরোপণ, ৪৮ দশমিক ৭৮ মিটার ফুটপাত ও ৬ দশমিক ১০ মিটার সিঁড়ি। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৫৮ টাকা যার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুদান ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ইউএনডিপির অর্থায়ন ৭৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৮ টাকা। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু সহিষ্ণু বাঁধ, কমিউনিটি ল্যাট্রিন, প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি পেইভমেন্ট টাইলস দ্বারা নিমার্ণাধীন ফুটপাত এবং কম খরচে জলবায়ু সহিষ্ণু ফেরো সিমেন্ট দিয়ে তৈরি ঘর।

জলবায়ু অভিঘাতের ফলে বাস্তুচ্যূত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বিভিন্ন ভাগে প্রকল্পের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায়ের জন্য ২২ জন, শিক্ষার জন্য ১৪ জন, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে ১১ জন এবং পুষ্টি অনুদানে ১৩ জন উপকারভোগী রয়েছেন।

প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত স্থানীয় সফল নারীরা তাদের সফলতার কথা প্রিন্সেসকে শোনান। প্রিন্সেস তাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং উপকারভোগীদের সফলতার প্রশংসা করেন। তিনি তাদের লড়াকু মনোভাবেরও প্রশংসা করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ইউএনডিপির আন্তর্জাতিক প্রকল্প ব্যবস্থাপক যোগেশ প্রাধানং এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে প্রিন্সেস নগরের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন পরিদর্শনে যান। প্রিন্সেস সেখানে ইউএনডিপি কর্তৃক সমর্থিত শিক্ষার্থীদের ‘ইনোভেটিভ ট্রেনিং কোর্স’সহ বিভিন্ন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ইউনিভার্সিটিতে তিনি তাঁর নামে নামকরণকৃত ‘ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া রুম’ উদ্বোধন করেন।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ইউনিভার্সিটির ভিসি রুবানা হক, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এবং ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টিরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রাত। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে একসঙ্গে সেহরিতে বসেছে পুরো পরিবার। একটু পরই ফজরের নামাজ। এমনই সময় হঠাৎ গোটা-কয়েক বোমা এসে পড়ল বাড়ির ছাদে। নিমেষেই রক্তাক্ত গোটা মেঝে। নিরীহ মানুষগুলোর প্রাণহীন দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ল পুরো ঘরে। রমজানের প্রথম দিনে এমনই দৃশ্য দেখল সেন্ট্রাল গাজার এক হতভাগ্য পরিবার। সকালে আরও কয়েকটি স্থানে বিমান হামলা। আরও রক্ত, আরও লাশ। এর আগে কখনো এমন রমজান দেখেনি ক্ষুধা, হামলা এবং অবরোধ সব মিলিয়ে- এবার ‘ঐতিহাসিক’ রমজানের সাক্ষী হচ্ছে অবরুদ্ধ গাজা।

সোমবার সেহরির সময় ওই হামলায় একই পরিবারের ১৬ জন নিহত হয়েছে। পাশাপাশি ডজনখানেক নিরীহ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আলজাজিরা

রমজানের প্রথম দিনেই অবরুদ্ধ গাজার বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, অধিকাংশ হামলাই সেহরি এবং ফজরের নামাজের ওয়াক্তে হয়েছে। গাজায় এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, প্রতিটি পরিবারেই একজন করে শহিদ আছেন। রাফাহ শহরের পূর্বে আল-জেনিনা এলাকায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। সেই এলাকার বারাকাত পরিবারের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে তারা।

সেখানে তিনজনসহ আহত হয়েছে আরও কয়েকজন। একই শহরের আল-সালাম পাড়ায় মিসর-ফিলিস্তিন সীমান্তের কাছে কৃষিজমিকে লক্ষ্য করে আর্টিলারি ভারী বোমাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এমনকি খান ইউনিস শহরের দক্ষিণাঞ্চলেও হিংসাত্মক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসাকে ঘিরেও শুরু হয়েছে উত্তেজনা। সেখানে তারাবির নামাজ আদায় করতে যাওয়া ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের পথ আটকায় ইসরাইলি পুলিশ। তাদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয় তারা। একপর্যায়ে ইসরাইলের পুলিশরা মারধর শুরু করে এবং ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় ফিলিস্তিনি ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের। সোমবার এই ভিডিও প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরপর আল-আকসায় ৪০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অনুমতি দেওয়া হয়। অথচ বছরের এই সময়টাতেই সেজে ওঠে জেরুজালেমের রাস্তা। রমজান মাস উপলক্ষ্যে চলে নানা আয়োজন। পথ-ঘাটে চলে আলোকসজ্জা। কিন্তু এ বছর জেরুজালেমের ওল্ড সিটির সেই রাস্তা বিবর্ণ। মানুষের আনাগোনাও কম। গাজায় নিজেদের নিপীড়িত ভাই-বোনদের কথা চিন্তা করে অনেকেই ব্যথিত।

