আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাজিলি নিবিনজায়া ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহের কিছু সুনির্দিষ্ট পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে যেকোনো ধরনের সমরাস্ত্র পাঠানো হলে শেষ পর্যন্ত সেসব ধ্বংস করা হবে, সেসব অস্ত্র যারাই পাঠাক না কেন।

নিবিনজায়া আরও বলেছেন, ইসরাইলের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে প্যাট্রিওট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহের সম্ভাবনা ইসরাইলের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

গত সপ্তাহে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল তেলআবিব থেকে আটটি প্যাট্রিওট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিয়েভকে সরবরাহের ব্যাপারে আলোচনা করছে। ওই সাময়িকী জানিয়েছে, এ প্যাট্রিওটগুলো প্রথমে পাঠানো হবে তেলআবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং এরপর সেগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া হবে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইল ইউক্রেনকে কেবল অনাক্রমণাত্মক রসদ সরবরাহ করে এসেছে।

ওদিকে রাশিয়া ইউক্রেনকে বিদেশি অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। মস্কো বলে আসছে যে কিয়েভকে বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ যুদ্ধকে কেবলই দীর্ঘ করবে এবং চূড়ান্ত ফলাফলের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

আন্তর্জাতিক

ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাসে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ভোলে বাবা নামে এক ধর্মগুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ভক্তরা।

সেখানেই ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা।

হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, তীব্র গরমের মধ্যে চলছিল সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। তখন তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই পদপিষ্টের ঘটনা।

এত মানুষের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্যান্যরা।

যে জায়গায় ভোলে বাবা নামে ওই ধর্মগুরুর ভাষণ শোনার জন্য অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, সেটি ইটাহ ও হাথরাস জেলা দুটির সীমান্তে।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিং জানান। হাথরাস জেলার মুঘলগড়ি গ্রামে ভোলে বাবার অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে।

জেলার প্রধান মেডিকেল অফিসার উমেশ কুমার বলেন, আহতদের অনেককে পার্শ্ববর্তী জেলা ইটাহ জেলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিকান্দ্রারাউ শহরের একটি ট্রমা সেন্টারে।

সেখানে নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। হতাহতদের বিভিন্ন যানে করে ট্রমা সেন্টারে নেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রমা সেন্টারের বাইরে মেঝেতে পড়ে আছে দু নারীর দেহ। ট্রমা সেন্টারের বাইরে বিশৃঙ্খলা রয়েছে এবং লোকেরা তাদের নিকটাত্মীয়দের সন্ধানে সেখানে আসছেন।

কে এই ভোলে বাবা?

ভোলে বাবা একজন ধর্মপ্রচারক। তিনি উত্তর প্রদেশের হাথরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সেখানেই মঙ্গলবার পদদলিত হয়ে শতাতিক ব্যক্তির প্রাণ যায়। আলোচিত এ ভোলে বাবা আগে রাজ্য পুলিশে চাকরি করতেন। পুলিশে তিনি প্রায় ১৮ বছর চাকরি করেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করতেন ভোলে বাবা। চাকরি ছাড়ার পর তিনি লোকজনকে উপদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য সৎসঙ্গ আয়োজন শুরু করেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। নিজেকে নারায়ণ সরকার হরি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন তিনি। তার ভক্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

এই ভোলে বাবা পাতিয়ালির বিশ্ব হরি বাবা নামে বেশি পরিচিত। জনসমক্ষে তিনি আসেন সাদা কাপড়ে। উপদেশ অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে থাকেন স্ত্রী। বাবার ভক্তদের বেশিরভাগই আসেন আগ্রা ও আলিগড় জেলা থেকে। তার ভক্তদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের।

বাবা কোনো গুরুর অনুসারী নন বলে বিশ্বাস করা হয়। তার দাবি, যেসব উপদেশ তিনি দেন, সেগুলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা।

ফেসবুকে বাবার অনুসারীর সংখ্যা তিন লাখের বেশি। তার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে অনেক সংসদ সদস্য ও বিধানসভার সদস্য যোগ দেন বলে মনে করা হয়। এ অনুষ্ঠান মঙ্গলবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

এত জনপ্রিয়তার পরও গণমাধ্যম থেকে দূরে রাখা হয় বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। বাবার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যও সামনে আসে না।

