আন্তর্জাতিক

ভারত আবারও জানিয়ে দিল, বাংলাদেশকে ঘিরে চলমান রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহে ভারতের অবস্থান শেখ হাসিনার পক্ষেই থাকছে।

ভারত চায়, বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ভারতের অবস্থান হচ্ছে, এ বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। তাই এ নিয়ে কিছু বলা সংগত নয়।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ কথা বলেন।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিরোধী দল বিএনপির আন্দোলন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। সেখানে ভারতীয় মুখপাত্র বলেন, কয়েকদিন আগে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ভারত সরকারের মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন। সেই মনোভাব এখনও অপরিবর্তিত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কী চলছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন নয় বলেও জানান তিনি।

তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে কাল্পনিক বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় মুখপাত্র। তিনি বলেন, কাল্পনিক কোনো বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক না। ভারত চায়, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক এবং নির্ধারিত সময়েই হোক।

আন্তর্জাতিক

অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার সংসদে ঝোড়ো ভাষণে কার্যত পর পর শক্তিশেল তাক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আর তার সব কয়টিই প্রায় ছিল বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে নিয়ে।

বক্তব্যের শুরুতেই মোদি বলেন, ফিল্ডিং বিপক্ষ দল সাজিয়েছে, আর চার-ছক্কা এদিক থেকেই যাচ্ছে। এর আগে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে নরেন্দ্র মোদি বিজেপির সংসদীয় বৈঠকে সমস্ত সাংসদকে ‘ছক্কা হাঁকানোর’ পরামর্শ দিয়েছিলেন।

মোদি তার ভাষণে বলেন, আমি আমার বিরোধীদের বলতে চাই আপনারা কেন একটু তৈরি হয়ে এলেন না? একটু পরিশ্রম করতে পারতেন। আমি পাঁচ বছর সময় আপনাদের দিয়েছি প্রস্তুতি করার জন্য। আমি ২০১৮ সালে বলেছিলাম, (অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে) আপনারা অবশ্যই ফিরে আসবেন। আপনারা তা পারলেন না পাঁচ বছরে। কী হাল আপনাদের!

প্রধানমন্ত্রী এদিন বিরোধীদের দিকে খোঁচার সুরে বিরোধীদের বলেন, গোটা দেশ আপনাদের দেখছে। আপনাদের পার্টি কী বলছে, কী করছে, তারা দেখছেন। তবে আপনারা মানুষকে হতাশা ছাড়া কিছু দেননি।

মোদি তার ভাষণের শুরুতেই বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব প্রতিবারই এনডিএর জন্য লাকি প্রমাণিত হয়েছে। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৮ সালে বিরোধীরা অনাস্থা ডাকার পর ২০১৯ সালে এনডিএ বড় অঙ্ক নিয়ে ফেরে শাসকের গদিতে।

মোদি বলেন, এ কেমন আলোচনা আপনারা করছেন এই অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায়, আমি দেখছি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাদের দরবারিরাও খুব দুঃখী হয়ে রয়েছেন। ফিল্ডিং বিপক্ষ আয়োজন করেছে, কিন্তু চার ছয় এখান (আমরা) থেকে যাচ্ছে!

বিপক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, তাদের পার্টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের কাছে, দেশের চেয়েও। দরিদ্রদের খিদে নিয়ে আপনারা চিন্তিত নন, ক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত। যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নন, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে টাকা নিয়ে যাওয়ার পর সে দেশ যদি তা জব্দ করে তাহলে আমরা খুশি হব।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মতবিনিময় সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দুর্নীতির মাধ্যমে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাচার করলে, সেই টাকা জব্দ করা হবে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমরা খুব খুশি হব। তবে ওদের (যুক্তরাষ্ট্রের) দেশে আইন আছে কেউ সেখানে টাকা নিয়ে গেলে ওয়ার্ক পারমিট পায়,  সিটিজেনশিপ পায়। ওদের মতো এমন আরো অনেক দেশ আছে। তবে আমাদের দেশ থেকে কেউ যদি সেখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) টাকা নিয়ে যায়, আর তারা যদি সে টাকা জব্দ করে, আমরা খুব খুশি হব।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে ১১ জন বাংলাদেশির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে। গণমাধ্যমের এমন খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা তারাই বলতে পারবে, তাদের জিজ্ঞেস করেন।

