আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে এবার চীনকে সরাসরি হুমকি দিল যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত মঙ্গলবার কাজাখস্তান সফরে গিয়ে এ হুমকি দেন।

ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমেরিকা বিশ্বাস করে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সমর্থন জানানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে চীন।

তবে রাশিয়াকে অস্ত্র দেয়ার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে মারাত্মক পরিণতি বরণ করতে হবে বেইজিংকে।

ব্লিঙ্কেন বর্তমানে মধ্য-এশীয় প্রজাতন্ত্রগুলো সফরে রয়েছেন। আন্টনি ব্লিঙ্কেন এমন সময় রাশিয়াকে অস্ত্র দেয়ার বিরুদ্ধে চীনকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যখন আমেরিকা ইউক্রেনে অস্ত্রের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে।

কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে অস্ত্র দেয়ার ব্যাপারে চীনকে হুঁশিয়ার করেছি।

সংবাদ সম্মেলনের আগে তিনি কাজাখ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুখতার তিলেউবারদি এবং প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমরাত তোকায়েভের সঙ্গে বৈঠক করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে কাজাখস্তানের পাশাপাশি তাজিকিস্তান, কিরগিজিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেন, চীন যদি রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সমর্থন দেয় তাহলে আমরা বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে মোটেই দ্বিধা করবো না।

আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের নাবলুসে গভীর রাতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলিরা। রোববার নাবলুসের হাওয়ারা নামক এক গ্রামে দুই ইসরাইলিকে গুলি করে হত্যা করেন এক ফিলিস্তিনি।

এ ঘটনার পর রোববার রাতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নাবলুসে ফিলিস্তিনের বাড়ি-গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ইসরাইলিরা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলিরা অন্তত ৩০০টি হামলা চালিয়েছে। এই হামলাকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ‘সুসংগঠিত হত্যা সাধন এবং লুণ্ঠন’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

নাবলুসের দক্ষিণ দিকের গ্রাম জাতরাতে গত রোববার সামিহ আল-আকতাস নামের ৩৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তির পেটে গুলি ছোড়ে ইসরাইলিরা। ওই গুলিতে আহত হয়ে পরের দিন মারা যান তিনি। ইসরাইলিদের হাতে প্রাণ হারানো সামিহ মাত্র পাঁচ দিন আগে তুরস্ক থেকে ফিরেছিলেন। ভ‚মিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তুরস্কে গিয়েছিলেন তিনি।

ইসরাইলিদের হামলায় হাওয়ারা, যাতারা, বুরিন এবং আসিরা আল-কিবলিয়া গ্রামের অন্তত ৩৯০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, বেশির ভাগই আহত হয়েছেন টিয়ার গ্যাস এবং বাড়ি-গাড়িতে লাগানো আগুনের ধোঁয়া থেকে। ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ছুরি ও রড দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলিরা।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আর এ আঘাতের কারণে তার মাথার খুলি ফেটে গেছে। আরেকজনের মুখে রড দিয়ে মারা হয়েছে। হাওয়ারা গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম ওমর ইসরাইলিদের এ তাণ্ডবকে ‘বর্বর’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

স্থানীয় সময় সোমবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘গতকাল আমরা ঔপনিবেশিক বসতি স্থাপনকারীদের অপরাধের নতুন মাত্রা দেখলাম। যেখানে তারা সবকিছুতে হামলা করেছে। মানে দোকান, মানুষ, সুপার মার্কেট, বাড়ি, গাছ, গাড়ি, গাড়ির গ্যারেজ সব জায়গায় হামলা হয়েছে। তারা বাড়িতে প্রবেশেরও চেষ্টা চালিয়েছে।’

ওমর আরও বলেছেন, ‘তারা সেনাবাহিনীর দ্বারা শতভাগ সুরক্ষিত ছিল।’ পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা গাসান ডাগলাস আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, অন্তত ৩০টি বাড়ি ও ১০০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তবে অগ্নিসংযোগে কেউ নিহত হননি।
তিনি বলেছেন, ‘হামলার ব্যাপকতা এবং যে কম সময়ের মধ্যে এটি হয়েছে তা অকল্পনীয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এ হীন অপরাধের ‘সহযোগী’ ছিল ইসরাইলি সেনারা।

আন্তর্জাতিক

দেশের ইতিহাসবিজড়িত বিভিন্ন জনপদের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিজেপি নেতার করা একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি কে এম জোসেফ ও বিচারপতি এম ভি নাগরত্ন আবেদনকারীকে জানিয়ে দেন যে ভারত এক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।

আবেদনকারী বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়ের উদ্দেশে বিচারপতিরা বলেন, নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়কে নিশানা করে সারা দেশকে অগ্নিগর্ভ করে তুলবেন না। অতীত খুঁড়তে যাবেন না। এমন কিছু করবেন না, যা বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

ভারতের একাধিক ঐতিহাসিক শহর, নগর, জনপদ ও সড়কের নাম বদলানো শুরু হয়েছে। কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ শহরের নাম বদলে ‘প্রয়াগরাজ’ রাখা হয়েছে। মোগলসরাই জংশনের নাম পাল্টে হয়েছে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায়’।

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের দুই ঐতিহাসিক শহর ঔরঙ্গাবাদ ও ওসমানাবাদের নাম বদলে যথাক্রমে ‘ছত্রপতি শম্ভাজিনগর’ ও ‘ধারাশিব’ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি নাম বদল কমিশন গড়ার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলাটি করেন।

আবেদনে বলা হয়, আক্রমণকারী মোগলদের নামে যা কিছু রয়েছে, তা বদলানো প্রয়োজন। কারণ, বহু জায়গায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে গেছে। লোধি, গজনি, ঘোরির নামে রাস্তা আছে অথচ পান্ডবদের নামে কোনো রাস্তা নেই। এসব আক্রমণকারীর সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই।

জবাবে বিচারপতিরা বলেন, ‘আমাদের দেশে বারবার বিদেশি শক্তি হানা দিয়েছে। এটা সত্যি। কিন্তু সেটাও ইতিহাসের অঙ্গ। সেই ইতিহাস জনপদ, রাস্তা বা সৌধের নাম পাল্টে মুছে ফেলা যায় না।’ বিচারপতিদের প্রশ্ন, ‘আমাদের দেশে কি আর কোনো সমস্যা নেই?’

বিচারপতি জোসেফ আবেদনকারীকে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের বই পড়ে দেখার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, এ ধরনের উসকানিমূলক মামলায় দেশের সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা হলে শীর্ষ আদালত চুপ করে থাকবেন না।

বিচারপতিরা বলেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এ ছাড়া হিন্দু কোনো ধর্মবিশেষ নয়। এটা এক জীবনধারা। এই ধর্মে গোঁড়ামির স্থান নেই। বিচারপতিরা বলেন, দেশের ইতিহাস যেন কোনোভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বোঝা না হয়ে ওঠে।

আন্তর্জাতিক

কানাডার উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিশেষ করে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী হারজিত এস সজ্জন শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। কানাডিয়ান বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প বা অন্য কোনো শিল্প গড়ে তুলতে বিনিয়োগ করতে পারেন।

তিনি বলেন, তার সরকার স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানি করার জন্য কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নয়নের ওপর জোর দিচ্ছে।

বাংলাদেশ বৃহৎ জনসংখ্যার একটি ছোট দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার স্থানীয় জনগণকে খাদ্য যোগানো এবং উদ্বৃত্ত খাদ্য রপ্তানি বা খাদ্যের জন্য অন্যান্য দেশকে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি ছোট এলাকায় ফসল উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেকাংশে সফল কারণ দেশের বিজ্ঞানীরা অনেক উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে একসময় বিপুল জমি অনাবাদি ছিল। এসব জমি লবণাক্ততা-সহনশীল জাত, খরা-সহনশীল জাত এবং পানি-সহনশীল জাত উদ্ভাবনের ফলে চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

সফররত কানাডার মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি সহযোগিতা বিশেষ করে খাদ্য সংরক্ষণ ও ক্ষুদ্র কৃষকদের উন্নয়নে আগ্রহী। তিনি কৃষি ও শিক্ষায় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবন কমপ্লেক্সে একটি বড় কৃষি খামার গড়ে তোলার প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে কানাডার মন্ত্রীকে ক্ষুদ্র কৃষকদের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন- সরকার তাদের সেচ, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য ভর্তুকি প্রদান করে এবং অন্যান্য অনেক কর্মসূচির অধীনে তাদের সহায়তা প্রদান করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় কর্মসূচি চালু করেছে। ক্ষুদ্র কৃষকরা এ কর্মসূচির অধীনে তাদের অর্থ সঞ্চয় করতে এবং এটি থেকে ঋণও নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, সেচের জন্য সরকার এখন প্রকৃতি সংরক্ষণের স্বার্থে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং ভূ-পৃষ্ঠের পানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি কক্সবাজার থেকে আরও রোহিঙ্গাদের তাদের অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য স্থানান্তর করার লক্ষ্যে নোয়াখালীর দ্বীপ ভাসানচরে আরও বেশি এলাকার উন্নয়ন ঘটাতে তাদের সহায়তা চেয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ নিজস্ব তহবিল দিয়ে ভাসানচরে একটি পরিবেশবান্ধব বাসস্থান গড়ে তুলেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে উন্নত জীবনযাপনের এলাকা সম্প্রসারণ করা গেলে কক্সবাজার থেকে আরও বেশি রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে দাতাদের সহায়তা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে কিছু রোহিঙ্গা মানব ও মাদক পাচার এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মতো নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। নারীদের বিশেষ করে শিশু ও কিশোরী মেয়েদের জন্য সেখানে অমানবিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরে গেলে তারা সুষ্ঠু পরিবেশ পাবে।

