আন্তর্জাতিক

টানা ৪৯ দিনের ইসরাইলি বর্বরতার পর যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, ১৩ ইসরাইলি জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।

শুক্রবার হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এ যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, চারদিনে ৫০ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। চুক্তির শর্ত মেনে, প্রথমদিন ১৩ ইসরাইলিকে ছেড়ে দিয়েছে এ সশস্ত্র গোষ্ঠী। মুক্তি পাওয়া সবাই নারী ও শিশু। আগামী তিনদিনে হামাসের কাছ থেকে ছাড়া পাবেন আরও ৩৭ ইসরাইলি।

চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির চারদিনে ইসরাইল তাদের কারাগার থেকে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩৯ জনকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়েছে।

যেসব ইসরাইলিকে শুক্রবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের পরিবারকে আগেই অবহিত করা হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে হামলা চালিয়ে ২৪০ জনের বেশি ইসরাইলিকে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস।

এদিকে এ পর্যন্ত হামাস ইসরাইল যুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৪ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি।

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা শুক্রবার বিকালে নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তিস্তা চুক্তি ও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পাদন, বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য পণ্য থেকে বাণিজ্য বাধা অপসারণ এবং দু’দেশের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহযোগিতাও কামনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, এফওসি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু পর্যালোচনা এবং দুই দেশের জনগণের বৃহত্তর সুবিধার জন্য পারস্পরিক স্বার্থের নতুন পথ অনুসন্ধানের লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত আলোচনার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে একমাত্র দক্ষিণ এশীয় নেতা হিসেবে ‘জি-২০ লিডার্স সামিটে’ যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোয় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

উভয় দেশের পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালে অর্জিত অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এ ধরনের সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানি সম্পর্কিত ইস্যু, কনস্যুলার ও সাংস্কৃতিক ইস্যুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বাংলাদেশের সামনে যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে তা নিয়েও তারা আলোচনা করেন। উভয় পক্ষই পুনর্ব্যক্ত করেছে যে শান্তিপূর্ণ সীমান্তের জন্য দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলি বোমা হামলার পর থেকে বিধ্বস্ত হয়েছে গাজার প্রতিটি অঞ্চল। অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে এখন মৌলিক চাহিদার সংকট। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। জ্বালানির অভাবে যোগাযোগের আধুনিক যন্ত্রগুলোও ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় মোবাইল, গাড়িসহ সব প্রযুক্তিই নিশ্চল।

এমনকি দূরপথ পাড়ি দিতে আবার সেই আদিম যুগে ফিরে গেছে গাজাবাসী। পথে পথে দেখা যাচ্ছে ঘোড়া এবং গাধার গাড়ি। গাড়ির বিকল্পে এগুলোর পিঠে ভর করেই এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।

জীবন বাঁচাতে প্রতিদিনই এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন গাজাবাসী। বিদ্যুতের অভাবে দেখা দিয়েছে পরিবহণ সংকট। ফলে দৈনন্দিন দ্রব্যসামগ্রী এবং খাদ্য সংগ্রহেও প্রাণীদের ওপর নির্ভর করছে গাজার বেসামরিকরা।

একটি ঘোড়ার গাড়ির মালিক আবু মোহাম্মদ আজাইজা (৩৪) মিডলইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলেন, দিনের পর দিন, গাড়ির মালিকদের জ্বালানি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এতে তারা পরিবহণের অন্য কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না।

পশুদের দ্বারা পরিচালিত এই গাড়িগুলোই তাদের টেনে নিয়ে যায়; যেহেতু তাদের জ্বালানি বা গ্যাসের প্রয়োজন হয় না। বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তিনি জানান, গত চার বছরের তুলনায় তিনি বর্তমানে আরও বেশি মুনাফা করেছেন।