মতবিনিময়ে কী বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, এটা রুটিন ওয়ার্ক। প্রায়ই এ ধরনের মতবিনিময় করে আমরা পরামর্শ নিয়ে থাকি।

তিনি বলেন, বিদেশি দূতদের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের কী ধরনের প্রশ্ন করা উচিৎ, সে বিষয়ে মতবিনিময় সভায় অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন দেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করা উচিৎ জেনেভা কনভেনশন তারা ভঙ্গ করেছেন কি না, তাদের ওখানে বিচার বহির্ভূত হত্যা কেন হয়, তাদের ওখানে অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন হয় কি না। তবে এমন প্রশ্ন এখানকার সাংবাদিকরা করেন না। কীভাবে প্রশ্ন করতে হবে, সাংবাদিকদের তা নিয়ে ওরিয়েন্টেশন দেওয়া উচিত।

ড. মোমেন আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মতবিনিময় সভায় তারা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, সে জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে যে চিঠি দিয়েছেন, সেখানকার অনেক তথ্য সঠিক নয়। সে কারণে আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে সেমিনার করে সঠিক তথ্য তুলে ধরা উচিত।

মতবিনিময় সভায় অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান, শমসের মবিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নাঈমুল ইসলাম খান, স্বদেশ রায়, রাহুল রাহা, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.)  আব্দুর রশীদ প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক

বছরের পর বছর ক্রিকেট মাঠের বাইশ গজ কাঁপিয়ে দেশের ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৭৪ বর্গমাইলে এসে খেই হারিয়ে ফেললেন ইমরান খান (৭০)।

পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। পাকিস্তানকে প্রথম বিশ্বমঞ্চে ওঠানোর কারিগর। পাকিস্তানের লাখো ভক্তের ‘মহানায়ক’। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। রমণীমোহন খ্যাত সুদর্শন ইমরান খানকে একনজর দেখতে একসময় জনস্রোতে ভাসত বিশ্বের তাবড় তাবড় সব স্টেডিয়াম।

খেলার মাঠের রঙিন দিনগুলোয় হাজার হাজার নারীর মনোনায়ক, ছিমছিমে গড়নের সেই চৌকশ খেলোয়াড় আজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন বাউন্ডারির বাইরে। অ্যাটক জেলের অন্ধকার কুঠরিতে। জীবনভর চার-ছক্কা হাঁকানো ব্যক্তিটি অবসর নিয়েই পা রাখেন নিজের সীমানার বাইরে। রাজনীতির মাঠে। হলেন প্রধানমন্ত্রী।

জনপ্রিয়তা লাভ করেন এখানেও। কিন্তু রাজনীতির গোলকধাঁধায় হারিয়ে ফেলেন মসনদ। অনাস্থায় ক্ষমতা হারান। আর এখন অ্যাটক জেলের কয়েদি। ক্রিকেটের মাঠে মহানায়ক খ্যাতি অর্জন করলেও রাজনীতিতে হয়ে গেলেন বোল্ড আউট। বিবিসি।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং দেশের অর্থনীতির সঠিক দিশা দেখানোর প্রতিশ্র“তি দিয়ে ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশটি আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, কমে যায় রুপির মূল্য। ঋণ সংকটে পঙ্গু হতে থাকে দেশ। অনেকের মাঝে ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম হয়।

২০২২ সালের মার্চের শেষদিকে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১০ এপ্রিল অনাস্থা ভোট হয়। হেরে যান খান। ৩৪২ সদস্যের হাউজে তার বিরোধীরা ১৭৪ ভোট পান। ৫ আগস্ট তোশাখানার দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হলে তাকে অ্যাটক জেলে বন্দি করে রাখা হয়।

খানের জন্ম ১৯৫২ সালে। বাবা ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। স্কুলজীবন কাটে লাহোরে। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেন। এরপর যোগ দেন ক্রিকেটে। দুই দশকব্যাপী ক্রিকেটে সুনাম অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে তার অধিনায়কত্বে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয় করে পাকিস্তান। যৌবনকালে তিনি প্লেবয় হিসাবেও বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেন।

খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর তার মায়ের স্মৃতিতে একটি ক্যান্সার হাসপাতালে মিলিয়ন ডলার তহবিল দান করেন। পরোপকারের এ অভিযান তকে ধীরে ধীরে রাজনীতির দিকে ঠেলে দেয়। ১৯৯৫ সালে খান ২১ বছর বয়সী ব্রিটিশ উত্তরাধিকরী জেমিনা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেন। তখন খানের বয়স ছিলো ৪৩ বছর। তাদের দুটি ছেলে সন্তান হয়।