উম্ম আমার নামে এমনই একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘আমরা তো ইফতার করব। কিন্তু গাজায় হয়তো হাজার হাজার মানুষ কিছুই খেতে পারবে না। সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি।’ এছাড়াও অধিকৃত পশ্চিম তীরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সেখানকার তুলকারেম শহর, বালাতা ক্যাম্প, নাবলুসের পূর্বে বুলডোজার বোমায় আঘাত হেনেছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। এমনকি বেথলেহেমের দক্ষিণ-পূর্বে তুকু শহরের প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে তারা। শুধু হামলা নয় চরম খাদ্যাভাবে গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ।

দুর্ভিক্ষকবলিত অঞ্চলটি ক্ষুধার জ্বালা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অতিরিক্ত খাদ্যঘাটতিতে ইতোমধ্যেই অবরুদ্ধ অঞ্চলটির প্রায় ২৫ জন শিশু, দুই বৃদ্ধ এবং এক যুবতীর মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদেন মধ্যে ১৩,০০০ ‘সন্ত্রাসী’ সদস্য ছিল।

রোববার জার্মান মিডিয়া সংস্থা অ্যাক্সেল স্প্রিংগারের সাথে একটি সাক্ষাৎকারের সময় এ কথা বলেন তিনি। নেতিনয়াহুকে উদ্ধৃত করে জার্মানের সংবাদপত্র বিল্ড জানিয়েছে, ‘আমরা বিজয়ের খুব কাছাকাছি… একবার আমরা রাফাতে অবশিষ্ট সন্ত্রাসী ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ শুরু করলে, যুদ্ধের নিবিড় পর্যায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি কেবল কয়েক সপ্তাহের প্রশ্ন।’

যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় এখন গাজাবাসী নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত অবরুদ্ধ অঞ্চলটির এক হাজার ১০০ রোগী। তাদের অতিদ্রুত ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন। কিন্তু ইসরাইলের অবরোধের কারণে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। ফলে বোমার না মরলেও রোগে মারা যাবে অসহায় ফিলিস্তিনি। একজন ফিলিস্তিনি বলেছেন, ‘আমার পরিবারের তিন সদস্যের অবশ্যই তাদের রক্ত পরিষ্কার করা উচিত। হাসপাতালে যাত্রা একটি চ্যালেঞ্জ। খাদ্য ও পুষ্টির অভাব এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব সবই আমাদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। আমরা ওজন হারাচ্ছি এবং ক্লান্তি ও অবসাদে আক্রান্ত। অনেক রোগীর এখন রক্তের প্রয়োজন, যা পাওয়া যাচ্ছে না।’

আন্তর্জাতিক

চলমান সংঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জামছড়ি সীমান্ত পথে মিয়ানমারের ১৭৭ বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে মিয়ানমার বাহিনীর গুলিতে ছাবের আহমেদ নামে এক বাংলাদেশি ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আবছার ইমন।

জনপ্রতিনিধি ও বিজিবি জানায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আষাঢতলী-জামছড়ি সীমান্তপথে মিয়ানমারের ১৭৭ জন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে আশ্রয় নিয়েছেন। বিজিবি অনুপ্রবেশকারীদের নিরস্ত্র করে জামছড়ি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পে হেফাজতে রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আবছার বলেন, সীমান্তের ওপারে চলমান সংঘাতে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির ১৭৭ জন সদস্য জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা আষাঢ়তলী এলাকায় নুরুল আলম কোম্পানির লেবু বাগান হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে রেখেছে বলে জেনেছি।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার বাহিনীর গুলিতে সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছাবের আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে আহত অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, মিয়ানমার সেনা, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও ইমিগ্রেশনের সদস্যরা অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের নিরস্ত্র করে জামছড়ি বিজিবি ক্যাম্পের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এদের পরবর্তীতে জামছড়ি বিজিবি প্রাইমারি স্কুলে রাখা হবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় বিষয়টি সতর্কভাবে দেখা হচ্ছে। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের পুনরায় ফেরত পাঠানো হবে। সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি, প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলে আসছে। এর আগে গতমাসে ফেব্রুয়ারি জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ৩৩০ জন। পরে গতমাসের ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক

সৌদির আরবের যেসব অবিবাহিতরা গৃহকর্মী নিয়োগ দিতে চান— তাদের বয়স অবশ্যই ২৪ বছর হতে হবে। না হলে তারা তাদের বাড়িতে গৃহকর্মী নিতে পারবেন না।

দেশটির সরকারি ঘোষণায় এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।

সৌদির শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই মুসানেদের মাধ্যমে চুক্তি করতে হবে।

সৌদির গৃহকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গৃহকর্মীর জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর আগ্রহী নিয়োগকর্তার ভিসা ইস্যু করার সক্ষমতা আছে কি না সেটি যাচাই করা হবে।

আগ্রহী নিয়োগকর্তাকে নিজের পেশা ও জাতীয়তা উল্লেখ করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের মুসানেদ প্লাটফর্মে জমা দিতে হবে এবং গৃহকর্মী নিয়োগের কারণ উল্লেখ করতে হবে।

আবেদনের পর আগ্রহী নিয়োগকর্তার সক্ষমতা যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর তাকে গৃহকর্মী বেঁছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে এবং নিয়োগের ফি প্রদান করতে হবে।

গৃহকর্মী নিয়োগের যে বিষয়টির প্রচলন সৌদিতে রয়েছে সেটির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায় দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়।

যারা গৃহকর্মী নিয়োগ করতে চান তাদের কি কি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে সেটি জানাতে এবং গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতে সৌদির শ্রম মন্ত্রণালয় মুসানেদ নামের ওয়েবসাইটটি চালু করে।

গাড়ি চালক, গৃহপরিচারিকা, গৃহ রক্ষণাবেক্ষণকারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, রাঁধুনি, দারোয়ান, কৃষক, ব্যক্তিগত নার্স, গৃহশিক্ষক এবং আয়াকে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাকায় সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল।এই বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

রোববার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছানের সঙ্গে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে ঢাকায় সফররত এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর আইলিন লবাখার।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পত্রের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর লেখা পত্রের একটি কপি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী লবাখারকে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। দুদেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায় শুরু নিয়ে, এই সম্পর্ককে কিভাবে আরও গভীর করা যায়- সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে একমাত্র সমাধান হিসেবে বিবেচনা করেছে। তারাও চায় রোহিঙ্গারা সসম্মানে নিজ দেশে ফিরে যাক। সেই সঙ্গে তাদেরকে সাময়িক আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা।

ড. হাছান বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধসহ যেকোনো যুদ্ধের বিরুদ্ধে ও শান্তির পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছি। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক রাশেদ চৌধুরীকে দেশে আনার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তাদের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এটি দেখছে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পাঁচটি পর্যবেক্ষণ (অবজারভেশন) দিচ্ছে, যেসব বিষয়ে বাংলাদেশ তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরবে।

পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নিরাপত্তা সহযোগিতা, শ্রম পরিবেশ উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ইউএসএইডের সহযোগিতা আলোচনায় স্থান পায় বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

সফররত ইউএসএইডের এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার বৈঠকে অংশ নেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রতিনিধিদলের একাংশ পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়।

এদিন দুপুরে মন্ত্রণালয়ে আসিয়ান দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মন্ত্রী জানান, আসিয়ানের পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি ও এই জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বৈঠকে অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ফলাফলে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহেরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বঞ্চিত করা হয়েছে; এ অভিযোগের অসন্তোষ জিইয়ে রেখে নতুন কোয়ালিশন সরকার গঠিত হলো। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মাঝে নতুন সরকারে কাজ করার মতো চলনসই একটি জুটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলছেন, যেহেতু কারোরই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই; তাই এই ঝুলন্ত সংসদের অর্থ হচ্ছে; আবার একটি নতুন নির্বাচন আয়োজন। কিন্তু পাকিস্তানের এই ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থায় নতুন নির্বাচনের পথে হাঁটার জো নেই। তাই পিপিপি সরকার গঠনে পিএমএলএনকে সহযোগিতা করবে; শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হতে সমর্থন দেবে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় কোনো সদস্য পদ নেবে না। তবে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও চারটি প্রদেশে গভর্নরের সাংবিধানিক পদগুলো তারা নিচ্ছে।

পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়ালের এই যে ভঙ্গুর রাষ্ট্র মেরামতের দায়িত্ব না নেওয়া; পিটিআই-এর চলমান আন্দোলনে পর্যুদস্ত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে দূরে থাকা; এই পরিস্থিতির কৌতুক অনুবাদ এমনটাই শোনা যাচ্ছে পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে, পিপলস পার্টি সমাজের চাপাচাপিতে পিএমএলএনকে বিয়ে করতে রাজি কিন্তু সংসারের কোনো দায়িত্ব নেবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম আলোচনাও রয়েছে যে, একদা প্লেবয় খ্যাত ইমরান কারাগারে থাকার সুযোগে তরুণ বিলাওয়াল যেন পলিটিক্যাল প্লেবয় হয়ে উঠছেন। এই যে শরিফ পরিবারের সেনা সমর্থিত পুতুল রাজনীতিক বলে যে দুর্নাম; তার ভাগিদার না হয়ে; বিলাওয়াল ঠিকই পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখছেন; এর চেয়ে কৌশলী রাজনৈতিক খেলা আর কিইবা হতে পারে। আবার তিনি নির্বাচনের আগে ইমরান খানের প্রতি সমানুভূতি প্রকাশেও কৃপণ হননি।

ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য বিলাওয়ালের বাবা আসিফ আলী জারদারি ও শাহবাজ শরিফ একসঙ্গে হয়েছিলেন। পিপিপি, পিএমএলএন, এমকিউএম, মুসলিম লীগ কিংস গ্রুপ, বেলুচিস্তানের একটি রাজনৈতিক দল, পিটিআই থেকে হর্স ট্রেডিং করে কিনে আনা সংসদ-সদস্যদের দিয়ে তৈরি ছোট একটি দল আর জামায়াতে উলেমা ইসলামির মওলানা ফজলুর রহমান; এইরকম রুপি-আনা-পাই দিয়ে তারা গড়ে তুলেছিলেন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)।

রাজনীতির কাশিমবাজার কুটিরে এই দলগুলোর নেতারা আবার একসঙ্গে হয়েছেন ইমরান ঠেকাতে। এর পরিবর্তে জারদারি পেতে যাচ্ছেন কিছুকাল পরে খালি হওয়া প্রেসিডেন্ট পদ, অন্য দলগুলো শাহবাজের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভায় কিছু পদ পাবে।

প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বড় হবে এই মন্ত্রিসভা। দারিদ্র্যে বিশীর্ণ পাকিস্তানে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিশাল গাড়িতে জনগণের জ্বালানি পুড়িয়ে পতাকা উড়িয়ে ঘুরবেন তারা; থাকবেন সরকারি বাসভবনে। পিডিএম টু পয়েন্ট ও’র শ্বেতহাতি প্রতিপালনই হচ্ছে সমসাময়িক পাকিস্তান রাজনীতির ট্র্যাজেডি। এইখানে সাবেক ইমরান খানের সরকার ছিল মিতব্যয়ী। ইমরান খান সরকারি ব্যয় সংকুচিত করেছিলেন, এক কাপ চায়ের বেশি সব বরাদ্দ বাতিল করেছিলেন সরকারি বৈঠকে।

ঘুস-দুর্নীতি বন্ধ করতে হোয়াটসঅ্যাপে ইমরান যেন সরকার চালাতেন। কোনো দপ্তরে ঘুসের অভিযোগ এলেই ইমরানের হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পৌঁছে যেত সেই দপ্তর প্রধানের কাছে। ৭৫ বছরের দুর্নীতির জিনগত আশ্লেষ এত অল্প সময়ে সরানো অসম্ভব। তবু ইমরানের সততার কড়াকড়িতে সামরিক ও বেসামরিক কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার প্রাণওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে। ফলে রাষ্ট্রের নানা প্রান্তের দুর্নীতি রাক্ষসের আক্রোশের স্বীকার হন ইমরান। ইমরান সরকারের একমাত্র সমস্যা ছিল তার মন্ত্রিসভার রাষ্ট্রপরিচালনার অভিজ্ঞতার অভাব। আর যখনই ইমরানের মতো ক্যারিশম্যাটিক নেতার উত্থান ঘটে; তখন ইতিহাসে দেখা অন্যান্য দেশের মতো উগ্র জাতীয়তাবাদ বেড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউথিয়া বলে পরিচিত ইমরানের তরুণ সমর্থকরা ভিন্নমত দেখলেই বলতেন, ‘ইমরানের নেতৃত্ব যদি পছন্দ না হয়; তাহলে আমেরিকা চলে যান।’ যে ছেলেরা চাকরিতে তাদের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তারা উগ্র জাতীয়তাবাদী হয়ে মাথায় পতাকা বেঁধে পথে ঘুরতে শুরু করলেন। দেশপ্রেম প্রদর্শনের এ বাতিক যুবসমাজে তৈরি হওয়া মানেই খাঁটি দেশপ্রেম ফিকে হয়ে দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট দেওয়া গ্যাং তৈরি হওয়া; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভূমি বাস্তবতায়। সে কারণে পাকিস্তানের জন্য এই মুহূর্তে পিটিআই বিরোধী দলে থাকা স্বাস্থ্যপ্রদ। রাজনৈতিক জীবনের খরখরে বাস্তবতা বুঝতে শিখলে তখন গাজোয়ারি উগ্রজাতীয়তাবাদের অহম কমে আসে। জনগণকে সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসার বোধ তৈরি হয়।

ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর পিডিএম জোটের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাহবাজ শরিফ দায়িত্ব পালন করেছেন; কেয়ারটেকার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত। কেয়ারটেকার সরকার কিছু ক্ষেত্রে শাহবাজ সরকারের চেয়ে ভালো কাজ করেছে এমন অভিমত আছে। ফলে নতুন করে এই পিডিএম টু পয়েন্ট ওর নির্বাচিত শাহবাজের প্রতি জন আস্থা তেমন নেই বললেই চলে। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেশ উন্নয়ন সাফল্য অর্জন করেছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মেট্রোরেল-এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, নারীশিক্ষায় উপবৃত্তি প্রচলন, বিদ্যালয়ের বাইরে যেন কোনো শিশু না থাকে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া, কৃষক যাতে ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রায় সে লক্ষ্যে সুষম বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা; এরকম সাফল্যের কারণে পাঞ্জাব পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে এগিয়ে গেছে নানাভাবে। তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো বিবাদে যান না আবার পুরোপুরি সেনাবশ্যতা স্বীকার করেন না; ফলে তার রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনায় জনগণ উপকৃত হয়; এমন সুনাম আছে। উন্নয়ন সহযোগী চীন শাহবাজকে পছন্দ করে; কারণ তিনি চীনের উন্নয়ন কাজের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন।

পিএমএলএন নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্ক এত গভীর যে একবার মোদি হঠাৎ বিমান ঘুরিয়ে লাহোরে নেমে নওয়াজ গৃহে দাওয়াত খেয়ে আবার উড়ে গিয়েছিলেন। বিশ্বব্যাংক যেহেতু পাকিস্তান-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিকে উভয় দেশের অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জনের চাবিকাঠি বলে এই সেদিনও মন্তব্য করেছে; কাজেই পাকিস্তানের নতুন সরকারটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের যে উন্নয়ন ঘটবে তা আঁচ পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু ইমরানের রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিকে ভালো চোখে দেখেনি; তাই শরিফ সরকারে তাদের সমর্থন থাকবে বলেই মনে হয়। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একটি আসনে হেরে ও একটি আসনে বিতর্কিতভাবে কোনোমতে জিতে নওয়াজ শরিফের চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়া সম্ভব না হলেও তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন যেন কমেডি জোগান দিতে। কাজের চেয়ে কথায় পারদর্শী তিনি। সোশ্যাল মিডিয়া ও মিডিয়ায় নিয়মিত তিনি ঝগড়া করেছেন, ইমরান খানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার পরিবারতন্ত্রের উত্তরাধিকার পাওয়া নেতৃত্বের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ যে অপরিমিত ও দায়িত্বহীন ব্যবহার পেয়ে আসছে; মরিয়ম যেন তারই ধারাবাহিকতা।

