আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনে রাশিয়া অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মহাপরিচালককে আটক করেছে রুশ বাহিনী। ওই পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় সংস্থা এনারগোটম শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এনারগোঅটমের প্রধান পেট্রো কোটিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার দিকে ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে এনারহোদর শহরে যাওয়ার পথে মহাপরিচালক ইহোর মুরাশোভকে আটক করা হয়।

কোটিন টেলিগ্রাম পোষ্টে লিখেছেন, মুরাশভকে তার গাড়ি থেকে বের করা হয় এবং চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসির কাছে মুরাশভকে জরুরীভাবে মুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে যে তারা ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মহাপরিচালকের বিষয়ে রাশিয়ার কাছে তথ্য চেয়েছে।

আইএইএর একজন মুখপাত্র শনিবার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমরা রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং স্পষ্টীকরণের জন্য অনুরোধ করছি।

প্রসঙ্গত, মুরাশোভকে আটক করার বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া।

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ, তাৎপর্যপূর্ণ
অবদান ও ফলপ্রসূ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের
সভাপতি (পিজিএ) সাবা কোরোসি আব্দুল্লাহ শাহিদ। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০
সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল
মোমেনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক সভায় আলোচনাকালে জাতিসংঘে
বাংলাদেশের নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এ প্রশংসা করেন তিনি।

সভার শুরুতে ‘এসডিজি বাস্তবায়ন রিভিউ’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন এবং
সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের আওতাধীন উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থ, পররাষ্ট্র ও
উন্নয়নমন্ত্রীদের সমন্বয়ে একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠা- এ দুটি প্রস্তাব সাধারণ
পরিষদের সভাপতির কাছে পেশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন।

এসডিজির বাস্তবায়ন, বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের
ক্ষেত্রে তহবিল ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রস্তাবিত
উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টটির আয়োজন করা হলে তা এসডিজির বাস্তবায়ন অগ্রগতি
পর্যালোচনা করা এবং তহবিল ঘাটতি মোকাবিলায় ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে মর্মে
উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের (এসএসসি)
আওতায় মন্ত্রী পর্যায়ের উক্ত ফোরাম এসএসসির বিষয়ভিত্তিক আলোচনাকে আরও
এগিয়ে নিতে একটি চমৎকার প্লাটফর্ম তৈরি করবে মর্মে মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণ পরিষদের সভাপতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে কোভিডের মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপির
উচ্চ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মর্মে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া তিনি কোভিড
মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। সাধারণ পরিষদের
সভাপতি জিডিপির প্রবৃদ্ধি, কোভিড মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির
ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক আলোচনাকালে রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ ভাষায় শিক্ষাদান,
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যে সকল
পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন পর্যন্ত কোনো
রোহিঙ্গা নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত যায়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাধারণ পরিষদের সভাপতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা
প্রদানে বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন। এ সংকট কোনোভাবেই
গ্রহণযোগ্য নয় মর্মে মন্তব্য করেন সাধারণ পরিষদ সভাপতি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা অর্থাৎ এর প্রশমন ও
অভিযোজনের জন্য আরও তহবিলের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর
১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল প্রদানের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা শীঘ্রই
বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাধারণ পরিষদের সভাপতি বিষয়টির
প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।

সুবিধাজনক যে কোনো সময়ে সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে বাংলাদেশ সফরের
আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে
ল্যাক্রুয়ার সঙ্গে বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের পিস
অপারেশনে সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স
(কিউআরএফ), বেজ্‌ ডিফেন্স কন্টিনজেন্ট, পদাতিক কন্টিনজেন্ট এবং পুলিশ
কন্টিনজেন্ট পদায়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে মর্মে জানান তিনি।

এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে
বাংলাদেশ হতে সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিশেষ করে ফোর্স
কমান্ডার নিয়োগের জন্যও আহ্বান জানান এবং নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বৃদ্ধির
জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুর্নব্যক্ত করেন। সংঘাতপূর্ণ দেশসমূহে টেকসই
শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও উত্তম অনুশীলন কাজে লাগানোর
অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা
বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের ২৬তম বার্ষিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণের জন্য
আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.
একে আব্দুল মোমেন।

আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের কর্তব্যপরায়নতা,
দায়িত্বশীলতা ও পেশাগত দক্ষতার ভূয়সী প্রসংশা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ
হতে সুদানের আবেইতে পদাতিক ব্যাটালিয়ন প্রেরণ, মালিতে আমর্ড্‌ হেলিকপ্টার এবং

কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স কন্টিনজেন্ট মোতায়েন, মধ্য আফ্রিকায় হাতপাতাল ইউনিট
প্রেরণ এবং কঙ্গোতে এক্সপ্লোসিভ অর্ডিনেন্স ডিস্‌পোজাল (ইওডি) কন্টিনজেন্ট
মোতায়েনের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি। ভবিষ্যতে আরও অধিক নারী
শান্তিরক্ষী মোতায়েনসহ জাতিসংঘের সার্বিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ
অব্যাহতভাবে অবদান রেখে যাবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আন্ডার সেক্রেটারি
জেনারেল ল্যাক্রুয়া।

আন্তর্জাতিক

ভারতের বহুল প্রচারিত ইংরেজি সাপ্তহিক ইন্ডিয়া টুডে’র এক নিবন্ধে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূলমন্ত্র ধর্ম নিরপেক্ষতা সমুন্নত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘একমাত্র ভরসা’ উল্লেখ করে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকান্ডের মত মর্মান্তিক ঘটনা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বিরোধীদের সমালোচনা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রদর্শিত কঠোর রাষ্ট্রনীতির প্রতি ইঙ্গিত করে লেখাটিতে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো সন্ত্রাসের শিকারদের সর্বদা উগ্রবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য গণনা করা যেতে পারে।’

বেগম জিয়াসহ ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের খুনিদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগের উল্লেখ করে, এই নিবন্ধে বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করা হয়।

ইন্ডিয়া টুডে’র ডিজিটাল বিভাগের নির্বাহী সম্পাদক দীপ হালদার তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এই নিবন্ধে লিখেছেন, দেশটির হিন্দুদের জন্য ‘শেখ হাসিনাই একমাত্র ভরসা।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বুধবার প্রকাশিত এই নিবন্ধে বলা হয়, তৃণমূল পর্যায়ের হিন্দুদের সঙ্গে লেখকের আলোচনা এই বিষয়টিকে আরও বিস্তৃত ও স্পষ্ট করেছে।

ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে তার পরিদর্শনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি লিখেছেন: ‘আমি এই সত্য থেকে সান্ত¦না পেয়েছি যে আপনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বাংলাদেশ কল্পনা করেছিলেন এবং গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে গত বছর তান্ডব চালানো এমন মৌলবাদীদের জন্য কোনও স্থান ছিল না। ’

‘আমার মনে আছে, কিভাবে আপনার পরিবার দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করার জন্য এত বড় মূল্য দিয়েছে এবং কিভাবে আপনি, ম্যাডাম প্রধানমন্ত্রী, চার দশকে ১৯ বার হত্যা প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন।’

আন্তর্জাতিক

ইউক্রইনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জেপোরোজিয়া এবং খেরসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে জুড়ে নেওয়ার ঘোষণা দেবেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

পশ্চিমা বিশ্বের নিন্দা ও নিষেধাজ্ঞার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ইউক্রইনের চার অঞ্চলে গণভোটের পর শুক্রবার সেগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে জুড়ে নেওয়ার ঘোষণা দিতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এ লক্ষ্যে নথিপত্র্র সইয়ের একটি অনুষ্ঠান করবেন তিনি। ক্রেমলিনে ভাষণও দেবেন পুতিন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ারে এরই মধ্যে মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে।

ইউক্রেইনের চার অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে ঘোষণা দিয়ে কয়েকটি বিলবোর্ডও টাঙানো হয়েছে। সন্ধ্যায় রেড স্কয়ারে আয়োজন করা হয়েছে কনসার্টের। কনসার্ট দেখার জন্য এরই মধ্যে সেখানে লাগানো হয়েছে বিশাল স্ক্রিন।

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলের লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলের জেপোরোজিয়া ও খেরসনে গণভোট করেছে রাশিয়া।