২০০৪ সালে বেজে ওঠে বিচ্ছেদের সুর, ভেঙ্গে যায় সংসার। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন খান। সাংবাদিক রেহাম খানকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের এক বছরেরও কম সময়ে ভেঙ্গে যায় এ বিয়েও। খান ২০১৮ সালে একটি লো-প্রোফাইল আবারও বিয়ে করেন। তৃতীয় স্ত্রীর নাম বুশরা ওয়াট্টো। পাঁচ সন্তানের জননী ছিলেন।

রাজনীতিবিদ হিসেবে ইমরান খান উদারতার পরিচয়ের সাথে ইসলামিক মূল্যবোধেরও পরিচয় দেন। তবে তিনি সমালোচিত হয়েছেন বহুবার। পাকিস্তানে যখন ইসলামী জঙ্গীবাদের উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছিলো তখন তালেবানের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে সমালোচিত হন খান।

সেই সময় বিরোধীরা তাকে তালেবান খান বলে অভিহিত করেন। আবার ২০২০ সালে ওসামা বিন লাদেনকে শহীদ বলেও তোপের মুখে পড়েন তিনি।

ভয়ে চুপ থাকলেও সমর্থনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরও নিশ্চুপ আছেন তার প্রতিনিধিরা। অথচ ৯ মে যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন সারা দেশে বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সহিংসতা সংঘর্ষে রুপ নেয়। কিছু বিক্ষোভকারী সামরিক ভবনে হামলা চালায়।

এমনকি লাহোরের সবচেয়ে সিনিয়র সামরিক কমান্ডারের বাড়িতেও লুটপাট চালানো হয়। কিন্তু এবারের পনিস্থিতি পুরোটাই ভিন্ন। হচ্ছে না কোনো বিক্ষোভ। হচ্ছে না লুটপাট। নিশ্চুপেই খানকে সমর্থন করছেন তার সমর্থকরা।

নিরব সমর্থনের শক্তিতে দৃঢ়প্রতিঙ্গ হয়ে আছেন। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল ও সমর্থকরা বলছেন দ্রুত ক্র্যাকডাউনের মাধ্যমে তারা নিরব হতে বাধ্য হয়েছেন।

খানকে অ্যাটক জেলে বন্দীর পর পুলিশ ও সামরিক বাহিনী সমস্ত বড় শহর জুড়ে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেন। এমনকি কয়েক ডজন লোককে আগে থেকেই হেফাজতে নেওয়া হয়। মে মাস থেকে খানের হাজার হাজার সমর্থকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেশ কিছু পিটিআই রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। আবার অনেকেই নিশ্চুপ থেকেই খানকে সমর্থন করে যাচ্ছেন।

অনেকেই জানান, তারা জনাব খান ও পিটিআইকে সমর্থন করেন। নিরাপত্তার খাতিরে নাম পরিবর্তন করা ফাতেমাসহ অনেক পিটিআই সমর্থক প্রতিজ্ঞা করেছেন, তারা জনাব খান ও তার দলকে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিবেন। তারা বলেন, ‘জনাব খান ও তার দলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবো।’

আন্তর্জাতিক

‘পরমাণু যুদ্ধের ঢোল আবারও বাজছে। অবিশ্বাস ও বিভাজন বাড়ছে। স্নায়ুযুদ্ধের কারণে যে পারমাণবিক ছায়া নেমে এসেছিল তা আবার ফুটে ওঠেছে। কিছু দেশ আবারও বেপরোয়াভাবে পারমাণবিক স্যাবারকে ধাক্কা দিচ্ছে, এই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করার হুমকি দিচ্ছে। ধ্বংসের কথা বলছে।’