মোহাম্মদ আজাইজা আরও বলেন, এই মুনাফায় আমি খুশি নই। যদি যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমার সব অর্থ বিলিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয় তবে আমি তা বিলিয়ে দিতে পছন্দ করব। যুদ্ধ শুরুর আগে কেবল গাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এ পরিবহণ ব্যবহার করত। তবে এখন সব শ্রেণির মানুষেরাই প্রাণীদের এ পরিবহণের ওপর নির্ভরশীল।

গাজা শহরের একজন বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা মোনা আকলক বলেন, আমি আমার জীবনে আগে কখনো এ গাড়িতে চড়ে যাইনি। কিন্তু এখন আমরা দেইর আল-বালাহ পৌঁছানোর পর থেকে বেশ কয়েকবার কার্ট ট্যাক্সি নিয়েছি।

আন্তর্জাতিক

প্রভাবশালী এই নারী একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখিকা এবং প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলন কর্মী।
চলতি বছর বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিবিসি।

এ তালিকায় সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার পাশাপাশি ফুটবলে নারীদের সমতা নিয়ে কথা বলা স্পেনের নারী ফুটবলার আইতানো বনমাতি,এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য লড়ে যাওয়া থাইল্যান্ডের নারী মাচা ফর্নসহ আরও যারা স্থান পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন- বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস; যিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখিকা এবং প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলন কর্মী।

পোড়া ক্ষত নিয়ে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছেন জান্নাতুল।১৯৯৭ সালে এক অগ্নি দুর্ঘটনায় পুড়ে গেছে তার দেহের ৬০ শতাংশ।

সে দুর্ঘটনায় বেঁচে যান জান্নাতুল। কিন্তু, তার মুখমন্ডল ও শরীরের ওপরের অংশ পুড়ে কুঁচকে বিকৃত হয়ে যায়। এই ক্ষত বয়ে বেড়ানোর শারীরিক এবং মানসিক সংগ্রামের মধ্যেও দৃড় মনোবল নিয়ে নতুন করে জীবনের পথ চলতে শুরু করেন তিনি।

জান্নাতুল ফেরদৌস মানবাধিকার সংস্থা ‘ভয়েস অ্যান্ড ভিউজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা।  পোড়া ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকা নারীদের অধিকারের জন্য লড়াই করে এই সংস্থা।

বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে আইভী নামেও পরিচিত জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি পাঁচটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছেন এবং তার তিনটি উপন্যাসও প্রকাশ হয়েছে। তাছাড়া,সমাজের প্রতিবন্ধীদের সচেতন করতে গল্প বলার ছলে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন জান্নাতুল।

তিনি পড়াশুনাও করেছেন বিস্তর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম,এ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন শিক্ষায় ডিগ্রি নিয়েছেন জান্নাতুল।

এছাড়া,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে সোশ্যাল কমপ্লায়েন্সে ডিপ্লোমাও করেছেন।চলচ্চিত্র নির্মাণ ও ফটোগ্রাফি বিষয়ক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি করেছেন অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স।

আন্তর্জাতিক

অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আবার গম ও চাল আমদানি শুরু করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ৫ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই লাখ টন গম ও তিন লাখ টন চাল। প্রথম প্যাকেজের দ্বিতীয় চালানের গমবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। জাহাজটিতে গম রয়েছে ৫৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।

