আন্তর্জাতিক

ভারতের জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার। অষ্টাদশ লোকসভা গঠনের লক্ষ্যে সাত দফা ভোটপর্বের প্রথম দফায় শুক্রবার দেশের ১৭টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ভোট হবে ১০২টি আসনে।

লোকসভায় কেন্দ্রের পাশাপাশি দুই রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের ৬০ ও সিকিমের ৩২টি বিধানসভা আসনের সবক’টিতেই ভোটগ্রহণ হবে এই দফায়। মোট সাত দফায় ৪৪ দিন ধরে ৫৪৩টি আসনের নির্বাচন পর্ব চলবে।

এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে রংপুর-রাজশাহী লাগোয়া দার্জিলিং, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভোট হবে। পশ্চিমবঙ্গের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক বিজেপির মূল লড়াই হচ্ছে এই তিন কেন্দ্রে।

তবে নির্বাচনি আসরে বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরাও আছেন। গতবার এই তিনটি কেন্দ্রেই ভোটে জিতেছিল বিজেপি। তাই এবার তৃণমূলের সিট উদ্ধারের পাশাপাশি বিজেপির আসন ধরে রাখার লড়াই। অবশ্য দেশের ১১টি রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে বিজেপির লড়াই হলেও অন্যান্য রাজ্যে মূল লড়াই বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের।

বিজেপি যেমন ১০ বছর আগে থেকেই এনডিএ জোট গড়েছে, তেমনি জাতীয় কংগ্রেসও তিন দফা বৈঠক করে আঞ্চলিক দলগুলো নিয়ে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স ‘ইন্ডিয়া’ জোট বানিয়ে ভোটে নেমেছে।

দেশটির প্রথম দফা ভোট শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সকালেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সব প্রার্থীকেই ব্যক্তিগত চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজ নিজ কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে এই চিঠির বক্তব্য পৌঁছে দিতে বিজেপি ও শরিক দলগুলোর প্রার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দি ও ইংরেজি, এই দুটি ভাষাতেই মোদি চিঠি লিখেছেন বিজেপি ও শরিক প্রার্থীদের। ১ জুন ভোট পর্ব শেষ হলেও ভোট গণনা শেষে ফল প্রকাশ হবে ৪ জুন।

তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতি তথা কোয়ম্বত্তুরের দলীয় প্রার্থী কে আন্নামালাই কিংবা নীলগিরি লোকসভায় পদ্ম প্রতীকে লড়তে নামা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এল মুরুগান পেয়েছেন ইংরেজিতে লেখা চিঠি। আবার উত্তরাখণ্ডের গঢওয়াল লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র অনিল বালুনি কিংবা রাজস্থানের অলওয়ারের প্রার্থী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব পেয়েছেন হিন্দিতে লেখা চিঠি।

প্রথম দফায় সবচেয়ে বেশি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হচ্ছে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে। ওই রাজ্যে ৩৯টি লোকসভা আসনের সবগুলোতেই ভোটগ্রহণ হবে প্রথম দফায়। আজ শুক্রবার ভারতীয় সময় সকাল ৭টা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং মেঘালয়ের দুটি করে আসনে ভোটগ্রহণ হবে।

একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ হবে ছত্তীসগড়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা, আন্দামান ও নিকোবর, জম্মু ও কাশ্মীর, লক্ষদ্বীপ এবং পুদুচেরিতে। প্রায় সাত মাস ধরে জাতিদাঙ্গায় জর্জরিত মণিপুর রাজ্যে দুটি লোকসভা আসন। মণিপুর এবং আউটার মণিপুর। তবে এবার ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন জাতিদাঙ্গার কথা মাথায় রেখে আউটার মণিপুরকে ভাগ করে দুদফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর এবং চান্দেল জেলার ১৫টি বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে।

বাকি ১৩টিতে ভোটগ্রহণ হবে ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায়। এর সঙ্গে আজই রাজস্থানের ২৫টি আসনের ১২টি, উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে মাত্র আটটি, মধ্যপ্রদেশের ৪৮টি আসনের ছয়টিতে, মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের পাঁচটিতে, হিমালয়ের লাগোয়া রাজ্য উত্তরাখণ্ডের পাঁচটিতেই আজ ভোটগ্রহণ হবে।

আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় কন্স্যুলেট অফিসে হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা হামলায় কতটা ক্ষতি হয়েছে ইসরায়েলের? সে প্রশ্নের জবাবে জানা গেল, ইরানের ছোড়া অন্তত নয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অ্যারো-৩ নামের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে এড়িয়ে দুটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।

এর একটি হলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের নেভাটিম বিমানঘাঁটি।

যেখানে ইরানের পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

এতে বিমানঘাঁটিতে থাকা ইসরায়েলের একটি সি-১৩০ রসদবাহী উড়োজাহাজ, একটি রানওয়ে এবং একটি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও ইরানের হামলায় নেভাটিম বিমানঘাঁটি ‘সামান্য’ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে তেলআবিব।

আর চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের নেগেভ বিমানঘাঁটিতে। সেখানে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার তথ্য পাওয়া যায়নি।

এবিসি নিউজকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তবে এ ক্ষয়ক্ষতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই অ্যারো-৩ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

কারণ, আকাশ প্রতিরক্ষার এই নতুন প্রযুক্তি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছিল।

তবে গত শনিবার রাতে ইরান থেকে ছোড়া ১০০টিরও বেশি ড্রোন, কয়েক ডজন ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েল হামলা চালায়। এতে একাধিক ইরানি সামরিক কমান্ডার নিহত হন। এর জবাবে শনিবার ইসরাইলের ভূখণ্ডে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ইরান।

তেহরান ইসরায়েলের ওপর এই আক্রমণকে তার ‘আত্মরক্ষার সহজাত অধিকার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

অন্যদিকে ইরানের হামলার জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেছেন, সঠিক সময়ে ইরানের হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

এদিকে ইসরায়েলে ইরানের হামলাকে ‘প্রায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতা’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন।

সোমবার স্কাই নিউজকে তিনি বলেন, অনেকভাবে এটা ইরানের জন্য দ্বিগুণ পরাজয়। আক্রমণটি প্রায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতা ছিল। তবে আমরা তাদের বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর তিনটি ছবি প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টা।

এক্স হ্যান্ডলে প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায়, অপারেশন আটলান্টার দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে পাহারা দিয়ে যাচ্ছে।

সোমবার অপারেশন আটলান্টা তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, তারা বাণিজ্যিক জাহাজ ও এর ২৩ ক্রুর মুক্তি নিশ্চিত করেছে। ১২ মার্চ ছিনতাই হওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া জানায় অপারেশন আটলান্টা।

এরপর জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া জাহাজটির পিছু নেয়। ৩২ দিন ধরে অপারেশন আটলান্টা সক্রিয়ভাবে জাহাজটি পর্যবেক্ষণে রাখে।

❗Operation ATALANTA confirms the release of the 23 crew members of the Merchant Vessel ABDULLAH and the ship.

? Warships of EUNAVFOR ATALANTA escort the MV ABDULLAH after the release.

More information: https://t.co/ugjjZBHUoA pic.twitter.com/nqhOTbSPKs

— EUNAVFOR ATALANTA (@EUNAVFOR) April 15, 2024
নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এমভি আব্দুল্লাহ সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে পৌঁছানোর পর বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়।

ছিনতাইয়ের নয়দিনের মাথায় জলদস্যুদের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় জাহাজের মালিকপক্ষের। মুক্তিপণ নিয়ে দেন-দরবারের পর বাংলাদেশ সময় শনিবার রাতে জাহাজটি ও ক্রুরা মুক্ত হয়।

গত ১২ মার্চ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে সোমালি উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

আন্তর্জাতিক

ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে ইসরাইলের তেল আবিব থেকে সরাসরি একটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। বিষয়টি নিয়ে একাধারে কৌতুহল ও নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। সোশাল মিডিয়ায় নানামুখী আলোচনা চলছে। অনেকেই সরকারের সমালোচনায় মুখর হন।

ঘটনার দুদিন পর তেল আবিব থেকে সরাসরি ফ্লাইট অবতরণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