রোববার হিরোশিমার পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৮তম বার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের এই বার্তা পড়ে শোনান সংস্থাটির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ইজুমি নাকামিৎসু। তাস।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়ংকর এ দিনটি স্মরণে পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করারও আহ্বান জানান তিনি। বাণীতে আরও উল্লেখ করেছেন, ‘পরমাণু অস্ত্র নির্মূল করা জাতিসংঘের সর্বোচ্চ নিরস্ত্রীকরণ অগ্রাধিকার।’ ‘পরমাণু ঝুঁকি দূর করার একমাত্র উপায় হলো পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূল করা’, জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘পরমাণু ছায়া একবার ও চিরকালের জন্য তুলে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।’ তবে বোমা হামলার জন্য দায়ী দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করেননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জাপান সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণকে ত্বরান্বিত করার একটি উপায় হিসেবে বোমা হামলাগুলোকে তারা ন্যায্যতা দেয়। মানবতার ইতিহাসে সামরিক সংঘর্ষে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার একমাত্র উদাহরণ এই হামলা। ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় এদিন হিরোশিমা শহরের দুনিয়ার প্রথম আনবিক বোমা হামলা হয়। রোদঝলমল সকালে এ হামলায় মুহূর্তে শহরটিতে নেমে আসে এক মহাপ্রলয়। ‘লিটল বয়’ নামের এ মার্কিন আণবিক বোমা হামলায় মুহূর্তে প্রাণ হারান ৮০ হাজার নিরপরাধ সাধারণ মানুষ। পরে তেজস্ক্রিয়তায় মারা যান আরও হাজার হাজার মানুষ। আরব নিউজ।

দিনটি উপলক্ষ্যে হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছেন। হামলার সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে শান্তিঘণ্টা বেজে উঠে হিরোশিমার শান্তি পার্কের স্মৃতিসৌধে। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সমবেত হন। নিহতদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। হিরোশিমা হামলার তিন দিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে আনবিক বোমা হামলা চালানো হয়।

আন্তর্জাতিক

তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নে ভারতের সংসদীয় কমিটির সুপারিশে আশাবাদী হওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সব আয়োজন ছিল গোছানো, কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়েছিল আটকে; তারপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে বহু, শীর্ষ নেতাদের সফর বিনিময়ও হয়েছে কয়েকবার, কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জট আর খোলেনি।

দুই যুগ পর বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মধ্যে তিস্তা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে নয়া দিল্লি সরকারকে পরামর্শ দিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে অনিষ্পন্ন এবং বহু কাঙ্ক্ষিত এই চুক্তি সম্পাদনে ভারতের পার্লামেন্টারি কমিটির এই তাগিদে কাজ করতে নয়া দিল্লি বাধ্য না হলেও এই সুপারিশকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন দুই দেশেরই বিশ্লেষকরা।

শুধু বাংলাদেশেই যে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তা নয়, আগামী বছর ভারতেও সাধারণ নির্বাচন। তার আগে এই সুপারিশে পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা সদস্য, যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতে বিজেপি-তৃণমূল যোগাযোগের ইঙ্গিতও পাচ্ছেন কেউ কেউ।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন ভারতের সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির সুপারিশে।

একে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “তাদের সংসদীয় কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে, পরবর্তী দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এটা নিয়ে আলোচনা হবে।”

ভারতের লোকসভার বিদেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটি গত ২৫ জুলাই লোকসভার অধিবেশনে ‘ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন জমা দেয়।

ক্ষমতাসীন বিজিপির পার্লামেন্ট সদস্য পি পি চৌধুরী নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরোধিতার কারণে ২০১১ সালে শেষ মুহূর্তে আটকে যায় তিস্তা চুক্তি।

যেভাবে লাগে গেরো

ভারতে তখন কেন্দ্রে সরকারে কংগ্রেস, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তার ঢাকা সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল।

সেই সফরের আগে দুই দেশের পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এই চুক্তির বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছিল। চুক্তির নথিও চূড়ান্ত করে ফেলেছিল ঢাকা ও নয়া দিল্লি।

বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলে সেচের জন্য তিস্তার পানি গুরুত্বপূর্ণ বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন এই নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মাধ্যমে জলপ্রবাহের ন্যায্য হিস্যা পেতে বাংলাদেশ ছিল আগ্রহী।

সেই শীর্ষবৈঠকে মনমোহনের সঙ্গে মমতারও ঢাকায় আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি না আসায় গুঞ্জন ছড়ায়, তারপর দেখা গেল তিস্তা চুক্তি আর হয়নি।

২০১১ সালে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে  শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিং। ওই বৈঠকেই তিস্তা চুক্তি সইয়ের কথা ছিল, তবে হয়নি

এক সময়ের কংগ্রেস নেত্রী মমতা আলাদা দল গড়ার পর ২০০৪ সালে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়লেও পরে কংগ্রেসের জোটে ভিড়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও হন ২০১১ সালে।