পাকিস্তানের রাজনীতি যদি ড্রামা সিরিয়াল হয়; তাহলে এর সবচেয়ে কালারফুল অ্যান্টি হিরোইন হচ্ছেন এই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত।

সম্প্রতি অন্য একটি মামলার শুনানির সময় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজি ফয়েজ ঈসা সেনা-প্রশাসনকে সরাসরি বলেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর অর্পিত সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ফেলে রেখে তারা যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় নাক গলিয়ে বেড়ায়; সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব তৈরির প্রয়োজনে এসব অসাংবিধানিক কাজের অবসান ঘটাতে হবে। প্রধান বিচারপতির এই তিরস্কারে আঁচ পাওয়া যায়, সেনাপ্রশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের একটা আইনগত ভিত্তিও তৈরি হতে যাচ্ছে।

ইমরানের সমর্থক রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ ভোটার যাদের অভিযোগ, ভোটের ফলাফল চুরি করেছে এই সেনাপ্রশাসন তাদের সামনের দিনগুলো শাহবাজ সরকারের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমার যে নয়; তা পাকিস্তানে চলমান জনঅসন্তোষ ও প্রধান বিচারপতির প্রতিক্রিয়া থেকে ধারণা করা যায়।

আন্তর্জাতিক

গাজার রাফাহ’তে “পরাক্রমশালী” অভিযান চালাতে ইসরায়েলের গোঁয়ার্তুমিতে আন্তর্জাতিক নিন্দা বেড়েই চলেছে। বিশ্ব নেতারা ইতোমধ্যেই সেখানে আটকা পড়া ১৫ লাখ ফিলিস্তিনির বিপর্যয়কর পরিণতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেছেন। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড বৃহস্পতিবার এক বিরল যৌথ বিবৃতিতে তাদের সাম্প্রতিকতম জরুরি আবেদনে আবারো ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে ‘এই পথে না এগুতে’ ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “বেসামরিক লোকজনের আর তো যাওয়ার কোনো জায়গাই নেই, তাই এমন একটি সামরিক অভিযানের পরিণতি হবে বিধ্বংসী। খবর এএফপি’র।

ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন সামরিক অভিযানের ফলে লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মিশর সীমান্তের কাছে গাজার দক্ষিণতম নগরীর ক্রমেই বিস্তৃত হওয়া এক অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আগ্রাসন থেকে বিরত থাকার জন্য বিদেশি সরকার ও সাহায্য সংস্থাগুলির চাপ সত্ত্বেও, ইসরায়েল রাফাহ’তে অনুপ্রবেশ ও হামাস ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুরোপুরি বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। রাফাহ থেকে তারা বেসামরিক লোকজনকে যুদ্ধাঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে দেবেন। চার মাসব্যাপী এই যুদ্ধে একটি বিরতি টানার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের জোর তৎপরতার মাঝেই ইসরাইলের আসন্ন হামলার এই হুমকি আসে। গাজার বিস্তীর্ণ অংশ এখন সমতলে রূপান্তরিত, অঞ্চলটির বেশিরভাগ লোকজন বাস্তুচ্যুত, আর লাখো মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে।

গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতু বুধবার বলেন, রাফাহ’তে ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকলে নৃশংসতার ঝুঁকি হবে গুরুতর ও উচ্চমাত্রার।

এদিকে,ইসরায়েলের হাতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে গাজায় ১৩০ জন জিম্মিকে মুক্তি দান ও যুদ্ধ স্থগিত করার লক্ষ্যে কায়রোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করতে চাইছে। মিডিয়া রিপোর্টের পর, নেতানিয়াহু’র কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েল কায়রোতে আমাদের জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের কোনো নতুন প্রস্তাব পায়নি।” তিনি ফিলিস্তিনির প্রতিনিধি দলকে বলেন, হামাস তার অবস্থান নমনীয় না করা পর্যন্ত ইসরায়েল আলোচনায় পুনরায় যোগ দেবে না। নেতানিয়াহু ওই প্রতিবেদনে সরাসরি মন্তব্য না করে, এই মর্মে তিনি জোর দেন যে, হামাস তাদের বিভ্রান্তিকর দাবিগুলি প্রত্যাখ্যান ও ত্যাগ করলে তারা আলোচনায় এগিয়ে যেতে পারবে।