শনিবার বেবিচকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ সোহেল কামরুজ্জামানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইল থেকে বিমান এলো ঢাকায়’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ৭ এপ্রিল একটি বিমান তেল আবিব থেকে উড্ডয়ন করে সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে ও কার্গো নিয়ে রাত ১১টা ৫৫ ঘটিকায় ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে এবং অপরটি গত ১১ এপ্রিল তারিখ রাতে ঢাকায় অবতরণ ও মধ্যরাত সাড়ে ১২ টায় কার্গো নিয়ে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে। দুটি বিমানই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত এবং ওই দেশের বিমান সংস্থা ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের।’

এতে আরও বলা হয়, ‌‘বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। বিমান চলাচল চুক্তি অনুযায়ী কার্গো ফ্লাইট দুটি ঢাকা এসেছিল। ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে ফ্লাইট দুটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ এবং ইউরোপের একটি গন্তব্যে গিয়েছে। বাংলাদেশ ও ইসরাইলের মধ্যে কোনো বিমান চলাচল চুক্তি নেই এবং ইসরাইলের কোনো বিমান বাংলাদেশে অবতরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরাইল থেকে বিমান এলো ঢাকায়’ শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভিন্নভাবে প্রকাশের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসাবে বিবেচ্য। এরূপ সংবাদ পরিবেশন হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।

ফ্লাইট নজরদারি বিষয়ক ওয়েবসাইট ফ্লাইটরেডার টোয়েন্টিফোরের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে ওই ফ্লাইট তেল আবিব থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা উড়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে।

আন্তর্জাতিক

গাজায় অভিযান আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। শহরটির আল-শিফা হাসপাতালে ও এর আশপাশে অভিযান চালানো হচ্ছে। গাজার উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং খান ইউনিসের বিভিন্ন স্থানেও হামলা অব্যাহত রয়েছে। খবর আল-জাজিরার

এদিকে রাফা শহরে ইসরাইলি হামলা আরও সম্প্রসারিত হবে এমন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সেখানকার মানুষ। তারা আশঙ্কা করছে গাজা সিটি বা খান ইউনিসের মতো একই পরিণতি ভোগ করতে হবে রাফার মানুষদেরও। সেখানে অধিকাংশ অবকাঠামোই ধ্বংস করেছে ইসরাইল।

ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজার রাফায় আশ্রয় নেয়। এটি মিশর সীমান্তবর্তী এলাকা। এরই মধ্যে উত্তর ও মধ্য গাজাকে ধ্বংস করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এখন আন্তর্জাতিক সব চাপ উপেক্ষা করে রাফায়ও অভিযান চালাবে ইসরাইল।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি সেনাদের পরিবারের সদস্যদের বলেছেন, একমাত্র সামরিক চাপের মাধ্যমেই তাদের মুক্ত করা সম্ভব। তাছাড়া রাফায় সেনাবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি। রাফায় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে উত্তর গাজা ও খান ইউনিস জয় করেছি।

আন্তর্জাতিক চাপ এবং নানা ধরনের সমালোচনার পরেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইসরাইলকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের বোমা এবং যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। এদিকে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, গাজায় সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় তাদের ২৬ কর্মী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন যারা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

ইসরাইলি বাহিনীর চলমান হামলায় একটি ক্রীড়া কেন্দ্রে ১৫ জন নিহত হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৩২ হাজার ৬২৩ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৫ হাজার ৯২ জন।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা না পেলে ইউক্রেন বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটতে হবে।

শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটন পোস্টকে আরও বলেছেন, ‘মার্কিন সমর্থন না থাকা মানে আমাদের কাছে কোনো বিমান প্রতিরক্ষা নেই, কোনো প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র নেই, ইলেকট্রনিক যুদ্ধের জন্য কোনো জ্যামারও নেই।

এমনকি নেই কোনো ১৫৫ মিলিমিটার গোলাবারুদ। এর মানে হলো ধাপে ধাপে আমাদের পিছু হটতে হবে।’ তবে যাতে পিছু হটা না লাগে এমন কিছু উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক

দীর্ঘদিনের দরকষাকষির পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। সোমবার পাশ হওয়া এ প্রস্তাবটিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির ব্যাপারটিরও উল্লেখ রয়েছে। খবর আল-জাজিরার

সোমবার প্রস্তাবটি পরিষদের বৈঠকে ভোটের জন্য তোলার পর মোট ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। তবে প্রস্তাবটির বিপক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন করেনি দেশটি।

এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত যত প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে—প্রায় প্রত্যেকটিতেই ভেটো দিয়েছে ইসরাইলের সবচেয়ে পুরনো ও পরীক্ষিত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার ৯ দিন পর, ১৬ অক্টোবর প্রথম নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি তুলেছিল রাশিয়া, কিন্তু তাতে ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। পরে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য দেশের উদ্যোগে আরও বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলা হয় পরিষদের বৈঠকে কিন্তু প্রতিবারই ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ প্রস্তাব পাশের পর জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে গাজায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং সব জিম্মির নিঃশর্ত মুক্তির প্রস্তাব পাস হলো। প্রস্তাবটি যত শিগগির সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার ব্যত্যয় হলে তা হবে ক্ষমার অযোগ্য।

গত নভেম্বরের শেষ দিকে অবশ্য তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের তৎপরতায় ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস এবং ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। সেই বিরতির সময় মোট ১০৮ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছিল হামাস, বিপরীতে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জনকে ছেড়ে দিয়েছিল ইসরাইলও।

হামাসের হাতে এখনও জিম্মি অবস্থায় রয়েছে ১৩২ জন। অন্যদিকে ত্রাণ ও খাদ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়। চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যেই কিছুদিন আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় বড় আকারের অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহু এ ঘোষণা দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নিরাপত্তা পরিষদে পাস হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব।

গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় শুরু হয় ইসরাইলের আগ্রাসন। দেশটির বর্বরতায় এ পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আহত হয়েছে ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ ও ভুটান আজ তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি নবায়ন করেছে।

নতুন সমঝোতা স্মারকগুলো হলো- কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন এবং ভোক্তা অধিকার বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।

এছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময়ের আরেকটি সমঝোতা স্মারকও নবায়ন করা হয়।

সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের রানী জেৎসুন পেমা ওয়াংচুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্তিত ছিলেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

ওয়াংচুক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকও করেন।
তাদের মাঝে একটি একান্ত বৈঠকও হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ও ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তান্দিন ওয়াংচুক থিম্পুতে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এবং ভুটানের বাণিজ্য সচিব তাশি ওয়াংমো নিজ নিজ পক্ষে কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান এবং ভুটানের বাণিজ্য সচিব তাশি ওয়াংমো ভোক্তা অধিকার বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব খলিল আহমেদ এবং ভুটানের পররাষ্ট্র সচিব পেমা চোডেন নিজ নিজ পক্ষে সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক নবায়নে স্বাক্ষর করেন।

এছাড়াও, বাংলাদেশ ভুটানি শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক মেডিকেল আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি প্রতি বছর ভুটানি ফরেন সার্ভিস অফিসারদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দুটি আসনের প্রস্তাব দিয়েছে এবং ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) ভুটানের তিন ব্যাচের কর্মকর্তাদের তিন বছরের জন্য বার্ষিক বিশেষ প্রশিক্ষণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে, সদিচ্ছা ও বন্ধুত্বের বিশেষ অঙ্গীকার হিসেবে বাংলাদেশ ভুটানের সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কম্পিউটার ও ল্যাপটপ হস্তান্তর করেছে।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের অমানবীয় অত্যাচারে দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে গাজা পরিস্থিতি। এতদিন চুপ থেকে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছে বিশ্ব। অবশেষে অবরুদ্ধ অঞ্চলটির সমর্থনে এগিয়ে এলো ইউরোপের চার দেশ।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দিয়ে সম্মত হয়েছে মাল্টা, আয়ারল্যান্ড, স্পেন এবং স্লোভানিয়া। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর এমন সমর্থনকে মেনে নিতে পারছে না ইসরাইল। এবার ইউরোপের এই চার দেশকে হুঁশিয়ারি দিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কার্টজ। তার মতে, যে দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দেবে তারা সন্ত্রাসবাদের পক্ষে। সোমবার নিজের এক্স  অ্যাকাউন্টে ক্ষিপ্ত হয়ে এ বার্তা লিখেন তিনি। রয়টার্স।