রাশিয়া ও এর মিত্রদের দখলে থাকা ওই চার অঞ্চলে ৫ দিন ধরে চলা গণভোট শেষ হয় গত মঙ্গলবার। এরপর এ ভোটে রাশিয়ার সঙ্গে এই অঞ্চলগুলোর যুক্ত হওয়ার পক্ষে ‘বিপুল জনরায়’ এসেছে বলে বুধবার জানিয়েছেন সেখানকার মস্কোপন্থি প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

গণভোটের যে ফল প্রকাশিত হয়েছে, তাতে অঞ্চলভেদে ভোটের ৮৭ শতাংশ থেকে ৯৯ দশমিক ২ শতাংশই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বলেছে।

এখন রাশিয়া অঞ্চলগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়ার আয়োজন করছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, “নতুন সব ভূখন্ডকে রাশিয়ার অংশ করে নিতে আগামীকাল (শুক্রবার) স্থানীয় সময় দুপুর ৩ টায় (১২:০০জিএমটি) গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসের সেন্ট জর্জ হলে চুক্তি সই অনুষ্ঠান করা হবে।”

“অনুষ্ঠানে রাশিয়া ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চল থেকে রুশপন্থি দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাশিয়া-নিযুক্ত দুই কর্মকর্তার সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে চুক্তি সই করা হবে।”

এরপর ক্রাইমিয়াসহ রাশিয়ার পার্লামেন্টের দুই কক্ষই আগামী সপ্তাহে এই চুক্তিগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করবে। ৪ অক্টোবরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ থেকে ভাষণ দেবেন।

সেই ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জুড়ে নেওয়ার সময় যা যা করা হয়েছিল এবারও তেমন পক্রিয়াতেই ইউক্রেইনের আরও চার অঞ্চলকে রাশিয়া ফেডারেশনভুক্ত করা হচেছ।

রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল বিশ্ব সম্প্রদায় মেনে নেয়নি। এবারও মেনে নেবে না। ইউক্রেইন ও পশ্চিমা দেশগুলো এবারের চার অঞ্চলের গণভোটকে অবৈধ ও জবরদস্তিমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, নিজেদের দখল হালাল করতে আইনি মোড়ক দেওয়ার জন্যই এই ভোট করেছে রাশিয়া।

রাশিয়া এই অঞ্চলগুলো নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে পরলে তখন তারা বলতে পারবে যে, ইউক্রেইনকে দেওয়া পশ্চিমা দেশের অস্ত্র দিয়ে তাদের দেশে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এতে যুদ্ধ আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে।

ইউক্রেইন বলছে, তারা তাদের ভূখণ্ডের কোনও অংশে রাশিয়ার দখলদারিত্ব মেনে নেবে না এবং শেষ রুশ সেনা প্রত্যাহার হওয়া পর্যন্ত লড়বে।

কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলছেন, কিইভের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হতে চাওয়া অঞ্চল ও এর জনগণকে কখনোই ছেড়ে যাবে না তারা।

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে থাকা রুশভাষীদের নির্বিচারে হত্যা ও নিপীড়নের হাত থেকে রক্ষায় এবং রাশিয়াকে ধ্বংসে পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করতে এই যুদ্ধ করতে হচ্ছে বলেও ভাষ্য তার।

আন্তর্জাতিক

চীনসহ রাশিয়ার কোনও মিত্র দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রাশিয়ার পক্ষে কথা বলেনি।

চীন ও ভারত এবার তাদের ঐতিহ্যবাহী মিত্রদেশ রাশিয়াকে বলিষ্ঠ সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এক সপ্তাহের চাপের পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের ভাষণে পশ্চিমা দেশগুলোর ভর্ৎসনা করেছেন।

পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে উদ্ভট প্রচারণা চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে চীনসহ রাশিয়ার কোনও মিত্র দেশ সাধারণ অধিবেশনে রাশিয়ার পক্ষে কথা বলেনি।

অথচ চীন গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রুশ হামলা শুরুর কয়েক দিন আগেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ‘অটুট’ বন্ধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা জানায়, শনিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই রাশিয়া ও ইউক্রেইন উভয় পক্ষকেই ‘সংকট ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া’ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যুদ্ধের প্রভাব পড়তে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ইউক্রেইন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপযোগী সব প্রচেষ্টাকেই চীন সমর্থন করে। সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারের বিষয় হল শান্তির জন্য আলোচনার পথ তৈরি করা।”

“সমস্যার মূল সমাধান হল, সব পক্ষের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগকে প্রাধান্য দেওয়া এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ, কার্যকর ও টেকসই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।”

