আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের গাজায় ঘুম ভাঙলেই লাশ দেখছে মানুষ। প্রতিমুহূর্তে তাদের মৃত্যু হচ্ছে। এত মৃত্যু আর লাশ দেখে সেখানকার অধিবাসীরা মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। চোখ শুকিয়ে গেছে। কাঁদলে অশ্রু আসে না চোখে। তবুও বিশ্ববিবেক নীরব।

আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। এতে ২৪ ঘণ্টায় সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে হামলার ১৮তম দিন মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ।

এমন অবস্থায় ইসরাইলের মাটিতে পা রেখেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তেল আবিবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সন্ত্রাস ফ্রান্স ও ইসরাইলে কমন শত্রু। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লাড়াইয়ে আপনারা (ইসরাইল) একা নন।

গাজা সংঘাতের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য ওয়াশিংটন সফর করবেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার বিশেষ জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মানবিক সহায়তার জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। এএফপি, রয়টার্স, আলজাজিরা, বিবিসি ও এনডিটিভি।

গাজার চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ৭০৪ জন নিহত হয়েছেন। রাতে হামলা হয় গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-শাতি ও জাবালিয়ার আল-বালাদ শরণার্থীশিবিরে।

এছাড়া গাজার মধ্যাঞ্চলের আল-বুরেইজ ও দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ ও খান ইউনুস এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আল শাতি ও জাবলিয়ায় রাতভর হামলার পর ঘুম থেকে উঠেই প্রতিবেশী প্রিয়জনদের লাশ দেখছে মানুষ। এসব এলাকায় কবর দেওয়ারও জায়গা নেই। অতিরিক্ত কবর খুঁড়ে দাফন করা হচ্ছে লাশ।

ফিলিস্তিনের একটি সংবাদ সংস্থার খবর, রাফাহ এলাকায় ইসরাইলি হামলায় ৩০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। আর খান ইউনুসে শিশুসহ ২৩ জন মারা গেছেন। আহতের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে।

এদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি সকালে এক্স বার্তায় (সাবেক টুইটার) বলেন, গাজা উপত্যকায় ৪০০টির বেশি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এর মধ্যে মসজিদও রয়েছে। তিনি বলেন, হামাসের সদস্যরা মসজিদে বসে বৈঠক করছে। এ কারণে মসজিদে হামলা চালাতে হচ্ছে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তাছাড়া মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলাপ করবেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ওয়াশিংটন সফরে ইসরাইল ও ইউক্রেনের ‘পরিস্থিতি’ নিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এই সংকট সমাধানে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চাপ দেওয়া হবে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক হবে কি না, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।

এ সফরকে সামনে রেখে সোমবার ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলি কোহেনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ওয়াং। চলমান সংকট সমাধানের পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ করেন তিনি।

এক বিবৃতিতে ওয়াং বলেন, প্রতিটি দেশেরই আত্মরক্ষা করার অধিকার আছে। কিন্তু বেসামরিক নাগরিকের নিরাপত্তা রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসরণ করা উচিত।

‘কার্যকর আন্তর্জাতিক শান্তি সমাবেশের আয়োজন করার আহ্বান জানিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ফিলিস্তিনির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ মালকিকে বলেন, দ্বিরাষ্ট্র সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবে চীন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সফরের আগে ইসরাইল সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিসি সুনাক ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্যালেস জানিয়েছে, ইসরাইলের প্রতি ‘পূর্ণ সংহতির’ বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে এই সফরে গেছেন ম্যাক্রোঁ।

এদিকে জর্ডান ও মৌরিতানিয়ার অনুরোধে গাজা বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের বৈঠক ডাকা হয়েছে। মঙ্গলবার এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডেনিস ফ্রান্সিস বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ কোনো পরিস্থিতিতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে সাধারণ পরিষদকে এগিয়ে আসতে হয়।