ভোলে বাবার লোকেরা গোলাপি রঙের শার্ট প্যান্ট এবং সাদা ক্যাপ পরেন। অনুষ্ঠানে ট্রাফিক সামলানো এবং আয়োজনের বিষয় তারা দেখভাল করেন।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) ছেড়ে যাওয়া নেতাদের ‘দলে ফেরা’ নিয়ে কমিটি গঠন করে দিলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান।

ইমরান খান কারাগার থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেবে না বলে দলত্যাগ করেছিলেন ওইসব নেতা।

সোমবার জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে গত বছরের ৯ মে এক রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের পর পিটিআই নেতাদের একটি অংশটি দলটি ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কারণ ওই সময় তাদেরকে উসকানিমূলক বক্তৃতা এবং রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

এর কয়েক মাস পর ও চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের আগে পিটিআই ছেড়ে যাওয়া নেতাকর্মীরা আরও একবার দলীয় পদে যোগ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পিটিআই নেতৃত্ব তখন স্পষ্টভাবে তাদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছিল।

সম্প্রতি এ নিয়ে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্দেশে একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটির ওপর নির্ভর করছে পিটিআই ছেড়ে যাওয়া ওইসব নেতার ভাগ্য। অর্থাৎ তারা দলে ফিরতে পারবেন কিনা, সেটা নির্ধারণ করবে কমিটি।

পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশির নেতৃত্বে এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আসাদ কায়সার, হামিদ খান, শেহরিয়ার আফ্রিদি, ব্যারিস্টার গহর এবং শিবলি ফারাজ।

কমিটি জানিয়েছে, তারা পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার কাছে চূড়ান্ত একটি তালিকা পাঠাবে এবং তিনিই (ইমরান) তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

কমিটির সদস্যরা আরও জানিয়েছেন, শানদানা গুলজার পিটিআইয়ের নারী কর্মীদের মামলা দেখভালের পাশাপাশি দলত্যাগী নেতাদের দল ছাড়ার কারণ সম্পর্কেও প্রতিবেদন দেবেন

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে চীনের সহায়তা চেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সমাধানের অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে খুবই চিন্তিত। কারণ এরই মধ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ছয় বছর পার হয়ে গেছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও আজ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় তিনি এই সহায়তা কামনা করেন।

সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন, এটা (রোহিঙ্গা সংকট) আমাদের জন্য খুবই হতাশা ও উদ্বেগজনক।

প্রধানমন্ত্রী চীনের মন্ত্রীকে বলেন, ‘এটি রোহিঙ্গা সংকটের সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের জন্যে আমার (প্রধানমন্ত্রীর) পক্ষ থেকে চীনের প্রেসিডেন্টকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বার্তা।’

তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চীনের মন্ত্রীকে তাঁর নিজের পক্ষ থেকে এবং বাড়তি আগ্রহ নিয়ে কিছু করারও অনুরোধ করেন।’

লিউ জিয়ানচাও বলেন, চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে কীভাবে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায় তা খুঁজে বের করতে মিয়ানমারের সাথে কাজ করছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুটি জটিল এবং সেখানে অভ্যন্তরীণভাবে তা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘এমনকী, মিয়ানমার সরকারেরও (এই ইস্যুটি সম্পর্কে) কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মতো অবস্থান নেই। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে (সেখানে) গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি একটি জটিল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, চীন বুঝতে পেরেছে যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক উপায়ে সহায়তা করছে বলে তার দেশ অত্যন্ত প্রশংসা করে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত এই পররাষ্ট্রনীতির প্রতি তার দেশ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, তাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র হলো দেশের গণমানুষের উন্নয়ন ও মানোন্নয়নের পাশাপাশি জনগনের খাদ্য নিরাপত্তা, ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।

আগামী মাসে শেখ হাসিনার চীন সফর প্রসঙ্গে লিউ জিয়ানচাও বলেন, এতে দুই দেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব আরও জোরদার হবে। ‘এই সফর আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।’

বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে অভিভূত হয়ছেন উল্লেখ করে চীনের মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী।

বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে চীনের অর্থনৈতিক অবস্থাও মন্থর।

তিনি উল্লেখ করেন যে গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২ শতাংশ এবং চলমান অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আরও কাজ করতে হবে এবং বাংলাদেশকেও করতে হবে।