এসব গমের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের অ্যাগ্রোকর্পস। সরকার বেশির ভাগ সময় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করলেও এবার গম আমদানি করেছে বুলগেরিয়া থেকে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত জাহাজটি থেকে গম খালাস চলছিল। চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তৃতীয় ধাপে চলতি মাসের শেষের দিকে চালের চালান আসবে বলে জানা গেছে।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ৫ নভেম্বর ‘এমভি কনন’ নামে একটি জাহাজ ৫৫ হাজার ৮৬২ দশমিক ৭৫০ মেট্রিক টন গম নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। ৭ নভেম্বর অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাহাজ থেকে আমদানি করা গমের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। নমুনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘খাওয়ার উপযোগী’ পাওয়ার পর ৯ নভেম্বর থেকে গম খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমদানি করা গমের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হবে ৩৪ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫০১ মেট্রিক টন আর মোংলা বন্দরে খালাস হবে ২১ হাজার ৫৬ দশমিক ০৪২ মেট্রিক টন গম। বুধবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে ১৬ হাজার ৩১৭ দশমিক ১৬৮ মেট্রিক টন। বাকিগুলো খালাস চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে খালাস শেষ হবে বলে আশা চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগের। খাদ্য মন্ত্রণালয় জি-টু-জি ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আওতায় বিপুল পরিমাণ গম আমদানি করলেও তা খোলাবাজারে আসার সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমে এলেও এর প্রভাব পড়েনি দেশের বাজারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরপরই অধিকাংশ গম আমদানি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে ভালো মানের গম বিক্রি হচ্ছে মনপ্রতি ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯ টাকায়। অন্যদিকে মাঝারি ধাঁচের গমের দাম মনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। এতে দেশের পাইকারি বাজারেই গমের দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫১ টাকা।

পাহাড়তলীর গমের আড়তদার কামরুল হাসান মহিউদ্দিন জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গমের দাম বাড়তে শুরু করে। ইউক্রেন-রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম গম রপ্তানিকারক দেশ। ইউক্রেন-রাশিয়ার বিকল্প হিসাবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের গমের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। ভারত ছাড়া আমাদের দেশে গম আসে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও আর্জেন্টিনা থেকে। তবে সেসব দেশ থেকে গমের আমদানি খরচও বেশি। অন্যদিকে ভারতের গম কম আমিষযুক্ত। অস্ট্রেলিয়া-কানাডা ও আর্জেন্টিনার গম অধিক আমিষযুক্ত। ময়দা তৈরিতে এসব গম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ কার্যালয়ের উপনিয়ন্ত্রক সুনীল দত্ত যুগান্তরকে জানান, নতুন করে আমদানি করা গমের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হবে ৩৪ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫০১ মেট্রিক টন আর মোংলা বন্দরে ২১ হাজার ৫৬ দশমিক ০৪২ মেট্রিক টন। বুধবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে ১৬ হাজার ৩১৭ মেট্রিক টন।

আন্তর্জাতিক

বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে জীবন বাঁচাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ৪৫ সেনা সদস্য। আশ্রয়ের খোঁজে ভারতে পালাচ্ছেন দেশটির সাধারণ নাগরিকরাও। আনন্দবাজার, হিন্দুস্থান টাইমস, আল আরাবিয়া ও আল জাজিরা।

মিজোরাম পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৪৫ জন মিয়ানমারের সেনা সদস্য ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে অসাম রাইফেলস।

মিজোরাম পুলিশ আরও জানায়, মঙ্গলবার ৪৩ জন মিয়ানমারের সেনা ভারতে ঢুকে পড়ে। বুধবার আরও দুইজন ঢুকে পড়েছে। বিদ্রোহীদের হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে তারা ভারতে ঢুকছে।

মিজোরামের চাম্পেই জেলা লাগোয়া সীমান্তের অদূরে মিয়ানমারের সেনার রিখাওদর ও খাওমাওয়ি ছাউনি দুটি সোমবার সন্ধ্যায় বিদ্রোহীরা দখল করে।

হাফ ডজন শহর, কয়েকশো গ্রাম, পুলিশ ও সেনার শতাধিক শিবিরের পর মঙ্গলবার মিয়ানমারের সেনাদের একটি অস্ত্রাগার দখলে নেয় বিদ্রোহী বাহিনী। শান প্রদেশের ওই অস্ত্রাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের যৌথ বাহিনী অন্তত ছয়টি ট্যাংক ও বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়িও তাদের দখলে নেয়।

উত্তর মিয়ানমারে তুমুল যুদ্ধের পরে বিদ্রোহী বাহিনী মঙ্গলবার নামতু নদীর উত্তরে হেসেনভি শহর ও সেনাঘাঁটি দখল করেছে।