তবে তারপর থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে নানা বিষয়ে তার মতবিরোধ চলছিল। মনমোহনের ওই সফরের পরের বছরই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসেন মমতা।

তিস্তা চুক্তিতে আপত্তির ক্ষেত্রে মমতা যুক্তি দেখান, বাংলাদেশকে পানি দিলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ভাগে পানি কম পড়বে।

এরপর ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে হেলদোল হয়নি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস এলেও তা কাগজে-কলমে আর এগোয়নি।

এবার এমন একটা সময়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতের সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন এল, যখন দেশটির আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর ভোট আর জোটের হিসাব-নিকাশ আবার শুরু হয়েছে।

এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসাবে আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ; অগ্রসরমান অর্থনৈতিক দেশগুলোর এই জোটের শীর্ষ সম্মেলন যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘ইতিবাচক’

তিস্তা চুক্তিকে মন্ত্রিসভায় না নিয়ে শুরুতে সংসদীয় কমিটিতে নিয়ে আসাটাকে ভারত সরকারের ‘সদিচ্ছার প্রকাশ’ হিসাবে দেখছেন ভারতীয় সাংবাদিক, বিশ্লেষক জয়ন্ত ঘোষাল।

তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, সরকারও এটাকে নতুন করে পুনর্জীবিত করতে চাইছে। শুরুতে কেবিনেটে নিয়ে আসলে খারিজ করে দেওয়া হতে পারে।

“একবার যেহেতু তিস্তার বিরোধিতা হয়েছে, সেহেতু এখন অনেক বেশি সাবধানে পা ফেলতে চাইছে সরকার। সেক্ষেত্রে আগে যদি সংসদীয় কমিটিতে বিষয়টা আলোচনা হয়, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান কিন্তু বিজিপির হাতে, সেই বিজিপির হাতে যেহেতু বিদেশমন্ত্রক রয়েছে, সেহেতু কী প্রস্তাব হবে, কী প্রস্তাব হবে না, সেখানে বিজিপির একটা ভূমিকা আছে।”

এক সময় আনন্দবাজার পত্রিকার দিল্লি সম্পাদক ছিলেন বর্তমানে ইন্ডিয়া টুডে আজতাক গ্রুপের কনসাল্টিং এডিটর জয়ন্ত ঘোষাল। ২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের যে ঢাকা সফরে তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেখানে সফরসঙ্গীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন।

তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক কমিটির সদস্য হওয়ায় ওই প্রতিবেদনের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে জয়ন্ত ঘোষাল বলেন, “স্টান্ডিং কমিটির রিপোর্ট দেখে তো মনে হচ্ছে, তাদের ইচ্ছার প্রকাশ। এবং স্টান্ডিং কমিটির রিপোর্ট এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেও একটা কোথাও আলাপ আলোচনার যোগসূত্র তৈরি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

“সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যয় ’হ্যাঁ’ বলেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি একটা নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে দিত, তাহলে তো স্টান্ডিং কমিটি এই সুপারিশটা করতে পারত না।”

এই কারণে নতুন উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিক থেকে কোনো ‘ইতিবাচক আশ্বাস’ কেন্দ্র পেয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ভারতের এই সাংবাদিক।

তিনি বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তা চুক্তি করতে চাইলেও মমতাকে মানিয়েই তা করতে হবে।

“সুতরাং এটা সত্যি সত্যি তারা (কেন্দ্রীয় সরকার) ইনিশিয়েটিভ নেয়, তাহলে সবথেকে কার্যকর সমাধানসূত্র হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে পরে আলোচনা হবে, আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাথে কেন্দ্র সরকারের একটা বৈঠক হোক। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীকে সম্পৃক্ত করা হোক।”

তিস্তা নদী হিমালয় থেকে উৎপত্তির পর ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে ব্রহ্মপুত্র নদীর সঙ্গে মিলেছে। বাংলাদেশের উজানে তিস্তায় গজলডোবা ব্যারেজ করায় পানি প্রত্যাহারের সুযোগ পাচ্ছে ভারত। ফলে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ পানি পাচ্ছে কম।

ভারতের সংসদীয় কমিটির সুপারিশে জয়ন্ত ঘোষাল গুরুত্ব দিলেও ততটা আশাবাদী হতে পারছেন না বাংলাদেশের কূটনীতিক এম হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, “পার্লামেন্টারি কমিটির রিপোর্ট তো বাধ্যবাধকতা নাই, কাজে তারা যদি এটাকে শুধু টেকনিক্যাল রিকমেন্ডেশান হিসাবে দেখেন, তাহলে আমার মনে হয় খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই।”