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার সঙ্গেও বৈঠক করেন। ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর এটি ছিল দুইজনের প্রথম বৈঠক।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেইন নিয়ে চীনের ‘উদ্বেগের’ বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।

ওদিকে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উষ্ণ সম্পর্ক থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গেও তাদের ঐতিহাসিক মিত্রতার সম্পর্ক আছে। মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি ক্রয় করে আসছে দিল্লি।

জাতিসংঘে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “ইউক্রেইন সংঘাত ক্রমাগত বাড়তে থাকায় আমরা প্রায়ই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি যে, আমরা কার পক্ষে?”

“এ ক্ষেত্রে আমাদের উত্তর সব সময় সোজাসাপ্টা ও সৎ— আর তা হচেছ, ভারত শান্তির পক্ষে এবং এ অবস্থানেই অটল থাকবে। আমরা তাদের পক্ষেই রয়েছি, যারা সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ হিসেবে আলোচনা ও কূটনীতির আহ্বান জানায়।”

আন্তর্জাতিক

ডানপন্থি দল ব্রাদার্স অব ইতালির প্রধান জর্জিয়া মেলোনি ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

তবে তার দল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। জর্জিয়া মেলোনি এ কারণে জোট বেঁধেছেন সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী মাতেও সালভিনির দল লিগ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলেসকুনির দল ফোরজা ইতালিয়া পার্টির সঙ্গে।

এই জোট ইতালির ক্ষমতায় আসার বিষয়টি ইউক্রেন যুদ্ধে কতটা প্রভাব ফেলবে? এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেনকে কতটা সহায়তা করবেন তারা?

গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইতালির ভাবি প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জনসম্মুখে বার বার বলেছেন তিনি ইউক্রেনকে সহায়তা করে যাবেন।

কিন্তু তার সঙ্গে জোট বাঁধা সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী মাতেও সালভিনি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলেসকুনি বলেছেন, তারা ক্ষমতায় গেলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাববেন, কারণ এগুলো ইতালির অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

মানে নিষেধাজ্ঞা ওঠিয়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করবেন তারা।

মাতেও সালভিনি ও সিলভিও বারলেসকুনি দুইজনই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধু।

ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা করার পর পশ্চিমা দেশগুলোর নেতারা পুতিনের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। এর মধ্যে ছিলেন ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রীও।

কিন্তু এখন ইতালির নতুন নেতৃবৃন্দ ইউক্রেনের জন্য কি করেন সেটিই দেখার বিষয়।

আন্তর্জাতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আবারও জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন জানিয়েছে । বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) তিনি জাতিসংঘে বলেছেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে।

তবে তিনি নতুন কোন শান্তি উদ্যোগের ইঙ্গিত দেননি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাইডেন তার ভাষণে বলেন, ‘ইহুদি ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ইসরায়েলের ভবিষ্যত নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এবং ফিলিস্তিন নাগরিকদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে এটি একটি উত্তম পন্থা। ’ আর এটি ‘স্বাধীনতা ও সম্মানের একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদক্ষেপ। ’

গত জুলাইয়ে ইসরায়েল ও পশ্চিমতীর সফর করার সময় বাইডেন একই ধরনের বক্তব্য দেন। তবে ২০১৪ সাল থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা স্থবির হয়ে রয়েছে।

বাইডেন কট্টর ইসরায়েলপন্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার পর ওয়াশিংটনের সাথে ফিলিস্তিনের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। তবে ফিলিস্তিনের কিছু নাগরিক মার্কিন প্রশাসনকে অতি সাবধানতার চোখে দেখছে। তারা এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংঘাতের চেয়ে অর্থনৈতিক কর্মসূচির ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ওয়াজির আকবর খানের একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে চার জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা আইএস-খোরাসান (আইএস-কে) এই হামলার জন্য দায়ী।

কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান বলেন, নামাজের পর মানুষ যখন মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসছিল তখন একটি বিস্ফোরণ ঘটে। হতাহতরা সবাই বেসামরিক নাগরিক, সঠিক সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।

ওয়াজির আকবর খান এলাকাটি কাবুলের ‘গ্রিন জোন’ বা অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখলের আগ পর্যন্ত এই এলাকায় অনেক দেশের দূতাবাসের পাশপাশি ন্যাটোর একটি দপ্তরও ছিল। এখন অবশ্য ওই এলাকা পুরোপুরি তালেবান নিয়ন্ত্রিত।