উত্তর মিয়ানমারের কুনলং, মনিক্যাট, নানবেং (লাশিও-টাংইয়ান রোডে) ও মোনেকো ছাড়া সীমান্তবর্তী অন্য কোনো সেনাঘাঁটি এখন সামরিক জান্তা সরকারের দখলে নেই। রাখাইন প্রদেশের সিতওয়ে শহরের দোরগোড়াতেও পৌঁছে গিয়েছে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ বাহিনী। এই প্রদেশে রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।

মিয়ানমারের শান ও সাগিয়াং প্রদেশে সাফল্যের পরে পশ্চিমের চিন এবং রাখাইন প্রদেশেও হামলা শুরু করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, পশ্চিম মিয়ানমারে সক্রিয় দুই বিদ্রোহী বাহিনী ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’।

অক্টোবরের শেষ দিকে, মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা শুরু করে ‘অপারেশন-১০২৭’। ব্যাপক লড়াইয়ের পর, জান্তা নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি শহরের দখলও নেয় সরকারবিরোধীরা। বলা হচ্ছে, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর, এটিই দেশটির সরকারবিরোধীদের সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। এখনও হামলা-পালটা হামলায় উত্তপ্ত কিছু এলাকা।

জান্তা সরকারের ক্ষমতা দখলের পর প্রায় তিন বছর ধরেই উত্তপ্ত মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো। বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে এই সময়ে দেশটি থেকে মিজোরামে পালিয়েছেন ত্রিশ হাজারের বেশি নাগরিক।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বুকের ওপর রাজত্ব করছে ৭ লাখেরও বেশি ইসরাইলি দখলদার। এ হিসাবে ইসরাইলের মোট ৭০ লাখ জনসংখ্যার ১০ শতাংশই বসতি স্থাপনকারী। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ১৫০টি বসতি ও ১২৮টি ঘাঁটিতে বর্তমানে বাস করছেন তারা।

বসতি স্থাপনকারীরা মূলত ইসরাইলের নাগরিক। আর ফিলিস্তিনের দুই অঞ্চলে তাদের আবাসস্থলের বেশিরভাগই সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। পশ্চিম তীরের প্রায় ৪০ শতাংশ জমিই বর্তমানে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে। তবে বসতিগুলো ইসরাইল সরকারের অনুমোদিত হলেও ঘাঁটিগুলো সরকারি কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে।

পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অল্পসংখ্যক ইসরাইলি বাস করে এমন ঘাঁটি থেকে শুরু করে ৪০০ জন পর্যন্ত বাস করে এমন ঘাঁটিও রয়েছে।

ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই আল্ট্রাঅর্থোডক্স ইহুদি। অনেকেই ধর্মীয় কারণে অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে চলে আসে। আবার অনেকে তুলনামূলকভাবে জীবনযাত্রার কম ব্যয় আর সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আর্থিক প্রণোদনার কারণে অঞ্চলগুলোতে চলে আসে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বেড়েছে।

ইসরাইলে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর পশ্চিম তীরে ১৯৮টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে তারা। ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
ফিলিস্তিনে সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন

১৯৬৭ সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করার পরপরই বসতি স্থাপন শুরু করে ইসরাইল। একই বছরের সেপ্টেম্বরে পশ্চিম তীরের হেব্রনে ইটজিয়ন ব্লক ছিল ইসরাইলিদের নির্মাণ করা প্রথম বসতি। বর্তমানে এই বসতিতে ৪০ হাজার মানুষ বাস করছেন।

প্রাচীনতম বসতির আরেকটি কেফার এটজিয়ন। প্রায় ১ হাজার ইসরাইলির বাসস্থান। আর পশ্চিম তীরে বৃহত্তম বসতি মোদি’ইন ইলিট। এতে প্রায় ৮২ হাজার ইহুদির বসবাস। যাদের বেশিরভাগই অতি-অর্থোডক্স ইহুদি।