তবে তিনি মনে করেন, মোদী সরকার এখন রাজনৈতিক কারণে তিস্তা চুক্তি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে প্রতিবেদনটি ইতিবাচকভাবে কাজে লাগতে পারে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির তিস্তার সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়টি দেখিয়ে বলেন, “সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগে তারা এ ধরনের রিস্ক নেবেন কি না, এটাও কিন্তু একটা প্রশ্ন এবং জবাব আমাদের কাছে নাই।

“মোদীবিরোধী জাতীয় পর্যায়ে যে মোর্চা তৈরি হচ্ছে, তাতেও কিন্তু মমতা ব্যানার্জি সদস্য হিসাবে আছেন। কাজেই এই প্রেক্ষাপটে এখন মোদী সরকার যদি এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো কথা হবে, আমরা খুব খুশি হব, কারণ আমরা এক দশক ধরে অপেক্ষায় আছি, কবে এটার সমাধান হবে।”

২০১১ সালে যে কাঠামোটি হয়েছিল, তা ধরেই চুক্তির পক্ষপাতি বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, “হবে কি না, এই প্রক্রিয়া উত্তরণের মতো রাজনৈতিক পুঁজি মোদী সরকারের হাতে আছে কি না, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে জায়গায় সহযোগিতা করবে কি না, সেগুলো আমরা এখনও জানি না। আমি চিন্তা করছি বিচার্য বিষয় হিসাবে, এটাকে নেতিবাচক বিষয় হিসাবে দেখছি না।”

‘আশাব্যঞ্জক’

ভারতের সংসদীয় কমিটির ওই প্রতিবেদনকে অবশ্যই ‘আশাব্যাঞ্জক এবং তাৎপর্যপূর্ণ’ বলছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, “বিশেষ করে এই সংসদীয় কমিটিতে বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেসসহ ভারতের সব রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যরা আছেন। তাই এ ধরনের একটি সুপারিশ আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।

“এই সুপারিশকে উদ্ধৃত করে বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে আগামী দিনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে বলে আমরা আশা করি।”

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিও ওই সংসদীয় কমিটিতে থাকার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “আমরা এটাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

“ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির দীর্ঘ অমীমাংসিত বিষয় সম্পর্কে কমিটি অবগত এবং কমিটি চায় বাংলাদেশের সঙ্গে আরও উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সম্পন্ন করা হোক।”

“মতৈক্যে পৌঁছার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত কার্যকর আলোচনা শুরুর জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানাচ্ছে এবং এর অগ্রগতি বা ফলাফল কমিটিকে জানানো যেতে পারে,” বলেন তিনি।

চিঠির জবাব আসেনি

তিস্তা নদী থেকে পানি প্রত্যাহারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নতুন দুই খাল খননের উদ্যোগের খবর সংবাদ মাধ্যমে দেখে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে ভারতকে গত মার্চে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।

সাড়ে চার মাসের মাথায়ও ওই চিঠির জবাব আসেনি বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে চিঠির জবাব পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ওটার ব্যাপারে তারা কাজ করছে এবং তারা জানাবে।”

মধ্য মার্চে ভারতের ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় আরও দুটি খাল খননের জন্য প্রায় এক হাজার একর জমির মালিকানা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগ। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন জমির মালিকানা হস্তান্তর করেছে।

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি যেখানে ঝুলে আছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এমন উদ্যোগের ফল কী হতে পারে, সেই প্রশ্নও রাখা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

এর কয়েকদিন পর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছিলেন, ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক জানতে ভারতকে নোট ভার্বাল (কূটনীতিকপত্র) পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সেপা চুক্তি ও এলওসি প্রসঙ্গ

‘ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে নানা রকম সুপারিশ তুলে ধরে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

ব্যবসায় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট (সেপা) দ্রুত সময়ে চূড়ান্ত করার সুপারিশ প্রতিবেদনে করেছে কমিটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই চুক্তির বিষয়ে জয়েন্ট স্টাডি রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং ‘দ্রুত সময়ে’ আলাপ-আলোচনা শুরু হবে।