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ মূলত অভিযোজন ও প্রশমনের ওপর জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো স্থানীয় মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জীবন ও জীবিকার ক্ষতি কমানোর দিকে মনোনিবেশ করে। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার, সাইক্লোন রেজিলিয়েন্ট হাউস এবং সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।

শিক্ষার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে এবং বিদেশের বাজারে দক্ষ শ্রম রপ্তানি করে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তির বিকাশে গুরুত্ব দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় বিমান দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দেশটির স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে পশ্চিম নেভাদায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর সিএনএনের।

বিমানটি নেভাদার স্টেজকোচের কাছে বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় পাইলট, নার্স, প্যারামেডিক, রোগী ও রোগীর স্বজন মারা গেছেন। মার্কিন বিমান সংস্থা কেয়ার ফ্লাইট এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে কেয়ার ফ্লাইট লিখেছে, দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা সবাই মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে সেন্ট্রাল লিয়ন কাউন্টির ফায়ার সার্ভিস। বিষয়টি নিয়ে আমরা শোকাহত। নিহতদের পরিবারকে বিষয়টি দ্রুত জানানো হচ্ছে।

লিয়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৫ মিনিটে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ১১টা ১৫ মিনিটে আমাদের কাছে খবরটি পৌঁছায়। তবে, কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

প্রসঙ্গত, বিমানটি ছিল রেমসা (রিজিওনাল ই্মারজেন্সি মেডিকেল সাভির্সেস অথোরিটি) হেলথের। জরুরি চিকিৎসা সেবায় কাজ করে এ সংস্থাটি।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

মঙ্গলবার তার বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ন্যাশন’ ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এ ঘোষণা দেন।

মস্কো গোসটিনি ভর কনফারেন্স সেন্টারে মঙ্গলবার বার্ষিক ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। খবর সিএনএন।

পুতিন বলেন, স্ট্র্যাটেজিক অফেনসিভ আর্মস ট্রিটিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করছে মস্কো। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, তাহলে রাশিয়ারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে শুধু ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তিই কার্যকর ছিল। ২০১০ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।

ওই চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৫০টি দূরপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের সুযোগ ছিল। ২০২১ সালে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, কিয়েভের বর্তমান সরকার ও তার পশ্চিমা প্রভুরা দেশের অর্থনীতি গ্রাস করেছে। তারা দেশটির শিল্প ও অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ইউক্রেনের এই পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী। দেশটির বিপুল সংখ্যক লোকের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য তারা দায়ী।

পুতিন বলেন, ইউক্রেন সরকারই তার দেশের নাগরিকদের শক্রু। জেলেনস্কির সরকার নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে না। বরং পশ্চিমা দেশগুলোর স্বার্থ হাসিল করছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া যুদ্ধ এড়ানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেছিল। কিন্তু পশ্চিমা-সমর্থিত ইউক্রেন রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের এই দ্বীপ ভূখণ্ড দখলে নেয় রাশিয়া।

পুতিন বলেন, পশ্চিমারা বিশৃঙ্খলা আর যুদ্ধের বীজ বপন করে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বোতল থেকে ভূতকে বের করে দিয়েছে।

‘ইউক্রেনের জনগণ কিয়েভ সরকার ও তার পশ্চিমা শাসকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে; যারা রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে এই দেশটিকে কার্যকরভাবে দখল করেছে।’

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধে কখনো বিজয় অর্জন করতে পারবে না রাশিয়ার সেনাদল। এমন দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর বিবিসির।

মঙ্গলবার পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদার সঙ্গে সাক্ষাতের পর দেশটির রাজধানী ওয়ারশের রয়েল ক্যাসলে বক্তব্যের সময় এ কথা বলেন বাইডেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে কখনো রাশিয়ার জয় হবে না। রাশিয়ার সেনাদল দেশটিতে নিষ্ঠুরতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

বাইডেন আরও বলেন, পুতিনের বাহিনী দেশটির সাধারণ নাগরিকদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে। শত শত নারীকে ধর্ষণ করেছে। এমনকি ধর্ষণকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। এভাবে ইউক্রেনে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে রাশিয়া।