১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাত নিয়ে নতুন এক প্রস্তাব পাশের চেষ্টা করছে। এর আগে গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে বাতিল হয়ে যায়।

অপরদিকে ইইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছিলেন, তিনি আশা করেছেন যে ইইউ নেতারা মানবিক সহায়তার জন্য যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করবেন।

লুক্সেমবার্গে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর জোসেপ বোরেল বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে মানবিক সাহায্যের সুবিধার্থে একটি মানবিক বিরতির ধারণা নেতারা সমর্থন করবেন। তেমন একটি বিরতি বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওইদিনই পালটা আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। এরপর থেকে নির্বিচার হামলা চলছে। অবরুদ্ধ রয়েছে গাজা উপত্যকা।

অন্যদিকে ইসরাইল জানিয়েছে, হামাসের হামলা ও তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের দেশে নিহত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে, আহত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ সেনা ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন

আন্তর্জাতিক

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি সহিংসতা, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে সব পক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সোমবার বাংলাদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানানো হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ তথ্য জানিয়ে আবারও আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো সব পক্ষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। এর মধ্যে আছেন সরকারি কর্মকর্তারা, আইন প্রয়োগকারীরা, রাজনৈতিক দলগুলো, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া এবং অবশ্যই ভোটাররা।

এ সময় ম্যাথিউ মিলারের কাছে ওই সাংবাদিক জানতে চান- ২৮ অক্টোবর বিরাট রাজনৈতিক র্যালি করার কথা ঘোষণা করেছে বিরোধী দল। একে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাংলাদেশে। র্যালিতে বাধা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে শাসকগোষ্ঠী। এর মধ্যে রয়েছে গ্রেফতার, অভিযোগ গঠন, এমনকি এখন রাতের বেলায়ও বিচার করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ান ইউরেনিয়াম ব্যবহারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো পদক্ষেপ বিবেচনা করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ইস্যুও তুলে ধরা হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শুধু নিজের নিরাপত্তা নয়, দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই মঞ্চ থেকে অনেকবার আপনি ভিয়েনা কনভেনশন সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ফলে এই প্রেক্ষাপটে আপনার মন্তব্য কি? জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি আবারও বলব ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন্স-এর অধীনে কূটনৈতিক চত্বর ও এর কর্মকর্তাদের সুরক্ষিত রাখতে সবরকম যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্যবাধকতা আছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা আশা করি, দেশের ভেতর যুক্তরাষ্ট্রের সব মিশন ও কূটনীতিকদের সেফটি ও সিকিউরিটি রক্ষায় সব রকম উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সরকার।

আন্তর্জাতিক

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে এক সপ্তাহ আগেই জানা যাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস। সম্প্রতি চীনা বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, এআই আগে থেকেই আসন্ন ভূমিকম্প সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে এবং তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুল হবে।

এআই মডেলটি নিয়ে দেশটিতে ৭ মাসের আন্তর্জাতিক ট্রায়াল দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় এক সপ্তাহ আগে প্রায় ২০০ মাইলের মধ্যে ১৪টি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পেয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। তবে তারা এও জানিয়েছেন, এটি বিশ্বের যে কোনো কোণে কাজ করবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ট্রায়ালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউটি) উন্নতকরণ এআই মডেলটি ডিজাইন করা অন্য ৬শ মডেলের মধ্য থেকে প্রথম সারিতে স্থান করে নেয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন ভূমিকম্প বিশারদ ইয়াং চেন। গবেষণার ফলাফলটি আমেরিকার সিসমোলজিক্যাল সোসাইটির বুলেটিনে প্রকাশিত হয়।

টেক্সাস সিসমোলজিক্যাল নেটওয়ার্ক প্রোগ্রামের (টেক্সনেট) এক প্রবীণ গবেষক আলেক্সজান্দ্রোস স্যাভাইদিস বলেছেন, ভূমিকম্প যেহেতু আপনি দেখতে পান না সেহেতু গবেষকদের পাওয়া ওই ফলাফল অভূতপূর্ব সাফল্য বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। যা মানুষের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

গবেষণাটি টেক্সনেট, টেক্সাস কনসোর্টিয়াম ফর কম্পিউটেশনাল সিসমোলজি এবং ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা সমর্থিত ছিল। গবেষকদের মতে, এই এআই প্রযুক্তি আমেরিকা, ইতালি, জাপান, গ্রিস, তুরস্ক এবং টেক্সাসে সিসমিক ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক উন্নত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক

সামরিক আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলি জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনাই হবে না বলে জানিয়েছে হামাস।

শনিবার লেবাননে এক সংবাদ সম্মেলনে এক হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জিম্মি ইসরাইলি সেনাদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। এর সঙ্গে (ফিলিস্তিনি) বন্দী বিনিময়ের বিষয়টি জড়িত। আর ইসরাইল গাজা ও ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন বন্ধ না করা পর্যন্ত এটা নিয়ে আমরা আলোচনাই করব না।

শুক্রবার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জিম্মি থাকাদের মধ্যে দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার কথা জানায় হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক এক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। এ হামলায় সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা।

শুধু তাই নয়, তারা শতাধিক মানুষকে জিম্মি করেও নিয়ে যায়। এসব জিম্মির মধ্যে দুই আমেরিকানও ছিলেন।

এই দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়াকে শুভেচ্ছার নিদর্শন বলে উল্লেখ করেন হামাস নেতা গাজী হামাদ। বন্দীদের মধ্যে যারা ইসরাইলি নন, সম্প্রতি তাদের ‘অতিথি’ হিসেবে সম্বোধন করছে হামাস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল সংগঠনটি।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসকে সহযোগিতার অভিযোগে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা নিউজের স্থানীয় ব্যুরো কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসরাইলের তথ্যমন্ত্রী শালোমা কারহি। রোববার ইসরাইলের বেতার সংবাদমাধ্যম আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

শালোমা কারহি জানান, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর দিন থেকে হামাসঘেঁষা সংবাদ পরিবেশ করে আসছে আলজাজিরা নিউজ। ইতোমধ্যে এ সংবাদমাধ্যমটির ইসরাইল কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছেন। তাদের যাচাই শেষ হলে এটি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে বলে জানিয়েছেন শালোমা।

আর্মি রেডিওকে ইসরাইলের তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ নিউজ স্টেশনটি নিয়মিত উস্কানিমূলক সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে এবং এসব সংবাদ ইসরাইলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে বাইরের দেশের অনেক মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। আলজাজিরা যতখানি সংবাদমাধ্যম, তারচেয়েও অনেক বেশি প্রোপাগান্ডা মাউথপিস। নিজেদের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম হিসেবে দাবি করা একটি নিউজ স্টেশন হামাসের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে— এটা অগ্রহণযোগ্য। আশা করছি, শিগগিরই এ ব্যাপারে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।

তবে ইসরাইলের এমন দাবির বিষয়ে এখন পর্যন্ত আলজাজিরা বা কাতার সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। আলজাজিরার প্রতি ইসরাইলের এই ক্ষোভ নতুন নয়। এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছিল ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ওই সময় বোমা হামলা চালিয়ে আলজাজিরার গাজা উপত্যকার ব্যুরো কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইসরাইল।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইল-হামাসের সংঘাতে করণীয় নিয়ে ‘বিশেষ জরুরি সভা’ ডেকেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। বর্তমানে ওআইসির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সৌদি আরবের আমন্ত্রণে ওই সম্মেলনে যোগ দেবে বাংলাদেশ।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রামাদানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ওআইসি মিটিংয়ে যাচ্ছি। সেটাতে আমরা যোগ দেব বলে উনি (রাষ্ট্রদূত) আসছেন আলোচনা করতে। ওআইসির মিটিংয়ে সৌদি প্রিন্স আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন ওআইসির পক্ষ থেকে। আমরা সেখানে যাব ১৮ তারিখ (অক্টোবর)।

ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সমাধান প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, দুটি আলাদা রাষ্ট্রই এটার সমাধান। যেটা জাতিসংঘ রেজ্যুলেশন ২৪২ এবং ৩৩৮ এর মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান সম্ভব। আমরা চাই না, আরও আরও রিফিউজি বাড়ুক। যদি তারা অন্য কোনো জায়গায় গিয়ে রিফিউজি হয়, এটা দুনিয়ার জন্য খুব দুঃখজনক হবে। আমরা সব দলকে বলি, পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ আগের অবস্থান রয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, আমাদের যে অবস্থান, সেটাতেই আছি। আমরা চাই, নির্যাতন বন্ধ হোক। পানি, ওষুধ, খাবার বন্ধ করা গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো মানবিকতা লঙ্ঘন।

আন্তর্জাতিক

এবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে সরে যাওয়ার জন্য মাত্র তিন ঘণ্টার সময় বেধে দিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী।

স্থানীয় সময় রোববার রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করিডোর ব্যবহার করে গাজার উত্তরের বাসিন্দারা দক্ষিণে চলে যেতে পারবেন বলে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে। এরপর যেকোনো সময় অভিযান শুরু করতে পারে ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী।

ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার একটু আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) শেয়ার করা এক পোস্টে এই সময়সীমা বেঁধে দেয়।

ওই পোস্টে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত করিডরে কোনো ধরনের হামলা বা অভিযান চালাবে না।

গাজাবাসীর উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, দয়া করে নির্ধারিত এই সময়ে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ দিকে যাওয়ার সুযোগ নিন।

রোববার সকালের দিকে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয়, গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণ দিকে চলে যেতে বাধা দিচ্ছে হামাস। বেসামরিক জনগণকে হামাস মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে।

এর আগে ১৩ অক্টোবর গাজাবাসীর প্রতি এক ভয়াবহ আলটিমেটাম দেয় ইসরাইলের সশস্ত্র বাহিনী। জাতিসংঘের মাধ্যমে তারা জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থল বলে পরিচিত ওয়াদি গাজা থেকে সেখানকার ১১ লাখ অধিবাসীকে সরে যেতে হবে।

তবে বিষয়টি একপ্রকার অসম্ভব বিবেচনা করে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, ইসরাইল যে দাবি করেছে, তাতে ওই অঞ্চলের অন্তত ১১ লাখ অধিবাসীকে সরে যেতে হবে, যা গাজার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।

তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ এই আল্টিমেটাম প্রত্যাহারের জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছে ইসরাইলের কাছে।

গাজায় ইসরাইলের নিষিদ্ধ ফসফরাস ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শনিবার ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাবরেটরিতে ছবি ও ভিডিও পরীক্ষার পর সংগঠনটি এ দাবি করেছে।

ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাবরেটরি গাজা বন্দরে হামলার একাধিক দিক থেকে তোলা ছবি পরীক্ষা করেছে। একই সঙ্গে তারা স্যাটেলাইট ছবিও পর্যালোচনা করেছে।

সংগঠনটি বলেছে, হামলার একটি ভিডিও ফুটেজে নিষিদ্ধ ফসফরাস ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা কামানের গোলায় বিস্ফোরকের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। গোলাটি বিস্ফোরণের সময় সাদা ধোঁয়া উড়েছে। যা গোলায় এম৮২৫ ও এম৮২৫এ১ ব্যবহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

১৯৮০ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধক্ষেত্রে সাদা ফসফরাস বোমা ঘনবসতি স্থানে ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কারণ এতে সৃষ্ট ধোঁয়া নিশ্বাসে গ্রহণের ফলে ফুসফুসে ক্ষত ও শ্বাসরোধের ঘটনা ঘটতে পারে। বোমায় ব্যবহৃত সাদা ফসফরাস বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ফসফরাস নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকবে। সাদা ফসফরাসে দগ্ধদের চিকিৎসা করা খুব কঠিন।

এর আগে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যাকার কারামা এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সাদা ফসফরাস বোমা ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিল ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

ইউরোপিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রতিষ্ঠাতা রামি আবদোও অভিযোগ করেছিলেন, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজার জনবহুল এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত ফসফরাস ব্যবহার করছে।

আন্তর্জাতিক

ঘনবসতিপূর্ণ গাজার অভ্যন্তরে হামাসের ওপর হামলা চালাতে পুরোদমে প্রস্তুত ইসরাইলি সেনারা। তবে ইসরাইলের এ স্থল হামলায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, গাজায় স্থল হামলা চালালে পরাজিত হতে পারে ইসরাইল সেনারা।

পাঁচ কারণে ইসরাইল বাহিনীর সব পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। বাধাগুলোর মধ্যে সবার উপরে রয়েছে গাজা শহরের ঘনবসতির বিষয়টি। এই শহরের প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ বসবাস করে। শহরের রাস্তাগুলো খুব সরু।

ইসরাইলি বাহিনীর জন্য এসব রাস্তা দিয়ে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত আইএফভি যান এবং ট্যাংকগুলো বহন পরিচালনা করা খুব কঠিন হবে।

দ্বিতীয়ত, সংকুচিত জায়গার মধ্যে ‘বুবি ট্র্যাপ’ কিংবা পেতে রাখা ফাঁদগুলো ইসরাইলি সেনাদের জন্য তীব্র মাত্রায় ঝুঁকির কারণ হবে।

তৃতীয়ত, সিরিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের উদাহরণ। ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল ও রকেট হামলায় ভারী অস্ত্র সজ্জিত একটি বড় পদাতিক বাহিনীকেও ছোট বাহিনীর কাছে বেগ পেতে হয়।

চতুর্থত, পদাতিক বাহিনীর জন্য হেলিকপ্টারের সহায়তা নেওয়াও কঠিন হবে। কারণ হামাসের সহজে বহনযোগ্য নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।

মুবার নামে এই প্রতিরক্ষা দিয়ে ইতোমধ্যেই তারা ইসরাইলের চারটি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে।

পঞ্চমত, ইসরাইলি সেনারা যদি গাজায় হামলা চালায় তবে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা সীমিত রাখা কঠিন হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে তখন ইসরাইলের ওপর চাপ আরও বাড়বে।

আন্তর্জাতিক

চীনকে আটকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ঠা জ্যাক সুলিভানকে টাকাপয়সা খরচ করার পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশগুলোকেও এ কথা বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটনে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, আমি তাকে বললাম আপনাদের খালি উপদেশ আর হুকুম এবং ভয়, এগুলো দিয়ে চীনকে আটকানো যাবে না। এটি করতে হলে টাকাপয়সা নিয়ে আসেন।

মোমেন বলেন, উনি (জ্যাক সুলিভ্যান) আমাকে বললেন, তিনি চেষ্টা করছেন। তারা বিষয়টি অনুধাবন করেন। তিনি বললেন, আপনি বিষয়টি মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে তুলে ধরেছিলেন এবং আমি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি এজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র ২০০ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল তৈরি করতে চায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেবে বলে।

অন্যান্য দেশকেও একই কথা বলেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বড়লোক দেশগুলোকে বলেছি তোমরা যদি চীনকে আটকে রাখতে চাও, তবে শুধু আদেশ এবং সতর্কতা দিয়ে লাভ হবে না। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না বা উপদেশ দিয়ে লাভ হবে না। তোমরা যদি চীনকে আটকাতে চাও তবে সঙ্গে কিছু টাকাপয়সা নিয়ে আসবে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, চীন থেকে আমরা ঋণ নিয়েছি মাত্র ৪০০ কোটি ডলার। এটি আমাদের জিডিপির এক শতাংশ। তবে ফলাও করে কিছু পণ্ডিত বলেন, বাংলাদেশ চীনের লেজুড় হয়ে গেছে।

জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক মাঝপথে থেমে গিয়েছিল বলে একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা লিখছে ‘থেমে গিয়েছিল’ তারা আহাম্মকের স্বর্গে আছে, বানোয়াটের স্বর্গে আছে। আলোচনাটা খুব সুন্দর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মিশনে গিয়েছিলেন সব সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সম্মান জানানো – সেইসব কারণে। তখন ওখানে যুক্তরাষ্ট্রের খুব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দলবল নিয়ে আসেন এবং আমরা তাকে স্বাগত জানাই।

আন্তর্জাতিক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষের সাত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ।

শনিবার ভোরে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট বৃষ্টির মাধ্যমে শুরু হওয়া এ হামলা এখন নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে ওই অঞ্চলে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে টানা গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে হামাসের বিভিন্ন স্থাপনায়। হামাসও পাল্টা গোলাবর্ষণ করছে ইসরাইলি ভূখণ্ডে।

চলমান এ সহিংস পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা হামাস-ইসরাইল সংঘাত অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরাইলের পাশে অবস্থান নিয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। তবে এ সংঘাতের অবসানে ইসরাইল-ফিলিস্তিন আলাদা দুই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছে চীন। খবর টাইমস নাউ।

রোববার বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে হামাস-ইসরাইল সংঘাতের বিষয়টি উঠেছে। এ সময় এক সাংবাদিক গাজা উপত্যকায় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ভয়াবহ সংঘাত এবং উভয়পক্ষের ব্যাপক হতাহতের ঘটনার বিষয়ে চীনের মন্তব্য জানতে চান।

জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরাইলের বর্তমান উত্তেজনা ও সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনায় চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শান্ত থাকার, সংযম চর্চার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় এবং পরিস্থিতির যাতে আরো অবনতি না ঘটে, সেজন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সংঘাতের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে যে, শান্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতা চলতে পারে না। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এ সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার মূল উপায়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। ফিলিস্তিন প্রশ্নে আলোচনা বৃদ্ধি এবং ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং স্থায়ী শান্তির উপায় খুঁজে বের করতে হবে। চীন সেই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে চীনের এ অবস্থানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তেলআবিব। বেইজিংয়ে নিযুক্ত ইসরাইলের দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউভাল ওয়াকস বলেছেন, ইসরাইল চীনের কাছ থেকে হামাসের হামলার বিষয়ে ‘কঠোর নিন্দা’ দেখতে পাওয়ার আশা করেছিল। কারণ তারা চীনকে ইসরাইলের বন্ধু হিসেবে দেখে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যখন মানুষ খুন হচ্ছে, রাস্তায় জবাই হচ্ছে, তখন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ডাক দেওয়ার সময় নয়।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি দখলদারিত্ব এ অঞ্চলে শান্তি বয়ে আনবে না: বাংলাদেশ

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের নিন্দা জানিয়ে দুপক্ষের হামলায় নিরপরাধ বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছে, আমরা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়কেই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি এবং উভয় পক্ষের নিরপরাধ প্রাণহানি এড়ানোর জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও জোরপূর্বক বসতি স্থাপন এ অঞ্চলে শান্তি বয়ে আনবে না বলেও মনে করে বাংলাদেশ।

মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ ফিলিস্তিন ও ইসরাইলকে জাতিসংঘের রেজুলেশন নং ২৪২ ও ৩৩৮ অনুসরণ করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পাশাপাশি বসবাসের সমর্থন করে, যা এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে পারে।

সংঘাতে মাত্রাতিরিক্ত ও নির্বিচারে বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

শুধু সংলাপ ও কূটনীতিই ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের স্থায়ী সমাধান ঘটাতে পারে বলে পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সংঘাত ও সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না বলেও উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।