“তাই কমিটি চায়, কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট (সেপা) দ্রুত সময়ে চূড়ান্ত হোক এবং একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে বাস্তবায়নের জন্য আলাপ-আলোচনাও সেভাবে শুরু হয়।”

নতুন ও ক্রমবর্ধমান খাতে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দুদেশের উদ্যোগের ক্ষেত্রে পরিবেশ, জলবায়ু, সাইবার নিরাপত্তা, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, মহাকাশ, সবুজ জ্বালানি এবং সুনীল অর্থনীতিকে বিবেচনার কথা তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার হিসাবে ভারত বাংলাদেশকে ১ হাজার কোটি ডলারের সহজ শর্তের ঋণ দিয়েছে। যার মধ্যে ৭৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলার হচ্ছে তিনটি ঋণচুক্তির আওতায়। আরেকটি ঋণচুক্তির আওতায় ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হচ্ছে প্রতিরক্ষা খাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এলওসি’র আওতায় নেওয়া ৪২ প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। এর বাইরে ৮টি বাস্তবায়নাধীন, ৭টি দরপত্র এবং ১৩টি প্রস্তুতি পর্যায়ে।

এর বাইরে ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে ছাত্রাবাস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ ৭৪টি হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট নেওয়ার কথা তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

ভারতের ঋণে বাংলাদেশে নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সময়মত শেষ করার উদ্যোগ নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

ঋণচুক্তির আওতায় নেওয়া প্রকল্পগুলোর সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, “এসব প্রকল্পের সময়মত ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন অংশীদারত্বের সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করে কমিটি।

“তাই, ঋণচুক্তির আওতাসহ অন্য সব প্রকল্প যাতে সময়মত শেষ হয়, সেজন্য নিয়মিত ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কমিটি মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানাচ্ছে।”

২০১৫ সালে স্থলসীমান্ত চু্ক্তির মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময়ের ধারাবাহিকতায় অনুপ্রবেশ, আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান বন্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ শনিবার জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে আজ শনিবার সেশন জজ ইমরান খানের আবেদন খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে তোষাখানা মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করে তার তিন বছরের জেল দেন বিচারক দিলওয়ার।

খবরে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ও দায়রা জজ হুমায়ুন দিলাওয়ার তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, ‘পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সম্পদের ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’

তার পর বিচারক খানকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে এক লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়।

এর আগে গত ৯ মে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে পিটিআই প্রধানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা পাকিস্তান। পরে দুই দিনের মাথায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

যে মামলায় গ্রেফতার ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপহার তসরুফ সংক্রান্ত তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ শনিবার জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে আজ শনিবার সেশন জজ ইমরান খানের আবেদন খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে তোষাখানা মামলায় পিটিআই চেয়াম্যানকে অভিযুক্ত করে তার তিন বছরের জেল দেন বিচারক দিলওয়ার।

খবরে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ও দায়রা জজ হুমায়ুন দিলাওয়ার তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, ‘পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সম্পদের ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’

তার পর বিচারক খানকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে এক লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়।

এর আগে গত ৯ মে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে পিটিআই প্রধানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা পাকিস্তান। পরে দুই দিনের মাথায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক

তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ‘কান’ আগামী ডিসেম্বরেই আকাশে উড়াল দেবে। তার্কিস এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) বিষয়টি জানিয়েছেন।

টিএআই-এর মহাব্যবস্থাপক তেমেল কোতি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রথমবারের মতো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ২৭ ডিসেম্বর তারিখটি তারা বেছে নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক ও তার ভাই-বোন আঙ্কারায় আসেন। সেটি ছিল স্বাধীন তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ সূচনার মুহূর্ত।

পরিকল্পনা ছিল, ২০২৮ সালে তার্কিস ইঞ্জিন নিয়ে আকাশে উড়াল দেবে যুদ্ধবিমান কান। সে হিসাবে ২০১৬ সালে যুদ্ধবিমান তৈরির কাজ শুরু হয়।

তখন বলা হয়েছিল, ২০২৮ সালে তার্কিস বিমান বাহিনীর কাছে প্রথম বিমানটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার অনেক আগেই বিমানগুলো আকাশে উড়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছে।