বসতি স্থাপনকারীদের ইসরাইল সরকারের সমর্থন

বসতি স্থাপনকারীদের সরাসরি অর্থায়ন করে ইসরাইলের সরকার। পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশই সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরাইল। এসব অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের নির্মাণ সীমাবদ্ধ, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন ও নিরীক্ষণের জন্য বসতি স্থাপনকারীদের প্রতিবছর প্রায় ২০ মিলিয়ন শেকেল (৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার) দেওয়া হয়। ইসরাইল সরকারের দেওয়া অর্থ পরিদর্শক নিয়োগ থেকে শুরু করে ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা, ট্যাবলেট ও যানবাহনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ব্যবহৃত হয়।

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় বাজেটে বসতি স্থাপনকারীদের অর্থায়নের পরিমাণ দ্বিগুণ করে ৪০ মিলিয়ন শেকেল (১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার) করার নির্দেশ দেয়।

আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বসতি স্থাপন কি বৈধ?

পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের সব বসতি ও ঘাঁটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। এটি স্পষ্ট আন্তর্জাতিক মানবিক আইন চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন। চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনে দেশগুলোকে তাদের দখলকৃত এলাকায় নিজেদের জনসংখ্যা স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘ একাধিক প্রস্তাব ও ভোটের মাধ্যমে ইসরাইলের দখলদারিত্বের নিন্দা জানিয়েছে। ২০১৬ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি রেজুলেশনে বসতি স্থাপনের ‘কোনো আইনি বৈধতা’ নেই বলে জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নির্বাচন ইস্যুতে ভারতের সিদ্ধান্তে আমাদের দ্বিমত নেই। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী মোমেন বলেন, সেটা দিল্লিকে জিজ্ঞেস করুন।

এরপরই মন্ত্রী জানান ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমত নেই। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ এবং তারা অত্যন্ত পরিপক্ব। তাদের সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব। তারা (ভারত) যেগুলো বলে, সেগুলোতে আমাদের দ্বিমত নেই।

গেল ১১ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। তখন ভারতের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কীভাবে সেদেশে নির্বাচন হবে।

আন্তর্জাতিক

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে তার দেশ। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে মালয়েশিয়াও কঠোর আচরণ করবে না। মালয়েশীয় নাগরিকদের উচিত ফিলিস্তিনিদের সর্বসম্মতভাবে সমর্থন জানানো।

মঙ্গলবার পার্লামেন্টে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

হামাসের বিদেশি সমর্থকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের দেওয়া একটি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।

বিবিসি জানায়, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে হামাস ও ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের বিদেশি সমর্থকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভোট হয়। বিরোধী এক আইন প্রণেতা এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার অবস্থান কী তা জানতে চান আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে।

জবাবে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, আমি এটিসহ কোনো হুমকি মেনে নেব না…। এ পদক্ষেপ একতরফা এবং এর কোনো বৈধতা নেই। কারণ জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে আমরা কেবল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তগুলোই স্বীকৃতি দিই।

মালয়েশিয়া মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলে আসছে। মালয়েশিয়া কূটনৈতিকভাবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থানেই অটল রয়েছে মালয়েশিয়া। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে প্রায়ই ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিভিন্ন সম্মেলন আয়োজন করা হয়ে থাকে।

আন্তর্জাতিক

গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র অন্তত ৮৯ জন কর্মী নিহত হয়েছে। সংস্থাটি এ কথা জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মিশনটি এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বলেছে, ‘এক মাসে গাজা উপত্যকায় ৮৯ ইউএনআরডব্লিউএ’র সহকর্মী নিহত হয়েছে এবং কমপক্ষে ২৬ জন আহত হয়েছে।’ ‘আমাদের ব্যাপকহারে সহকর্মীদের হারিয়েছি। এদেরকে ভুলে যাবো না।’

৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক বিমান ও কামানের গোলা নিক্ষেপ অব্যাহত রাখে।

হামাস তাদের হামলাকে জেরুজালেমের টেম্পল মাউন্টে আল-আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করে।

প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরোধ ঘোষণা করে এবং ভয়াবহ স্থল অভিযান শুরু করে।