লিউ জিয়ানচাও বলেন, উন্নয়নের এক পর্যায়ে চীনের অর্থনীতি মন্থর ছিল, কিন্তু প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সে সময়ে সে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এতটা উন্নত ছিল না।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটু বেশিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমাদের পক্ষে কঠিন ছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশত বাংলাদেশ স্মার্ট প্রযুক্তি, এআই ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।’

পার্টি টু পার্টি (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগ) সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ। চীনা মন্ত্রী অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও পার্টি টু পার্টি সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন।

এম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এসময় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

নতুন সরকার গঠনের পর সোমবার ভারতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশন শুরু হয়। নতুন লোকসভায় কে হবেন স্পিকার তা এখনো স্থির হয়নি। বুধবার স্পিকার নির্বাচন করা হবে দেশটিতে। তার আগে সংসদ পরিচালনা করার জন্য বিজেপি সংসদ-সদস্য ভর্তৃহরি মহতাবকে প্রোটেম অথবা অস্থায়ী স্পিকার নির্বাচন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ নিয়েই শুরু হয় বিরোধ। নিয়ম ভেঙে ভর্তৃহরিকে নিয়োগ দেওয়ায় লোকসভার প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিনেই মোদির বিরুদ্ধে বিতর্কের ঝড় তোলেন বিরোধীরা।

নতুন সরকার গঠনের পর সোমবারই সংসদে প্রথম অধিবেশন বসে। অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাকে সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান ভর্তৃহরি। তার তত্ত্বাবধানেই নবনির্বাচিত সংসদ-দসস্যরাও শপথবাক্য পাঠ করেন। লোকসভার নবনির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের শপথগ্রহণ পর্ব শেষ হলে লোকসভা স্পিকার নির্বাচন করা হবে। যতক্ষণ না নতুন স্পিকার নির্বাচিত হচ্ছেন, ততক্ষণ ভর্তৃহরি দায়িত্ব সামলাবেন। তবে তার এ নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

তাদের দাবি, নিয়ম ভেঙে সাতবারের সংসদ-সদস্য ভর্তৃহরিকে অস্থায়ী স্পিকার করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, সংসদের সবচেয়ে বর্ষীয়ান সংসদ-সদস্যকেই প্রোটেম স্পিকার করা হয়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এবারের লোকসভায় সবচেয়ে বর্ষীয়ান সংসদ-সদস্য কংগ্রেসের সুরেশ কোদিকুন্নিল। তিনি আটবারের সংসদ-সদস্য। তবে সুরেশকে বাদ দিয়ে ভর্তৃহরিকে প্রোটেম স্পিকার করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন বিরোধীরা।

কংগ্রেস সংসদ-সদস্য সুরেশ এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, এনডিএ সরকার লোকসভার নিয়ম ভেঙেছে। নিয়ম ছিল সবচেয়ে বেশিবার জেতা সংসদ-সদস্যকেই প্রোটেম স্পিকার করা। সেদিক থেকে আমি আটবারের সংসদ-সদস্য, আর ভর্তৃহরি সাতবারের। এনডিএ সরকার আবারও বিরোধী দলকে অপমান করল। তাই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সর্বসম্মতিক্রমে অধিবেশন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মোদি অবশ্য অধিবেশনের শুরুতে সহমতের কথা শুনিয়েছেন। সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দেশ চালাতে গিয়ে মতৈক্য দরকার। তাই আমি নিরন্তর চেষ্টা করব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশের সেবা করতে। আমি সবার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পূর্ণ করব। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই।’ তবে বিরোধীদের, বিশেষ করে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, মানুষ দায়িত্বশীল বিরোধী পক্ষ চায়। দেশবাসী সংসদে ঝগড়া দেখতে চায় না।

আন্তর্জাতিক

লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননের বনাঞ্চল লক্ষ্য করে ফসফরাস বোমা হামলা চালিয়েছে। এর ফলে সেখানে আগুন ধরে গেছে। কাফার কিলা শহরের কাছে এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে এনএনএ। খবর আল-জাজিরার

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক রামজি কাইস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জনবহুল এলাকায় ইসরাইলের এয়ারবার্স্ট সাদা ফসফরাস যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার নির্বিচারে বেসামরিক লোকজনের ক্ষতি করছে এবং অনেককে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে।

এদিকে আল-জাজিরার সানাদ ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আপার গ্যালিলির আয়েলেত হাশাহারে একটি ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা সেনাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

এক্সে ইসরাইলি আর্মি রেডিওর শেয়ার করা ফুটেজে দেখা যায়, ইসরাইলি ঘাঁটির আশপাশে সাইরেন বাজতে দেখা গেছে, সেনারা ভয়ে দৌড়াচ্ছে।

সাদা ফসফরাস কতটা ক্ষতি করে?

