আন্তর্জাতিক

গেল ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে হয়ে গেল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মতো বিশ্বনেতারা অংশ নেন।

এই সম্মেলন ঘিরে দিল্লিতে চলে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। বিভিন্ন বিলবোর্ড দেখা যায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রতীক পদ্মফুল এবং নতুন কাজ করা সড়কে দেখা যায় মোদির মুখচ্ছবি।

জি-২০ সম্মেলনের আগে আল-জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন লেখিকা ও অধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায়। ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ভারত সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছেন তিনি।

নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবন থেকে তিনি জি-২০ সম্মেলন এবং ভারতের সংখ্যালঘুদের নিয়ে আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন অরুন্ধতী রায়।

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন এবং সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সম্পর্কে আপনার মতামত কী- আল জাজিরার এমন প্রশ্নের উত্তরে অরুন্ধতী রায় বলেন, দেখুন, আমি মনে করি না যে, কেউ সত্যিই এ নিয়ে চিন্তা করে কারণ… জি-২০ সম্মেলন এখানে হচ্ছে। সবাই সুযোগ খুঁজছে, বাণিজ্য চুক্তি, সামরিক সরঞ্জাম চুক্তি কিংবা ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত বোঝাপড়ার সুযোগ। এখানে যারা আসছেন, রাষ্ট্রপ্রধান বা অন্য কেউ, এমনটি নয় যে, তারা জানেন না ভারতে ঠিক কী ঘটছে।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলোতে মূলধারার মিডিয়াগুলো ভারতে যা ঘটছে তা নিয়ে সমালোচনা করেছে। তবে সেসব দেশের সরকারের সম্পূর্ণ আলাদা এজেন্ডা রয়েছে। এখানে যারা আসছেন, তাদের জন্য যে এটি একটি সমস্যা, তা বিশ্বাস করতে কারো যথেষ্ট নির্বোধ হওয়া দরকার, এমনটি আমি মনে করি না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে অরুন্ধতী রায় বলেন, পশ্চিমা নেতা যারা গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন- বাইডেন, ম্যাক্রোঁ, তারা জানেন এখানে কী হচ্ছে। তারা জানেন যে, মুসলমানদের গণহত্যা করা হয়েছে। যে মুসলমানরা প্রতিবাদ করেন, তাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হলো সব সরকারি প্রতিষ্ঠান – আদালত, ম্যাজিস্ট্রেট, গণমাধ্যম – এতে সহযোগিতা করে।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার নিউইয়র্কে যাচ্ছেন। এই অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক সফর উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধানের (মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী এবং শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে পারেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সেসব দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ভিসা না দিলে সেটা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে জিজ্ঞেস করেন।

এটা আমাদের বিষয় না।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: দ্য ইয়ুথ পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর অনেক শিক্ষার্থীর যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ পাওয়ার পরও তাদের ভিসা বাতিল হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে জিজ্ঞেস করেন। এটা আমাদের বিষয় না। এটা তাদের মাথাব্যথা, আমার না। আমাদের অধিকাংশ লোকজন এসব ভিসা-টিসা নিয়ে খুব চিন্তিত নয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, এক সময় ভারতবর্ষ ছিল মূল আকর্ষণ। এখন আর সেই অবস্থা নেই। আমরা সেই বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানকার দূতাবাসে গিয়ে ধর্ণা দিতে হবে না, ডেকে ভিসা দেবে। মানুষের ন্যায্যঅধিকার বাড়িতে পৌঁছে যাবে। পাসপোর্ট পেতে তিন সপ্তাহের বেশি লাগবে না। এয়ারপোর্টে এসে কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা সেই বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেই তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নয়, গত কয়েক বছরে স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্বের পরিপক্কতার কারণে বাংলাদেশ অন‌্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।

সেমিনারে সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ বক্তব‌্য রাখেন।

আন্তর্জাতিক

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ জন বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। মঙ্গলবারের প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জানান, জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গমণকারী কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ জন। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা অধিক পরিমাণে জনশক্তি প্রেরণের লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি বাংলাদেশ হতে কর্মী প্রেরণের বিষয়ে মালদ্বীপ, ব্রুনাই দারুস সালাম ও গ্রিসের সাথে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

আওয়ামী লীগের আরেক সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের উত্তরে ইমরান আহমেদ বলেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩৩ জন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) অধীনে বর্তমানে ১০৪টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ছয়টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিসহ মোট ১১০টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫৫টি কর্মসংস্থান উপযোগী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদই কোর্সে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