এ সময় পুতিনের বিরুদ্ধে এক জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন বাইডেন। সমালোচনা ও তিরস্কারে ধুয়ে দেন রাশিয়াকে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর হতে চলেছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগে গোপনে কিয়েভ সফর করেছেন জো বাইডেন। তার সফরের একদিন পরই রাশিয়ায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার তুললেন ভ্লাদিমির পুতিন।

তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে অসীম শক্তি প্রদর্শন করছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছেন পুতিন।

আন্তর্জাতিক

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় খাতরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি তার দেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, ‘আপনার এবং আপনার নেতৃত্বের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

বিনয় খাতরা বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ উন্নয়ন যাত্রায় ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শেখ হাসিনাকে চলতি বছরের ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় গ্রুপ অব টুয়েন্টি (জি-২০) শীর্ষ সম্মেলনের ১৮তম আসরে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান। ১ ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত জি-২০’র সভাপতির দায়িত্বে থাকা ভারত গ্রুপটির সব বৈঠকে বাংলাদেশকে ‘অতিথি দেশ’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বন্ধন অত্যন্ত দৃঢ় বর্ণনা করে বিনয় খাতরা বলেন, সমগ্র বিশ্ব এখন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে, যা ইতোমধ্যেই কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ভারতকে বিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করেন এবং এই বন্ধুত্ব আরও গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দুই প্রতিবেশীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে উভয় দেশই কাজ করতে পারে।

সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) শর্তাবলি সহজ করার চেষ্টা করছেন, যাতে বাংলাদেশ সহজেই ঋণ নিতে এবং তা পরিশোধ করতে পারে। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য দুই দেশের স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহার করেই পরিচালনা করা যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক

নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ‘অগ্নিসন্ত্রাসের তথ্য-প্রমাণ’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক এইচ শোলের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বিএনপি বিদেশিদের কাছে ক্রমাগত ‘নালিশ’ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলার মধ্যে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

নির্বাচন নিয়ে শোলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে তেমন আলাপ হয়নি। কারণ, তারা জানেন যে, সব দেশের নির্বাচনে কিছু অপরিপক্কতা আছে।

তবে, আমি নিজে বলতে চেয়েছি নির্বাচন নিয়ে, কারণ আমরা এত কাজ করেছি, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স তৈরি করেছি, ভোটার তালিকা ভুয়া না হওয়ার বিষয়ে বলতে চেয়েছি কিন্তু সময় হয় নাই।

তিনি বলেন, আমরা ডকুমেন্টারি এভিডেন্স দিয়েছি। আমরা অগ্নিসন্ত্রাসের কাহিনীগুলো বলেছি। দেখিয়েছি যে, দেখেন নারীরা কীভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মোমেন বলেন, আপনি গণতন্ত্র কাকে শিখাইতে আসছেন? এদেশের লোক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে। ৩০ লাখ লোক গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের জন্য রক্ত দিয়েছে।আপনি কাকে শেখাতে চাচ্ছেন গণতন্ত্র?

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাওয়া মিশরের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যাকে ইচ্ছে দেবে। মিশরের মতো দেশ, সেখানে গণতন্ত্র আছে? তারাও দাওয়াত পায়!

যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়বারের মতো গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাওয়ার পর বাইডেন ২০২১ সালে প্রথম গণতন্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করে। সে সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

এ বছরের মার্চে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ইতমধ্যে ১০০-এর বেশি দেশকে আমন্ত্রণ জানালেও তালিকায় নেই বাংলাদেশের নাম।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। এ লক্ষ্যে উভয় পক্ষ জয়েন্ট পলিটিক্যাল ডিক্লেরেশনে ( যৌথ রাজনৈতিক ঘোষণা) সই করেছে।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, এখন আমরা যে চুক্তিটি সই করলাম সেটি হচ্ছে শান্তিরক্ষী বাহিনীর কো-ডিপ্লয়মেন্ট সংক্রান্ত। ভবিষ্যতে আমাদের যত শান্তিরক্ষী বাহিনী যাবে, তার অনেকগুলোতে গাম্বিয়া থেকে শান্তিরক্ষী নেব। এক লাখ ৮৪ হাজার বাংলাদেশি শন্তিরক্ষী জাতিসংঘে কাজ করেছে।

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই গাম্বিয়া, বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার লক্ষ্যে এই চুক্তি সই হয়েছে।

এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়া বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য অর্থের সঙ্কট রয়েছে। তবে আমরা এক্ষেত্রে আশাবাদী। অনেকেই অর্থের জন্য অঙ্গীকার করেছে।