সাদা ফসফরাসের সংস্পর্শে এলে মানুষ তীব্র জ্বালা অনুভব করে অনেক ক্ষেত্রে এটা মানুষের হাড় পর্যন্ত পুড়িয়ে দেয় এবং এর নিরাময়ে অনেক সময় লাগে। সেসঙ্গে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে।

সাদা ফসফরাসের কারণে যদি মানুষের শরীরের মাত্র ১০ শতাংশও দগ্ধ হয়, তাহলেও তা মারাত্মক। এর সংস্পর্শে এলে মানুষের শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে এবং শরীরের অনেক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

সাদা ফসফরাস থেকে সৃষ্ট প্রাথমিক ক্ষত থেকে বেঁচে থাকা লোকেরা সারা জীবন ভোগেন।

সাদা ফসফরাসের আগুন ঘরবাড়ি এবং পাকা ভবনেরও ক্ষতি করতে পারে, ফসল ধ্বংস করতে পারে এবং গবাদি পশুর প্রাণহানীর কারণ হতে পারে।

সাদা ফসফরাস নিয়ে আইনি এবং নৈতিক উদ্বেগ

সশস্ত্র সংঘাতে সাদা ফসফরাস ব্যবহার বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোতে নিষিদ্ধ।

কনভেনশন অন কনভেনশন উইপনস (সিসিডব্লিউ) এর প্রটোকল ৩ বেসামরিক জনগোষ্ঠী বা বেসামরিক এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে সাদা ফসফরাস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।

প্রোটোকলের অধীনে, এটি কেবল আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নীতি অনুসারে সংকেত, স্ক্রিনিং এবং চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

সশস্ত্র সংঘাতে সাদা ফসফরাসের ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, কেউ কেউ বেসামরিক নাগরিক এবং পরিবেশের ক্ষতি হ্রাস করার জন্য কঠোর বিধিবিধান এবং আরো নজরদারির আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ফোর্বসের রিয়েল-টাইম বিলিয়নিয়ার তালিকায় ১১তম ধনী ব্যক্তি জেনসেন হুয়াং। এখন পর্যন্ত এটি তার সর্বোচ্চ অবস্থান। তিনি একসময় কাজ করতেন রেস্তোরাঁর ডিশওয়াশার হিসেবে, আর এখন ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানের মালিক।

জেনসেন হুয়াং জিপিইউ ও কম্পিউটার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। মাইক্রোসফট ও অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে এনভিডিয়া। এখন কোম্পানিটির বাজারমূল্য প্রায় ৩.৩৩৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

চলতি মাসে চিপমেকার প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারমূল্য ৩.৫ শতাংশ বেড়ে ১৩৫.৫৮ ডলারে পৌঁছায়। ওয়াল স্ট্রিটে সর্বাধিক ব্যবসা করা কোম্পানি এখন এনভিডিয়া, যার গড় দৈনিক টার্নওভার ৫০ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরেই এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ১৮২ ভাগ। আর গত বছর কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য বেড়েছিল তিনগুণ।

বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, হুয়াংয়ের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ এখন প্রায় ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। এ তালিকা অনুযায়ী, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং ভারতীয় ধনকুবের রতন টাটার চেয়েও বেশি ধনী গ্লোবাল এ টেক সুপারস্টার।

কে এই জেনসেন হুয়াং?

জেনসেন হুয়াং ১৯৬৩ সালে তাইওয়ানের তাইনানে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে থাইল্যান্ডে চলে আসে তার পরিবার এবং নয় বছর বয়সে তাকে এবং তার ভাইকে ওয়াশিংটনের টাকোমায় এক চাচার কাছে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠিয়ে দে্ওয়া হয়। তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা কেন্টাকির ওনিডা এলিমেন্টারি স্কুল থেকে এবং স্নাতক পোর্টল্যান্ডের কাছাকাছি আলোহা হাই স্কুল থেকে সম্পন্ন করেন।