জি-২০ জোটের নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিল আফ্রিকান ইউনিয়ন। আজ শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতেই জোটের বর্তমান সভাপতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নের নাম ঘোষণা করেন।

এ সময় আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ও কমোরসের প্রেসিডেন্ট আজালি আসুমানিকে আলিঙ্গন করেন মোদি। এর পর টেবিলে বসার আমন্ত্রণ জানান।

মোদি বলেন, আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধিকে জি-২০ এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে তার স্থান গ্রহণে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

আফ্রিকান ইউনিয়ন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। বর্তমানে এ জোটের সদস্য দেশ ৫৫টি।

এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নয়াদিল্লিতে দুই দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলন শুরু হয়।

সম্মেলনের জন্য বিশেষভাবে সাজানো কনভেনশন সেন্টার ‘ভারত মণ্ডপমে’ বিশ্বনেতারা উপস্থিত রয়েছেন। প্রথম সেশনে ‘ওয়ান আর্থ’ বিষয়ে আলোচনা হবে। এরপর বিকেল ৩টা থেকে দ্বিতীয় সেশন শুরু হবে। সেখানে ‘ওয়ান ফ্যামিলি’ নিয়ে আলোচনা হবে।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ বিশ্ব নেতারা অংশ নিয়েছেন।

এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তাদের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

জি-২০ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা পরিচ্ছন্ন জ্বালানি স্থানান্তর, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইসহ বৈশ্বিক সমস্যাগুলো মোকাবিলায় বিভিন্ন যৌথ প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন।

এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়েও বিশ্ব নেতারা আলোচনা করবেন।

উল্লেখ্য, জি-২০ বা গ্রুপ অব টুয়েন্টি হচ্ছে কতগুলো দেশের একটি ক্লাব যারা বিশ্ব অর্থনীতির বিষয়ে পরিকল্পনার জন্য আলোচনা করতে বৈঠক করে।

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভারত তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। শুক্রবার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বক্তব্য দেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানান।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকালে নয়াদিল্লির লোককল্যাণ মার্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ও মোদির এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ আগ্রহ ছিল। নির্বাচন ঘিরে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতকে পাশে চায় সরকার। ধারণা করা হচ্ছিল, বৈঠকে দুই নেতা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে তাদের একান্ত বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানেন না তিনি।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উভয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তাদের মাঝে একান্ত বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তিস্তা ও অমীমাংসিত ইস্যু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

মোমেন জানান, উভয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান গভীর সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে একমত হয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেই দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ অবস্থা নিশ্চিতকরণে অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তাকে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে নিমন্ত্রণের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এগুলো হলো— কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ।

মোমেন বলেন, ভারত আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত প্রত্যাবাসন বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে কানেক্টিভিটি তথা রেল ও সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে চলমান প্রচেষ্টা এবং কার্যক্রম বেগবান করতে উভয় প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন।

বৈঠকের পর টুইটারে (বর্তমানে এক্স) পোস্ট দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক। আমাদের আলোচনায় কানেক্টিভিটি, বাণিজ্যিক সংযুক্তি এবং আরও অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

আন্তর্জাতিক

অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান)-এর ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীর জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারের (জেসিসি) প্লেনারি হলে তিন দিনের এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। ‘আসিয়ান প্রেক্ষিত : প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দু’ প্রতিপাদ্যে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তার স্ত্রী ডা. রেবেকা সুলতানাকে নিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে সম্মেলনস্থলে পৌঁছান। সেখানে আসিয়ানের সভাপতি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনার পর তাদের স্বাগত জানান। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট তার স্ত্রী ইরিয়ানা জোকো উইদোদোকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে একটি ফটো সেশনে অংশ নেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনও রয়েছেন।

আসিয়ান দেশগুলোর ১০টি সাংগঠনিক নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং অংশীদার দেশের নেতারা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশ নিচ্ছেন।

আসিয়ান মহাসচিব বলেন, আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের মতো ২৭ জন বিশ্বনেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে বহিরাগত অংশীদারদের সঙ্গে সংস্থার সহযোগিতার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ, দক্ষিণ চীন সাগর সংক্রান্ত আচরণবিধি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল (এসইএএনডব্লিওএফজেড), আসিয়ান মেরিটাইম আউটলুক, আসিয়ান আউটলুক ইন ইন্দো প্যাসিফিকের (এওআইপি) মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ থিম এবং মিয়ানমার সম্পর্কিত সমস্যার ওপর আলোকপাত করা হবে।

