আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিমানটি ‘এফ-৩৫’ মডেলের। ইরানের তাবরিজ এলাকায় বিমানটি ভূপাতিত করা হয়।

ইসরায়েলের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার কথা বলছে ইরানের সংবাদমাধ্যম।

রাষ্ট্রায়ত্ত ‘নুর নিউজ’ বলছে, সোমবার ইরানের তাবরিজ এলাকায় বিমানটি ভূপাতিত করা হয়।

এদিকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষ্যে আঘাত হানার আগেই নিষ্ক্রিয় করার দাবি জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী—আইডিএফ।

শুক্রবার ভোরে ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব ও প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে ‘আচমকা’ অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আকাশপথে হামলা পাল্টা হামলা অব্যাহত আছে।

সোমবার চার দিনের মাথায় এসে ইসরায়েল দাবি করে, ইরানের আকাশপথ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং আগামী দিনে হামলা আরও জোরদার করা হবে।

এদিন ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ভবনেও হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার সময় চ্যানেলটি সরাসরি সম্প্রচারে ছিল।

যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ‘নুর নিউজ’ বলছে, এটি ‘এফ-৩৫’ মডেলের। সোমবার ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সেটি ধ্বংস করা হয়।

এদিকে আইডিএফের বরাতে টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, কোনো যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর ইসরায়েলের ‘জানা নেই’।

পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, সোমবারও ইসরায়েলকে লক্ষ্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের দিকে মোট ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সেগুলো প্রতিহত করেছে।

আন্তর্জাতিক

তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি চায় ইরান। এজন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছে ইরান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এমন দাবির মধ্যেই জানা গেল, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা চেষ্টার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যা করলেই সংঘাতের অবসান হবে। সোমবার (১৬ জুন) এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খামেনিকে হত্যা চেষ্টার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এ মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহু বলেন, দেখুন আমাদের যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করছি। আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমরা তাদের (ইরান) শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীদের টার্গেট করেছি।

ইরানকে হিটলারের পারমাণবিক দল আখ্যা দেন তিনি।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে উৎখাতের পরিকল্পনা সম্পর্কে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা করলে সংঘাত আর বাড়বে না, বরং সংঘাতের অবসান ঘটাবে। ’

যুদ্ধবিরতিতে গেলে পারমাণবিক আলোচনায় ফিরবে ইরানের এমন শর্তকে ভুয়া বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু। বলেন, ‘তারা (ইরান) এসব ভুয়া আলোচনা চালিয়ে যেতে চায় যেখানে তারা মিথ্যা বলে, প্রতারণা করে আর এতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে চায়। ’

সঞ্চালককে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আপনি জানেন, আমাদের কাছে এ বিষয়ে খুব নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে। ’

রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন। যে কারণে তা আর বাস্তবায়নের দিকে যায়নি।

আজ নেতানিয়াহু জানালেন, তারা খামেনিকে হত্যা বা উৎখাত চান, সেই চেষ্টার জন্য যা করার করছেন।

আন্তর্জাতিক

১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আকার নিতে শুরু করলেও সাদ্দাম হোসেনের আমলে এসে ১৯৭০ এর দশকে এটি গতি পায়।

আন্তর্জাতিক

ক্রেমলিনের শীর্ষ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উশাকভকে উদ্ধৃত করে রুশ সংবাদ সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি টেলিফোন আলাপ হয়েছে।

উশাকভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানের উপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানান এবং দুই নেতা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু করার সম্ভাবনা নাকচ করেননি।

তিনি জানান, প্রায় ৫০ মিনিট ধরে দুই নেতার মধ্যে কথা হয় এবং আলোচনাটি গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ ছিল বলে বর্ণনা করেন।

এদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। লাভরভ বলেন, মস্কো ইরানের ওপর ইসরায়েলের শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমনে সহায়তা করতে প্রস্তুত।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ইরানের পারমাণবিক ইস্যু ঘিরে সমস্যা সমাধানে কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহী।

লাভরভ সেই হামলায় নিহত ইরানিদের জন্য আরাঘচিকে সমবেদনা জানান বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আন্তর্জাতিক

ভারতে ‘বিদেশি’ আখ্যা দিয়ে বাঙালি মুসলিমদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মীরা। তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষ নির্বিচারে লোকজনকে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে। এই বহিষ্কার অভিযানে বহু নিরীহ মুসলিম নাগরিককে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে টার্গেট করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স ও টেলিগ্রাফের।

একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মে থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্য ৩০৩ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করেছে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ট্রাইব্যুনাল ‘বিদেশি’ ঘোষিত ৩০ হাজার মানুষের মধ্য থেকে এই ‘পুশব্যাক’ করা হয়। আসামে এ ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। তাদের পরিবার ও জমিজমা উভয়ই রাজ্যে রয়েছে। এই রাজ্যে লক্ষাধিক পরিবার রয়েছে, যাদের শিকড় বাংলাদেশে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই এবং তাদের পরিবারকে প্রায়ই ভুলভাবে প্রধানত হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তারা এতটা দরিদ্র যে, উচ্চ আদালতে ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার মতো সামর্থ্যও রাখেন না। সরকারের রোষে পড়ার আশঙ্কায় মানবাধিকারকর্মীরা বলেছেন, এই বিতাড়ন অভিযানে শুধু মুসলিমদেরই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে আসাম সরকারের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টেলিগ্রাফ। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।

বাংলাদেশসংলগ্ন ২৬০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) সীমান্ত থাকা আসাম গত মাস থেকে রাতের অন্ধকারে ‘পুশইন’ শুরু করেছে। আসামে এ ধরনের পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে জনপ্রিয়। সম্ভাব্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বা বাঙালি ভাষাভাষীদের স্থানীয় অসমিয়া ভাষাভাষীরা বিশেষ করে চাকরির বাজারে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বলেছেন, বিদেশি বিতাড়নের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের চাপ রয়েছে। আমরা ৩০৩ জনকে পুশব্যাক করেছি। এই পুশব্যাক আরও তীব্র করা হবে। রাজ্যকে বাঁচাতে আমাদের আরও সক্রিয় ও উদ্যোগী হতে হবে।

বিচারাধীন অবস্থায় বহিষ্কৃতদের মধ্যে কয়েকজনকে ফেরত আনতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তাদের একজন ৫১ বছর বয়সি প্রাক্তন স্কুলশিক্ষক খাইরুল ইসলাম। তাকে ২০১৬ সালে একটি ট্রাইব্যুনাল ‘বিদেশি’ ঘোষণা করেছিল। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

খাইরুল বলেন, ২৩ মে পুলিশ আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ডিটেনশন সেন্টার হয়ে সীমান্তে পৌঁছায়। আমাদের চোখ বেঁধে ও হাত বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতের আঁধারে ১৪ জনকে সীমান্ত পার করিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়। বাংলাদেশি গ্রামবাসীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ওই ১৪ জনকে ‘নো-ম্যানস ল্যান্ডে’ রেখে দেয়। খাইরুল জানান, তার স্ত্রী আসাম পুলিশকে জানালে তাকে ফেরত নেওয়া হয়, কিন্তু অন্যদের কোনো খবর তার জানা নেই।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারত থেকে কিছু মানুষকে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে এবং এই বিষয়ে দিল্লি­র সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের পুশব্যাক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। তাদের আশঙ্কা, বিচারাধীন এবং প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদেরও ভুয়া নথির ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।

আন্তর্জাতিক

উত্তর আয়ারল্যান্ডের বালিমিনা শহর টানা দ্বিতীয় দিনেও রীতিমত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সেখানে মাস্ক পরা বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়, গাড়ি ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, ঘটনাটি শুরু হয় সোমবার, এক কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে ঘিরে হওয়া একটি বিক্ষোভ থেকে।

পুলিশ জানায়, এতে মঙ্গলবার রাতেও ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ নিয়ে দুই দিনে আহত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতেও বিক্ষোভকারীরা পেট্রল বোমা, ব্লকেড ভেঙে ফেলা ইট-পাথর ও ধাতব কাঠামো ছুঁড়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। পুলিশ জল কামান ও অপ্রাণঘাতী রাবার বুলেট দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ও উত্তেজনার সূচনা

এই সহিংসতার সূত্রপাত হয় সোমবার শহরটির ১৪ বছর বয়সি দুই কিশোর আদালতে হাজির হওয়ার পর। তাদের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়। পরে শুনানিতে রোমানিয়ান ভাষায় অনুবাদক ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

যদিও দুজনই আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে তাদেরকে ২ জুলাই পর্যন্ত হেফাজতে রাখা হয়েছে।

বর্ণবাদী ঘৃণা-অপরাধের আশঙ্কা

এদিকে সোমবার রাতের হামলায় চারটি ঘরবাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পুলিশ বর্ণবাদ-প্রসূত ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে।

এক রোমানিয়ান নারী বলেন, তিনি নিজের বাড়ির জানালায় ব্রিটিশ পতাকা লাগিয়ে রেখেছেন, যাতে হামলার লক্ষ্যবস্তু না হন।

বেলফাস্ট টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা গেছে, একটি বাড়ির দরজায় ব্রিটিশ ও ফিলিপিনো পতাকার নিচে লেখা, ‘Filipino lives here’ অর্থাৎ ‘ফিলিপিনোরা এখানেই বসবাস করে’।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে সোমবার গ্রেফতারকৃত একজনও রয়েছে।

দাঙ্গা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

পুলিশ প্রধান জন বাউচার বলেন, ‘বালিমিনায় যেসব মূর্খতাপূর্ণ সহিংসতা ঘটেছে তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ঘৃণা-প্রসূত আচরণ ও জনতার শাসন সমাজের বন্ধন ছিন্ন করে দেয়—এই আচরণ বন্ধ হতে হবে’।

একটি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়, আরেকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তা অসুস্থ হন ও বমি করেন। এদিন কয়েকটি গাড়িও আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে একটি গাড়ি উল্টে আগুনে জ্বলতে দেখা গেছে।

কেবল বালিমিনাই নয়, বেলফাস্ট, নিউটাউনঅ্যাবি ও ক্যারিকফারগাস শহরেও পুলিশের ওপর বোতল, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

এ নিয়ে ব্রিটেনের উত্তর আয়ারল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী হিলারি বেন বলেছেন, ‘বালিমিনায় আবারও যে বেসামাল সহিংসতার দৃশ্য আমরা দেখলাম, তা উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’।

প্রেক্ষাপট

উত্তর আয়ারল্যান্ডে মাঝে মধ্যেই উত্তেজনার সময় পুলিশ আক্রমণের শিকার হয়, যদিও ১৯৯৮ সালের শান্তিচুক্তির পর তিন দশকের সাম্প্রদায়িক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। তবুও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে স্থিতিশীলতা এখনো ভঙ্গুর।

আন্তর্জাতিক

ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজারও ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় জমে গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। শিশুদের কান্না থামাতে বাবা-মারা ছুটে যান রুটির খোঁজে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য; রুটির বদলে তারা ফিরছেন মাথায় গুলি নিয়ে-কেউ স্ট্রেচারে করে। কেউ লাশ হয়ে। খাদ্য সংকটে বিধ্বস্ত গাজার দক্ষিণাঞ্চলে যখন মানুষ ট্রাকের পাশে ত্রাণের আশায় জড়ো হয় ঠিক তখনই নামে ইসরাইলি বুলেটবৃষ্টি।

সম্প্রতি রাফা ও খান ইউনিসে মার্কিন সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের এই ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পড়ে গুলিবদ্ধ হয়েছেন শত শত ফিলিস্তিনি। নিহত হয়েছেন অনেকেই। শুয়াইব আবু তইর তাদেরই একজন। রোববার তার চার সন্তানের জন্য রুটি আনতে গিয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু ফিরেছেন মাথায় গুলিবদ্ধ হয়ে। আলজাজিরা।

কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজায় সহায়তা কেন্দ্রগুলো হয়ে উঠেছে গোপন মৃত্যুফাঁদ। রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিএ)।

যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান (জিএইচএফ) পরিচালিত এসব বিতরণ পয়েন্টে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষ। স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ ঘারিব জানিয়েছেন, রোববার রাফায় হাজার হাজার মানুষকে একটি মার্কিন বিতরণ পয়েন্টের ৫০০ মিটার দূরে আল-আলম গোলচত্বরে জড়ো হতে বলা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ভিড় যখন বাড়তে থাকে তখন হঠাৎ করে চারদিক থেকে গুলি চালায় ইসরাইলি বাহিনী। তারা আরও বলেছেন, মাথা আর বুক লক্ষ্য করেই গুলি চালায় বর্বর সেনারা। এ দিন গুলিবদ্ধ হন আবু তইরও।

তার শ্যালিকা আসমা আবু সালাহ বলেছেন, ‘সে তো শুধু বাচ্চাদের খাবার আর পানির জন্য গিয়েছিল।

ওর সন্তানরা তাকে বলেছে, ‘বাবা, আমাদের খাবার দাও’। এই কথাটাই সবচেয়ে কষ্টের। সে তো শুধু রুটি আনতে গিয়েছিল। রুটির বদলে ওরা তার মাথায় গুলি মেরেছে।’

গাজার ফিল্ড হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-হেমস এটিকে একটি গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন। রোববারের পর সোমবারও ত্রাণের লাইনে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে তিনজন নিহত এবং অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার ও বুধবারও একই তাণ্ডব চালিয়েছে সেনারা। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি।

ত্রাণকেন্দ্র ছাড়াও গাজাজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। সোমবার আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার একমাত্র কিডনি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র নূরা আল-কাবি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।

ইসরাইলি বর্বরতায় সোমবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৪৭০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ২৪ হাজার ৬৯৩ জন আহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক

গাজায় মার্কিন সহায়তাপ্রাপ্ত একটি ত্রাণকেন্দ্রে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ১৫০ জন আহত হয়েছেন।খবর আল জাজিরার।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজার তথাকথিত ত্রাণ কেন্দ্রগুলো ইসরায়েলি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গণহত্যা চালাতে ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণের নামে নতুন কৌশল কাজে লাগাচ্ছে।

ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর ওপর চালানো গণহত্যায় নীরবতা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ।

অবরুদ্ধ উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকটে আছেও বলে জানান মুনির।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পরিবর্তন চাইছে হামাস। তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হামাসের দাবিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৪১৮ জন নিহত এবং এক লাখ ২৪ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস মৃত্যুর সংখ্যা হালনাগাদ করে ৬১ হাজার ৭০০ এরও বেশি বলে জানিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

প্রস্তাবে হামাসের এই সম্মতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা সোমবার একথা জানিয়েছেন। প্রস্তাবে হামাসের এই সম্মতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি হামাস পেয়েছে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে। এতে বলা হয়েছে, দুটি দলে ১০ জন করে জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর বিনিময়ে ৭০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।

এ সময়ের মধ্যে ইসরায়েল গাজার নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং ইসরায়েলে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা বেশ কিছু সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।

তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল জানুয়ারি মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিয়ে গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।

হামাস ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোও ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে। যদিও এবার হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করলে তারা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দিতে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা কেবল সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি, তাও কেবল জিম্মিদের বিনিময়ে। তার ভাষায়, হামাস পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের হামলায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপরই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত এ যুদ্ধে অন্তত ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভূখন্ডটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, সেখানে খাদ্য সংকটে মারাত্মক অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক

বিমান থেকে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এসময় হঠাৎ ক্যামেরায় ধরা পড়ল এক অদ্ভুত দৃশ্য। বিমানের দরজার একপাশ থেকে কেউ যেন তাকে চড় মারলেন! পরিষ্কার বোঝা গেল, লাল পোশাক পরিহিত কেউ একজন কাজটি করেছেন। একটু পরই দেখা যায়, সেই লাল পোশাক পরিহিতা ফরাসি প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ব্রিজিত।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ভিয়েতনামে পা রেখেছেন ম্যাক্রোঁ। সেখানকার হ্যানয় বিমানবন্দরে এই ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়ে। মুহূর্তেই চড়-কাণ্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সে ঘটনার পর অবশ্য একসঙ্গেই বিমান থেকে নেমেছেন ম্যাক্রো ও তার স্ত্রী ব্রিজিত। তবে বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় স্ত্রীর হাত ধরেননি প্রেসিডেন্ট। এ বিষয়টিও উপস্থিত অসংখ্য ক্যামেরার দৃষ্টি এড়ায়নি।

ম্যাক্রোঁর দপ্তর প্রথমে ভিডিওটি ‘ভুয়া’ দাবি করলেও পরে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। যদিও ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্র ঘটনাটিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য ‘সামান্য ঝগড়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।