মঙ্গলবার, সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস ইসরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ডেভিড বার্নিয়ার সাথে আলোচনায় যোগ দেন। এদিকে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার কায়রোতে ছিল। ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের শাসক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, হামাসকে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ও ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও ট্র্যাজেডি বন্ধ করার আহ্বান জানান। মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে যে সংস্থাটির পরিচালক, ক্রিস্টোফার ওয়ে দেশের আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার সাথে দেখা করার জন্য ইসরায়েলে অঘোষিত সফর করেছেন। ব্যুরো’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়ে তেল আবিব ভিত্তিক এফবিআই এজেন্টদের সাথেও দেখা করেছেন।

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র উপভোগ করছে।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) মহাসচিব ইন্দ্র মনি পাণ্ডে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণকে তার অন্যতম শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, সরকার সবসময় গ্রামীণ উন্নয়নে জোর দেয়।

তিনি বলেন, তিনি গ্রামীণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং খাদ্য উৎপাদন ব্যতিরেকে এক ইঞ্চি আবাদি জমি ফেলে না রাখার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করছেন।

‘আমি সবাইকে অনুরোধ করেছি যেন খাদ্য উৎপাদনে নিয়োজিত হন, যে যা পারেন,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও বিমসটেক একসঙ্গে কাজ করবে।

ভারত সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন, ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য করেছিল এবং প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্র মনি পাণ্ডে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।

বিমসটেকের সঙ্গে বাংলাদেশের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিমসটেক বাংলাদেশের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে।

তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গ্র্যাজুয়েশনে প্রধানমন্ত্রীর দিকদর্শনের প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সপ্তম শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্রস্তাবিত বিমসটেক সচিবালয় ভবনের নির্মাণ কাজ তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বিমসটেক সহযোগিতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং বাংলাদেশ এ খাতে নেতৃত্ব দেওয়া দেশ।

তিনি বলেন এবং আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনের পর বাংলাদেশ যখন সভাপতিত্ব করবে, তখন বিমসটেকের কার্যক্রম আরও জোরদার করবে।

প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক প্রক্রিয়াকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন।

শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ বিমসটেক প্রক্রিয়ায় আরও দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত রয়েছে, যেহেতু ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের পর গ্রুপের সভাপতিত্ব বর্তাবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

মেঘলা দিনের সূর্য আর পাকিস্তানের রাজনীতি- আচারে, স্বভাবে দুই-ই সমান! ক্ষণে উজ্জ্বল, ক্ষণে ম্লান। এই ঝকঝকে তো পরক্ষণেই ঘোলাটে! উচ্ছন্নে যাওয়া জুয়াড়ির আকাশ-কুসুম স্বপ্নের মতোই-সকালে হৈ হৈ করে লাফিয়ে বিকালেই চিৎপটাং! গিরগিটির মতোই নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে রং পালটাচ্ছে নেতারা।

একদিন আগেও যে প্রধানমন্ত্রীর গদি দখল পুরো পাকিস্তান এফোঁড়-ওফোঁড় করছিল, দিন ফুটতেই সেই আবার ‘মহাহাতেম তাঈ’। গত তিন দিনের দড়ি টানাটানি শেষে হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর ভাগ ছেড়ে দিয়ে সেই খেলাই দেখালেন দেশটির সরকার গঠন কারিশমার মধ্যমণি পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলটির পোস্ট-সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ কমিটির (সিইসি) অধিবেশনের পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থিতা তিনি চান না। কারণ পিপিপির ফেডারেল সরকার গঠনের ম্যান্ডেট নেই।

তবে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী করতে অকুণ্ঠ সমর্থন দেবে তার দল। কিন্তু নওয়াজ সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকবে না তার দল। জিইও নিউজ, ডন।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নিজ শর্ত বহাল রেখে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে হাত মেলানোর কথা থাকলেও আচমকাই এ খেলায় ‘দাবার পাশা’ উল্টে দিলেন বিলাওয়াল। তবে প্রধানমন্ত্রিত্ব না চাইলেও প্রেসিডেন্ট পদ চেয়েছে দলটি।