জানা গেছে, পঞ্চম প্রজন্মের কান যুদ্ধবিমান পুরোনো এফ-১৬ বিমানের স্থলাভিষিক্ত হবে।

২১ মিটার (৬৯ ফুট) লম্বা যুদ্ধবিমানটিতে দুটি ইঞ্জিন রয়েছে। এ ইঞ্জিনগুলো বিমানটিকে আকাশে উড়াতে ২৯ হাজার পাউন্ড শক্তি সঞ্চার করতে পারে। আর যুদ্ধবিমানটি সর্বোচ্চ ২ হাজার ২২২ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম।

কান-এ রয়েছে উচ্চ সচেতনতা প্রযুক্তি, যুদ্ধের ক্ষতি সনাক্তকরণ প্রযুক্তি, অপটিমাইজড পাইলট ওয়ার্কলোড, নতুন প্রজন্মের মিশন সিস্টেম, কম পর্যবেক্ষণযোগ্যতা প্রযুক্তি, নির্ভুল আঘাত হানার সক্ষমতার প্রযুক্তি ও নিজের ভেতর অস্ত্র মজুতকরণ ব্যবস্থা।

আন্তর্জাতিক

সিলেট-১ আসনের সংসদ-সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কিছু লোক সরকারের ক্ষতি করতে গিয়ে দেশ ধ্বংসের তালে মেতেছে। এমনকি এই গোষ্ঠী বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে লোক না নিতে টাকা খরচ করছে।

শুক্রবার দুপুরে নগরীর শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দরিদ্রদের মাঝে চেক ও ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘সফলতা দেখে কেউ কেউ সরকারকে পছন্দ নাও করতে পারে-এটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সে দেশের ক্ষতি করবে। একটি মহল সরকারের ক্ষতি করতে দেশ ধ্বংসের তালে মেতে উঠেছে। তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কিন্তু তাদেরকে তা করতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, তারা টাকা খরচ করছে আর বলছে শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়া বন্ধ না হলে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশের স্বার্থে তাদের অপতৎপরতা রুখতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিণী সেলিনা মোমেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

বিশ্বজুড়ে দিনে দিনে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে তাপমাত্রার ভয়াবহতা। কেটলিতে থাকা ফুটন্ত পানির মতোই বেড়ে চলেছে উষ্ণতা। জলবায়ুর এমন বৈরী প্রভাবে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। আবহওয়ার প্রতিকূলতায় বর্তমান এ সময়কে তাই ‘ফুটন্ত যুগের’ সঙ্গে তুলনা করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস (৭৪) বলেন, ‘জুলাইয়ের তাপমাত্রা রেকর্ডে প্রমাণিত হয়েছে যে, পৃথিবী বৈশ্বিক উষ্ণতার যুগ থেকে বৈশ্বিক ফুটন্ত যুগে প্রবেশ করেছে।’ নিউইয়র্কে একটি বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এমনটি জানান। এ ছাড়াও কিভাবে এ পরিস্থিতি থেকে অবিলম্বে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে। আলজাজিরা।

মহাসচিব উত্তর গোলার্ধজুড়ে তীব্র দাবদাহকে ‘নিষ্ঠুর গ্রীষ্ম’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলে, ‘পুরো গ্রহের জন্য এটি একটি বিপর্যয়। ২০২৩ সালের জুলাইয়ের দাবদাহ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে। জলবায়ু পরিবর্তন এখানে ভয়ংকর। এটি মাত্র শুরু। বৈশ্বিক উষ্ণতার যুগ শেষ হয়েছে; বৈশ্বিক ফুটন্ত যুগ এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ানক ফলাফল এখন আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা সঠিক হয়েছে। তবে এই পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের অনুমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে হয়েছে।’ পর্তুগিজের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাপমাত্রার সঙ্গে উষ্ণ বাতাসও অসহনীয়। এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে লাভের আশা করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নিশ্চুপ থাকা অগ্রহণযোগ্য। নেতাদের অবশ্যই নেতৃত্ব দিতে হবে। আর কোনো দ্বিধা নেই। আর কোনো অজুহাত নেই।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড ব্রেকিং তাপমাত্রাকে ‘অস্বিত্বের হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানের আবহওয়া একমাত্র ঘাতক। প্রতি বছর এই তাপের প্রভাবে ৬০০ শ্রমিক মারা যায়। শ্রমিকদের জন্য তাই তাপ সম্পর্কিত সুরক্ষা নিয়মগুলোকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’ এদিকে জার্মানির লাইপজিগ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ডক্টর কার্স্টেনের বিশ্লেষণ বলছে, জুলাই মাসটি ১ লাখ ২০ হাজার বছরের মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণতম মাস।