আসিয়ান সচিবালয় থেকে বলা হয়েছে, এই শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, সুনীল অর্থনীতি, সবুজ অর্থনীতি, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং পেমেন্ট ইকোসিস্টেম সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া সামিট (ইএএস)’-এ যোগ দেবেন। সেখানে তিনি এর সমাপনী অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন।

আন্তর্জাতিক

শিল্প স্থাপনের জন্য জাপান চাইলে বাংলাদেশ আরও জায়গা বরাদ্দ দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাপানের পাঁচ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা জানান।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণভবনে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাপানের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।

এর পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, ইপিজেডগুলোতে জাপানকে জায়গা দিয়েছে বাংলাদেশ। শিল্প স্থাপন করতে চাইলে আমরা আরও (জায়গা) দিতে পারি।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জাপানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান উন্নয়ন অংশীদারত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং আরও জোরদার করতে হবে।

জাপান মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে কাজ করছে উল্লেখ করে- প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, জাপান অবকাঠামোগত উন্নয়নে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পে অবদান রাখছে।

ঢাকা ও নারিতা সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রশংসা করে তারা বলেন, এতে যোগাযোগের উন্নতি হবে।

জাপানের প্রতিনিধিদল ভারত মহাসাগরকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য শান্তিপূর্ণ রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেয়।

তারা নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। আমরা মেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিচ্ছি।

এ সময় শেখ হাসিনা দেশে সামুদ্রিক অ্যাকুরিয়াম নির্মাণে জাপানের সহায়তা চান।

এর আগে, নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠককালে সাসাকাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য নিপ্পন ফাউন্ডেশন ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে।

রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।

৮৪ বছর বয়সী ইয়োহেই সাসাকাওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার মায়ের সঙ্গে বেঁচে যান। ওই ভয়াবহ যুদ্ধে এক লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

তিনি কুষ্ঠরোগ নির্মূলে প্রচেষ্টা এবং এ রোগে আক্রান্তদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

ইয়োহেই সাসাকাওয়া বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককেও তুলে ধরেন।

নিপ্পনস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ বছরের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ন্যাশনাল লিপ্রোসি কনফারেন্সে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্রসচিব (জেষ্ঠ্য সচিব) মাসুদ বিন মোমেন ও বাংলাদেশের জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে এ বছর আরও ২ লাখ ৮০ হাজার সদস্যকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।

পুতিনের ঘনিষ্ঠ এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও জানান, রুশ সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টায় স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর পরই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার লোককে সশস্ত্র বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রুশ বাহিনী যখন ধুঁকছে তখন বিষয়টি সামনে আনলেন মেদভেদেভে।

যুদ্ধ শুরুর পর কয়েক ধাপে নাগরিকদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে মস্কো। অনেকে পালিয়ে যায়। এই লড়াইয়ে প্রচুর সেনা, গোলাবারুদ, ট্যাংক ও বিমান হারিয়েছে রাশিয়া। ক্ষয়ক্ষতির পূরণে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নবম নিরাপত্তা সংলাপ ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করেছে।

সংলাপে বাংলাদেশ র‌্যাবের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চাইতে পারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জোর দেবে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের ওপর।

দুই দেশের মধ্যে প্রতিবছর এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। অষ্টম সংলাপ ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবার ঢাকায় হচ্ছে। নিরাপত্তা সংলাপের বিষয়ে বেসামরিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিরাপত্তাসংক্রান্ত সব বিষয় আলোচিত হয়ে থাকে।

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, সংলাপে উভয়পক্ষের প্রতিনিধিরা ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিওনাল ইস্যু, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার, সামরিক সহযোগিতা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং সন্ত্রাস দমনসহ আরও অনেক বিষয়ে আলোচনা করবেন। এ সংলাপ দুই দেশের ব্যাপক নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ।

সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ব্যুরো অব পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেসনিক।

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা অংশীদারত্ব রয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক কিছু শেয়ার করা হয়। উভয় দেশের অবাধ, মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে। এ পারস্পরিক উদ্দেশ্য হাসিলে আমরা বছরজুড়ে বিভিন্ন সংলাপ করে থাকি।

ঢাকায় ২৩ ও ২৪ আগস্ট দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপের পর নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সংলাপে দুদেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক, সামরিক শিক্ষা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, আসন্ন সামরিক অনুশীলন এবং আগামী বছরে দুর্যোগে সাড়াদান-অনুশীলন নিয়ে আলোচনা হবে।