প্রতিবেদন অনুসারে, পিপিপির বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, তিনি তার বাবা আসিফ আলী জারদারিকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান।
আরও বলেছেন, ‘আমি এটা বলছি না কারণ তিনি আমার বাবা। আমি এটা বলছি কারণ দেশ এই মুহূর্তে এক বিশাল সংকটের মধ্যে রয়েছে।
বিলওয়াল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ পদের জন্য তার বাবাই একমাত্র যোগ্য প্রার্থী। এদিকে একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফ। শুরু থেকেই ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের আশা থাকলেও হেরে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানের কাছে। এরপরই যেন অমঙ্গলের ছায়া পড়েছে তার (নওয়াজের) দলে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোটের দৌড়ে নেমেও লাভ হলো না কোনো। শেষ ভরসা বিলওয়ালও এখন হাতছাড়া। সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর আশীর্বাদেও পার পেলেন না নওয়াজ।

এরই মধ্যে একাই সরকার গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য পদে প্রার্থী নির্বাচনের কথা জানিয়েছে।

এছাড়া পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সরকার গঠনের জন্যও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক চক্রান্ত মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি।

মঙ্গলবার পিটিআইয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, দলটি ইতোমধ্যেই কেন্দ্র, পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়াতে সরকার গঠনের লক্ষ্যে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।

পূর্ণাঙ্গ ফলাফল অনুসারে, এবারের নির্বাচনে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে পিটিআই। স্বতন্ত্র ১০১টি আসন পেয়েছে। যার মধ্যে পিটিআই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছে ৯৩টি আসন। পিএমএল-এন ৭৫টি এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসন পেয়েছে।

তবে মঙ্গলবার পাকিস্তানের সাবেক ফেডারেল মন্ত্রী ও পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার দাবি করেছেন, পিএমএল-এন মাত্র ১৭টি এনএ আসন এবং ৩০-৪০টি পাঞ্জাব বিধানসভা আসন জিতেছে।

পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফ বলেছেন, পিটিআই সরকার গঠন করতে পারলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেছেন, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংসদের নিম্নকক্ষে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তার দল (পিএমএল-এন) সংসদে বিরোধী আসনে বসতে প্রস্তুত।

১৮টি আসনে নির্বাচন কারচুপির বিরুদ্ধে পিটিআইয়ের দায়ের করা পিটিশন খারিজ করেছে লাহোর হাইকোর্ট (এলএইচসি)। রোববার দেশটির সংবাদমাধ্যম সামা টিভির খবরে বলা হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল।

এদিকে নতুন সরকারের তোড়জোড়ের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার আগেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে দেশটিতে।

দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। অপরদিকে জাহাঙ্গীর খান তারিন সম্প্রতি গঠিত ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টির (আইপিপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। নির্বাচনের ঝড় শেষ হতে না হতেই রাজনীতির পথ ছেড়ে দিলেন তিনি। সোমবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি সেই দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানোর সুযোগ না-ও পেতে পারেন। কারণ নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগেই আলভির উত্তরসূরি নির্বাচিত হতে পারে।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন ডাকার শেষ সময়ের তিন দিন আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রাদেশিক পরিষদের নতুন সদস্যরা শপথ নিতে পারেন পরদিন।

জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া কোনো ব্যক্তি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য থাকবেন না।

গতকাল সোমবার দ্য নিউজকে একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের ৫৩ সদস্যের নির্বাচন ৮ মার্চের আগে হতে হবে। সিনেটের চেয়ারম্যান, ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনও এ সময়ের মধ্যে হতে হবে। এছাড়া ৮ মার্চের আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে হবে।

সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলে আলভি আর নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানোর সুযোগ পাবেন না। সেক্ষেত্রে নতুন প্রেসিডেন্ট দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন।

সূত্র বলছে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যরা শপথ নেওয়ার পর তারা সিনেট সদস্য নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য হবেন।

জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ২৬ ফেব্রুয়ারি ডাকা হতে পারে। প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন একই দিন বা পরের দিন ডাকা হতে পারে। তবে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকার শেষ সময় ২৯ ফেব্রুয়ারি।

সিনেট নির্বাচনে সময় লাগবে চার দিন।

সিনেট সদস্যদের শপথ গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।