তবে সাফল্য খুব একটা সহজে ধরা দেয়নি হুয়াংয়ের কাছে। তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বাসবয় হিসেবে। তারপর যোগ দেন ডেনি’স রেস্তোরাঁতে। প্রথমে ডিশওয়াশার এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে ওয়েটার হিসেবে কাজ করেন সেখানে।

১৯৯৩ সালে তিনি ক্রিস মালাচোস্কি এবং কার্টিস প্রাইমের সাথে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে ২৪.৬ মিলিয়ন ডলার বেতনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৬১তম সর্বোচ্চ বেতনভোগী সিইও হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজনৈতিক সংহতি, সহযোগিতার নবক্ষেত্র উন্মোচন এবং জনগণের ‘ফ্রেশ ম্যান্ডেট’ নিয়ে গঠিত দুই দেশের সরকারের সহযোগিতার মাধ্যমে গত দশকে দুই দেশের সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে, তাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

শনিবার (২২ জুন) বিকেলে ভারতের নয়াদিল্লিতে হোটেল তাজ প্যালেসে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এ দিন সন্ধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের আগে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ভারতে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে পরপর তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এবং গত ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণে যোগদানের পর আবারও তাঁর আমন্ত্রণে অত্যন্ত কম সময়ের ব্যবধানে

প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে আসা সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২১-২২ জুনের এ সফর অত্যন্ত সফল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও কর্মকর্তাদেরসহ দলগতভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শেষে একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে দ্বিপক্ষীয় সকল বিষয় আলোচনা হয়। এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান।

১০ সমঝোতা স্মারক

বৈঠক শেষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল পার্টনারশিপ, বাংলাদেশ-ভারত গ্রিন পার্টনারশিপ, সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি, ভারতের ইন-স্পেস এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, বাংলাদেশ ও ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সংযোগ সংক্রান্ত, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ভারতের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে গবেষণা সহযোগিতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগিতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ, ওয়েলিংটন-ইন্ডিয়া এবং মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের মধ্যে নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং স্বাস্থ্য ও ওষুধ সংক্রান্ত সমঝোতা নবায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনে ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এবং বাংলাদেশ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান সমঝোতা নবায়ন এবং মৎস্যম্পদের উন্নয়নে বিদ্যমান সমঝোতা নবায়নসহ মোট দশটি সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষরের কথা বর্ণনা করেন ড. হাছান মাহমুদ।

‘কানেক্টিভিটি’, সীমান্ত হত্যা, নদী ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ গুরুত্ব

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে সংযোগ বা কানেক্টিভিটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর যাতে ভারতের উত্তর-পূর্ব বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের জন্য ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে তাদের আগ্রহ ও আমাদের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সীমান্ত হত্যা শূন্যেরর কোঠায় নামিয়ে আনতে রাজনৈতিকভাবে দুই দেশের ঐকমত্যের অভাব নেই জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এরপরও যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেগুলোও যাতে একদম কমানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে। এগুলোর নাব্যতা রক্ষাসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা, তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, বন্যা দুর্যোগ মোকাবিলা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়েও গুরুত্বসহকারে আলোচনার কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাদের সাথে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার প্রসার, ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সহায়তা এবং ভারত যে ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের নতুন সঞ্চালন লাইন করছে সেটি থেকে কীভাবে সহায়তা পাওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।

এ সময় পেঁয়াজ, তেল, গম, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য নির্দিষ্ট কোটা সংরক্ষণ ও আমদানি যাতে বন্ধ না হয়, সে বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি, জানান হাছান মাহমুদ।

বহুপাক্ষিক ফোরামে সমর্থন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ব্রিকস সদস্য বা অংশীদার যে কোনো পদে আমরা ভারতের সমর্থন চেয়েছি এবং তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। পাশাপাশি বিমসটেক, ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনসহ বহুপাক্ষিক ফোরামগুলোতে অবস্থান শক্তিশালী করা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা ছিল ইতিবাচক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় চীনের ভূমিকা বৃদ্ধির কথাও এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে এটি আলোচনা করবেন বলেছেন।

ভারতীয় ভিসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশিদের জন্য ভারত বছরে প্রায় ২০ লাখ ভিসা প্রদান করে, মেডিক্যাল ভিসা ত্বরান্বিত করতে ও অন্যান্য ভিসার অযথা বিলম্বরোধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাদের মিশনগুলোকে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের একটি নৌঘাঁটিসহ ৬টি স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। শুক্রবার ‘নিখুঁতভাবে’ আঘাত হানতে সক্ষম এক ঝাঁক আত্মঘাতী ‘কামিকাজে’ ড্রোন দিয়ে ওই হামলা চালানো হয়।

এতে ইসরাইলের ওই নৌঘাঁটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

এদিন এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, ড্রোনগুলো ইসরাইলের ‘রাস আন-নাকুরা’ ঘাঁটিতে অবস্থিত এমন কয়েকটি ভবনে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। যেসব ভবন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা ও সাধারণ সেনারা ব্যবহার করে থাকেন। হামলায় নৌঘাঁটিটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নিশ্চিতভাবে বহু সেনা হতাহত হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। যাতে একজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হন। এর প্রতিবাদেই শুক্রবার হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।

বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে এবং দক্ষিণ লেবাননের দেরকিভা শহরে বৃহস্পতিবারের ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই নৌঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে ইসরাইলের রিজার্ভ জেনারেল ইতজাক ব্রিক বলেছেন, হিজবুল্লাহর ওপর যেকোনো হামলা এই অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধের জন্ম দেবে।

আরেক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলের শেবা কৃষিখামারের রুওয়াইসাত আল-কার্ন ও জিবদিন ঘাঁটি এবং কুফার শুবা পাহাড়ের রামথা ও আল-সামাকা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে। এতে ইসরাইলের বহু ক্ষতি হয়েছে।

গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সমর্থনে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার তালেব সামি আব্দাল্লাহকে হত্যা করার পর ইসরাইলবিরোধী হামলা জোরদার করেছে লেবানন ভিত্তিক সংগঠনটি।

এর জেরে শীর্ষ পর্যায়ের ইহুদি সেনা কর্মকর্তারা সম্প্রতি লেবাননে ‘ব্যাপক-মাত্রায়’ হামলা চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা লেবাননে অভিযান চালানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।

একই দিন হিজবুল্লাহ গোয়েন্দা ড্রোন পাঠিয়ে ইসরাইলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করে। এতে রীতিমতো ‘হকচকিত’ হয়ে যায় তেল আবিব।

এরপর বুধবার হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় আগ্রাসন চালালে ইসরাইলের এক ইঞ্চি ভূমিও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে বাঁচতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি ইসরাইলকে আগ্রাসন চালানোর কাজে সহযোগিতা করলে সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দেন। সূত্র: ইরনা

আন্তর্জাতিক

দেশের দক্ষিণ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে অগণিত মর্টার শেল বিস্ফোরণে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। কয়েক দিন বিরতির পরে আবারও শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত বিকট শব্দে চলেছে অগণিত ও অনিয়ন্ত্রিত মর্টার শেল বিস্ফোরণ।
প্রতিটি বিস্ফোরণে থরথর করে কম্পন অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেই সাথে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পশ্চিম-দক্ষিণের গ্রামগুলোর আকাশে দেখা যাচ্ছে ঘরবাড়ি পোড়ানোর কালো ধোঁয়া।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও সরকার বাহিনীর সংঘর্ষের কারণে রাখাইনের বাসিন্দারা জীবন বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে দিগ্বিদিক ছুটছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তারা যেন আগের মতো সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড সীমান্তে এবং নদীতে টহল বাড়িয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের দপ্তর থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অনেকের ধারণা, আরাকান আর্মি তাদের দখল করা ঘাঁটিগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে এভাবে মর্টার শেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে বেশি বিস্ফোরণ হলেও ঈদের দিন দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল। আবার শুক্রবার রাত থেকে ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণে টেকনাফ সদর, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাং পানির ছড়া, নাজিরপাড়া, ডেইলপাড়া, শাহপীর দ্বীপ, হ্নীলা, নাইট্যংপাড়া, দমদমিয়া, জাদিমুড়া, রংগীখালী, পুরাতন বাজারসহ বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি কাঁপছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিদ্দিক আহমেদ জানান, বিস্ফোরণ মিয়ানমারে হলেও বিকট শব্দে আতঙ্কিত হচ্ছেন এলাকাবাসী।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, মিয়ানমারের সংঘাতে আমাদের এলাকাবাসী যেন আতঙ্কিত না হয় সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়কের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা ধরেননি।