ইইউ’র শীর্ষ সম্মেলনে গত শুক্রবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্মীকৃতি দেওয়ার কথা জানায় চার দেশ। তাদের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেই ‘শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন’ সম্ভব হবে। সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে চার দেশ জানায়, ‘আমরা একসঙ্গে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছি। পরিস্থিতি যখন ঠিক হবে তখন এ বিষয়ে আমরা ইতিবাচক অবদান রাখব।’ তাদের সেই বার্তার প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবেই কার্টজ লিখেছেন, ‘৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কাছে এই বার্তাই পাঠায় যে, ইসরাইলিদের উপর হত্যাকারী সন্ত্রাসী হামলা ফিলিস্তিনিদের প্রতি রাজনৈতিক মাধ্যমে প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’ অন্যদিকে গাজায় তাৎক্ষণিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে।

রাশিয়া এবং চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত একটি পূর্ববর্তী পাঠ্য ভেটো করার পরে এ প্রস্তাবটি সামনে আসে। রাফাহ এবং গাজা উপত্যকার অন্যান্য অংশে ইসরাইলি বিমান হামলায় কয়েকডজন লোক নিহত হওয়ার পরে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ভেটোর আলোচনা হয়। নতুন পাঠ্যটিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসের জন্য ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি করে এবং একটি স্থায়ী টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যায়।’

এর আগে রোববার উত্তর গাজায় ত্রাণের সাহায্য পৌঁছাতে বাধা দেয় ইসরাইল বাহিনী। এমন পরিস্থিতি গাজার শিশুদের আরও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে বলে সতর্ক করেছে সাহায্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর জেভিয়ের জুবার্ট বলেন, ‘শিশুরা ইতোমধ্যেই অনাহারে এবং রোগে মারা যাচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতিতে, যা রেকর্ড। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে দৃঢ় এবং অবিলম্বে কূটনীতির মাধ্যমে এমন প্রস্তাবকে পালটে দিতে হবে। সেটি হবে আইনি বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে।’

এদিকে আল শিফা থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিদের দাবি, ইসরাইলি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া বুলডোজার কমপক্ষে চারটি মৃতদেহ এবং অ্যাম্বুলেন্সের ওপর দিয়ে চালানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তীব্র গোলাগুলির কারণে তাদের মেডিকেল টিমের সদস্যরা সেখানে আটকা পড়েছেন। অন্যদিকে গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত আল-আমাল এবং নাসের হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। হাসপাতালগুলোর আশপাশে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে তারা।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে তীব্র গোলাগুলি এবং বোমা হামলার মধ্যেই আল-আমাল এবং নাসের হাসপাতালের তাদের এক কর্মী নিহত এবং একজন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আল-আমাল হাসপাতাল সম্পূর্ণ খালি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইসরাইল। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল কর্মী ও রোগীদের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত লোকজনও আশ্রয় নিয়েছে। এমনকি লোকজনকে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে ইসরাইল স্মোক বোমা ছুড়ছে।

এদিকে হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিস বলছে, আল শিফা হাসপাতালে গত সাত দিন ধরে চলা অভিযানে পাঁচ ফিলিস্তিনি চিকিৎসককে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩২,৩৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৪,৬৯৪ জন আহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, কিন্তু তা বন্ধে কেউ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

রোববার (২৪ মার্চ) গণভবনে সফররত ফিলিস্তিনের ফাতাহ আন্দোলনের (শাসক দল) মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নজরুল ইসলাম বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে নীরব অবস্থানের জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি এক ধরনের ভণ্ডামি।

মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত এবং মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা ১৯৬৭ সালে গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণ করতে বলেন, যাতে বলা হয়েছিল যে পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে।

প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ হত্যাসহ ইসরায়েলি বাহিনীর হাসপাতালে হামলার নিন্দা করেন।

তিনি গাজায় মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মিশরের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য দুই দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, আমি যেখানেই সুযোগ পেয়েছি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সবসময় আওয়াজ তুলেছি।

আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ফিলিস্তিনের ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার নিঃশর্ত সমর্থন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আওয়াজ তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউব বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই উদ্দেশ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।

তিনি বলেন, সেখানে খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং মানুষ অনাহারে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউব বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

আরব দেশগুলোতে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হয়ে যাবে। আরব বিশ্বের শক্তি ও সম্পদ আছে, শুধু ঐক্যই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে পারে।

ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দৃঢ় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

ফাতাহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং ঢাকায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।