আন্তর্জাতিক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চালস’র দেয়া অভ্যর্থনায় যোগ দিয়েছেন।

রাজা চালস ও কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা পার্কার সদ্য প্রয়াত রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও রাজাদের সম্মানে এ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

রোববার সন্ধ্যায় (স্থানীয় সময়) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাও এ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রিন্স উইলিয়াম, কেট মিডলটন, প্রিন্স এডওয়ার্ড, সোফি উইসাক্স, প্রিন্সেস অ্যানি, তার স্বামী ভাইস অ্যাডমিরাল স্যার টিম লরেন্স ও ডিইক অ্যান্ড ডাচেস অব গ্লুসেস্টারসহ রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণ করা নতুন রাজা ও কুইন কনসোর্ট-এর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা বলেন।

তিনি বলেন, তারা নতুন রাজার মা প্রয়াত রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে নিয়ে কথা বলেন।

মুনা শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ কেবলমাত্র নতুন রাজা চালস’র মা’ই ছিলেন না, তিনি তাঁর কাছেও একজন মায়ের মতো ব্যক্তিত্ব ছিলেন।’

বাংলাদেশের প্রধামনমন্ত্রী নতুন রাজা ও কুইন কনসোর্টকে অভিনন্দন জানান।

মুনা উল্লেখ করেন, রাজা ও কুইন কনসোর্ট উভয়েই অক্টোবরে তাদের পূর্বনির্ধারিত বাংলাদেশ সফর স্থগিত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

তার উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনার বলেন, কুইন কনসোর্ট বলেছেন যে তার সিলেট ও সুন্দরবন সফরের পরিকল্পনা ছিল।

মুনা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, নেদারল্যান্ডের রানি, ভারত ও নেপালের প্রেসিডেন্ট এবং বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এরআগে রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেসে যান এবং প্রয়াত রাণী এলিজাবেথের মরদেহের প্রতি তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা জানান।

১৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডনে পৌঁছান।

তিনি আজ সন্ধ্যায় (স্থানীয় সময়) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে অংশ নিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে লন্ডন ত্যাগ করবেন।

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের সদ্য প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে তাকে সমাহিত করা হয়।খবর বিবিসি, আল-জাজিরা।

এ সময় প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ জোহান সেবাস্তিয়ান বাখের কম্পোজিশন বাজান বাদকেরা। পরে চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধান আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবুরি জাস্টিন ওয়েলবি রানির জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।

চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধানের আশীর্বাদ শেষ হওয়ার পর দেশটির জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। এর আগে রানিকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপরই তাঁর কফিন উইন্ডসর ক্যাসলের দিকে নেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কয়েক দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ রানিকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে যে দীর্ঘ অপেক্ষা করেছেন, তার সমাপ্তি এখানেই।

এর আগে সেইন্ট জর্জেস চ্যাপেলে প্রার্থনা অনুষ্ঠানের সময় তার কফিনের উপর থেকে রাজমুকুট এবং রাজদণ্ড সরিয়ে নেয়া হয়। রানির কফিন যখন লন্ডনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে উইন্ডসরে নেয়া হচ্ছিল, তখন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

লন্ডনে দীর্ঘ শোক মিছিলে অংশ নেন সশস্ত্র বাহিনীর তিন হাজার সদস্য। শোক মিছিলটি লন্ডনের অনেক বিখ্যাত স্থাপনার পাশ দিয়ে অতিক্রম করে।
তার আগে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে রানির শেষকৃত্যানুষ্ঠান হয়, যেখানে রানির বিয়ে এবং অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিল।

শেষকৃত্যানুষ্ঠানে কয়েকশ রাষ্ট্রনেতা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি যোগ দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো।

কয়েক দিন ধরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়) ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানির প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় শেষ হয়। সন্ধ্যা সাতটায় পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল সমাধিতে রানিকে সমাহিত করা হয়। রানির সমাধির ওপর মার্বেলের ফলকে খোদাই করে লেখা হয়েছে, ‘দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২’।

গত ৮ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। দীর্ঘ সাত দশক তিনি ব্রিটেনের রানির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন।